ঐতিহাসিক ৬ দফা আন্দোলনের পটভূমি আলোচনা কর। ৬ দফা কী? শেখ মুজিবুর রহমানের ৬ দফা কর্মসূচি বর্ণনা কর। (What was 6 Points Programme ? Describe the 6 Points Programme of Sheikh Mujibur Rahman.)

শেখ মুজিবুর রহমানের ৬-দফা আন্দোলন The 6 Point Movement of Sheikh Mujibur Rahman
ভূমিকা Introduction
১৯৬৫ খ্রিষ্টাব্দের পাক-ভারত যুদ্ধের জন্য পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের মধ্যে পাকিস্তানের অখন্ডতার প্রশ্নে হতাশার সৃষ্টি হয়। নিজস্ব পৃথক রাষ্ট্র গঠনের প্রত্যাশায় যুদ্ধোত্তর কালে পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালি জনগণ পশ্চিম পাকিস্তানের বিষয়ে কোনো বিবেচনা না করে সরাসরি স্বায়ত্তশাসন বাস্তবায়নের পরিকল্পনা ও কৌশল অবলম্বন করে। আওয়ামী লীগ ৬-দফা দাবি নিয়ে স্বায়ত্তশাসন বাস্তবায়ন আন্দোলনের ডাক দিয়ে কর্মসূচি নির্ধারণ করে। পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ দীর্ঘদিন থেকেই অর্থনৈতিক শোষণ, রাজনৈতিক-সামাজিক কিংবা রাষ্ট্রব্যবস্থার বঞ্চনা থেকে মুক্তি পায়নি। কোনোভাবে মুক্তির আন্দোলন যেন সৃষ্টি না হতে পারে সেজন্য গোড়া থেকেই বাংলার/পূর্ব পাকিস্তানের ওপর পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী নানাবিধ জুলুমের শাসন প্রতিষ্ঠা করে সামরিক-বেসামরিক আমলাতান্ত্রিক চাপে রাখে ।
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাসে শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৬-দফা আন্দোলন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। কেননা, স্বায়ত্তশাসনের পক্ষে পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের পূর্ববর্তী ১৮ বছরের সংগ্রামের পটভূমিতে ৬-দফা ঘোষণা পাকিস্তানি রাষ্ট্র কাঠামোর অধীনে বাঙালির রাজনীতির ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটায় এবং পরবর্তীকালের রাজনৈতিক আন্দোলনের গতিপ্রকৃতি নির্ধারণ করে। বস্তুত, ১৯৬৬ পরবর্তী বাংলাদেশের স্বায়ত্তশাসনভিত্তিক আন্দোলন, ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয় তথা ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের পেছনে উৎসাহ যুগিয়েছিল ৬- দফাভিত্তিক স্পৃহা। পণ্ডিতদের মতে, ‘৬-দফা ছিল 'বাঙালির জাতীয় মুক্তির সনদ' এবং-এর ভেতরে 'বাঙালির জাতীয় মুক্তির বীজ' নিহিত ছিল ।
বঙ্গবন্ধুর জীবনীকার বিশিষ্ট রাজনৈতিক গবেষক ওবায়দুল হকের ভাষায়, ‘৬-দফা হলো স্বাধীন বাংলাদেশের 'অগ্রিম জন্ম সনদ' (Birth Certificate Written in Advance)। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষায়—
*৬-দফা বাংলার শ্রমিক-কৃষক-মজুর-মধ্যবিত্ত তথা আপামর মানুষের মুক্তির সনদ, ৬-দফা শোষকের হাত থেকে শোষিতের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক অধিকার ছিনিয়ে আনার হাতিয়ার, ৬-দফা মুসলিম-হিন্দু-খ্রিস্টান-বৌদ্ধদের নিয়ে গঠিত বাঙালি জাতির স্বকীয় মহিমায় আত্মপ্রকাশ আর আত্মনির্ভরশীলতা অর্জনের চাবিকাঠি ........... ৬-দফার সংগ্রাম আমাদের জীবন মরণের সংগ্রাম।'
১৯৬৬ খ্রিষ্টাব্দের ৬-দফা আন্দোলনের পটভূমি ও লক্ষ্য
Background and Aims of 6 Point Movement of 1966
ক. ৬-দফা আন্দোলনের পটভূমি (Background of 6 Point Movement)
১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ আগস্ট ব্রিটিশ শাসন ও হিন্দু আধিপত্য থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীন পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম হয়। পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী পূর্ব পাকিস্তানকে উপনিবেশ জ্ঞান করে এদেশের জনগণকে রাজনৈতিক অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক ক্ষেত্রে নানাভাবে বঞ্চিত করতে থাকে। আইয়ুবী আমলে স্বৈরাচারী শাসন ও শত প্রচেষ্টা সত্ত্বেও বাংলার জনগণ তাদের নায্য অধিকার ও দাবি-দাওয়া আদায়ের লক্ষ্যে আন্দোলন চালিয়ে যেতে থাকে। বিশেষ করে ১৯৬৫ খ্রিষ্টাব্দে পাক-ভারত যুদ্ধের পরে এ আন্দোলন বিস্ফোরণমুখী হয়ে উঠে। ঠিক সেই মুহূর্তে পশ্চিমা
12-Jun
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস
_ শাসকগোষ্ঠীর ঔপনিবেশিক শাসন ও শোষণ থেকে পূর্ব পাকিস্তানকে মুক্ত করার লক্ষ্যে তৎকালীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৬ খ্রিষ্টাব্দের ৬ ফেব্রুয়ারি লাহোর অনুষ্ঠিত বিরোধী দলসমূহের সম্মেলনে ৬-দফা দাবি পেশ করেন যা পরবর্তীতে গণআন্দোলনে রূপলাভ করে ।
৬-দফা পাকিস্তানের বা বাঙালির ইতিহাসে কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়; এ দাবি উত্থাপনের পশ্চাতে এক রয়েছে। যেমন- সুদীর্ঘ পটভূমি
১. রাজনৈতিক পটভূমি : বাঙালি জনগোষ্ঠীকে বঞ্চিত করার লক্ষ্যে পাকিস্তানের জন্মের শুরু থেকেই কেন্দ্রকে শক্তিশালী করা হয় এবং প্রদেশের উপর কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ জোরদার করা হয়। প্রদেশের গভর্নরের নিয়োগ দান করতেন গভর্নর জেনারেল। তাই প্রাদেশিক গভর্নর সবসময় গভর্নর জেনারেলের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতেন। এমনকি প্রাদেশিক মন্ত্রিপরিষদের গঠন, দায়িত্ব বণ্টন ও কার্যকাল বিষয়েও গভর্নরের উপর গভর্নর জেনারেলের নিয়ন্ত্রণ ছিল। "The Pakistan provincial constitution order, 1948."-এর মাধ্যমে প্রদেশের উপর কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ আরও বৃদ্ধি করা হয়। এর ফলে প্রাদেশিক মন্ত্রিগণও সবসময় কেন্দ্রের অনুগত থাকতেন। মোদ্দাকথা, পাকিস্তানের রাজনীতিতে পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিদের অংশগ্রহণ ছিল একেবারেই সীমিত পর্যায়ে। ১৯৪৭-৫৮ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে পাকিস্তানের ৪ জন রাষ্ট্রপ্রধানের মাত্র ১ জন ছিলেন পূর্ব পাকিস্তানি; আবার তিনি ছিলেন উর্দুভাষী। একই সময়ে ৭ জন প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে মাত্র ৩ জন ছিলেন পূর্ব পাকিস্তানের এবং তাদের ১ জনও ছিলেন উর্দুভাষী। ১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দে অনুষ্ঠিত পাকিস্তানের সর্বপ্রথম প্রাদেশিক নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট সরকার গঠন করলেও তা ভেঙে দিয়ে পাকিস্তানে সামরিক শাসন জারি করা হয়। আবার ১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দে তৎকালীন স্বৈরশাসক ও একনায়কতান্ত্রিক শাসক জেনারেল আইয়ুব খান মৌলিক গণতন্ত্র নামের অগণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা জারি করে জনগণের ভোটাধিকার হরণের মাধ্যমে ১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ।
প্রশাসনিক পটভূমি : প্রদেশের উপর কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার আরেকটি মাধ্যম ছিল কেন্দ্রীয় সিভিল সার্ভিসের সদস্যবর্গ। প্রদেশের গুরুত্বপূর্ণ পদে তারা অধিষ্ঠিত ছিলেন এবং তাদের চাকরি ছিল কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণে। ফলে প্রদেশে আমলাতন্ত্র খুব শক্তিশালী হয়ে উঠে। এ আমলাগোষ্ঠীতে পূর্ব পাকিস্তানের কোনো প্রতিনিধিত্ব ছিল না। কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক সরকারের অফিসগুলোতে পূর্ববঙ্গের প্রতিনিধিত্ব ছিল নামমাত্র এবং পররাষ্ট্র দপ্তর ও কূটনৈতিক চাকরিতে ৭ জন সহকারী সেক্রেটারির মধ্যে কেউ পূর্ববঙ্গের লোক ছিল না। ৫২ জন সুপারিনটেনডেন্টের মধ্যে মাত্র ৩ জন এবং ২১৬ জন সহকারীর মধ্যে মাত্র ২৫ জন পূর্ববঙ্গের অধিবাসী ছিলেন। বাঙালিরা জনসংখ্যায় বেশি হওয়া সত্ত্বেও পশ্চিম পাকিস্তানিদের সংখ্যা প্রশাসনের সকল স্তরে কয়েকগুণ বেশি ছিল। ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে পূর্ব পাকিস্তানে আগত আই.সি.এস. ও আই. পি. এস. অফিসারের সংখ্যা ছিল ৯৫ জন; যার মধ্যে মাত্র ১ জন ছিলেন বাঙালি। ১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দে পূর্ব বাংলা সচিবালয়ে একজন বাঙালি সচিবও ছিলেন না ৷
অর্থনৈতিক পটভূমি : বাঙালি জনগোষ্ঠীর প্রতি অর্থনৈতিক শোষণ ছিল ৬-দফা কর্মসূচির অন্যতম প্রেক্ষাপট। কারণ এসময় অর্থনৈতিক দিকেও প্রদেশের উপর কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধি পায়। ব্রিটিশ শক্তি থেকে স্বাধীনতার পর আয়কর পুরাপুরি কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে এবং বিক্রয়কর যা ইতিপূর্বে প্রদেশের হাতে ছিল তা ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দে কেন্দ্রীয় সরকার গ্রহণ করে। ইতিপূর্বে Jute Export Duty-এর কমপক্ষে ৫০% পাট রপ্তানিকারী প্রদেশ লাভ করত। কিন্তু দেশের গুরুত্বপূর্ণ শিল্প ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রধান কার্যালয় পশ্চিম পাকিস্তানে অবস্থিত ও তাদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হওয়ায় পূর্ব পাকিস্তানের অর্জিত আয় পশ্চিম পাকিস্তানে চলে যেত। এছাড়া পাকিস্তানের ১ম পঞ্চবার্ষিকী
পরিকল্পনায় পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নে মাথাপিছু ব্যয়ের পরিমাণ ছিল ৮০ টাকা এবং পশ্চিমাঞ্চলের ছিল ২০৫ টাকা। একইভাবে ২য় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় দুই অঞ্চলের মধ্যে বৈষম্য কমানোর পদক্ষেপ নেওয়া হলে পূর্বাঞ্চলে মাথাপিছু বায় ধরা হয়েছিল ১৯০ টাকা আর পশ্চিমে ২৯২ টাকা। ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে পাকিস্তানের দুই অঞ্চলে মাথাপিছু আয় প্রায় সমান ছিল। কিন্তু ১৯৫৯-৬০ খ্রিষ্টাব্দে পূর্ব পাকিস্তানের মাথাপিছু আয় ২৭৮ টাকা আর পশ্চিম পাকিস্তানের ৩৬৭ টাকাতে গিয়ে দাঁড়ায় অর্থাৎ পূর্বাঞ্চলের চেয়ে ৩২% বেশি।
অপরদিকে, ১৯৪৭ - ৪৮ থেকে ১৯৫৪ ৫৫ খ্রিষ্টাব্দে কেন্দ্রীয় সরকার যেখানে পূর্ব পাকিস্তানে ব্যয় করেছে ৪২ কোটি ৬ লক্ষ টাকা সেখানে, পশ্চিম পাকিস্তানে ব্যয়ের পরিমাণ ৭৯০ কোটি ৪৭ কোটি টাকা। এ সময়ে বিদেশ থেকে প্রাপ্ত সাহায্যের পরিমাণ ছিল ৩৯ কোটি ১২ লক্ষ টাকা। এর মধ্যে পূর্ব পাকিস্তানের অংশ মাত্র ৩ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকা। ১৯৬০-'৬১ থেকে ১৯৬৪-৬৫ খ্রিষ্টাব্দে পূর্ব পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যয় হয়েছিল ৯৭০ কোটি টাকা আর পশ্চিম পাকিস্তানে ২১৫০ কোটি টাকা। অথচ পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের ৬৫% অর্জিত হতো পূর্ব পাকিস্তানের সম্পদ দিয়ে। যার ফলে পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিশাল বৈষম্যের সৃষ্টি হয়। উক্ত বৈষম্যের প্রেক্ষাপটে ৬-দফা উত্থাপিত হয়।
৪. সামরিক পটভূমি : সামরিক বাহিনীর ক্ষেত্রেও পূর্ব পাকিস্তানিরা চরম বৈষম্যর শিকার হয়েছে। প্রতিরক্ষা বাহিনীর ৩টি সদর দপ্তর এবং অস্ত্র কারখানাগুলো পশ্চিম পাকিস্তানে স্থাপিত হয়। অপরদিকে, প্রতিরক্ষা বাহিনীর নিয়োগসমূহেও পশ্চিম পাকিস্তানিদের অগ্রাধিকার ছিল। সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর অফিসার শ্রেণিতে বাঙালিদের প্রতিনিধিত্ব ছিল যথাক্রমে ৫%, ১০% ও ১৬%।
৬-দফার উত্থাপনে সামরিক প্রেক্ষাপটও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল ।
১৯৬৫ খ্রিষ্টাব্দের পাক-ভারত যুদ্ধ : ১৯৬৫ খ্রিষ্টাব্দের পাক-ভারত যুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তান ছিল সম্পূর্ণরূপে অরক্ষিত। পূর্ব পাকিস্তানের সামরিক ব্যবস্থা যে কতটা দুর্বল তা এ যুদ্ধের সময় স্পষ্ট হয়ে উঠে এবং সতেরো দিনব্যাপী যুদ্ধ চলাকালে প্রশাসনিক দিক থেকেও পূর্ব পাকিস্তান পশ্চিম পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। যার ফলে পূর্ব পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের সুদীর্ঘকালের উপেক্ষা ও উদাসীনতা বাঙালিদের কাছে স্পষ্ট হয়ে পড়ে।
এমতাবস্থায় পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসনের দাবি নিয়ে এগিয়ে আসে আওয়ামী লীগ। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের 'COP' (Combined Opposition Party) নিষ্ক্রিয় হয়ে যায় এবং আওয়ামী লীগ প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসনের বিষয়টি
১৯৬৫ খ্রিষ্টাব্দের যুদ্ধের পর পরই স্বায়ত্তশাসনের প্রবক্তাদের অন্যতম শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষণা করেন যে, পূর্ব পাকিস্তানের জন্য যায়ত্তশাসন আদায় অতি আবশ্যক হয়ে পড়েছে। পূর্ব পাকিস্তানকে সর্ববিষয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে হবে। শুধু ঘোষণা দিয়েই শেখ মুজিব ক্ষান্ত হননি, তিনি স্বায়ত্তশাসনের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ৬-দফা কর্মসূচি প্রণয়ন করেন। ১৯৬৬ খ্রিষ্টাব্দের ৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারি লাহোরে অনুষ্ঠিত বিরোধীদলসমূহের নেতৃবৃন্দের এক কনভেনশনে, যা আইয়ুব খান কর্তৃক তাসখন্দ চুক্তি স্বাক্ষরের বিরোধিতা করার জন্য আয়োজন করা হয়েছিল, সেখানে (৬-২-১৯৬৬ তারিখে) শেখ মুজিবুর রহমান ঐতিহাসিক ৬-দফা কমসূচি উপস্থাপন করেন। উক্ত কনভেনশনে উপস্থিত ৭৪০ জন প্রতিনিধির মধ্যে পূর্ব পাকিস্তান থেকে আগত ছিলেন মাত্র ২১ জন। উক্ত ২১ জনের মধ্যে ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান ও তার দলের অপর ৪ জন নেতা। ন্যাপ এবং এন.ডি.এফ উক্ত কনভেনশনে যোগদান করেনি। ফলে এ ৬-দফা আন্দোলনের পটভূমি ও লক্ষ্যসমূহ বাঙালি জনগণের কাছে সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে।
খ. ১৯৬৬ খ্রিষ্টাব্দের ৬-দফা আন্দোলনের লক্ষ্য (Aims of 6 Point Movement of 1966)
একটি শোষণহীন, জুলুম ও নিপীড়নমুক্ত রাষ্ট্র গঠন করা ছিল ৬-দফা কর্মসূচির প্রধানতম লক্ষ্য। ড. এমাজউদ্দিন আহমদ- এর মতে ৬-দফা কর্মসূচির লক্ষ্য ছিল ত্রিবিধ :
প্রথমত, রাজনৈতিক ক্ষেত্রে এ কর্মসূচি পাকিস্তানের রাষ্ট্র সমবায় (Confederal System) গঠনে প্রয়াসী ছিল।
দ্বিতীয়ত, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে তা বাংলার সম্পদ বাঙালি নেতৃবর্গের হাতে ন্যস্ত করতে উদ্যত হয় ।
তৃতীয়ত, সামরিক ক্ষেত্রে এ কর্মসূচি পূর্ব পাকিস্তানকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে চেয়েছিল ।
৬-দফা কর্মসূচির আরও কিছু লক্ষ্য চিহ্নিত করা হয়, যা যথাক্রমে নিম্নরূপ :
জুলুম, শোষণ ও বৈষম্যমুক্ত রাজনৈতিক ব্যবস্থার বিনির্মাণ;
রাষ্ট্রে নাগরিকদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত করা;
৩. রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব বজায় রাখার স্বার্থে সামরিক ক্ষেত্রে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন;
পূর্ব পাকিস্তানের নাগরিকদের সম্পদের ওপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা;
ব্যবসায়-বাণিজ্য এবং বৈদেশিক সাহায্যের ক্ষেত্রে নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার সংকল্প;
পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসন অর্জন করা;
মুদ্রা পাচার বন্ধ করা ।
৬-দফায় পূর্ব পাকিস্তানের জন্য প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়। প্রাদেশিক মিলিশিয়া বাহিনী গঠন এবং নৌবাহিনীর সদর দফতর চট্টগ্রামে স্থানান্তরিতকরণ এ দাবির অন্তর্ভুক্ত।
৬-দফা কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে স্বাধীনতার বীজ অঙ্কুরিত হয় এবং এরই মাধ্যমে বাংলাদেশ এক স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের মর্যাদা লাভ করে ।
৬-দফা আন্দোলনের ধারাসমূহ
Contexts of 6 Point Movement
১৯৬৬ খ্রিষ্টাব্দে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের ব্যানারে এবং শেখ মুজিবুর রহমানের নামে 'আমাদের বাঁচার দাবি ৬- দফা-কর্মসূচি' শীর্ষক এক পুস্তিকা বিলি করা হয়। এমনি এক অবস্থায় বাঙালি জাতির প্রাণপ্রিয় নেতা শেখ মুজিব ৬- দফা দাবি উপস্থাপন করেন ৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৬ এবং ৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সংবাদপত্রে-এর সংক্ষিপ্ত বিবরণ ছাপা হয়।
আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির সভা ছাড়াই ২১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৬ খ্রিষ্টাব্দে ৬-দফা আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহীত হয়। ১৩ মার্চ, ১৯৬৬ আওয়ামী লীগ ওয়ার্কিং কমিটির সভায় ৬-দফা কর্মসূচি অনুমোদন করা হয়। মওলানা তর্কবাগীশ এবং আরও কিছু প্রবীণ নেতা ৬-দফার বিরোধিতা করেন। ওয়ার্কিং কমিটিতে অনুমোদিত হলেও তা পার্টির কাউন্সিল অধিবেশনে অনুমোদনের জন্য সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ১৮ ও ১৯ মার্চ ১৯৬৬-এর কাউন্সিল অধিবেশন বসে পার্টির সভাপতি মওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগীশ ৬-দফার বিরোধিতা করে সভাস্থল ত্যাগ করলে সৈয়দ নজরুল ইসলাম সভার কাজ চালিয়ে যান ।
বাঙালি জাতির নেতা শেখ মুজিব কর্তৃক ৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৬ উত্থাপিত এবং ৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সংবাদপত্রে প্রকাশিত ৬- দফার ধারাসমূহ যথাক্রমে নিম্নরূপ :
১ম দফা - শাসনতান্ত্রিক কাঠামো ও রাষ্ট্রীয় প্রকৃতি : ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দের ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাবের ভিত্তিতে শাসনতন্ত্র রচনাপূর্বক পাকিস্তানকে সত্যিকার অর্থে যুক্তরাষ্ট্র হিসেবে গঠন করতে হবে। এতে সরকারব্যবস্থা হবে পার্লামেন্টারি পদ্ধতির এবং পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানকে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন দিতে হবে। সার্বজনীন প্রাপ্তবয়স্কদের ভোটাধিকারের ভিত্তিতে নির্বাচিত প্রতিনিধি নিয়ে গঠিত কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক আইনসভাগুলো হবে সার্বভৌম ।
২য় দফা - কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতা : যুক্তরাষ্ট্রীয় (কেন্দ্রীয়) সরকারের হাতে কেবল দেশরক্ষা ও পররাষ্ট্র এ দুটি বিষয় থাকবে, অবশিষ্ট সকল বিষয় প্রদেশসমূহের হাতে থাকবে।
৩য় দফা - মুদ্রা ও অর্থব্যবস্থা : এ দফায় দেশের মুদ্রা ও অর্থব্যবস্থা সম্পর্কে দুটি বিকল্প প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। যথা- ক. যন্ত্র মুদ্রা ব্যবস্থা : পাকিস্তানের দুই অঞ্চলের জন্য দুটি পৃথক অথচ সহজে বিনিময়যোগ্য মুদ্রা চালু থাকবে। এ ব্যবস্থায় মুদ্রার লেনদেন হিসাব রাখার জন্য দুই অঞ্চলে দুটি স্বতন্ত্র স্টেট ব্যাংক থাকবে এবং মুদ্রা ও ব্যাংক পরিচালনার ক্ষমতা থাকবে আঞ্চলিক সরকারের হাতে।
খ. একই মুদ্রা ব্যবস্থা : পাকিস্তানের দুই অঞ্চলের জন্য একই মুদ্রা থাকবে। এ ব্যবস্থায় মুদ্রা থাকবে কেন্দ্রের হাতে। তবে শাসনতন্ত্রে এমন সুনির্দিষ্ট বিধান থাকতে হবে যাতে এক অঞ্চল থেকে মুদ্রা অন্য অঞ্চলে পাচার হতে না পারে। এ ব্যবস্থায় পাকিস্তানে একটি ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থাকবে এবং দুই অঞ্চলের জন্য দুটি পৃথক রিজার্ভ ব্যাংক থাকবে।
-
৪র্থ দফা - রাজস্ব, কর ও শুল্ক বিষয়ক ক্ষমতা : সকল প্রকার ট্যাক্স, খাজনা ও কর ধার্য এবং আদায়ের ক্ষমতা আঞ্চলিক সরকারের হাতে থাকবে এবং তা ফেডারেল তহবিলে জমা হয়ে যাবে। এ ব্যাপারে রিজার্ভ ব্যাংকসমূহের উপর বাধ্যতামূলক বিধান শাসনতন্ত্রে থাকবে। এভাবে জমাকৃত অর্থ দিয়েই ফেডারেল সরকারের তহবিল গঠিত হবে।
৫ম দফা – বৈদেশিক মুদ্রা ও বাণিজ্য : এ দফায় বৈদেশিক বাণিজ্যের ব্যাপারে শাসনতান্ত্রিক বিধানে নিম্নরূপ সুপারিশ করা হয়। যেমন-
ক. দুই অঞ্চলের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের পৃথক পৃথক হিসাব রাখতে হবে ।
.
পূর্ব পাকিস্তানের অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রা পূর্ব পাকিস্তানের এখতিয়ারে এবং পশ্চিম পাকিস্তানের অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রা পশ্চিম পাকিস্তানের এখতিয়ারে থাকবে । ফেডারেশনের জন্য প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রা দুই অঞ্চল থেকে সমানভাবে অথবা শাসনতন্ত্রে নির্ধারিত হারে আদায় হবে। দেশজাত দ্রব্যাদি বিনাশুল্কে উভয় অঞ্চলের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি করা হবে । ব্যবসায়বাণিজ্য সম্পর্কে বিদেশের সাথে চুক্তি সম্পাদন, বিদেশে ট্রেডমিশন স্থাপন এবং আমদানি-রপ্তানি করার অধিকার আঞ্চলিক সরকারের হাতে ন্যস্ত করতে হবে।
৬ষ্ঠ দফা - প্রতিরক্ষা : আঞ্চলিক সংহতি ও জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার কার্যকর ব্যবস্থা হিসেবে প্রদেশগুলোকে নিজস্ব কর্তৃত্বাধীনে প্যারামিলিশিয়া বা আধা সামরিক বাহিনী গঠনের ক্ষমতা দিতে হবে।
৬-দফা আন্দোলনে গণসম্পৃক্ততা
People's Connectivity with 6 Point Movement
বাঙালি জাতির নেতা শেখ মুজিব ৬-দফা দাবি উপস্থাপন করেন ৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৬। এ ৬-দফা আন্দোলন দমনের কেবল রাজনৈতিক নেতা কর্মীদেরকে গ্রেফতার কিংবা গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেই সরকার ক্ষান্ত হয়নি। তারা পূর্ব ১৯৬৭ খ্রিষ্টাব্দের জুন মাসে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সংগীত নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দের পাক-ভারত যুদ্ধের সময় পাকিস্তান রেডিও ও টেলিভিশনে রবীন্দ্রসংগীত প্রচার বন্ধ রাখে। বাজে অধিবেশনে রাজশাহী থেকে নির্বাচিত বিরোধীদলীয় সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরীর এক প্রশ্নের উত্তরে তথ্যমন্ত্রী পা শাহাবুদ্দিন মন্তব্য করেন যে, পাকিস্তানি আদর্শের সঙ্গে না মিললে রেডিও-টেলিভিশনে রবীন্দ্রসংগীত প্রচার বন্ধ পাকিস্তানিদের ভাষা ও সাংস্কৃতির ওপর নগ্ন হামলা চালায়।
বাঙালি জাতির নেতা শেখ মুজিবুর রহমান ও আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ সারাদেশ জুড়ে ৬-দফার প্রচার র করেন। ৬-দফার প্রচারণার এক পর্যায়ে ৮ মে, ১৯৬৬ খ্রিষ্টাব্দে শেখ মুজিব দেশরক্ষা আইনে গ্রেফতার হন। এ গ্রেফত পূর্বে ২০ মার্চ থেকে ৮ মে পর্যন্ত ৫০ দিনে তিনি ৩২টি জনসভায় ভাষণ দেন। এ সময়সীমার মধ্যে সমগ্র পূর্ব পাকি তিনি ৬-দফার পক্ষে যে অভাবনীয় জনমত সৃষ্টি করেন, তা সত্যিই এক অকল্পনীয় ব্যাপার।
বাঙালির নেতা শেখ মুজিবই নন, ১০ মে, ১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে দলের প্রায় ৩৫০০ নেতাকর্মী গ্রেফতার হন। তবে শেখ মুজিব তার আগেই সব কিছু গুছিয়ে এনেছিলেন। তাঁর অনুপস্থিতিতে কর্মী বাহিনী যাতে কাজ চালিয়ে যেতে পারে সেভাবেই গড়ে তুলেছিলেন তাঁর সংগঠনকে। ইতোমধ্যে ছাত্রলীগও ৬-দফার প্রচারণায় জড়িয়ে পড়ে। সে সময় আবদুর রাজ্জাক ছিলেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। ছাত্র ইউনিয়নের সহায়তায় আবদুর রাজ্জাক ৬-দফার দাবি সংবলিত ৫০,০০০ লিফলেট ছাপিয়ে জনগণের মধ্যে বিলি করেছিলেন। ন্যাপের যে অংশ ৬-দফার সমর্থক ছিলেন তারা সবার পত্রিকা অফিস থেকে ৬-দফার লিফলেট ছাপিয়ে দিতেন। শেখ মুজিবের গ্রেফতারের প্রতিবাদে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ ৭ জুন, ১৯৬৬ গোটা প্রদেশ জুড়ে সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দেয়। দেশের শ্রমিকশ্রেণি প্রথমবারের মতো একটি রাজনৈতিক আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে। ৭ জুনের ধর্মঘটে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের শ্রমিকরা অংশগ্রহণ করে ।
ধর্মঘটের খবর সংবাদপত্রে ছাপানো নিষিদ্ধ ছিল, তাই ৭ জুনের হরতালের বিবরণ কোনো সংবাদপত্রে পাওয়া যায় না। আবু আল সাঈদ তাঁর গ্রন্থে কোনো রেফারেন্স ছাড়াই ৭ জুনের নিম্নলিখিত বিবরণ দিয়েছেন :
১৯৬৬ খ্রিষ্টাব্দের ৭ জুন সকাল থেকেই হরতাল শুরু হলো ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ শহরে। সকাল ৯টার দিকে তেজগাঁও শিল এলাকায় প্রচণ্ড বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। পুলিশ শ্রমিকদের ওপর গুলি চালালে বেঙ্গল বেভারেজে চাকরিরত সিলেটের অধিবাসী মনু মিয়া ঘটনাস্থলেই মারা যায়। মনু মিয়ার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে প্রচণ্ড বিক্ষোভে ফেটে পড়ে শ্রমিক সমাজ। তাদের সাথে যোগ দেয় ছাত্রজনতা। তারা তেজগাঁয় সকল ট্রেন থামিয়ে দেয়। তেজগাঁও স্টেশনের কাছে নোয়াখালীর শ্রমিক আবুল হোসেন (আজাদ এনামেল অ্যান্ড্রু অ্যালুমিনিয়াম কারখানা) ই.পি.আর.-এর রাইফেলের সামনে বুক পেতে দেন। ই.পি.আর বাহিনী তাঁর বুকেও গুলি চালায়। অল্প সময়ের মধ্যে শ্রমিক এবং আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের কর্মীরা ঢাকা শহর উত্তাল করে তোলে। নারায়ণগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনের কাছে পুলিশের গুলিতে ৬ জন শ্রমিক মৃত্যুবরণ করেন ঘটনাস্থলেই। ফলে বিক্ষোভ-প্রতিবাদে সর্বস্তরের শত শত মানুষ রাজপথে নেমে আসে। পুলিশের উস্কানির মুখে জনগণ থানার মধ্যে ঢুকে যায় এবং যাদের গ্রেফতার করা হয়েছিল তাদের ছিনিয়ে নিয়ে আসে। সন্ধ্যার পর পরই ঢাকার শ্রমিক এলাকাগুলোতে কারফিউ জারি করা হয়। গ্রেফতারের সংখ্যাও সন্ধ্যার মধ্যে ১,৫০০ ছাড়িয়ে যায়।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]