জনতাত্তি¡ক প্রক্রিয়ার মৌল প্রক্রিয়াগুলো কি? সংক্ষেপে আলোচনা করুন।


ভ‚মিকা
জনসংখ্যা বিজ্ঞানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে জনসংখ্যা কি হারে বাড়ছে বা কমছে।
জনসংখ্যা পরিবর্তনকে অনুধাবন করতে আমাদের তিনটি মূল জনসংখ্যাগত প্রক্রিয়ার উপর
দৃষ্টিপাত করতে হয়। এগুলো হচ্ছে উর্বরতা ঋবৎঃরষরঃু, মরণশীলতা গড়ৎঃধষরঃু এবং স্থানাস্তর
গরমৎধঃরড়হ। এই প্রক্রিয়াগুলো সামাজিক কাঠামো এবং সংস্কৃতির দ্বারা অতিমাত্রায় প্রভাবিত
হয়। এই কারণে সমাজবিজ্ঞানীরা এই তিনটি বিষয়ের প্রতি দৃষ্টিপাত করে থাকেন।
উর্বরতা ঋবৎঃরষরঃু
নারীর সন্তান জন্মদানের ক্ষমতা ১৫ থেকে ৪৯ বছর পর্যন্ত বিস্তৃত। কিন্তু একজন নারীর সন্তান
জন্মদানের যে জৈবিক ক্ষমতা তা কখনও বাস্তবায়িত হয় না। সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক
মূল্যবোধ, শ্রেয়োবোধ, নিয়ম-কানুন, বিশ্বাস প্রজনন ক্ষমতাকে সীমাবদ্ধ রাখে। ফলে
জনসংখ্যার ক্ষেত্রে প্রজনন ক্ষমতার ঋবপঁহফরঃু চাইতে জন্মহার অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ফলে
সমাজবিজ্ঞানীরা প্রজননকে সীমাবদ্ধ রাখে যে সব সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক নির্ধারক সেগুলোর
উপর দৃষ্টিপাত করে থাকেন।
সমাজবিজ্ঞানী কিংসলি ডেভিস করহমংষবু উধারং এবং জুডিথ বেøক ঔঁফরঃয ইষধশব জন্মহারকে
বোঝার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মডেল তৈরি করেছেন। ডেভিস এবং বেøকের মতে সব সমাজেই
জন্মহার স্বেচ্ছামূলক ভাবে প্রভাবিত করা যায়। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলকভাবে উর্বরতা
নিয়ন্ত্রিত করা যায়। যেসব সামাজিক উপাদান প্রজনন প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে সেগুলোকে
তাঁরা তিনটি ভাগে ভাগ করেছেন। প্রথম ভাগে রয়েছে এমন উপাদান সেগুলো যৌন সম্পর্ককে
নিয়ন্ত্রিত করে। দ্বিতীয় ভাগে রয়েছে গর্ভধারণের সাথে যুক্ত উপাদানগুলো। শেষ ভাগে রয়েছে
জন্মদানের সাথে যুক্ত উপাদানগুলো।
যৌন সম্পর্কের সাথে যুক্ত চলকগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে-
❏ বিয়ের বয়স : বিয়ের বয়স যত বেড়ে যায় তত জন্মহার কমে যায়। উন্নয়নশীল দেশে তাই
জনসংখ্যা ব্যবস্থাপনার জন্য নারীদের বিয়ের বয়স বৃদ্ধির প্রতি গুরুত্ব আরোপ করা হয়।

❏ নারীদের চিরকুমারিত্ব
❏ যৌন মিলনের ক্ষেত্রে বিরতিকাল
❏ যৌন সম্পর্ক থেকে স্বেচ্ছা প্রণোদিত বা বাধ্যতামূলক বিরতি
❏ যৌন সম্পর্কের দ্রুততা।
গর্ভ সঞ্চারমূলক উপাদানগুলোর মধ্যে রয়েছে ঃ
❏ স্বাভাবিক প্রজনন এবং প্রজনন ক্ষমতার অভাব।
❏ পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহণ বা গ্রহণ না করা।
❏ স্থায়ী বন্ধ্যাত্বকরণ বা চিকিৎসাজনিত কারণে বন্ধ্যাত্বকরণ।
যে উপাদানগুলো জন্মহারকে প্রভাবিত করে তার মধ্যে রয়েছে গর্ভপাত।
ডেভিস এবং বেøক মনে করেন যে চলকগুলোর কথা তাঁরা উল্লেখ করেছেন তা সব সমাজেই
রয়েছে এবং তা জন্মহারকে হয় বাড়িয়ে দেয় না হলে কমিয়ে দেয়।
সব প্রাক-আধুনিক সমাজ জন্মহারকে উৎসাহিত করে। প্রাক-আধুনিক সমাজে মৃত্যুহার বেশি
বলে জন্মহারকে বাড়ানোর জন্য চেষ্টা করা হয়। জন্মহার বৃদ্ধির তাড়না থেকে তৈরি হয়ে যায়
অল্প বয়সে বিয়ের মত প্রথা এবং ‘যিনি মুখ দিয়েছেন তিনিই অন্ন দিবেন' এর মত বিশ্বাস।
কিন্তু অন্যদিকে সব সমাজেই জন্মহারকে কমানোর জন্য কিছু ব্যবস্থা থাকে। বিধবা বিবাহ না
হওয়া বা পাদ্রীদের কুমারত্ব এর উদাহরণ।
আধুনিক সমাজে বিয়ের বয়স বাড়া, জন্ম নিয়ন্ত্রণ, প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার, সন্তান পালনের
ব্যয়ভার, সচেতনতা প্রভৃতি কারণ জন্মহারকে সাংঘাতিকভাবে কমিয়ে দিয়েছে।
সম্প্রতি বনগার্ট্জ ঔ. ইড়হমধধৎঃং দেখিয়েছেন মাত্র চারটি উপাদান সব সমাজে জন্মহারের
পার্থক্যের ৯৬ শতাংশ পর্যন্ত ব্যাখ্যা করতে পারে। এগুলো হচ্ছে :
এক. যৌন সম্পর্কের মধ্যে [প্রধানতঃ বিয়ের মধ্যে ] অতিবাহিত প্রজনন শক্তিকালীন সময়ের
অনুপাত।
দুই. শিশু জন্মের পর প্রজননহীনতার সময়কাল।
তিন. জন্মনিরোধ ব্যবহার এবং তার কার্যকারিতা।
চার. কৃত্রিম গর্ভপাত ওহফঁপবফ অনড়ৎঃরড়হ।
জন্মহার ইরৎঃয জধঃব
স্থূল জন্মহার
উর্বরতা বা জন্মকে পরিমাপ করার জন্যে সাধারণত: ব্যবহার করা হয় মোট জনসংখ্যার প্রতি
১০০০-এ প্রতি বছর কত জীবিত শিশুর জন্ম হয়। একে বলা হয় স্থূল জন্মহার ঈৎঁফব ইরৎঃয
জধঃব। এই পরিমাপে বয়স এবং লিঙ্গের বিষয়টি আনা হয় না বলে এটি আমাদের জন্মহার
সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা প্রদান করে না। আরও সূ² পরিমাপের জন্য জনসংখ্যাবিদরা সাধারণ
জন্মহার এবহবৎধষ ঋবৎঃরষরঃু এর ধারণা ব্যবহার করেন। সাধারণ জন্মহার বলতে বোঝায় ১৫
থেকে ৪৯ বছরের বয়সের সমস্ত নারীর এক বছরে সন্তান জন্মের অনুপাত। এক বছরে কোন
বিশেষ বয়স বা বয়সগোষ্ঠীর নারীদের জন্মহারকে বয়স-ভিত্তিক জন্মহার অমব-ংঢ়বপরভরপ ইরৎঃয
জধঃব বলা হয়। ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সের সমস্ত প্রজননকে যোগ করে সমগ্র জন্মহার ঞড়ঃধষ
ঋবৎঃরষরঃু জধঃব হিসাব করা হয়।

টেবিল নং-৩ ঃ ১৯৫০-৫৫, ১৯৯০-৯৫ ও ২০৪৫-২০৫০-এ বার্ষিক জন্মানুযায়ী দেশ ভিত্তিক
হিসাব, মধ্য বিভেদ (হাজার)
দেশ ১৯৫০-১৯৫৫ দেশ ১৯৯০-১৯৯৫ দেশ ২০৪৫-২০৫০
১ চীন ২৫৩৭০ ১ ভারত ২৫৬১২ ১ ভারত ২০৬৫৯
২ ভারত ১৬৫৯০ ২ চীন ২১৭২৯ ২ চীন ১৫৭৮২
৩ যুক্তরাষ্ট্র ৩৯৯৩ ৩ পাকিস্তান ৫০৩৫ ৩ পাকিস্তান ৫০৯০
৪ ইন্দোনেশিয়া৩৫৭৩ ৪ ইন্দোনেশিয়া ৪৬৭৯ ৪ ইনোনেশিয়া ৪২১৪
৫ রাশিয়া ৩৫৯২ ৫ যুক্তরাষ্ট্র ৪০৪৬ ৫ নাইজেরিয়া ৪১৯৩
৬ ব্রাজিল ২৫৭২ ৬ নাইজেরিয়া ৩৮২৩ ৬ যুক্তরাষ্ট্র ৩৯৪৫
৭ পাকিস্তান ২০৭১ ৭ ব্রাজিল ৩৪০৮ ৭ ব্রাজিল ৩৩০৬
৮ জাপান ২০৫২ ৮বাংলাদেশ ৩১৭৩ ৮ ইথিওপিয়া ৩১৩০
৯ বাংলাদেশ ২০৫১ ৯ ইথিওপিয়া ২৪০৩ ৯ কঙ্গো ২৯৩৮
১০ নাইজেরিয়া ১৪০৫ ১০ মেক্সিকো ২৩৫৭ ১০ বাংলাদেশ ২৯১১
১১ মেক্সিকো ১৩৪৭ ১১ পিলিপাইন ২০১৩ ১১ মেক্সিকো ১৯২৭
১২ ভিয়েতনাম ১২৯৫ ১২ ভিয়েতনাম ২০১০ ১২ ফিলিপাইন ১৭৬২
১৩ মিসর ১১৩১ ১৩ কঙ্গো ১৯৯৪ ১৩ ভিয়েতনাম ১৭০৬
১৪ ফিলিপাইন ১১০৬ ১৪ ইরান ১৭৮০ ১৪ মিসর ১৫৭৫
১৫ জার্মানী ১১০৬ ১৫ মিসর ১৭১৫ ১৫ ইরান ১৫৬৪
১৬ তুরস্ক ১০৭৬ ১৬ রাশিয়া ১৫৬৬ ১৬ তাঞ্জানিয়া ১৪২৩
১৭ ইথিওপিয়া ১০১৬ ১৭ তুরস্ক ১৩৫৮ ১৭ তুরস্ক ১৩১৫
১৮ তাঞ্জানিয়া ৯৯৬ ১৮ জাপান ১২১৩ ১৮ উগান্ডা ১২
১৯ ইতালি ৮৭৭ ১৯ তাঞ্জানিয়া ১১৯৩ ১৯ রাশিয়া ১১১১
২০ ইউক্রেন ৮৭১ ২০ দক্ষিণ আফ্রিকা১০৩৬ ২০ আফগানিস্তান ১০৫৮
২১ ইরান ৮৬২ ২১ থাইল্যান্ড ১০৩৩ ২১ কলম্বিয়া ৯৮৬
২২ কলম্বিয়া ৯৯১ ২২ ইয়েমেন ৯৮২
২৩ কেনিয়া ৯৫২ ২৩ সুদান ৯২৭
২৪ মায়ানমার ৯২৪ ২৪ জাপান ৯২৩
২৫ উগান্ডা ৮৯৮ ২৫ গানা ৮৬৬
২৬ সুদান ৮৮৫ ২৬ মায়ানমার ৮৫৮
২৭ আফগানিস্তান ৮৫৫ ২৭ ইরাক ৮৪৫
২৮ সৌদি আরব ৮৩১
২৯ দক্ষিণ আফ্রিকা ৮২৬
৩০ থাইল্যান্ড ৮২২
উৎস : ইউনাইটেড নেশনস, ২০০০. পৃ. ৪৩
মরণশীলতা গড়ৎঃধষরঃু
মৃত্যুহারকে এক সময় কেবল বংশগত বা জৈবিক প্রকৃতির বলে মনে করা হলেও বর্তমানে তা
আর মনে করা হয় না। কেন না বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মৃত্যুহারের ভিন্নতা সামাজিক কারণে ঘটে

থাকে। সাধারণত ঃ তিনটি প্রধান কারণে মানুষ মৃত্যুবরণ করে থাকে। এগুলো হল Ñ তাদের
শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়া, রোগের বিস্তার এবং সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিবেশ।
মরণশীলতার যথার্থ পরিমাপ তথ্যের পর্যাপ্ততার উপর নির্ভর করে থাকে। স্থূল-মৃত্যুহার
ঈৎঁফব উবধঃয জধঃব বয়স/ লিঙ্গ নির্দিষ্টকরণ মৃত্যুহার অমব/ ঝবী ঝঢ়বপরভরপ উবধঃয জধঃব দ্বারা
মরণশীলতা পরিমাপ করা হয়। স্থূল মৃত্যুহার বলতে প্রতিহাজার জনসংখ্যায় বছরে মৃত্যুর
সংখ্যাকে বোঝায়। কোন কোন সমাজে শিশু মত্যুর হার বেশি। আবার পঞ্চাশ বছরের পর সব
বা অধিকাংশ সমাজেই মৃত্যুহার বেড়ে যায়। মৃত্যুহার সম্পর্কে আমাদের স্পষ্ট ও নির্দিষ্ট ধারণা
দেয় বয়সভিত্তিক মৃত্যুহার। সামাজিক শ্রেণীতে মরণশীলতার ভিন্নতা বা পার্থক্য পেশা
ঙপপঁঢ়ধঃরড়হ গোষ্ঠী ও জাতি সত্ত¡া জধপব ধহফ ঊঃযহরপরঃু এর কারণে ঘটে থাকে। গবেষণালব্ধ
তথ্য থেকে জানা গেছে যে বিবাহিত লোকদের চেয়ে অবিবাহিতরা অপেক্ষাকৃত বেশী মারা
যায়। তাছাড়া দৈহিক প্রতিবন্ধী বা ভগ্ন স্বাস্থ্যের অধিকারীদের বিবাহের সুযোগ কম থাকায়
তাদের মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি থাকে। মরণশীলতায় লিঙ্গভিত্তিক ভিন্নতাও দেখা যায়। উন্নত বিশ্বে
সাধারণত: নারীরা পুরুষের তুলনায় অধিক দীর্ঘায়ু হয়ে থাকে। শহর ও গ্রামের ক্ষেত্রেও
মরণশীলতা ভিন্ন হয়ে থাকে। মরণশীলতাকে উন্নত ও অনুন্নত দেশের প্রেক্ষাপটে বিচার
করলে দেখা যায় অনুন্নত বিশ্বে মরণশীলতার হার অপেক্ষাকৃত অধিকতর।
টেবিল নং-৪ : আয়ুষ্কাল ও মরণশীলতা (১৯৫০ - ৫৫ এবং ১৯৯০-৯৫ এ জীবনের গড় আয়ু
ও নির্বাচিত নির্দেশকের ধরন)
উভয় লিঙ্গ পুরুষ মহিলা আয়ষ্কাল অনুপাত
দেশ বা এলাকা ১৯৫০- ১৯৯০ মরণশীলতা ১৯৫০- ১৯৯০ ১৯৫০- ১৯৯০- পুরুষ
মহিলা
১৯৫৫ ১৯৯৫ হ্রাস সূচক ১৯৫৫ ১৯৯৫ ১৯৫৫ ১৯৯৫
ইসরায়েল ৬৫.৪ ৭৬.৭ ৭৭ ৬৪.৪ ৭৫.২ ৬৬.৪ ৭৮.৯ ১.১৭ ১.১৯
সিঙ্গাপুর ৬০.৪ ৭৫.৬ ৭৮ ৫৮.৮ ৭৩.৯ ৬২.১ ৭৮.৩ ১.২৬ ১.২৬
মালয়েশিয়া ৪৮.৫ ৭০.৭ ৭০ ৪৭.০ ৬৮.৭ ৫০.০ ৭৩.১ ১.৪৬ ১.৪৬
ফিলিপাইন ৪৭.৫ ৬৬.৩ ৫৮ ৪৬.০ ৬৪.৫ ৪৯.১ ৬৮.২ ১.৪০ ১.৩৯
চীন ৪০.৮ ৬৮.৪ ৭০ ৩৯.৩ ৬৬.৭ ৪২.৩ ৭০.৫ ১.৭০ ১.৬৭
ভিয়েতনাম ৪০.৮ ৬৫.১ ৬২ ৩০.১ ৬২.৯ ৪১.৮ ৬৭.৩ ১.৬১ ১.৬১
সৌদি আরব ৩৯৯ ৬৯.৬ ৭৪ ৩৯.১ ৬৮.৪ ৪০.৭ ৭১.৪ ১.৭৫ ১.৭৫
পাকিস্তান ৩৮.৯ ৬১.৪ ৫৫ ৪০.২ ৬০.৬ ৩৭.৬ ৬২.৬ ১.৫১ ১.৬৬
মালদ্বীপ ৩৮.৯ ৬২.০ ৫৬ ৪০.১ ৬৩.৪ ৩৭.৬ ৬০.৮ ১.৫৮ ১.৩৩
ইন্দোনেশিয়া ৩৭.৫ ৬২.৬ ৫৯ ৩৬.৯ ৬১.০ ৩৮.১ ৬৪.৫ ১.৬৫ ১.৬৯
মায়ানমার ৩৬.৯ ৫৭.৬ ৪৮ ৩৫.৬ ৫৬.০ ৩৮.২ ৫৯.৩ ১.৫৭ ১.৫৫
বাংলাদেশ ৩৬.৬ ৫৫.৬ ৪৪ ৩৮.৩ ৫৫.৬ ৩৪.৯ ৭১.৮ ১.৮৯ ১.৯৪
ওমান ৩৬.৩ ৫৪.৬ ৪২ ৩৬.৮ ৫৫.১ ৩৫.৮ ৫৪.১ ১.৫০ ১.৫১
ভুটান ৩৫.২ ৫৭.৬ ৫০ ৩৪.৫ ৫৬.৫ ৩৬.০ ৫৯.০ ১.৬৪ ১.৬৪
ইয়েমেন ৩২.১ ৫৫.৪ ৪৯ ৩২.০ ৫৪.৯ ৩২.৩ ৫৫.৯ ১.৭২ ১.৭৩
আফগানিস্তান ৩১.৬ ৪৩.৫ ২৫ ৩১.৩ ৪৩.০ ৩১.৮ ৪৪.০ ১.৩৭ ১.৩৮
উৎস : ইউনাইটেড নেশনস, ২০০০, পৃ: ৫৬

স্থানান্তর গরমৎধঃরড়হ
ঙীভড়ৎফ উরপঃরড়হধৎু ড়ভ ঝড়পরড়ষড়মু অনুযায়ী স্থানান্তর বলতে আমরা বুঝি ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর
প্রতীকি বা রাজনৈতিক সীমানা অতিক্রম করে নতুন এলাকা বা সম্প্রদায়ের মধ্যে কম-বেশি
স্থায়ীভাবে বাস।
গরমৎধঃরড়হ রহাড়ষাবং (ঃযব সড়ৎব ড়ৎ ষবংং) ঢ়বৎসধহবহঃ সড়াবসবসঃ ড়ভ রহফরারফঁধষং ড়ৎ
মৎড়ঁঢ়ং ধপৎড়ংং ংুসনড়ষরপ ড়ৎ ঢ়ড়ষরঃরপধষ নড়ঁহফধৎরবং রহঃড় হবি ৎবংরফবহঃরধষ ধৎবধং ধহফ
পড়সসঁহরঃরবং.
অভিবাসন ওসসরমৎধঃরড়হ বলতে বোঝায় অন্য দেশে যেয়ে বসতি স্থাপন করা। প্রবাসন
ঊসসরমৎধঃরড়হ বলতে বোঝায় অন্যত্র বসতি স্থাপন করার জন্য নিজের দেশ ছেড়ে যাওয়ার
প্রক্রিয়াকে।
ইন-মাইগ্রেশন ওহ-সরমৎধঃরড়হ বলতে বোঝায় একই দেশের মধ্যে কোনো এলাকায় (অন্য স্থান
থেকে এসে) বসতি স্থাপন। কোন গ্রাম থেকে ঢাকা শহরে এসে বসতি স্থাপন করলে
তা ঢাকা শহরের জন্য ইন-মাইগ্রেশন।
আউট-মাইগ্রেশন ঙঁঃ-সরমৎধঃরড়হ হচ্ছে অন্যত্র বাস করার জন্য কোন অঞ্চল থেকে লোকের
বহির্গমন। যখন মানুষ শহরে এসে বসতি স্থাপন করে তখন গ্রাম থেকে বহির্গমন ঘটে।
পিটারসন ডরষষরধস চবঃবৎংড়হ -এর মতে স্থানান্তর ঘটতে পারে ব্যক্তির স্বাধীন ইচ্ছায় ঋৎবব
গরমৎধঃরড়হ, অন্যের চাপে ওসঢ়বষষবফ গরমৎধঃরড়হ এবং জোরপূর্বক ঋড়ৎপবফ গরমৎধঃরড়হ।
ফেরত স্থানান্তর জবঃঁৎহ গরমৎধঃরড়হ বলতে বোঝায় যে এলাকা থেকে স্থানান্তর ঘটেছিল
সেখানে প্রত্যাবর্তন। শেকল স্থানান্তর ঈযধরহ গরমৎধঃরড়হ বলতে বোঝায় এমন একটি প্রক্রিয়া
যার মাধ্যমে কোন ব্যক্তি একটি বিশেষ এলাকা বা জনগোষ্ঠী যেখানে তার আত্মীয়স্বজন এবং
বন্ধু-বান্ধব সেখানে অভিবাসন করে।
হিয়ার উ.গ. ঐববৎ-এর মতে স্থানান্তর কেন ঘটে তা তিনটি নির্ধারকের মাধ্যমে বোঝা যায়।
পছন্দমূলক ব্যবস্থা চৎবভবৎবহপব ংুংঃবস
এটি বলে দেয় ব্যক্তির পছন্দের স্থানগুলো এবং কোথায় ভাল কাজ পাওয়া যেতে পারে এবং
তার যে সম্পদ আছে তার ভিত্তিতে সে কোথায় যেতে পারে। এটিকে অনেকে আকর্ষণমূলক
উপাদান চঁংয ঋধপঃড়ৎ বলে থাকেন।
মূল্যব্যবস্থা চৎরপব ংুংঃবস
এটি বলে দেয় কোথাও যেতে হলে তার জন্য কি ধরনের অর্থ, শক্তি এবং সময় ব্যয় করতে
হয়।
স্থানান্তর ব্যয়বহুল বলে মানুষের আয় বাড়লে স্থানান্তর বেড়ে যায়।
এই শ্রেণীকরণে দু'টি বিষয় স্থান পায়নি। কোন কোন ক্ষেত্রে মানুষ অভিবাসন করতে বাধ্য
হয়। নদী ভাঙ্গনের ফলে মানুষকে ক্রমাগত একস্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তর করতে হয়।
আবার অন্যদিকে রাষ্ট্র এবং তার আইন অবাধ স্থানান্তরের ক্ষেত্রে প্রবল বাধা হিসাবে কাজ
করে। এর ফলে উন্নয়নশীল দেশ থেকে অনেক ক্ষেত্রে বে-আইনী অভিবাসন ঘটে।

সারাংশ
জনসংখ্যা পরিবর্তনকে অনুধাবণ করতে হলে উর্বরতা, মরণশীলতা ও স্থানান্তর -এ তিনটি
জনসংখ্যাগত প্রক্রিয়ার উপর দৃষ্টিপাত করতে হয়। আর এই প্রক্রিয়াগুলো সমাজকাঠামো
ও সংস্কৃতির দ্বারা অতিমাত্রায় প্রভাবিত হয়। ফলে সমাজবিজ্ঞানীরা এ তিনটি বিষয়ের
প্রতিই দৃষ্টিপাত করেন।
নারীর সন্তান জন্ম দানের ক্ষমতা ১৫ থেকে ৪৯ বছর পর্যন্ত বিস্তৃত। কিন্তু একজন নারীর
সন্তান জন্মদানের যে জৈবিক ক্ষমতা তা কখনও বাস্তবায়িত হয় না। সামাজিক ও
সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ, শ্রেয়োবোধ, নিয়ম-কানুন, বিশ্বাস প্রজনন ক্ষমতাকে সীমাবদ্ধ
করে। ফলে জনসংখ্যার ক্ষেত্রে প্রজনন ক্ষমতার চাইতে জন্মহার অধিক গুরুত্বপূর্ণ।
সমাজবিজ্ঞানী কিংসলি ডেভিস ও জুডিথ বে কের মতে সব সমাজেই জন্মহারকে -
স্বেচ্ছামূলক ভাবে প্রভাবিত করা যায়। তাঁরা প্রজনন প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে এমন
সামাজিক উপাদানকে তিনটি শ্রেণীতে ভাগ করেন। প্রথম ভাগে রয়েছে এমন উপাদান যা
যৌন সম্পর্ককে নিয়ন্ত্রিত করে। দ্বিতীয় ভাগে রয়েছে গর্ভধারনের সাথে যুক্ত উপাদান
এবং শেষ ভাগে রয়েছে জন্মদানের সাথে যুক্ত উপাদান। তারা যৌন সম্পর্কের সাথে যুক্ত
বিভিন্ন চলকের কথা বলেছেন যা সব সমাজেই বিদ্যমান এং তা জন্মহারকে হয় বাড়িয়ে
দেয় না হলে কমিয়ে দেয়।
প্রাক-ধনতান্ত্রিক সব সমাজই জন্মহারকে উৎসাহিত করে। সেসব সমাজে মৃত্যুহার বেশি
বলে জন্মহার বাড়ানোর জন্য চেষ্টা করা হয়। আধুনিক সমাজে বিয়ের বয়স বাড়া, জন্ম
নিয়ন্ত্রণ প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার, সন্তান পালনের ব্যয়ভার, সচেতনতা প্রভৃতি নানা কারণ
জন্মহারকে সাংঘাতিক ভাবে কমিয়ে দিয়েছে।
উর্বরতা বা জন্মকে পরিমাপ করার জন্য সাধারণতঃ ব্যবহার করা হয় স্থূল জন্ম হার। এটি
হল প্রতি ১০০০-এ প্রতিবছর কত জীবিত শিশুর জন্ম হয় তারই সংখ্যা। বয়স ও
লিঙ্গের বিষয়টি এ ক্ষেত্রে আনা হয় না বলে জন্মহার সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়ন ।
তবে সু² পরিমাপের জন্য জনসংখ্যাবিদরা ব্যবহার করেন সাধারণ জন্মহার যা ১৫ থেকে
৪৯ বছরের বয়সের সমস্ত নারীর এক বছরের সন্তান জন্মের অনুপাত। এছাড়া এক বছরে
কোন বিশেষ বয়স বা বয়স গোষ্ঠীর নারীদের জন্মহারকে বয়স-ভিত্তিক জন্মহার বলে।
আর ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সের সমস্ত প্রজননকে যোগ করে পাওয়া জন্মহার হল সমগ্র
জন্মহার।
স্থূল মৃত্যুহার বলতে প্রতি হাজার জনসংখ্যায় বছরে মৃত্যুর সংখ্যাকে বোঝায়। কোন
কোন সমাজে শিশু মৃত্যুর হার বেশি। আবার পঞ্চাশ বছরের পর সব বা অধিকাংশ
সমাজেই মৃত্যুহার বেড়ে যায়। মৃত্যুহার সম্পর্কে আমাদের স্পষ্ট ও নির্দিষ্ট ধারণা দেয়
বয়সভিত্তিক মৃত্যুহার।
স্থানান্তর বলতে আমরা বুঝি ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর প্রতীকি বা রাজনৈতিক সীমানা অতিক্রম
করে নতুন এলাকা বা সম্প্রদায়ের মধ্যে কম বেশি স্থায়ীভাবে বসবাস। অভিবাসন বলতে
বোঝায় অন্য দেশে যেয়ে বসতি স্থাপন করা। প্রবাসন হচ্ছে অন্যত্র বসতি স্থাপন করার
জন্য নিজের দেশ ছেড়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া। ইন-মাইগ্রেশন হল একই দেশের মধ্যে কোন
এলাকার বসতি স্থাপন। আর আউট মাইগ্রেশন হল অন্যত্র বাস করার জন্য কোন অঞ্চল
থেকে লোকের বহির্গমন। স্থানান্তর ঘটতে পারে ব্যক্তির স্বাধীন ইচ্ছায়, অন্যের চাপে ও
জোর পূর্বক। স্থানান্তরে কেন ঘটে তা পছন্দমূলক ব্যবস্থা, মূল্য ব্যবস্থা ও সম্পদ-এ
তিনটি নির্ধারকের মাধ্যমে বোঝা যায়।

নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন
সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√) চিহ্ন দিন
১. নিচের কোন সমাজ জন্মহারকে উৎসাহিত করে?
ক. প্রাক-আধুনিক খ. আধুনিক
গ. উত্তর-আধুনিক ঘ. কোনটিই নয়
২. কত বছর বয়সের পরে সব বা অধিকাংশ সমাজে মৃত্যুহার বেড়ে যায়?
ক. ৩০ বছর খ. ৪০ বছর
গ. ৪৫ বছর ঘ. ৫০ বছর
৩. গ্রাম থেকে শহরে এসে বসতি স্থাপন নিচের কোনটির উদাহরণ?
ক. অভিবাসন খ. ফেরত স্থানান্তর
গ. ইন মাইগ্রেশন ঘ. প্রবাসন
৪. হিয়ারের মতানুযায়ী স্থানান্তরকে কয়টি নির্ধারকের মাধ্যমে বোঝা যায়?
ক. ২ টি খ. ৩ টি
গ. ৪ টি ঘ. ৫টি
৫. ডেভিস ও বেøকের মতানুযায়ী প্রজনন প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে এমন সামাজিক উপাদানগুলোর
প্রথম ভাগে রয়েছে কোন ধরনের উপাদান?
ক. যেগুলো যৌন সম্পর্ককে নিয়ন্ত্রিত করে
খ. যেগুলো গর্ভধারণের সাথে যুক্ত
গ. যেগুলো জন্মদানের সাথে যুক্ত
ঘ. উপরের সবগুলো
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১. স্থানান্তরের ক্ষেত্রে পছন্দমূলক ও মূল্যব্যবস্থা কি ভ‚মিকা রাখে ?
২. ডেভিস-বেøকের মডেল অনুযায়ী যৌন সম্পর্কের সাথে যুক্ত চলকগুলো কি?
রচনামূলক প্রশ্ন
১. জনতাত্তি¡ক প্রক্রিয়ার মৌল প্রক্রিয়াগুলো কি? সংক্ষেপে আলোচনা করুন।
২. জন্মহারকে বোঝার জন্য কিংসলি ডেভিস ও জুডিথ বেøক যে মডেল তৈরি করেছেন তা আলোচনা
করুন।
৩. স্থানান্তর বলতে কি বোঝায়? স্থানান্তরের বিভিন্ন রূপগুলো বিশ্লেষণ করুন।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]