বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণা ও গ্রেফতার সম্বন্ধে যা জান লিখ। (Write Down What you Know About the Declaration of Independent by Bangabandhu and His Arrest.)

বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণা ও গ্রেফতার
Declaration of Independence by Bangabandhu and His Arrest
. ভূমিকা Introduction
'১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের ২৬ মার্চ এক গুরুত্বপূর্ণ সময়ে সরকারি কর্মচারীসহ জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রতিটি বাঙালির পবিত্র হচ্ছে- গণবিরোধী শক্তির সঙ্গে সহযোগিতা না-করা। অধিকন্তু তাদের উচিত সবটুকু শক্তি দিয়ে বাংলাদেে ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দেয়া'। এমনি প্রত্যয়দৃপ্ত দেশপ্রেম-দেশাত্মবোধ চেতনার ফসল বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বন্দী হওয়ার পূর্বেই চট্টগ্রামস্থ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জনাব এ... নিকট স্বাধীনতার ঘোষণা বাণী প্রেরণ করেন।
১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ মার্চের মধ্যরাতে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী। তাঁকে নিয়ে পাকিস্তানের লায়ালপুরে। সেখানে কারাগারে এক ফাঁসির প্রকোষ্ঠে তাকে রাখা হয়।
২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণা
Declaration of Independence by Bangabandhu on 26 March
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ সংক্রান্ত দলিলপত্র ও তথ্য সংকলিত আছে হাসান হাফিজুর রহমান (সম্পাদিত) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র শীর্ষক ১৫ খণ্ডে রচিত গ্রন্থে। এ গ্রন্থের ৩য় খণ্ডের ১ম পৃষ্ঠায় ২৬ মার্চ শেখ মুজিব করে স্বাধীনতার ঘোষণা বাণীতে সন্নিবেশিত রয়েছে। মূল ঘোষণাটি ছিল ইংরেজিতে। বাণীটি ছিল নিম্নরূপ :
'This may be my last message, from today Bangladesh is independent. I call upon the people of Bangladesh wherever you might be and with whatever you have, to resist the army of occupation to the last. Your fight must go on until the last soldier of the Pakistan occupation army is expelled from the soil of Bangladesh and final victory is achieved.'
Message embodying declaration of independence sent by Bangabondhu Sheikh Mujibur Rahman to Chittagong shortly after midnight of 25th March, i.e., early hours of 26 March, 1971 for transmission throughout Bangladesh over the ex-EPR transmitter.
Source : ডা. এস.এ মালেক ও অন্যান্য সম্পদিত, বঙ্গবন্ধু : রাজনীতি ও প্রশাসন, ঢাকা, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, ১৯৯৭, পৃ. ১১৭ (পরিশিষ্ট-৪) অনুবাদ : ইহাই হয়তো আমার শেষ বার্তা, ‘আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন। যে যেখানেই থাকুন না কেন সকলের প্রতি আমার আবেদন রইল, যার কাছে যা আছে তাই নিয়ে দখলদার বাহিনীর মোকাবেলা করুন এবং বাংলার মাটি থেকে পাক দখলদার বাহিনীকে সমূলে উৎখাত করে চূড়ান্ত বিজয় না হওয়া পর্যন্ত লড়ে যান।'
দলিলপত্রে আরও বলা হয়, ২৫ মার্চ মধ্যরাত ও ২৬ মার্চ ইপিআর ট্রান্সমিশনের মাধ্যমে এ বাণীটিই দেশের বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে। তাছাড়াও জানা যায় যে, ২৫ মার্চের কালোরাতের ঘটনার প্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিকভাবে রচিত বঙ্গবন্ধুর আরো একটি বাণী প্রেরিত ও সম্প্রচারিত হয়।
তাই দ্বিতীয় বাণীটি ছিল নিম্নরূপ : Declaration of War of Independence' Pak army suddenly attacked EPR base at Pilkhana and Rajarbag police line killing citizens, street battles are going on in every streets of Dacca, Chittagong. I appeal to the nations of the world for help. Our freedom fighters are arogantly fighting with the enemies to free the " motherland. I appeal and order you all in the name of Almighty Allah to the last drop of blood to liberate the country. Ask police. EPR, Bengal Regiment and Ansar to stand by you and to fight, no compromise, victory is ours. Drive out the enemies from the holy soil of the motherland. Convey this message to all Awami League leaders, workers and other patriots and lovers of freedom," May Allah bless you.
Joy Bangla,
Sheikh Mujibur Rahman
অনুবাদ : 'পাকিস্তানি সেনাবাহিনী অতর্কিত পিলখানায় ইপিআর ঘাঁটি, রাজারবাগ পুলিশ লাইন আক্রমণ করেছে এবং শহরের লোকদের হত্যা করছে। ঢাকা, চট্টগ্রামের রাস্তায় যুদ্ধ চলছে। আমি বিশ্বের জাতিসমূহের কাছে সাহায্যের আবেদন করছি। আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা বীরত্বের সাথে মাতৃভূমি মুক্ত করার জন্য শত্রুদের সাথে যুদ্ধ করছে। সর্বশক্তিমান আল্লাহর নামে আপনাদের কাছে আমার আবেদন ও আদেশ দেশকে স্বাধীন করার জন্য শেষ রক্তবিন্দু থাকা পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যান। আপনাদের পাশে যুদ্ধ করার জন্য পুলিশ, ইপিআর, বেঙ্গল রেজিমেন্ট ও আনসারদের সাহায্য চান। কোনো আপস নেই, জয় আমাদের হবেই। আমাদের পবিত্র মাতৃভূমি থেকে শেষ শত্রুকে বিতাড়িত করুন। সকল আওয়ামী লীগ নেতা, কর্মী এবং অন্যান্য দেশপ্রেমিক ও স্বাধীনতা প্রিয় লোকদের এ সংবাদ পৌঁছে দিন। আল্লাহ আপনাদের মঙ্গল করুন । জয় বাংলা।
শেখ মুজিবুর রহমান
২৫ মার্চ, ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দ
[তথ্যসূত্র : ড. এস.এ. মালেক ও অন্যান্য (সম্পাদিত, বঙ্গবন্ধু : রাজনীতি ও প্রশাসন, ঢাকা, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, ১৯৯৭, পৃঃ ১১৭ (পরিশিষ্ট-৪)। এখানে আরও উল্লেখ আছে যে, ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৬ মার্চ বিকাল ২টা ১০ মিনিটে চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে এম. এ. হান্নান বাংলাদেশের স্বাধীনতার এ ঘোষণা পাঠ করেন ।
ড. অজয় রায় উল্লেখ করেন যে, উক্ত বাণীটি দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ ও ইপিআর স্টেশনসহ চট্টগ্রামের সলিমপুর (কোস্টাল) ওয়ারলেস স্টেশনেও ধরা পড়েছিল। এখানকার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সে সময় বঙ্গবন্ধুর বাণীটির গুরুত্ব অনুধাবন করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশের অভ্যন্তরে ও বহির্বিশ্বে প্রেরণের উদ্যোগ নিয়েছিলেন ও চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ নেতাদের কাছে পৌঁছে দিয়েছিলেন। এরই ফলে কলকাতায় কোস্টাল রেডিও স্টেশনে (VWC) এ বাণীটি ধরা পড়ে। যার ভিত্তিতে বার্তা সংস্থা ইউ. এম. আই'র বরাত দিয়ে বিখ্যাত 'স্টেটম্যান পত্রিকা' শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণার সংবাদ ২৭ মার্চ, ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে পরিবেশন করেছিল।
বঙ্গবন্ধু কর্তৃক বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণাটি চট্টগ্রাম থেকে প্রথম বেতারে পাঠ করেন আওয়ামী লীগের চট্টগ্রামস্থ সাধারণ সম্পাদক এম.এ. হান্নান। ২৬ মার্চ দুপুরে কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে যে ঘোষণা দেন তা ছিল নিম্নরূপ: ২৬ মার্চ এম.এ. হান্নানের ঘোষণা
'আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে ও তাঁর নামে বাংলার স্বাধীনতা ঘোষণা করছি। আপনারা যারা গোপন রেডিও হতে আমার এ ঘোষণা শুনছেন তারা অন্যদের নিকট এ বাণী প্রচার করবেন। আর যার নিকট যা কিছু আছে তা নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করুন এবং দেশকে মুক্ত করুন।'
২৭ মার্চ মেজর জিয়াউর রহমানের ঘোষণা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে ২৭ মার্চ মেজর জিয়াউর রহমান কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার যে ঘোষণাটি পাঠ করেন তা ভারতের 'দি স্টেটম্যান' পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। হাসান হাফিজুর রহমান সম্পাদিত, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র শীর্ষক গ্রন্থের ৩য় খণ্ডের ২য় পৃষ্ঠায় এ ঘোষণাটি লিপিবদ্ধ রয়েছে। স
'I Major Zia, Provisional Commander-in-Chief of the Bangladesh Liberation Army, hereby proclaim, on behalf of Sheikh Mujibur Rahman, the independence of Bangladesh,
I also declare, we have framed a sovereign, Legal government under Sheikh Mujibur Rahman which pledges to Function as per law and the constitution. The new democratic Government is committed to a policy of non-alignment is international relations. It will seek Friendship with all nations and strice for international peace. I appeal to all government to mobilize public opinion in their respective countries against the brutal genocide in Bangledesh.
The Government under Sheikh Mujibur Rahman is sovereign Legal Government of Bangladesh and is entitled to recognition from all democratic national of the world."'
অনুবাদ : 'আমি মেজর জিয়া, বাংলাদেশ লিবারেশন আর্মির অস্থায়ী সর্বাধিনায়ক, এতদ্বারা শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করছি।'
'আমি আরও ঘোষণা করছি, আমরা ইতোমধ্যে শেখ মুজিবুর রহমানের অধীনে একটি সার্বভৌম ও বৈধ সরকার গঠন করেছি। এ সরকার রাষ্ট্র পরিচালনায় আইন এবং শাসনতন্ত্র মেনে চলায় অঙ্গীকারাবদ্ধ। নতুন গণতান্ত্রিক সরকার আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে জোটনিরপেক্ষ নীতির প্রতি অঙ্গীকারাবদ্ধ। এ সরকার সকল দেশের সাথে বন্ধুত্বের প্রত্যাশী এবং আন্তর্জাতিক শান্তির জন্য চেষ্টা করবে। আমি সকল সরকারের কাছে আবেদন করছি তারা যেন বাংলাদেশের নৃশংস গণহত্যার বিরুদ্ধে তাদের নিজ নিজ দেশে জনমত গড়ে তোলেন।'
"শেখ মুজিবুর রহমানের অধীনে গঠিত সরকার বাংলাদেশের সার্বভৌম ও বৈধ সরকার এবং এ সরকার পৃথিবীর সকল গণতান্ত্রিক দেশের স্বীকৃতি লাভের অধিকার সংরক্ষণ করে।'
সূত্র : সিরাজুল ইসলাম সম্পাদিত, বাংলাপিডিয়া, খণ্ড ১২, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, দ্বিতীয় সংস্করণ, পৃঃ ৩৫
মেজর জিয়াউর রহমান ঘোষণাটি ২৭ মার্চ সন্ধ্যা ৭.৩০ মিনিটে ইংরেজিতে পাঠ করেন। কিছুক্ষণ পর পর পুনঃপুন প্রচারিত হতে থাকে । অবশ্য-এর মধ্যে এ ঘোষণার বাংলা অনুবাদও প্রচারিত হতে থাকে ।
শাহাজাহান আবদালী তাঁর ‘শতাব্দির অগ্নিপুরুষ শেখ মুজিব' গ্রন্থে বলেছেন, 'বঙ্গবন্ধু কর্তৃক ঘোষিত স্বাধীনতার ঘোষণাটি ২৬ মার্চ সকালে চট্টগ্রামের জহুর হোসেন চৌধুরীর কাছে পৌঁছে যায়। তাঁর কাছ থেকে এটি গিয়ে পৌঁছে চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জনাব এম.এ.হান্নানের নিকট। তিনি এটি অনুবাদ করে চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্রে স্বল্প সময়ের জন্য চালু করে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতা ঘোষণাটি দুপুর দেড়টার দিকে পাঠ করেন। তিনি এ ঘোষণাটি বিকেলে পাঠ করেন। তারপর পাঠ করেন বেতার কেন্দ্রের অন্যতম সহকর্মী অধ্যাপক আবুল কাশেম সন্দীপ ৷
মেজর জিয়া ঘোষণাটি পাঠ করেন ২৭ মার্চ বিকেলের দিকে। তাঁর এ ঘোষণাটি তৈরি করে দেন বেতার কর্মী জনাব বেলাল মোহাম্মদ ও আরও কয়েকজন মিলে।
বাঙালি জাতির প্রতি বঙ্গবন্ধুর চূড়ান্ত নির্দেশনা ও গ্রেফতার
Last Directions to the Bengali Nation by Bangabandhu and His Arrest ক. বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর চূড়ান্ত নির্দেশ (Last Directions by Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman)
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেশপ্রেম-দেশাত্মবোধ আর রাজনৈতিক দূরদর্শিতা ছিল অসাধারণ। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর চক্রান্তের ব্যাপারে তিনি সচেতন ছিলেন বলেই ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে তাঁর অবর্তমানে স্বাধীনতা সংগ্রামের চূড়ান্ত নির্দেশনা দিয়ে রেখেছিলেন।
আন্দোলনে আর স্বাধীনতা সংগ্রামে বা মুক্তির লড়াইয়ের জন্য তাঁর চূড়ান্ত নির্দেশসমূহ যথাক্রমে ছিল নিম্নরূপ :
কর না-দেওয়ার আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে।
সমগ্র বাংলাদেশের সেক্রেটারিয়েট, সরকারি এবং আধাসরকারি দপ্তরগুলো, হাইকোর্ট ও অন্যান্য আদালতগুলোও ধর্মঘট পালন করবে। এর কোনো ব্যতিক্রম হলে তা মাঝে মাঝে ঘোষণা করা হবে।
১৯৭০-এর নির্বাচন, অসহযোগ আন্দোলন ও নানপুর স্বাধীনতা ঘোगा
রেল এবং বন্দরগুলো কাজ চালিয়ে যেতে পারে। কিন্তু যদি জনগণের দমনের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হতে পা এমন এবং সেনাবাহিনীর চলাচলের জন্য রেল অথবা বন্দর ব্যবহার করা হয়, তাহলে ान কর্মচারী এবং বর শ্রমিকরা সহযোগিতা করবে না।
রেডিও, টেলিভিশন এবং সংবাদপত্রগুলো আমাদের বিবৃতির পূর্ণ বিবরণ দেবে এবং গণআন্দোলে
গোপন করবে না। এটা যদি পালন করা না হয়, তাহলে ধরা হলে পোতে কর্মরত বাঙাপিরা কোনোরকম সহযোগিতা করছে না।
কেবলমাত্র স্থানীয় এবং আন্তঃজেলার মধ্যে ট্রাক, টেলিফোন যোগাযোগ চালু থাকবে।
সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।
স্টেট ব্যাংক বা অন্যকিছুর মাধ্যমে ব্যাংক পশ্চিম পাকিস্তানে টাকা পাঠাবে না।
প্রতিদিন সব ভবনের উপরেই কালো পতাকা ওড়ানো হবে।
অন্য সব ক্ষেত্রে ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হলো, কিন্তু পরিস্থিতি বুঝে যেকোনো মুহূর্তে পূর্ণ ধর্মঘট পালনের আহ্বান ঘোষণা করা যেতে পারে।
১০. প্রতিটি ইউনিয়ন, মহল্লা, থানা, মহকুমা এবং জেলায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ ইউনিটের নেতৃত্বে একটি করে সংগ্রাম
পরিষদ সংগঠন করা হবে।
খ. বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর গ্রেফতার (Arrest of Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman)
১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ মার্চ দিনের বেলাতেই বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হামলার পরিকল্পনা ও আক্রমণের প্রস্তুতির ব্যাপারটি ধারণা করতে পারেন। সেদিন বিকাল ৩টায় তিনি আইজিপি তসলিম উদ্দিন ও ঢাকার এসপি ই.এ. চৌধুরীকে ডেকে নির্দেশ দেন যে, “পুলিশ বাহিনী যেন কোনো অবস্থাতেই অস্ত্র সমর্পণ না করে।" তিনি অস্ত্রাগার থেকে অস্ত্র এনে ছাত্রনেতাদের মাঝে বিতরণের নির্দেশও দেন। পিলখানার বাঙালি ইপিআর অফিসারদের বঙ্গবন্ধু নির্দেশ দেন যে, “যদি তারা পাকবাহিনী কর্তৃক আক্রান্ত হন তবে যেন উপযুক্ত পাল্টা জবাব দেন। রাত ৮টার দিকে বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে উপস্থিত আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাদের দ্রুত ঢাকা ছাড়ার নির্দেশ দেন এবং যাকে যেভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সেভাবে কাজ চালিয়ে যেতে বলে নিজে বাসভবনেই অবস্থান করেন।
নিজে আত্মগোপন না করে বাসগৃহে অবস্থান করা প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধু বলেন, “আমাকে ওরা গ্রেফতার করতে পারলে আর বেশি বাড়াবাড়ি করবে না। অন্যথায় তারা বাড়িঘর জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দিবে। নির্বিচারে আমার লোকজনকে হত্যা করবে । আমি আমার নিরস্ত্র মানুষকে জল্লাদের হাতে তুলে দিতে পারি না। আমার রক্ত দিয়ে হলেও আমি আমার লোকজনকে বাঁচাব।”
অবশেষে ২৫ মার্চ মধ্যরাতে গোলাগুলির মধ্যে মোটা পাইপ নির্মিত ব্যারিকেড সরিয়ে সামনে পৌঁছে জেড. এ. খানের কমান্ডো বাহিনী । সেখানে ৩২নং বাড়ির বারান্দায় গ্রেনেড ফাটিয়ে এবং পিস্তলে গুলি ছুড়ে এক ধরনের ত্রাস সৃষ্টি করে। ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধুর গ্রেফতারের সময় একান্ত সহচর গোলাম মোর্শেদ তার সাথে ছিলেন। গোলাম মোর্শেদের বর্ণনা থেকে জানা যায়, রাত ১.৩০ মিনিটের দিকে পাকবাহিনীর একটি ট্যাংক, একটি সাঁজোয়া যান এবং সৈন্য বোঝাই একটি ট্রাক নিয়ে বঙ্গবন্ধুর ধানমণ্ডির বাড়িতে আসে এবং বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে। এসময় বঙ্গবন্ধু দৃঢ়কণ্ঠে বলেন, তাকে বললেই হবে, তিনি নিজেই যাবেন। এতদসত্ত্বেও হাবিলদার মেজর খান ওয়াজির নামক একজন সুবেদার তাকে আঘাত করার চেষ্টা করে। বঙ্গবন্ধু দৃঢ় অবিচল থেকে তার পাইপটি নেন এবং তার পরিবার থেকে বিদায় নেন। ২৫ মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ১৪ ডিভিশন অফিসার্স মেসে রাখা হয়। দ্বিতীয় দিন আদমজী ক্যান্টনমেন্ট স্কুলের তৃতীয় তলায় রাখা হয়। তিন দিন পর পাক সরকার বঙ্গবন্ধুকে পশ্চিম পাকিস্তানের করাচিতে নিয়ে যায় এবং পেশোয়ারের মিনওয়ালি কারাগারে আটকে রাখে।
বিদেশের বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় এ খবর প্রকাশিত হয় ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ১ এপ্রিল। ঢাকায় পাকিস্তান অবজারভার পত্রিকায় এ খবর প্রকাশিত হয় ৮ এপ্রিল।
আর এভাবেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। বহু ত্যাগ-তিতিক্ষা আর রক্তক্ষয়ী ৯ মাসের সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]