আন্তঃধর্মীয় স¤প্রীতি স্থাপনে খ্রীষ্টধর্মের ভূমিকা

দেহ, মন ও হৃদয়-আতœ নিয়েই মানুষ। পূর্ণ-পরিণত মানুষ হওয়ার জন্য এগুলোর সমনি¦ত বিকাশ প্রয়োজন। কিন্তু মানুষ যদি
তার নিজের মধ্যেই বিভক্ত থাকে তবে সে বিকশিত হতে পারে না। তেমনিভাবে কোন সমাজ যদি বিভক্ত থাকে তবে সেই
সমাজও উন্নতি করতে পারে না। সুখ ও শান্তির অপরিহার্য পূর্বশর্ত হচ্ছে সুস্থ পরিবেশ। কোন পরিবারে, পাড়ায়, গ্রামে বা
মহল্লায় যদি সুসম্পর্ক ও স¤প্রীতির পরিবেশ না থাকে এবং এরূপ পরিবেশে কোন শিশুর জন্ম হয়, তবে সেই শিশুর পক্ষে
স্বাভাবিকভাবে বিকশিত হওয়া সম্ভব নয়। আর যে মানুষ নিজেই মানুষ হিসেবে বিকশিত নয়, সে অপরের মানবিক বিকাশে
সহায়তা করতে পারে না। যার মনে শান্তি আছে, অন্তরে যার সুখ আছে, সে কখনো অপরের অশান্তির কারণ হতে পারে
না। সুতরাং পরিবারে ও সমাজে শিশুদের বিকাশের জন্য সুস্থ পরিবেশ অপরিহার্য। এরূপ উপযুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলার
জন্য আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি অপরিহার্য, কেননা নাগরিক হিসেবে সমাজে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের পাশাপাশি বসবাস। সুতরাং
ব্যক্তিগতভাবে নিজ নিজ ধর্মের অনুশাসন অনুযায়ী জীবন যাপন করেও গণকল্যাণের স্বার্থে ধর্মের মৌলিক ও সার্বজনীন
মূল্যবোধের ভিত্তিতে সবার সাথে স¤প্রীতি বজায় রেখে জীবন যাপন করতে হবে। কেননা নতুন প্রজন্ম অর্থাৎ আমাদের
সন্তানেরা অন্তরে ঘৃণা, তিক্ততা, হিংস্রতা, বিদ্বেষভাব, শত্রুতা, দলাদলির মনোভাব নিয়ে গড়ে উঠুক, তা কারো কাম্য হতে
পারে না। সে রকম পরিবেশ-পরিস্থিতি থাকলে সমাজে কখনো শান্তি প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। তাই নিজ ধর্মবিশ্বাসে
নিষ্ঠাবান থেকে পরস্পরের ধর্মবিশ্বাসের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ বজায় রেখে প্রতিনিয়ত স¤প্রীতির বন্ধন দৃঢ়তর করে তুলতে সবাইকে সচেষ্ট থাকতে হবে।
সমাজে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বৃদ্ধি করার উপায় হতে পারে নিæরূপ:
১। ব্যক্তি জীবনে, নিজ অন্তরে নিজের ও অপরের ধর্মীয় বিশ্বাস ও অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ পোষণ করা। বাহ্যিক লোক-
দেখানো শিষ্টাচার মানুষের কৃত্রিমতাই শুধু প্রকাশ করে।
২। নিজ নিজ পরিবারে ও মহল্লায় সকলকে সকল ধর্ম ও ধর্মাবলম্বীদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ গড়ে তুলতে উৎসাহিত করা। বিশেষ
করে শিশু ও যুবাদের মধ্যে এই চেতনা গড়ে তোলা : “সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই।”
৩। কতকগুলো সার্বজনীন মূল্যবোধকে প্রাধান্য দেয়া ও তা বিস্তার করা, যেমন : -
♦ জাতি, ধর্ম, বর্ণ, সামাজিক অবস্থান, পদমর্যাদা, শিক্ষাগত যোগ্যতা, দৈহিক সৌষ্ঠব, জাতীয়তা, পাপী বা ধার্মিক, শত্রু বা
মিত্র নির্বিশেষে মানুষ হিসেবে, সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব হিসেবে ব্যক্তি ও তার মর্যাদার মৌলিক সমতা স্বীকার করা।
♦ প্রতিটি মানুষের অন্তরের গভীরতম আকাক্সক্ষা যে এক ও অভিন্ন Ñ জীবনের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্যও যে এক ও অভিন্ন, তা
স্বীকার করা ও তার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ পোষণ করা।
♦ প্রতিটি মানুষের মৌলিক অধিকার স্বীকার করা ও তা প্রতিষ্ঠা করতে সচেষ্ট হওয়া।
♦ সার্বজনীন নৈতিক মূল্যবোধ লালন করা : বিবেকের নির্দেশ অনুযায়ী চলা, নিজের প্রতি ও অপরের প্রতি দায়িত্ব
যথাযথভাবে পালন করা।
♦ সার্বজনীন মানবিক মূল্যবোধ লালন করা : শিষ্টাচার, শালীনতা, ভদ্রতা, অতিথিপরায়ণতা, সহিষ্ণুতা, পরার্থপরতা।
♦ সার্বজনীন আধ্যাÍিক মূল্যবোধ সম্বন্ধে সচেতন হওয়া এবং অপরকে সচেতন করে তোলা : সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস, শুচিতা,
পবিত্রতা, ন্যায্যতা, সততা, সত্যনিষ্ঠতা, ক্ষমা, ভালবাসা।
♦ বিশ্বভ্রাতৃত্ববোধ : সকল মানুষ একই বিশ্বের বাসিন্দা এবং একই মানব পরিবারের সদস্য-সদস্যা হিসেবে পরস্পরের কাছে আমাদের প্রত্যাশা এবং পরস্পরের প্রতি দায়বোধ বৃদ্ধি করা।
♦ সম্মিলিতভাবে সকলের সাধারণ শত্রুর সঙ্গে সংগ্রাম করা : অন্যায়, অসত্য, ঘুষ, দুর্নীতি, শোষণ, নির্যাতন, জুলুম,
সন্ত্রাস, নিপীড়নমূলক দরিদ্রতা, ইত্যাদি দূরীকরণে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা চালানো।
♦ ভিন্নতা বা বিভিন্নতা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্বীকার করা। সৃষ্টির মধ্যে বৈচিত্র্য তো বাস্তবতা। মানুষের মধ্যেও বিভিন্ন ধরনের
বৈচিত্র্য বিদ্যমান। কিন্তু বিভিন্নতা আর বিচ্ছিন্নতা এক কথা নয়। এমনকি মতের বিভিন্নতা সত্তে¡ও মানুষ মনের দিক
দিয়ে এক হতে পারে। আবার মতের বিভিন্নতার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ পোষণ করাও মহত্বের লক্ষণ।
মানব পরিবারের সদস্য-সদস্যারা অনেক দিক দিয়েই ভিন্ন : দেশ, গোত্র, জাতি, ভাষা, কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, দৈহিক
আকৃতি, গায়ের রং, লিঙ্গ, ইত্যাদি। তথাপি আমরা সবাই মানুষ। বাগানে যেমন বিচিত্র ধরনের ফুল শোভা পায় এবং তা
বাগানের সৌন্দর্য বাড়িয়ে তোলে, তেমনি মানুষের মাঝে বৈচিত্র্য মানব পরিবারকে সমৃদ্ধ করে তোলে। সুতরাং, কোন প্রকার
সংকীর্ণতা ও গোঁড়ামিকে প্রশ্রয় না দিয়ে, মুক্তচিন্তা, উদার দৃষ্টিভঙ্গি ও বিশ্বমানবতাবোধ অর্জন করার মধ্যেই সমাজের মঙ্গল নিহিত।
আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি গড়ার জন্য প্রস্তাবমূলক বাস্তব কর্মসূচি :
♦ বন্ধুত্ব ও সৌহার্দ্য গড়ে তোলা : সমবয়সীদের মধ্যে, গ্রামবাসীদের মধ্যে, স্কুল-কলেজে সহপাঠীদের মধ্যে স¤প্রীতির
কালচার গড়ে তোলা। বিশেষ করে যুবকযুবতীরা বয়স্কদের চাইতে তুলনামূলক-ভাবে অপেক্ষাকৃত সংস্কারমুক্ত থাকে,
তাই তাঁরা স¦াভাবিকভাবেই সার্বজনীন মূল্যবোধের ভিত্তিতে আন্তরিকতাপূর্ণ বন্ধুত্ব গড়তে পারে। স্কুল জীবনে
পরস্পরকে তারা যতটা আন্তরিকতা নিয়ে যত বেশি চিনবে ও জানবে, পরস্পরের সম্বন্ধে ভুল ধারণা তত বেশি দূর হয়ে যাবে।
♦ বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীর মধ্যে পরস্পরের সামাজিক (বিবাহ উৎসব, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ইত্যাদি) ও ধর্মীয় (পর্বদিনে যেমন,
ঈদ, পূজা, বড়দিন, ইষ্টার, ইত্যাদি) অনুষ্ঠানাদিতে পরস্পরকে নিমন্ত্রণ করা ও নিমন্ত্রণ গ্রহণ করা।
♦ পরস্পরের ধর্মবিশ্বাস সম্পর্কে জানার আগ্রহ নিয়ে বিভিন্ন ধর্মীয় সভা-সম্মেলনে যোগদান করা। সেখানে জ্ঞানী-গুণীদের
বক্তৃতা-ভাষণ থেকে অনেক কিছুই শেখা যায় এবং মনের সংকীর্ণতা দূর হয়ে যায়।
♦ সরকারীভাবে স্কুলের পাঠ্যপুস্তুকে বিভিন্ন ধর্মের সার্বজনীন মূল শিক্ষাগুলো অন্তর্ভূক্ত করা হলে এবং শিক্ষা দেবার ব্যবস্থা
থাকলে পরস্পরের ধর্মবিশ্বাসের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ বাড়বে এবং মনের সংকীর্ণতা ও বদ্ধমূল নেতিবাচক ধারণাগুলো দূর হবে।
♦ পরস্পরের ধর্মবিশ্বাসের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ নিয়ে আলোচনা ও সহভাগিতার জন্য যৌথভাবে সভা-সম্মেলনের আয়োজন
করা যায়। সম্প্রতি দেশের কয়েকটি জায়গায় এ ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে এবং এতে অনেক সুফল পাওয়া গেছে।
অনেকেরই ভুল ধারণা ভেঙ্গে গেছে এবং পারস্পরিক সম্পর্কের উন্নতি হয়েছে।
♦ দেশের প্রচার মাধ্যমগুলোতে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে আন্তঃধর্মীয় কর্মকান্ড প্রচার করা এবং আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি গড়াকে উৎসাহিত করা।
বর্তমান বিশ্বে সম্প্রীতির সংস্কৃতি বা কালচার গড়ে তোলা অত্যন্ত জর ুরি। মানুষের মধ্যে দলাদলি, যুদ্ধ-বিগ্রহ, হানাহানির
পরিবর্তে মিলন ও ভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে হবে। আর তা করার নির্দেশ সব ধর্মের মধ্যেই নিহিত আছে। বাংলাদেশ
সা¤প্রদায়িক স¤প্রীতির দেশ। এখানকার জনগণ শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও জাতীয় ঐক্যে বিশ্বাসী। তাই বিভিন্ন ধর্মের
অনুসারীগণও পরস্পরের ধর্মবিশ্বাসের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ বজায় রেখে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে সচেষ্ট থাকে। বিভিন্ন
অফিস-আদালতে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, হাটে-বাজারে ও অন্যান্য কর্মক্ষেত্রে তারা একত্রে মিলেমিশে চলাফেরা ও কাজ করে।
তারা পরস্পরের সুখ-দুঃখের অংশীদার হয়, পরস্পরের ধর্মীয় উৎসবাদিতে পরস্পরকে নিমন্ত্রণ করে এবং নিমন্ত্রণ গ্রহণও
করে। জাতীয় দিবস ও জাতীয় উৎসবগুলো একসাথে উদ্যাপন করে তারা পরস্পরের মধ্যে স¤প্রীতির বন্ধন দৃঢ়তর করতে
সব সময় সচেষ্ট থাকে। স¤প্রতি বিভিন্ন ধর্মের জনগণের মধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ে আন্তঃধর্মীয় সংলাপ চলছে এবং এভাবে ভুল
বুঝাবুঝি দূর হয়ে পরস্পরের মধ্যে সহযোগিতার মনোভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে আন্তঃধর্মীয় ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যথেষ্ট বেশি পরিমাণে বিদ্যমান। এ নিয়ে
আমরা গর্ব করি। নতুন বিশ্ব Ñ বাইবেলের ভাষায় নতুন স্বর্গ ও নতুন পৃথিবী, যেখানে “মানুষদের মাঝখানে পরমেশ্বরের
আবাস! তিনি তাদের সঙ্গে বসবাস করবেন; তারা হবে তাঁর আপন জাতি। স্বয়ং পরমেশ্বর তাদের সঙ্গে সঙ্গে থাকবেন; তিনি
হবেন তাদের আপন ঈশ্বর। তাদের চোখ থেকে মুছিয়ে দেবেন সমস্ত অশ্রুজল। তখন মৃত্যু আর থাকবে না, থাকবে না আর
শোক, আর্তনাদ, দুঃখযন্ত্রণা (প্রত্যাদেশ ২১ঃ৩খ-৪ক)। Ñ সেই নতুন সৃষ্টির আবির্ভাবের জন্য বর্তমান মুহ‚র্তে আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি গড়ে তোলা অপরিহার্য।
সারসংক্ষেপ : সাধু পল বলেন :“আমি যদি মানুষদের ও স্বর্গদূতদের ভাষায় কথা বলতে পারি, অথচ আমার অন্তরে যদি না
থাকে ভালবাসা, তাহলে আমি ঢংঢঙানো কাঁসর বা ঝনঝনে করতাল ছাড়া আর কিছুই নই! আর আমি যদি প্রাবক্তিক বাণী
ঘোষণা করতে পারি, যদি উপলব্ধি করতে পারি সমস্ত রহস্যাবৃত সত্য, জানতে পারি ধর্মজ্ঞানের সমস্ত কথা, যদি আমার
অন্তরে থাকে পর্বত সরিয়ে দেবার মতো বিশ্বাস, অথচ না থাকে ভালবাসা, তাহলে আমি তো কিছুই নই! আর আমি যদি
আমার সমস্ত-কিছুই দীনদরিদ্রের মধ্যে বিলিয়ে দিই, এমনকি আমার নিজের দেহ-ও আগুনে সঁপে দিই, অথচ আমার অন্ত
রে যদি না থাকে ভালবাসা, তাহলে তাতে আমার কোন লাভই নেই! ... ভালবাসা নিত্য-সহিষ্ণু, ভালবাসা øেহকোমল। তার
মধ্যে নেই কোন ঈর্ষা। ভালবাসা কখনো বড়াই করে না, উদ্ধতও হয় না, রুক্ষও হয় না। সে স্বার্থপর নয়, বদমেজাজীও নয়।
পরের অপরাধ সে কখনো ধরেই না। অধর্মে সে আনন্দ পায় না, বরং সত্যকে নিয়েই তার আনন্দ। ভালবাসা সমস্তই ক্ষমার
চোখে দেখে; তার বিশ্বাস সীমাহীন, সীমাহীন তার আশা ও তার ধৈর্য। ”
বিশ্বব্রহ্মান্ডের সৃষ্টিকর্তা প্রভু ঈশ্বর এক ও অভিন্ন; তিনি মানুষকে সৃষ্টির সেরা জীব করে, একটি মানবপরিবারের সদস্য করে,
নিজের প্রতিমূর্তিতে সৃষ্টি করেছেন। সকল মানুষের উৎস যেমন এক, তেমনি সকল মানুষের জীবনের লক্ষ্যও এক ও অভিন্ন।
তাই যীশুখ্রীষ্টের মধ্য দিয়ে ঈশ্বর আদেশ দিয়েছেন প্রতিবেশীকে অর্থাৎ মানবপরিবারের সকলকেই নিজের মতোই
ভালবাসতে। এই ভালবাসাই মানুষের মধ্যে ঐক্য ও স¤প্রীতির বন্ধন গড়ে তোলে। ক্ষণস্থায়ী এই বিশ্বসংসারে আমরা
তীর্থযাত্রীর ন্যায়। যাত্রাপথে আমরা একা নই; একই বিশ্বপিতার সন্তান সকল মানুষ পরস্পরের ভাইবোন। তাই যাত্রাপথ
সুদীর্ঘ ও বিপদসংকুল হলেও পরস্পরের মধ্যে সুসম্পর্ক থাকলে আমাদের পথচলার ক্লান্তি লাঘব হয়। একই বিশ্বপিতার
সন্তান এবং পরস্পরের ভাইবোন হিসেবে পরস্পরের সুখ-দুঃখ সহভাগিতা করে, ভাবের আদান-প্রদান করে, সকলকে একান্ত
আপন মনে করে বন্ধুত্বপূর্ণ সংলাপে প্রবৃত্ত হয়ে পথ চলতে পারলে আমাদের মধ্যে শান্তি বিরাজ করে। সেই শান্তিই তো
প্রতিটি মানুষের অন্তরের গভীরতম আকাক্সক্ষা।
মনে রাখুন
বর্তমান বিশ্বে সম্প্রীতির সংস্কৃতি বা কালচার গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি। মানুষের মধ্যে দলাদলি, যুদ্ধ-বিগ্রহ, হানাহানির
পরিবর্তে মিলন ও ভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে হবে। আর তা করার নির্দেশ সব ধর্মের মধ্যেই নিহিত আছে।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন: ১৭.৮
সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√ ) চিহ্ন দিন
১। ক্ষণস্থায়ী এই পৃথিবীতে মানুষ হচ্ছে -
(ক) আগন্তুক ও পরবাসী
(খ) তীর্থযাত্রী
(গ) প্রভু ও অধিকর্তা
(ঘ) সৃষ্টিকর্তা ও পালনকর্তা
২। মানুষের মনের গভীরতম আকাক্সক্ষা কি?
(ক) প্রচুর ধনসম্পদের মালিক হওয়া
(খ) শান্তি ও চিরস্থায়ী সুখ লাভ করা
(গ) দীর্ঘজীবন লাভ করা
(ঘ) বহু সস্তানের জনক/জননী হওয়া
৩। মানুষের মাঝে স¤প্রীতির সংস্কৃতি বা কালচার গড়ে তোলার নির্দেশ কোথায় নিহিত আছে?
(ক) পবিত্র শাস্ত্রে
(খ)মানবস্বভাবের মধ্যে
(গ) বাউল দর্শনে
(ঘ) সব ধর্মের মধ্যে
৪। মানবসমাজের প্রকৃত মঙ্গল কোথায় নিহিত?
(ক) ধনী-গরীবের মধ্যে বৈষম্য দূরীকরণের মধ্যে
(খ) দারিদ্র্যবিমোচনের মধ্যে
(গ) মুক্তচিন্তা, উদার দৃষ্টিভঙ্গি ও বিশ্বমানবতাবোধ অর্জন করার মধ্যে
(ঘ) সকল মানুষের একই ধর্মের অনুসারী হওয়ার মধ্যে০
রচনামূলক প্রশ্ন
১। প্রেরিতশিষ্য যোহন অনুসারে যীশুর প্রকৃত পরিচয় নিজের ভাষায় ব্যাখ্যা করুন। (পাঠ ১ ও সারসংক্ষেপ)
২। খ্রীষ্টিয় বিশ্বাসের আলোকে যীশুর মানবদেহ ধারণের সত্য ব্যাখ্যা করুন। (পাঠ ১)
৩। পবিত্র শাস্ত্রের প্রধান আদেশ দু’টি কি কি? এই আদেশের ভিত্তি কি? যুক্তিসহ ব্যাখ্যা করুন। (পাঠ ২)
৪। সত্যে ও আত্মায় উপাসনাই প্রকৃত উপাসনা Ñ ব্যাখ্যা করুন। (পাঠ ২, সারসংক্ষেপ)
৫। যীশুর শিক্ষা অনুসারে আমাদের “প্রতিবেশী” কে? দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে বর্ণনা করুন। (পাঠ ৩)
৬। দয়ালু সামারীয়ের কাহিনী অনুসরণে বাস্তব জীবনে প্রতিবেশীর প্রতি ভালবাসার অনুশীলন ব্যাখ্যা করুন। (পাঠ ৩,
সারসংক্ষেপ)
৭। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে আমরা কীভাবে প্রতিবেশীর প্রতি ভালবাসার আদর্শ বাস্তবায়ন করতে পারি?
বিস্তারিতভাবে লিখুন। (পাঠ ৩ ও সারসংক্ষেপ)
৮। যীশুর দেওয়া নতুন আদেশ কোন্টি? আদেশটি কীভাবে নতুন? বুঝিয়ে বলুন। (পাঠ ৪-ক)
৯। গুরু হয়েও শিষ্যদের পা ধোয়ানোর দৃষ্টান্ত দিয়ে যীশু আমাদের কী শেখাতে চেয়েছেন? (পাঠ ৪)
১০। ভালবাসা কীভাবে শ্রেষ্ঠ গুণ? ব্যাখ্যা করুন। (পাঠ ৪-খ)
১০। যীশুর ক্রুশীয় মৃত্যু কীভাবে ভালবাসার শ্রেষ্ঠ প্রমাণ? ব্যাখ্যা করুন। (পাঠ ৪, সারসংক্ষেপ)
১১। সাধু পলের কথা অনুসারে শ্রেষ্ঠ গুণ ভালবাসার কয়েকটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করে তার ব্যাখ্যা করুন। (পাঠ ৪,
সারসংক্ষেপ)
১২। ক্ষমাশীল পিতা ও হারানো ছেলের কাহিনী অবলম্বনে পাপী মানুষের প্রতি ঐশপিতার ক্ষমার আদর্শ ব্যাখ্যা করুন।
(পাঠ ৫ ও সারসংক্ষেপ)
১৩। হারানো ছেলের প্রতি তার পিতার আচরণ দিয়ে যীশু আমাদের কী শিক্ষা দিতে চেয়েছেন? ব্যাখ্যা করুন। (পাঠ ৫,
সারসংক্ষেপ)
১৪। পবিত্র মঙ্গলসমাচার অনুসরণে অন্তিম বিচারের মানদন্ড ব্যাখ্যা করুন। (পাঠ ৬)
১৫। খ্রীষ্টধর্মের শিক্ষা অবলম্বনে ভ্রাতৃপ্রেমের গুরুত্ব যুক্তি সহকারে ব্যাখ্যা করুন। (পাঠ ৬ ও সারসংক্ষেপ)
১৬। আদিখ্রীষ্টমন্ডলীর জীবনযাত্রার প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো নিজের ভাষায় বর্ণনা করুন। (পাঠ ৭ ও সারসংক্ষেপ)
১৭। বাংলাদেশে খ্রীষ্টমন্ডলীর প্রধান সেবামূলক কাজগুলো কি কি? বিস্তারিতভাবে লিখুন। (পাঠ ৭ : বিষয়বস্তু পরিচিতি)
১৮। বিভিন্ন ধর্মের অনুসারীদের মধ্যে পারস্পরিক স¤প্রীতির বন্ধন গড়ে তোলার উপায়গুলো বিস্তারিতভাবে আলোচনা করুন। (পাঠ ৮: বিষয়বস্তু)
১৯। বাংলাদেশে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও স¤প্রীতির ইতিবাচক দিক্গুলো উল্লেখ করে বিস্তারিত আলোচনা করুন। (পাঠ ৮: বিষয়বস্তু পরিচিতি)
উত্তরমালা
পাঠ ১: ১(ক), ২(ঘ), ৩(ঘ), ৪(খ), ৫(গ)
পাঠ ২: ১(গ), ২(ঘ), ৩(খ), ৪(ঘ)
পাঠ ৩ : ১(খ), ২(ঘ), ৩(ঘ), ৪(ক)
পাঠ ৪: ১(খ), ২(ক), ৩(খ), ৪(খ)
পাঠ ৫: ১(ঘ), ২(খ), ৩(ক), ৪(গ)
পাঠ ৬: ১(ক), ২(গ), ৩(খ), ৪(ক)
পাঠ ৭: ১(খ), ২(গ), ৩(গ), ৪(ঘ)
পাঠ ৮: ১(খ), ২(খ), ৩(ঘ), ৪(গ)

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]