প্রয়োজনীয়তাই সকল আবিষ্কারের প্রসূতি। প্রয়োজন ব্যতীত মানুষ কোনো কিছু সৃষ্টি করার ইচ্ছা পোষণ করে না। সামাজিক জীব হিসেবে মানুষের দায়বদ্ধতা অনেক বেশি হওয়ার কারণেই সমাজের ইতিবৃত্ত সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করার কোনো বিকল্প নেই। যেহেতু মানুষ সামাজিক জীব এবং তাকে সব সময় সমাজেই কারাস করতে হয় তাই সমাজ সম্পর্কে তার বিস্তারিত জানা একান্ত আবশ্যক। আর সমাজ সম্পর্কে জানতে হলে তাকে অবশ্যই সামাজিক ইতিহাস সম্পর্কে জানতে হবে। নিচে সামাজিক ইতিহাস পাঠের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা আলোচনা করা হলো-
১. অতীত সমাজ সম্পর্কে জানা : মূলত সামাজিক ইতিহাসের বিষয়বস্তুই হচ্ছে অতীত সমাজ সম্পর্কে অবগত হওয়া। অতীত সমাজের ক্রমবিকাশ এবং সমাজ বিবর্তনের বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ সামাজিক ইতিহাসের মাধ্যমে অবগত হওয়া যায়। সুতরাং সমাজ পরিবর্তনের যারা এবং সমাজ কাঠামোর গঠন ও বিবর্তন সম্পর্কে জানতে সামাজিক ইতিহাস পাঠের গুরুত্ব অপরিসীম। অতীত সমাজের জীবনযাপন প্রণালি সম্পর্কে জানা মানব সমাজের জীবন-যাপন প্রণালি, চালচলন ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে জানার জন্য সামাজিক ইতিহাস পাঠের বিকল্প নেই। সামাজিক ইতিহাস যদি সৃষ্টি না হতো তাহলে কোনো মানুষের পক্ষেই কয়েক শতাব্দী পূর্বের সমাজ সম্পর্কে অবগত হওয়া সম্ভব হতো না। তাই মানুষের জীবন প্রণালিকে জানতে সামাজিক ইতিহাস পাঠের গুরুত্ব অনস্বীকার্য ।
৩. সামাজিক সমস্যা চিহ্নিতকরণ ও সমাধান: সামাজিক ইতিহাসে কালের স্রোতে ভেসে যাওয়া স্মৃতিসমূহ মানুষ হৃদয় পটে
তুলে ধরার প্রয়াস পায়। অতীতের স্মৃতি বিজড়িত ছবিতে খুঁজে পাওয়া যায় সমকালীন সমাজের সমস্যাসমূহ। এ সকল সমস্যাসমূহ সমাধানের জন্য মানুষ কীভাবে এগিয়ে এসেছে সে আলোকেই পথ নির্দেশনা দেওয়া যায়, আধুনিক সমাজের সমস্যা সমাধানে। পুরাতন অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে মানব সমাজ সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়। সুতরাং সামাজিক সমস্যা চিহ্নিতকরণ এবং তার সমাধান করতে হলে সামাজিক ইতিহাস পাঠের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম । ৪. সামাজিক কাঠামোকে জানা : যেহেতু বর্তমান সমাজ কাঠামো অতীতের গর্ভেই জন্মলাভ করেছে, সেহেতু সমাজ কাঠামো সম্পর্কে জানতে হলে, সামাজিক ইতিহাস পাঠ অত্যাবশ্যক। সুতরাং সামাজিক ইতিহাস সমাজকাঠামো সম্পর্কে সুস্পষ্ট বর্ণনা প্রদান করে থাকে ।
৫. সুষ্ঠু ও সুন্দর জীবন গঠন : মানুষ সমাজে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে বাস করতে চায়। মানুষের সুন্দরভাবে বাঁচা নির্ভর করে অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক জীবনধারায় সুষ্ঠু প্রবাহের ওপর। অতীতে সমাজের অর্থনীতি, উৎপাদন কৌশল ইত্যাদি সম্পর্কে সামাজিক ইতিহাস পাঠ করে আমরা জ্ঞান লাভ করতে পারি। অতীত থেকে অনেক শিক্ষা গ্রহণ করতে পারি। তাই তো বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন-
"হে অতীত তুমি ভুবনে ভুবনে
কাজ করে যাও গোপনে গোপনে ।
সুতরাং পৃথিবীর সকল উন্নত জাতির জীবন প্রণালি বর্ণনা করতে এবং নিজেদের মধ্যে তার প্রতিফলন ঘটাতে, সুষ্ঠু ও সুন্দর জীবন গঠন করতে সামাজিক ইতিহাসের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম ।
৬. প্রাচীন সভ্যতা সম্পর্কে জানতে : প্রাচীন সভ্য সমাজের জীবন-যাপন প্রণালি, আচার-আচরণ, ভাষা, শিল্পকলা সবকিছু
সামাজিক ইতিহাসে মূর্ত হয়ে উঠে আসে। কালের বিবর্তনে পৃথিবীর বুক থেকে অনেক সভ্যতা বিলীন হয়ে গেছে। সুতরাং প্রাচীন সভ্যতা সম্পর্কে জানতে হলে, সামাজিক ইতিহাস পাঠ করতে হবে।
৭. প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন সম্পর্কে জানতে : বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন রয়েছে। যেমন- মিশরের পিরামিড, পাহাড়পুরের বৌদ্ধ বিহার, কুমিল্লার ময়নামতি, নরসিংদীর উয়ারি বটেশ্বর, ঢাকার লালবাগ কেয়া প্রভৃতি নিদর্শন সম্পর্কে সামাজিক ইতিহাসের মাধ্যমে বিস্তারিত জানা যায়। আবিষ্কৃত এ সকল প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনাবলি অতীত সময়ের সমাজ ও সংস্কৃতির পরিচয় তুলে ধরে। অতএব প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনাদি সম্পর্কে জানতে সামাজিক ইতিহাসের গুরুত্ব অপরিসীম।
৮. জ্ঞানের বিকাশ সাধন : অতীত সমাজের বিবর্তনের সকল দিক জানতে হলে, সামাজিক ইতিহাস অধ্যয়নের বিকল্প নেই। এতে সভ্যতার উত্থান-পতন, রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজনীতি, সংস্কার, আন্দোলন, বিপ্লব, বিখ্যাত ব্যক্তিত্বের জীবন কাহিনি ইত্যাদি লিপিবদ্ধ থাকে। সুতরাং সামাজিক ইতিহাস জ্ঞান বুদ্ধির বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৯. সামাজিক গবেষণায় : যেকোনো সমাজের পূর্ণাঙ্গ গবেষণার জন্য তার অতীত সম্পর্কে জানা দরকার। তাই সামাজিক গবেষণায় সামাজিক ইতিহাসের গুরুত্ব অপরিসীম। সামাজিক ইতিহাসে অতীতের বিশদ বিবরণ পাওয়া যায়। সুতরাং সামাজিক ইতিহাস, সামাজিক গবেষণা পরিচালনায় ব্যাপক সহায়তা দিয়ে থাকে ।
১০. সাংস্কৃতিক উন্নয়নে সামাজিক ইতিহাস : অতীত সম্পর্কে জানা, বোঝা এবং অতীতকে বাঁচিয়ে রাখা, অতীতের রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় প্রভৃতি দিকের বর্ণনা কেবলমাত্র সামাজিক ইতিহাস অধ্যয়ন থেকেই জানা সম্ভব হয়। সুতরাং অতীত সমাজের সাংস্কৃতিক অধ্যয়নে সামাজিক ইতিহাসের তাৎপর্য অনেক বেশি।
১১. কোনো জাতি গোষ্ঠীর সামাজিক জীবন অধ্যয়নে : কোনো জাতি গোষ্ঠীর জীবনধারা ও আচার-অনুষ্ঠান ইত্যাদি জানতে হলে সামাজিক ইতিহাস পাঠ করা একান্ত আবশ্যক। সুতরাং সামাজিক ইতিহাসের মাধ্যমে যেকোনো জাতি বা গোষ্ঠীর সামাজিক জীবনধারা, সামাজিক অনুষ্ঠান-প্রতিষ্ঠানের বিবর্তন ইত্যাদি সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান লাভ করা সম্ভব হয়ে থাকে । ১২. অতীত ঘটনার সংরক্ষক : সকল জাতির উত্থান-পতন ও বিকাশ, সকল মানুষের যাবতীয় কর্মের বিবরণ, সকল সভ্যতার
ক্রম বিবর্তন ইত্যাদি সামাজিক ইতিহাস সংরক্ষণ করে। তাই সামাজিক ইতিহাস পাঠ অতীব জরুরি।
১৩. অনুপ্রেরণায় সামাজিক ইতিহাস : বর্তমানে যে জাতি ক্ষমতা, শক্তি, শৌর্য-বীর্যের খ্যাতিমান অবস্থানে আছে, একদিন হয়তো সে জাতির অবস্থা ছিল অত্যন্ত শোচনীয়। তাই সামাজিক ইতিহাস পাঠের মাধ্যমে অতীত সমাজের ক্ষমতা, শক্তি, শৌর্য-বীর্য, উত্থান-পতন, বিকাশ ইত্যাদি সম্পর্কে ব্যাপকভাবে জানা যায় ৷
১৪. ধর্মীয় সহনশীলতায় সামাজিক ইতিহাস : সামাজিক ইতিহাস পাঠের মাধ্যমে মধ্যযুগে ধর্মীয় ক্ষেত্রে পোপ ও যাজকদের দুর্নীতি, ধর্মকে কেন্দ্র করে খ্রিষ্টান ও মুসলমানদের মধ্যকার ক্রুসেড, ত্রিশ বছরব্যাপী যুদ্ধ (১৬১৮-১৬৪৮) প্রভৃতি সম্পর্কে জানা সম্ভব হয়ে থাকে। সুতরাং ধর্মীয় বিষয়ে সহনশীল হতে, সামাজিক ইতিহাসের অধ্যয়ন একান্ত আবশ্যক । ১৫. রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ক্ষেত্রে সামাজিক ইতিহাস : প্রশাসনিক সংস্কার, রাজনৈতিক ব্যবস্থা, গণতন্ত্রের উন্নয়ন, রাজনৈতিক
উন্নয়ন প্রভৃতির শিক্ষা আমরা সামাজিক ইতিহাস থেকে পেতে পারি। তাই সামাজিক ইতিহাসের তাৎপর্য অনেক ব্যাপক । পরিশেষে বলা যায় যে, সামাজিক ইতিহাস পাঠের মাধ্যমে আমরা বিশ্বের সকল দেশ ও জাতির অতীত জীবন-প্রণালি ও তার ধারাবাহিক ইতিহাস সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে পারি। কখনোই অতীতকে অজানা রেখে আমরা আমাদের ভবিষ্যৎকে বিনির্মাণ করতে পারি না। সুতরাং অতীতের জীবন, সভ্যতার ক্রম বিবর্তন, সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় প্রভৃতি দিক সম্পর্কে জানার জন্য সামাজিক ইতিহাস পাঠের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য ।
সামাজিক ইতিহাসের সাম্প্রতিক ঝোঁক বা প্রবণতা
Recent Trends in Social History
Gould ও Kolb সম্পাদিত A Dictionary of Social Science' (1864) গ্রন্থে বলা হয়েছে, সামাজিক ইতিহাস পরিবর্তনশীল সামাজিক সম্পর্ক, সামাজিক অনুষ্ঠান ও প্রতিষ্ঠানের বিকাশ এবং সামাজিক মূল্যবোধের ধারা নিয়ে আলোচনা, করে। ইতিহাসের গতানুগতিকতাকে চ্যালেঞ্জ করেই সামাজিক ইতিহাসের উদ্ভব ও বিকাশ হয়েছে।
R. Green তাঁর 'A Short History of the English People' গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন যে, ঢাক-ঢোল আর কাশি-বাঁশির ইতিহাসের স্থলে ছুরি ও চামচের ইতিহাস দাবি করে। রাজা-বাদশাহ তথা শাসকের অতিরঞ্জিত জয়গানের স্থলে মানুষের পেশাগত ও আর্থ-সামাজিক জীবনের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
ভিকো (Vico) তাঁর The New Science গ্রন্থে সামাজিক প্রথা, অনুষ্ঠান, প্রতিষ্ঠান, আইন, আর্থ-সামাজিক সংগঠন, ভাষা, শিল্পকলা, ধর্ম, বিজ্ঞান ইত্যাদিকে সামাজিক ইতিহাসের পাতায় নতুন ধারা হিসেবে সংযোজন করেন বীরযোদ্ধা বা শাসকের কীর্তিকলাপ, যুদ্ধ, সন্ধি ইত্যাদির স্থলে। কেননা তার আমলে এগুলো ছিল ইতিহাসের মূলধারা ।
হার্ডার (Herder), মিচলেট (Michelet) এবং কোলারিজ ( Coleridge) Vico এর দেয়া মতে প্রভাবিত হন। মার্কস এবং এঙ্গেলসও এদের অন্তর্ভুক্ত হন। Man makes his own history ভিকোর দেওয়া এ ফর্মুলা এঙ্গেলসও গ্রহণ করেন।
ড. এফ. আর. খান তাঁর Social History গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন, "Social History is therefore, a recognized part of the social education through which we come to know as such what we are at present and what we were before." অর্থাৎ, সামাজিক ইতিহাস সামাজিক শিক্ষার এক স্বীকৃত অংশ। এটির মাধ্যমে আমরা আমাদের বর্তমান ও অতীত অবস্থার পরিবেশ ও পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত হতে পারি। যাহোক, একটি সময় ছিল যখন ইতিহাস আবর্তিত হলো রাজা বাদশা, সম্রাট ও সেনাপতিদের নিয়ে। সেখানে সমাজের সাধারণ মানুষের জীবনধারা, ঘটনাবলি, অর্থনীতি ইত্যাদি যুক্ত হতো না।
বর্তমান সামাজিক প্রেক্ষাপটে সামাজিক ইতিহাসের যে সকল নতুন ধারা হচ্ছে, তা নিম্নরূপ-
১. সামাজিক প্রথা : সামাজিক ইতিহাস, পরিবর্তনশীল সমাজের নানা বিষয়ের মধ্য দিয়ে সামাজিক প্রথা নিয়ে ইতিহাসের নতুন মাত্রা সংযোজন করেছে। যেখানে শুধু যুদ্ধ কিংবা কাহিনিই প্রাধান্য পেত, সেখানে বর্তমানে সামাজিক ইতিহাস, সামাজিক প্রথা নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে। একেক সমাজে একেক প্রথা বিদ্যমান। তাই ইতিহাসে একে গুরুত্বসহকারে পর্যালোচনা করা হয়।
২. অনুষ্ঠান-প্রতিষ্ঠান : অতীত সমাজের অনুষ্ঠান, প্রতিষ্ঠান কেমন ছিল, বর্তমানে কীরূপ চলছে এবং ভবিষ্যতে কীরূপ হবে, বা কীরূপ হলে মানব সমাজের সংস্কৃতি তথা মানব সভ্যতার দ্রুত উন্নয়ন সম্ভব তা নিয়ে সামাজিক ইতিহাস, সমাজবিজ্ঞানীদের দিক নির্দেশনা দিয়ে থাকে। বর্তমান সমাজের কুরুচিপূর্ণ অনুষ্ঠান এবং অবৈধ প্রতিষ্ঠানের ফলে মানব সমাজ ও সভ্যতার যে অবনতি হতে যাচ্ছে সামাজিক ইতিহাস তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা করে থাকে ।
৩. আইন : বর্তমানের আইন-কানুন বিষয়ে সামাজিক ইতিহাস ব্যাপক পর্যালোচনা করে। কোন আইনে মানুষের ক্ষতি হয়, কোন আইনে মানুষের ভালো-মন্দের বিচার হয়, তার দিক-নির্দেশনা দিয়ে সুন্দর ও সুখী মানব সমাজ গঠনে সামাজিক ইতিহাস ব্যাপক সাহায্য করে, যা দেশ ও দশের জন্য অতীব কল্যাণকর। সুতরাং আইনের মাধ্যমে মানব সমাজের পথ
সুগম হয়।
৪. সংস্কৃতি, ধর্ম, ভাষা : সামাজিক ইতিহাসে, মনব সমাজের নানাবিধ বিষয়, মানুষের আচার-আচরণ, ধর্ম, সংস্কৃতি ইত্যাদি স্থান পায়। ফলে মানব সমাজের নানা ঘটনার, সমস্যার বিশ্লেষণ, ঐতিহাসিক পটভূমি এবং বর্তমান ও ভবিষ্যৎ বিষয়ে জ্ঞান দানের মাধ্যমে সমাজের উন্নয়নের পথ সুগম করে দেয়।
৫. শিল্পকলা : সামাজিক ইতিহাসের মাধ্যমে অতীত সমাজের শিল্পকলার সাথে বর্তমান সমাজের শিল্পকলার মিল ও অমিল নির্ণয় করে সমাজ জীবনকে উন্নতির চরম শিখরে আরোহণের জন্য অনেক বিষয়ে আমরা জানতে পারি। কেবলমাত্র সামাজিক ইতিহাসই শিল্পকলার উন্নতি অবনতির সাথে মানুষের মানসিকতা, সভ্যতা ও আচার-আচরণের তথা পুরো সমাজ ব্যবস্থার উন্নতি-অবনতি চিহ্নিত হয়। সমাজ পরিবর্তনশীল বিধায় অতীতের সাথে বর্তমান সমাজের তুলনার মাধ্যমে সমাজের উন্নতি বা অবনতি কীভাবে হচ্ছে তা নিয়ে স্পষ্ট অভিমত প্রদান করে সামাজিক ইতিহাস ।
৬. উৎপাদন ব্যবস্থা ও সামাজিক সম্পর্ক : সামাজিক ইতিহাস, উৎপাদন ব্যবস্থা, সামাজিক সম্পর্ক, নগর জীবন, জ্ঞাতি
সম্পর্ক, ছোট পরিবার প্রভৃতি বিষয়ে ব্যাপক পর্যালোচনা করে।
৭. শ্রেণি ও ক্ষমতা কাঠামো : সামাজিক ইতিহাস বিভিন্ন শ্রেণি ও ক্ষমতা কাঠামোর ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ ও পরিবর্তনের ওপর
গুরুত্বারোপ করে। এছাড়াও সামাজিক ইতিহাস নিম্নোক্ত বিষয়গুলো ব্যাপকভাবে বিশ্লেষণ করে
* সামাজিক পরিবর্তন;
* সামাজিক পদ ও প্রত্যয়ের বিকাশ; * সামাজিক মূল্যবোধের পরিবর্তন; * বিশ্বাস ও মূল্যবোধের যুক্তি প্রমাণ;
* ঐতিহাসিক সমাজ কাঠামো; * সাংস্কৃতিক আধুনিকায়ন
* বিশ্বায়ন প্রভৃতি ।
সুতরাং বলা যায়, বিভিন্ন উদ্ভাবনী প্রচেষ্টার জোরে মানুষ আজ চন্দ্রে গমন করেছে। মানুষ সর্বদাই মহাশূন্যে গবেষণাগার, মঙ্গলগ্রহ, বিভিন্ন গ্রহ-উপগ্রহ নিয়ে নানাবিধ গবেষণায় রত রয়েছেন। এভাবে মানুষের গমন, নানাবিধ পরিকল্পনা, গন্তব্য, আবিষ্কারসহ অসংখ্য বিষয়কে কেন্দ্র করে সামাজিক ইতিহাস অনেক বাধা পেরিয়ে, সাফল্যের পথে এগিয়ে চলছে। তাই বলা যায়, মানুষের কর্মের বিভিন্ন বিভাজনের সাথে সামাজিক ইতিহাসেও এসেছে অনুরূপ বিভাজন এবং এর প্রবণতাও বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। অতএব, সামাজিক ইতিহাস মানব সমাজ ও সভ্যতার বিশ্লেষণ বিশেষ করে মানুষের পেশা, জীবনধারণ, সামাজিকতা, সামাজিক সংহতি তথা সমাজ পরিবর্তনের ইতিহাস ব্যাপকভাবে পর্যালোচনা করে থাকে ।
FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত