সামাজিক অসমতা ও স্তরবিন্যাস বলতে কি বোঝেন ?


সামাজিক স্তরবিন্যাস ও সচলতা

সব সমাজেই অসমতা বিদ্যমান। সমাজে অসমতা তৈরী হয় ক্ষমতা, মর্যাদা ও বিত্তের ভিত্তিতে। এই
অসমতার কাঠামোগত রূপই হল স্তরবিন্যাস। স্তরবিন্যাসের মধ্য দিয়ে অসমতা প্রজন্মের পর প্রজন্ম
মানুষের মধ্যে ক্রমোচ্চ স্তর সৃষ্টি করে। প্রাচীনত্ব, সর্বব্যাপীতা, সামাজিকভাবে বিন্যস্ততা, বহুরূপীতা ও
সুদূর প্রসারী প্রভাব হল সামাজিক স্তরবিন্যাসের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য। সমাজভেদে
স্তরবিন্যাসের বিভিন্ন রূপ রয়েছে। শিকার ও সংগ্রহ সমাজ, উদ্যান-কৃষি সমাজ, কৃষি সমাজ এবং
শিল্পসমাজে স্তরবিন্যাসের ধরনের ভিন্নতা লক্ষ্যণীয়। সমাজে স্তরবিন্যাস কেন ঘটে তা নিয়ে
সমাজবিজ্ঞানীদের মধ্যে মত বিরোধ রয়েছে। সমাজবিজ্ঞানী কিংসলি ডেভিস ও উইলবার্ট মুর এবং
কার্ল মার্কস্ স্তরবিন্যাসের কারণ সম্পর্কে বিশেষ ভাবে আলোকপাত করেছেন।
সমাজবিজ্ঞানী ম্যাক্স ভেবার স্তরবিন্যাসকে ক্ষমতার সামাজিক বন্টন হিসেবে দেখেছেন। তাঁর মতে
সামাজিক পরিসরে ক্ষমতার প্রকাশ মর্যাদা বা সম্মানের ভিতর যা মর্যাদা-গোষ্ঠী তৈরী করে।
পরবর্তীকালের সমাজবিজ্ঞানীদের আলোচনায় গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে লিঙ্গ ও বয়সভিত্তিক
স্তরবিন্যাস এবং ছোট জাতিগোষ্ঠীর র্ণদভধডর্ধহ উপর।
আদিম থেকে বর্তমান সমাজ পর্যন্ত সব সমাজেই স্তরবিন্যাসের বিভিন্ন ধরন দেখা যায়। এর মধ্যে
চারটি গুরুত্বপূর্ণ ধরন হল জাত-বর্ণ প্রথা, দাস প্রথা, এস্টেট-ব্যবস্থা ও শ্রেণী। স্তরবিন্যাসের একটি
প্রাচীন ধরন হল জাত-বর্ণ প্রথা যা ভারত ও হিন্দু ধর্মে লক্ষ্যণীয়। প্রাচীন গ্রীস ও রোমে দাস প্রথা
বিস্তার লাভ করেছিল। এস্টেট ব্যবস্থা ইউরোপীয় সামন্তবাদের সাথে সম্পর্কিত ছিল। আর আধুনিক
সমাজে স্তরবিন্যাসকে বলা হয় শ্রেণীব্যবস্থা।
সামাজিক সচলতার ভিতর দিয়ে মানুষ এক শ্রেণী বা স্তর থেকে অন্য শ্রেণী বা স্তরে চলে আসে। এর
এক ধরনের ভাগ হচ্ছে উলম্ব ও আনুভ‚মিক সচলতা। তাছাড়া আন্ত:প্রজন্ম সচলতা সমাজবিজ্ঞানের
একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যেখানে দেখা হয় একজন মানুষের জীবনের দু'টি বিন্দুতে শ্রেণীগত পরিবর্তন
ঘটেছে কিনা।
ভ‚মিকা
মানব সমাজে অসমতা চিরন্তন। আমাদের জানা এমন কোন সমাজ নেই যেখানে অসমতা
নেই। প্রতিটি সমাজে ক্ষমতা, মর্যাদা এবং বিত্ত বা এর যে কোন একটির ভিত্তিতে অসমতা
তৈরি হয়ে যায়। সামাজিক অসমতার কাঠামোগত রূপকে আমরা স্তরবিন্যাস বলি যার ফলে
সমাজের গোষ্ঠীগুলো সোপানক্রমিকভাবে সজ্জিত হয়ে যায়।একটি গোষ্ঠীর উপরে থাকে
আরেকটি গোষ্ঠী। প্রতিটি গোষ্ঠীর থাকে জীবনযাত্রায় বিশেষ রীতি, বিশেষ জীবন সম্ভাবনা এবং
গোষ্ঠী চেতনা। সমাজে অধিকাংশ দ্বন্দ¡ তৈরী হয় ক্ষমতার এই অসম বন্টন থেকে।
সামাজিক অসমতা
অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের ভাষায় মানুষ একে অপর থেকে নানাভাবে ভিন্ন। আমরা ব্যক্তিগত
বৈশিষ্ট্য, অর্থাৎ আমাদের বয়স, লিঙ্গ, শারীরিক এবং মানসিক বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে ভিন্ন।
আমরা ভিন্ন ভিন্ন প্রাকৃতিক পরিবেশে বাস করি যা কখনও বৈরী, কখনও অনুক‚ল। প্রতিটি
সমাজ এবং সম্প্রদায় ভিন্ন ভিন্নভাবে মানুষের জন্য সুযোগ এবং সুবিধা তৈরি করে দেয়।
ঐঁসধহ নবরহমং ফরভভবৎ ভৎড়স বধপয ড়ঃযবৎ রহ সধহু ফরভভবৎবহঃ ধিুং. ডব যধাব
ফরভভবৎবহঃ বীঃবৎহধষ পযধৎধপঃবৎরংঃরপং ধহফ পরৎপঁসঁংঃধহপবং. ডব নবমরহ ষরভব রিঃয
ফরভভবৎবহঃ বহফড়সিবহঃং ড়ভ রহযবৎরঃবফ বিধষঃয ধহফ ষরধনরষরঃরবং. ডব ষরাব রহ ফরভভবৎবহঃ
হধঃঁৎধষ বহারৎড়হসবহঃং — ংড়সব সড়ৎব যড়ংঃরষব ঃযধহ ড়ঃযবৎং. ঞযব ংড়পরবঃরবং ধহফ ঃযব
পড়সসঁহরঃরবং ঃড় যিরপয বি নবষড়হম ড়ভভবৎ াবৎু ফরভভবৎবহঃ ড়ঢ়ঢ়ড়ৎঃঁহরঃরবং ধং ঃড় যিধঃ
বি পধহ ড়ৎ পধহ হড়ঃ ফড়. ঞযব বঢ়রফবসরড়ষড়মরপধষ ভধপঃড়ৎং রহ ঃযব ৎবমরড়হ রহ যিরপয বি
ষরাব পধহ ঢ়ৎড়ভড়ঁহফষু ধভভবপঃ ড়ঁৎ যবধষঃয ধহফ বিষষ-নবরহম .

ইঁঃ রহ ধফফরঃরড়হ ঃড় ঃযবংব ফরভভবৎবহপবং রহ হধঃঁৎধষ ধহফ ংড়পরধষ বহারড়ৎহসবহঃং ধহফ
বীঃবৎহধষ পযধৎধপঃবৎরংঃরপং, বি ধষংড় ফরভভবৎ রহ ড়ঁৎ ঢ়বৎংড়হধষ পযধৎধপঃবৎঃংঃরপং (ব.ম.
ধমব, ংবী, ঢ়যুংরপধষ ধহফ সবহঃধষ ধনরষরঃরবং). অহফ ঃযবংব ধৎব রসঢ়ড়ৎঃধহঃ ভড়ৎ ধংংবংংরহম
রহবয়ঁধষরঃু. ঋড়ৎ বীধসঢ়ষব, বয়ঁধষ রহপড়সবং পধহ ংঃরষষ ষবধাব সঁপয রহংয়ঁধষরঃু রহ ড়ঁৎ
ধনরষরঃু ঃড় ফড় যিধঃ বি ড়িঁষফ াধষঁব ফড়রহম. অ ফরংধনষবফ ঢ়বৎংড়হ পধহহড়ঃ ভঁহপঃরড়হ
রহ ঃযব ধিু ধহ ধনষবনড়ফরবফ ঢ়বৎংড়হ পধহ, বাবহ রভ নড়ঃয যধাব বীধপঃষু ঃযব ংধসব
রহপড়সব. ঞযঁং, রহবয়ঁধষরঃু রহ ঃবৎসং ড়ভ ড়হব াধৎরধনষব (ব.ম. রহপড়সব) সধু ঃধশব ঁং রহ
ধ াবৎু ফরভভবৎবহঃ ফরৎবপঃরড়হ ভৎড়স রহবয়ঁধষরঃু রহ ঃযব ংঢ়ধপব ড়ভ ধহড়ঃযবৎ াধৎরধনষব (ব.ম.
ভঁহপঃরড়হরহম ধনরষরঃু ড়ৎ বিষষ-নবরহম).
সামাজিক অসমতা বলতে সমাজবিজ্ঞানীরা বোঝেন সামাজিক পুরস্কার যেমন, বিত্ত, ক্ষমতা ও
মর্যাদা প্রভৃতিতে মানুষের সমান প্রবেশাধিকার না থাকা। স্মেলসারের মতে,
"ওহবয়ঁধষরঃু ৎবভবৎং ঃড় ঃযব পড়হফরঃরড়হ রহ যিরপয ঢ়বড়ঢ়ষব ফড়হ'ঃ যধাব বয়ঁধষ ধপপবংং ঃড় ংড়পরধষ ৎবধিৎফং, ংঁপয ধং, সড়হবু, ঢ়ড়বিৎ ধহফ ঢ়ৎবংঃরমব."
আর সামাজিক স্তরবিন্যাস হল সামাজিক প্রক্রিয়া যার মধ্য দিয়ে অসমতা প্রজন্মের পর প্রজন্ম
সমাজের মানুষের মধ্যে ক্রমোচ্চশীলতার স্তর সৃষ্টি করে যায়।
"ঝঃৎধঃরভরপধঃরড়হ রং ড়হব ংড়পরধষ সবপযধহরংস ঃযৎড়ঁময যিরপয রহবয়ঁধষরঃু রং ঢ়বৎঢ়বঃঁধঃবফ ড়াবৎ মবহবৎধঃরড়হং, ঢ়ৎড়ফঁপরহম ধ যরবৎধৎপযরপধষ ংঃৎধঃধ ড়ভ ঢ়বড়ঢ়ষব রহ ংড়পরবঃু"
ঘবরষ ঔ. ঝসবষংবৎ.
সমাজবিজ্ঞানীরা প্রায়ই ম্যাক্স ভেবারের মর্যাদা গোষ্ঠী ঝঃধঃঁং এৎড়ঁঢ়-এর ধারণা অনুযায়ী
প্রাক-শিল্প যুগের স্তরবিন্যাসকে চিহ্নিত করে থাকেন। কতিপয় ব্যক্তি যারা সুনির্দিষ্ট মাত্রায়
সামাজিক মর্যাদা ও স্বতন্ত্র জীবনধারা ভোগ করেন এবং সমাজস্থ অবস্থান সম্পর্কে সচেতন,
তারাই হল একটি মর্যাদাগোষ্ঠী। বর্ণ ও এস্টেট হল মর্যাদা গোষ্ঠীর উদাহরণ। অনেক
সমাজবিজ্ঞানী এই প্রত্যয়টিকে আধুনিক সমাজের ক্ষেত্রেও ব্যবহার করে থাকেন।
অসমতা, স্তরবিন্যাস ও শ্রেণী : উদাহরণ
অসমতা : মফিজ নামে একজন কৃষক জমি থেকে ভাল শস্য পেয়ে অধিক পরিমাণে জমি
ক্রয় করে এবং চাষযোগ্য জমিকে বিস্তৃত করে। রমজান নামের অপর এক কৃষকের বন্যার
ফলে শস্যহানি ঘটে এবং বেঁচে থাকার প্রয়াসে সে জমি বিক্রয় করে।
- এই দুই কৃষকের মধ্যে উচ্চ মাত্রায় অসমতা বিরাজ করছে।
স্তরবিন্যাস : কৃষক মফিজ তার সন্তানের জন্য উত্তারাধিকারসূত্রে জমি রেখে যায়।
অন্যদিকে কৃষক রমজানের সন্তানরা হয়ে যায় ভ‚মিহীন।
শ্রেণী : কৃষক মফিজের সন্তানরা গ্রামের ধনী কৃষকে পরিণত হয় এবং তারা ভ‚মিহীনদের
তুলনায় অনেক উঁচু অবস্থানে থেকে ভ‚মিহীনদের লভ্যাংশের ভিত্তিতে জমি বর্গা দেয়।
ভ‚মিহীনরা লক্ষ্য করলো যে তারা উৎপাদিত শস্যের প্রাপ্য অংশ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ
ক্ষেত্রে তারা দৃঢ় দলগত অবস্থান এৎড়ঁঢ় ঋববষরহম নিয়ে ধনী কৃষকদের বিরুদ্ধাচারণ
করলো।
অসমতা কি সর্বজনীন
সব সমাজে কি অসমতা বিরাজ করে ? জাঁ জ্যাক রুশো মনে করতেন প্রকৃতির রাজ্যে কোন
অসমতা ছিল না। অসমতা সৃষ্টি হয় সমাজ এবং সভ্যতার বিকাশের প্রক্রিয়ায়Ñ সম্পত্তির
প্রাতিষ্ঠানিক রূপ এবং আইনের দ্বারা।

ওঃ ভড়ষষড়ংি ভৎড়স ঃযব ংঁৎাবু ঃযধঃ, ধং ঃযবৎব রং যধৎফষু ধহু রহবয়ঁধষরঃু রহ ঃযব ংঃধঃব ড়ভ
হধঃঁৎব, ধষষ ঃযব রহবয়ঁধষরঃু যিরপয হড়ি ঢ়ৎবাধরষং ড়বিং রঃং ংঃৎবহমঃয ধহফ মৎড়ঃিয ঃড় ঃযব
ফবাবষড়ঢ়সবহঃ ড়ভ ড়ঁৎ ভধপরষরঃরবং ধহফ ঃযব ধফাধহপব ড়ভ ঃযব যঁসধহ সরহফ, ধহফ নবপড়সবং
ধঃ ষধংঃ ঢ়বৎসধহবহঃ ধহফ ষবমরঃরসধঃব নু ঃযব বংঃধনষরংযসবহঃ ড়ভ ঢ়ৎড়ঢ়বৎঃু ধহফ ষধংি.
কার্ল মার্কস্ মনে করতেন আদিম সমাজ ছিল সাম্যবাদী। সম্পত্তির ব্যক্তিগত মালিকানার সাথে
সাথে সৃষ্টি হয়েছিল শ্রেণীবিভক্ত সমাজের। নৃবিজ্ঞানীরা লক্ষ্য করেছেন আদিম এবং সরল
সমাজে অসমতা বিরাজ করে। গুণার লান্ডমান এঁহহবৎ খধহফসধহ পাপুয়া নিউগিনির কিআই
করধির উপজাতির উপর গবেষণা করতে গিয়ে দেখলেন তাদের মধ্যে সাধারণভাবে সমতা
রয়েছে। তিনি দেখলেন এই সমাজে কোন ব্যক্তি মালিকানা নেই, কাজের প্রকৃতির মধ্যে
তারতম্য নেই, কেউ অন্যের অধীনে কাজ করে না। গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে
নৃবিজ্ঞানী দেখলেন, যে লোক আনুষ্ঠানিক ভোজের আয়োজন করতে পারে তার মর্যাদা বেশি।
যারা যোদ্ধা, যে শিকার করতে পারে এবং যাদু জানে তাদের সম্মান বেশি। অসুস্থ্য এবং
অবিবাহিত বা কর্মহীন যুবকদের মর্যাদা কম। নারীদেরও মর্যাদা কম।
সামাজিক স্তরবিন্যাসের বৈশিষ্ট্য
সামাজিক স্তরবিন্যাসের পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যের পরিপ্রেক্ষিতে সমাজবিজ্ঞানীরা এ প্রত্যয়টির
উপর বেশ গুরুত্বারোপ করে থাকেন। সমাজবিজ্ঞানী টিউমিন এর মতে বৈশিষ্ট্যগুলো হলপ্রাচীনত্ব, সর্বব্যাপিতা, সামাজিক ধরন, বহুরূপীতা এবং সুদূরপ্রসারী প্রভাব।
সামাজিক স্তরবিন্যাসের প্রাচীনত্ব
ঐতিহাসিক ও প্রতœতাত্তি¡ক তথ্যানুযায়ী প্রাচীন সমাজের মানুষ এমনকি ক্ষুদ্র যাযাবর ব্যান্ড
ইধহফ গোষ্ঠীর মধ্যেও স্তরবিন্যাস উপস্থিত ছিল। ঐ আদিম অবস্থায় বয়স ও লিঙ্গ উভয়ই এবং
একই সাথে দৈহিক শক্তি-সামর্থ্য ছিল স্তরবিন্যাসের গুরুত্বপূর্ণ দিক। ধারণা করা হয় যে দুই
হাজার বছর পূর্বেই স্তরগুলো ক্রমোচ্চভাবে বিন্যস্ত হয়েছিল। চীন, ভারত ও আফ্রিকা এবং
একই সাথে ইউরোপ ও নতুন বিশ্বের ঘবি ডড়ৎষফ ক্ষেত্রে তা ছিল বাস্তবিকই সত্য।
স্তরবিন্যাসের সর্বব্যাপিতা
স্তরবিন্যাসের সমগ্র বিশ্বজোড়া রূপে ধনী-দরিদ্র, শক্তিমান, দুর্বল, মর্যাদাবান ও মর্যাদাহীনের
অস্তিত্ব লক্ষ্য করা যায়। প্রত্যেক দেশেই এমনকি সমাজতান্ত্রিক দেশেও স্তরায়ন রয়েছে।
অনক্ষর সমাজেও স্তরবিন্যাস উপস্থিত রয়েছে। সামাজিকভাবে নির্দেশিত অসাম্য নারী-পুরুষ,
প্রাপ্ত-বয়স্ক ও শিশুর মধ্যেও রয়েছে। বয়স ও লিঙ্গ ছাড়াও ক্ষমতা, সম্পত্তি ও মর্যাদার মত
মানদন্ডের উপর স্তরবিন্যাসের সর্বজনীন কাঠামো নির্ভর করে।
স্তরবিন্যাসের সামাজিক ধরন
মানুষের দৈহিক এবং বুদ্ধিমত্তার ভিন্নতা অসমতা সৃষ্টির জন্যে গুরুত্বপূর্ণ হলেও, অসমতার যথার্থ
রূপ আমরা দেখতে পাই সমাজে যেভাবে মানুষ ক্ষমতা, বিত্ত ও মর্যাদার ভিত্তিতে ক্রমোচ্চভাবে
সজ্জিত হয় তার মধ্যে অসমতা এবং স্তরবিন্যাস পরস্পরের সাথে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত।

সমাজের মূল্যবোধ এবং শ্রেয়োবোধ সামাজিক পুরস্কারকে নিয়ন্ত্রিত করে। সমাজে যারা
ক্ষমতার অধিকারী তারা প্রথা, নিয়ম এবং আইনের মাধ্যমে অসমতাকে টিকিয়ে রাখতে বা বৃদ্ধি
করতে পারে।
❒ অসমতা ও স্তরবিন্যাস প্রজন্মের পর প্রজন্ম প্রবাহিত হয়। জাত-বর্ণ প্রথায় ব্রাহ্মণ জন্ম জন্ম
ধরে ব্রাহ্মণ থেকে যায়। সমাজে যারা ধনী এবং ক্ষমতাবান তারা তাদের সামাজিক
সম্পর্কের ভিত্তিতে তাদের শ্রেণীগত অবস্থান টিকিয়ে রাখতে পারে।
❒ বহুরূপীতা সামাজিক অসমতা ও স্তরবিন্যাসের রূপ কাল এবং স্থান ভেদে বিভিন্ন হয়।
সমাজবিজ্ঞানী লেনস্কি বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে পর্যালোচনা করেছেন। তাঁর গবেষণার
ফলাফল।
নি¤েœ স্তরবিন্যাসের ফলাফল অন্যত্র আলোচনা করা হয়েছেবিভিন্ন সমাজে স্তরবিন্যাসের রূপ
সমাজবিজ্ঞানী গেরহার্ড লেনস্কী এবৎযধৎফ খবহংশর বিভিন্ন সমাজে স্তরবিন্যাসের রূপ তুলে
ধরেছেন। তিনি দেখিয়েছেন শিকার এবং সংগ্রহ সমাজে অসমতা সবচেয়ে কম। এই ধরনের
সমাজে কাজের বিভাজন হয় বয়সের ভিত্তিতে। মর্যাদার ভিত্তিতে অসমতা নিরূপিত হয়Ñ
যেমনটি ঘটে পাপুয়া নিউগিনির কিইওয়াই উপজাতির মধ্যে।
উদ্যান-কৃষি সমাজ
এই ধরনের সমাজে অসমতা কিছুটা বেশি। মর্যাদার ভিত্তিতে রাজনৈতিক নেতৃত্ব তৈরি হয়ে
যায়। এরা হচ্ছে বিগম্যান বা গোষ্ঠীপতি। এদের উৎপাদনের উপায় বা অন্যের উপর কোন
নিয়ন্ত্রণ থাকে না। জমির উপর নিয়ন্ত্রণ থাকে গোত্রের। অতিরিক্ত খাদ্য সবার মধ্যে পুনরায়
বিতরণ করা হয়। তবে বিতরণে অসমতা লক্ষ্য করা যায়।
কৃষি সমাজ
অসমতা তীব্রতম হচ্ছে কৃষি সমাজে। সম্রাট, রাজা, পুরোহিত, সামন্তপ্রভু এবং আমলাতন্ত্র কৃষি
সমাজে যে প্রচুর উদ্ধৃত্ত থাকে তা আত্মসাৎ করে। শাসক শ্রেণীর হাতে থাকে অনিয়ন্ত্রিত
ক্ষমতা। ভ‚মিদাস এবং দাসত্ব প্রথাও এই সমাজে বিরাজ করে। কৃষি সমাজে স্তরবিন্যাসের
তারতম্য ব্যাপক। ইউরোপের সামন্ততন্ত্র, ভারতের কৃষি সমাজ বা আফ্রিকার কৃষি সমাজ
সহজে তুলনীয় নয়।
শিল্প সমাজ
শিল্প সমাজে অসমতা কমে আসে। এর প্রধান কারণ শিল্প সমাজে রাজনৈতিক সমতা তৈরি
হয়ে যায়। কিন্তু অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অসমতা জটিল রূপ গ্রহণ করে। সাধারণভাবে মানুষের
অবস্থার উন্নতি হয়। সামাজিক সচলতা ব্যাপক, যদিও তা বর্ণ, ধর্ম এবং লিঙ্গের দ্বারা সীমাবদ্ধ
থাকে।
❒ স্তরবিন্যাসের ফলাফল প্রধানত: চারটি ক্ষেত্রে দেখা যায়-জীবন সম্ভাবনা, প্রতিষ্ঠান,
জীবনযাত্রা এবং মূল্যবোধ। সমাজের প্রতিটি স্তরের জীবন সম্ভাবনা ভিন্ন থাকে। শ্রমিক
শ্রেণীর ছেলে বা মেয়ের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় বা উঁচু প্রশাসনে যাওয়া সহজ নয়। এর কারণ
সমাজের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ শ্রেণীভেদে ভিন্ন ভিন্ন রূপ পরিগ্রহ করে। শ্রমিক শ্রেণীর পরিবার
এবং পারিবারিক মূল্যবোধ মধ্যশ্রেণীর পরিবার এবং পারিবারিক মূল্যবোধ থেকে ভিন্ন।

প্রতিটি শ্রেণীর জীবনযাত্রা খরভব ঝঃুষব ভিন্ন। তবে সমকালীন সমাজবিজ্ঞানীরা অসমতার
তিনটি ফলাফলের দিকে বেশি নজর দিচ্ছেন- যা হল দারিদ্র্য, বঞ্চনা এবং ক্ষমতাহীনতা।
সামাজিক স্তরবিন্যাসের তত্ত¡
সমাজে কেন স্তরবিন্যাস তৈরি হয় এ নিয়ে সমাজবিজ্ঞানীদের মধ্যে মত বিরোধ আছে।
সমাজবিজ্ঞানী কিংসলি ডেভিস করহমংষবু উধারং এবং উইলবার্টমুর ডরষনবৎঃ ঊ. গড়ড়ৎব
সামাজিক স্তরবিন্যাসের সর্বজনীনতা এবং ভিন্নতা ব্যাখ্যা করেছেন ক্রিয়াবাদী দৃষ্টিকোণ থেকে।
সমাজের জন্য একটি জরুরী কাজ হচ্ছে বিভিন্ন অবস্থানে মানুষের ভ‚মিকা পালন কিভাবে
নিশ্চিত করা যায়। এর জন্যে দু'টি জিনিষ প্রয়োজন হয়ে পড়ে। প্রয়োজন হয় সমাজে
অবস্থানগুলো পূরণ করার এবং ভ‚মিকা পালনের জন্য প্রেষণা তৈরি। সমাজে অবস্থানগুলোর
গুরুত্ব বা অবস্থানগুলোর সাথে যুক্ত কাজগুলো একই রকম না হওয়ায় অবস্থানগুলোতে যাওয়া
এবং ভ‚মিকা পালনের জন্যে পৃথকীকৃত পুরস্কারের ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে হয়। এর অর্থ হচ্ছে
যে অবস্থানের জন্য যত বেশি প্রশিক্ষণ দরকার সেই অবস্থানের জন্য তত বেশি পুরস্কার থাকে।
ফলে সমাজে পুরস্কারের ভিন্নতার জন্য স্তরবিন্যাস ব্যবস্থা তৈরি হয় এবং টিকে থাকে।
সমাজবিজ্ঞানী মেলভিন টিউমিন গবষারহ গ. ঞঁসরহ ডেভিস-মুর-এর তত্তে¡র তীব্র সমালোচনা
করেছেন। তাঁর মতে সমাজের অবস্থান বা ভ‚মিকায় তুলনামূলক গুরুত্ব নিরূপণ করা সম্ভব নয়।
স্তরবিন্যাস ব্যবস্থা সবচেয়ে প্রতিভাবানদের চিহ্নিত করবার সুযোগ দেয় না, কেননা প্রশিক্ষণের
সুযোগ থাকে সীমাবদ্ধ। বরং যারা উঁচু অবস্থানে থাকে তারা পদগুলোকে নিজস্ব শ্রেণীর মধ্যে
রাখার চেষ্টা করে।
মার্কসীয় দৃষ্টিভঙ্গি
সমাজে কেন স্তরবিন্যাস তৈরি হয় এবং টিকে থাকে তা নিয়ে কার্ল মার্কস্ যে ধ্রুপদী তত্ত¡ প্রদান
করেছিলেন তা এখনও আলোচনার দাবী রাখে।
মার্কস্ -এর মতে আদিম সাম্যবাদী সমাজে স্তরবিন্যাস ছিল না এবং স্তরবিন্যাস সমাজের জন্য
অপরিহার্য নয়। ঐতিহাসিক প্রক্রিয়ায় শ্রেণীর সৃষ্টি হয় এবং মানুষের শ্রেণীগত সচেতনতা এক
সময়ে উন্নত সাম্যবাদী সমাজ সৃষ্টি করবে। স্তরবিন্যাস সৃষ্টি হয় শ্রমবিভাজন , উদ্বৃত্ত সৃষ্টি এবং
সম্পত্তির প্রাতিষ্ঠানিক রূপ তৈরির ঐতিহাসিক প্রক্রিয়ায়। মার্কস্ -এর মতে যখন সমাজে
উৎপাদনের উপায়ের উপর একটি শ্রেণীর মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হয় তখনই সমাজে স্তরবিন্যাস
তৈরি হয়ে যায়। সমাজে একটি শ্রেণী যেমন মালিক শ্রেণীতে পরিণত হয় তেমনি অন্য শ্রেণীটি
হয়ে পড়ে সম্পূর্ণ নির্ভরশীল কেননা স্বাধীনভাবে উৎপাদনের কোন সুযোগ তাদের থাকেনা।
শ্রেণী ব্যবস্থার বিকাশ আমরা প্রথম দিকে দেখি প্রাচীন গ্রীস এবং রোমে- দাস সমাজের উদ্ভবের
মাধ্যমে। দাস সমাজের প্রধান দু'টি শ্রেণী হচ্ছে দাসপ্রভ‚ এবং দাস। দাসপ্রথা থেকে সৃষ্টি হয়
সামন্ত সমাজে। সেখানে আবার আমরা দেখি সামন্তপ্রভু বা ভ‚মির মালিক এবং ভ‚মিদাস, যে
সামন্তপ্রভ‚র জন্যে উৎপাদন করে। ধনতান্ত্রিক বা বুর্জোয়া সমাজে বুর্জোয়া শ্রেণী উদ্বৃত্ত মূল্য

আহরণ করে বিশাল সম্পদ সৃষ্টি করে এবং অন্যদিকে শ্রমিক শ্রেণী ক্রমাগত নিঃস্ব হয়ে যায়।
বুর্জোয়া শ্রেণী হচ্ছে মূলধনের মালিক এবং শ্রমিক শ্রেণী যারা শ্রম শক্তি বিক্রি করে বেঁচে থাকে
তারা হচ্ছে সর্বহারা শ্রেণী।
প্রতিটি শ্রেণী প্রথম পর্যায়ে প্রগতিশীল ভ‚মিকা পালন করে। তারা উৎপাদন শক্তিকে এগিয়ে
নিয়ে যায়। প্রতিটি শ্রেণীর উৎপাদন শক্তিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দিষ্ট সীমা থাকে। এই
সীমায় পৌঁছে গেলে শ্রেণী রক্ষণশীল হয়ে পড়ে। সামন্তপ্রভুর পক্ষে শিল্প সমাজের জন্ম দেওয়া
সম্ভব নয়। ফলে সমাজের উৎপাদন শক্তিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজন হয় নতুন
শ্রেণীর। বিরাজমান শ্রেণীগুলো দ্বন্দ¡ এবং ধ্বংস স্তুপ থেকে জন্ম নেয় নতুন শ্রেণী। সামন্তপ্রভু
এবং ভ‚মিদাসদের পতনের ভিতর থেকেই ষোড়শ শতাব্দীতে সৃষ্টি হতে শুরু করে বুর্জোয়া এবং
শ্রমিক শ্রেণী।
ঐতিহাসিক নিয়মে শ্রেণীদ্বন্দ¡ সবচেয়ে তীব্র হয় ধনতান্ত্রিক সমাজে। এই সমাজের পরিপ্রেক্ষিতে
বিশেষ করে প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠে মার্কস্ -এর শ্রেণীর দু'টি রূপের মধ্যে বিভাজন। তিনি
দেখিয়েছেন বাস্তব শ্রেণী ঈষধংং-রহ-রঃংবষভ এবং সচেতন শ্রেণী ঈষধংং-ভড়ৎ-রঃংবষভ ভিন্ন।
ধনতান্ত্রিক সমাজে শ্রমিক শ্রেণী তাদের সাধারণ শ্রেণীগত অবস্থান সম্পর্কে সচেতন হয়ে ওঠে
এবং বুর্জোয়া শাসনকে উৎখাত করার জন্য সচেতন শ্রেণী হিসাবে বিপ্লবী ভ‚মিকা গ্রহণ করে।
বিপ্লবের মাধ্যমে শ্রমিক শ্রেণী বুর্জোয়াদের উৎখাত করে এবং উৎপাদনের মালিকানার উপর
কর্তৃত্ব স্থাপন করে। এভাবে দ্বন্দ¡-মুক্ত শ্রেণীহীন সমাজ সৃষ্টি হয়।

সামাজিক স্তরবিন্যাস হল সামাজিক অসমতার কাঠামোগত রূপ যার ফলে সমাজের
গোষ্ঠীগুলো সোপানক্রমিকভাবে সজ্জিত হয়ে থাকে। আর সামাজিক অসমতা হল
সামাজিক পুরস্কার যেমন, বিত্ত, ক্ষমতা ও মর্যাদা প্রভৃতিতে মানুষের সমান প্রবেশাধিকার
না থাকা। সামাজিক প্রক্রিয়া হিসাবে সামাজিক স্তরবিন্যাসের মধ্য দিয়ে এই অসমতা
প্রজন্মের পর প্রজন্ম মানুষের মধ্যে ক্রমোচ্চশীলতার স্তর সৃষ্টি করে থাকে। ম্যাক্স
ভেবারের মর্যাদাগোষ্ঠীর ধারণা অনুযায়ী সমাজবিজ্ঞানীরা প্রাক-শিল্প স্তরবিন্যাসকে প্রায়ই
চিহ্নিত করে থাকেন। অনেক সমাজবিজ্ঞানী এ প্রত্যয়টিকে আধুনিক সমাজের ক্ষেত্রেও
ব্যবহার করে থাকেন।
সামাজিক স্তরবিন্যাসের রয়েছে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। প্রথমত: সামাজিক স্তর
বিন্যাসের প্রাচীনত্ব রয়েছে। ঐতিহাসিক ও প্রতœতাত্তি¡ক তথ্যানুযায়ী প্রাচীন সমাজস্থ মানুষ
এমনকি ক্ষুদ্র যাযাবর ব্যান্ড গোষ্ঠীর মধ্যেও স্তরবিন্যাস উপস্থিত ছিল। দ্বিতীয় বৈশিষ্ট্য
হচ্ছে সামাজিক স্তর বিন্যাসের সর্বব্যাপিতা। দেখা যায় সমস্ত বিশ্ব প্রত্যেক দেশেই
এমনকি সমাজতান্ত্রিক দেশেও স্তরায়ন রয়েছে। তৃতীয়ত: অসম স্তর বা বিন্যাস প্রজন্মের
পর প্রজন্ম প্রবাহিত হয়। চতুর্থত: সামাজিক অসমতা ও স্তর বিন্যাসের রূপ কাল এবং
স্থানভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে। পঞ্চমত : স্তর বিন্যাসের ফলাফল প্রধানত: জীবন সম্ভাবনা,
প্রতিষ্ঠান, জীবনযাত্রা এবং মূল্যবোধ-এ চারটি ক্ষেত্রে লক্ষ্যণীয়।
বিভিন্ন সমাজে স্তরবিন্যাসের রয়েছে বিভিন্ন রূপ। গেরহার্ড লেনস্কীর মতানুযায়ী শিকার ও
সংগ্রহ সমাজে অসমতা সবচেয়ে কম। উদ্যান কৃষি সমাজে অসমতা কিছুটা বেশি।
এখানে মর্যাদার ভিত্তিতে রাজনৈতিক কর্তৃত্ব তৈরি হয়ে যায়। অসমতা তীব্রতম হচ্ছে কৃষি
সমাজে। এখানে শাসক শ্রেণীর হাতে থাকে অনিয়ন্ত্রিত ক্ষমতা। সম্রাট, রাজা, পুরোহিত,
সামন্তপ্রভু ও আমলাতন্ত্র কৃষি সমাজে যে প্রচুর উদ্বৃত্ত থাকে তা আত্মসাৎ করে। তবে শিল্প
সমাজে রাজনৈতিক সমতা তৈরি হয়ে যায় বলে অসমতা কমে আসে। কিন্তু অর্থনৈতিক
অসমতা সুদৃঢ় থাকে এবং তা জটিল রূপ পরিগ্রহ করে।
সমাজে স্তরবিন্যাস কেন তৈরি হয় এ নিয়ে সমাজবিজ্ঞানীদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে।
সমাজবিজ্ঞানী কিংসলি ডেভিস ও উইলবার্ট মুর সামাজিক স্তরবিন্যাসের সর্বজনীনতা ও
ভিন্নতাকে দেখেছেন ক্রিয়াবাদী দৃষ্টিকোণ থেকে। এ ধারণা অনুযায়ী সমাজের জন্য একটি
জরুরী কাজ হচ্ছে বিভিন্ন অবস্থানে মানুষের ভ‚মিকা পালন কিভাবে নিশ্চিত করা যায়। এ
ক্ষেত্রে যে অবস্থানের জন্য যত বেশি প্রশিক্ষণ দরকার সেই অবস্থানের জন্য তত বেশি
পুরস্কার থাকে। ফলে পুরস্কারের ভিন্নতার জন্য স্তরবিন্যাস ব্যবস্থা তৈরি হয় এবং টিকে
থাকে। সমাজবিজ্ঞানী টিউমিন ডেভিড-মুরের তত্তে¡র সমালোচনায় বলেন সমাজের
অবস্থান বা ভ‚মিকায় তুলনামূলক গুরুত্ব নিরূপণ করা সম্ভব নয়। প্রশিক্ষণের সুযোগ
সীমাবদ্ধ থাকায় স্তরবিন্যাস ব্যবস্থা সবচেয়ে প্রতিভাবানদের চিহ্নিত করার সুযোগ প্রদান
করে না।
মার্কসীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে আদিম সাম্যবাদী সমাজে স্তরবিন্যাস ছিল না। ঐতিহাসিক প্রক্রিয়ায়
শ্রেণীর বিন্যাস সৃস্টি হয় এবং মানুষের শ্রেণীগত সচেতনতা এক সময়ে উন্নত সাম্যবাদী
সমাজ সৃষ্টি করবে। শ্রমবিভাজন, উদ্বৃত্ত সৃষ্টি এং সম্পত্তির প্রাতিষ্ঠানিক রূপ তৈরির
ঐতিহাসিক প্রক্রিয়ায় স্তরবিন্যাস সৃষ্টি হয়। মার্কস্ মনে করেন যখন সমাজে উৎপাদনের
উপায়ের উপর একটি শ্রেণীর মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হয় তখনই সমাজে স্তরবিন্যাস তৈরি
হয়ে যায়।

নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন
সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√) চিহ্ন দিন
১. নিচের কে মনে করতেন আদিম সমাজ ছিল সাম্যবাদী?
ক. কার্ল মার্কস্ খ. ম্যাক্স ভেবার
গ. ভিলফ্রেডো পারেতো ঘ. উপরের সবাই
২. সামাজিক স্তরবিন্যাসের বৈশিষ্ট্য হল-
ক. প্রাচীন ও সর্বব্যাপী খ. বহুরূপী
গ. সামাজিকভাবে বিন্যস্ত ঘ. উপরের সবগুলো
৩. বিগম্যান বা গোষ্ঠীপতি কোন সমাজে লক্ষণীয়?
ক. শিকার-সংগ্রহ সমাজ খ. উদ্যান কৃষি সমাজ
গ. কৃষি সমাজ ঘ. শিল্প সমাজ
৪. নিচের কে মনে করেন সমাজের অবস্থান বা ভ‚মিকায় তুলনামূলক গুরুত্ব
নিরূপণ করা সম্ভব নয়?
ক. কিংসলি ডেভিস ও উইলবার্ট মুর খ. মেলভিন টিউমিন
গ. কার্ল মার্কস্ ঘ. উপরর কোনটিই নয়
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১. সামাজিক স্তরবিন্যাস কি ?
২. মানব সমাজ কেন স্তরবিন্যস্ত ?
রচনামূলক প্রশ্ন
১. সামাজিক অসমতা ও স্তরবিন্যাস বলতে কি বোঝেন ? সামাজিক স্তরবিন্যাসের
বৈশিষ্ট্যগুলো আলোচনা করুন।
২. বিভিন্ন সমাজে স্তরবিন্যাসের রূপগুলো কি? বিশ্লেষণ করুন।
৩. সামাজিক স্তরবিন্যাসের তত্ত¡গুলো আলোচনা করুন।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]