১৯৫৪ সালের নির্বাচনের প্রেক্ষাপট ও তাৎপর্য ব্যাখ্যা কর।

ভূমিকাঃ ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলার নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা বেনিয়াদের হাতে চলে যায় । এ বেনিয়ারা প্রায় ২০০ বছর তাদের শোষণ ও নির্যাতন বহাল রাখেন। পরে দেখা যায় ১৯৪৭ সালে বাঙালিরা ব্রিটিশদের কবল থেকে মুক্ত হন বটে কিন্তু পরে বাঙালিরা আবার পশ্চিমা শাসকচক্রের খপ্পরে পড়ে যান। প্রথমে পশ্চিমা শাসকচক্র আঘাত হানে বাঙালির ভাষা সংস্কৃতির উপর। কিন্তু এতে বাঙালিরা জয়যুক্ত হন। পূর্বের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পাকিস্তানের প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচন ১৯৫১ সালে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠী অনেক ধাপ্পাবাজি করে সে নির্বাচনের ঘোষণা দেন ১৯৫৫ সালে। ফলে ১৯৫৪ সালে পূর্ব পাকিস্তানের কয়েকটি রাজনৈতিক দল একত্রিত হন 'যুক্তফ্রন্ট' নাম নিয়ে। এ যুক্তফ্রন্ট গঠন করার উদ্দেশ্য ছিল মুসলিম লীগকে বিজিত করার জন্য ।
১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনের পটভূমি : ১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাবের উত্থাপক শেরে বাংলা এ.কে ফজলুল হক মুসলিম লীগ থেকে বের হয়ে এসে 'কৃষক শ্রমিক পার্টি' নামে একটি দলে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৩৭ সালের নির্বাচনে শেরে বাংলা ফজলুল হকের অবদান ছিল সর্বাধিক। ১৯৪৬ সালের নির্বাচনে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর অবদান ছিল সর্বাধিক। এ নির্বাচনের পর অগণতান্ত্রিক উপায়ে নাজিম উদ্দিন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী নিযুক্ত হন। এ অন্যায়মূলক ঘটনার প্রতিবাদ করে ১৯৪৯ সালে আওয়ামী মুসলিম লীগের জন্ম হয়। ফলে বাঙালিদের আন্দোলনের ক্ষেত্রে অগ্রসর হওয়ার পথ প্রশস্ত হয়। অন্যদিকে, ভাষা আন্দোলনের প্রেরণা বাঙালিদের মধ্যে নতুন আশা-আকাঙ্ক্ষার জন্ম দেয়। তাই ১৯৫৪ সালে নির্বাচনের কথা ঘোষিত হলে আওয়ামী লীগ, কৃষক শ্রমিক দল, নেজামে ইসলাম প্রভৃতি ঐকমত্যে এসে যুক্তফ্রন্ট নামে একটি ঐক্যজোট গঠন করেন। এ জোটের প্রতীক ছিল নৌকা। নির্বাচনের প্রাক্কালে যুক্তফ্রন্ট ২১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এ একুশ দফা হল-
বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করা হবে।
বিনা খেসারতে জমিদারি প্রথা ও খাজনা আদায়কারী মধ্যস্বত্ব উচ্ছেদ করে ভূমিহীন কৃষকদের মধ্যে উদ্বৃত্ত জমি বণ্টনের ব্যবস্থা করা হবে। উচ্চহারের খাজনা ন্যায়সঙ্গতভাবে হ্রাস ও সার্টিফিকেট জারি করে খাজনা আদায় করার প্রথা রহিত করা হবে।

পাট ব্যবসায় জাতীয়করণ ও পাটের ন্যায্য মূল্য প্রদান করা হবে। মুসলিম লীগ মন্ত্রিসভার শাসনামলে পাট কেলেঙ্কারি তদন্ত ও অপরাধীদের শাস্তি প্রদান করা হবে।'
সমবায় কৃষি পদ্ধতির প্রবর্তন এবং সরকারি সাহায্যে কুটিরশিল্পের উন্নতি সাধন করা হবে।
৫. পূর্ববাংলাকে লবণের ক্ষেত্রে স্বয়ংসম্পূর্ণ করা হবে। মুসলিম লীগ শাসনামলে লবণ কেলেঙ্কারি তদন্ত ও দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি প্রদান করা হবে।
৬. অবিলম্বে বাস্তুহারাদের পুর্নবাসন করা হবে। १. সেচ ব্যবস্থার উন্নতি সাধন, বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও দুর্ভিক্ষ রোধ করা হবে।
৮. পূর্ববাংলাকে শিল্পায়িত করা এবং শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করা হবে।
৯. অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থার প্রবর্তন ও শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধি করা হবে।
১০. সরকারি ও বেসরকারি বিদ্যালয়ের ব্যবধান দূর করা হবে এবং বাংলা ভাষাকে শিক্ষার মাধ্যম করা হবে।
১১. বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত সকল কালাকানুন বাতিল করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে স্বায়ত্তশাসন প্রদান করা হবে।
১২. প্রশাসনিক ব্যয় সংকোচন ও কর্মচারীদের বেতনের সামঞ্জস্য বিধান করা হবে।
১৩. ঘুষ, দুর্নীতি বন্ধ করা, সম্পত্তির হিসাব গ্রহণ করা এবং ১৯৪০ সাল থেকে অর্জিত অবৈধ সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হবে ।
১৪. সকল নিরাপত্তা বন্দিকে মুক্তিদান, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও বাকস্বাধীনতার নিশ্চয়তা বিধান করা হবে।
১৫. শাসন বিভাগ থেকে বিচার বিভাগকে পৃথক করা হবে।
১৬. বর্তমান হাউসকে আপাতত ছাত্রাবাস এবং পরে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের গবেষণাগার করা হবে। ১৭. বাংলা ভাষার জন্য শহীদদের সম্মানে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হবে।
১৮. একুশে ফেব্রুয়ারিকে শহীদ দিবস এবং সরকারি ছুটির দিন ঘোষণা করা হবে।
১৯. লাহোর প্রস্তাব অনুযায়ী পূর্ববাংলাকে আঞ্চলিক স্বায়ত্ত্বশাসন প্রদান, পূর্ববাংলায় নৌবাহিনীর সদরদপ্তর স্থাপন, অস্ত্র
কারখানা নির্মাণ এবং আনসার বাহিনীকে মিলিশিয়া হিসেবে গড়ে তোলার ব্যবস্থা করা হবে। ২০. যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভার দ্বারা আইনসভার আয়ু বর্ধিত করা হবে না। সাধারণ নির্বাচনের ছয়মাস পূর্বেই মন্ত্রিত করবে এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হবে।
২১. আইনসভার শূন্যপদ তিন মাসের মধ্যে পূরণ করা হবে এবং পরপর তিনটি উপনির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট প্রার্থীরা পরাি হলে মন্ত্রিসভা সেচ্ছায় করবে।
নির্বাচনের ফলাফল : ১৯৫৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে পূর্ববাংলা আইন পরিষদের মোট আসন সংখ্যা ৩০৯টি। এর মধ্যে মুসলিম আসন ছিল ২৩৭টি এবং অমুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য ৭২টি আসন সংরক্ষিত ছিল। মুসলিম আসনের মধ্যে যুক্তফ্রন্ট ২২৩টি, মুসলিম লীগ ৯টি, নির্দলীয় সদস্যগণ ৪টি, খেলাফত রবানী পার্টি ১টি আসন করেন। অমুসলিমদের জন্য ৭২টি সংরক্ষিত আসনের মধ্যে কংগ্রেস ২৪টি, তফসিলি ফেডারেশন ২৭টি, যুক্তফ্রন্ট ১০৯ খ্রিস্টান সম্প্রদায় ১টি, বৌদ্ধ সম্প্রদায় ২টি, কমুনিস্ট পার্টি ৪টি এবং নির্দলীয় সদস্যগণ ১টি আসন লাভ করেন। অর্থাৎ ৩০৯ আসন বিশিষ্ট প্রাদেশিক আইনসভায় যুক্তফ্রন্ট ২৩৬টি আসন লাভ করেন।
মন্ত্রিসভা গঠন : নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট সাফল্য লাভ করেন এবং মুসলিম লীগের শোচনীয় পরাজয় হয়। মুখ্যমন্ত্রী নুরুল আমীন স্বয়ং এ নির্বাচনে একজন আইন ক্লাসের ছাত্রের কাছে এমনভাবে পরাজিত হন যে, তাঁর জামানতের টাকা পর্যন্ত বাজেয়াপ্ত হয়ে যায়। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী নির্বাচনের পর মন্ত্রিসভা গঠন নিয়ে টালবাহানা শুরু করেন। যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভা যাতে গঠিত হতে না পারে এজন্য তারা তৎপর হন। কিন্তু সব রকম বিরোধিতা সত্ত্বেও পূর্ব পাকিস্তানের চৌধুরী খালেকুজ্জামানের প্রচেষ্টায় শেরে বাংলা এ.কে ফজলুল হকের নেতৃত্বে মন্ত্রিসভা গঠিত হয়। এ মন্ত্রিসভার (৩ এপ্রিল/৫৪) সদস্যরা হলেন-
এ.কে ফজলুল হক মুখ্যমন্ত্রী স্বরাষ্ট্র, সাহায্য ও পুনর্বাসন, স্বায়ত্তশাসন, শাসনতন্ত্র, নির্বাচন ও পার্লামেন্টারি বিষয়াদি নিয়োগ, বদলি ও সাধারণ শাসন।
- আতাউর রহমান খান বেসামরিক সরবরাহ। আবু হোসেন সরকার— অর্থ। ৪. কফিল উদ্দিন চৌধুরী- বিচার ও আইন।
৫. সৈয়দ আজিজুল হক-- শিক্ষা ও রেজিস্ট্রেশন ।
৬. আব্দুস সালাম খান — শিল্প ও শ্রম।
1 ৭. আবুল মনসুর আহমদ- জনস্বাস্থ্য।
৮. শেখ মুজিবুর রহমান- কৃষিঋণ, সমবায় ও পল্লিউন্নয়ন। ৯. আব্দুল লতিফ বিশ্বাস- রাজস্ব ও ভূমি সংস্কার ১০. হামিদ উদ্দিন- বাণিজ্য ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন।
I ১১. ইউসুফ আলী চৌধুরী- কৃষিঋণ ও পাট
১২. রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী - মেডিকেল ও জেলা । ১৩. আশরাফ উদ্দিন চৌধুরী- সড়ক ও গৃহ নিৰ্মাণ ।
১৪. মুয়াজ্জেম উদ্দিন হুসাইন স্টেট একুইজিশান।
ফজলুল হকের নেতৃত্বে গঠিত মন্ত্রিসভাকে কেন্দ্রীয় সরকার সহজভাবে গ্রহণ করতে পারেন নি। একে বানচাল করার জন্য কেন্দ্রে নানা ষড়যন্ত্র চলতে থাকে। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী এ মন্ত্রিসভাকে অনেকটা ভয় পান। তাই যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভাকে বিপর্যস্ত করার জন্য তারা হীন প্রচেষ্টায় লিপ্ত হন। তারা ফজলুল হকের কলকাতা গমন ও দমদম বিমান বন্দরে তাঁর ভাষণকে কেন্দ্র করে নানা কুৎসা রটনা করতে লাগলেন। শেরে বাংলাকে ষড়যন্ত্রকারী বলে চিহ্নিত করা হল। এসব ঘটনাকে তারা নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেন। তাদের প্ররোচনায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা দেখা দেয়। এসব ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রাদেশিক সরকার দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে- এ অজুহাতে দুমাস অতিবাহিত হওয়ার আগেই গভর্নর জেনারেল গোলাম মোহাম্মদ যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভাকে বরখাস্ত করে পূর্ব পাকিস্তানে গভর্নরের শাসন জারি করেন এবং মেজর জেনারেল ইস্কান্দার মীর্জাকে পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর করে পাঠান। তাই মন্ত্রিসভার পতন হয় এবং ৯২(ক) ধারা অনুযায়ী এ.কে ফজলুল হককে বন্দি করেন। এছাড়া শেখ মুজিবসহ অনেক নেতাকে বন্দি করেন।
১৯৫৪ সালের নির্বাচনের গুরুত্ব তাৎপর্য : নিম্নে ১৯৫৪ সালের নির্বাচনের গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করা হল ঃ ১. মধ্যবিত্ত শ্রেণীর প্রভাব বৃদ্ধি : এ নির্বাচনে বিজয়ী যুক্তফ্রন্ট প্রার্থীদের প্রায় সকলেই ছিলেন মধ্যবিত্ত শ্রেণীর প্রতিনিধি। এ শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণী রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় অনেকটা সাফল্য অর্জিত হয়। তাই এ নির্বাচন সমাজ উন্নয়নের ক্ষেত্রে সহায়ক হয়েছিল। কারণ, এসব ব্যক্তিত্ব সমাজের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন।
২. বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিকাশ এ নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের বিজয় ছিল মূলত বাঙ্গালি জাতীয়তাবাদের বিজয়। এ নির্বাচনের সৃষ্ট বাঙ্গালি জাতীয়তাবাদ আরো সুদৃঢ় ভিত্তি লাভ করে। তবে এ জাতীয়তাবাদের সূচনা হয়েছিল ভাষা আন্দোলন থেকে। ভাষা আন্দোলনের প্রেরণা থেকেই বাঙ্গালিরা এ নির্বাচনের শিক্ষা লাভ করেন। ভাষা আন্দোলনে জাতীয়তাবাদ তারা নির্বাচনের সময় কাজে লাগান। পরে জাতীয়তাবাদী চেতনার আরো বিকাশ সাধিত হয়। যার জন্য পরবর্তীতে সংঘটিত হয় মুক্তিযুদ্ধ/মুক্তিসংগ্রাম।
৩. অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিকাশ : মূলত বাঙালির চেতনা ছিল অসাম্প্রদায়িকতার চেতনা। এ অসাম্প্রদায়িক মনোভাব থেকেই বাঙালিরা ৫৫ এর নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। কারণ, একথা বুঝাতে দেরি হয় নি যে, সাম্প্রদায়িকতা দিয়ে কোন সাফল্য অর্জন করা সম্ভব না। তাই যুক্তফ্রন্টের বিজয়ের মধ্য দিয়ে অসাম্পদ্রায়িকতার বিজয় সূচিত হয়।
৪. নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে নৌকার পরিচিতি : ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের প্রতীক ছিল নৌকা। এ নির্বাচনের মাধ্যমে পূর্ববাংলার মুক্তি পাগল বাঙালিরা নদীমাতৃক বাংলার প্রতীক হিসেবে নৌকার সাথে পরিচিত হয়। পরবর্তীতে এ প্রতীক দিয়েই ১৯৭০ এর নির্বাচনে শেখ মুজিবের আওয়ামী লীগ সাফল্য লাভ করেছিল।
৫. মুসলিম লীগের ভরাডুবি : এ নির্বাচনের সাফল্য অর্জিত হওয়ার পর বাঙালিরা ২১ ফেব্রুয়ারির বিয়োগান্তক ঘটনা, লবণ সংকট, পাটশিল্পজনিত কেলেঙ্কারি, স্বায়ত্তশাসন বিরোধী পদক্ষেপ গ্রহণ প্রভৃতির ফলে মুসলিম। লীগের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়েন। তাই নির্বাচনে মুসলিম লীগের ভরাডুবি থেকে মুসলিম লীগ বাঙালির আস্থা চিরদিনের জন্য হারিয়ে ফেলেন। তাই বাঙালির স্বাধীনতা লাভের ক্ষেত্রে একধাপ অগ্রসর হওয়া আরো সহজ হয়।
৬. স্বায়ত্তশাসনের দাবি পেশ : ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে প্রমাণ হয় যে, বাঙালির প্রধান দাবি ছিল স্বায়ত্তশাসনের দাবি যুক্তফ্রন্টের বিজয়ের ফলে তাদের এ দাবি জয়যুক্ত হয়। তাই পরবর্তীতে শেখ মুজিব স্বায়ত্তশাসনের দাবি ১৯৬৬ সালের ছয় দফার মাধ্যমে তুলে ধরেন। এ স্বায়ত্তশাসনের চেতনা থেকেই পরবর্তীতে অর্জিত হয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।
৭. রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধি : পূর্বে বাঙালিরা জাতীয়তাবোধসম্পন্ন হিসেবে পরিচয় দেন, কিন্তু রাজনৈতিক দিক থেকে সফল হতে পারেন নি। কিন্তু এ নির্বাচনের মাধ্যমে তারা রাজনৈতিক দিক থেকে সফল হন। এ রাজনৈতিক সফলতা পরবর্তীতে অনেকটা প্রেরণা জোগায়। তাই ১৯৫৪ সালের নির্বাচন অনেকটা তাৎপর্যপূর্ণ ।
উপসংহার : উপরিউক্ত আলোচনা থেকে বলা যায় যে, এ নির্বাচনে জয়লাভ করার পর বাঙালিরা নতুনত্বের মন্ত্রে দীক্ষিত হয়। কারণ, এ নির্বাচনে বাঙালিদের বিজয় কিছুটা অর্জিত হয়। তবে এটা ছিল অনেকটা প্রতিকারবিহীন বিজয়। কারণ, বিজয়ের পর যে মন্ত্রিসভা গঠিত হয় তা কোনদিক থেকে কাজে আসে নি। কারণ, দু'মাস যেতে না যেতেই এখানে গভর্নরের শাসন জারি করা হয়। তবে এদিক থেকে সফল না হলেও বাঙালির মধ্যে চেতনাবোধ জাগাতে এ নির্বাচন অনেকটা সফল হয়। তাই তাৎপর্যগত দিক থেকে এ নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ ছিল বলা যায়। এ নির্বাচনের পথ ধরেই '৬৯ এর ছাত্রদের ১১ দফা, শেখ মুজিবের ৬ দফা এবং সবগুলোর সম্মিলিত সাফল্য হল স্বাধীন বাংলাদেশ।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]