সমাজবিজ্ঞানে সম্পত্তি বলতে কি বোঝায় ?
আদিম সমাজে সম্পত্তির ধরণ কি ছিল ?


ভ‚মিকা
সম্পত্তি বলতে আসলে কোন বস্তুকে বোঝায় না। সমাজবিজ্ঞানে সম্পত্তি বলতে আমরা বুঝি
সামাজিক সম্পর্ক এবং অধিকার। এই অধিকার এবং সম্পর্ক গড়ে ওঠে কোন অপ্রতুল বস্তু বা
বিষয়ের ব্যবহারকে কেন্দ্র করে। যখন কোন বস্তু বা বিষয়ের উপর ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর মালিকানা,
দখল বা ব্যবহারের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয় তখন তা সম্পত্তি। কোন বস্তুর উপর কেউ
মালিকানা দাবী না করলে বা সেই দাবী গোষ্ঠী বা সমাজ কর্তৃক স্বীকৃত না হলে তা সম্পত্তি
হিসাবে পরিগণিত হয় না।
সম্পত্তির ধারণা
তুলনামূলক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে সম্পত্তির ধারণা ব্যাপক।
'ঞযব খধহফ ঁঢ়ড়হ যিরপয ঃযব ংড়পরধষ মৎড়ঁঢ় রং ষড়পধঃবফ ধহফ ভৎড়স যিরপয রঃ ফৎধংি
ংঁংঃবহধহপব, ঃযব নবধংঃং ঃযধঃ ৎড়াব ঁঢ়ড়হ রঃ রিষফ, ঃযব ধহরসধষং ঃযধঃ মৎধুব ঁঢ়ড়হ রঃ
ঃধসব, ঃযব ঃৎববং ধহফ পৎড়ঢ়ং, ঃযব যড়ঁংবং ঢ়বড়ঢ়ষব বৎবপঃ, ঃযব পষড়ঃযবং ঃযবু বিধৎ, ঃযব
ংড়হমং ঃযবু ংরহম, ঃযব ফধহপবং ঃযবু ফধহপব পযধৎসং ঃযবু রহপধহঃ, ঃযবংব ধহফ সধহু
সড়ৎব ধৎব ড়নলবপঃং ড়ভ ঢ়ৎড়ঢ়বৎঃু'.
-ঐড়বনবষ ধহফ ডবধাবৎ
এই দীর্ঘ উদ্ধৃতির অর্থ হচ্ছে জমি, বন্য এবং পোষা প্রাণী, গাছ-পালা, শস্য, পরিধেয় বস্ত্র, গান,
নাচ এবং এমনকি যাদুও সম্পত্তি হিসাবে পরিগণিত হতে পারে। সম্পত্তির অধিকারের মধ্যে
থাকে বিক্রি, হস্তান্তর, দান, ব্যবহার এবং সুবিধা পাওয়া।

সি.বি. ম্যাকফার্সন ঈ.ই. গধপঢ়যবৎংড়হ -এর মতে, “সাধারণ সম্পত্তি সৃষ্টি হয় ব্যক্তিকে এই
নিশ্চয়তা প্রদান ক'রে যে, সে কোন কিছুর ব্যবহার বা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে না। ব্যক্তিগত
সম্পত্তি তৈরি হয় এই নিশ্চয়তা থেকে যে একজন ব্যক্তি অন্যদেরকে কোন কিছুর ব্যবহার বা
সুবিধা থেকে দূরে রাখতে পারে।”
"চৎড়ঢ়বৎঃু, হড়ি ধ ফধুং, রং ঁংধষষু বয়ঁধঃবফ রিঃয ঢ়ৎরাধঃব ঢ়ৎড়ঢ়বৎঃু-ঃযব ৎরমযঃ ড়ভ ধহ
রহফরারফঁধষ (ড়ৎ ধ পড়ৎঢ়ড়ৎধঃব বহঃরঃু) ঃড় বীপষঁফব ড়ঃযবৎং ভৎড়স ংড়সব ঁংব ড়ৎ নবহবভরঃ
ড়ভ ংড়সবঃযরহম."
সম্পত্তির সাধারণত: তিনটি রূপ দেখা যায়। অ্যারিষ্টটল অৎরংঃড়ঃষব (৩৮৪-৩২২ খ্রীষ্ট পূর্বাব্দ)
তাঁর লেখায় খুব স্পষ্টভাবে সম্পত্তির তিনটি রূপ তুলে ধরেছিলেন- সাধারণ, ব্যক্তিগত এবং
মিশ্র সম্পত্তি। মিশ্র সম্পত্তির ধরনের উদাহরণ হচ্ছে জমির মালিকানা সাধারণ, কিন্তু ফসলের
অধিকার ব্যক্তিগত বা সম্পত্তি ব্যক্তিগত, তবে ফসলের অধিকার সাধারণ।
❐ ব্যক্তিগত মালিকানা চৎরাধঃব চৎড়ঢ়বৎঃু: গোষ্ঠীর কোন বস্তুগত বা অবস্তুগত বিষয়ের
উপর কোন ব্যক্তির মালিকানা।
❐ রাষ্ট্রীয় মালিকানা ঝঃধঃব চৎড়ঢ়বৎঃু: যদিও রাষ্ট্রীয় মালিকানা গোষ্ঠীগত মালিকানার মধ্যে
পড়ে, তবুও তাৎপর্যের দিকে গূরুত্বপূর্ণ হওয়ায় এটিকে ভিন্নভাবে দেখা যায়।
❐ সাধারণ সম্পতি ঈড়সসড়হ চৎড়ঢ়বৎঃু: নদী, পার্ক, বনভ‚মি, রাস্তা যে সব বিষয়ের উপর
সমাজের ব্যক্তিদের সমান অধিকার রয়েছে সেগুলোকে সাধারণ সম্পত্তি বলা হয়।
ব্যক্তিগত সম্পত্তি বোঝাতে পুনরায় ম্যাকফার্সনের একটি উক্তি তুলে ধরা যায়।
"ঈড়সসড়হ ঢ়ৎড়ঢ়বৎঃু রং পৎবধঃবফ নু ঃযব মঁধৎধহঃবব ঃড় বধপয রহফরারফঁধষ ঃযধঃ যব রিষষ হড়ঃ নব বীপষঁফবফ ভৎড়স ঃযব ঁংব ড়ৎ নবহবভরঃ ড়ভ ংড়সবঃযরহম. চৎরাধঃব ঢ়ৎড়ঢ়বৎঃু রং পৎবধঃবফ নু ঃযব মঁধৎধহঃবব ঃযধঃ ধহ রহফরারফঁধষ পধহ বীপষঁফব ড়ঃযবৎং ভৎড়স ঃযব ঁংব ড়ৎ নবহবভরঃ ড়ভ ংড়সবঃযরহম."
ব্যক্তিগত সম্পত্তির ধারণা শক্তিশালী হয়ে ওঠে সপ্তদশ শতাব্দীর ইউরোপে। এই সময় থেকে
প্রাক-ধনতান্ত্রিক সাধারণ সম্পত্তির ধারণা প্রায় লুপ্ত হতে থাকে।
বিভিন্ন সমাজে সম্পত্তির ধারণা
আদিমসমাজ
মার্কসীয় দৃষ্টিকোণ থেকে মনে করা হয় আদিমসমাজ ছিল সাম্যবাদী এবং ঐ সমাজে ব্যক্তিগত
সম্পত্তি ছিলনা। সমাজ বিবর্তনের পরবর্তী স্তর দাসসমাজেই ব্যক্তিগত সম্পত্তির ধারণা তৈরী
হয়। কিন্তু নৃতাত্তি¡ক গবেষণা থেকে দেখা যায় আদিমসমাজে ব্যক্তিগত সম্পত্তির ধারণা ছিল।
তবে তাকে ধনতান্ত্রিক সমাজের মত সম্পূর্ণ বিকশিত বলা যাবে না। এর উদাহরণ হিসাবে
তুলে ধরা যায়, ইউরোক নামক রেড ইন্ডিয়ান উপজাতির কথা। এখানে নৌকা ব্যক্তিগত
সম্পত্তি। কিন্তু কেউ নদী পার হতে চাইলে তাকে সেবা প্রদান করা নৌকা-মালিকের দায়িত্ব
ছিল।
বৃটিশ কলাম্বিয়ার কোয়াকুট্ল উপজাতির মধ্যে উপক‚ল এলাকা ব্যক্তিগত সম্পত্তি হিসাবে ভাগ
করে ব্যবহার করা হত। এমনকি পুবলো চঁবনষড় উপজাতির মধ্যে ঈগলের বাসা কেউ খুঁজে
পেলে সেটি তার ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে পরিণত হত।

প্রাক-ধনতান্ত্রিক সমাজে সম্পত্তির মিশ্র রূপই প্রধানত: লক্ষ্য করা যায়।
রোমান সমাজ : ব্যক্তিগত মালিকানার প্রথম স্পষ্ট রূপ আমরা লক্ষ্য করি রোমান সমাজে।
রোমান নগরে ব্যক্তিগত সম্পত্তির মালিক না হলে কেউ নাগরিক হতে পারত না। ব্যক্তিগত
মালিকানার ভয়াবহতা আমরা লক্ষ্য করি দাস প্রথার ভিতর।
প্রাক-বৃটিশ ভারতীয় সমাজে সম্পত্তি
প্রাক-ধনতান্ত্রিক সমাজে সম্পত্তির কোন স্পষ্ট রূপ খোঁজা অর্থহীন। কেননা ব্যক্তিগত সম্পত্তির
ধারণার বিকাশ ঘটছে ধনতান্ত্রিক সমাজে এবং বলতে গেলে সপ্তদশ শতাব্দী থেকে।
প্রাক-বৃটিশ ভারতে সম্পত্তির রূপ খুঁজতে যেয়ে পর্যটক, প্রশাসক এবং গবেষকরা প্রধানত:
আধুনিক দৃষ্টিকোণ ব্যবহার করেছেন যা সঙ্গত নয়। পর্যটক বের্নিয়ার মনে করেছিলেন ভারতীয়
সমাজের একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল জমিতে ব্যক্তিগত মালিকানার অনুপস্থিতি। বের্নিয়ারের
পর্যবেক্ষণ অনেকখানি প্রভাবিত হয়েছিল তাঁর বিশ্বাসের দ্বারা। ফলে তিনি ব্যক্তিগত মালিকানার
অনুপস্থিতির উপর অতিরিক্ত গুরুত্ব আরোপ করেছিলেন। মার্কস্ এবং এঙ্গেলস প্রভাবিত
হয়েছিলেন বের্নিয়ার এবং ইউরোপীয় পর্যটক এবং প্রশাসকদের বিবরণের দ্বারা। এদের প্রভাবে
মার্কস্ এবং এঙ্গেলস মনে করেছিলেন ব্যক্তিগত মালিকানার অনুপস্থিতি ছিল প্রাচ্যের
নিশ্চলতাকে বোঝার চাবিকাঠি। মার্কস্ -এর লেখায় দেখা যায় তিনি প্রাক-বৃটিশ ভারতে জমির
মালিক হিসাবে দেখাচ্ছেন রাষ্ট্র বা গ্রাম সম্প্রদায়কে। রাষ্ট্র বা রাজার মালিকানার উপর অনেকে
গুরুত্ব আরোপ করেছেন। অন্যদিকে কোন কোন লেখক মনে করেন জমিতে ব্যক্তিগত
মালিকানা যথেষ্ট শক্তিশালী ছিল।
..... প্রাচ্যের-তিনি তুরস্ক, পারস্য ও হিন্দুস্থানে উল্লেখ করেছেন- সমস্ত ঘটনায় জমিতে
ব্যক্তিগত মালিকানার অনুপস্থিতিকে বের্নিয়ে সঠিকভাবেই ভিত্তি বলে ধরেছেন। এই হল
আসল চাবি, এমন কি প্রাচ্যের স্বর্গেরও।
....... ২রা জুন, ১৮৫৩ সালে এঙ্গেলসকে লেখা মার্কস্ -এর চিঠি।
প্রাক-বৃটিশ ভারতীয় সমাজে জমির মালিকানা নিয়ে দীর্ঘ তর্ক-বিতর্ক হয়েছে যা নিরর্থক।
মূলত: এখানে সম্পত্তির যে ধরন ছিল তাকে এ্যারিস্টেটলের অনুসরণে মিশ্ররূপ বলা যায়।
জমির প্রাচুর্যের কারণে ব্যক্তিগত মালিকানা তেমন বিকাশ লাভ করেনি। রাষ্ট্র বা গ্রামের প্রধান
বিবেচ্য বিষয় ছিল ফসলের উপর অধিকার।
ভারতীয় সমাজের উপর অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিশেষজ্ঞ লুই দুমোঁ খড়ঁরং উঁসড়হঃ বলেছেন "ঞড়
ষড়ড়শ ভড়ৎ দড়হিবৎংযরঢ়' ড়ভ ঃযব ষধহফ রং ধ ভধষংব ঢ়ৎড়নষবস, ংরহপব বাবৎু ঃযরহম ংযড়ংি
ধ পড়সঢ়ষবসবহঃধৎরঃু নবঃবিবহ ফরভভবৎবহঃ ৎরমযঃং নবধৎরহম ড়হ ঃযব ংধসব ড়নলবপঃ, ভড়ৎ
বীধসঢ়ষব, ঃযড়ংব ড়ভ ঃযব পড়সসঁহরঃু ধহফ ঃযড়ংব ড়ভ ঃযব শরহম. গড়ৎবড়াবৎ রঃ রং
ৎবসধৎশধনষব ঃযধঃ ঃযব সধলড়ৎরঃু ড়ভ ইৎরঃরংয ধফসরহরংঃৎধঃড়ৎং ঃধপশষবফ ঃযরং য়ঁবংঃরড়হ
রহ ঃবৎসং ড়ভ ঃযব সড়ৎব ড়ৎ ষবংং ঢ়যরষড়ংড়ঢ়যরপধষ মবহবৎধষ পড়হপবঢ়ঃং ড়ভ ঃযব ডবংঃ
ধহফ হড়ঃ রিঃয ঃযব ংঢ়বপরধষ পড়হপবঢ়ঃং ড়ভ ঊহমষরংয ষধ,ি যিরপয ড়িঁষফ যধাব নববহ
পষড়ংবৎ ঃড় ঃযব ধপঃঁধষ ংঃধঃব ড়ভ ধভভধরৎং রহ ওহফরধ."
মধ্যযুগের ইউরোপের সমাজ
মধ্যযুগে ইউরোপে আমরা ব্যক্তিগত সম্পত্তি এবং সাধারণ সম্পত্তি দু'টিই দেখতে পাই। কিন্তু
ব্যক্তিগত সম্পত্তির ধারণা খুব শক্তিশালী ছিল না। এর কারণ হচ্ছে মধ্যযুগের ইউরোপে
সম্পত্তির সামাজিক ধারণার উৎস ছিল খ্রীষ্ট ধর্ম। যাজকদের কাছে সম্পত্তির আদর্শ রূপ ছিল

সাধারণ মালিকানা এবং ব্যক্তিগত ব্যবহার। ঈশ্বর পৃথিবীকে সৃষ্টি করেছিলেন সব মানুষের
মঙ্গলের জন্য এবং যাতে মানুষ তাদের সমস্ত প্রয়োজন পূরণ করতে পারে। কিন্তু যেহেতু মানুষ
লোভী এবং পাপী তাই তার পক্ষে এই অবস্থায় থাকা সম্ভব নয়। ব্যক্তিগত সম্পত্তি এই
কারণেই সৃস্টি হয়। সেন্ট অগাষ্টিনের মতে ব্যক্তিগত সম্পত্তি হচ্ছে পাপের ফল এবং রাস্ট্রের
সৃষ্টি।
ধনতান্ত্রিক সমাজের বিকাশের আগেই সম্পত্তির ধারণায় ব্যাপক এবং মৌলিক পরিবর্তন এল।
এই পরিবর্তন ধরা পড়ল পঞ্চদশ শতাব্দীর ইংরেজ আইনজ্ঞ জন ফর্টেক্স ঔড়যহ ঋড়ৎঃবংপঁব
এর লেখায়।
কোন মানুষের শ্রমের উপর তার অধিকার একান্ত তারই এবং ফলে তার শ্রমজাত যে কোন
জিনিস তার সম্পত্তি। বাইবেল থেকে তিনি তাঁর বক্তব্যের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরলেন। একই
বক্তব্য আরো স্পষ্ট করে তুলে ধরলেন ধ্রুপদী দার্শনিক-রাষ্ট্রবিজ্ঞানী জন লক ঔড়যহ খড়পশব ।
ঞযড়ঁময ঃযব বধৎঃয ধহফ ধষষ রহভবৎবৎরড়ৎ পৎবধঃঁৎবং নব পড়সসড়হ ঃড় ধষষ সবহ, ুবঃ
বাবৎু সধহ যধং ধ ঢ়ৎড়ঢ়বৎঃু রহ যরং ড়হি ঢ়বৎংড়হ. ঞযরং হড় নড়ফু যধং ধহু ৎরমযঃ ঃড়
নঁঃ যরসংবষভ. ঞযব ষধনড়ঁৎ ড়ভ যরং নড়ফু, ধহফ ঃযব ড়িৎশ ড়ভ যরং যধহফং, বি সধু ংধু,
ধৎব ঢ়ৎড়ঢ়বৎষু যরং. ডযধঃবাবৎ ঃযবহ যব ৎবসড়াবং ড়ঁঃ ড়ভ ঃযব ংঃধঃব ঃযধঃ ঃযব হধঃঁৎব
যধঃয ঢ়ৎড়ারফবফ ধহফ ষবভঃ রঃ রহ, যব যধঃয সরীবফ যরং ষধনড়ঁৎ রিঃয, ধহফ লড়রহবফ ঃড় রঃ
ংড়সবঃযরহম ঃযধঃ রং যরং ড়হি ধহফ ঃযবৎবনু সধশবং রঃ যরং ঢ়ৎড়ঢ়বৎঃু.
জন লক তাঁর জটিল বক্তব্যে যা বলছেন তার মমার্থ হচ্ছে যদিও বিশ্বের সব কিছু সাধারণ
সম্পত্তি, তবুও প্রকৃতির সম্পদের সাথে মানুষ যখন তার নিজস্ব শ্রম যোগ করে তা তার
ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে পরিণত হয়। তিনি আরো বললেন প্রকৃতির জগতে ব্যক্তিগত সম্পত্তির
নিরাপত্তা নেই। মানুষের রাষ্ট্র গড়ে তোলার পেছনে প্রধান কারণ হচ্ছে সম্পত্তি রক্ষা। ১৭৮৯
সালে ফ্রান্সে মানুষের অধিকার ঘোষণায় সম্পত্তিকে চিহ্নিত করা হল অলঙ্ঘনীয় এবং পবিত্র
বলে।
চৎড়ঢ়বৎঃু, নবরহম ধহ রহারড়ষধনষব ধহফ ংধপৎবফ ৎরমযঃ, পধহ রহ হড় পধংব নব ঃধশবহ ধধিু
বীপবঢ়ঃ যিড়ংব ঢ়ঁনষরপ হবপবংংরঃু, ষবমধষষু ফবঃবৎসরহফবফ, পষবধৎষু ফবসধহফং রঃ, ধহফ
ধষধিুং ড়হ পড়হফরঃরড়হ ড়ভ ধ ঢ়ৎবপবফরহম রহফবসহরঃু.
সাম্প্রতিক সমাজবিজ্ঞানীরা লক্ষ্য করছেন সম্পত্তির ব্যক্তিগত মালিকানা বিষয়টি এখন গৌণ
হয়ে পড়ছে। সমাজবিজ্ঞানী ডারেনডর্ফজধষঢ়য উধযৎবহফড়ৎভ দেখিয়েছেন ধনতান্ত্রিক সমাজে
সম্পত্তির মালিকানার চাইতে নিয়ন্ত্রণ অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। জন গলব্রেইথ ঔড়যহ কবহহবঃয
এধষনৎধঃয যুক্তি দেখিয়েছেন বিশাল ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোতে এত বেশি মূলধন প্রয়োজন হয়
যে কোন ব্যক্তি বা ছোট গোষ্ঠীর পক্ষে প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হয়ে ওঠে না। ব্যবসা
প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় পেশাদার ব্যবস্থাপকদের হাতে। এ সত্তে¡ও সমাজবিজ্ঞানীরা লক্ষ্য
করেছেন, কোন দেশে বা অঞ্চলে এসব প্রতিষ্ঠানের ডিরেক্টররা কয়েক'শ থেকে কয়েক হাজার

লোক যাদের মধ্যে ঘনিষ্ট সামাজিক সম্পর্ক থাকে এবং তাঁরা একই সাথে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের
ডিরেক্টর পদে আসীন থাকেন। অর্থনৈতিক শক্তির এই গিঁটগুলোর দিকে সমাজবিজ্ঞানীরা
তাদের গবেষণা নিয়োজিত করছেন।
সারাংশ
সম্পত্তি কোন বস্তু নয়। সমাজবিজ্ঞানে সম্পত্তি বলতে আমরা বুঝি সামাজিক সম্পর্ক ও
অধিকার। যখন কোন বস্তু বা বিষয়ের উপর ব্যক্তি বা গোষ্ঠী মালিকানা, দখল বা
ব্যবহারের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয় তখন তা হচ্ছে সম্পত্তি। তুলনামূলক দৃষ্টিকোণ থেকে
দেখলে সম্পত্তির ধারণা ব্যাপক। সম্পত্তির অধিকারের মধ্যে থাকে বিক্রি, হস্তান্তর, দান,
ব্যবহার এবং সুবিধা পাওয়া। ব্যক্তিগত মালিকানা, রাষ্ট্রীয় মালিকানা ও সাধারণ সম্পত্তিএ তিনটি রূপে সম্পত্তিকে দেখা যায়। এ্যারিষ্টোটল সাধারণ, ব্যক্তিগত ও মিশ্র সম্পত্তি-এ
তিনটি রূপের কথা বলেছেন। এখানে মিশ্র সম্পত্তির ধরনের উদাহরণ হচ্ছে জমির
মালিকানা সাধারণ, কিন্তু ফসলের অধিকার ব্যক্তিগত বা সম্পত্তি ব্যক্তিগত, তবে ফসলের
অধিকার সাধারণ। মার্কসীয় চিন্তায় আদিম সমাজ সাম্যবাদী হওয়ায় সেখানে ব্যক্তিগত
সম্পত্তি ছিল না বলে মনে করা হয়। কিন্তু নৃতাত্তি¡ক গবেষণায় আদিমসমাজে সম্পত্তির
ধারণা পাওয়া যায় যা ধনতান্ত্রিক সমাজের মত সম্পূর্ণ বিকশিত নয়। প্রাক-ধনতান্ত্রিক
সমাজে সম্পত্তির মিশ্র রূপই প্রধানত: লক্ষণীয়। ব্যক্তিগত মালিকানার প্রথম স্পষ্ট রূপ
আমরা লক্ষ্য করি রোমান সমাজে। রোমান নগরে ব্যক্তিগত সম্পত্তির মালিক না হলে
কেউ নাগরিক হতে পারত না।
প্রাক-বৃটিশ ভারতে জমিতে ব্যক্তিগত মালিকানার অনুপস্থিতি ছিল বলে পর্যটক, প্রশাসক
ও গবেষকরা আধুনিক দৃষ্টিকোণ ব্যবহার করেছিলেন যা সঙ্গত নয়। মার্কস্ এখানে জমির
মালিক হিসাবে দেখেছেন রাষ্ট্র বা গ্রাম সম্প্রদায়কে। আবার কেউ কেউ মনে করেন
জমিতে ব্যক্তিগত মালিকানা যথেষ্ট শক্তিশালী ছিল।
প্রাক-ভারতীয় সমাজে জমির মালিকানা নিয়ে দীর্ঘ তর্ক-বিতর্ক থাকলেও মূলত: এখানে
সম্পত্তির যে ধারণা ছিল তাকে এ্যারিস্টটলের অনুসরণে মিশ্র রূপ বলা যায়। রাষ্ট্র বা
গ্রামের মুখ্য বিষয় ছিল ফসলের উপর অধিকার।
মধ্যযুগে ইউরোপে ব্যক্তিগত ও সাধারণ সম্পত্তি উভয়েই লক্ষ্যণীয়। তবে ব্যক্তিগত
সম্পত্তির ধারণা খুব শক্তিশালী ছিলনা। মধ্যযুগের ইউরোপে সম্পত্তির সামাজিক ধারণার
উৎস ছিল খ্রীষ্ট ধর্ম। যাজকদের কাছে সম্পত্তির আদর্শ রূপ ছিল সাধারণ মালিকানা ও
ব্যক্তিগত ব্যবহার। সম্পত্তির ধারণায় জন লকের বক্তব্য অনুযায়ী বিশ্বের সব কিছু
সাধারণ সম্পত্তি, তথাপিও প্রকৃতির সম্পদের সাথে মানুষ যখন তার নিজস্ব শ্রম যোগ
করে তখন তা তার ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে পরিণত হয়। তাঁর মতে প্রকৃতির জগতে
ব্যক্তিগত সম্পত্তির নিরাপত্তা নেই। মানুষের রাষ্ট্র গড়ে তোলার পিছনে প্রধান কারণ হচ্ছে
সম্পত্তি রক্ষা। ফরাসী বিপ্লবের ঘোষণায় তাই সম্পত্তিকে পবিত্র বলে অভিহিত করা হয়।
সম্পত্তির ব্যক্তিগত মালিকানা বিষয়টি এখন গৌণ হয়ে পড়ছে বলে সাম্প্রতিক
সমাজবিজ্ঞানীরা লক্ষ্য করছেন। ধনতান্ত্রিক সমাজে সম্পত্তির মালিকানার চাইতে নিয়ন্ত্রণ

অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন সমাজবিজ্ঞানী ডাহ্রেনডর্ফ। গলব্রেইথ যুক্তি
দেখিয়েছেন বিশাল ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোতে এত বেশি মূলধন প্রয়োজন হয় যে, কোন
ব্যক্তি বা ছোট গোষ্ঠীর পক্ষে প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হয়ে ওঠে না।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন
নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন
সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√) চিহ্ন দিন
১. সম্পত্তির সাধারণ রূপ কয়টি?
ক. ২টি খ. ৩টি
গ. ৪টি ঘ. ৫টি
২. নদী, পার্ক, বনভ‚মি-এগুলো কোন ধরনের সম্পত্তি?
ক. ব্যক্তিগত খ. রাষ্ট্রীয়
গ. সাধারণ ঘ. মিশ্র
৩. নৌকা ব্যক্তিগত সম্পত্তি কিন্তু কেউ নদী পার হতে চাইলে তাকে সেবা প্রদান করা নৌকা
মালিকের দায়িত্ব ছিল- এটি নিচের কোন উপজাতির ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা গেছে ?
ক. ইউরোক নামক রেড ইন্ডিয়ান খ. পুবলো উপজাতি
গ. মানা উপজাতি ঘ. ক ও খ উভয়ই
৪. প্রাক-বৃটিশ ভারতে জমিতে ব্যক্তিগত মালিকানার অনুপস্থিতি মনে করেন কোন পর্যটক?
ক. ইবনে বতুতা খ. হি ইউয়েন সাং
গ. বের্নিয়ার ঘ. কোনটিই নয়
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১. সমাজবিজ্ঞানে সম্পত্তি বলতে কি বোঝায় ?
২. আদিম সমাজে সম্পত্তির ধরণ কি ছিল ?

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]