মিশরীয় সভ্যতার অবদানসমূহ আলোচনা কর । Discuss the contribution of Egyptian civilization.

মিশরীয় সভ্যতার প্রধান প্রধান বৈশিষ্ট্য > Main Features of Egyptian Civilization
নদীমাতৃক সভ্যতাগুলোর মধ্যে অন্যতম আকর্ষণ হচ্ছে মিশরীয় সভ্যতা। খ্রিষ্টপূর্ব ৫০০ অব্দে মিশরের নীলনদের অববাহিকায় এ সভ্যতা গড়ে উঠেছিল। মিশর নীলনদের তীরে অবস্থিত ছিল বলে সেখানে গড়ে উঠেছিল এ উন্নত সভ বার্নস ও রালফ মনে করেন যে, প্রাগৈতিহাসিক যুগে মেসোপটেমিয়া অপেক্ষা মিশরে অধিক পরিমাণে সাংস্কৃতিক অগ্রগতি সাধিত হয়েছিল এবং মিসরীয় সভ্যতা মেসোপটেমীয় সভ্যতা অপেক্ষা বিশ্ব সভ্যতায় অধিকতর প্রভাব বিস্তার করে। মিশরীয় সভ্যতার প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ নিম্নে আলোচনা করা হলো-
১. মিশরীয় সভ্যতার সামাজিক অবস্থা : মিশরীয় সভ্যতায় ক্ষমতা, ধর্ম, আমলা, কৃষক, শ্রমজীবী ও দাসদের উপর ভিত্তি করে সামাজিক শ্রেণি গড়ে উঠেছিল। সমাজের শিরোমণি ছিল রাজপরিবার। তার নিচে ছিল পুরোহিত এবং সামন্ত নৃপতি। তাদের নিচে ছিল, লিপিকার, বণিক, কারিগর ও কৃষক এবং সর্বনিম্ন শ্রেণি ছিল ভূমিদাস এবং শ্রমজীবী মানুষ। ভূমিদাসরা ছিল সমাজে পরাধীন শ্রেণি এবং অন্যান্য শ্রেণি ছিল স্বাধীন। মুক্ত মানুষ এবং ভূমিদাস উভয়কেই রাষ্ট্রীয় ও মন্দিরের কাে অংশ নিতে হতো। প্রয়োজনের তাগিদে সৈন্যবাহিনীতেও যোগ দিতে হতো, আবার ফারাওদের ব্যক্তিগত কাজও করতে হতো।
২. মিশরীয় সভ্যতার অর্থনৈতিক অবস্থা : মিশরীয় অর্থনৈতিক টেকসই অবস্থা এই সভ্যতার প্রায় দুই হাজার বছর ধারী হওয়ার পেছনে অন্যতম ভূমিকা রেখেছে মিশরীয় সভ্যতার অর্থনীতি। মূলত প্রাচীন মিশরীয় অর্থনৈতিক জীবন ছিল প্রাচুর্যপূর্ণ। নিম্নে মিশরীয় অর্থনীতির বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হলো-
ক. কৃষি : উৎপাদন কাজের জন্য এ সভ্যতায় সাধারণ লাঙল, কাঠের কোদাল ও ষাঁড় ব্যবহার করা হতো। নীল নদের অববাহিকা প্লাবিত হওয়ায় দু'কূলের উর্বর ভূমিতে পর্যাপ্ত ফসল জন্মাতো। লাঙল চালানোর জন্য দু'জন মানুষের প্রয়োজন হতো। মিশরীয়দের উৎপাদিত ফসলের তালিকায় ছিল গম, পীচ, যব, পিঁয়াজ, কাউন, বার্লি, মটরশুটি, বর্বটি, লেটুস তরমুজ, মুলা, শন, কার্পাস, শন জাতীয় তন্তু এবং বিভিন্ন বর্ণের শাক-সবজি ও ফলমূল। মোট উৎপাদনের ১০%-২০% কর হিসেবে কৃষকরা সরকারি কোষাগারে জমা প্রদান করত। কৃষির গুরুত্ব প্রসঙ্গে ওয়ার্ল্ড ব্যাংক ও ইবি টেইলর উল্লেখ করেছেন, মিশরীয় ইতিহাসে কৃষি ছিল মূল অর্থনীতি ।
খ. ব্যবসা-বাণিজ্য : কৃষি আর ব্যবসা-বাণিজ্য হলো মিশরীয় অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। এ সময় সিরিয়া, গ্রিস, লুবিয়া, ইজিয়ান দ্বীপ, ফিনিশীয় ও প্যালেস্টাইনের সাথে মিশরের বাণিজ্য চলত। তাদের রপ্তানি দ্রব্যের তালিকায় ছিল লিলেন
-
কাপড়, গম, প্যাপিরাস, মৃৎপাত্র ও চামড়া। আর আমদানি দ্রব্যের তালিকায় স্বর্ণ, হাতির দাঁত, অস্ত্র, মসলা, সুগন্ধি দ্রব্য, দেবদারু ও আবলুস কাঠ অন্যতম। মিশরীয় ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসঙ্গে World Bank ও E B Taylor উল্লেখ করেছেন যে, ব্যবসা-বাণিজ্যের ভিত্তি হিসেবে মিশরীয়রা বুক কিপিং ও অ্যাকাউন্টিং সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করেছিল এবং লেনদেন করত বিনিময়ের মাধ্যমে। তাই বলা হয় যে, ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনার জন্য মিশরীয়রা বিভিন্ন ব্যবহারিক কলা কৌশল হিসেবে বিভিন্ন নিয়ম-কানুন শিখে ছিলেন।
গ. পশুপালন : গরু, ভেড়া, গাধা, ছাগল, কবুতর মৌমাছি, রাজহাঁস, পাতিহাস প্রভৃতি প্রাচীন মিশরে পালন করা হতো। পশুর চামড়া মূল্যবান অর্থকরী হিসেবে বেশ পরিচিত ছিল এবং পশুর চামড়ার ওপর ভিত্তি করে প্রাচীন মিশরে চামড়া শিল্পের বিকাশ ঘটেছিল।
ঘ. শিল্প : প্রাচীন মিশরে খ্রিঃপূঃ ৩০০ অব্দের দিকে শিল্পকারখানাসমূহে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়। মিশরীয় সভ্যতায় অতি অল্প সময়ের মধ্যে শিল্পভিত্তিক অর্থনীতির ব্যাপক বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিল। প্রাচীন রাজবংশীয় যুগে শিল্পের উত্তরণ ঘটে এবং অতি দ্রুত গতিতে এর বিকাশ ঘটেছে। প্রাচীন মিশরে শিল্পের মধ্যে তাঁত শিল্প, পাথর শিল্প, চামড়া শিল্প, নৌযান শিল্প, মৃৎশিল্প, বয়নশিল্প ও কাঁচ শিল্প ছিল উল্লেখযোগ্য।
মিশরীয় শিল্পের অর্থনৈতিক গুরুত্ব প্রসঙ্গে HS Lucas উল্লেখ করেছেন যে, শিল্প স্থাপন মিশরীয়দের অর্থনৈতিক জীবনকে ব্যাপকভাবে উন্নত ও উৎসাহিত করেছিল।
৫. মিশরীয় সভ্যতার বিজ্ঞান: মিশরীয়রা জ্ঞান-বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে যথেষ্ট দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অর্জন করেছিল। মিশরীয়দের বাস্তব প্রয়োজন থেকেই বিজ্ঞানের তিনটি শাখা জ্যোতির্বিদ্যা, গণিতশাস্ত্র এবং চিকিৎসা বিজ্ঞান চর্চা শুরু হয়েছিল। নবপলীয় গ্রাম সংস্কৃতির বিলোপ সাধনের মাধ্যমে যখন নগর সভ্যতার বিকাশ সাধিত হচ্ছে, তখন নানान স সমাধানের প্রচেষ্টা থেকেই মিশরীয় সভ্যতার বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখার আবিষ্কার শুরু হয়েছিল। বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের মধ্যে প্যাপিরাস কাগজ, কাচ, ধাতুর তৈজসপত্র, সেচ ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রভৃতি ক্ষেত্রে মিশরীয়রা পারদর্শী ছিল। মিশরীয়দের বিজ্ঞান চর্চার বিভিন্ন দিক সম্পর্কে নিচে আলোকপাত করা হলো--
ক. জ্যোতিবিদ্যা। মিশরীয়রা জ্যোতির্বিদ্যার ওপর অনেক উন্নতি সাধন করেছিল। তারা চন্দ্র, সূর্য,
পরিভ্রমণ এবং ঋতুর ক্রমবিকাশের সাথে নীল নদের বন্যার সম্পর্ক নির্ণয়ের জন্য সৌর বর্গের আবিষ্কার করেন। তারা সৌরবছরকে ৩৬৫ দিনে বা ১২ মাসে এবং মাসকে ৩০ দিনে বিভক্ত করে। তারা প্রতি বছর শেষ হলে তার সাথে দিন যোগ করে দিত। এতে প্রতি সৌর বছরে ৬ ঘন্টা কম পড়ত। এ হিসেবে ৪ বছর পর পুরো একটি দিন বেড়ে যেত। এছাড়াও প্রাচীন মিশরীয়রা বিভিন্ন বিন্দুর নক্ষত্রের অবস্থান নির্ণয়, ধ্রুব তারার সাহায্যে দিক নির্ণয় এবং মানচিত্র রচনায় পারদর্শিতা অর্জন করেছিল। সময় গণনার জন্য মিশরীয়রা অপঘড়ি, ছায়াপড়ি ও সূর্যঘড়ি আবিষ্কার করেছিল। খ্রিষ্টপূর্ব ১৪০০ অব্দে নির্মিত একটি ছায়াঘড়ি কারণাকের মন্দিরে পাওয়া যায়।
খ. চিকিৎসা বিদ্যা চিকিৎসা বিজ্ঞানে প্রাচীন মিশরীয়দের জ্ঞান ছিল অপরীসীম। প্রথম দিকে চিকিৎসা বিদ্যা ধর্ম ও যান বিদ্যা প্রভৃতি কুসংস্কারাচ্ছন্ন হলেও ধীরে ধীরে তা বিজ্ঞান সম্মত রূপ লাভ করে। তৃতীয় রাজ বংশের প্রতিষ্ঠাতা জোসার (Zoser)-এর উজির ইমহোটেপ (Imhotep) ছিলেন বিখ্যাত চিকিৎসক। ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন সময়ে প্রাপ্ত তথ্য উপাত্ত থেকে অতি সহজেই মিশরীয়দের চিকিৎসাবিদ্যার বিভিন্ন বিষয় যেমন- দত্ত, চক্ষু, পাকস্থলী প্রভৃতি ক্ষেত্রে খ্যাতি অর্জনের দৃষ্টান্ত চোখে পড়ে। এ সময় থেকেই চক্ষু রোগ, দাঁতের রোগ, পেটের পীড়া, শল্যবিদ্যা, হৃৎপিণ্ড ও নাভির তাৎপর্য রেচক ঔষধ আবিষ্কার এবং সর্বপ্রথম মেটেরিয়া মেডিকা প্রণয়ন করেছিলেন। এছাড়াও মিশরীয় চিকিৎসা বিজ্ঞান পাঠে জানা যায় যে, মৃতদেহ মমিতে পরিণত করাকে কেন্দ্র করে শরীরের অভ্যন্তরীণ গঠন প্রকৃতি জানা ও রোগ ব্যাধির চিকিৎসায় অনেক সুবিধার কথা। মমি তৈরি তাদের ভেষজ, শরীর বিদ্যা, শল্যবিদ্যাও রসায়ন শাস্ত্রে বিস্ময়কর জ্ঞান ও প্রতিভার স্বাক্ষর বহন করে। মোটকথা প্রাচীন মিশরীয়দের চিকিৎসা বিজ্ঞানে অর্জিত জ্ঞান পরবর্তী সময়ে গ্রীকদের মাধ্যমে ইউরোপে ব্যাপক বিস্তার লাভ করেছিল।
গ. গণিত শাস্ত্র : প্রাচীন মিশরীয়দের বাস্তব প্রয়োজনের তাগিদেই বিজ্ঞানের শাখা হিসেবে গণিত শাস্ত্রের উৎপত্তি ও বিকাশ সাধিত হয়েছিল এবং গণিত শাস্ত্রের মৌলিক অবদানও ছিল মিশরীয়দের। প্রাচীন মিশরীয়দের গণিতচর্চা সম্বন্ধে ধারণা পাওয়া যায় তৎকালীন পাণ্ডুলিপি বা প্যাপিরাস থেকে। এসব পাণ্ডুলিপি খ্রিষ্টপূর্ব ১৭০০ অব্দের দিকে রচিত। কৃষি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে হিসাব-নিকাশের জন্যই তারা গণিত শাস্ত্রের উদ্ভাবন করেছিল।
কৃষি পণ্য সামগ্রীর পরিমাপ, কৃষি কাজের খবরের পরিমাণ ও কারিগরদের জিনিসপত্র তৈরির সময় পরিমাপ প্রভৃতি প্রয়োজনেই গণিত শাস্ত্রের বিকাশ সাধিত হয়েছিল। মিশরীয়রাই এক, দশ, শত, সহস্র প্রভৃতি সংখ্যা নির্দেশ করতে বিভিন্ন প্রতীক ব্যবহার করতো। মিশরীয়রাই যোগ, বিয়োগ ও ভাগ পদ্ধতি আয়ত্ত করেছিল। গুণ পদ্ধতিকে তারা সহজে আয়ত্তে আনতে পারেননি।
মিশরীয়রাই সর্বপ্রথম পাটিগণিত ও জ্যামিতির উদ্ভাবন করে। তারা ভগ্নাংশের হিসেব বুঝলেও 'O' (শূন্য) আবিষ্কার করতে পারেনি। মিশরীয়রাই পিরামিড নির্মাণ করতে, খাল খনন করতে, জমি জমার হিসাব করতে, জ্যামিতিক জ্ঞান প্রয়োগ করেছিলেন।
কোণ, ত্রিভুজ, চতুর্ভূজ, বৃত্তের পরিমাপ ইত্যাদি বিষয়ে তারা জ্ঞানার্জন করেছিল এবং বস্তুর ঘনফল নির্ণয় করতে পারত। তাই অনেক পণ্ডিতদের মতে মিশরীয়রাই সর্বপ্রথম গণিতশাস্ত্রের দুটি অপরিহার্য শাখা পাটিগণিত ও জ্যামিতির উদ্ভাবন করেছিলেন ।
মিশরীয় সভ্যতায় ধর্মীয় চিন্তা ও ধারণা: মিশরীয়দের সামাজিক জীবন মূলত ধর্ম দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ছিল। তারা পুনর্জে বিশ্বাসী ছিল। তাই তারা মৃত দেহকে মমি করে রাখত। মিশরীয়দের জীবনের সকল ক্ষেত্রেই ধর্মের প্রতিফলন ছিল, যার ভিত্তিতেই প্রাচীন মিশরবাসীরাও এক বৃহত্তর পরিসরে ধর্মীয় কাঠামো গড়ে তুলেছিল। এ সভ্যতার ধর্মীয় বিশ্বাসের বিভিন্ন দিকসমূহ নিচে আলোকপাত করা হলো-
ক. পৌত্তলিকতা : প্রাচীন মিশরীয়রা প্রথমদিক থেকেই বিভিন্ন জীবজন্ত্র ও মূর্তির পূজা করত। প্রাচীন মিশরীয়দের ধর্মীয়
ধারণা মূলত বহু দেবতাবাদ থেকে একেশ্বরবাদ পর্যন্ত আবর্তিত হয়েছিল। প্রাচীন মিশরীয়রা
আকৃতির সংমিশ্রণে বিভিন্ন দেবতার সৃষ্টি করত। এছাড়াও তারা ওসিরিস মিন, কোনস, নামের মানুষ্যাকৃতি মূর্তি পূজাও করত। এ সময় তাদের প্রধান দেবতা ছিলেন সূর্যদেবতা 'রে' অথবা 'রা'। কিন্তু পরবর্তীতে 'দিবসে রাজধানী প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় সূর্য দেবতার নাম পরিবর্তিত হয়ে 'আমন' বা 'আমনের' নামে পরিচিতি লাভ করে। প্রাকৃতিক শক্তির দেবতা ও নীলনদের দেবতার নাম ছিল ওসিরিস (Osiris)।
পুরোহিত রাজা : রাজা বা বাদশাই দেশ পরিচালনার পাশাপাশি পুরোহিত হিসেবেও দ্বায়িত্ব পালন করতেন। অর্থাৎ রাজা সব সময় নিজেদেরকে ঈশ্বরের প্রতিনিধি হিসেবে দেশ পরিচালনা করতেন। প্রাচীন মিশরের প্রধান পুরোহিত ছিলেন ফারাও। ফারাও অন্যান্য পুরোহিতদেরকেও নিয়োগ করতেন।
গ. পরকাল বিশ্বাস : মিশরীয়দের ধারণা ছিল প্রতিটি মানুষের মধ্যে 'বা' অর্থাৎ 'আত্মা' এবং একটি 'কা' অর্থাৎ দ্বিতীয় সত্তা আছে। মৃত্যুর পরে আত্মা 'বা' পাখির বেশে উড়ে যায় এবং তা পুনরায় 'কা' অর্থাৎ দ্বিতীয় সত্তা' রূপে দেহে এসে ভর করে। ফলে দেহ পুনরুজ্জীবিত হয়। এ চিন্তা থেকেই মিশরীয়রা দেহকে ধরে রাখার জন্য মণি তৈরি করেছিল। তাই বলা হয় যে, মিশরীয়দের ধর্ম চিন্তায় পারলৌকিক চেতনাই বেশি প্রাধান্য লাভ করেছিল।
ঘ. নৈতিকতার অবক্ষয় : মিশরীয় পুরোহিতগণ নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য সাধারণ জনগণকে ধোঁকা দিত। অর্থের বিনিময়ে পুরোহিতরা বিভিন্ন ভূঁয়া তাবিজ কবজ ঝাড়ফুঁক দিত। তাই বলা যায় যে, মিশরীয়রা ধর্মের প্রভাবের ফলাফলকে বশে এনে কর্ম সম্পাদনের চেষ্টার মাধ্যমেই ধর্মের নৈতিক দিকগুলোর অবক্ষয় হতে থাকে এবং ধীরে ধীরে কুসংস্কার ও জাদু বিদ্যার প্রাধান্য লাভ করতে থাকে ।
৫. পুনরুজ্জীবন ও বিচার : মিশরীয় সভ্যতার প্রাচীন মিশরীয়দের বিশ্বাস মতে, মৃত্যুর পর পুনরুজ্জীবিত ব্যক্তিকে তার পাপ পুণ্যের বিচারের জন্য দেবতা ওসিরিসের সামনে হাজির করা হতো।
B. মিশরীয় সভ্যতার পরিবার ব্যবস্থা : বিবাহ নির্ভর পরিবার ছিল মিশর সমাজের ক্ষুদ্রতম একক। প্রাচীন মিশরীয় সমাজব্যবস্থার মূল ভিত্তিই ছিল পরিবার। যুগল বিবাহভিত্তিক পারিবারিক জীবনে মিশরীয়দের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ কমই হতো। মিশরীয়দের মধ্যে একক বিবাহভিত্তিক বিবাহের প্রচলন ছিল বেশি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে একাধিক স্ত্রী গ্রহণের প্রবণতা মিশরীয়দের মধ্যে লক্ষ করা যায়। মিশরের রাজ পরিবারের মধ্যে সম্পত্তি রক্ষা এবং রক্তের বিশুদ্ধতা রক্ষার জন্য আপন ভাই বোনদের মধ্যে বিবাহের কথা জানা যায়। ফারাওগণ একাধিক বিবাহ করতে পারত এমনকি উপপত্নীও রাখতে পারত। ফারাওদের নিজস্ব গোত্রের বাইরে বিবাহ করা নিষিদ্ধ ছিল। রাজা নিজের বোন এমনকি নিজের মেয়েকেও বিয়ে করতে পারতেন। প্রাচীন মিশরীয় সমাজে প্রেম-ভালোবাসা, যৌনাচার, উপপত্নী ও নর্তকী রাখার অনেক লিখিত প্রমাণ রয়েছে। সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রেই নারী-পুরুষরা সমান মর্যাদা ভোগ করত।
ঊনবিংশ ও বিংশ শতাব্দীর রাজ বংশের শাসনামলে প্রাপ্ত উপাদানসমূহ থেকে দেখা যায় যে, স্বামী স্ত্রীর মধ্যে মধুর ও রোমাঞ্চকর সম্পর্ক থাকলেও তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটত। আবার মধ্য রাজবংশের যুগে নারীরা সম্পত্তি লাভ, হস্তান্তর, চুক্তি ও মামলা করতে পারত। তাই নারীদের প্রসঙ্গে Max Muller উল্লেখ করেছেন, মিশর নারী জাতিকে যে উচ্চ আইনগত মর্যাদা দিয়েছে অন্যকোনো প্রাচীন বা আধুনিক জাতি তা দেয়নি ।
ঘ. রসায়ন বিদ্যা : বিভিন্ন পণ্ডিতদের মতে, মিশরীয়রাই সর্বপ্রথম সুগন্ধি জলপাই তেল এবং ক্যাস্টার (ভেত্তার) তেল আবিষ্কার করেন। মিশরীয়রা ব্যাপক ভেষজ গুণাগুণ জানত। তারা ভেষজ ও সুগন্ধি তেল দ্বারা মৃতদেহকে সতেজ রাখতে গিয়েই মিশরীয়রা বিজ্ঞানের অন্যতম শাখা হিসেবে রসায়ন শাস্ত্রেও ব্যাপক জ্ঞান অর্জন করেছিলেন।
মিশরীয় সভ্যতার শিল্পকলা : নান্দনিক ও চিত্তাকর্ষক জাতি হিসেবে মিশরীয়রা বিশ্ব সভ্যতার ইতিহাসে বিশেষ স্থান দখল করে আছে। মিশরীয়দের শিল্পকলার গুরুত্বপূর্ণ তিনটি শাখা নিয়ে আলোচনা করা হলো। যথা-
:
ক. ভাস্কর্য : প্রাচীন মিশরে শিল্পকর্মের চরম বিকাশ ঘটেছিল। মিশরীয় সভ্যতায় ভাস্কর্যের যে চরম বিকাশ ঘটেছিল তার নিদর্শন হলো মিশরের পিরামিড ও মন্দির। ভাস্কর্য শিল্প মিশরীয়দের অনেকটা তাদের স্থাপত্যেরই অনুষঙ্গী ছিল। মিশরীয়দের দক্ষতা ও উন্নত যন্ত্রপাতি ভাস্কর্যের ক্ষেত্রে দিয়েছে উচ্চস্থান। সমাধি ও মন্দিরের প্রবেশ পথ বিভিন্ন কারু কার্যের নিদর্শন রয়েছে। দেয়ালের গায়ে খোদিত ভাস্কর্য বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। মূর্তি তৈরিতে তারা ছিল পারদর্শী। বড় বড় পাথর কেটে তৈরি করত সুন্দর সুন্দর মূর্তিসমূহ। প্রাচীন রাজ বংশের যুগ থেকেই মূর্তি তৈরি করা হয়ে থাকে । খোদাই এবং রঙের ব্যবহারে বসা অথবা দাঁড়ানো ভঙ্গিতে মূর্তিগুলো প্রায়শই জীবন্ত মনে হতো। প্রাচীন রাজবংশের যুগে পিরামিডের অদূরে সম্পূর্ণ পাহাড় কেটে মানুষের মাথা ও সিংহের দেহের সমন্বয়ে তৈরি করা হয়েছিল এরূপ একটি ভাস্কর্য যা স্ফিংক্স (Sphinx) নামে পরিচিত। এটি ছিল ফারাও খফ্রেকের (Khafre) কাল্পনিক স্ফিংক্স। সাম্রাজ্যের যুগের ভাস্কর্যে বিমূর্ত ধারার পরিবর্তে সরাসরি ব্যক্তিকে তুলে ধরা হয়। এর প্রকৃষ্ট প্রমাণ হলো ফারাও দ্বিতীয় রামসেসের বিশালাকৃতির মূর্তিটি। বিশাল ফারাও মূর্তি বিশালাকার দেহ ছিল সিংহের এবং মাথা ছিল মানুষের । দানব আকৃতির প্রস্তর মূর্তিকে মিশরীয়রা আতঙ্কের জনক বলে ডাকত।
খ. স্থাপত্য শিল্প : সভ্যতার ইতিহাসে মিশরের প্রথম পরিচিতি প্রতীকেই হচ্ছে তার স্থাপত্য শিল্প। মিশরীয়দের বলা হয় ইতিহাসের শ্রেষ্ঠতম নির্মাতা। পাথরের সাহায্যে সৌধ নির্মাণের ক্ষেত্রে মিশরীয়দের প্রকৌশলগত দক্ষতার পরিচয় মিলে। স্থাপত্য নিদর্শনের মধ্যে প্রধান ছিল স্মৃতিসৌধ এবং ধর্মমন্দির। মৃত্যুর পরবর্তী সময়ে জীবনের অস্তিত্ব আছে বলে তারা বিশ্বাস করত। এ ধারণার ওপর ভিত্তি করেই তৈরি হয়েছিল বিখ্যাত পিরামিডসমূহ। পিরামিড তৈরির দক্ষতা দেখে বিশ্ববাসী মিশরীয়দের শ্রেষ্ঠ নির্মাতার আসনে আসীন করেছে। পিরামিডের বিশালতা সত্যিই বিস্ময়কর। যেমন- ফারাও খুপুর পিরামিডের ভিত ছিল ১৩ একর জমি বিস্তৃত, উচ্চতা ছিল ৪৮১ ফুট। এটি নির্মাণে ২০ লক্ষের অধিক চুনা পাথরের ব্লক ব্যবহার করা হয়েছিল যার প্রত্যেকটির ওজন ছিল প্রায় আড়াই টন। ঐতিহাসিকদের ধারণা এক লক্ষ লোকের বিশ বছরের মেহনতে স্মৃতিসৌধটি নির্মিত হয়েছিল। ঐতিহাসিকদের খনন কার্যের ফলে প্রায় ৮০ টি পিরামিডের ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কৃত হয়েছে, যার মধ্যে ৭০টি কালের স্বাক্ষী হিসেবে স্বাক্ষর বহন করছে। এছাড়াও ধনী ধর্মীয় পুরোহিতরা ধর্ম মন্দির তৈরি করেছিল। অনেক পণ্ডিতদের মতে, মিশরের বিখ্যাত পিরামিডসমূহ প্রাচীন রাজবংশের আমলে অর্থাৎ খ্রিষ্টপূর্ব ৩০০-২৫০০ অব্দের মধ্যে নির্মিত। মিশরীয় সভ্যতায় বড় বড় পাথর খণ্ড দিয়ে মন্দিরগুলো তৈরি করা হয়েছিল। পিরামিডের পাশাপাশি মন্দিরগুলো ছিল মিশরীয় স্থাপত্য শিল্পের এক মূর্ত প্রতীক। গ. চিত্রকলা : সমাধি সৌধ, পিরামিড ও মন্দিরসমূহের দেয়াল অলংকৃত করতে গিয়েই মিশরীয়রা প্রথম চিত্র কলার বিকাশ ঘটিয়েছে। মিশরীয় চিত্রকলা তাদের স্থাপত্য, ভাস্কর্য, ধর্মীয়, আর্থ-সামাজিক ও দৈনন্দিন জীবনযাত্রা প্রণালির সাথে যুক্ত। মিশরীয় চিত্র শিল্পীরা চিত্র অংকনে সাধারণত, কালো, সাদা, হলুদ, লাল, ধূসর, নীল ইত্যাদি রঙের ব্যবহার করত। দেয়াল চিত্র অংকনে মোম, আঁঠা ও ডিম ব্যবহৃত হতো। মিশরের সর্বোৎকৃষ্ট চিত্রকলার সূত্রপাত হয় ফারাও ইখনাটন ও তাঁর পরবর্তী সময়ে। এ সময়ে চিত্র শিল্পীরা তাদের মনের মাধুরী মিশিয়ে অংকন করেছিল ফুটন্ত ফুল, ভূমি কর্ষণরত কৃষক, ফসল বোনার দৃশ্য, ফসল কাটা ও মাড়াইয়ের ছবি, বস্ত্র বুননরত তাঁতী, কর্মরত কামার, কুমার, সুতার, গাড়ি চালক, মাঝি, লিপিকার, জাদুকর, খেলোয়াড়, কুস্তিগীর, নর্তকী, বিভিন্ন জীবজন্তু, শিকার দৃশ্য চারণভূমি, সুসজ্জিত সম্ভ্রান্ত গৃহস্থের বাড়ি, সমুদ্রের ঢেউ ইত্যাদি বিষয়গুলো। এছাড়াও প্রাচীন মিশরীয়রা কারুশিল্পেও নান্দনিক ছিল। স্বর্ণ শিল্পীরা স্বর্ণ দিয়ে মহামূল্যবান অলংকার আংটি, নেকলেস, বাজুবৃন্দ, মুকুট, সীতাপাটি ছাড়াও মূর্তিসহ অন্যান্য চমৎকার নিপুণ চিত্র শিল্প তৈরি করেছিল।
৭. মিশরীয় সভ্যতার লিখন পদ্ধতি : "কিউনিফরম" নামের উন্নতমানের লিখন পদ্ধতিতে মিশরীয়রা ডান থেকে বাম দিকে লিখত। তারা কাদা মাটির প্লেটে খাগের কলম দিয়ে কৌণিক রেখা ফুটিয়ে তুলত। কিউনিফরম লিপির প্রধান গুণ হচ্ছে। বিশেষ চিহ্নগুলো রোদে শুকালে স্পষ্ট হয়ে উঠে। এ চিত্র লিপি এক পর্যায়ে শব্দ লিপিতে রূপান্তরিত হয়। তারা ৩৫০টি বর্ণের ব্যবহার জানত। মিশরীয়রা গুণ, ভাগ, ভাগের বর্গমূল ও ঘনমূলের হিসাব করতে পারত। তাদের লিখন পদ্ধতি মিশরসহ নিকট প্রাচ্যে বেশ বিস্তার লাভ করে। মিশরীয়দের লিখন পদ্ধতি সম্পর্কে ডেভিস মনে করেন যে, মিশরীয়রাই প্রথম লিখন পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। মিশরীয়দের লিখবার এই প্রক্রিয়াকে বলা হতো হায়ারোগ্লিফিক (Hieroglyphic)। হায়ারোগ্লিফিক শব্দের অর্থ পবিত্র লিপি। আর এ নামটি দেওয়া গ্রিকদের। ধীরে ধীরে এই লিপি থেকে স্বরভিত্তিক অক্ষরের সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে হায়ারোগ্লিফিক লিখন পদ্ধতি তিনটি শ্রেণিতে প্রকাশ পায়। যেমন- ক. চিত্রভিত্তিক (Pictographic), খ. অক্ষরভিত্তিক (Syllabic) এবং গ. বর্ণভিত্তিক (Alphabetic)।
ব্যাঞ্জন ধ্বনি উদ্ভাবনের পূর্বকার মিশরীয় লেখাকে হায়ারেটিক (Hieratic Scrip) বলা হতো। ২৪টি ব্যঞ্জন চিহ্ন উদ্ভাবনের পর মিশরের লিখন প্রক্রিয়াকে ডেমোটিক বলা হয়। প্রাচীন মিশরীয়রা পাথর ও কাঠের ওপর লেখা খোদাই করতো। স্বল্প পরিসরের লেখাগুলোকেই খোদাই করে রাখা সম্ভবপর ছিল। এখান থেকেই তারা উপলব্ধি করে ব্যাপক আকারে লিখবার জন্য প্রয়োজনীয় উপাদানের। আর এই প্রয়োজনীয়তাকে সামনে রেখে এগিয়ে আসে আদি মিশরীয়গণ। এছাড়াও প্যাপিরাসের একটির মতো অন্যটির সাথে জুড়ে দিয়ে দীর্ঘরোল তৈরি করা হতো। ফলে এতে দীর্ঘ লেখার সুযোগ যেমন ছিল তা সংরক্ষণ করাও ছিল সহজতর ।
মিশরীয়দের লেখার অনুসরণ করতে গিয়ে ফিনিশীয়রা ইংরেজি ভাষায় ২২টি বর্ণ উদ্ভাবন করে। পরবর্তীকালে গ্রিকরা e.i. o, u এই চারটি বর্ণ যোগ করে আধুনিক বর্ণমালায় ২৬টি বর্ণ সম্পূর্ণ করেছিল।
৮. মিশরীয় সভ্যতার সাহিত্য : পিরামিড, মন্দির ও সমাধি ক্ষেত্রে খোদাইকৃত লিপিমালাই সম্ভবত মিশরের প্রাচীনতম সাহিত্য। কিংবদন্তী ধর্ম সঙ্গীত, যাদুর শ্লোক প্রভৃতি প্রাচীন সাহিত্যের বিষয়বস্তু। মিশরে ধর্মভিত্তিক সাহিত্য চর্চার নিদর্শন রয়েছে মৃতদেহের পুস্তকে (Book of Dead) বা মৃতদের পুস্তক। মিশরীয়দের সাহিত্য চর্চার মূলভিত্তি ছিল দর্শন, ধর্ম ও বাস্তবতা। মিশরীয় সাহিত্যের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল মেম ফাইট ড্রামা, রয়াল হীম অব ইখনাটন। প্রাচীন রাজবংশীয় যুগে ধর্মকে রাষ্ট্রীয় স্বার্থে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে প্রধানত সাহিত্য রচিত হতো। সিহানুর রূপ কথা ছিল (The Tale of Sihenu) ছিল মিশরীয় সাহিত্যের জনপ্রিয় গল্প। রূপকথা, উপাখ্যান, গ্রামীণ ছড়া, বীরত্ব গাঁথা প্রেমের কাহিনি এগুলো ছিল সাহিত্যের উপজীব্য বিষয়। পদ্য ছন্দে মূলত সাহিত্য রচিত হতো, তবে গদ্য সাহিত্যেরও প্রচলন ছিল। মিশরীয় সাহিত্যে দার্শনিকতারও প্রমাণ পাওয়া যায়।
৯. মিশরীয় সভ্যতার রাজনৈতিক অবস্থা : প্রাচীন মিশরের রাজাকে ফারাও বলা হতো। রাজা নিজেকে দেবতার বংশ বলে দাবি করতেন এবং রাজার ক্ষমতা ছিল নিরঙ্কুশ। মিশরের বিখ্যাত রাজাদের মধ্যে প্রথম বাটমোস, তৃতীয় বাটমোস, দ্বিতীয় রামসেস ও তৃতীয় রামসেসের নাম বিশেষভাবে প্রণিধানযোগ্য। মন্দির ও পুরোহিত সম্প্রদায়ের যথেষ্ট ধনসম্পত্তি ছিল। ফলে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে তাদের প্রভাব প্রতিপত্তি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল।
১০. দর্শন শাস্ত্র : প্রাচীন মিশরীয়গণ দর্শনশাস্ত্রে যথেষ্ট কৃতিত্ব অর্জন করেছিল। তাদের দর্শনের মূল ভিত্তি ছিল রাজনীতি ও নৈতিক আচরণ। এ সময় মিশরে জড়বাদী মতবাদের ঊর্ধ্বে অতীন্দ্রীয় চিন্তাধারার উন্মেষ হয়। এর ফলে পরকালে মিশরীয়গণ অবিনশ্বর ও চিরন্তন পৃথিবী, ঘটনার পুনরাবৃত্তি এবং ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ায় বিশ্বাসী হয়ে ওঠে। মিশরীয়গণ এ ধরনের নৈতিকতাভিত্তিক দর্শনের উদ্ভাবন করে খ্রিষ্টপূর্ব ২৫০০ অব্দে। পঞ্চম রাজ বংশের আমলে ফারাও এর প্রধান স্ত্রী ফাহোটেপ তার Maxims গ্রন্থে মন্দের বিচার ও পরিণতি সম্বন্ধে বিশদ বিবরণ দেন ।
পরিশেষে বলা যায় যে, প্রাচীন সভ্যতার মধ্যে মিশরীয় সভ্যতা ছিল অন্যতম। জ্ঞান-বিজ্ঞান শিক্ষা-সভ্যতা এবং নব নব আবিষ্কারে মিশর ছিল বিশ্ব সভ্যতার অগ্রগামী ।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]