সমাজ কাঠামো
সমাজ কাঠামোকে সমাজবিজ্ঞানের কেন্দ্রীয় প্রত্যয় বলা হয়। মানব সমাজ সম্পর্কিত আলোচনায় সমাজ কাঠামো
প্রত্যয়টির ব্যবহার শুরু হয় ঊনবিংশ শতাব্দী থেকে। সমাজকে পরিপূর্ণভাবে জানতে হলে তার কাঠামোগত দিক থেকেই
জানা সম্ভব। সে কারণেই সমাজ কাঠামোর তাৎপর্য রয়েছে। বিভিন্ন সমাজবিজ্ঞানী বিভিন্নভাবে সমাজ কাঠামোর সংজ্ঞা
প্রদান করেছেন। যেমন:
র্যাডক্লিক ব্রাউন বলেন, “মানুষের সাথে মানুষের সকল প্রকার সামাজিক সম্পর্ক হলো সমাজ কাঠামো।”
এস.এফ.ন্যাডেল বলেন, “সমাজে বসবাসরত মানুষ, ব্যক্তি হিসেবে যে ভূমিকা পালন করে তা এক ধরন তথা ব্যবস্থার
অস্তিত্ব নির্দেশ করে এবং এর মাধ্যমে আচরণের যে ধরন বা ব্যবস্থা লক্ষ করা যায় তাই হলো সমাজ কাঠামো।
কার্ল মার্কস এর মতে, সমাজ কাঠামো হলো মৌল কাঠামো এবং উপরিকাঠামোর একীভূত রূপ। তিনি মৌল কাঠামো
বলতে অর্থব্যবস্থা তথা উৎপাদন পদ্ধতিকে বুঝিয়েছেন। অপরপক্ষে উপরিকাঠামো বলতে সংস্কৃতিকে বুঝিয়েছেন।
উৎপাদনের শ্রম শক্তি উৎপাদন উপায়ের মালিকানার ধরন বস্তুগত সম্পদ বন্টনের ধরন
সমাজবিজ্ঞানী মরিস জিনসবার্গ বলেছেন, সমাজ কাঠামো হচ্ছে সমাজের প্রধান প্রধান দল এবং প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়।
সমাজবিজ্ঞানী বটোমোরও সমাজ কাঠামোকে সমাজের প্রধান দল ও প্রতিষ্ঠানসমূহের সমন্বিত রূপ বলে অভিহিত করেছেন।
এসব দল ও প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত করতে তিনি সমাজের কতগুলো পূর্বশর্তের উল্লেখ করেছেন। এগুলো হল:
(ক) ভাব আদান প্রদানের জন্য সমাজের সদস্যদের মধ্যে একটি যোগাযোগ মাধ্যম,
(খ) একটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থা যা পণ্য উৎপাদন ও বন্টন নিশ্চিত করে,
(গ) নতুন বংশধরদের জন্য পরিবার ও অন্যান্য শিক্ষামূলক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সামাজীকীকরণ ব্যবস্থা,
(ঘ) একটি কর্তৃত্ব ব্যবস্থা ও ক্ষমতার বিন্যাস এবং
(ঙ) ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান প্রক্রিয়া যা সমাজের সংহতি বৃদ্ধি করে।
প্রতিটি সমাজের প্রধান প্রধান দল ও প্রতিষ্ঠানসমূহ এ সমস্ত প্রক্রিয়া বা ব্যবস্থার মধ্যেই রয়েছে যার মাধ্যমে
সমাজকাঠামোর পূর্ণাঙ্গ রূপ খুঁজে পাওয়া যায়। তবে সমাজকাঠামোর প্রকৃত চিত্র পাবার জন্য কার্ল মার্কসের মৌল কাঠামো
ও উপরি কাঠামোর ধারণাকে যুক্ত করা প্রয়োজন।
পরিশেষে বলা যায় যে, যেকোনো সমাজকে যথাযথ ভাবে অনুধাবণের জন্য সেই সমাজের সমাজকাঠামো সম্পর্কে জ্ঞান
লাভ করা প্রয়োজন। কারণ সমাজের সঠিক ও সামগ্রিক প্রকাশ ঘটে সমাজ কাঠামোর মাধ্যমেই।
সারসংক্ষেপ
সমাজবিজ্ঞানের কেন্দ্রীয় প্রত্যয় হলো সমাজ কাঠামো। সমাজ কাঠামোর মাধ্যমে সমাজের সার্বিক আবস্থা সম্পর্কে ধারণা
লাভ করা যায়। সমাজের প্রধান প্রধান দল ও প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়েই সমাজ কাঠামো তৈরি হয়। সমাজের চালিকা শক্তি
হিসেবে মৌল কাঠামো তথা উৎপাদন পদ্ধতি কিভাবে উপরি কাঠামো তথা সংস্কৃতিকে প্রভাবিত করে তা অনুধাবন করতে
সমাজ কাঠামোর অধ্যয়ন অত্যন্ত কার্যকর।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন-৪.৬
সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√) চিহ্ন দিন
১। “সমাজ কাঠামো হলো প্রধান প্রধান দল ও প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়”- কে বলেছেন?
(ক) জিনস্বার্গ (খ) বটোমোর
(গ) মার্কস্ (ঘ) কুলি
২। কার্ল মার্কস সমাজ কাঠামোর কোন ধারণা দেন?
(ক) সমাজ ও সম্প্রদায় (খ) বস্তুগত ও অবস্তুগত
(গ) মৌল ও উপরি কাঠামো (ঘ) সভ্যতা ও সংস্কৃতি
৩। সমাজ কাঠামো সমাজবিজ্ঞানের কোন প্রত্যয়?
(ক) মাধ্যমিক প্রত্যয় (খ) গৌণ প্রত্যয়
(গ) গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যয় (ঘ) কেন্দ্রীয় প্রত্যয়
FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত