মানব সভ্যতার ইতিহাসে মিশরীয়দের বড় অবদান ছিল লিখন পদ্ধতির উদ্ভাবন। প্রাচীন মিশরের প্রাক-রাজ বংশীয় যুগে সর্ব প্রথম মিশরীয় লিপির উদ্ভব হয়েছিল এবং তা ধীরে ধীরে বিকাশ ঘটেছে। এছাড়াও বলা যায় যে, ব্রোঞ্জ যুগের নগর সভ্যতার একটা যুগান্তকারী ঘটনা হলো লিখন পদ্ধতি ও লিপির আবিষ্কার। বর্ণভিত্তিক চিত্র লিপির উদ্ভাবন মিশরীয় সভ্যতার গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার । মিশরীয় লিখন পদ্ধতিকে হায়ারোগ্লিফিক লিখন পদ্ধতি বলা হয় যার অর্থ হলো পবিত্র লিপি ।
প্রাচীন রাজ বংশের যুগে মনের ভাব প্রকাশের জন্য চূড়ান্তভাবে ২৪টি হায়ারোগ্লিফিক চিহ্ন বা বর্ণমালা ব্যবহার শুরু হয়। প্রত্যেকটি চিহ্ন মানুষের স্বরের এক একটি ব্যাঞ্জনধ্বনি প্রকাশ করত। প্রাচীনতম সময় থেকে হায়ারোগ্লিফিক লিখন পদ্ধতি তার চারিত্রিক বিন্যাসের দিক থেকে তিনটি রূপ লাভ করে। যথা-
ক. চিত্রভিত্তিক (Pictographic)
খ. অক্ষরভিত্তিক (Syllabic) এবং
গ. বর্ণভিত্তিক (Alphabetic)।
প্রাচীন মিশরীয় ভাষায় উপযোগী এবং তার সাথে খুবই সঙ্গতি পূর্ণ ছিল এ লিপি। তবে হায়ারোগ্লিফিক লিপি সাধারণ কাজের উপযোগী ছিল না। এ কারণে সাধারণ কাজের উপযোগী হিসেবে বাহুল্য বর্জিত টানা লেখার উপযোগী লিপি হিসেবে প্রথমে 'হায়ারেটিক' (Hieratic) এবং পরে ডেমোটিক (Demotic) লিপির উদ্ভব হয়। ডেমোটিক লিপি মিশরে খুবই জনপ্রিয়তা লাভ করে । প্রাচীন মিশরীয় লিখন পদ্ধতি সম্পর্কে আরও বলা যায় যে-
ক. হায়ারোগ্লিফিক : ইংরেজি Higeroglyphic শব্দটির অর্থ 'পবিত্রলিপি'। এ লিপি ডান থেকে বামে আবার বাম থেকে ডানে লেখা হতো। ধর্মতান্ত্রিক পিরামিড ব্যবস্থা প্রভৃতি হায়ারোগ্লিফিক পদ্ধতির লিখিত রূপ পাওয়া গিয়েছে বলেই এ লিপির নামকরণ করা হয়েছে। রাজকীয় ধর্মীয় বিষয় এবং মনির পিরামিডের দেয়ালে সাধারণত এ লিপির ব্যবহার ছিল। তাই এ লিপি সাধারণ কাজে ব্যবহার করা হতো না। এ কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য ও অন্যান্য প্রয়োজনে টাকা লেখার উপযোগী লিপি হিসেবে প্রথমেই হায়ারোটিক এবং তারপর ডেমোটিক লিপির উদ্ভব ঘটেছিল।
খ. লেখার উপাদান : লিখন পদ্ধতি আয়ত্ত করার পর লেখার জন্য বিভিন্ন প্রকার উপাদান আবিষ্কৃত হতে থাকে। লিখন পদ্ধতির শুরু থেকেই প্রাচীন মিশরীয়রা পাথর, হাড়, কাঠ দেয়াল, প্রাচীর, চামড়া, কাদা মাটি প্রভৃতি লেখার উপাদান হিসেবে ব্যবহার করত। নলখাগড়া জাতীয় এক প্রকার গাছ এর নাম ছিল প্যাপিরাস। মূলত এই গাছ থেকেই সংগ্রহ করত লেখার উপাদান।
গ. লেখার বিস্তার : মিশরীয়দের উদ্ভাবিত লিখন পদ্ধতি ক্রীট, প্যালেস্টাইন, ফিনিশিয়া প্রভৃতি অঞ্চলে বিস্তার লাভ করেছিল। মিশরীয়দের লেখাকে অনুসরণ করে ২২টি বর্ণের উদ্ভাবন করে ফিনিশিয়রা। এছাড়াও গ্রিকরা পরবর্তীতে e, i, o, u এই চারটি বর্ণযুক্ত করে ইংরেজি ২৬টি বর্ণ সম্পূর্ণ করেছিল।
পরিশেষে বলা যায় যে, মানব সভ্যতার বিকাশের ক্ষেত্রে মিশরীয় লিপি এক যুগান্তকারী উদ্ভাবন। লিখন পদ্ধতির বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে লিখন পদ্ধতির আবিষ্কার সত্যিই গৌরবের দাবিদার।
FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত