ভূমিকা ঃ সপ্তদশ শতাব্দীর বাংলার ইতিহাসে সে সকল স্বাধীন জমিদার মুঘল শাসনকে ধিক্কার জানিয়ে স্বাধীনভাবে স্ব-স্ব এলাকা শাসন করেন তাদেরকে বারভূঁইয়া বলা হয়। তারা বাংলায় মুঘল শাসনকে মনে প্রাণে মেনে নিতে পারেন নি। তাই সম্রাট আকবরের রাজত্ব ২৯ বছর এবং জাহাঙ্গীরের রাজত্বকালে প্রথম ছয় বছর বারভূঁইয়ারা ছিলেন নিয়ন্ত্রণকর্তা। এ সকল বড় বড় জমিদাররা 'জোর যার মুল্লুক তাঁর' নীতি অনুসরণ করে পার্শ্ববর্তী অঞ্চল দখল করতে সচেষ্ট থাকতেন। এমনকি মুঘল শাসনের বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধও গড়ে তোলেন। এ বারভূঁইয়াদের নেতা ছিলেন ঈশা খান। মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের রাজত্বকালে তাঁর সুযোগ্য সেনাপতি ইসলাম খান বারভূঁইয়াদের শক্তিকে ধ্বংস করে মুঘল শাসন নিষ্কণ্টক করেন ।
ক. বারভূঁইয়া কারা : সংস্কৃত শব্দ ভৌমিক থেকে ‘ভূইয়া' শব্দের উৎপত্তি হয়েছে, যার অর্থ জমির মালিক। সমসাময়িক কালে সামরিক কর্মচারীদেরকে জায়গির দেওয়া হতো। বারভূঁইয়াদের কেউ কেউ এ জায়গিরদারদের বংশধর ছিলেন। এছাড়া মুঘল শাসকরা রাজস্ব আদায়ের জন্য ইজাদার নিযুক্ত করতেন। কোন কোন ক্ষেত্রে এ ইজারাদারি বংশগত হয়ে পড়েছিল। পরবর্তীকালে এ ইজারাদাররা জমিদার নামে পরিচিত হন। আধুনিক ঐতিহাসিকদের মতে, এরা ছিলেন ভূঁইফোঁড় স্থানীয় জমিদার। কররাণী বংশের পতন এর সুযোগ নিয়ে এরা বাংলাদেশের বিভিন্নাংশে কতকগুলো স্থান দখল করে নেন। আর এরাই ইতিহাসে বারভূঁইয়া। বারভূঁইয়াদের নেতা ছিলেন সোনারগাঁও এর জমিদার ঈশা খান ও তাঁর পুত্র মুসা খান। এ বারভূঁইয়াদের শাসনকালকে বারভূইয়ার মুল্লুক বলা হতো ।
|
বারভূঁইয়া বলতে জমিদার সংখ্যা না বড় বড় অনেক জমিদার বুঝায় সে সম্পর্কে মতভেদ আছে। হেনরি রখম্যান, বেভারিজ, উইলফোর্ড তাদের বর্ণনায় বারজন ভূঁইয়ার উল্লেখ করলেও ডঃ ওয়াইজ সাহেব সাত জনের নাম মাত্র উল্লেখ করে পাঁচজনের বিবরণ দিয়েছেন। সমসাময়িক পরিব্রাজক ও লেখকগণের বর্ণনায়ও ভূঁইয়াদের সংখ্যা সঠিকভাবে উল্লিখিত হয় নি। তাঁরা বারয়ার তালিকা প্রণয়ন করেছেন কিন্তু একটির সাথে অপরটির কোন সামস্য নেই। সংখ্যার হেরফের ও তাঁদের নামের গোলক ধাঁধায় মনে করা হয়, একটি নির্দিষ্ট সময়ে সকল ভূঁইয়ার আবির্ভাব ঘটে নি। আকবর নামা ও বাহারিস্তান-ই-গায়বি অনুসারে এ ভূঁইয়াদের সংখ্যা ১২ জন পাওয়া যায় । তবে প্রকৃত পক্ষে বারভূঁইয়ার সংখ্যা ১২ জনে নির্দিষ্ট ছিল না। বার ভূঁইয়া বলতে বহু অনেক সংখ্যক ভূঁইয়া বা সামস্ত বুঝায়। যেহেতু তাদের ৩৪ জনের নাম পাওয়া যায়। সুতরাং বারভূঁইয়ার অর্থ বার জন নয় ।
খ. বারভূঁইয়াদের অবস্থানঃ নিম্নে বারভূঁইয়াদের বিবরণ দেওয়া হল
১. ইসা খান : বারভূঁইয়াদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা শক্তিশালী ছিলেন ঈশা খান। তিনি ছিলেন পূর্ব বাংলার ভাটি এলাকার (বৃহত্তম ঢাকা, ময়মনসিংহ, পাবনা, বগুড়া ও রংপুর) প্রভাবশালী স্বাধীন জমিদার। খিজিরপুর ছিল তাঁর শক্তির প্রধান কেন্দ্র। সোনারগাও ও খিজিরপুর এর নিকটবর্তী কাত্রা ছিল তাঁর রাজধানী। সৌর্যবীর্য ও রণ নৈপুণ্যে ঈশা খান সমকালীন ইতিহাসে শ্রেষ্ঠত্বের দাবিদার হিসেবে মুঘলদের বিরুদ্ধে দীর্ঘকাল যুদ্ধ করেন।
২. মুসা খান ঈশা খানের মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র মুসা খান ভাটি রাজ্যের অধিপতি হন। তিনিও তাঁর পিতার অনুসৃত শত্রুতার নীতি অনুসরণ করে চলতেন। সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে ঈশা খান মৌখিকভাবে মুঘলদের প্রাধান্য স্বীকার করতেন। কিন্তু ঈশা খান তাও করেন নি। তাঁর রাজধানী ছিল সোনারগাঁ। তিনি মুঘলদের বিরুদ্ধে বিরাট প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলেন।
৩. রাজা প্রতাপাদিত্য ঃ বারভূঁইয়াদের মধ্যে যশোরের রাজা প্রতাপাদিত্যের নাম উল্লেখযোগ্য। চাঁদ রায়ের মৃত্যুর পর তিনি সুন্দরবনের রাজা হন এবং পরে যশোর জমিদারি লাভ করেন। তাঁর রাজধানী ছিল যমুনা ও ইছামতী নদীর সঙ্গমস্থলে ধর্মঘাটি নামক স্থানে। তাঁর রাজ্য যশোর, খুলনা ও বাখরগঞ্জ জেলা নিয়ে গঠিত ছিল।
৪. রাজা কন্দর্প নারায়ণ ও পুত্র রামচন্দ্র রাজা কন্দপ নারায়ণের রাজ্য ছিল প্রতাপাদিত্যের রাজ্যের পূর্ব সীমান্তে । এ রাজ্যের অবস্থান সম্পর্কে বলা যায়, বর্তমান বাখরগঞ্জ জেলার কিয়দংশ নিয়ে গঠিত অঞ্চল। আর রাজা রামচন্দ্র ছিলেন কন্দপ নারায়ণের পুত্র। তিনি রাজা প্রতাপাদিত্যের জামাতা ছিলেন।
৫. চাঁদ রায় ও কেদার রায় : বিক্রমপুরের জমিদার চাঁদ রায়ের রাজধানী ছিল শ্রীপুরে। কেদার রায় ছিলেন তারই ভ্রাতা। কেদার রায় চাঁদ রায় অপেক্ষা শাসনকার্যে ও বীরত্বে অধিক পারদর্শী ছিল। কেদার রায় বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করে মুঘলদের কাছে পরাজিত ও নিহত হন। তাঁর রাজ্য মুঘলদের সাম্রাজ্যভুক্ত হয়।
৬. বাহাদুর গাজি : বাহাদুর গাজি ছিলেন সমকালীন ভূঁইয়াদের মধ্যে অন্যতম। তিনি ছিলেন ভাওয়ালের জমিদার। তাঁরও এক শক্তিশালী নৌবাহিনী ছিল। মুঘলদের বিরুদ্ধে তিনি মুসা খানকে সাহায্য করেন।
৭. সোনা গাজি ঃ ত্রিপুরার উত্তরাংশের সরাইল পরগনার জমিদার ছিলেন সোনা গাজি। তাঁরও বেশ কয়েকটি যুদ্ধ জাহাজ ছিল। অবশ্য পরে তিনি মুঘল প্রভুত্ব স্বীকার করেন।
৮. ওসমান খান : ওসমান খান ছিলেন সুবেদার ইসলাম খানের সময়ের সর্বাধিক প্রতাপশালী একজন ভূঁইয়া। তাঁর রাজ্য ছিল ময়মনসিংহের বোকাইনগর অঞ্চলে। প্রথমদিকে তিনি মুঘলদের দ্বারা উড়িষ্যা থেকে বিতাড়িত হন। ১৬২২ খ্রিস্টাব্দে শ্রিহট্টের অন্তর্গত দৌলম্বাপুরে সুবেদার ইসলাম খানের সাথে ওসমান খানের যুদ্ধ হয়। ওসমান খান বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করে পরাজিত ও নিহত হন।
৯. অনন্তমানিক্য : বর্তমান নোয়াখালী জেলা তাঁর জমিদারির অন্তর্ভুক্ত ছিল। ইনি লক্ষণ মানিক্যের পুত্র।
১০. সত্রাজিৎ : তিনি ছিলেন ভুষণার রাজা। ইনি মুসা খানের সাথে মিলিত হয়ে মুঘলদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মুঘলদের বশ্যতা স্বীকার করতে বাধ্য হন।
গ. বাংলার বারভূঁইয়াদের দমনে ইসলাম খান : সুদক্ষ শাসক, দুর্ধর্ষ সেনাপতি এবং বিচক্ষণ রাজনীতিক ইসলাম খান ছিলেন ফতেহপুর সিক্রির শেখ সলিম চিশতির দৌহিত্র। তিনি ১৬০৮ খ্রিস্টাব্দে সম্রাট জাহাঙ্গীর কর্তৃক বাংলার সুবাদার নিযুক্ত হন। বাংলার বারভূঁইয়াদের দমন করে এ প্রদেশে মুঘল শাসন প্রতিষ্ঠা সম্রাট জাহাঙ্গীরের রাজত্বের কৃতিত্বপূর্ণ কার্য।
শাসনভার গ্রহণ করে তিনি বুঝতে পারেন যে, বারভূঁইয়াদের নেতা মুসা খানকে দমন করতে পারলে তাঁর পক্ষে অন্যান্য জমিদারকে বশীভূত করা সহজ সাধ্য হবে। সেজন্য তিনি রাজমহল থেকে ঢাকায় রাজধানী স্থানান্তর করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। জমিদারদের নৌবাহিনীর মোকাবিলার জন্য তিনি শক্তিশালী নৌবহরের ব্যবস্থা করেন। ইসলাম খান স্থল ও জলপথে মুসা খান ও তাঁর মিত্রদের বিরুদ্ধে অভিযানের ব্যাপক আয়োজন করেন। কূটনীতির সাথে তিনি বারভূঁইয়াদের ঐক্য নষ্ট করতে চেষ্টা করেন। তিনি যখন রাজমহল থেকে ঘোড়াঘাট পৌঁছেন তখন যশোহরের জমিদার প্রতাপাদিত্য স্বেচ্ছায় তাঁর বশ্যতা স্বীকার করেন। বিষ্ণুপুরের বীর হামির, বীর ভূমের শামস খান ও হিজলির সলিম খান মুঘলদের আনুগত্য মেনে নিতে বাধ্য হন। ভূষণা অঞ্চলের জমিদার সত্যজিৎ কিছুকাল প্রতিরোধের পর মুঘল বাহিনীর সাথে যোগ দেন। তাঁর সাহায্যে মুঘলরা মজলিস কুতুবের ফতেহবাদ অধিকার করেন।
ইসলাম খান ১৬০৯ খ্রিস্টাব্দে অক্টোবর মাসে ঘোড়াঘাট থেকে করতোয়া নদীর তীর ধরে শাহজাদপুর পৌঁছেন এবং এর পূর্ব তীরে অবস্থিত মুসা খানের দুর্ভেদ্য যাত্রাপুর দুর্গ আক্রমণের জন্য প্রস্তুত হন। মুসা খান ও তাঁর মিত্রবাহিনী যাত্রাপুরের তিন মাইল দূরে ডাক চরায় আরও একটি দুর্গ নির্মাণ করেন। তাঁরা মুঘলদের বিরুদ্ধে তুমুল সংঘর্ষে লিপ্ত হন এবং তাদের যথেষ্ট ক্ষতি করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মুঘল বাহিনীর তীব্র আক্রমণের মুসা খান, মির্যা মুমিন, মধুরায় ও বিনোদ রায় দুর্গে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন। ইসলাম খান রাত্রে হঠাৎ যাত্রাপুর দুর্গ আক্রমণ করেন এবং এটা হস্তগত করেন। এর পর মুঘলরা একটি খাল খনন করে জল সংঘর্ষ ও অবিরাম গোলাগুলির পর তারা দুর্গ প্রাচীর ভেঙে ডাকচরায় প্রবেশ করতে সক্ষম হন। ডাকচরা হতে ইসলাম খান ঢাকায় প্রবেশ করেন। বাংলার রাজধানী স্থাপন করেন ঢাকায়। নতুন নাম দেন জাহাঙ্গীরনগর। অতঃপর বিভিন্ন স্থানে সৈন্য ও নৌবহর রাখার ব্যবস্থা করেন।
মুসা খান, মির্যা মুমিন, শামসুদ্দীন বাগদাদী ও অন্যান্য জমিদারদের দমন করার জন্য অগ্রসর হলে ১৬১১ খ্রিস্টাব্দে মুঘলদের সাথে জমিদারদের সংঘর্ষ বেধেছিল। মুঘল নৌবহর রাত্রিকালে হঠাৎ কত্রাবু দুর্গ অধিকার করেন। এরপর কদমরসুল ও মুসা খানের আরও কয়েকটি দুর্গ মুঘলদের হস্তগত হয়। পরে ইসলাম খান সোনারগাঁও অধিকার করেন। শামসুদ্দীন বাগদাদি, বাহাদুর গাজি ও মজলিস কুতব ইসলাম খানের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। বাধ্য হয়ে মুসা খানও আত্মসমর্পণ করেন।
বারভূঁইয়াদের নায়ক মুসা খানের আত্মসমর্পণের পর অন্যান্য জমিদাররা মুঘল সম্রাটের বশ্যতা স্বীকার করেন। কিন্তু যশোহরের রাজা প্রতাপাদিত্য প্রথমে আনুগত্য প্রকাশ করলেও পরে মুঘলদের বিরুদ্ধাচরণ করেন। ইসলাম খান প্রতাপাদিত্যের বিরুদ্ধে অভিযান প্রেরণ করলে সলকার নৌযুদ্ধে প্রতাপাদিত্য পরাজিত হন। পরে আত্মসমর্পণ করেন এবং তাকে বন্দি অবস্থায় ঢাকায় আনা হয়। ভুলুয়ার জমিদার অনন্তমানিক্য মুঘলদের বশ্যতা স্বীকার করেন নি। যুদ্ধে তিনি পরাজিত হয়ে পলায়ন করেন ।
বুকাইনগরের আফগান জমিদার উসমান খান লোহানি মুঘলদের চরমশত্রু ছিলেন। তিনি মুঘল সম্রাটের আধিপত্য মেনে নেন নি। ১৬১২ খ্রিস্টাব্দে ১২ মার্চ দৌলাম্বপুরে যুদ্ধে মুঘল বাহিনীর সাথে উসমান খান লোহানি বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করে পরাজিত ও নিহত হন। উসমান খানের মৃত্যুর পর আফগানরা মুঘলদের বশ্যতা স্বীকার করে নেয় ।
সুবাদার ইসলাম খানের বিচক্ষণতা ও কর্মকুশলতার ফলে নোয়াখালী ও শ্রীহট্ট পর্যন্ত সমগ্র বাংলায় মুঘল শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। বারভূঁইয়াদের শক্তি বিধ্বস্ত হয়। তবে ইসলাম খান বাংলার বাইরেও কিছু রাজ্য জয় করেন।
উপসংহার : উপরিউক্ত আলোচনা থেকে বলা যায় যে, বাংলার বারভূঁইয়ারা ছিলেন দেশাত্মবোধের প্রতীক। আর এ দেশাত্মবোধকে রক্ষা করার জন্য তাদেরকে অনেক যুদ্ধ ও ত্যাগ তিতিক্ষার শিকার হতে হয়। তবে শেষ পর্যন্ত সাম্রাজ্যবাদী শক্তির কাছে পদানত হন। তাই সম্রাট আকবর বঙ্গদেশে জয় করলেও সেখানে আধিপত্য স্থাপন করতে না পারার যে ব্যর্থতা তা ইসলাম খান সম্পন্ন করেন। আর সুবাদার ইসলাম খান এ কার্য সম্পন্ন করে খ্যাতি লাভ করে আছেন ।
FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত