মিশরীয় সভ্যতার প্রধান প্রধান বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আলোচনা কর । Discuss about the major features Egyptian civilizations.

মিশরীয় সভ্যতা Egyptian Civilization
The Hebrews, the phoenicians and the Greeks were all students of Egyptian culture and borrowed much from it. Writing science, architecture, literature and religion were all started on the road of progress by the ancient Egyptian who passed on the successive civilizations a priceless heritage." J.E. Swain.
প্রাচীন মিশর পৃথিবীর প্রথম সভ্যতার জন্মস্থান। আনুমানিক প্রায় ৫০০০ খ্রিষ্টপূর্ব অব্দের দিকে উত্তর-পূর্ব আফ্রিকায় নীল নদের উপত্যকায় মিশরীয় সভ্যতার উদ্ভব হয়েছিল। সমসাময়িক সময়ে মেসোপটেমিয়া সভ্যতারও বিকাশ লাভ ঘটে। এ দু'টি সভ্যতার মধ্যে কোনটির উদ্ভব পূর্বে হয়েছিল তা নিয়ে পণ্ডিতদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। তবে অধিকাংশ পণ্ডিত মেসোপটেমিয়া
সভ্যতাকে মিশরীয় সভ্যতার পূর্ববর্তী সভ্যতা বলে উল্লেখ করেছেন। কারণ মেসোপটেমীয় আদি সভ্যতার নানা প্রভাব মিশরীয় সভ্যতায় পরিদৃষ্ট হয়। শক্তিশালী নীলনদ ছিল প্রাচীন মিশরের জীবন প্রবাহী রকের মতো। প্রতি বছর বন্যায় প্লাবিত হতো মিশরের ভূমি আর এই প্লাবন মিশরের ভূমিতে রেখে যেত পর্যাপ্ত পলি। উর্বর এই পলিযুক্ত কালো মাটিতে এদেশের মানুষ জন্মাত প্রচুর পরিমাণে খাদ্যশস্য। প্রাচীন মিশরেরা তাদের দেশকে বলে 'কোমেট' (Kemet) যার অর্থ হলো কালো মাটি। নীলনদ শুধু কৃষি কাজের জন্য পানি সরবরাহই করত না। প্রধান যাতায়াতের পথ হিসেবেও এটা ছিল উত্তম ব্যবস্থা। এ সকল কারণেই প্রাচীন গ্রিক ঐতিহাসিক হেরোডেটাস মিশরকে নীল নদের দান হিসেবে অভিহিত করেন। মিশরের বিশেষ ভৌগোলিক অবস্থান দেশটিকে বিশ্ব বাণিজ্যের মধ্যবর্তী কেন্দ্রে পরিণত করে। এর ফলে অন্যান্য সভ্যতার সাথে মিশরীয়দের যোগযোগ প্রতিষ্ঠা হয় এবং মিশর অন্যান্য সংস্কৃতির দ্বারা কমবেশি প্রভাবিত হয়। এভাবেই মিশরীয় সভ্যতার উত্থান ও বিকাশ ঘটে। নীল নদের ব-দ্বীপ অঞ্চলের অনুকূল আবহাওয়া ও জলবায়ুর পাশে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর জীবনধারাকে সহজতর করে তোলে, যা প্রকারাভরে মিশরীয় সভ্যতার বিকাশে সহায়ক হয়।
প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিকদের মতে, মিশরীয় সভ্যতা প্রাচীনকালে নীলনদ দক্ষিণ আসওয়ানের কাছ থেকে ভূ-মধ্য সাগর পর্যন্ত প্রায় ৭০০ মাইল প্রবাহিত ছিল। এই ৭০০ মাইল নদীর আঁকা-বাঁকা গতিপথে প্রচুর পলি মাটি জমতে থাকে এবং মৌশুমের প্লাবনে উভয় তীরে পলিমাটি জমা হতে থাকে। এর ফলে নীল নদের অববাহিকা তৎকালীন সময়ে সর্বাপেক্ষা উর্বর হিসেবে পরিচিত ছিল। এর ফলেই নবপলীয় যুগে মিশর একটি কৃষি প্রধান দেশে পরিণত হয় এবং কৃষি ভিত্তিক সমাজ থেকে সংস্কৃতি এবং সেই সাথে সভ্যতার বিকাশ ঘটে।

মিশরীয় সভ্যতার ভৌগোলিক অবস্থান Geographical Situation of Egyptian Civilization

মিশর উত্তর-পূর্ব আফ্রিকার নীলনদের অববাহিকায় অবস্থিত। দেশটির উত্তরে ভূ-মধ্যসাগর, দক্ষিণে নুবিয়ার মরুভূমি, পূর্বে লোহিত সাগর এবং পশ্চিমে লিবিয়ার মরুভূমি। মরুভূমির উপর দিয়ে দক্ষিণ থেকে প্রবাহিত হচ্ছে পৃথিবীর দীর্ঘতম নীলনদ। মিশর হচ্ছে নীলনদের অববাহিকায় একটি সংকীর্ণ জনপদ। এ জনপদটি বর্তমানে উত্তর আফ্রিকার অংশ বিশেষ। যেহেতু পৃথিবীর প্রতিটি সভ্যতাই তাদের নিজ নিজ এলাকায় গড়ে উঠেছিল। মিশরীয় সভ্যতাও এর ব্যতিক্রম নয়। মিশরীয় সভ্যতার ভৌগোলিক অবস্থান বলতে যা বুঝায়—
মিশরের পূর্বে সাহারা মরুভূমি, পশ্চিমে মরু অঞ্চল, উত্তরে ভূমধ্যসাগর আর দক্ষিণ-পূর্বে লোহিত সাগর অবস্থিত। মিশরের দৈর্ঘ্য ৪৯০ মাইল এবং প্রস্থ প্রায় ১০ মাইলেরও কম। মিশরের মোট আয়তন ১০,০১,৪৪৯ বর্গ কি.মি.। মধ্য আফ্রিকার উঁচু ভূমি হতে উৎপন্ন হয়ে নীলনদ উত্তর দিকে ৭৫০ মাইল পথ অতিক্রম করে ভূমধ্যসাগরে পতিত হয়েছে। ভৌগোলিক দৃষ্টিকোণ থেকে মিশরকে দু'ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন- ১. উচ্চ মিশর, ২. নিম্ন মিশর ।
নীল নদের উৎপত্তি স্থল থেকে ৬০০ মাইল পর্যন্ত বিস্তৃত উপত্যকাই হলো উচ্চ মিশর। এ সীমারেখা থেকে গড়ে ওঠে বদ্বীপ অঞ্চল যা ভূমধ্যসাগর এলাকা জুড়ে অবস্থিত তা হলো নিম্ন মিশর। নীল নদের প্রবাহের প্রথম অংশের উচ্চ মিশর ও শেষ অংশের নিম্ন মিশর সভ্যতার ইতিহাসে এক নবদিগন্ত সৃষ্টি করেছিল। এভাবেই নীল নদের পানি সঞ্চিত হয়ে বদ্বীপটি কৃষি যোগ্য ভূমিতে পরিণত হয়েছিল।
প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ করা যায় যে, প্রাচীন মিশরের আয়তন ছিল ১০,০০০ বর্গ মাইলেরও কম। মিশরের বিশেষ ভৌগোলিক অবস্থান বিশ্ব বাণিজ্যের মধ্যবর্তী কেন্দ্রে পরিণত করে।

মিশরীয় সভ্যতার সামাজিক জীবন Social Life of Egyptian Civilization

মিশরীয় জনগণের মধ্যে সামাজিকভাবে বিভাজন ছিল। তাদের সমাজ ছিল শ্রেণিবিভক্ত। উচ্চ শ্রেণি, মধ্য শ্রেণি ও নিম্ন শ্রেণি এই তিনটি শ্রেণিতে সমাজ বিভক্ত ছিল।
১. উচ্চ শ্রেণি : রাজা, সম্রাট, রাজকীয় গোষ্ঠী, সরকারি চাকরিজীবী, জমির মালিক, উচ্চ মর্যাদার পুরোহিত, সামরিক অফিসার
এবং বিচারক ও ডাক্তার প্রভৃতি এ শ্রেণিভুক্ত ছিল।
২. মধ্য শ্রেণি : দক্ষ কারিগর, ব্যবসায়ী ও উৎপাদনকারী কুটির শিল্পী, ছোট শিল্প ও কুটির শিল্পের মালিকগণ এ শ্রেণিভুক্ত ছিলেন।
৩. নিম্ন শ্রেণি : যুদ্ধে পরাজিত বন্দি ও বৈদেশিক কয়েদি, অদক্ষ শ্রমিক প্রভৃতি এ শ্রেণিভুক্ত ছিল। বিদেশি কয়েদিরা দাস
হিসেবে বিবেচিত হতো। দাসরা সম্পত্তির মালিক হতে পারত এবং স্বাধীনতা ভোগ করত।
মিশরে রানীকে দেবতার স্ত্রী বা কন্যা বলে মনে করা হতো। মাতৃতান্ত্রিক সমাজে মেয়েরা মর্যাদা ভোগ করত। তখন সন্তানের বংশ গণনা করা হতো মায়ের দিক থেকে এবং মায়ের পরিচয়ে সস্তানের পরিচয় নির্ণয় করা হতো। সুতরাং বলা যায় যে, মিশরের সমাজব্যবস্থায় বিভিন্ন শ্রেণির মধ্যে অর্থনৈতিক অবস্থান ও মর্যাদার দিকে বৈষম্য থাকলেও যেকোনো ব্যক্তি নিজস্ব মেধা ও যোগ্যতার দ্বারা নিচু শ্রেণি হতে উঁচু শ্রেণিতে যেতে পারত। মিশরীয়রাই আধুনিক বিশ্ব সভ্যতা ... বিকাশে অতুলনীয় অবদান রেখে গেছেন। তাই মিশরীয় সমাজব্যবস্থা বেশ উন্নত বা সমৃদ্ধ ছিল।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]