সমাট আকবরের রাজ্য বিস্তার নীতি আলোচনা কর।

ভূমিকা : ভারতের ইতিহাসে মহামতি আকবর ছিলেন অন্যতম শ্রেষ্ঠ শাসক। এ মহান বীর ভারতের জনগণের অন্তরে, স্মৃতিতে একজন মহান সম্রাট হিসেবে অমর হয়ে রয়েছেন। অতুল চন্দ্র রায় ও প্রণব কুমার চট্টোপ্যাধায়ের মতে, “১৫৫৬ খ্রিঃ আকবর বাংলার সিংহাসনে উপবিষ্ট হন। সে সময় ভারত ছিল বিভিন্ন রাজ্যে বিভক্ত এবং হিন্দু ও মুসলমান রাজন্যবর্গ কর্তৃক শাসিত। ১৬০৫ সালের মধ্যে সমগ্র উত্তর ভারতে মুঘল সাম্রাজ্য বিস্তার করেন। আকবর ছিলেন ঘোর সাম্রাজ্যবাদী। তাই ভারতের রাষ্ট্রীয় অখণ্ডতা অর্জনের জন্য একচ্ছত্র প্রভুত্ব স্থাপন ও একই ধরনের শাসনব্যবস্থা প্রবর্তন করাই ছিল তার রাজ্য বিস্তারের প্রধান লক্ষ্য।" দিগ্বিজয় সম্বন্ধে তার আদর্শ ছিল- "A monarch should ever be intent on conquest otherwise his neighbour rise in arms against him. " প্রকৃতপক্ষে ১৫৫৮-১৬০১ খ্রিঃ মধ্যে একটি বৃহৎ অত্যন্ত শক্তিশালী সাম্রাজ্য গড়ে তুলতে সমর্থন হন। যা তাকে ভারত তথা বিশ্বের ইতিহাসে শ্রেষ্ঠ শাসকে পরিণত করেছে। Ishwari prasad বলেন, "Akbar is one of the most remarkable kings not only in the history of India but of the whole world."
রাজ্য বিস্তার : সম্রাট আকবরের সাম্রাজ্য বিস্তার তিনভাগে বিভক্ত- ১৫৫৮-১৫৭৬ সালের মধ্যে সমগ্র উত্তর ভারত বিজয়।
১৫৮০- ১৫৯৬ সালের মধ্যে উত্তর পশ্চিম সীমান্ত সিন্ধু এবং কান্দাহার বিজয় ।
১৫৯৮-১৬০১ সালের মধ্যে দাক্ষিণাত্যের আহম্মদনগর এবং খান্দেশ জয় ।
পানি পথের ২য় যুদ্ধের পর আকবর বৈরাম খার সাহায্যে দিল্লী, আগ্রা, গোয়ালিয়র ও জৌনপুর অধিকার করেন। এর পর তিনি ধারাবাহিকভাবে রাজ্যবিস্তারে মনোনিবেশ করেন ।
উত্তর ভারত বিজয় ঃ আকবর উপলব্ধি করেন যে, মুঘল সাম্রাজ্যের নিরাপত্তার জন্য এবং পশ্চিম ও দক্ষিণ ভারতে মুঘল প্রভুত্ব স্থাপন করার জন্য রাজপুতদের সহযোগিতা ও মৈত্রী একান্ত প্রয়োজন। তাই তিনি প্রথম রাজপুতদের সাথে মিত্রতা স্থাপন করেন এবং আনুগত্য লাভ করেন। এটা সম্ভব হয়েছিল রাজপুত কন্যাদের সাথে বৈবাহিক সূত্রের মাধ্যমে । আকবরের উত্তর ভারত বিজয়ের উদ্দেশ্য, পরিকল্পনা ও কারণসমূহ ঃ রাজপুতদের সাথে মৈত্রী স্থাপন তথা বৈবাহিক সম্বন্ধ স্থাপন করার মাধ্যমে যোধপুর, জয়সলমীর ধুদী প্রভৃতি স্থানের রাজপুত রাজারা বশ্যতা স্বীকার করে । আকবর মেবারের রাজধানী চিতোর জয় করার অভিপ্রায়ে রাণা উদয় সিংহের আনুগত্য চাইলে তিনি আকবরকে- ১. অপরিচ্ছন্ন বিদেশী বলে অভিহিত করেন ।
২. মালবের রাজ্যচ্যুত রাজা বাহাদুর শাহকে আশ্রয় দিয়েছিলেন । ৩. মেবার ছিল শক্তিশালী রাজ্য ও গুজরাট বিজয়ের পথে অন্তরায়। গুজরাট ব্যবসায় বাণিজ্যের দিক দিয়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল :
১. হজ্জ যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য গুজরাট অভিযান গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
২. ইতিমাদ খাঁ আকবরকে গুজরাট বিজয়ে আমন্ত্রণ করেন ।
দাউদ খান কররানী মুঘলদের প্রভুত্ব অস্বীকার করলে বাংলাদেশে অভিযান প্রেরিত হয়। নিম্নে সংক্ষেপে আকবরের উত্তর ভারত অভিযানের বিবরণ দেওয়া হল :
১. উত্তর ভারত বিজয় (১৫৬১ খ্রিঃ) : রাজত্বের প্রথম ভাগে সম্রাট আকবর দিল্লী, আগ্রা, আজমীর, গোয়ালিয়র ও জৌনপুর অধিকার করেন। অতঃপর ১৫৬১ সালে আকবরের সেনাপতি আদম খান মালব অধিকার করেন এবং পীর মোহাম্মদকে তথাকার শাসনকর্তা নিযুক্ত করেন। কিন্তু পীর মোহাম্মদের প্রশাসনিক দুর্বলতার সুযোগে রাজ বাহাদুর মালব পুনরুদ্ধার করেন। অতঃপর আকবর আব্দুল্লাহ উজবেককে মালবে প্রেরণ করলে তিনি রাজা বাহাদূরকে বিতাড়িত করে মালব মুঘল সাম্রাজ্যভুক্ত করেন।
২. গন্ডোয়ানা বিজয় (১৫৬৪ খ্রীঃ) ১৫৬১ খ্রিঃ মানব বিজয়ের আকবর মধ্য এশিয়ার গন্ডোয়ানারা রাজ্যের পূত দিগের প্রতি দৃষ্টিপাত করেন। তিনি কারা প্রদেশের শাষক আসফ খানকে গন্ডোয়ায়ানর রানী দুর্গাবতীর বিরুদ্ধে অভিযান প্রেরন করতে নির্দেশ দেন। দূর্গাবতী বিপুল বিক্রমে যুদ্ধ পরিচালনা করে পরাজিত হয়ে আত্মহত্যা করেন। বালক বীর নারায়নও জবনাপুরে সংগঠিত উক্ত যুদ্ধে স্বীয়দেমের স্বাধীনতা রক্ষার্থে প্রানপনে লড়ে আত্মহুতি দেন। এভাবে গান্ডোয়ানা মোঘল বাহিনীর হস্তগত হয়।
৩. চিতোর বিজয় (১৫৬৭১-১৫৬৮ খ্রিঃ) চিতোর অবরোধ আকবরে অন্যতম সামরিক চিতোর দূর্গের সামরিক গুরুত্ব মোঘল সম্রাটের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ঐতিহাসিক আবুল ফজলের মতে, উদয় সিংহের উদ্ধত স্বভাব ও শৌর্যবীর্য ধ্বংস করিবার জন্য সম্রাট আকবর সংকল্প গ্রহন করিয়া ছিলেন। ১৫৬৭ খ্রিঃ তিনি বিরাট সৈন্যবাহিনী সহ উদয় সিংহের বিরুদ্ধে আগ্রসর হইলেন। সম্রাটের আগ্রসর হইবার খবর পাইয়া উদয়সিংহ জয়মল ও পাট্রার হাতে রাজধানীর দায়িত্ব অর্পন করিয়া পবর্তাশ্রয়ে পালাইয়া গেলেন। কিন্তু জয়মল ও পাট্টা যুদ্ধ ক্ষেত্রে প্রানত্যাগ করিলেন । রাজপূতগন শেষ পর্যন্ত সাহসের সঙ্গে যুদ্ধ করিয়া পরাজিত হইল। অতঃপর আকবর চিতোর দুর্গ অধিকার করিলেন। ৪. রনথম্বোর জয় (১৫৬৯খ্রি) ঃ চিতোরের পর রনথম্বোর আক্রানত হলে রাজপুত নরপতি সরজন হারা পরাজিত হয়ে সন্ধি সহাপন করেন। সন্ধিসূত্রে ডোজ ও দুদা নামক দুই পুত্রকে তিনি মোঘল দরবারে প্রেরন করেন। রনথম্বোর মোঘল সম্রাজ্য ভূক্ত হয়।
৫. কালিঞ্জর জয় (১৫৬৯ খ্রিঃ) : ১৫৬৯ সালে কালিঞ্জরের শাসক রামচন্দ্র রনথম্বোরের পতনের সংবাদে ভীত ও সম্রস্থ হয়ে আকবরের নিকট আত্মসমর্পণ করেন। এলাহাবাদের নিকট কালিঞ্জর রাজকে জায়গীর প্রদান করা হয় এবং কালিঞ্জরের শাসনভার মুঘল সেনাপতি মজনু খানের হস্তে অর্পণ করা হয়।
৬. গুজরাট বিজয় (১৫৭২ খ্রিঃ) : মালব জয় এবং রাজপুতদের শক্তি খর্ব করে আকবর গুজরাটের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার সংকল্প গ্রহণ করেন। গুজরাটের অরাজকতা ও অশান্তি অবসান কল্পে তথাকার মন্ত্রী ইতমদ খান আকবরের সাহায্য প্রার্থনা করলে ১৫৭২ সালে আকবর স্বয়ং গুজরাট আক্রমণ করেন এবং মুজাফফর শাহ অরণ্যে আত্মগোপন করেন। ফলে গুজরাটে মুঘল আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হলে সম্রাট উহার শাসনভার টোডর মলের হাতে ন্যাস্ত করেন। ঐতিহাসিক স্মিথ বলেন, "The conquest of Gujrat marks an important epoch in Akbar's History."
৭. বাংলা বিজয় (১৫৭৪-৭৬ খ্রিঃ) : গুজরাট বিজয়ের পর আকবর বঙ্গদেশ আক্রমণের পরিকল্পনা করেন। ১৫৬৪ সালে বাংলায় কররানী রাজবংশের প্রভুত্ব কায়েম। কররানীরা স্বাধীনভাবে রাজত্ব করলেও সম্রাট আকবরের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক কায়েম করেন। সুলায়মানের পুত্র দাউদ খান বাংলার সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হয়ে আকবরের কর্তৃত্ব অস্বীকার করেন। ফলে আকবর তার বিরুদ্ধে মুনিম খানকে ২০,০০০ সৈন্যসহ প্রেরণ করে সুরুজগড়, মঙ্গের, ভাগলপুর, কহলগা প্রভৃতি অধিকার করেন। দাউদ খান উড়িষ্যায় পলায়ন করেন। কিন্তু ১৫৭৫ সালে মুনিম খান মৃত্যুবরণ করলে দাউদ খান সমগ্র বাংলা পুনরুদ্ধার করেন। সম্রাট আকবর ক্রুদ্ধ হয়ে তার বিরুদ্ধে বিশাল সৈন্যবাহিনী প্রেরণ করলে ১৫৭৬ সালে দাউদ খান বন্দী ও নিহত হন। বাংলা মুঘল সাম্রাজ্যভুক্ত হয়। ঈশ্বরী প্রসাদ বলেন, "With Daud fell the independent kingdom of Bengal which had lasted for nearly 240 years. The whole country of Bengal and Bihar became sublect to Akbar and was he neceforward governed by the imperial viceroys." f বাংলার বার ভূঁইয়ারা আকবরের প্রভুত্ব স্বীকার না করায় আকবর টোডরমলকে তাদের দমনার্থে প্রেরণ করেন।
উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত বিজয় ঃ
আকবরের উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত অভিযানের উদ্দেশ্য :
মুঘল সাম্রাজ্যের সূচনা থেকে কাবুল ভারতীয় রাজনীতির বৃত্তে অঙ্গিভূত হয়। কাবুলের উপর কর্তৃত্ব বজায় রাখার জন্য কান্দাহার ও হিরাটের উপর নিয়ন্ত্রণ কায়েম করার প্রয়োজন ছিল। কান্দাহার মুঘল সাম্রাজ্যের প্রথম রক্ষা প্রাচীর রূপে বিবেচিত হতো।
উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে মুঘল সম্রাটগণ দুর্ধর্ষ উপজাতিদের নিয়ন্ত্রণ করতে চেয়েছিলেন। আকবর সিন্ধু অঞ্চলের দক্ষিণাঞ্চল জয় করতে প্রয়াসী হন। কারণ, এ ছাড়া উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে মুঘল আধিপত্য স্থাপন সম্ভব ছিল না ।
→ সম্রাট আকবরের উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত বিজয়ের অভিযানসমূহ :
১. কাবুল জয় (১৫৮১ খ্রিঃ) : কাবুলের শাসনকর্তা মির্জা মুহাম্মদ হাকিম বঙ্গদেশের বিদ্রোহের দ্বারা অনুপ্রাণীত হয়ে পাঞ্জাব আক্রমণ করার জন্য লাহোর পর্যন্ত অগ্রসর হলেন। ১৫৮১ খ্রিঃ আকবর নিজে কাবুল আক্রমণ করার জন্য অগ্রসর হলেন। তার আগমনের সংবাদ শুনে মুহাম্মদ হাকিম কাবুলে আসলে আকবরের নিকট তিনি আত্মসমর্পণ করলেন এবং কাবুলকে আকবরের অধীন বলে ঘোষণা করলেন। মুহাম্মদ হাকিমের মৃত্যুর পর কাবুল মুঘল সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয় এবং মানসিংহ সেখানকার শাসনকর্তা নিযুক্ত হন।
2. কাশ্মীর জয় : কাশ্মীরের শাসনকর্তা ইউসুফ শাহের উৎপীড়নে কাশ্মীরবাসী অতিষ্ট হয়ে উঠে। আকবর রাজা ভগবান দাসের নেতৃত্বে সেখানে একটি অভিযান প্রেরণ করে ইউসুফ শাহকে পরাজিত করে কাশ্মীরকে কাবুলের অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
সিন্ধু বিজয় (১৫৯০ খ্রিঃ) ঃ ১৫৭৪ সালে বাককার উপজাতিদের দমন করলেও দক্ষিণ সিন্ধুর এক বিরাট অঞ্চ মুঘল সাম্রাজ্যের কর্তৃত্বের বাইরে থেকে যায়। অতঃপর ১৫৯০ সালে মির্জা আব্দুর রহিমকে সুলতানের গভর্নর নিযুক্ত করে তাকে সিন্ধু ও বেলুচিস্থান বিজয়ের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। তিনি ১৫৯১ সালে মীর্জা জানি বেগমকে পরাজিত করে সিন্ধু ও বেলুচিস্থান অধিকার করেন ।
৪. কান্দাহার বিজয় : তৎকালীন পারস্যরাজ তুর্কি উজবেক বিদ্রোহ দমনে ব্যস্ত থাকায় ১৫৯৫ সালে আকবরের বহু দিনের প্রতীক্ষিত কান্দাহার বিজয় সম্পন্ন হয়। V. D. Mahajan বলেন, "Undoubtedly the conquest of was a master stroke of diplomacy on the port of Akbar." quandahar
৫. উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত নীতি : উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত ভারতের শাসকদের নিকট চিরকালই এক জটিল সমস্যা ছিল। ত্রয়োদশ ও চতুর্দশ শতাব্দীতে মোঙ্গল আক্রমণ প্রতিহত করার উদ্দেশ্য দিপালপুরে প্রতিরক্ষা সামরিক ঘাটি ছিল। রাজনৈতিক, সামরিক ও অর্থনৈতিক গুরুত্বের দিক দিয়ে উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত রক্ষার বিশেষ প্রয়োজন ছিল। আকবর ইতিপূর্বে কাশ্মীর, সিন্ধু, বেলুচিস্থান, পূর্ব মাকরান ও কান্দাহার অধিকার করে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত প্রদেশের বিদ্রোহী ইউ জাইদের দমনের জন্য টোডরমলকে প্রেরণ করেন এবং সে অভিযান সফল হয়।
→ দাক্ষিণাত্য বিজয় ঃ আকবরের দাক্ষিণাত্য বিজয়ের উদ্দেশ্য ছিল নিম্নরূপ ঃ
১. দাক্ষিণাত্যের রাজ্যগুলোর মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্বের অবসান ঘটানো ।
২. পর্তুগীজদের দৌরাত্ম বন্ধ করা।
৩. উত্তর ভারতের সঙ্গে সংযুক্তি ঘটিয়ে মুঘল সার্বভৌমত্ব সুপ্রতিষ্ঠিত করা।
দাক্ষিণাত্য অভিযানসমূহ :
১. খান্দেশ জয় (১৫৭৬ খ্রিঃ) : মুঘল সাম্রাজ্যের সীমান্তে খান্দেশ রাজ্যের উপস্থিতি স্বাভাবিকভাবেই আকবরের দৃষ্টিকে প্রথমেই আকৃষ্ট করে। সামরিক গুরুত্ব বিচার করে আকবর খান্দেশে প্রথমে অভিযান প্রেরণ করেন তা জয়ের জন্য। মুঘল বাহিনী রাজা আলী খাঁকে বন্দী করে। খান্দেশ রাজা মুঘল সম্রাটকে কর দিতে বাধ্য হয়। ফলে মুঘলদের অবশিষ্ট অংশ জয় করার পথ প্রশস্ত হয়। "Akbar the great" গ্রন্থে A. L. Shribastab বলেন, "That kingdom became a vassal state of the empire and thus packed the way for the future conquest of the rest of the Deacon." (page-389. vol-1)
২. আহম্মেদ নগর বিজয় (১৬০০ খ্রিঃ) : ১৫৯৫ খ্রিঃ আকবরের ২য় পুত্র শাহাজাদা মুরাদ ও খান-ই-খানান আঃ রহিমের নেতৃত্বে মুঘল বাহিনী আহম্মদনগর অবরোধ করতে সক্ষম হলেন। আহম্মদ নগরের সুলতানের পিতৃযুসা ও হুসেন নিজাম শাহের কন্যা চাদরিবি বা চাদ সুলতানা আহম্মদ নগরের সুলতানের নাবালকত্বে আহম্মদ নগরের শাসন কার্য পরিচালনা করতেন। বীরত্বের সাথে লড়াই করে শেষ পর্যন্ত চাদবিবি মুঘলদের সাথে সন্ধি চুক্তিতে আবদ্ধ হলেন। ১৫৯৬ সালে সুলতানা আকবরের নিকট বেরার সমার্পণের প্রস্তাব দিয়ে সন্ধি করেন। চাদ সুলতানা ১৬০০ সালে গুপ্ত ঘাতক কর্তৃক নিহত হলে মুঘল বাহিনী আহম্মদনগর অধিকার করে।
৩. আকবরের সাম্রাজ্য বিস্তারের ফলাফল : আকবরের ক্রমাগত সাম্রাজ্য বিজয়ের ফলে সমগ্র ভারতবর্ষ তাঁর অধিকারে আসে। আলাউদ্দিন খলজি ব্যতিত অপর কোন নৃপতি এরূপ বিশাল সাম্রাজ্য ইতিপূর্বে জয়লাভ করতে পারেন নি। আব্দুল করিমের মতে, “১৫৮-১৬০১ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে সম্রাট আকবর এক বৃহৎ ও অত্যন্ত শক্তিশালী রাজ্য গড়ে তোলেন।”
৪. আকবরের কৃতিত্ব : আব্দুল করিমের মতে, “মাত্র চৌদ্দ বৎসর বয়সে তিনি সিংহাসনে আরোহণ করেন। তার সিংহাসন লাভের সঙ্গে সঙ্গে রাজধানী দিল্লী শত্রুদের হাতে অধীনস্ত হল। তার পক্ষে এতবড় সাম্রাজ্য গঠন করা নিঃসন্দেহে বিশেষ কৃতিত্বপূর্ণ।” স্মিথের মতে, “ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ নৃপতিদের মধ্যে আকবর একটি বিশিষ্ট স্থান দাবি করতে পারেন।" অতুল চন্দ্র রায়ের মতে, “কৃতিত্বের দিক দিয়ে বিচার করলে আকবরকে বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সম্রাট বলে অভিহিত করা যায়। তিনিই ছিলেন মুঘল সাম্রাজ্যের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা।'
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, রাজ্য জয় ও সম্প্রসারণের ইতিহাসে আকবর শুধু ভারতের ইতিহাসেই নয় বরং, সর্বকালের ইতিহাসে একজন অন্যতম শ্রেষ্ঠ সম্রাটরূপে স্বীকৃতি লাভ করেন। তার সাম্রাজ্য আরব সাগর হতে বঙ্গোপসাগর এবং হিমালয় হতে নর্মদা পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। অতুল চন্দ্র রায়ের মতে, “মুসলমান শাসকদের মধ্যে আকবরই সর্বপ্রথম ভারতে এক সুদৃঢ় ও সুসংহত সম্রাজ্য গড়ে তুলতে প্রয়াসী হন। "

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]