ব্যক্তিগত ও পারিবারিক ধর্মচর্চা
বাংলাদেশে সনাতন ধর্মাবলম্বী হিন্দু স¤প্রদায় দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় স¤প্রদায়। একজন সনাতন ধর্মাবলম্বী ব্যক্তিগত ভাবে
সন্ধ্যা-আহ্নিক প্রভৃতি নিত্যকর্ম তথা উপাসনা, একাদশীর উপবাস, ব্রত পালন, পূজায় অঞ্জলি প্রদানসহ নানাভাবে ধর্মচর্চা
করে থাকেন। এ ছাড়া অনেকেই শ্রীমদ্ভগবদ্গীতাও নিত্য পাঠ করে থাকেন। এ ছাড়া তাঁরা তীর্থ ভ্রমণে পুণ্য হয় এ ধর্মাদর্শ
স্মরণে রেখে পবিত্র তীর্থসমূহ ভ্রমণ করে থাকেন।
পারিবারিকভাবেও সনাতন ধর্মের নিয়মিত চর্চা করা হয়। প্রতি বৃহস্পতিবার ঘরে ঘরে ল²ীপূজা করা হয়। প্রতি শনিবার
শনি পূজা করা হয়। প্রতিটি পরিবারে ছোট আকারের বা বড় আকারের মন্দির থাকে। মন্দির না থাকলে ঘরের ভেতরে
ঠাকুরের আসন পাতা থাকে এবং নিয়মিত পূজা দেওয়া হয়। এ ছাড়া মনসা পূজা, কোজাগরী ল²ীপূজা, সরস্বতী পূজা,
শিবরাত্রির ব্রত প্রভৃতিও পারিবারিকভাবে করা হয়। কোনো কোনো বাড়িতে দুর্গাপূজাও পারিবারিকভাবে করা হয়।
বাংলাদেশে সনাতন ধর্মের প্রাতিষ্ঠানিক চর্চা
বাংলাদেশে সামাজিকভাবে সনাতন ধর্মের প্রাতিষ্ঠানিক চর্চা দীর্ঘকাল ধরে চলে আসছে।
গ্রামে গ্রামে সার্বজনীনভাবে দেবতার মন্দির প্রতিষ্ঠিত আছে। সেখানে দুর্গাপূজা, কালী পূজা, সরস্বতী পূজা ও জন্মাষ্টমী
প্রভৃতি ধর্মানুষ্ঠান সাড়ম্বরে উদ্যাপিত হয়।
এছাড়া বছরের বিভিন্ন সময়ে বিশেষ করে শীত ও বসন্তকালে চার প্রহর থেকে শুরু করে অষ্টপ্রহর, ষোল প্রহর Ñ চৌষট্টি
প্রহরব্যাপী হরিনাম কীর্তন করা হয়। কীর্তনের পরে মহোৎসব করে নিরামিষ ভোজন করা হয়।
ধর্মানুষ্ঠানের জন্য বাংলাদেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বেশ কিছু কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানও গড়ে তুলেছেন। এ প্রতিষ্ঠানগুলোর শাখা
প্রতিষ্ঠানও সারা দেশে ছড়িয়ে আছে। দৃষ্টান্ত হিসেবে কয়েকটির উল্লেখ করছি:
১. শ্রীরামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন
স্বামী বিবেকানন্দের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের প্রধান কেন্দ্র পশ্চিম বঙ্গের বেলুড়ে। এ প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন
দেশে সনাতন ধর্মের ধর্মচর্চা করে চলেছে। বাংলাদেশেও ঢাকা শহরে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন রয়েছে। এর নিয়ন্ত্রণে ও
নেতৃত্বে সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে রামকৃষ্ণ মিশন বা বিবেকানন্দ সংঘ ইত্যাদি গড়ে উঠেছে। এ সকল প্রতিষ্ঠান
নিয়মিতভাবে রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দের ভাবধারায় সর্বধর্ম সমন্বয়ের আদর্শের অনুসরণে ধর্মচর্চা ও ধর্মানুষ্ঠান করে আসছে।
রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনে দূর্গাপূজার সময়ে মাতৃভক্তি হিসেবে আদ্যাশক্তি মহামায়ার অংশ হিসেবে কুমারী পূজা করা হয়। এ
ছাড়া এ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানটি হযরত মুহম্মদ (সঃ), যীশুখ্রিষ্ট ও গৌতম বুদ্ধের আবির্ভাব তিথি উপলক্ষে অনুষ্ঠানের আয়োজন
করে থাকে।
২. আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইস্কন)
প্রভুপাদ অভয়াচরণ ভক্তিবেদান্ততীর্থ শ্রীচৈতন্যের ভাবধারায় আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ প্রতিষ্ঠা করেছেন। সারা বিশ্বের
বিভিন্ন স্থানে এর শাখা আছে। বাংলাদেশেও এ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানটি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে নিজস্ব পদ্ধতিতে সনাতন ধর্মের
প্রাতিষ্ঠানিক চর্চা করে চলেছে।
৩. শ্রীশ্রী লোকনাথ মন্দির ও আশ্রম
ব্রহ্মভূত শ্রীশ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারী বারদীতে যে আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, তা আজ সারা বিশ্বে বিস্তৃত হয়ে গেছে। কবিরাজ
মথুরানাথ চক্রবর্তী ঢাকার স্বামীবাগে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন শ্রীশ্রী লোকনাথ মন্দির ও শক্তি ঔষধালয়। লোকনাথ মন্দিরসমূহ
নিজস্ব ধারায় সনাতন ধর্মের চর্চা করে আসছে।
৪. মহাপ্রকাশ মঠ ও মহানাম স¤প্রদায়
প্রভু জগদ্বন্ধু সুন্দরের ভাব শিষ্য শ্রীমন্ মহেন্দ্রজী এবং তদীয় শিষ্য শ্রীমন্ মহানামব্রত ব্রহ্মচারী মহাপ্রকাশ মঠ এবং মহানাম
স¤প্রদায় নামে বিশাল প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানটি ফরিদপুর জেলা শহরে প্রতিষ্ঠিতÑ শ্রীধাম ও শ্রীঅঙ্গন
বলে পরিচিত। সনাতন ধর্মীয় এ প্রতিষ্ঠানটিও নিয়মিত ধর্মচর্চা-ধর্মানুষ্ঠান করে আসছে।
৫. ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র প্রতিষ্ঠিত সৎসঙ্গ
ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র প্রতিষ্ঠিত করেছেন সৎসঙ্গ। পাবনা জেলার হিমায়েত পুরে। টাঙ্গাইল জেলার তাকুটিতেও এ প্রতিষ্ঠানটি
কাজ করে যাচ্ছে। দেওঘরেও এ সৎসঙ্গের বিশাল প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সারা বাংলাদেশে এবং ভারতে এ প্রতিষ্ঠানটির অনেক
শাখা রয়েছে।
৬. স্বামী স্বরূপানন্দ প্রতিষ্ঠিত অযাচক আশ্রম ও অখন্ডমন্ডলী
স্বামী স্বরূপানন্দ কুমিল্লা জেলার রহিমপুরে এবং চাঁদপুরে প্রতিষ্ঠা করে গেছেন অযাযক আশ্রম এবং অখন্ডমন্ডলী নামক
সনাতন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। ‘ওঙ্কার’ কে সামনে রেখে অখন্ডমন্ডলীর সদস্যরা ধর্মচর্চা করেন। কারও কাছ থেকে যাচ্ঞা করে বা
চেয়ে কোনো দান-অনুষ্ঠান নেন না - তাই তো তাঁদের আশ্রমের নাম অযাচক আশ্রম। চরিত্র গঠন এবং ওঙ্কার সাধনা এ
প্রতিষ্ঠানের মূলমন্ত্র।
৭. স্বামী প্রণবানন্দ প্রতিষ্ঠিত ভারত সেবাশ্রম
বৃহত্তম ফরিদপুরের অন্তর্গত বর্তমান মাদারীপুর জেলার বাজিতপুরে অবিভক্ত ভারতবর্ষে স্বামী প্রণবানন্দের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত
হয়েছে ভারত সেবাশ্রম। বাংলাদেশে এ প্রতিষ্ঠানটির নাম বাংলাদেশ সেবাশ্রম। বিভিন্ন তীর্থস্থানে এ প্রতিষ্ঠানের সেবা
কার্যক্রম প্রশংসনীয়।
৮. শ্রীমাধ্ব গৌড়ীয় মঠ
শ্রীচৈতন্যদেবের ভাবধারায় নিজস্ব পদ্ধতিতে সনাতন ধর্মের চর্চা করে যাচ্ছে শ্রীমাধ্ব গৌড়ীয় মঠ। ঢাকার নারিন্দায় এ
প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠিত।
৯. হরিচাঁদ ঠাকুর প্রতিষ্ঠিত মতুয়া স¤প্রদায়
এ প্রতিষ্ঠানটিও নিজস্ব ধারায় সনাতন ধর্মের চর্চা করে আসছে। গোপালগঞ্জ জেলার ওড়াকান্দিতে এর কেন্দ্রীয় হরিমন্দির
প্রতিষ্ঠিত। এছাড়া বাংলাদেশের এবং ভারতের বিভিন্ন স্থানে মতুয়া স¤প্রদায় হরিমন্দির প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং সনাতন ধর্ম
চর্চা করে যাচ্ছেন।
১০. ঋষি অরবিন্দের ভাব ধারায় বাংলাদেশেও ধর্ম প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। তাঁরাও তাঁদের মতো করে সনাতন ধর্মের চর্চা
করে যাচ্ছেন।
উদাহরণ হিসেবে আমরা মাত্র সনাতন ধর্মের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কথা বললাম। এর বাইরেও অনেক প্রতিষ্ঠান সনাতন
ধর্মের প্রাতিষ্ঠানিক চর্চা করে আসছে।
সনাতন ধর্ম চর্চার ক্ষেত্রে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগ
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মচর্চার ক্ষেত্রে সচেতন ও বলিষ্ঠ অবদান রেখে চলেছে। মাননীয়
প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল থেকে প্রতিবছর দুর্গাপূজার সময় বিভিন্ন মন্দিরে অনুদান প্রদান করা হয়।
বাংলাদেশ টেলিভিশনে দুর্গাপূজা, জন্মষ্টমী, মহালয় উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচারিত হয়। মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয়
প্রধানমন্ত্রী জন্মাষ্টমী ও দুর্গাপূজা উপলক্ষে সনাতন ধর্মীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
হিন্দুধর্মীয় কল্যাণট্রাস্ট
ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে সরকারী উদ্যোগে পরিচালিত হয়ে আসছে হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট। মঠ, মন্দির ও শ্মশান
প্রতিষ্ঠা ও সংস্কারে অনুদান প্রদান, দুর্গাপূজা উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল থেকে মঞ্জুর করা অনুদান
বিতরণ, হিন্দু স¤প্রদায়ের কল্যাণে কর্মসূচি গ্রহণ প্রভৃতিও ট্রাস্টের কর্মধারার অন্তর্গত।
এ ছাড়া ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তত্ত¡াবধানে ‘মন্দির ভিত্তিক শিশু ও বয়স্ক শিক্ষা প্রকল্প’ নামে একটি প্রকল্প পরিচালিত
হচ্ছে। হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণট্রাস্ট এক্ষেত্রে ধর্মমন্ত্রণালয়ের পক্ষে ক্রিয়াশীল।
কোথাও দুবৃত্তদের দারা ধর্মীয় মতান্ধতায় কোনো সা¤প্রদায়িক শান্তি ও শৃঙ্খলার বিঘœ ঘটলে হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ জানামাত্র
ধর্মমন্ত্রণালয়কে অবহিত করে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ গ্রহণ করে।
এ বছর (২০১২) ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় জেলা প্রশাসনের আয়োজনে
চৌষট্টিটি জেলায় জন্মাষ্টমী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের স্মরণোৎসবের
আয়োজন করা হয়েছে।
এছাড়া কিছু সংগঠন আছে, যেগুলো সারা দেশে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সনাতন ধর্মের চর্চায় আত্মনিবেদিত। উদাহরণ হিসেবে
মাত্র কয়েকটির নাম বলছি :
ক. বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ
খ. বাংলাদেশ হিন্দুসমাজ সংস্কার সমিতি
গ. শ্রীগীতা সংঘ
ঘ. শ্রী গুরু সংঘ
ঙ. বিবেকানন্দ শিক্ষা ও সংস্কৃতি পরিষদ
চ. লোকনাথ সেবা সংঘ
ছ. শ্রীচৈতন্য শিক্ষা ও সংস্কৃতি সংঘ
জ. শ্রী শ্রীহরিচাঁদ শিক্ষা ও সংস্কৃতি পরিষদ ইত্যাদি।
বাংলাদেশের সমাজ ও সংস্কৃতিতে সনাতন ধর্মের অবদান
সনাতন ধর্ম সকল ধর্মকেই সত্য মনে করে। সকল ধর্মের প্রতিই শ্রদ্ধাশীল। শ্রীমদ্ভগবদ্গীতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ নিজেই
বলেছেন:
যে যথা মাং প্রপদ্যন্তে তাংস্তথৈব ভজাম্যহম্।
মম বর্ত্মানুবর্তন্তে মনুষ্যাঃ পার্থ সর্বশঃ \
(৪/১১)
Ñ হে পার্থ (অর্জুন), যে আমাকে যে-ভাবে উপাসনা করে, আমি তাকে সেভাবেই তুষ্ট করি। মনুষ্যগণ সর্বপ্রকারে আমার
পথেরই অনুসরণ করে।
বাংলাদেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীরা শ্রীমদ্ভগবদ্গীতার এ বাণী সর্বান্তঃকরণে বিশ্বাস করে। পরমত সহিষ্ণুতা ও গণতান্ত্রিক
চেতনা সনাতন ধর্মের অঙ্গীভূত। ধর্মীয় স¤প্রীতি ও জাতীয় সংহতিতে সনাতন ধর্মের এ চিন্তার অবদান রয়েছে।
জীবে ব্রহ্ম বা ঈশ্বর জ্ঞান সনাতন ধর্ম দর্শনের আরেকটি ভিত্তি। জীবকে ঈশ্বর জ্ঞান করলে নির্যাতন করার প্রশ্নই ওঠে না।
আর এ সনাতন ধর্মদর্শন মানবতার আদর্শ, সমতা ও সহমর্মিতার আদর্শ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অনন্য ভূমিকা পালন করে চলেছে।
সর্বজনীন পূজা ও সংকীর্ত্তন উৎসবে সকল ধর্মের লোকদের আমন্ত্রণ জানানো হয়, এর মধ্য দিয়ে ধর্মীয় স¤প্রীতি গড়ে ওঠে,
গড়ে ওঠে জাতীয় সংহতি।
সনাতন ধর্মে বলা হয়েছে Ñ ‘জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরীয়সী’ Ñ মা ও জন্মভূমি স্বর্গের চেয়েও শ্রেষ্ঠ।
এ চেতনা থেকে মাতৃভক্তি ও দেশপ্রেম জাগ্রত হয়। এ জাগ্রত দেশপ্রেম নিয়েই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় সনাতন
ধর্মাবলম্বীরা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছে।
সঙ্গীতকে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা ধর্মচর্চার অন্যতম পথ বলে মনে করে। তাই সনাতন ধর্মাবলম্বীরা সঙ্গীত চর্চাকে খুবই গুরুত্ব
দেয়। হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে, হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে।
Ñ এ ষোল নাম কীর্তন বিভিন্ন সুরে ও তালে গীত হয়। এর মধ্য দিয়ে সঙ্গীত চর্চার প্রসার ঘটে। জাতীয় সাংস্কৃতির ক্ষেত্রে এ
চর্চার প্রভাব রয়েছে।
পূজার আলপনা আজও ঐতিহ্যবাহী লোক সংস্কৃতিকে ধরে রেখেছে। মূর্তি শিল্পের মধ্য দিয়ে চিত্র ও ভাস্কর্য শিল্পের উৎকর্ষ
সাধিত হচ্ছে। কান্তজির মন্দিরসহ ঐতিহ্যবাহী মন্দির ও মঠের শিল্পকর্ম জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত।
সুতরাং বাংলাদেশে সামাজিক ও জাতীয় সংহতি এবং জাতীয় সংস্কৃতির বিনির্মাণ ও বিকাশে সনাতন ধর্ম বলিষ্ঠ অবদান
রেখেছে এবং রেখে চলেছে।
পাঠসংক্ষেপ
বাংলাদেশে সনাতনধর্মাবলম্বীরা ব্যক্তিগত ভাবে জপ-তপ- পূজা প্রভৃতির মাধ্যমে উপাসনা করেন। পুণ্যতীর্থসমূহ ভ্রমণ
করেন। পারিবারিকভাবেও বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা করা হয়।
সামাজিকভাবে সার্বজনীন পূজা, হরিনাম সংকীর্তন ও ধর্মীয় আলোচনা সভা প্রভৃতি অনুষ্ঠিত হয়। সরকারিভাবে ধর্ম
মন্ত্রণালয়ের তত্ত¡াবধানে হিন্দুধর্মীয় কল্যাণট্রাস্ট সনাতনধর্মাবলম্বীদের কল্যাণে নানা কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে চলেছে।
শ্রীরামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন, আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইস্কন), লোকনাথ মন্দির ও আশ্রম, মহাপ্রকাশ মঠ, সৎসঙ্গ,
অখন্ডমন্ডলী, মুতয়া স¤প্রদায়, বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ প্রভৃতি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে সনাতন ধর্মের চর্চায় কাজ করে
যাচ্ছে।
সনাতন ধর্মের পরমত সহিষ্ণুতার আদর্শ, সকল ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ, জীবসেবার আদর্শ এবং সঙ্গীতশিল্প ও ভাস্কর্য শিল্পের
চর্চা বাংলাদেশের সংস্কৃতিতেও অবদান রেখে চলেছে।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন : ১৬.৮
সঠিক উত্তরের পাশে (√) চিহ্ন দিন:
১. ধর্ম চর্চার অঙ্গ হিসেবে ব্যক্তিগতভাবে কোনটি করা হয়?
ক. সন্ধ্যা-আহ্নিক খ. সংকীর্তন
গ. দুর্গাপূজা ঘ. হরিসভা
২. রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের প্রতিষ্ঠায় কে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন?
ক. শ্রীরামকৃষ্ণ খ. স্বামী বিবেকানন্দ
গ. স্বামী অভেদানন্দ ঘ. স্বামী লোকেশ্বরানন্দ
৩. শ্রীশ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারীর আশ্রম বাংলাদেশের কোথায় প্রতিষ্ঠিত হয়?
ক. স্বামীবাগ খ. সীতাকুন্ড
গ. বারদী ঘ. রহিমপুর
৪. স্বামী স্বরূপানন্দ প্রতিষ্ঠিত আশ্রমের নাম কী?
ক. অখন্ড আশ্রম খ. অযাচক আশ্রম
গ. সেবাশ্রম ঘ. পুণ্যাশ্রম
৫. ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র প্রতিষ্ঠিত ধর্মীয় স¤প্রদায়ের নাম কী?
ক. সেবক সঙ্গ খ. সাধু সঙ্গ
গ. সৎ সঙ্গ ঘ. তরুণ সঙ্গ
সংক্ষিপ্ত উত্তর প্রশ্ন
১. সনাতনধর্মাবলম্বী একজন ব্যক্তি ব্যক্তিপর্যায় কীভাবে ধর্মচর্চা করেন?
২. অযাচক শব্দটির অর্থ কী? অযাচক আশ্রম ও অখন্ডমন্ডলী সম্পর্কে লিখুন।
৩. শ্রীশ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রম কোথায় প্রতিষ্ঠিত হয়? এ আশ্রম সম্পর্কে আপনার নিজস্ব মন্তব্য লিখুন।
৪. ‘সৎ সঙ্গে’র প্রতিষ্ঠাতা কে? সৎ সঙ্গের কর্মধারা সম্পর্কে তিনটি বাক্য লিখুন।
রচনামূলক প্রশ্ন
১. সনাতন ধর্মচর্চায় শ্রী রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন’Ñ শীর্ষক একটি অনুচ্ছেদ রচনা করুন।
২. টীকা লিখুন:
ক. হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট
খ. আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনাকৃত সংঘ
৩. বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে সনাতন ধর্মচিন্তা ও কর্মধারার অবদানের বর্ণনা দিন।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন : বহু নির্বাচনি প্রশ্নসমূহের উত্তর
পাঠ-১ : ১(ক), ২(খ), ৩(ঘ), ৪(ঘ), ৫(গ) ৬(গ) ৭(গ)।
পাঠ-২ : ১(ঘ), ২(ক), ৩(ঘ), ৪(ক), ৫(গ)।
পাঠ-৩ : ১(গ), ২(ঘ), ৩(গ), ৪(ঘ), ৫(গ)।
পাঠ-৪ : ১(ঘ), ২(গ), ৩(ঘ) ৪(গ), ৫(খ)।
পাঠ-৫ : ১(খ), ২(গ), ৩(খ), ৪(ঘ), ৫(খ), ৬(গ), ৭(ঘ)।
পাঠ-৬ : ১(খ), ২(ক), ৩(ক), ৪(খ), ৫(ঘ)।
পাঠ-৭ : ১(খ), ২(গ), ৩(খ)।
পাঠ-৮ : ১(ক), ২(খ), ৩(গ), ৪(খ), ৫(গ)।
FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত