শশাঙ্কের কৃতিত্ব মূল্যায়ন কর। তাকে কি বাংলার প্রথম গুরুত্বপূর্ণ রাজা হিসেবে গণ্য করা যায়? কালের বিবরণ দাও ।

উত্তর : ভূমিকা ঃ প্রাচীন বাংলার ইতিহাসে বাঙালি রাজাগণের মধ্যে শশাঙ্ক একটি গৌরবোজ্জ্বল নাম। সপ্তম শতকে বাংলার ইতিহাসে গৌড়রাজ শশাঙ্ক অকস্মাৎ উল্কাপিণ্ডের ন্যায় উদয় হয়ে কিছু সময়ের জন্য আপন কৃতিত্বের দ্বারা সমকালীন ইতিহাসে আলো ছড়ান। এছাড়া এক অজ্ঞাত অবস্থা থেকে নিজ যোগ্যতার জোরে ইতিহাসের পাদ প্রদীপের সামনে দাঁড়ান। তাঁর বংশ পরিচয় ছিল অজ্ঞাত। মহাভারতের মহাবীর কর্ণের ন্যায় তিনি প্রমাণ করেন যে, জন্ম দৈব্যের অধীন হলেও পৌড়য় নিজের অধীন। তবে একথা বলাও আভুক্তি হবে না যে, শশাঙ্ক শুধু গৌড়ে সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন না বরঞ্চ পুণ্ড্রবর্ধন, গৌড় ও বঙ্গকে একসূত্রে গেথে একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাজ্যও প্রতিষ্ঠা করেন। এমনকি উত্তর ভারতের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করার মত শক্তি তিনি অর্জন করেন। সুতরাং, শশাঙ্ককে প্রাচীন বাংলার গুরুত্বপূর্ণ নৃপতি বলা যায়।
ক. প্রাথমিক পরিচিতিঃ শশাঙ্কের বংশ পরিচয় সম্পর্কে উৎসের বা প্রত্যক্ষ প্রমাণের অভাবে কিছু জানা যায় না। এ সম্পর্কে জানার জন্য নির্ভর করতে হয় বানভট্টের হর্ষচরিত্র, হিউয়েন সাং-এর বিবরণ, হর্ষবর্ধনের শিলালিপি, হর্ষচরিত্রের টীকাকার শঙ্করের বিবরণী, রোহিতেশ্বর লিপি ও আর্যমঞ্জুশ্রীমূলকল্প ইত্যাদির উপর।
প্রাচীন রোহিতেশ্বর গিরি গ্রাত্রে একটি সিলের ছাচ পাওয়া গেছে। তাতে শ্রী মহাসামন্ত শশাঙ্ক এ নামটি খোদিত আছে। অনুমান করা হয় যে, এ মহাসামন্ত শশাঙ্ক ও গৌড়াধিপতি শশাঙ্ক একই ব্যক্তি। কেউ কেউ মনে করেন, শশাঙ্ক মৌখড়ী রাজের সামন্ত ছিলেন। যশোর জেলায় শশাঙ্কের কিছু মুদ্রা পাওয়া গেছে। এ থেকে বলা যায় যে, তার নাম নরেন্দ্রগুপ্ত বা নরেন্দ্রাদিত্য এবং তিনি গুপ্ত রাজবংশে জন্মগ্রহণ করেন। কিন্তু প্রত্যক্ষ প্রমাণের অভাবে ডঃ রায় চৌধুরী এ মতকে অগ্রাহ্য করেছেন। ডঃ আর জি বশাকের মতে, শশাঙ্ক ছিলেন গৌড়ের রাজা জয়নাগের বংশধর। তবে বেশিরভাগ পণ্ডিত মনে করেন যে, শশাঙ্ক ছিলেন পরবর্তী গুপ্তবংশীয় মহাসেন গুপ্তের সামন্ত। যাহোক ইতিহাস বেত্তাদের মতে, তিনি ছিলেন গৌড়াধিপতি শশাঙ্ক। তিনি সম্ভবত ৬০৬ খ্রিস্টাব্দে কোন এক সময় গৌড়ে ক্ষমতাসীন হন। তার রাজধানী ছিল বর্তমান মুর্শিদাবাদ জেলার কালসোনা বা কর্ণসুবর্ণ। হিউয়েন সাং এর মতে, তার রাজধানী কর্ণসুবর্ণে মৃত্তিকা বিহারে অবস্থিত ছিল। আর এ কর্ণসুবর্ণ নগর চিরুটি ষ্টেশনের কাছে যদুপুর গ্রামে অবস্থিত ছিল।
খ. শশাঙ্কের কৃতিত্ব :
১. সার্বভৌম বাঙ্গালা রাজ্যের প্রতিষ্ঠা : প্রাচীন ভারতের ইতিহাসে বাংলা ছিল কাব্যে উপেক্ষার মত। বারে বারে উত্তর ভারতীয় শক্তি বাংলায় আধিপত্য করত, বাংলা কোন দিন আধিপত্যের কথা ভাবতে পারে নি। গৌড়াধিপতি শশাঙ্কই প্রথম ইতিহাসের এ. মোড় ঘুড়িয়ে দেন। সমগ্র বঙ্গে আধিপত্য বিস্তার করে দণ্ডভুক্তি, উৎকল, কঙ্গোদ, মগধ ও বারাণসী নিজ রাজ্যভুক্ত করেন। মালব রাজ দেবগুপ্তের সাথে সৌহার্দ্য স্থাপন করেন। স্বীয় শক্তি ও সামর্থ্যের বলে কৌণজ ও থানেশ্বর রাজ্যের বিরুদ্ধে অভিযানও পরিচালনা করেন ।
২. গৌড়ের উত্থান ঃ গৌড়ের উত্থানে শশাঙ্কের অবদান অনস্বীকার্য। গৌড় ছিল গুপ্ত রাজ্যভুক্ত। ষষ্ঠ শতাব্দীর শেষাংশে প্রায় অর্ধ-শতাব্দীকাল যুদ্ধের ফলে মহাসেন গুপ্ত ও মৌখড়ী রাজাগণ দুর্বল হয়ে পড়েন। পরবর্তীতে দক্ষিণে চালুক্য রাজ কীর্তিবর্মা ও উত্তর দিকে তিব্বতীয় রাজা শংসানের আক্রমণের ফলে গুপ্ত রাজবংশ এক ভয়াবহ অবস্থার সম্মুখীন হয়। এ ফাঁকে শশাঙ্ক সপ্তম শতকের শুরুতে এক স্বাধীন সার্বভৌম গৌড় রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন এবং আমৃত্যু গৌড়াধিপতি ছিলেন ।
৩. প্রজাহিতৈষী শাসক ও স্বয়ংসম্পূর্ণ অর্থনীতি গঠনের আয়োজক : শশাঙ্ক শুধুমাত্র একজন দুঃসাহসিক অভিযানকারী ছিলেন না তিনি প্রজাহিতৈষী শাসকও ছিলেন। তাঁর শাসনব্যবস্থা সম্পর্কে বিশদ কিছু জানা না গেলেও তাঁর প্রজাহিতৈষণা কম ছিল একথা বলা যায় না। রাজধানী কর্ণসুবর্ণ তাঁর আমলে এক সম্পদশালী নগরে পরিণত হয়। তিনি কেবল গৌড়ের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করেন নি, স্বয়ংসম্পূর্ণ অর্থনীতি গঠনেও তিনি আয়োজন করেন। মেদেনীপুরের দাতন বা দণ্ডভুক্তি অঞ্চলে শশাঙ্কের দীর্ঘ জলসেচ ব্যবস্থা তার প্রচেষ্টার সাক্ষ্য দেয়।
৪. কূটনৈতিক দক্ষতা : কূটকৌশলে শশাঙ্ক ছিলেন অদ্বিতীয়। তিনি মালবরাজ দেবগুপ্তের সাথে মিত্রতা স্থাপন করে মৌখড়ী রাজ গ্রহবর্মার ক্ষমতা হ্রাস করেন। বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে নিজ রাজ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে অসাধারণ কূটনৈতিক প্রজ্ঞার পরিচয় দেন। রাজ্যবর্ধনের সাথে তাঁর সংঘর্ষ কূটনৈতিক কলাকৌশলের পরিচায়ক।
৫. রাজ্য বিস্তার : শশাঙ্ক প্রথম থেকে রাজ্য বিস্তারে সচেষ্ট ছিলেন। প্রথমে তিনি দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে রাজ্য বিস্তারে সচেষ্ট হন। তিনি যে তাঁর রাজ্য দক্ষিণে চিলকা হ্রদ পর্যন্ত বিস্তার করেন তার প্রমাণ পাওয়া যায় ৬১৯ খ্রিস্টাব্দের গঞ্জাম তাম্রশাসনে। এ তাম্রশাসনের সাক্ষে একথা বলা যায় যে, ঐ সময়ে কঙ্গোদের সঠিক সীমানা জানা না গেলেও এটা নিশ্চিত যে চিলকা হ্রদের চতুরপার্শ্বস্থ এলাকা এবং সম্ভবত গঞ্জাম জেলার দক্ষিণাংশ পর্যন্ত কঙ্গোদ বিস্তৃত ছিল। এ সীমানা নির্ধারণ যদি সঠিক হয় তাহলে ধারণা করা হয় যে, শশাঙ্ক দণ্ডভুক্তি উৎকল নিজ রাজ্যভুক্ত করেন ।
৬. উত্তর ভারতের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ : উত্তর ভারতের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ তার সুকৃতিত্বের পরিচয় বহন করেছিল। শশাঙ্ক কর্তৃক উত্তর ভারতের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল মৌখড়ীদের বিরুদ্ধে স্বরাজ্য দৃঢ়ভাবে সংরক্ষণ। আর গৌড় ও মগধের পরবর্তী গুপ্তবংশীয় রাজাদের সাথে তাদের শত্রুতা ছিল। উত্তর ভারতে শশাঙ্কের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন থানেশ্বর রাজা। এ অঞ্চলে শশাঙ্কের অভিযান সম্পর্কে জানা যায় হিউয়েন সাং ও বানভট্টের রচনা থেকে । এ সময় কান্যকুজের মৌখড়ীরাজ গ্রহবর্মা শশাঙ্কের বিরুদ্ধে নিজ শক্তি বৃদ্ধির জন্য থানেশ্বরের পৃষ্যভুতিরাজ প্রভাকর বর্ধনের কন্যা রাজ্যশ্রীকে বিবাহ করেন। এদিকে কামরূপরাজ ভাস্করবর্মা শশাঙ্কের ভয়ে থানেশ্বর রাজ্যের সাথে মিত্রতা করেন। এদিকে শশাঙ্ক নিজ শক্তি বৃদ্ধির জন্য মানব রাজ দেবগুপ্তের সাথে মৈত্রী প্রতিষ্ঠা করেন। থানেশ্বর রাজ প্রভাকর বর্ধনের অসুস্থতার সুযোগে দেবগুপ্ত মৌখড়ীরাজ গ্রহবর্মাকে আক্রমণ করেন এবং গ্রহবর্মা নিহত হন। পরে দেবগুপ্ত নিজ সাফল্যে উল্লাসিত হয়ে মিত্রশক্তি শশাঙ্কের আগমনের জন্য অপেক্ষা না করে থানেশ্বর আক্রমণ করার জন্য প্রস্তুত হন । অন্যদিকে হর্ষচরিত্র থেকে আরো জানা যায় যে, থানেশ্বর রাজ প্রভাকর বর্ধনের মৃত্যুর পর জ্যেষ্ঠপুত্র রাজ্যবর্ধন সিংহাসনে আরোহণ করেন। ঠিক এ মুহূর্তে কান্যকুজ থেকে দূত এসে সংবাদ দেন যে, মালব রাজ দেবগুপ্ত গ্রহবর্মাকে পরাজিত ও নিহত করে রাজ্যশ্রীকে বন্দি করেছেন। এ সংবাদে রাজ্যবর্ধন হর্ষবর্ধনের হাতে রাজ্যভার ন্যস্ত করে কান্যকুব্জের দিকে অগ্রসর হন এবং দেবগুপ্তকে পরাজিত ও নিহত করেন। কিন্তু কৌনজের উপর নিজ আধিপত্য প্রতিষ্ঠা ও ভগ্নিকে উদ্ধার করার পূর্বে তিনি শশাঙ্কের হাতে নিহত হন। এ সম্বন্ধে সমসাময়িক তথ্যে ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার উল্লেখ আছে। বানভট্ট হর্ষচরিত্রে লিখেছেন যে, গৌড়ের রাজার মিথ্যা উপাচারে আশ্বস্ত হয়ে নিরস্ত্র রাজ্যবর্ধন একাকী শশাঙ্কের ভবনে গমন করেন এবং তৎকর্তৃক নিহত হন। "হর্ষচরিত্রের টীকাকার লিখেছেন যে, শশাঙ্ক তার কন্যার সাথে বিবাহের প্রলোভন দেখিয়ে রাজ্য বর্ধনকে স্বীয় প্রাসাদে আনয়ন করে ছদ্মবেশে তাকে হত্যা করেন। হিউয়েন সাং এর বিবৃতি অনুসারে রাজ্যবর্ধনের মন্ত্রিগণের দোষে তিনি শত্রুহাতে নিহত হন। হর্ষবর্ধনের লিপিতে বলা হয়েছে যে, সত্যানুরোধে রাজ্যবর্ধন শুক্রভবনে প্রাণ ত্যাগ করেন।" উপরিউক্ত তথ্যের উপর ভিত্তি করে শশাঙ্ককে বিশ্বাসঘাতকরূপে চিহ্নিত করা কোনক্রমেই যুক্তিসঙ্গত নয়। কারণ, বানভট্ট ও হিউয়েন সাং উভয়ে ছিলেন শশাঙ্ক বিদ্বেষী। বর্মা প্রসাদ চন্দ ও হিউয়েন সাং এ উক্তির অসারতা প্রমাণ করেন । যাহোক রাজ্যবর্ধনের মৃত্যু সংবাদ পেয়ে হর্ষবর্ধন থানেশ্বরের সিংহাসনে আরোহণ করেন এবং প্রতিজ্ঞা করেন, যদি নির্দিষ্ট দিনের মধ্যে গৌড় শশাঙ্ক শূন্য করতে না পারেন তাহলে নিজে অগ্নিতে আত্মাহুতি দেবেন। এর পর শশাঙ্কের বিরুদ্ধে তিনি অগ্রসর হন। কিন্তু পথিমধ্যে সংবাদ পান যে, ভগ্নি রাজ্যশ্রী বিন্ধ্যা পর্বতে আশ্রয় নিয়েছেন। তাই হর্ষবর্ধন ভগ্নিকে উদ্ধার করার জন্য সেনাবাহিনী পরিচালনার ভার ভণ্ডিকে প্রদান করে বিন্ধ্যা পর্বতে যান এবং ভগ্নিকে উদ্ধার করে গঙ্গাতীরে স্বীয় বাহিনীর সাথে মিলিত হন। এরপর হর্ষবর্ধনের সাথে শশাঙ্কের সংঘর্ষের কোন বিবরণ পাওয়া যায় না। তবে আর্যমঞ্জুশ্রীমূলকল্পে শশাঙ্কের পরাজয়ের বিবরণ থাকলেও এ তথ্য গ্রহণযোগ্য নয় । হিউয়েন সাং লিখেছেন, হর্ষবর্ধন ছয় বছর যাবত যুদ্ধ করে সমগ্র ভারতবর্ষ জয় করেন। তবে এ তথ্য ভিত্তিহীন। কারণ, হর্ষবর্ধন দাক্ষিণাত্যের রাজা পুলকেশীর হাতে পরাজিত হন। এদিকে ৬১৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত শশাঙ্ক সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন। গঞ্জাম তাম্রশাসনে এর প্রমাণ পাওয়া যায় । •
৭.ধর্মীয় পৃষ্ঠপোষক : শশাঙ্কের মুদ্রায় শিবের মূর্তি খোদিত থাকায় তিনি শৈব ধর্মের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন একথা বলা যায় । অন্যদিকে বৌদ্ধ গ্রন্থগুলোতে তাঁর বৌদ্ধ বিদ্বেষের কথা জানা যায়। হিউয়েন সাং এর মতে, শশাঙ্ক যে বৌদ্ধ বিদ্বেষী ছিলেন তাঁর প্রমাণ কার্যকলাপে পাওয়া যায়। যথা : ১. শশাঙ্ক কুশীনগরের বৌদ্ধ বিহার থেকে বৌদ্ধগণকে তাড়িয়ে দিয়ে বৌদ্ধ ধৰ্ম সমূলে ধ্বংস করতে চান। ২. পাটলীপুত্রে বুদ্ধের পদচিহ্ন অঙ্কিত একটি পাথর গঙ্গাজলে ভাসিয়ে দেন। ৩. বুদ্ধগয়ার বোধিবৃক্ষ ছেদ করে এর ডালপালা পানিতে ভাসিয়ে দেন। ৪. এবং একটি বৌদ্ধমূর্তি ধ্বংস করেন। এর ফলে দেখা যায়, শশাঙ্ক ক্ষত রোগে আক্রান্ত হন । শেষে এ রোগে মারা যান । তবে এ বর্ণনা পুরোপুরি গ্রহণযোগ্য নয় ।
@ শশাঙ্ককে বাংলার প্রথম গুরুত্বপূর্ণ রাজা বলা যায় : বাংলার ইতিহাসে শশাঙ্ক অকস্মাৎ উল্কার মত আবির্ভূত হন এবং কিছুকাল গৌরবের সাথে রাজত্ব করে পরে আবার বিলীন হয়ে যান। তবে তাঁর রাজত্বকাল ছিল গুরুত্বপূর্ণ। যদিও ভারতে তাঁর বংশ পরিচয় ছিল অজ্ঞাত তথাপিও নিজ শক্তি ও সাহসের বলে তিনি ইতিহাসের পাদ প্রদীপের সামনে এসে দাঁড়ান এবং নিজ যোগ্যতায় সাফল্য লাভ করেন। তিনি স্বাধীন গৌড় রাজ্যের গোড়াপত্তন করেন। নিজ পক্ষকে শক্তিশালী করার জন্য মালব রাজ দেবগুপ্তকে নিজ পক্ষে আনয়ন করেন। এছাড়া উত্তর ভারতের রাজনীতিতেও হস্তক্ষেপ করেন এবং সাফল্য লাভ করেন। এছাড়া যে বাংলা ছিল আদিকাল থেকে কাব্যে উপেক্ষার বিষয় সে ধারণা শশাঙ্ক পাল্টিয়ে দেন। শুধু রাজ্য বিস্তার নয় জনকল্যাণকর কার্য, প্রজাহিতৈষণা শাসনব্যবস্থা ও বৌদ্ধ ধর্মের বিস্তার সাধনে তিনি অবদান রাখেন। সুতরাং সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় তিনি যে বাংলার প্রথম সার্বভৌম রাজা ছিলেন এ কথা অনায়াসে বলা যায় ।
উপসংহার : আলোচনার শেষান্তে বলা যায়, শশাঙ্ক শুধু একজন শক্তিশালী শাসক ছিলেন না, তিনি ছিলেন দূরদর্শী কূটনৈতিক ও একজন মহান কর্ম বীর। রাজ্য জয় থেকে শুরু করে ধর্মীয় সকল ক্ষেত্রে তার সুতীক্ষ্ণ বুদ্ধিমত্তা ও কৃতিত্বের পরিচয় পাওয়া যায়। আর বাঙালির মধ্যে তিনি প্রথম বিজেতা যার আক্রমণে উত্তর ভারতীয় রাজনীতিতে বাংলার স্বকীয়তা প্রতিষ্ঠিত হয় এবং আমৃত্যু এ বিজয় গৌরব অক্ষুণ্ণ ছিল। যা গুপ্ত ও মৌর্য যুগে সম্ভব হয় নি। কিন্তু অদৃষ্টের পরিহাস তার কোন সভাকবি বা অমাত্য ছিলেন না, যিনি তার কীর্তি কাহিনী লিখে রাখতেন। তাঁর সম্পর্কে যা জানা যায় কেবল বিরোধী পক্ষীয় কলম থেকে মাত্র । তাই বাঙালির প্রথম জাতীয় রাজা বলে খ্যাত হওয়ার গৌরব অর্জন করলেও ইতিহাসে তিনি ধিকৃত ।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]