বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের ভূমিকা মূল্যায়ন কর । (Evaluate the Role of Shadin Bangla Betar Kendra in the Liberation War of Bangladesh.)

(স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্র, বিদেশি প্রচার মাধ্যম ও জনমত গঠন)
Publicity Campaign in the Liberation War (Shadhin Bangla Betar Kendra, Campaign Abroad and Formation of Public Opinion)
ভূমিকা
Introduction
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পূর্ব থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন মিডিয়া ও পত্র-পত্রিকায় 'পূর্ব পাকিস্তানে সংকট' শীর্ষক নানা খবর প্রকাশিত হতে থাকে। এসব খবর বাঙালির মুক্তিযুদ্ধে জয়লাভ তথা বিশ্ব ও গণমাধ্যমের কাছে কথিত ‘ঢাকার পতন’ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। বস্তুত একটি পর্যায় পর্যন্ত বিশ্ববাসীর কাছে ঢাকা থেকে যে ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ' শুরু হয়েছিল তা পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবেই পরিচিত ছিল। এমনকি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সমর্থক সোভিয়েত ইউনিয়নের কাছেও 'জাতীয় মুক্তিযুদ্ধ' হিসেবে-এর তাত্ত্বিক চরিত্রটি অনেক পরে ধরা পড়েছিল।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে দেশ-বিদেশের পত্র-পত্রিকা, বিভিন্ন মিডিয়া বিশেষ করে বেতার ও টিভি, জাতিসংঘ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং বিভিন্ন দেশের প্রতিক্রিয়ায় প্রথম দিকে নানা বিভ্রান্তি ছিল। পরে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরাম ও জাতিসংঘে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বিতর্ক উঠলে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গড়ে ওঠে। দেশগুলোর দৃষ্টিভঙ্গিও পাল্টাতে থাকে।
স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্র ও অন্যান্য কার্যক্রম
Shadhin Bangla Betar Kendra and Other Activities
পশ্চিম পাকিস্তানের সাথে পূর্ব পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রের নাগরিক হয়ে থাকা সম্ভব নয় বিধায় মুক্তিযুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়েছে একথা স্পষ্ট হয়ে ওঠে ৭ মার্চের ভাষণের চূড়ান্ত নির্দেশের মাধ্যমে। তাই ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দে রাষ্ট্রভাষা ঘোষণার প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পোস্ট অফিসে যেমনি দেশে প্রথম পাকিস্তানি পতাকা নামানো হয় সাংবাদিক ফটিক-এর নেতৃত্বে তেমনি স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মুক্তিযুদ্ধে প্রথম বেতারকেন্দ্র প্রচার কার্যক্রম চালু করা হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের তিতাস গ্যাস কোম্পানির ম্যানেজারের রুমে ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ১২-১৫ মার্চ তারিখের মধ্যে এবং ২৭ এপ্রিল তারিখ পর্যন্ত বেতার কার্যক্রম চালু রাখা সম্ভব হয়েছিল।
বাঙালি জাতির পাকিস্তানি শৃঙ্খল থেকে মুক্তির দূরদর্শী সিদ্ধান্তে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১-এর ২৫ মার্চ রাতে পাক আর্মির হাতে বন্দী হবার পূর্ব মুহূর্তে বাংলাদেশের স্বাধীনতার রাজনৈতিক-রাষ্ট্রীয় ঘোষণা করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার এ ঘোষণাটিই বঙ্গবন্ধুর পক্ষে ১৯৭১-এর ২৬ মার্চ প্রথম রাজনৈতিক ব্যক্তি এম.এ.হান্নান ও ২৭ মার্চ দ্বিতীয়বার সামরিক ব্যক্তি মেজর জিয়াউর রহমান কর্তৃক প্রচারিত হয় চট্টগ্রামের কালুরঘাট থেকে। তবে এ স্বাধীনতার ঘোষণা আর চূড়ান্ত নির্দেশটি বঙ্গবন্ধু দিয়েছিলেন প্রথম সেই ৭ মার্চ-এর যুগান্তকারী বিশ্বশ্রেষ্ঠ মনোরাজনৈতিক কাব্যধর্মী ভাষণের মাধ্যমেই। আর রাজনৈতিক সচেতন ব্যক্তিক-সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠনিক কর্মকাণ্ড শুরু হয়ে যায় দেশব্যাপী সেই ভাষণের নির্দেশনার পর থেকেই। ২৫ মার্চ যখন যুদ্ধাবস্থা তখন থেকেই চট্টগ্রাম বেতারের বেশকিছু কর্মী বেতার প্রচার নিয়ে চিন্তিত ছিলেন এবং আপদকালীন সময়ের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা প্রচারের উদ্যোগ গ্রহণ করেন বেতার কর্মীরা, যার মধ্যে অন্যতম ছিলেন বেলাল মোহাম্মদ। এ বেতার কেন্দ্র থেকে কিছু ঘোষণা করা হয়। পাকিস্তানি বাহিনী
গোলাবর্ষণ শুরু করলে বেতার কর্মীরা চলে যান কালুরঘাট এবং সেখানকার এক কিলোওয়াট ট্রান্সমিটার থেকে প্রথম আওয়ামী লীগ নেতা এম এ হান্নানের কণ্ঠে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করে শুনান এবং তারা বেতার কেন্দ্রের নামকরণ করেন 'স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র'। ইতোমধ্যে জিয়াউর রহমান পিছু হটে কালুরঘাট পৌঁছেন। বেতার কর্মীরা একজন সেনা অফিসার খুঁজছিলেন স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠের জন্য যাতে মানুষ উদ্দীপ্ত হয়। তারা মেজর জিয়াকে খুঁজে পান। জিয়া বেতার কেন্দ্রে অবস্থান নেন ২৭, ২৮, ৩০ মার্চ। এ কেন্দ্র থেকে তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করে শোনান।
বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার বার্তা ইতোমধ্যে বিদেশি প্রচার মাধ্যমে প্রচারিত হতে থাকে। তার সঙ্গে একজন সেনা অফিসারের বেতার ভাষণ নতুন মাত্রা যুক্ত করে। বাংলাদেশে স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিরোধের বার্তা মানুষের কাছে পৌঁছে যায়। ১. স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্র ও জনমত গঠন (Shadin Bangla Betar Kendra and Formation of Public Opinion) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার বার্তাটি ২৬ মার্চ এম. এ. হান্নানের মাধ্যমে এবং ২৭ মার্চ মেজর জিয়াউর রহমানের মাধ্যমে প্রচার শুরু হয়ে পরবর্তীতে ৩০ মার্চ পাকিস্তানি সৈন্যদের আক্রমণে তা অন্যত্র স্থানান্তরিত হয়। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণাটি প্রথমে রাজনৈতিক ব্যক্তি এম. এ. হান্নান ও পরে সামরিক ব্যক্তি মেজর জিয়াউর রহমান কর্তৃক কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত হওয়ায় বার্তাটিতে নতুন মাত্রা যুক্ত হয়। বাংলাদেশে স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিরোধের বার্তা মানুষের কাছে পৌঁছে যায়।
৩০ মার্চ পাকিস্তান বাহিনী কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র আক্রমণ করলে আবুল কাসেম সন্দ্বীপ, বেলাল মোহাম্মদ ও আরও কয়েকজন বেতার কর্মী এক কিলোওয়াট ট্রান্সমিটারটি প্রথমে রায়গড় তারপর আগরতলা নিয়ে যান। সেখান থেকে ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৪ মে পর্যন্ত স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রের অনুষ্ঠান অনিয়মিতভাবে প্রচারিত হতে থাকে।
বাংলাদেশে সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর সংসদ সদস্য আবদুল মান্নানকে বেতার কেন্দ্র সংগঠিত করার দায়িত্ব দেয়া হয়। ২০ মে ৫০ কিলোওয়াট মধ্যম তরঙ্গ ট্রান্সমিটার নিয়ে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র সম্প্রচার শুরু করে। সকাল ৭টায় এবং সন্ধ্যা ৭টায় দুটি অধিবেশন সম্প্রচারিত হতো।
স্বাধীন বাংলা বেতারে যুদ্ধের সংবাদ উদ্দীপক গান এবং এম.আর. আখতার মুকুলের বিশেষ কথিকা 'চরমপত্র' অস জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। যুদ্ধের খবরাখবর ইতিবাচক হলে মানুষ আশায় বুক বাঁধতো। স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্র থেকে প্রচারিত দেশপ্রেম-দেশাত্মবোধ চেতনার উদ্দীপক গানগুলো মানুষের মন শুধু জয় নয়, মানুষকে উজ্জীবিত করেছিল যা এখনও এদেশে জনপ্রিয়তার শীর্ষে।
স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্র থেকে নিয়মিত প্রচারিত মুক্তিযুদ্ধের জয়-পরাজয়ের খবর, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ব্যক্তিক- সামাজিক ও বিভিন্ন সাহায্য সংস্থার সাহায্য-সহায়তার সংবাদ, রবীন্দ্র-নজরুল-সুকান্তসহ বিভিন্ন কবির উদ্দীপক কবিতার আবৃত্তি, এম.আর. আখতার মুকুলসহ বিভিন্ন জনের উদ্দীপক কথিকার সম্প্রচার, ঘোষিত স্বাধীনতার ও মুক্তিযুদ্ধের অনুকূল চেতনা আর সাহস সৃষ্টিকারী উদ্দীপক গানের প্রচার ইত্যাদি দেশের অভ্যন্তরে ও বহির্বিশ্বের জনমত গঠন ও সংরক্ষণে মুক্তিযুদ্ধে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
বাঙালি সামরিক-বেসামরিক মুক্তিযোদ্ধারা বনে-জঙ্গলে, পাহাড়-পর্বতে, বিল-বাওড়ে কিংবা যেকোনো নির্জন-নিরাপদে অবসরের সময় কান পেতে মৃদুস্বরে স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের প্রচারিত অনুষ্ঠান শ্রবণ করে মনোবল রক্ষা করে গেরিলা কিংবা সম্মুখযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ত। বাংলাদেশের সীমানায় মৃত্যুর মুখোমুখি লড়াই করেই তারা সেই স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের অনুষ্ঠান শুনে শুনে স্বাধীন বাংলাদেশের গণমুক্তির আশায় থাকত ৷
বহির্বিশ্বের মানবাধিকার ও সাহায্য সংস্থাগুলো এ স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের মাধ্যমে পাকবাহিনীর বর্বরতার খবর, পাশবিক নারী নির্যাতন-ধর্ষণ আর ব্যাপক গণহত্যার সংবাদ এবং মুক্তিযুদ্ধের জয়-পরাজয়ের কথা জানতে পারত । স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের প্রচারিত নানাবিধ কার্যকর অনুষ্ঠানমালার মাধ্যমেই বহির্বিশ্বের জনমত স্বাধীন বাংলাদেশ নির্মাণের প্রত্যয়ী মুক্তিযুদ্ধের যৌক্তিকতা আর পাকিস্তানি বর্বরতার কথা জানতে পারত এবং সহায়তায় এগিয়ে আসতে পারত। পাক বাহিনী ও পশ্চিমা শোষকগোষ্ঠী একাত্তরের পূর্ব পাকিস্তানের ঘটনাকে দেশের আভ্যন্তরীণ বিষয় বলে চাঁপিয়ে রেখে বিদেশি সাংবাদিকদের আসতে দিত না। আর সেই অবস্থায় যাঁরা বাংলাদেশে আসতে পারতেন না তাঁদের সাংবাদিকতার প্রয়োজনীয় তথ্যদিও যোগানে স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের কার্যকর ভূমিকা মুক্তিযুদ্ধের অগ্রগতি ও সফলতাকে ত্বরান্বিত করেছে। স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের অনুষ্ঠানমালার মধ্যে অগ্নিশিখা, রক্তস্বাক্ষর, বজ্রকণ্ঠ, দপর্ণ, জাগরণী, ঐকতান, চরমপত্র এবং বাংলা ও ইংরেজি খরব উল্লেখযোগ্য।
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের ১৪ সদস্যের শিল্পী দলের সদস্যবৃন্দ যথাক্রমে দাঁড়ানো বাঁ থেকে সরদার আলাউদ্দীন, আপেল মাহমুদ, মাজাহারুল ইসলাম, শহীদুল হাসান, শান্তি মুখার্জি (ভারত), মঞ্জুর আহমেদ, দিলীপ ঘোষ, অবিনাশ শীল এবং বসে বাঁ থেকে মাধুরী আচার্য, স্বপ্না রায়, নমিতা ঘোষ, ব্যারিষ্টার বাদল রশীদ এম.এন.এ. মো: আবদুল জব্বার, অরুণা সাহা ও রমা ভৌমিক ।
২. ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্থানীয় বেতারযন্ত্র ও জনমত গঠন (Local Betar Station of Brahmanbaria and Formation of Public Opinion)
একাত্তরের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে প্রচার ও গণসচেতনতার বিষয়টি ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের পর সারাদেশের আঞ্চলিক রাজনীতিকগণ নিজ নিজ এলাকায় চলে যান অবশ্যম্ভাবী মুক্তিযুদ্ধের সাংগঠনিক কাজের পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের জন্য। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নেতৃত্বে তখন রাজনীতিক এড. আলী আযম, এডভোকেট লুৎফুল হাই সাচ্চু, এডভোকেট জহিরুল হুদা এবং ছাত্ররাজনীতিক মাহবুবুল হক, সহিদ উল্লাহ, হুমায়ুন কবির ও সিরাজুল করিম। বঙ্গবন্ধুর সেই দূরদর্শী নির্দেশনায় স্থানীয় প্রচারে জনমত গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয় এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সম্পৃক্ত ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীর ভূঁইয়া, অধ্যাপক হারুন-অর-রশীদ, হাইস্কুল শিক্ষক সামসুদ্দিন এবং আরো অনেকে এতে সম্পৃক্ত ছিল।
স্থানীয় রাজনৈতিক ও ছাত্ররাজনৈতিক নেতৃত্বে থাকা কয়েকজন মিলে বেতার বা ইলেক্ট্রনিক প্রচারের প্রয়োজনীয়তার কথা অনুভব করে কোনো একটা সুবিধাজনক জায়গায় ট্রান্সমিটার স্থাপনের মাধ্যমে জনমত গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। ১৯৭১-এর ১২ মার্চ স্থানীয় রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ইন্ডাস্ট্রিয়েল স্কুলের মেকানিকেল শিক্ষক সামসুদ্দিন সাহেব একটা ট্রান্সমিটার তৈরি করেন, যার বেতার প্রচার প্রায় ৪-৫ কিলোমিটার দূর থেকে শোনা যাবে। তাই বিপক্ষ জনগণ বা শত্রুপক্ষ জানতে পারবে না এমন বিবেচনায় মেড্ডার তিতাস গ্যাস কোম্পানির ম্যানেজারের কক্ষটিতে ট্রান্সমিটার স্থাপনের ব্যবস্থা করা হয়। ১৩ মার্চ ট্রান্সমিটারটি স্থাপন ও ১৫ মার্চ থেকে কার্যকরভাবে প্রচারের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের জনমত গঠনে সফল ভূমিকা রাখে। তাই মুক্তিযুদ্ধের প্রচারের ইতিহাসে ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্থানীয় বেতারকেন্দ্রটিই প্রথম উদ্যোগ। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে শাণিত করার উদ্দীপক, কবিতা, কথিকার মতো উদ্দীপক যন্ত্রসংগীতও
জনমত গঠনে সহায়ক কার্যকর ভূমিকা পালন করেছে। সুর সম্রাট আলাউদ্দীন খাঁ'র সরাসরি শিষ্য ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ওস্তাদ আফজালুর রহমানের স্থানীয়ভাবে পরিবেশিত যন্ত্রসংগীত উল্লেখযোগ্য। ১৯৭১-এর মার্চের ১৫-২৭ তারিখ পর্যন্ত সময়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্থানীয় বেতারকেন্দ্র থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরত্ব পর্যন্ত প্রচারিত মুক্তিযুদ্ধের সংবাদ ও উদ্দীপক ধারাভাষ্য স্থানীয় সংগঠক-মুক্তিযোদ্ধা ও জনমত গঠন ও সংরক্ষণে সহায়ক হয়েছে।
ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন আর মুক্তিযুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া এক অনন্য কার্যকর ভূমিকা পালন করেছে। বিংশ শতকের গোড়ার দিকে বেনিয়া ব্রিটিশদের প্রথম শক্তিশালী আঘাত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের কালিকচ্য এলাকায় খুদিরাম- অভিরাম, পাকিস্তান গণপরিষদের সদস্য হিসেবে প্রথম বাংলা ভাষার রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদানের প্রস্তাবক/দাবি উত্থাপনকারী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কৃতিসন্তান শহিদ ধীরেন্দ্র নাথ দত্ত, বাংলা ভাষার মর্যাদার দাবিতে তৎকালীন পাকিস্তানের পতাকা প্রথম নামানো হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া পোস্ট অফিসে সাংবাদিক সামিউল আহমদ খান ফটিক-এর নেতৃত্বে, মুক্তিযুদ্ধের প্রচারণায় স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃেত্বে প্রথম বেতারযন্ত্র পরিচালিত হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অধ্যাপক হারুন-অর-রশীদ ও শিক্ষক সালাউদ্দিনের উদ্যোগে, সংগীতের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের বিশ্ব জনমত গঠনে আমেরিকার নিউইয়র্কে কনসার্ট আয়োজনের অন্যতম উদ্যোক্তা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাধীন শিবপুরের কৃতিসন্তান বিশ্বখ্যাত সুরসম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ'র জামাতা বিশ্বখ্যাত সংগীতজ্ঞ পণ্ডিত রবি শঙ্কর।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]