১৯৬৫ খ্রিষ্টাব্দের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের কারণ আলোচনা কর। (Discuss the Causes of India-Pakistan War in 1965.)

ছাত্র রাজনৈতিক আন্দোলন ও ১৯৬৫ খ্রিষ্টাব্দের পাক-ভারত যুদ্ধ Student Political Movement and Pakistan - India War in 1965
ক. ছাত্র রাজনৈতিক আন্দোলন (Student Political Movement)
শরিফ কমিশন রিপোর্টকে ছাত্র সমাজ গণবিরোধী, প্রতিক্রিয়াশীল, শিক্ষা সঙ্কোচন, শিক্ষাকে পণ্য হিসেবে গণ্য, ব্যয়বহুল, বাংলা ভাষার বিরুদ্ধে নতুন যড়যন্ত্র হিসেবে আখ্যায়িত করে তা প্রত্যাখ্যান করে। এ রিপোর্ট বাতিলের দাবিতে পূর্ব বাংলায় ছাত্ররা ব্যাপক প্রচারণা, সভা সমাবেশ, মিছিল, ধর্মঘট চালিয়ে যেতে থাকে। দ্রুত এ আন্দোলন সমগ্র প্রদেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় নির্বিশেষে সর্বস্তরের ছাত্ররা এতে অংশগ্রহণ করে। আন্দোলন সর্বদলীয় রূপ নেয়। শিক্ষানীতিকে কেন্দ্র করে এত বিশাল ও ব্যাপক ছাত্র আন্দোলন-এর পূর্বে আর কখনো হয় নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল এ আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু। হয় রাস্তায় রাস্তায় পিকেটিং। রাস্তায় সমীর গাড়ি, পুলিশের আন আকান্ত হয়। সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ি লোকে লোকারণ্য। দ্যালয়ের কার্জন হলে ডি আহাম্মদ আইয়ুব খানের জান দয়া কর
ক্ষোভের মুখে তা তিনি করতে পারেননি। ছাত্রদের একটি জ।ি মিলি কার্জন হলের নিকট আগু গনি রোডের দিকে অগ্রসর হলে পুলিশ পিছন থেকে অতর্কিতে মিছিলে গুলি বর্ষণ করে। টাই নি (ছাত্র) এবং গোলাম মোস্তফা (বাসের কাষ্ঠর)। গুলিতে আহত আয়াজিউল্লাহ (কর্মী) পরের দিন হাসপাতালে মারা যান। পুলিশের গুলিতে অনেকে আহত হয়। অসংখ্য ছাত্র জনতাকে গ্রেফতার করা হয়। প্রখ্যাত নেতা কাজী আহমদ দমননীতি ा এ নির্বিচারে কারা হন। ঢাকার ১৪৪ ধারা জারি করা দমেনি এতটুকু। চট্টগ্রাম, যশোর, রাজশাহী প্রভৃতি শহরের বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। ১৭ সেপ্টেম্বরের ঘটনা ছাত্র আন্দোলনকে আরও বেগবান করে তোলে। ছাত্র সমাজ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। ৩ দিন ব্যাপী শোকের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। ২৪ সেপ্টেম্বর পল্টন ময়দানে এক সর্বদলীয় ছাত্র জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। অতঃপর সরকার 'শরিফ শিক্ষা কমিশন রিপোর্ট' বাস্তবায়ন স্থগিত রাখার ঘোষণা দেয়। ছাত্র-অভ্যুত্থানের কারণেই সরকার তা করতে বাধ্য হয়। উল্লেখ্য, ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দের পুরো বছরে মাত্র ২৭ দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ক্লাস হয়। উল্লিখিত সরকারি সোলদার পর ছাত্র আন্দোলন ক্রমান্বয়ে স্তিমিত হয়ে পড়ে। উল্লেখ্য যে, পরবর্তীতে প্রতি বছর ১৭ সেপ্টেম্বর 'শিক্ষা দিবস' পালিত হয় এবং এখনও এ দিবসটি অত্যন্ত মর্যাদা সহকারে পালিত হচ্ছে।
খ. ১৯৬৫ খ্রিষ্টাব্দের পাক-ভারত যুদ্ধের কারণ (Causes of Pakistan India War in 1965 )
১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে ভারত বিভক্তির পর থেকে পাকিস্তান ও ভারত এ দুটো রাষ্ট্রের মধ্যে কাশ্মির প্রশ্নে বিরোধ দেখা দেয়। কাশ্মির ছিল একটি দেশীয় রাজ্য। জনসংখ্যার অধিকাংশ ছিল মুসলমান কিন্তু মহারাজা ছিলেন হিন্দু। নাম হরি পিং। নানাভাবে তার ওপর চাপ সৃষ্টি করা হয়। তিনি চাচ্ছিলেন জম্মু-কাশ্মির একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে অবস্থান করবে। কিন্তু কাশ্মির ছিল ভারতীয় কংগ্রেসের কাছে অতি লোভনীয় একটি ভূখণ্ড। পণ্ডিত জওহরলাল নেহেরু চাচ্ছিলেন, সেভাবেই মো কাশ্মিরকে ভারতভুক্ত করতে হবে। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ২৭ অক্টোবর মহারাজা হরি সিং "The Instrument of Accession of India' নামক দলিলে সাক্ষর করতে বাধ্য হন। অতিদ্রুততার সাথে ভারতীয় সৈন্যরা জম্মু-কাশ্মিরে ঢুকে পড়ে। এরপর ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কাশ্মির প্রশ্নে প্রথম যুদ্ধ সংঘটিত হয়। কাশ্মিরের এক অংশ 'আজাদ কাশ্মির নামে পাকিস্তানের এবং অধিকাংশ অঞ্চল (জম্মু-কাশ্মির) ভারতের নিয়ন্ত্রণাধীনে চলে যায়। জাতিসংঘের এক প্রস্তাব অনুযায়ী গণভোটের মাধ্যমে কাশ্মির সমস্যার সমাধানের কথা থাকলেও তা আর বাস্তবায়িত হয় নি। পাকিস্তান ও ভ উভয়ই কাশ্মিরকে তাদের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে দাবি করতে থাকে। অমীমাংসিত এ কাশ্মির সমস্যাকে কেন্দ্র করে নতুন করে ১৯৬৫ খ্রিষ্টাব্দে দু'দেশের মধ্যে যুদ্ধ বাধে। এ যুদ্ধ ১৭ দিন স্থায়ী হয়।
জাতিসংঘের হস্তক্ষেপে প্রথমে উভয় দেশের মধ্যে ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দের ২৩ সেপ্টেম্বর যুদ্ধ বিরতি ঘটে। এরপর অধুনা বিলুপ্ত সোভিয়েত ইউনিয়নের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী আলেক্সি কোসিগিনের আমন্ত্রণ ও মধ্যস্থতায় পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আইয়ুব খান এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর (১৯০৪ ১৯৬৬) মধ্যে শান্তিপূর্ণভাবে দু'দেশের মধ্যকার বিরোধ নিষ্পত্তিকল্পে এক শীর্ষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা শেষে ১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দের ১০ জানুয়ারি সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র (বর্তমানে স্বাধীন) উজবেকিস্তানের রাজধানী তাসখন্দে এ মর্মে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যা 'তাসখন্দ চুক্তি' নামে পরিচিত। প্রত্যক্ষ যুদ্ধে বিজয় লাভ করলেও পাকিস্তান হেরে গেল কূটনৈতিক যুদ্ধে। ভারত কৌশলে অনেক কিছু আদায় করে নেয়। বুদ্ধির যুদ্ধে পরাজিত হয় পাকিস্তান। যে কাশ্মির নিয়ে যুদ্ধ সেই কাশ্মিরের কথা পর্যন্ত উল্লেখ ছিল না সে চুক্তিতে। তাসখন্দ চুক্তি করে দেশে ফিরে এলে প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আইয়ুব খান প্রচণ্ড প্রতিবাদের মুখোমুখি হন।
১৯৬৬ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ জানুয়ারি জামায়াতে ইসলামির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী, চৌধুরী মোহাম্মদ আলী, নওয়াবজাদা নসরুল্লাহ খান, চৌধুরী মুহাম্মদ হুসাইন চাত্তা, মালিক গোলাম জিলানী প্রমুখ নেতৃবৃন্দ এক মিটিংয়ে একত্রিত হয়ে একটি যুক্ত বিবৃতিতে 'তাসখন্দ চুক্তি' প্রত্যাখ্যান করেন।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]