(ক) পিতা যেমন আমাকে ভালবেসেছেন, আমিও তেমনি তোমাদের ভালবেসেছি। তোমরা আমার ভালবাসার আশ্রয়ে
থেকো। যদি আমার সমস্ত আদেশ পালন কর, তবেই তোমরা আমার ভালবাসার আশ্রয়ে থাকবে, আমিও যেমন আমার
পিতার সমস্ত আদেশ পালন করেছি আর আছি তাঁর ভালবাসার আশ্রয়ে। এ সব কথা তোমাদের বললাম, যাতে আমার
আনন্দ তোমাদের অন্তরে থাকতে পারে এবং তোমাদের আনন্দ যেন পরিপূর্ণ হতে পারে।
আমার আদেশ হল এই : আমি নিজে যেমন তোমাদের ভালবেসেছি, তোমরাও তেমনি পরস্পরকে ভালবাসবে। বন্ধুদের
জন্য প্রাণ দেওয়ার চেয়ে বড় ভালবাসা মানুষের আর কিছুই নেই। তোমরা আমার বন্ধু Ñ অবশ্য আমি তোমাদের যা করতে
বলছি, তোমরা যদি তা-ই কর। ... তোমাদের আমি এই আদেশ দিচ্ছি : তোমরা পরস্পরকে ভালবাসবে!”
(খ) একদিন লোকে ভিড় দেখে যীশু কাছের পাহাড়টায় গিয়ে উঠলেন। তিনি সেখানে বসলেন; তখন শিষ্যেরা
তাঁর কাছে এগিয়ে এলেন এবং তিনি তাঁদের উপদেশ দিতে সুরু করলেন। তিনি এই কথা বললেন:
“অন্তরে যারা দীন, ধন্য তারা Ñ স্বর্গরাজ্য তাদেরই।
দুঃখে-শোকে কাতর যারা, ধন্য তারা Ñ তারাই পাবে সান্ত¡না!
কোমলপ্রাণ বিনম্র যারা, ধনা তারা Ñ প্রতিশ্রুত দেশ একদিন হবে তাদেরই আপন দেশ।
ধার্মিকতার দাবি পূরণের জন্যে তৃষিত ব্যাকুল যারা, ধন্য তারা Ñ তারাই পরিতৃপ্ত হবে।
দয়ালু যারা, ধন্য তারা Ñ তাদেরই দয়া করা হবে।
নির্মল যাদের অন্তর, ধন্য তারা Ñ তারাই ঈশ্বরকে দেখতে পাবে।
শান্তি স্থাপন করে যারা, ধন্য তারা Ñ তারাই ঈশ্বরের সন্তান ব'লে পরিচিত হবে।
ধর্মনিষ্ঠ ব'লে নির্যাতিত যারা, ধন্য তারা Ñ স্বর্গরাজ্য তাদেরই।
আর ধন্য তোমরা, আমার জন্যে লোকে যখন তোমাদের অপমান করে, নির্যাতন করে, যখন তোমাদের নামে
তারা নানা মিথ্যা অপবাদ রটায়। তখন আনন্দ ক’রো, উল্লাস ক’রো তোমরা, কারণ স্বর্গলোকে তোমাদের জন্যে সঞ্চিত
হয়ে আছে এক মহা পুরস্কার। তোমাদের আগেকার প্রবক্তারাও তো ঠিক একই ভাবে নির্যাতিত হয়েছিলেন।”
সারসংক্ষেপ: ঈশ্বর সৃষ্টিকর্তা, তিনি নিখিল বিশ্বের প্রভু। তিনি বিশ্বচরাচরের সমস্ত কিছুই সৃষ্টি করেছেন। মানুষকে তিনি তাঁর
নিজ প্রতিমূর্তিতে সৃষ্টি করেছেন। মানুষকে তিনি অনেক মর্যাদা দিয়ে, স্বাধীন ইচ্ছা দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। ঈশ্বর আমাদের সৃষ্টি
করেছেন ইহজগতে ও পরজগতে তাঁর সান্নিধ্যে সুখময় জীবন যাপন করার জন্য। মানুষের কাছে ঈশ্বরের আহŸান হচ্ছে
ঈশ্বরসন্তানসুলভ ভক্তি ও ভালবাসার পথ অবলম্বন করে, ঈশ্বরের ভালবাসার আদেশ পালন করে পবিত্র হয়ে ওঠা। যীশু
বলেন: “স্বর্গে বিরাজমান তোমাদের পিতা যেমন সম্পূর্ণ পবিত্র, তেমনি তোমাদেরও হতে হবে সম্পূর্ণ পবিত্র” (মথি
৫:৪৮)।
অষ্ট কল্যাণবাণী বা সুখ-পন্থা হচ্ছে যীশুর শিক্ষার সারকথা। আসলে প্রকৃত সুখী মানুষের চিত্র বর্ণিত হয়েছে এই কল্যাণবাণী
বা সুখ-পন্থায়। মানুষ মাত্রই তো সুখী হতে চায়। সুখী হতে চাওয়া হচ্ছে মানুষের মনের গভীরতম আকাক্সক্ষা। এই আকাক্সক্ষা
পূরণের জন্যই মানুষ প্রতিনিয়ত সাধনা করে। এই সাধনপথ কষ্টসাধ্য কিন্তু এর পরিণাম শুভ। যীশু নিজেই এই পথের
দিশারী। একমাত্র যীশুই প্রকৃত সুখী মানুষ যিনি ঈশ্বরের ইচ্ছা অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছেন। আমরাও সবাই সুখলাভের
জন্য আহূত।
“ঈশ্বর আমাদের এই পৃথিবীতে রেখেছেন যেন আমরা তাঁকে জানতে, ভালবাসতে ও সেবা করতে পারি, এবং এভাবে স্বর্গে
যেতে পারি। পরমসুখ আমাদেরকে “ঐশস্বরূপ” ও অনন্ত জীবনের সহভাগী করে তোলে। পরমসুখ নিয়ে মানুষ প্রবেশ
করে খ্রীষ্টের গৌরবে ও ত্রিব্যক্তি পরমেশ্বরের জীবনানন্দে। এই পরমসুখ মানুষের জ্ঞান ও ক্ষমতার অতীত। পরমসুখ ঈশ্বরের
অনুগ্রহপুষ্ট স্বেচ্ছাকৃত দান থেকেই আসে: সেই কারণে, ঐশ্বরিক আনন্দে প্রবেশ করার জন্য প্রদত্ত অনুগ্রহ যেমন অলৌকিক,
ঠিক তেমনি পরমসুখও অলৌকিক। আমাদের জন্য প্রতিশ্রুত পরমসুখ আমাদের নিকট দাবি করে দৃঢ়তার সঙ্গে নৈতিক
সিদ্ধান্ত গ্রহণ। আমাদের অন্তরকে কুপ্রবৃত্তি থেকে পবিত্র করার জন্য, ও সর্বোপরি ঈশ্বরের ভালবাসার সন্ধান করার জন্য
পরমসুখ আমাদের আহŸান জানায়। পরমসুখ আমাদের এই শিক্ষা দেয় যে, কোন সম্পদ বা সুস্বাস্থ্য, মানুষের খ্যাতি বা
ক্ষমতা, অথবা কোন মানবীয় কাজ Ñ তা যত উপকারই করুৃক-না-কেন Ñ যেমন, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি বা শিল্প, অথবা কোন
সৃষ্টজীবের মধ্যে, সত্যিকারের সুখ পাওয়া যায় না। তা পাওয়া যায় একমাত্র ঈশ্বরের কাছে যিনি সকল মঙ্গল ও প্রেমের
উৎস” (খ্রীষ্টীয় পরমসুখ, ধর্মশিক্ষা ১৭২১-১৭২৩)।
মনে রাখুন
যীশু বলেন : “আমিই পথ, আমিই সত্য, আমিই জীবন! আমাকে পথ ক'রে না গেলে কেউই পিতার কাছে যেতে পারে না।”
পাঠোত্তর মূল্যায়ন: ১৭.২
সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√ ) চিহ্ন দিন
১। যীশুর কথা অনুসারে আমাদেরকে কেমন হতে হবে?
(ক) জ্ঞানী ও পন্ডিত
(খ) শিক্ষিত ও কৌশলী
(গ) সম্পূর্ণ পবিত্র
(ঘ) ভদ্র ও মার্জিত
২। সত্যিকারের সুখ কীভাবে পাওয়া যায়?
(ক) দৈহিক সুস্থতা থেকে
(খ) মানসিক শান্তি থেকে
(গ) অর্থনৈতিক নিরাপত্তা থেকে
(ঘ) একমাত্র ঈশ্বরের কাছে
৩। যাদের অন্তর নির্মল, তাদের কী হবে?
(ক) তারা মনে শান্তি পাবে
(খ) তারা ঈশ্বরকে দেখতে পাবে
(গ) তারা মানুষের প্রশংসা পাবে
(ঘ) তারা জাতীয় পুরস্কার পাবে
৪। যীশুর কথা অনুযায়ী সবচাইতে বড় ভালবাসা কোন্টি?
(ক) দেশের জন্য জীবন দান
(খ) যুদ্ধক্ষেত্রে মৃত্যুবরণ
(গ) ধনসম্পদ গরিবদের মাঝে বিলিয়ে দেওয়া
(ঘ) বন্ধুদের জন্য প্রাণ দেওয়া
FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত