লাহোর প্রস্তাবের গুরুত্ব ও প্রভাব
Importance and Influence of Lahore Resolution
১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দের লাহোর প্রস্তাব ব্রিটিশ ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। ভারতীয় উপমহাদেশের রাজনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে এর গুরুত্ব ও প্রভাব ছিল সুদূরপ্রসারী। বিশেষ করে স্বাধীন বাংলাদেশের ক্ষেত্র বা পটভূমি তৈরিতে এ প্রস্তাব ছিল ম্যাগনাকার্টা।
১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দের লাহোর প্রস্তাবের গুরুত্ব ও প্রভাব নিম্নরূপ :
শাসনতান্ত্রিক আন্দোলনের নবদিগন্ত উন্মোচিত : লাহোর প্রস্তাবের ফলে ভারতীয় উপমহাদেশে রাজনৈতিক ও শাসনতান্ত্রিক আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ হয়। লাহোর প্রস্তাব গ্রহণের পূর্বে মুসলিম লীগের রাজনীতি কংগ্রেস ও ব্রিটিশ সরকারের সাথে আপস মীমাংসা করে চলার গণ্ডিতে আবদ্ধ ছিল। কিন্তু লাহোর প্রস্তাব গ্রহণের মাধ্যমে মুসলমানরা ভারতের স্বায়ত্তশাসনের দাবি পরিত্যাগ করে নিজেদের পৃথক রাষ্ট্র গঠনের দাবি জানায় । মন্ত্র জাতিসত্তার বিকাশ : লাহোর প্রস্তাব প্রমাণ করে যে, ভারতের হিন্দু ও মুসলমানগণ এক জাতি নয়, তারা দুটি পৃথক জাতি । সুতরাং এক জাতি এবং এক রাষ্ট্র নীতির ভিত্তিতে মুসলমানদের জন্য পৃথক রাষ্ট্র দরকার । সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট : লাহোর প্রস্তাব হিন্দু-মুসলিম সাম্প্রদায়িক সম্পর্ক বিনষ্ট করে। হিন্দু নেতৃবৃন্দ লাহোর প্রস্তাবকে মেনে নিতে অস্বীকার করে। মহাত্মা গান্ধী লাহোর প্রস্তাবকে ‘ভারত বিভাগের ষড়যন্ত্র' এবং একে পাপ কাজ বলে অভিহিত করেন। পণ্ডিত জওহরলাল নেহেরু বলেন যে, লাহোর প্রস্তাব করে মুসলিম লীগ ভারতে ইউরোপের বলকান অঞ্চলের মতো রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবি করেছে।
১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে পাকিস্তান ও ভারত সৃষ্টি : ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দে লাহোর প্রস্তাব গৃহীত হলে ভারতীয় মুসলিম নেতৃবর্গ পাকিস্তান রাষ্ট্র গঠনে বদ্ধপরিকর হন। এ প্রস্তাবকে সামনে রেখে তারা ১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দে ক্রিপস মিশন এবং ১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দের মন্ত্রিমিশন পরিকল্পনা বর্ণনা করে। এরই ভিত্তিতে ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে ভারত স্বাধীনতা আইন প্রবর্তিত হলে পাকিস্তান ও ভারত নামক দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হয়।
১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দের ভাষা আন্দোলন : পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু হয় । কিন্তু বাঙালি জনগণ বিশেষ করে ছাত্র ও যুব সম্প্রদায় বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি রক্ষার জন্য ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন শুরু করে। লাহোর প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে ভাষা আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটে ।
১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দের প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচন : ১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে অভূতপূর্ব বিজয়ের পিছনে ছিল ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাবের প্রভাব, যা পূর্ব বাংলার রাজনীতিতে সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলেছে। এ নির্বাচন শুধু যে মুসলিম লীগের বিরুদ্ধে ছিল তা নয়, এ নির্বাচন ছিল বাঙালি স্বাধিকার আন্দোলনের প্রথম পদক্ষেপ ।
১৯৬৬ খ্রিষ্টাব্দের ৬ দফা : লাহোর প্রস্তাবের উপর ভিত্তি করে ১৯৬৬ খ্রিষ্টাব্দে শেখ মুজিবুর রহমান ৬ দফা দাবি উত্থাপন করেন। এ ৬ দফা ছিল বাঙালি জনগণের শোষণ ও বঞ্চনার হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার দাবি। ব্রিটিশ গণতন্ত্রের ইতিহাসে যেমন- ম্যাগনাকার্টা ও অধিকার বিল, ফরাসি বিপ্লবের অব্যাবহিত ফল যেমন- সাম্য ও স্বাধীনতার ধারণা, আমেরিকার স্বাধীনতা যেমন মৌলিক অধিকারের বিকাশ, ঠিক তেমনি ৬ দফা কর্মসূচি স্বাধীন বাংলাদেশের ভিত্তি
অখণ্ড স্বাধীন বাংলা রাষ্ট্র গঠনের প্রয়াস ও উপমহাদেশের বিভক্তি, ১৯৪৭
FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত