মানবপুত্র যখন আপন মহিমায় মহিমান্বিত হয়ে আসবে Ñ আর তার সঙ্গে আসবে সমস্ত স্বর্গদূত Ñ সে তখন নিজের গৌরবের
সিংহাসনে এসে বসবে এবং তার সামনে তখন সকল জাতির মানুষদের সমবেত করা হবে। মেষপালক যেমন ছাগ থেকে
মেষদের পৃথক করে নেয়, তেমনি সেও মানুষ থেকে মানুষকে পৃথক করে নেবে। মেষগুলিকে সে রাখবে তার ডান পাশে,
আর ছাগগুলিকে বাঁ পাশে। তারপর ডান পাশে যারা আছে, এই রাজা তাদের বলবে : ‘এসো তোমরা, আমার পিতার
আশীর্বাদের পাত্র যারা! জগতের সৃষ্টির সময় থেকে যে-রাজ্য তোমাদের দেওয়া হবে বলে রাখা আছে, তা এবার তোমরা
নিজেদেরই বলে গ্রহণ কর। কারণ আমি ক্ষুধার্ত ছিলাম আর তোমরা আমাকে খেতে দিয়েছিলে; আমি তৃষ্ণার্ত ছিলাম আর
তোমরা আমাকে জল দিয়েছিলে; বিদেশী ছিলাম দিয়েছিলে আশ্রয়; ছিলাম বস্ত্রহীন, তোমরা আমাকে পোশাক পরিয়েছিলে;
আমি পীড়িত ছিলাম, তোমরা আমার যতœ নিয়েছিলে; ছিলাম কারারুদ্ধ আর তোমরা আমাকে দেখতে এসেছিলে।’ তখন
ধার্মিকেরা উত্তরে তাকে বলবে :‘প্রভু, কখন্ আমরা আপনাকে ক্ষুধার্ত দেখে খেতে দিয়েছিলাম, কিংবা তৃষ্ণার্ত দেখে জল
দিয়েছিলাম? কখন্ আপনাকে বিদেশী দেখে দিয়েছিলাম আশ্রয়, কিংবা বস্ত্রহীন দেখে পরিয়েছিলাম পোশাক? কখনই বা
আপনাকে পীড়িত বা কারারুদ্ধ দেখে আপনাকে দেখতে গিয়েছিলাম?’ রাজা তখন তাদের এই উত্তর দেবে : ‘আমি
তোমাদের সত্যিই বলছি, আমার এই তুচ্ছতম ভাইদের একজনেরও জন্যে তোমরা যা-কিছু করেছ, তা আমারই জন্যে
করেছ।’
তারপর যারা তার বাঁ পাশে আছে, সে তাদের বলবে, : ‘আমার সামনে থেকে দূর হও তোমরা, অভিশাপের পাত্র যারা!
শয়তান ও তার দলের যত অপদূতদের জন্যে যে শাশ্বত আগুন প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে, তোমরা সেই আগুনেই যাও।
কারণ আমি ক্ষুধার্ত ছিলাম আর তোমরা আমাকে খেতে দাওনি; আমি তৃষ্ণার্ত ছিলাম, আমাকে জল দাওনি; বিদেশী ছিলাম,
তোমরা আশ্রয় দাওনি; ছিলাম বস্ত্রহীন, তোমরা আমাকে পোশাক পরাওনি! পীড়িত ও কারারুদ্ধ ছিলাম, আর তোমরা আমার
যতœ নাওনি। তখন উত্তরে তারাও বলবে : ‘প্রভু, কখন্ আমরা আপনাকে ক্ষুধার্ত বা তৃষ্ণার্ত, বিদেশী বা বস্ত্রহীন, পীড়িত বা
কারারুদ্ধ দেখেও আপনার সেবা করিনি?’ তখন সে তাদের এই উত্তর দেবে : ‘আমি তোমাদের সত্যি-ই বলছি, এই তুচ্ছতম
মানুষদের একজনেরও জন্যে তোমরা যা-কিছু করোনি, তা আমারই জন্যে করোনি।’ তখন এরা যাবে শাশ্বত দন্ডলোকে আর
ধার্মিকেরা যাবে শাশ্বত জীবনলোকে।”
সারসংক্ষেপ : প্রতিটি মানুষের জীবনের চরম ও পরম লক্ষ্য হচ্ছেন ঈশ্বরকে পাওয়া। আর ঈশ্বরকে পাওয়ার অর্থ হচ্ছে Ñ
ইহজগতে ও পরজগতে তাঁর সান্নিধ্য লাভ করা। কেবলমাত্র জীবনের শেষপ্রান্তে নয় বরং যাত্রাপথের সমগ্র বাস্তবতায়ই
তাঁকে ‘ইম্মানুয়েল’ (অর্থাৎ আমাদের সঙ্গী ঈশ্বর) হিসেবে উপলব্ধি করা। জীবনের এই লক্ষ্যের দিকে চলার জন্য পথের
প্রয়োজন। সেই পথটির নামই ধর্ম। সংক্ষেপে বলা যায়, লক্ষ্যের দিকে যাত্রাপথটিই হচ্ছে ধর্ম, অর্থাৎ যা-কিছু মানুষকে
সঠিক পথে ধরে রাখে তারই নাম ধর্ম। আর খ্রীষ্টের বিধান অনুযায়ী সঠিক পথ হচ্ছে ভালবাসা, সত্য, ন্যায় ও শান্তির পথ।
যিনি দৈনন্দিন জীবনে একাগ্রচিত্তে কায়মনোবাক্যে এগুলোর সন্ধান করেন, এগুলো অনুশীলন করেন তিনিই ধার্মিক। প্রকৃত
বিশ্বাসীদের জীবনে ধর্মের অনুশীলন বা ধর্মপালন প্রকাশ পায় তাদের কর্মে। প্রেরিতদূত যাকোব বলেন : সৎকর্মহীন বিশ্বাস
সম্পূর্ণ নি®প্রাণ। “ভাই, কেউ যদি দাবি করে যে, ঈশ্বরে তার বিশ্বাস আছে, অথচ সে যদি সেইমতো কোন সৎকর্ম না ক'রে
থাকে, তাহলে কীই বা লাভ তাতে? তেমন বিশ্বাস কি তাকে পরিত্রাণ করতে পারবে? ... বিশ্বাসও ঠিক তেমনি : সৎকর্ম
ছাড়া তা সম্পূর্ণ নি®প্রাণ!” (যাকোব ২:১৪-১৭)। জগতের শেষদিনে খ্রীষ্টরাজা মানুষের বিচার করবেন এই সৎকর্মের
মানদন্ড দিয়ে। মানুষের জীবনে প্রকৃত সৎকর্মের প্রকাশ ও বিকাশ ঘটে অকপট, নিষ্কাম, নিঃস্বার্থ, পরার্থপর ভালবাসার
মাধ্যমে। প্রতিদানে কোন কিছুর আশা না করে দরিদ্র, অসহায়, দুর্বল, বিপন্ন মানুষের সেবার মধ্য দিয়ে। মানুষের প্রশংসা বা
স্বীকৃতির তোয়াক্কা না করে, নিজের প্রতি অপরের দৃষ্টি আকর্ষণ না করে, নিজের স্বার্থ চিন্তা না করে অকৃত্রিম ভালবাসাই
মানুষকে প্রকৃত মানুষ করে তোলে। ঈশ্বরের দৃষ্টিতে এরূপ ভালবাসাই তাঁর সান্নিধ্য লাভের উপায়। মনে রাখুন
“আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, আমার এই তুচ্ছতম ভাইদের একজনেরও জন্যে তোমরা যা-কিছু করেছ, তা আমারই
জন্যে করেছ!”
পাঠোত্তর মূল্যায়ন: ১৭.৬
সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√ ) চিহ্ন দিন
১। প্রেরিতদূত যাকোবের কথা অনুসারে :
(ক) সৎকর্মহীন বিশ্বাস সম্পূর্ণ নি®প্রাণ
(খ) বিশ্বাসেই পরিত্রাণ, কাজ নি®প্রয়োজন
(গ) সৎকর্মই যথেষ্ট, বিশ্বাসের প্রয়োজন নেই
(ঘ) বিশ্বাসই সৎকর্মের প্রমাণ
২। মানুষের অন্তিম বিচারের মানদন্ড কী?
(ক) অপরের ক্ষতি না-করা
(খ) অগাধ পান্ডিত্য ও ঐশজ্ঞান অর্জন করা
(গ) দীনদরিদ্র ও অসহায় মানুষের প্রতি কার্যকর ভালবাসা
(ঘ) ব্যাপক দারিদ্রবিমোচন কর্মসূচি গ্রহণ করা
৩। মানুষের জীবনের চরম ও পরম লক্ষ্য কী?
(ক) মৃত্যুর পর স্বর্গসুখ লাভ করা
(খ) ইহজগতে ও পরজগতে ঈশ্বরকে পাওয়া
(গ) ঈশ্বর ও মানুষকে সেবা করা
(ঘ) শিশুর মতো সরল হয়ে জীবন যাপন করা
৪। শেষবিচারের দিনে মানবপুত্র কী করবে?
(ক) মানুষ থেকে মানুষদের পৃথক করবে
(খ) ছাগ থেকে মেষদের পৃথক করবে
(গ) সাদা ও কালো মানুষদের পৃথক করবে
(ঘ) ধনী ও গরিব মানুষদের পৃথক করবে
FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত