সামন্ততন্ত্রের উদ্ভব ও বিকাশ Origin and Development of Feudalism

সামন্ততন্ত্র বা সামন্তবাদ মধ্যযুগের ইউরোপের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান বা প্রথা। খ্রিস্টীয় নবম শতকের মধ্যে পশ্চিম ইউরোপের প্রায় সর্বত্র সামন্তবাদ লক্ষ করা যায় ।
প্রাচীন দাস শ্রম নির্ভর সামাজিক অর্থনৈতিক অবস্থা ভেঙে সময়ের চাহিদা অনুযায়ী তার উপরে যে নতুন আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থা গড়ে ওঠে তা ছিল সামন্তবাদ। অর্থাৎ সামন্তবাদ বা Feudalism ছিল একটি পূর্ণাঙ্গ ভূমিভিত্তিক সরকার ব্যবস্থা এবং সমাজব্যবস্থা, যা মূলত একাদশ হতে ত্রয়োদশ শতাব্দী পর্যন্ত সময়কালে চরম রূপে দেখা গিয়েছিল। বস্তুতঃ ভূমিকে কেন্দ্র করেই সামন্তব্যবস্থায় ধনী ও গরিবের মধ্যে ব্যাপক ধরনের সমঝোতা তৈরি হয়েছিল। অর্থাৎ সামন্তবাদের মূল লক্ষ্য ছিল সব কর্তৃক দুর্বলকে পালন ও রক্ষা করা এবং দুর্বল কর্তৃক সবলকে সেবা করা।
সামন্তবাদ Feudalism
সমাজ বিকাশের মার্কসীয় ছক অনুসারে তৃতীয় সমাজব্যবস্থার নাম সামন্ততন্ত্র বা সামন্তবাদ। কিন্তু শ্রেণি ও উৎপাদন ব্যবস্থার দিক দিয়ে এটি দ্বিতীয় শ্রেণিবিভক্ত সমাজ। সমাজবিকাশের ধারায় ভূমিকে কেন্দ্র করে ইউরোপে যে এক বিশেষ ধরনের আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় ব্যবস্থার আবির্ভাব ঘটে তার নাম সামন্তবাদ। সামন্ততন্ত্র বা সামন্তবাদ বিকশিত হয়েছিল তখন, যখন সম্পদ ও ক্ষমতার একমাত্র উৎস ছিল জমি। সামস্ত প্রথার উৎপাদন কাজে সামস্তপ্রভুদের কোনো ভূমিকা থাকত না। উৎপাদনের কাজে নিয়োজিত থাকত কৃষক ও ভূমিদাসগণ অথচ উৎপাদিত ফসলের এক বিরাট অংশ পেত সামস্ত প্রভুরা। সামন্ততন্ত্র মূলত একপ্রকার ভূমি কেন্দ্রীক সরকার ব্যবস্থা, যেখানে রাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় প্রশাসনের পরিবর্তে স্থানীয় ভূ-স্বামীদের মধ্যে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা বিকেন্দ্রীভূত হয়েছিল।
যাহোক ইউরোপের সামন্তপ্রভুদের নিজস্ব ভূমি আর কৃষিকে কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে ধরে গড়ে ওঠে উক্ত সামন্তবাদ। এর বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিল খ্রিষ্টীয় নবম শতাব্দীতে রোমান প্রিকারিয়াম (Precarium) এবং প্যাট্রোনেজ প্যাট্রোসিনিয়াম (Patronage patrocinium) এর জার্মান কমিটেটাস (Comitatus) এর সমন্বয়ের মাধ্যমেই। আবার ব্যাকরণের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা যায় ল্যাটিন শব্দ Feodum থেকে ইংরেজি Feudalism শব্দটির উৎপত্তি, যা Fief শব্দটির সাথে জড়িত। Fief শব্দের অর্থ হলো 'ভূমিখণ্ড'। সামস্ত ব্যবস্থায় জমির মালিকদের বলা হতো Lord। এই Lord কর্তৃক Vassal-কে দেওয়া হতো কিছু ভূমি। এসব ভূমিকেই বলা হতো Fief বা Feud যা থেকে পরবর্তীতে Feudalism এর উৎপত্তি।
সামন্ততন্ত্রের সংজ্ঞা দেওয়া একটু দুরূহ ব্যাপার। ঐতিহাসিকদের মধ্যে এ নিয়ে মতভেদের শেষ নেই। সামন্তবাদ সম্পর্কে বিভিন্ন সমাজবিজ্ঞানী, তাত্ত্বিক, গবেষক, ঐতিহাসিকগণ বিভিন্নভাবে তাদের মতামত তুলে ধরেছেন। সামন্তবাদ সম্পর্কে বাংলাদেশের সমাজবিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ড. নাজমূল করিম বলেছেন, “সামন্তপ্রথা বলতে এমন একটি সমাজ ও সংস্কৃতিকে বুঝায় যেখানে ভূমিই হচ্ছে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতার ভিত্তি।”
P.V. Myers তাঁর ‘A Short History of Ancient Medieval and Modern Times' গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন, 'Feudalism is a special form of society and government based upon a peculiar tenure of land, which prevailed in europe during the later part of middle ages, attaining, however, its most perfect development in the eleventh twelfth thirteenth centuries.” অর্থাৎ, সামন্তবাদ হলো একটি বিশেষ সমাজ ও সরকারব্যবস্থা, বিশেষ ধরনের ভূমি ব্যবস্থার উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠবে যা মধ্যযুগের শেষ পর্বে ইউরোপকে বিকশিত করেছিল এবং যার সন্ধান উৎকর্ষতা লাভ করেছিল একাদশ, দ্বাদশ ও ত্রয়োদশ শতাব্দীগুলোতে।
সমাজবিজ্ঞানী B. K. Gokhake এর মতে, "It (Feudalism) was a condition of society based on the principle of protection, secured it form a noble man, who had his own army and retuiners, the needle man is return secured services and payments form those whom he protected.” অর্থাৎ ভূমি মালিকানার ভিত্তিতে সামাজিক ও উৎপাদন সম্পর্ক (Lord-vassal relatioship) গড়ে উঠত। ক্ষমতার বণ্টন ও সম্পর্ক বা ভূমি অধিকারের মাধ্যমে নির্ধারিত ও নিয়ন্ত্রিত হতো।
ওয়াল ব্যাক ও টেইলর তাঁদের Civilization Past and Present গ্রন্থে সামন্ততন্ত্রের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেন যে, Feudalism can be defined as a type of government in which political power exercied locally by private I individuals rather than by the agents of centralized state. অর্থাৎ সামন্ততন্ত্র হচ্ছে স্থানীয় পর্যায়ের সরকার ব্যবস্থা যেখানে
ব্যক্তি সত্তার উপর কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রের বিধি-বিধানগুলোকে পরিচালনা করা হয়।
B. Bhushan তার The Dictionary of Sociology' গ্রন্থে বলেন যে, "Feudalism was based upon a system of land tenure in which land estates of various size (fifes) were given to hold (not to own) by an overlord, to his vassal (kinght in return for military service." অর্থাৎ, সামন্ততন্ত্র হচ্ছে একটি বিশেষ ধরনের সামাজিক, রাষ্ট্রীয় ও সামরিক ব্যবস্থা যা বিশেষভাবে অনুশীলিত এক ভূমিস্বত্ব ব্যবস্থার উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে।
ঐতিহাসিক গ্যানসোপ (Ganshop) বলেছেন, “মধ্যযুগে ইউরোপে কতগুলো উদ্ভূত ব্যবস্থার উদ্ভব হয়েছিল, যা বিকাশ লাভ করেছিল একখণ্ড জমিকে কেন্দ্র করে। এর অর্থ একজন আর একজনকে জমি দান করবে এবং জমি প্রদানকারী হচ্ছেন লর্ড, আর যিনি গ্রহণ করেছেন তিনি হলেন 'ভেসাল'। এ লর্ড ভেসালের মধ্যে যে সম্পর্ক এবং তার ফলে যে ব্যবস্থার উদ্ভব হয়েছিল
তাই হলো সামন্তব্যবস্থা।”
পরিশেষে বলা যায় যে, সামন্তবাদ মূলত এমন কতগুলো প্রথা ও বিধিব্যবস্থার সমষ্টি যেখানে শক্তিশালী মানুষ দুর্বল মানুষকে সাহায্য করবে এবং এর বিনিময়ে দুর্বল মানুষ শক্তিশালী মানুষকে সেবা করবে।

সামন্তবাদের গঠন Formation of Feudalism

ফিফ বা ফিউজ অর্থ হচ্ছে একখণ্ড জমি বা ভূমি। যে ব্যক্তি ফিফ প্রদান করে তাকে সুজারেন (Suzerain) বা লৰ্ড (Lord ) বলা হয়। আর যে ব্যক্তি ফিফ গ্রহণ করে তাকে ভ্যাসাল (Vassul) বলা হয়। প্রকৃতপক্ষে রাজাগণ হবেন সম্রাটের ভ্যাসাল । B এভাবেই মূলত দশ, একাদশ, দ্বাদশ ও ত্রয়োদশ শতাব্দীতে রাজনৈতিক অর্থনৈতিক বৈশিষ্ট্যসমৃদ্ধ, ভূমি ব্যবস্থার সাথে সম্পর্কিত
যে নতুন ব্যবস্থা গড়ে উঠেছিল তাকেই সামন্তবাদ বা Feudalism বলা হয়।
বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নানারকম নিয়ম-কানুন ছিল। তাই যে বিশেষ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ফিফ প্রদান করা হয় তাকে হোমেজ বলা হয়। যেমন— অনুষ্ঠানে ভ্যাসাল খালি মাথায় তাঁর প্রভুর পায়ে হাত রেখে তার প্রভুকে সর্বতোভাবে সাহায্য সহানুভুতি করতে রে অঙ্গীকারবদ্ধ হতেন। এ অনুষ্ঠানে প্রভু তার সামন্তকে সরাসরি রাজ্য দিয়ে দিতেন। সামন্তকে সবসময় নানাভাবে সাহায্য করতে
” হতো- প্রভুর বিভিন্ন কাজ কর্মে। সাহায্য করার জন্য বছরে ৪০ দিন বাধ্যতামূলক ছিল।

সামন্ততন্ত্রের উদ্ভব ও বিকাশ Origin and Development of Feudalism

অধিকাংশ ঐতিহাসিক মনে করেন ফ্রান্সই হলো সামন্তবাদের চারণভূমি। পরবর্তী সময়ে জাপান, চীনসহ ইউরোপ ও এশিয়ার কোনো কোনো এলাকায় সামন্তবাদ বিস্তার লাভ করেছে। নিচে সামন্তবাদের উদ্ভব ও বিকাশ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো- ১. ফ্রান্সের সামন্তপ্রথা : ধারণা করা হয় সর্বপ্রথম ইউরোপের প্রভাবশালী রাষ্ট্র ফ্রান্সে সামন্তপ্রথা উদ্ভব ও বিকাশ লাভ করে। তবে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সময়ে সামন্তপ্রথার উদ্ভব ও বিকাশ ঘটে। ফ্রান্সে সামন্তপ্রথার বিস্তার ছিল খ্রিষ্টীয় পাঁচ শতক থেকে দশ শতক পর্যন্ত। দশ শতকের মধ্যেই ফ্রান্স থেকে সমগ্র পশ্চিম ইউরোপের বিভিন্ন খণ্ডে বিভক্ত হয়ে ভূ- স্বামীদের অধীনে চলে যায় ।
২. প্রথম সামন্ত প্রথার বিস্তার : ফ্রান্সের বিস্তারকারী সামন্তপ্রথা সমগ্র ইউরোপে ছাপিয়ে এশিয়াতেও প্রবেশ করে। ইউরোপের পূর্ব এশিয়ার মধ্য প্রাচ্য নয় ও দশ শতকে সামন্ত প্রথার উদ্ভব ও বিকাশ ঘটে। অন্যদিকে জার্মানিতে সামন্ত প্রথার প্রবেশ ঘটে চার শতকে। ইংল্যাণ্ডের নমান্ডীতে সামস্তপ্রথার প্রবর্তন হয় এগারো শতকে। এছাড়াও প্রাচীন মিশর ও রোম সাম্রাজ্যের সামন্তপ্রথার লক্ষণ বিদ্যমান ছিল।
৩. প্রাণকেন্দ্রিক সামন্তপ্রথা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে সামন্ত প্রথার যে উদ্ভব ও বিকাশ ঘটে তার মধ্যে ভিন্নতা বিদ্যমান ছিল। উদ্ভবের প্রাথমিক পর্যায়ে সামন্ততন্ত্র উপজাতি সংঘটনের মতোই একটি নির্দিষ্ট এলাকাতে একটি সংকীর্ণ গ্রামকেন্দ্রিক সংগঠন হিসেবে গড়ে ওঠেছিল। পাঁচ শতক থেকে নয় শতক পর্যন্ত সামস্ত প্রথার বিস্তৃতিও তেমন ছিল না। কিন্তু দশ শতক থেকে আঠারো শতক পর্যন্ত সামন্ততন্ত্র অপ্রত্যাশিত গতিতেই তার অভিযান ও অগ্রগতি চলমান রাখে।
৪. সামাজিক নিরাপত্তা প্রাপ্ত : মধ্যবর্তী প্রথা উত্থানের ফলে জমিগুলো খণ্ড খণ্ড অংশে ভেঙে পড়ে। যাতে চাষাবাদের জন্য নতুন কৃষক বসানো হয়। এসব কৃষকের অধিকাংশ ছিল ভূমিহীন কৃষক, সদ্য মুক্তি পাওয়া কৃতদাস কিংবা বেকার শ্রমিক প্রমুখ। যারা ভূ-স্বামীদের নিকট আশ্রয় ও নিরাপত্তা আশা করত। উৎপন্ন ফসলের একাংশ প্রদানের শর্ত ছাড়াও তারা সপ্তাে কয়েকদিন ভূ-স্বামীদের জমিতে বেগার দিতে হতো। এ প্রথার নাম ছিল প্যাট্রেসিনিয়াম। এ ধরনের কৃষকই কাটার নামে পরিচিত ছিল। ফলে তারা নিজেদের আশ্রয় ও নিরাপত্তার প্রয়োজনে জমি-জমাসহ শক্তিশালী ভূ-স্বামীর নিকট নিজেকে সমর্পণ করত। ফলে এর মাধ্যমে সামস্ত প্রথার বিস্তার ঘটে।
৫. দাস সমাজের পতন ও সামন্ততন্ত্রের উদ্ভব : সামন্ততন্ত্রের উদ্ভব তাৎক্ষণিক কোনো ঘটনা নয় । অথবা বিশেষ কোনো কারণে হঠাৎ করেই সামন্ত প্রথার উদ্ভব হয়নি। এজন্য তৎকালীন রোমান সাম্রাজ্যের পতন ও তৎপরবর্তী বিশৃঙ্খল অবস্থাকে বিবেচনায় আনতে হবে। ৪৭৩ খ্রিষ্টাব্দে জার্মান নেতা অভোভেকার সর্বশেষ রোমান সম্রাট রোমিউলাস অগাস্টুলাসকে অপসারণ করে রোমের সিংহাসন দখল করলে রোম কেন্দ্রিক দাস প্রথার পতন ঘটে। ফলে পরবর্তীতে ভূমিকেন্দ্রিক
সামন্তপ্রথার উদ্ভব হয় ।
৬. রোম সম্রাটের বিলাসবহুল জীবন-যাপন ও দাস বিদ্রোহ : জার্মানি শাসকরা রোমের বাড়িঘর জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ধ্বংস স্তূপে পরিণত করে। এর পাশাপাশি রোমান সম্রাটের বিলাস বহুল জীবন যাপন প্রজাদের উপর করভার বৃদ্ধি অত্যাচারী দান মালিকদের বিরুদ্ধে সংগঠিত দাস বিদ্রোহ দুর্নীতি পরায়ণ ও অনিশ্চয়তার সৃষ্টি করে। ফলে ভেঙে পড়ে কেন্দ্রীয় শাসন ব্যবস্থা। এ সময় সমাজ জীবনে দেখা দেয় চরম নিরাপত্তাহীনতা। ফলে জনগণ এমন কোনো শক্তির আশ্রয় চেয়েছিল বা তাদের সম্পদ ও ভূমির বিনিময়ে নিরাপত্তা দেবে ফলে ক্রমান্বয়ে সামন্ততন্ত্রের বিকাশ ঘটে।
৭. রোম এবং জার্মান সংমিশ্রণ : অনেকেই মতামত ব্যক্ত করেন যে, রোম এবং জার্মান সমাজব্যবস্থার সংমিশ্রণে সামন্ত প্রথার বিস্তার ঘটে। আক্রমণকারীরা হঠাৎ করেই রোম দখল করেনি বরং তারা ধীরে ধীরে রোম দখল ও শাসন করে। জার্মানরা শুধু গ্রামীণ অর্থনীতির সাথে পরিচিত ছিল। ফলে তারা রোমের নগরকেন্দ্রিক সভ্যতার সাথে মিশ্রণ করে। এতে রোম এবং জার্মান মিলে মিশ্র অর্থব্যবস্থার উদ্ভব হয়। বিশেষ করে জার্মানেরা রোমদের থেকে উৎকৃষ্ট চাষ পদ্ধতির শিক্ষা লাভ করে। ইউরোপে প্রথমে ক্লোন ভিত্তিক পরে বংশভিত্তিক চাষ পদ্ধতি চালু হয়। ফলে ধীরে ধীরে তা সামন্তপ্রথার রূপ লাভ করে। ৮. রোমান সাম্রাজ্যের পতন ও মধ্যবর্তী প্রথা : রোমান সাম্রাজ্যের পতন ও সামন্ততন্ত্রের উদ্ভবের মধ্যবর্তী কিছু প্রথা বা বিধি ব্যবস্থা সামন্ততন্ত্রের উত্থানকে প্রভাবিত করেছিল। এসব প্রথার মধ্যে প্রিকেরিয়ান, প্যাট্রেসিনিয়াম, প্যাট্রোনেজ প্রথা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। রোমান সাম্রাজ্যের পতনের যুগে জার্মানি উপজাতীয় বর্বরদের ব্যাপক আক্রমণে কৃষি কাজ ও ব্যবসা বাণিজ্য প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে কৃষি সহজে শুরু করা গেলেও ব্যবসা-বাণিজ্য প্রায় বন্ধ ছিল। জমিগুলো ছোট ছোট অংশে বিভক্ত করে কোনো ভূ-স্বামীর অধীনে তা চাষ করানো হতো। পরবর্তীতে এ অবস্থা থেকেই সামন্তপ্রথার উদ্ভব ও বিকাশ ঘটে।
৯. সার্ফ বা ভিলেইনদের ভূমিকা : সামন্তপ্রথার উদ্ভাবনে সার্ফ বা ভিলেইনদের ভূমিকা ছিল। কৃষকরা ব্যক্তিগতভাবে স্বাধীন থাকলে তারা জমির মাধ্যমে সামন্তপ্রভুর নিকট আটকা পড়ে যায়। কালক্রমে তারা বংশ পরম্পরায় সার্ফে পরিণত হয়। এর মাধ্যমে মূলত তারা ভূমিদাসে পরিণত হয়। ফলে এ অবস্থা থেকে তারা বের হতে পারে না। যা সামন্ততন্ত্রকে প্রভাবিত করে । পরিশেষে বলা যায় যে, সামন্ততন্ত্র বা সামন্তবাদ এমন একটি রাজনৈতিক বা কেন্দ্রীয় প্রশাসনিক ব্যবস্থা যা ইউরোপের ভূমিকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে। ক্রমেই তা জার্মান, ইংল্যান্ডসহ এশিয়া আফ্রিকার মধ্যেও বিকাশ লাভ করে। মূলত রোমান ভিত্তিক দাস ব্যবস্থার বিলুপ্তির মাধ্যমে ভূমিকেন্দ্রিক উদ্ভব ও বিকাশ সাধিত হয় ।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]