মুখ্য শব্দ ম্যাক্স ওয়েবার, আদর্শ নমুনা, আমলাতন্ত্র, ক্ষমতা, কর্তৃত্ব, পুঁজিবাদ, প্রোটেস্ট্যান্ট নীতিমালা।
ম্যাক্স ওয়েবারের জীবন ও কর্ম
ম্যাক্স ওয়েবার ১৮৬৪ সালে জার্মানীর ইরফুর্ট শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাল্যকালের অধিকাংশ সময় কাটে
বার্লিনে। তিনি আইন ও অর্থনীতি বিষয়ে লেখা পড়া করেন। তাঁর প্রধান আগ্রহের বিষয় ছিল ইতিহাস, অর্থনীতি, এবং
সমাজবিজ্ঞান। চিন্তাধারায় সূ²তা ও বিশ্লেষণাত্বক বাস্তবতার জন্য অপরাপর চিন্তাবিদদের তুলনায় তিনি ছিলেন স্বতন্ত্র।
ওয়েবারের সমাজবিজ্ঞানের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হলো সামাজিক ক্রিয়া (ঝড়পরধষ অপঃরড়হ)। ম্যাক্স ওয়েবারের রচনাবলির
মধ্যে¨ General Economic History, The Protestant Ethics and the Spirit of Capitalism Ges Economy and
Society উল্লেখযোগ্য। ১৯২০ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
পদ্ধতিতত্ত¡
ম্যাক্স ওয়েবার সমাজবিজ্ঞানের নিজস্ব বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির উপর অধিক গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি মনে করতেন প্রাকৃতিক
বিজ্ঞানের বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি সমাজতাত্তি¡ক গবেষণায় ব্যবহার করলে তা বহুলাংশে ব্যর্থ হবার সম্ভবনা রয়েছে। তাই
সমাজতাত্তি¡ক গবেষণার সফলতার জন্য সমাজকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা উচিত। ওয়েবার সমাজবিজ্ঞান অধ্যয়নে
ব্যাখ্যামূলক এবং সর্বাত্মক পদ্ধতিকে অধিকতর কার্যকর বলে মনে করতেন।
ব্যাখ্যামূলক পদ্ধতির সফল প্রয়োগের মাধ্যমে তিনি বিভিন্ন বিষয়ে বিশ্লেষণধর্মী আলোচনার গুরুত্ব তুলে ধরেন। আর
সর্বাত্মক পদ্ধতির সাহায্যে আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় বা যেকোনো সামাজিক ঘটনার কার্যকারণ ব্যাখ্যা করা হয়।
আদর্শ নমুনা (ওফবধষ ঞুঢ়ব)
সমাজতাত্তি¡ক গবেষণায় আদর্শ নমুনা ওয়েবারের আলোচ্য বিষয়সমূহের মধ্যে অন্যতম। আদর্শ নমুনা হলো কোনো
বিষয়বস্তু সম্পর্কে একটি মানসিক চিত্র যার মাধ্যমে ঐ বিষয়বস্তুর বাস্তব দিকগুলো মূর্তমান হয়ে ওঠে। তিনি সমাজতাত্তি¡ক
বিশ্লেষণে আদর্শ নমুনার প্রয়োগ করেছেন। আদর্শ নমুনা প্রসঙ্গে ঞরসধংযবভভ বলেন, আদর্শ নমুনা হলো একটি মানসিক
চিত্র যা বাস্তবতার নিরিখে পর্যবেক্ষণযোগ্য প্রলক্ষণসমূহকে সুস্পষ্ট করে। ঈড়ংবৎ এর মতে, আদর্শ নমুনা মূর্ত ঘটনাবলির
সাদৃশ্য বা বিচ্যুতি অনুসন্ধানের জন্য বিশ্লেষণধর্মী পরিমাপক হিসেবে অনুসন্ধানকারীকে সাহায্য করে। (An ideal type is
an analytical construct that serves the investigator as a meausing rod to ascertain similarities as well as
deviations in concreate cases)| ।
আদর্শ নমুনার কতিপয় বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়। যেমন- ক) আদর্শ নমুনা হলো একটি মানসিক চিত্র, খ) আদর্শ নমুনা
কোনো অনুসিদ্ধান্ত নয়, গ) আদর্শ নমুনা নৈতিক আদর্শ বিষয়ে আলোচনা করে না, ঘ) এটি পরিসংখ্যানিক গড় নয়, ঙ)
এটি বাস্তবতা অনুসন্ধানে তাত্তি¡ক টুলস্ হিসেবে কাজ করে, চ) এটি স্থির বা নিশ্চল নয় বরং পরিবর্তিত হয় এবং ঝ) এটি
তুলনামূলক বিশ্লেষণে সাহায্য করে।
আমলাতন্ত্র(Bureaucracy)
আমলাতন্ত্র একটি সার্বজনীন ধারণা। বিশ্বের সকল স্থানে আমলাতন্ত্র পরিলক্ষিত হয়। সরকারি, বেসরকারি, এমনকি
স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানেও আমলাতন্ত্র বিদ্যমান। আমলাতন্ত্রে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও কার্যক্রম রয়েছে যা নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে
পূর্ণতা পায় নিয়োগ প্রাপ্তি এবং নিজ নিজ দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে। ম্যাক্স ওয়েবার ‘আমলাতন্ত্র’(Bureaucracy)
প্রত্যয়টির প্রবর্তন করেন।
আমলাতন্ত্র সম্পর্কে ঈড়ংবৎ বলেন, আমলাতন্ত্র যৌক্তিক নীতি দ্বারা পরিচালিত অফিসসমূহ পদ সোপানক্রম দ্বারা নির্দিষ্ট
এবং তাদের কার্যক্রম পরিচালিত হয় নৈর্ব্যক্তিক নীতির ভিত্তিতে।| (Bureaucracies are organized according to
rational principles. Offices are ranked in a hierarchical order and their operations are characterized by
impersonal rules)|
অৎড়হ এর মতে, ওয়েবারের দৃষ্টিতে আমলাতন্ত্র হলো বিভিন্ন কাঠামোগত প্রলক্ষণ। এটি একটি স্থায়ী সংগঠন যেখানে
বিভিন্ন ব্যক্তির সহযোগিতায় গড়ে ওঠে যা বিশেষ ক্রিয়া সম্পাদন করে। | (Bureaucracy in the weberian sense is
defined by several structural traits. It is a permanent organization involving cooperation among many
individuals each of whom performs specialized functions)|
I‡qev‡ii g‡Z AvgjvZš¿ †KejgvÎ AvaywbK ivóª cwiPvjbvi †ÿ‡ÎB bq
ওয়েবারের মতে আমলাতন্ত্র কেবলমাত্র আধুনিক রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রেই নয় বরং প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় সমাজ ব্যবস্থাতেও
এ সংগঠনের অস্তিত্ব লক্ষ করা যায়। যেসব কারণে আমলাতন্ত্রের বিকাশ ঘটে তার মধ্যে মুদ্রাভিত্তিক অর্থব্যবস্থার প্রচলন,
প্রযুক্তিগত বিপ্লব, কল্যাণমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা এবং সুশাসন ব্যবস্থার বিস্তার উল্লেখযোগ্য। ওয়েবার তাঁর আদর্শ নমুনার
আলোকে আমলাতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করেন। এগুলো হচ্ছে:
১। আমলাতান্ত্রিক সংগঠনে অফিসিয়াল কার্যক্রম সুনির্দিষ্ট নিয়ম দ্বারা প্রতিষ্ঠিত;
২। অফিসের প্রত্যেকের ক্ষমতা ও কর্তব্য সুনির্দিষ্ট নিয়মনীতি দ্বারা পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হয়;
৩। এ ধরনের সংগঠনে পদসোপানক্রম থাকে যেখানে নিচের পদের ব্যক্তি উপরের পদের নিকট জবাবদিহি থাকে;
৪। দক্ষতার ভিত্তিতে নিয়োগ ও প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ পায় এবং স্বাধীনভাবে নিয়ম অনুযায়ী কাজ করে;
৫। অধীনস্থ কর্মচারীদের নিয়ন্ত্রণ করার সার্বিক কর্তৃত্ব ও ক্ষমতা উর্ধতন কর্মচারীদের হাতে ন্যাস্ত করার ব্যবস্থা আছে;
৬। কর্মজীবনে ব্যক্তি কতটুকু সফল তার উপর ভিত্তি করে পদোন্নতি হবে;
৭। অফিসের যাবতীয় কর্মকান্ডের লিখিতভাবে রেকর্ড থাকবে এবং তা সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকবে।
পরিশেষে বলা যায় যে, ম্যাক্স ওয়েবারের আদর্শ ধরনের আমলাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলে সমাজ সভ্যতার অগ্রগতি সম্ভব। তাছাড়া
যেকোনো সমাজব্যবস্থার আমলাতন্ত্র অনুধাবনের জন্য ওয়েবার প্রদত্ত আমলাতন্ত্র মডেল হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব
ম্যাক্স ওয়েবার সামাজিক স্তরবিন্যাসের একটি উপাদান হিসেবে ক্ষমতার উল্লেখ করেন। তাঁর মতে, সমাজে একজন ব্যক্তি
বা গোষ্ঠী যখন অন্য কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর উপর তাঁর সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে পারে তখন তাকে ক্ষমতা বলে। ক্ষমতার
ভিত্তি হিসেবে তিনি সম্পত্তি, শিক্ষা, রাজনৈতিক অবস্থান, প্রভাবশালীদের সঙ্গে সম্পর্ক প্রভৃতি উল্লেখ করেছেন।
সাধারণভাবে কর্তৃত্ব হলো ক্ষমতা ব্যবহার বা প্রয়োগ করার বৈধ অধিকার। ক্ষমতা ছাড়া কর্তৃত্বের ধারণা অর্থহীন। অর্থাৎ
ক্ষমতা যখন বৈধ উপায়ে অর্জন করা হয় এবং বৈধ উপায়ে প্রয়োগ করা হয় তখন তা কর্তৃত্ব হিসেবে বিবেচিত হয়। কর্তৃত্ব
হতে হলে তার বৈধতা প্রয়োজন। কর্তৃত্বের সংজ্ঞায় গরঃপযবষষ বলেন, কতৃত্ব হচ্ছে ক্ষমতার সেই ধরন যা অন্যের উপর
বৈধভাবে প্রভাব বিস্তার করে।| (Authority is that form of power which orders or articulates the actions of other
actors through commands which are effective because those who are commanded regard the commands as
legitimate)
কর্তৃত্বের প্রকারভেদ: ম্যাক্স ওয়েবার তিন ধরনের কর্তৃত্বের ধারণা দেন। তা হলো-
(ক) যৌক্তিক কর্তৃত্ব (Rational Authority)
(খ) ঐন্দ্রজালিক কর্তৃত্ব (Charismatic Authority) এবং
(গ) ঐতিহ্যগত কর্তৃত্ব (Traditional Authority)| ।
(ক) যৌক্তিক কর্তৃত্ব : যৌক্তিক কর্তৃত্বের ভিত্তি হলো আইন-কানুন। এখানে কর্তৃত্বের প্রতি আনুগত্য বলতে উচ্চ পদাধিকার
ব্যক্তির প্রতি আনুগত্য বুঝায় না বরং আইনের প্রতি আনুগত্য বুঝায়। দেশের নির্বাহী কোনো ব্যক্তি যখন কর্তৃত্ব প্রয়োগ
করে তখন তা যৌক্তিক কর্তৃত্ব বলে পরিচিত। আধুনিক এবং শিল্পায়িত সমাজে এ ধরনের কর্তৃত্ব লক্ষ করা যায়।
(খ) ঐন্দ্রজালিক কর্তৃত্ব : ঐন্দ্রজালিক কর্তৃত্ব ব্যক্তির অসাধারণ ব্যক্তিগত গুণাবলী, আবেগ আপ্লুত মনোভঙ্গি, বীরত্ব ও
স্বরণীয় চারিত্রিক বলিষ্ঠতার উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। এ ধরনের নেতৃত্বের প্রতি পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস রেখে
আনুগত্য প্রকাশ করা হয়। অনুসারীগণ বিশ্বাস করেন যে, তাঁদের নেতা ভুল করতে পারে না এ ধরনের কর্তৃত্ব সব সমাজেই
কম-বেশি লক্ষ করা যায়। এ ধরনের নেতৃত্বের গুণাবলী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, নেপোলিয়ন, মাওসেতুং, আব্রাহাম
লিংকন, মহাত্মা গান্ধী, নেলসন ম্যান্ডেলা প্রমুখ নেতার মধ্যে লক্ষ করা যায়।
(গ) ঐতিহ্যগত কর্তৃত্ব : ঐতিহ্যগত কর্তৃত্ব বছরের পর বছর ধরে যে বিশ্বাস চলে আসে তার উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে।
এ ধরনের কর্তৃত্বের উৎস হলো সনাতনী নিয়ম, রীতিনীতির প্রতি চিরায়ত বিশ্বাস ও শ্রদ্ধা। কোনো ক্ষুদ্র নৃতাত্তি¡ক গোষ্ঠীর
নেতা, সমাজপতি, গ্রামীণ জ্ঞাতিগোষ্ঠীর কেউ এ ধরনের নেতৃত্বের উদাহরণ হতে পারেন।
পুঁজিবাদ ও প্রোটেস্ট্যান্ট নীতিমালা (
ম্যাক্স ওয়েবারের চিন্তা শুরু হয়েছিল অর্থনৈতিক বিষয়কে কেন্দ্র করে। তাঁর অধ্যয়ন অর্থনীতি বিষয়ে শুরু হলেও শেষ
করার আগেই ভিন্ন বিষয়ে মনোযোগী হন। তিনি মূলত জার্মান সমাজতাত্তি¡ক কার্ল মার্কস এর বিপরীতে একটি নতুন ধারণা
প্রদান করেন। মার্কস যেখানে বলেন সমাজের মৌল কাঠামো (অর্থ ব্যবস্থা) উপরিকাঠামোকে প্রভাবিত করে সেখানে
ওয়েবার বলেন যে, সমাজের উপরিকাঠামোর উপাদানও মৌল কাঠামোকে প্রভাবিত করতে পারে। তাঁর এই বক্তব্যের
সমর্থনে দেখান যে, প্রোটেস্ট্যান্ট ধর্মের নীতিবোধ এবং বিধিবিধান কিভাবে পুঁজিবাদ বিকাশে সহায়ক ভূমিকা পালন
করেছিল। আধুনিক ইউরোপীয় পুঁজিবাদ বিকাশে প্রোটেস্ট্যান্ট ধর্মীয় নীতিমালার প্রভাব প্রমাণ করাই ১৯০৪ সাল থেকে
১৯০৫ সালের মধ্যে প্রকাশিত তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ এর মূল
কথা। খ্রিস্টধর্মের দুটি অংশ ক্যাথলিক এবং প্রোটেস্ট্যান্ট। এর মধ্যে প্রোস্ট্যোন্টদের নীতিমালাসমূহ পুঁজিবাদ বিকাশে
অনুকুল ছিল।
পুঁজিবাদ বলতে বুঝায় এমন এক বিশেষ ধরনের উৎপাদন ব্যবস্থা যেখানে উৎপাদনকারীর উদ্দেশ্য থাকে অধিক মুনাফা
অর্জন করা উৎপাদনের বেশিরভাগ ভোগের জন্য ব্যয় না করে আরো বেশি উৎপাদনে বিনিয়োগ করা হয়। ওয়েবার
একারণে পুঁজিবাদকে যৌক্তিক বলেছেন। তিনি পুঁজিবাদকে আদর্শ নমুনার মাধ্যমে বিশ্লেষণ করেছেন। পুঁজিবাদের কতিপয়
বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়। তা হলো- উৎপাদন হয় ব্যক্তিগত মালিকানায়, মূল লক্ষ্য থাকে মুনাফা অর্জন, উৎপাদন হয় অর্থ
লাভ ও বাজারজাতকরণের জন্য। পুঁজিবাদ একটি যৌক্তিক সংগঠন, পুঁজিবাদে মুক্ত শ্রম পরিলক্ষিত হয়। হিসাব করা হয়
বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করে। তাই বলা হয় পুঁজিবাদী সংগঠন এমন এক সংগঠন যার অর্থ অধিক মুনাফা অর্জন করা।
যৌক্তিক কাজের এবং উৎপাদনের একটি ব্যবস্থাপনা যার মাধ্যমে যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
ষোড়শ শতকে মার্টিন লুথার কিং এবং জন ক্যালভিন যে সংস্কারের ধারণা দেন তা খ্রিস্টধর্মের প্রোটেস্ট্যান্ট অনুসারীগণের
মধ্যে লক্ষ করা যায় এবং পুঁজিবাদের বিকাশ ঘটায়। প্রোটেস্ট্যান্ট অনুসারীগণের কিছু নীতিমালা পুঁজিবাদ বিকাশে সহায়ক
ভূমিকা পালন করে। তা হলো সময়ই অর্থ , কর্মই ঈশ্বর (ডড়ৎশ রং এড়ফ), সহজ সরল জীবন যাপন
করা () এবং নতুন বিনিয়োগই অর্থ ( যারা এ সকল নীতিমালায় বিশ্বাস করবে
তারা ঈশ্বরের নৈকট্য লাভ করবে। এসব নীতিমালায় পুঁজিবাদের বিকাশ হয়েছিল বলে ওয়েবার মনে করেন।
মার্টিন লুথার কিং এবং জন ক্যালভিন প্রোটেস্ট্যান্ট নীতিমালার উল্লিখিত সংস্কার সাধন করেন। এসব নীতিমালা গ্রহণের
মাধ্যমে প্রোটেস্ট্যান্ট অনুসারীগণ পুঁজিবাদের বিকাশ ঘটায় বলে ওয়েবার মনে করেন। কিং ও ক্যালভিনের সংস্কারসমূহের
মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- ক) কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে সম্পদ লাভ করা সম্ভব, খ) মানুষকে আত্মত্যাগী হতে হবে, গ)
উৎপাদনে আত্মনিয়োগ করতে হবে, ঘ) সুশৃঙ্খল জীবন যাপন করতে হবে, ঙ) সময়কে পবিত্র জ্ঞান করতে হবে, চ)
মানুষকে কাজে নিষ্ঠাবান, সচেতন ও আত্মবিশ্বাসী হতে হবে, ছ) পুঁজি সঞ্চয় করতে হবে এবং জ) প্রত্যেক ব্যক্তি তার
ইচ্ছেমত কাজ করবে এবং তার কাজের স্বীকৃতি দিতে হবে। ওয়েবারের মতে, এসব সংস্কারকে ধর্মীয় নীতিমালা হিসেবে
গ্রহণ করায় প্রোটেস্ট্যান্টদের দ্বারা পুঁজিবাদের বিকাশ হয়েছিল।
সারসংক্ষেপ
সমাজতত্তে¡র অন্যতম পুরোধা হচ্ছেন ম্যাক্স ওয়েবার। তাঁর সমাজতাত্তি¡ক পদ্ধতির অনুশীলন, গবেষণা, অনুসন্ধান ও
রচনাবলি সমাজবিজ্ঞান বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করেছে। বিশেষ করে মার্কসের অর্থনৈতিক ধারণা বা মৌল
কাঠামোর ) বিপরীতে ওয়েবার উপরি কাঠামো যেমন সংস্কৃতি, ধর্ম প্রভৃতির প্রভাব ও গুরুত্ব তুলে
ধরেছেন তথ্য, যুক্তি ও প্রমাণের ভিত্তিতে। মার্কস বলেছেন, মৌল কাঠামোই উপরি কাঠামোর নিয়ন্ত্রক। কিন্তু ওয়েবার
দেখিয়েছেন, উপরি কাঠামো কিভাবে মৌল কাঠামোক প্রভাবিত করে। এ প্রসঙ্গে তিনি পুঁজিবাদ বিকাশে প্রোটেস্ট্যান্ট
নীতিমালার অবদানকে বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন। ওয়েবারের আদর্শ নমুনা, আমলাতন্ত্র এবং ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব
সমাজতাত্তি¡ক অধ্যয়নের এক অমূল্য সম্পদ।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন-৩.৭
সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√) চিহ্ন দিন
১। ম্যাক্স ওয়েবারের সমাজতত্তে¡র প্রধান আলোচ্য বিষয় কী?
(ক) সামাজিক প্রগতি (খ) সামাজিক উন্নয়ন
(গ) আদর্শ নমুনা (ঘ) সামাজিক নিয়ন্ত্রণ
২। কোথায় পদসোপানক্রম থাকে?
(ক) পুঁজিবাদে (খ) আমলাতন্ত্রে
(গ) আদর্শ নমুনায় (ঘ) সামাজিক সমস্যায়
৩। যৌক্তিক কর্তৃত্ব কী দ্বারা পরিচালিত?
(ক) আইন (খ) আবেগ
(গ) রীতিনীতি (ঘ) ব্যক্তিগত গুণ
ইউনিট-৩ এর উত্তরমালা :
পাঠোত্তর মূল্যায়ন ৩.১ ঃ ১। খ ২। গ ৩। ঘ
পাঠোত্তর মূল্যায়ন ৩.২ ঃ ১। খ ২। গ ৩। ক
পাঠোত্তর মূল্যায়ন ৩.৩ ঃ ১। খ ২। গ ৩। ক
পাঠোত্তর মূল্যায়ন ৩.৪ ঃ ১। খ ২। ক
পাঠোত্তর মূল্যায়ন ৩.৫ ঃ ১। খ ২। ক ৩। গ
পাঠোত্তর মূল্যায়ন ৩.৬ ঃ ১। ক ২। খ
পাঠোত্তর মূল্যায়ন ৩.৭ ঃ ১। গ ২। খ ৩। ক
চ‚ড়ান্ত মূল্যায়ন ঃ ১। ক ২। খ ৩। গ ৪। গ
ক. বহুনির্বাচনী প্রশ্ন (গঈছ)
১. মানুষের আবিষ্কৃত প্রথম বিজ্ঞান কোনটি?
ক) জ্যোতির্বিদ্যা খ) গণিত
গ) পদার্থবিদ্যা ঘ) সমাজবিজ্ঞান
২. যোদ্ধা সমাজের ধারণা কে প্রদান করেছেন?
ক) অগাস্ট কোঁৎ খ) হার্বার্ট স্পেন্সার
গ) এমিল ডুর্খেইম ঘ) কার্ল মার্কস
খ. বহুপদি সমাপ্তিসূচক বহুনির্ভাচনী প্রশ্ন
৩. সমাজবিজ্ঞানী ননর. অগাস্ট কোঁত
রর. আইনস্টাইন
ররর. স্টিফেন হকিন্স
সঠিক উত্তর কোনটি?
ক) র ও রর খ) র ও ররর গ) রর ও ররর ঘ) র, রর ও ররর
৪. ডুর্খেইমের সমাজতাত্তি¡ক অবদান হচ্ছেÑ
(র) শ্রমবিভাজন
(রর) সামাজিক ঘটনা
(ররর) যৌথ প্রতিরূপ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. র ও রর খ. র ও ররর গ. র, রর, ও ররর ঘ. রর ও ররর
গ. সৃজনশীল (কাঠামোবদ্ধ) প্রশ্ন:
নিচের উদ্দীপকটি পড়–ন এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দিন
শীলা খুলনা থেকে ঢাকায় তার মামার বাসায় বেড়াতে এসেছে। সে এ বছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ে
ভর্তি হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। ভর্তির প্রস্তুতিতে সহায়তা করতে মামা একদিন তাকে নিয়ে বসলেন। মামা খোঁজ নিয়ে
জানতে পারলেন, শীলা উচ্চ মাধ্যমিকে সমাজবিজ্ঞান অধ্যয়ন করেছে এবং এটি তার একটি পছন্দের বিষয়। অতঃপর মামা
তাকে প্রশ্ন করলেন; ক) কে কত সালে সমাজবিজ্ঞান শাস্ত্রের প্রবর্তন করেছেন? খ) প্রখ্যাত একজন মুসলিম
সমাজচিন্তাবিদের নাম কী? গ) কোন্ সমাজতাত্তি¡ক সমাজকে জীবদেহের সাথে তুলনা করেছেন? ঘ) কোন সমাজবিজ্ঞানী
আত্মহত্যা এবং সামাজিক সংহতি বিষয়ে তত্ত¡ প্রদান করেছেন? ঙ) বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের জনক কে? চ) কোন
সমাজবিজ্ঞানীকে আমলাতন্ত্রের জনক বলা হয়? ইত্যাদি। শীলা অধিকাংশ প্রশ্নের সঠিক জবাব দিতে পেরেছিল। অতঃপর
মামা তাকে সুযোগ পেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিষয়ে ভর্তির পরামর্শ প্রদান করেন।
(ক) ইবনে খালদুন কবে কোথায় জন্মগ্রহণ এবং মৃত্যুবরণ করেন? ১
(খ) ত্রয়স্তর সূত্রের প্রধান স্তরগুলো কী কী? ২
(গ) পুঁজিবাদী সমাজে কীভাবে শ্রেণি সংগ্রাম হয়? ৩
(ঘ) ওয়েবারের আদর্শ নমুনার ভিত্তিতে আমলাতন্ত্র ব্যাখ্যা করুন। ৪
FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত