বাংলার প্রাগৈতিহাসিক সময়কালের/যুগের বিবরণ দাও। পাণ্ডুরাজার ঢিবিতে প্রাপ্ত প্রামাণিক এ যুগকাল সম্পর্কে আলোকপাত কর।

উত্তর ভূমিকা ঃ
গুপ্তযুগ পর্যন্ত প্রাচীন বাংলার ইতিহাসের মোটামুটি এক ছায়াচিত্র জানা গেলেও গুপ্তযুগের পূর্ব থেকে প্রাক্ ঐতিহাসিক কালের ইতিহাস আমাদের কাছে অজানা। কেননা অত্র সংক্রান্ত তথ্য উপাত্তের অভাবে তৎসময়ের ধারাবাহিক কোন ইতিহাস রচনা সত্যিই দুরূহ ও জটিল এক বিষয়। আবার অনাদিকাল থেকে বহুবিচিত্র ভাষাভাবীর জাতিগোষ্ঠী বাংলায় এসে এখানকার স্থানীয় জনমণ্ডলীর উপর ব্যাপক প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে প্রাচীন বাংলার ইতিহাস রচনাকে ঘন বিশ্লেষণাত্মক করে তুলেছে। তাছাড়া প্রাচীন বাংলার কোন অঞ্চলে কখন কিভাবে প্রথম মানব বসতি গড়ে উঠেছে, সে সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায় নি। তবুও পাণ্ডুরাজার ঢিবি থেকে এক অস্পষ্ট কাচের আয়নায় আমরা বাংলার প্রাক্ ঐতিহাসিক যুগ পর্যালোচনা করতে পারি ।
বাংলার প্রাগৈতিহাসিক যুগের বর্ণনা :
পাণ্ডুরাজার ঢিবি সংশ্লিষ্ট প্রাক্-ঐতিহাসিক বাংলা সম্পর্কে বলতে গিয়ে Dr. RC Majumdar বলেছেন, "There discoveries are results of excavations casvied on during 1962-5 at Pandu Rajar Dhilir - In the valley of river Ajoy (hnear Bolpur) in the Burdwan district and in Several other sites on the Ajay kuapar, and kapai rivers."
বিশ্বের অপরাপর সভ্যতার মত প্রাচীনতম বাংলাতেও স্থায়ী জনাবাস গড়ে উঠেছিল, পরবর্তীকালে যা 'জনপদ' শিরোনামে অভিহিত হয়। যাযাবর বৃত্তির অবসান আর পশুপালনের প্রারম্ভ থেকেই মানুষ যখন অগ্নিপূজারী হয়ে উঠে, তারা তখন প্রস্তর যুগ অতিক্রম করে ধাতব যুগে পদার্পণ করে। গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, করতোয়া এসব নদীপলি গঠিত অববাহিকা অঞ্চলে কোন নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী প্রথম বসতি গড়েছিল, তা জানা যায় না, তবে বাংলার আদিবাসী তথা সাঁওতাল, মুরং, নমঃশূদ্র ইত্যাকার প্রান্তিক অন্ত জজনের দিকে তাকালে, প্রাচীন বাংলার জনগোষ্ঠীর সাথে তামিলদের সাদৃশ্য খুব বেশি ধরা পড়ে। যাই হোক, বাংলার আদিবাসীদের সেই অর্থে দ্রাবিড় গণভুক্ত করা গেলেও বিজ্ঞজনদের মতে, এজনাধিবাসীদের নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠিকে বলা হয়েছে— অস্ট্রিক নৃগোষ্ঠি। এ দিকের ইতিহাস আলোচনার যুগভাগকে প্রাচীন, মধ্য ও আধুনিক এ কয় ভাগে ভাগ করা হয়। কিন্তু বিবর্তনিক দৃষ্টিকোণ থেকে জীবিকার মাধ্যম তথা হাতিয়ারের উপর ভিত্তি করেই ঐতিহাসিক কাল বিভাজন বিজ্ঞানসম্মত হয়ে উঠেছে। যেমন : প্রস্তর যুগ, প্রত্নপ্রস্তর যুগ, নব্যপ্রস্তর যুগ, তাম্রযুগ ইত্যাদি। যেমন : আমাদের এখনকার বিশ্ব চলছে নিউটনীয় সূত্র যুগে, হয়তো বা একদিন তা আপেক্ষিক তত্ত্বের স্তরে পৌঁছে যাবে। এখানে এ সম্পর্কিত সংক্ষিপ্ত আলোচনায় ব্যাপৃত হওয়াটাই সঙ্গত।
প্রস্তর যুগ : ভূতাত্ত্বিক গঠন পর্যবেক্ষণ থেকে অনুমিত হয় যে, বাংলার উত্তর পূর্বাংশের পাহাড়ী এলাকাই এ ভূমি অঞ্চলের আদি অবস্থান ধরে রেখেছিল। এরপর 'বরেন্দ্র' জনপদ অঞ্চল ও তৎসন্নিহিত পশ্চিমাংশ, বাংলার সমুদ্র উপকূলবর্তী অর্থাৎ দক্ষিণাংশ অপেক্ষাকৃত নবীন পলি দ্বারা গঠিত।
খ্রিষ্টাব্দ শুরু হওয়ার হাজার হাজার বছর পূর্বে আদি বঙ্গে যে একমানব সভ্যতা গড়ে উঠেছিল সে সম্পর্কিত আলোচনা শুরু হয় প্রস্তর যুগ থেকে। প্রাচীন মানুষের মূল জীবিকা ছিল পশু শিকার যখন তারা পাথুরে অস্ত্র হাতিয়ার আয়ত্বে আনতে পেরেছিল, তারপর ধাতব যুগ থেকে পশুপালন এবং তারপর স্থায়ী জনবসতির সাথে সাথে কৃষিকর্মের সূচনা। সেহেতু পশু শিকারের অস্ত্রের নমুনা ও উৎকর্ষতা মানব সভ্যতার ক্রমোন্নতির বিবর্তনিক যুগ বিভাগ করে। এভাবে প্রত্নপ্রস্তর আর নব্যপ্রস্তর যুগের অস্ত্রের নিদর্শন প্রাচীন বাংলার ভূমিতে মানববসতির অস্তিত্ব ঘোষণা করে। এ প্রস্তুর যুগ আবার দুভাগে বিভক্ত :
ক. পুরাতন প্রস্তর যুগ ।
মহান প্রাণ পুরুষ যীশু খ্রিস্টের এ পৃথিবীতে ঐ নামে পদার্পণের কত সহস্র বছর পূর্ব হতে আদি বঙ্গবাসীরা পশু শিকারের হাতিয়ার রূপে পাথুরে অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করত তা সম্পূর্ণ অজানা।
খ. নব্য প্রস্তর যুগ ।
নব্য প্রস্তর যুগে পাথুনের হাতিয়ার আরও একধাপ উন্নতি লাভ করে। সম্ভবত আগুন জ্বালানোর সাথে সাথে মানুষ বুঝতে শিখে নেয় খিলকরীতি অর্থাৎ কোন কিছুর সরু অংশ সহজেই কোন কিছুতে বিদ্ধ হয়। কেননা সংগ্ৰহ বৃত্তির পরে পতমাংস তক্ষণের সাথে সাথে হাজার বছরের বিবর্তনে মানুষের মস্তিষ্কের মোট ওজন বৃদ্ধি পেতে থাকে । যাই হোক পাপ্পুরের যুগের শেষাংশেই আদি বঙ্গজনেরা ধাতু তথা তামার ব্যবহার শিখতে পেরেছিল। গ. তাম্রযুগ ঃ এস্তর যুগের চেয়ে উন্নত মানের হাতিয়ার তাম্রযুগে ধাতু আবিষ্কার তথা ধাতুকে কিভাবে অগ্নিসংযোগে পাথুরে হাতিয়ারে আদলে রূপ দিয়ে সহজে বহন করা যায় তা শিখে নিয়েছিল। সেহেতু এ যুগের নামকরণ করা হয় তাম্রযুগ।
পশ্চিম বঙ্গের বর্ধমান, বীরভূম জেলার অজয় নদী, কুমুর নদী ও কোপাই নদীর তীরে প্রত্মতাত্ত্বিক খননকার্যের মাধ্যমে এতদঅঞ্চলের প্রত্মগ্রন্তর, নব্য প্রস্তর ও তাম্র প্রস্তর যুগের নিদর্শন আবিষ্কৃত হয়েছে। তাম্রযুগের শেষের দিকে মানুষ ক্রমান্বয়ে লোহার ব্যবহার শিখতে থাকে। মহাভারতের পাতায় প্রাক্ বাংলার ইতিহাস : মহাপুরাণ মহাভারতের কথায় প্রাক্ বাংলা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ কিছু ঐতিহাসিক উপাত্ত সংযোজিত আছে। মহাভারতের কালে বঙ্গদেশ কতিপয় রাজ্যাঞ্চলে বিভক্ত ছিল বলে মনে হয়। মহাভারতের কেন্দ্রীয় নারী চরিত্র, ঐক্য, মৈত্রী, ও সৌভ্রাতৃত্বের প্রতীক দ্রৌপদীর স্বয়ম্বর সভায় ভারতবর্ষের অন্যান্য এলাকার রাজন্যবর্গের সাথে বঙ্গরাজ প্রতাপবণ ও চন্দ্রসেন, পুণ্ড্ররাজ বাসুদেব এবং তাম্রলিপ্তি রাজ্যের উল্লেখ পাওয়া যায়। এছাড়াও মহাভারতের বিপরীত বীর কর্ণের, কলিঙ্গ, অষ্ট পুণ্ড্র ও বঙ্গদেশে অভিযান প্রেরণের কথা বলা হয়েছে। এ থেকে এরকম অনুমান সঙ্গত যে সে আমল মহাভারত রচনাকালে বাংলাদেশ অনেকগুলো রাজ্যে বিভক্ত ছিল এবং ভারতের অন্যান্য অংশের সাথেও বঙ্গরাজাদের দ্বিপাক্ষিক অথবা বহুপাক্ষিক সাফল্য বহাল ছিল।
পঞ্চপাণ্ডব বীর ভীম পুণ্ড্র, বঙ্গ, তাম্রলিপ্ত, শুঙ্গ প্রভৃতি জনপদ জয় করেছিল বলে জানা যায় এবং তারা তদীয় বাংলার সামরিক ক্ষমতা সম্পর্কে অবগত ছিলেন ।
কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ, কৃষ্ণলীলার মহাকালচক্রে খ্রিস্টপূর্ব কবে নাগাদ মহাভারতের কাহিনী রচিত হয়েছিল তা জানা যায় না; তবে এটি রামরাজ্যে প্রতিষ্ঠার পূর্ববর্তী পর্যায় বলেই মনে হয়; অর্থাৎ মহাভারতের কাহিনীতে ভারতে আর্যদের মধ্যকার আধিপত্য বিস্তারের কাহিনী, রামায়ন যেমন আর্য ও অনার্যদের কাহিনী। সে সূত্রে, লক্ষণ সখা সুগ্রীব ও হনুমানকে প্রাচীন ভারতের আদি বঙ্গবাসী তথা তাসিল নরগোষ্ঠীকে বুঝান হয়েছে। ধ্রুপদী সিসতত্ত্বের প্রতীক বিশ্লেষণে এমনই ধরা পড়েছে। সেহেতু বলা যায়, মহাভারতেরও পূর্বেকার সময়ে প্রাচীন বাংলার জনবসতি ছিল। অন্যান্য প্রাচীন গ্রন্থে প্রাক্ ঐতিহাসিক বাংলা : অন্যান্য প্রাচীন সংস্কৃত শাস্ত্রে বিশেষ করে ঋগ্বেদের ‘ঐতরেয় ব্রাহ্মণ সূত্রে' এবং বৌধায়নের ধর্মশাস্ত্র আর 'রামায়ন' গ্রন্থে এমন কিছু বর্ণনা পাওয়া যায় যা থেকে প্রাচীনতম বাংলা সম্পর্কে অনেক কিছু অনুমান করা যায়। ঐতরেয় ব্রাহ্মণ সূত্রে পুণ্ড্র জাতিকে দস্যু ও বর্বর প্রকৃতির বলা হয়েছে। আর বৌধায়নের ধর্মশাস্ত্রে পুণ্ড্র ও বঙ্গজনদের অপদেবতা তথা কিম্ভুতকিমাকার আকার সাদৃশ্য বলে বর্ণনা করা হয়েছে। ঐসব সংস্কৃত থেকে বলা হয়েছে, যেহেতু এখানকার আদিবাসীরা আর্য বংশ উদ্ভূত ছিল না, সেহেতু আদি বঙ্গভূমিতে এসে তারা তাদের পাপের প্রায়শ্চিত্ত করার বিধান প্রবর্তন করেন।
আবার খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকের জৈন সাহিত্যের 'আচারঙ্গ সূত্র' শীর্ষক গ্রন্থমালায় বঙ্গ দেশের নামোল্লেখ আছে। আচারঙ্গ সূত্রে এরকম বর্ণিত আছে যে, জৈন ধর্মের মহাবীর ধর্ম প্রচারার্থে রাঢ়দেশ পর্যন্ত পদব্রজে এসেছিলেন; কিন্তু রাঢ়বাসীরা তাকে অপমানিত করেছিল।
পাণ্ডু রাজার ঢিবিতে প্রাপ্ত প্রত্মতাত্ত্বিক প্রমাণাদি :
পাণ্ডুরাজার ঢিবিতে প্রাপ্ত ঐতিহাসিক নিদর্শনাবলি ও তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে পণ্ডিত গবেষকেরা অনুমান করতে চেয়েছেন যে, যীশুখ্রিস্টের জন্মের প্রায় দেড় থেকে দুই হাজার বছর পূর্বে বাংলায় এক উন্নতমানের সভ্যতা গড়ে উঠেছিল। ১৯৬২-৬৩ সালের দিকে কেন্দ্রীয় ভারত সরকার পশ্চিমবঙ্গের প্রাদেশিক সরকারের মধ্যস্থতায় অজয় নদীর তীরবর্তী এলাকায় প্রত্মতাত্ত্বিক খনন কার্যের মাধ্যমে প্রাপ্ত ঐতিহাসিক নিদর্শনাবলির বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ থেকে তারা ঐরকম সিদ্ধান্তে এসেছেন। পাণ্ডুরাজার ঢিবিতে প্রাপ্ত প্রাচীন ধ্বংসাবশেষগুলোর মধ্যে নবসাকৃত মৃতপাত্র প্রস্তর ও তাম্রের ব্যবহার্য দ্রব্যাদি, স্টিটাইট পাথরের সিল, পোড়ামাটির নরনারীর মূর্তি এবং অন্যান্য আরও কিছু নিদর্শনের সাক্ষাৎ মিলেছে। এ থেকে আমরা তৎকালীন জীবন সংস্কৃতির যে ধারা চিত্রটি পাই, তা অনেকটা এরকম ঃ
১. খাদ্যাভ্যাস :
সিন্ধু নদ অববাহিকা, মধ্যভারত, রাজস্থান ও ভারতবর্ষের অন্যান্য অংশের মত স্থায়ী ও উন্নত এক জীবনমানের অধিকারী হয়ে এদেশবাসীরা তখন ধান চাষ করত; সেহেতু ভাতই ছিল তাদের প্রধান খাদ্য। অবশ্য সম্বরা নামে যব জাতীয় এক প্রকার খাদ্য ফসলের চাষও তারা করত, এখনকার বাংলায় যাকে ভুরো বলা হয়ে থাকে, আজ যাকে প্রায়শই আগাছা হিসেবে পরিগণিত হয়, তা দিয়ে আসলে উন্নতমানের পায়েস রান্না করা হত। এছাড়া বিচিত্র সব ফলমূলের পাশাপাশি তারা শুকর পালন করত এবং নীলগাই ও বনহরিণ শিকার করত। সনাতনী ধর্মের প্রভাবে অভিজাতেরা নিরামিষ জীবনযাপন করত।
২. হাতিয়ার :
তারা লোহা ও তামার ব্যবহারকে বেশ ভালোভাবেই রপ্ত করেছিল। ধাতব খণ্ড সরু করার চেয়ে আগুনের সাহায্যে বাঁকা করে ব্যবহার করা যে অধিকতর সুবিধাজনক তা তারা জানতে পেরেছিল। খুন্তি, কুড়াল, দা, এসব নিত্য ব্যবহার্য আদি বঙ্গীয় শব্দগুলো তখন থেকেই বাংলাভাষায় অঙ্গীভূত হয়ে আছে।
৩. গৃহবাস :
নলখাগড়া আর কাদামাটির গৃহপ্রাচীর, উপরে গোলপাতার ছাউনি দিয়ে গণমানুষেরা প্রকৃতি ও আবহাওয়া উপযোগী উন্নতমানের এক প্রকার আবাস গৃহ নির্মাণ করতে শিখেছিল। গৃহবাসগুলো ছিল আয়তকারের। তবে ইট, পাথর ও মাটি পুড়িয়ে তৎসহযোগে গৃহ নির্মাণের নিদর্শনও তখন মেলে ।
৪. পরিধেয় :
তারা মূলত সুতিবস্ত্র পরিধান করত। মেয়েরা আজকের উপজাতীয়দের মত পরিধেয় ব্যবহার করত, পরবর্তীতে পাল আমলের আগে গুপ্তযুগে তারা শাড়ি পরা শিখে। পুরুষেরা হাটুর উপরে কৃষ আকারের এক খণ্ড ধুতিবস্ত্র পরিধান করত। তবে নারী পুরুষ উভয়ই গলায় মালা, কানে দুল ও হাতে হস্তবন্ধনী ব্যবহার করত। নাকের দুল, কোমর বন্ধনী ও বক্ষ বন্ধনী ব্যবহার করত শুধু মেয়েরা। প্রকৃতি প্রদত্ত উপকরণ যেমন : এক প্রকার মাটি, চন্দন কাঠের গুড়ো ও বিবিধ ভেষজ সহযোগে তারা প্রসাধনী করত। খোপায় ফুল পরা ছিল অবিবাহিত মেয়েদের জন্য এক সাধারণ রেওয়াজ। বিবাহিত মহিলারা সিঁদুর পরত, নবোদ্ভিন্ন মেয়েদের পায়ে আলতা পরার আবশ্যকতা ছিল । ছেলে ও মেয়ে উভয়েই লম্বা চুল রাখত ।
৫. বিনোদন :
প্রকৃতি পূজারী আদি বঙ্গজনেরা বছরের বিভিন্ন ঋতু উপযোগী বিবিধ প্রকার পালা পার্বণ ও অনুষ্ঠানাদি পালন করত সহজাত এক দৈনন্দিকতার ভিতর দিয়ে। চৈত্র মাসে চড়ক পূজা, শরতে শারদীয়া, কার্তিকে ফসল পূজা, অগ্রাহায়নে লক্ষ্মী পূজা এভাবে বারো মাসে তেরো পূজার উৎসব প্রায় সারা বছর ধরেই চলত। আবহমান বাঙালিরা সরস্বতী অর্থাৎ সুর সঙ্গীতের মাধ্যমেই ঈশ্বর আরাধনা করতেন যে প্রবাহ বৈষ্ণব পদাবলি থেকে শুরু করে হাসন লালন পর্যন্ত চলে আসে; যাই হোক নজরুল, রবীন্দ্র সে অর্থে আজও আমাদের নিকট পরিচিতি পায় নি।
উপসংহার ঃ
উপরিউক্ত আলোচনা শেষে বলা যায় যে, পাণ্ডু রাজার ঢিবিতে প্রাপ্ত ধ্বংসাবশেষ ও বিভিন্ন দ্রব্য গবেষণা, পরীক্ষা, নীরিক্ষা করে পণ্ডিত গবেষকগণ এমন সিদ্ধান্তে এসেছেন যে, তৎকালিন বঙ্গজনেরা প্রাচীন বাংলায় এক উন্নতমানের সভ্যতার জন্ম দিয়েছিল। তারা প্রস্তুর যুগ অতিক্রম করে তাম্র ও লৌহযুগে পদার্পণ করেছিল। বিভিন্ন তাম্র ও লৌহজাত দ্রব্য; অস্ত্রসস্ত্র ও প্রাপ্ত আবিষ্কারাদি তাই প্রমাণ করে। তবে যেহেতু নির্দিষ্টভাবে সময় নির্ধারণ করা যায় নি সেহেতু বলা যাচ্ছে না যে, আদিত্তোম বঙ্গীয় সভ্যতার নিদর্শন পাণ্ডুরাজার ঢিবি হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারোর সমসাময়িক ছিল কি না ।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]