আজটেক সভ্যতার প্রধান প্রধান বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আলোচনা কর। Discuss the major features of Aztec civilization.

কোনো অঞ্চলে যখন একটি মানবগোষ্ঠী স্থায়ীভাবে নগর পত্তন করে সেখানে এক উন্নততর জীবনব্যবস্থা গড়ে তোলে, তখন ত তাকে সভ্যতা হিসেবে পরিগণনা করা হয়। তাই বলা হয় আধুনিক সভ্যতা হঠাৎ করেই গড়ে ওঠেনি বরং এটি যুগযুগ ধরে অগণিত মানুষের প্রচেষ্টার ফলশ্রুতি। বিশ্বে এ পর্যন্ত যে সভ্যতার নিদর্শন পাওয়া গেছে তন্মধ্যে আজটেক সভ্যতা অন্যতম । ১১০০ খ্রিষ্টাব্দের শুরুর দিকে দক্ষিণ আমেরিকার হুয়া টেক্সকোকো, টেপানেকসহ অন্যান্য জাতি ও রাজ্যের মানুষ মেক্সিকো ম উপত্যাকায় যে সভ্যতা গড়ে তুলেছিল তাকে আজটেক সভ্যতা বলা হয়। পনেরো শতকে আজটেকদের রাজ্য গোটা মেক্সিকো ড় ছুড়ে বিস্তৃতি লাভ করে। আজটেকরা ছিল যুদ্ধপ্রিয় জাতি। সেখানে সুশিক্ষিত যোদ্ধা দল সব সময় প্রস্তুত থাকত। আজটেকরা হু যুদ্ধ করে অনেক যুদ্ধ বন্দিদের ধরে আনত। এসব যুদ্ধ বন্দিদের এরূপ প্রতিপত্তি তেমন একটা স্থায়িত্ব লাভ করেনি। কারণ ১৫১৯ খ্রিষ্টাব্দে দেশীয় সেনাপতি কার্টেজের আক্রমণে আজটেক সভ্যতা ধ্বংস হয়ে যায়। উল্লেখ্য যে, যতদিন তারা ক্ষমতায় ং ছিল, ততদিন দুর্দান্ত প্রতাপের সাথে সাম্রাজ্য পরিচালনা করে। আজটেকরা সমাজব্যবস্থা, শাসনব্যবস্থা, শিক্ষা, সাহিত্য ও কৃষি না ব্যবস্থা বিশেষ কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখে। এ সভ্যতা বসবাসকারী জনগণ আমেরিকার অন্যান্য জাতির লোকদের মতোই বেরিং প্রণালী পার হয়ে এশিয়া থেকে আমেরিকা মহাদেশে পা রেখেছিল। কালক্রমে এরা নানাভাবে বিভক্ত হয়ে আমেরিকা মহাদেশের বিভিন্ন স্থানে বসতি স্থাপন করে। মূলত মেক্সিকোর উর্বর মাটির কারণেই এখানে আগত মানুষ কৃষি কাজের প্রতি আকৃষ্ট হয়। ১০০ থেকে ৬০০ শতকের ভেতরে টিউটেইকান নামক একটি জাতি কৃষিভিত্তিক সমাজের পত্তন ঘটিয়েছিল। ৬০০ খ্রিষ্টাব্দের পরে মেক্সিকোর উত্তরাঞ্চল থেকে আগত টলটেক জাতির লোকেরা মধ্য মেক্সিকোতে আসা শুরু করে। টলটেকরা পরবর্তীতে রয়োদশ শতকে নতুন সভ্যতার পত্তন ঘটায়। পরবর্তীতে নাহুৎলা রাজতন্ত্রের সূত্রপাত হয় এবং এদের জাতীয় প্রতীক হয় সাপ ও ঈগল। এভাবেই নাহুৎলায়ই আজটেক সভ্যতা গড়ে তুলেছিল, যেটা স্পেনিশ উপনিবেশিক শক্তি দ্বারা ধ্বংস প্রাপ্ত হয়েছিল।

আজটেক সভ্যতার ভৌগোলিক অবস্থা > Geographical Condition of Aztec Civilization

টেপানেক, দক্ষিণ আমেরিকার হুয়া টেক্সকোকাসহ অন্যান্য জাতি ও রাজ্যের মানুষ মেক্সিকো উপত্যকায় ১১০০ খ্রিষ্টাব্দের শুরুর দিকে যে সভ্যতা গড়ে তুলে তাকে আজটেক সভ্যতা বলা হয়। আজটেকদের রাজ্য গোটা মেক্সিকো জুড়ে বিস্তৃতি করেছিল পনেরো শতকের দিকে। এটি দক্ষিণ আমেরিকার একটি প্রাচীন সভ্যতা। আজটেক সভ্যতামূলত পশ্চিমে মেক্সিকো উপত্যকা থেকে পূর্বে মেক্সিকো উপসাগর এবং দক্ষিণে বর্তমান গুয়েতেমালা পর্যন্ত প্রসারিত ছিল। তাই বলা হয় যে, ১২০ শতাব্দী থেকে ১৫শ শতাব্দীর মধ্যে আজটেক সভ্যতা গড়ে উঠেছিল।

আজটেক সভ্যতার প্রধান প্রধান বৈশিষ্ট্য Major Features of Aztec Civilization

আজটেক সভ্যতার প্রধান প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ নিচে আলোচনা করা হলো—
১. স্বতন্ত্র অধিবাসীদের রাজ্য স্থাপনের পটভূমি : টলটেক জাতি উত্তরদিক থেকে এসে ৭০০ খ্রিষ্টাব্দে মেক্সিকো উপত্যকা অধিকার করে নেয়। টলটেকরা, মায়া অধিবাসীদের সংস্পর্শে এসে তাদের সংস্কৃতি আয়ত্ত করে মায়াদের অনুকরণে সুন্দর সুন্দর নগর গড়ে তোলে। *
১২০০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে টলটেক ও তাদের সমগোত্রীয় অন্যান্য জাতির মানুষ এক বড় রাজ্য গড়ে তোলে। আজটেক জাতি উক্ত রাজ্য গঠিত হওয়ার পর উত্তর পশ্চিম দিক থেকে মেক্সিকোতে আসতে থাকে। ১৩২৫ খ্রিষ্টাব্দের দিকে আজটেকরা বর্তমান মেক্সিকো নগরীর কাছে এক হ্রদ উপত্যাকায় বসতি গড়ে তোলে। এরপর তারা মেক্সিকোর অন্যান্য উপজাতির সাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে যুক্তরাজ্য গড়ে তোলে। মূলত যুদ্ধ প্রিয় জাতি ছিল আজটেকরা। বিভিন্ন এলাকা তারা যুদ্ধ করেই দখল করে নেয়। ফলে ১৫০০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে আজটেকদের রাজ্য আমেরিকা জুড়ে বিস্তৃত হয়।
সমাজব্যবস্থা : তিনটি গোষ্ঠী ছিল আজটেক মিত্র সংঘে। এ তিনটি গোষ্ঠী হলো— ক. আজটেক, খ. তেজকুয়ান ও গ. টলাকোপান । এ তিনটি গোষ্ঠীই মূলত আজটেক মিত্র সংঘ গড়ে তুলেছিল। আজটেক সমাজ সংগঠনের দুটি পর্ব ছিল গণ ও ভ্রাতৃত্ব। এ দুই সংগঠনের নাম কোনো স্পেনীয় লেখকের লেখতে পাওয়া যায় না। তবে কিছু স্পেনীয় লেখকের লেখায় আজটেক সমাজ সংগঠন সম্পর্কে কিছু অস্পষ্ট বর্ণনা পাওয়া যায়। সামাজিক সংগঠন ছাড়াই, আজটেকগণই ছিলেন, এ সভ্যতার সবচেয়ে লক্ষণীয় বিষয়। কারণ আজটেকগণই ছিল মৌলিক একক, যার উপর সামাজিক সংগঠন নির্ভর করত। যে সাতটি গোষ্ঠী আজটেক সভ্যতার সূচনাকালে স্থানান্তর গমন করেছিল আজটেকরা ছিল মূলত তাদেরই জ্ঞাতিগোষ্ঠী ।
৩. কৃষি ব্যবস্থা : কৃষি কাজই ছিল আজটেক সভ্যতার মূল ভিত্তি। আজটেকরা, রাবার, কোকো, টমেটো, ভুট্টা প্রভৃতির চাষ করত। এসব গাছ, শস্য ও ফল আমেরিকা থেকেই অন্যান্য দেশে বিস্তার লাভ করেছে। জমির বিশেষ অভাব ছিল আজটেকদের রাজ্যে। তাই তারা হ্রদের মধ্যে দ্বীপের সৃষ্টি করে তাতে ফলের চাষ করত ।
৪. স্থাপত্য শিল্প ও ভাস্কর্য : প্রত্যেক নগরে পিরামিড বিশাল ভবন ও মন্দির তৈরি করত আজটেকরা। তারা খনন ও বাঁধ নির্মাণ করতে পারত। মায়া সভ্যতার মতো জাকজমকপূর্ণ না হলেও আজটেকদের স্থাপত্যশৈলী, সৌন্দর্যের দিক থেকে এসব ছিল প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য। মূলত আজটেকদের উৎকর্ষতার প্রমাণ পাওয়া যায় স্থাপত্য শিল্পে।
৫. চারু ও কারু শিল্প : চারু ও কারু শিল্পের ব্যাপক বিকাশ ঘটেছিল আজটেকদের সমাজে। তারা সুন্দর সুন্দর মাটির পাত্র ও মূর্তি, ধাতব ভাস্কর্য, অলংকার, অস্ত্র প্রভৃতির নির্মাণ কাজে দক্ষতা অর্জন করেছিল। আজটেকরা কারুকাজ সংবলিত পোশাকও তৈরি করতে পারত। ৬. ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার : ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপক প্রসার ঘটেছিল আজটেক সভ্যতায়, পালকের ফাঁকা নলের ভেতর সোনার রেণু ভরে তাকে আজটেকরা মুদ্রারূপে ব্যবহার করত। আজটেকরা পণ্য বিনিময়ের জন্য অনেক বাজার গড়ে তুলেছিল। তারা পৌর জীবনে ক্রমবর্ধমান চাহিদার জন্য প্রশাসনিক কার্যালয়ও গঠন করেছিল ।
৭. শ্রেণি কাঠামো : আজটেকদের শাসনকর্তা ছিলেন সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। রাজাই ছিলেন এ ক্ষমতার অধিকারী । সেনাবাহিনী, পুরোহিত ও অভিজাতরা সবসময় রাজাকে সমর্থন করে যেত। আজটেকরা কেবল যুদ্ধ করেই অসংখ্য যুদ্ধ বন্দীদের ধরে আনত। যুদ্ধ বন্দীদের থেকে কিছু সংখ্যক দেবতাদের উদ্দেশ্যে বলি দেওয়া হতো, অন্যদেরকে দাস হিসেবে নিয়োজিত করা হতো। এ সমাজে মানুষ কয়েকটি শ্রেণিতে বিভক্ত ছিল। সবচেয়ে নিচের শ্রেণিতে অবস্থান করত ভূমিদাস ও সাধারণ কৃষকরা।
জাগতিক উন্নতির নিদর্শন : জাগতিক উন্নতির নিদর্শন সুস্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে আজটেক সভ্যতায়। আজটেকরা সুন্দর ও সজ্জিত বাগান তৈরি করত। তারা অস্ত্রাগার নির্মাণ, উন্নত পোশাক পরিচ্ছদ তৈরি- সামরিক পোশাক, ভালো সুতা তৈরি ও বিভিন্ন নকশা কাটা তৈজস পত্র তৈরি করত। চিত্র লিখন পদ্ধতিও আজটেক সমাজে প্রচলিত ছিল।
শাসন ব্যবস্থা : রাজতন্ত্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে আজটেক সরকার ব্যবস্থাকে। যদি এ তথ্য আজ মেনে নেয়া দুষ্কর। স্পেনীয়রা যখন তাদের আবিষ্কার করে তখন তারা তিনটি গোষ্ঠী নিয়ে মিত্র সংঘ গড়ে তুলেছিল। আর এ গোষ্ঠীগুলো প্রায় গোটা দেশ জুড়েই বসবাস করত। গোষ্ঠীর প্রধানদের পরিষদ ও সামরিক নেতাদের সহযোগিতা নিয়ে সরকার গঠিত ছিল। এ সরকারের ক্ষমতা ছিল দুই অংশে বিভক্ত। জনসাধারণের দিকটা ছিল পরিষদের হাতে আর সামরিক দিকটা ছিল সেনাধ্যক্ষদের হাতে।
১০. সাহিত্য : আজটেক সাহিত্য সম্পর্কে তেমন কিছু জানা সম্ভব হয়নি) আজটেক সভ্যতার সূচনা করে মূলত আজটেকদের রচিত কডেসেস খ্রিষ্টপূর্ব ১০০০ অব্দে রচিত গ্রন্থের মাধ্যমে। তাদের ভাষায় বর্ণমালা ছিল না, বরং জটিল হায়ারোগ্লিফিকের সাহায্যে তারা লেখার চর্চা করত। আজটেকরা মূর্তি ও স্থাপত্যে তাদের ইতিহাস, ধর্মতত্ত্ব ও সাহিত্য সংরক্ষণের চেষ্টা করত। দুঃখজনকভাবে তাদের স্থাপনাগুলো ধ্বংস হয়ে যাওয়ার সাথে সাথে এগুলোর অধিকাংশ ধ্বংস হয়ে গেছে। ১১. আইন : সাম্যনীতির উপর দণ্ডায়মান ছিল আজটেক সভ্যতার আইন-কানুন। একই ধরনের অপরাধের ক্ষেত্রে সকল শ্রেণির লোকের জন্য ছিল সমান শাস্তি। অর্থাৎ কেউ চুরি করলে বা খুন করলে শাস্তি হিসেবে তার ঠোঁট, লিঙ্গ প্রভৃতি কেটে ফেলা হতো। মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত অনেক ক্ষেত্রে দেওয়া হতো।
১২. ধাতুর ব্যবহার : লোহার ব্যবহার আজটেকরা জানত না। কোনো ধরনের লোহার হাতিয়ার তাদের নিকট পাওয়া যায়নি। তারা সিলভার ও ব্রোঞ্জের তৈরি বিভিন্ন ধরনের হাতিয়ার ব্যবহার করত। যেমন— ছুরি, কাঁচি, তীর ধনুক ইত্যাদি ।
১৩. সংস্কৃতি : চিত্রাঙ্কন, সংগীত ও নৃত্য প্রভৃতি ক্ষেত্রে চমৎকার নৈপুণ্য দেখিয়ে ছিল আজটেকরা। পোশাক পরিচ্ছদে তাঁরা পাখির পালক বসিয়ে সুন্দর সুন্দর ডিজাইন তৈরি করতে পারত। তারা পালক দিয়ে সুন্দর টুপিও বানাতে পারতো।
১৪. অর্থনীতি : কৃষিই ছিল আজটেক অর্থনীতির মূলভিত্তি। মেক্সিকোর মালভূমি সমৃদ্ধ কৃষি জমিতে প্রচুর ভূট্টার চাষ হতো । এছাড়াও আজটেক সভ্যতায় লাউ, মরিচ, মটরশুটি, টমেটো, তামাক, তুলা ইত্যাদি কৃষিজাত পণ্যের চাষ করা হতো। এসব ফসল থেকে তারা একটি অংশ রাজস্ব হিসেবে প্রদান করত ।
১৫. সম্পত্তির উত্তরাধিকার : নৃবিজ্ঞানী লুইচ হেনরী মর্গান অভিমত প্রকাশ করেছিলেন যে, বর্বর যুগের মধ্য পর্যায়ে আজটেক সভ্যতা বিকশিত হয়েছিল। আজটেকদের জমি ছিল যৌথ এবং বিরাট বাড়ি করে কয়েকটি পরিবার একত্রে বসবাস করত। সাম্যবাদী জীবন ধারণের কারণে সম্পত্তির ক্ষেত্রে যৌথ মালিকানা স্বীকৃত ছিল বলে ধারণা করা হয় ।
১৬. ধর্ম : বহু দেবতার প্রচলন লক্ষ করা যায় আজটেক সভ্যতায়। সূর্য দেবের একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল সে সময়ে। সূর্যদেব রক্ত পিপাসু ছিলেন বলে আজটেকরা বিশ্বাস করতেন। তাই তারা সন্তুষ্টির জন্য দাস-দাসী ও যুদ্ধ বন্দীদের উৎসর্গ করত। পিচটলিকে, আজটেকরা সূর্য ও যুদ্ধ দেবতা হিসেবে সর্বাধিক গুরুত্ব দিত। আজটেকরা পৃথিবী বা মাটিকে 'মা' এবং আকাশকে 'পিতা' বলে প্রার্থনা করত। ১৭. লিখন পদ্ধতি ও সংখ্যা আবিষ্কার : লিখন পদ্ধতি মূলত আজটেকরাই আবিষ্কার করেছিলেন। তারা বর্ষ গণনাকে লিপিবদ্ধ করত এ লিখন পদ্ধতির মাধ্যমেই। একে শিলা পঞ্জিকাও বলা হতো। তাছাড়াও তারা সংখ্যা লিখন আবিষ্কার করেছিলেন। তারা ১ থেকে ১৯ পর্যন্ত বিন্দু সাজিয়ে সংখ্যা লিখত এবং পতাকার মতো ছবির সাহায্যে ২০-কে নির্দেশ করত। ১৮. জ্যোতির্বিদ্যা : বিশ্ব সভ্যতায় আজটেককে খাটো করে দেখার কোনো অবকাশ নেই। আজটেকরা জ্যোতির্বিদ্যায় ব্যাপক দক্ষতা অর্জন করেছিল। ধর্ম ও কৃষি কাজেও জ্যোতির্বিদ্যার প্রয়োগ হয়েছিল। তারা দিনক্ষণ গণনা করার জন্য বর্ষপঞ্জি তৈরি করেছিল। তারা ২০ দিনে মাস ১৮ মাসে বছর এবং ৩৬৫ দিনে এক বছর ধরে নিয়ে গণনা করত ।
১৯. বিনিময় প্রথা : মুদ্রা ও টাকার কোনো ধারণা ছিল না আজটেক সভ্যতায়। তারা বিনিময়ের মাধ্যমে মালপত্র আদান-প্রদান করত। যেমন— দক্ষ কৃষক তার ফসল বিনিময় করে অন্য জিনিস গ্রহণ করত। তবে সে যুগে শস্যদানা, সোনার গুঁড়া জোরানো পাখির পালক, তামার তৈরি পাতলা ছুরি ইত্যাদি মুদ্রার বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা হতো। তাই সর্বশেষে বলা যায় যে, উত্তর আমেরিকা মহাদেশে বিকশিত অন্যান্য সভ্যতার মধ্যে আজটেক সভ্যতা শ্রেষ্ঠত্বের দাবিদার। এ সভ্যতার গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হিসেবে চারু ও কারু শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য, কৃষিকাজ, লিখন পদ্ধতির চর্চা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও স্থাপত্য শিল্পে আজটেকদের উৎকর্ষতা বর্তমানে গবেষকদের দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষম হয়েছে। সুতরাং উৎকর্ষতার বিচারে আজটেক সভ্যতার গুরুত্ব অপরিসীম
আজটেক সভ্যতার পতন Fall of Aztec Civilization
দক্ষিণ আমেরিকার একটি প্রাচীন সভ্যতা হচ্ছে আজটেক সভ্যতা। আজটেক সভ্যতা গড়ে উঠেছিল মূলত ১২শ শতা থেকে ১৫শ শতাব্দীর মধ্যে। আজটেক সভ্যতার অবস্থান হচ্ছে বর্তমানে মেক্সিকোতে। পনেরো শতকে আজটেকদের রাজ্য গোটা মেক্সিকো জুড়ে বিস্তৃতি লাভ করে। যুদ্ধ প্রিয় জাতি ছিল আজটেকরা। সেখানে সুশিক্ষিত যোদ্ধা দল সবসময় থাকত। অনেক যুদ্ধ বন্দীদের ধরে আনত আজটেকরা যুদ্ধ করে। এসব যুদ্ধ বন্দীদের প্রভাব প্রতিপত্তি পরবর্তীতে তেমন একটু স্থায়িত্ব লাভ করেনি। কারণ ১৫১৯ খ্রিষ্টাব্দে দেশীয় সেনাপতি কর্টেজের আক্রমণে আজটেক সাম্রাজ্য ধ্বংস হয়ে যায়। পশ্চিমে মেক্সিকো উপত্যাকা থেকে পূর্বে মেক্সিকো উপসাগর এবং দক্ষিণে বর্তমান গুয়েতেমালা পর্যন্ত প্রসারিত আজটেক সাম্রাজ্যে পতন ঘটেছিল ১৫২১ খ্রিষ্টাব্দে 'মূলত স্পেনীয়দের দ্বারা। অর্থাৎ আজটেক সভ্যতার পতনে স্পেনীয়রা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]