. ক্লিফোর্ড গিয়ার্টজ খ. মার্গারেট মিড
গ. তালাল আসাদ ঘ. ক্যাথরিন হল
ভূত বিবাহ কী?
ইভানজেলিকেলবাদ কী?


বিয়ের কোন বিশ্বজনীন সংজ্ঞা দাঁড় করানো সম্ভব নয়
বিয়ের এমন কোন সংজ্ঞা দাঁড় করানো সম্ভব নয় যা কিনা সকল স্থান এবং সকল সময়কালের জন্য প্রযোজ্য।
বিগত প্রায় একশ’ বছর ধরে সমাজ বিজ্ঞানীরা বিয়ের একটি সর্বকালব্যাপী, এবং সর্বস্থানের জন্য প্রযোজ্য Ñ
এক কথায় বললে, “বিশ্বজনীন”(ঁহরাবৎংধষ) Ñ সংজ্ঞা দাঁড় করানোর চেষ্টা করেছেন। সমাজবিজ্ঞানীদের এই
প্রচেষ্টার অগ্রভাগে ছিলেন নৃবিজ্ঞানীরা। কিন্তু হাল আমলের ভাবনা হচ্ছে, এ ধরনের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হতে বাধ্য।
এ ধরনের প্রচেষ্টায় প্রাধান্য পায়, হয় “নিজ” সমাজের অথবা নৃবিজ্ঞানীর কাছে বহুল পরিচিত কিছু সমাজের,
বিয়ে ব্যবস্থা। এসব সমাজ হতে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে বিয়ে সংক্রান্ততত্ত¡ দাঁড় করানো হয়। এতে সমস্যা
তৈরী হয়। এভাবে ভাবনা চিন্তা করলে কোনমতেই এ বিষয়ে বিদ্যমান সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ভিন্নতা
(পঁষঃঁৎধষ ফরভভবৎবহপবং) বোঝা সম্ভব হয়ে ওঠে না। অন্য কথায়, বিশ্বজনীন সংজ্ঞা দাঁড় করানোর চেষ্টা
ক্ষেত্র বিশেষে পৃথিবীর মানুষ সম্বন্ধে জ্ঞান সংগ্রহের রাস্তা বন্ধ করে দেয়। এ ধরনের প্রচেষ্টায় ধরে নেয়া হয়
যে, বিয়ে নামক প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক সম্পর্ক সম্বন্ধে ইতোমধ্যেই আমরা যা কিছু জানি, তা পর্যাপ্ত। অন্য
কোন কিংবা ভিন্ন কোন সমাজ সম্বন্ধে পাওয়া তথ্য “সংযোজন” মাত্র। কিছু কিছু ক্ষেত্রে, কোন কোন সমাজের
বিয়ের প্রথাকে দেখা হয় “ব্যতিক্রম” অর্থে, এবং মূলধারার আলোচনায় এই ভিন্নতাগুলোকে সমান গুরুত্ব
দেয়ার প্রয়োজন বোধ করা হয় না। কিন্তু, নৃবিজ্ঞানের ঘোষিত লক্ষ্য যেহেতু মনুষ্য সমাজ সম্বন্ধে জানা,
সেকারনে জরুরী হয়ে পড়ে সমাজে সমাজে ভিন্নতা, এক কাল হতে আরেক কালের পার্থক্য Ñ এই
বিষয়গুলোকে ধারাবাহিকভাবে কেন্দ্রে রাখা। এই লক্ষ্য সামনে রেখেই সা¤প্রতিককালের নৃবিজ্ঞানীরা বিশ্বব্যাপী
সংজ্ঞা দাঁড় করানোর উপর আর জোর দিচ্ছেন না। বরং গুরুত্ব দিচ্ছেন নির্দিষ্টতার (ংঢ়বপরভরপরঃু) উপর:
তারা জানতে চাচ্ছেন, বুঝতে চাচ্ছেন নির্দিষ্ট কোন সমাজে, নির্দিষ্ট কোন জনগোষ্ঠীর মাঝে, নির্দিষ্ট
সময়কালে কি ধরনের বিয়ে ব্যবস্থা প্রচলিত ছিল বা আছে।
বিগতকালে, কিছু নৃবিজ্ঞানী বিয়ের একটি বিশ্বজনীন সংজ্ঞা দাঁড় করানোর চেষ্টা করেছিলেন এই যুক্তিতে যে,
সকল সমাজে বিয়ে, আকর (পড়ৎব) কিছু কার্য (ভঁহপঃরড়হ) সম্পাদন করে। তাদের মতে (ক) যৌনতা
নিয়ন্ত্রণ এবং (খ) সন্তানের বৈধতা প্রদান Ñ এদুটো কার্য সম্পাদন বিয়েকে দান করে এক বিশ্বজনীন রূপ।
উইলিয়াম গুডএনাফ-এর মতে (১৯৭০), বিয়ে হচ্ছে একটি চুক্তি যার মাধ্যমে একজন নারীর যৌনতার উপর
অধিকার সৃষ্টি করা হয়। নৃবিজ্ঞানী ক্যাথলিন গফ-এর মতে (১৯৫৯), সন্তানের বৈধতা নির্ধারণ বিয়ে নামক
সামাজিক প্রতিষ্ঠানকে সর্বজনীনতা প্রদান করে থাকে। তার মানে, গফ বলতে চাচ্ছেন, বিয়ের মাধ্যমে
একজন নারী এবং একজন পুরুষের যৌন মিলন সামাজিক স্বীকৃতি লাভ করে। এই যৌন মিলনের ফলে ভূমিষ্ট
সন্তান বৈধ সন্তান হিসেবে সমাজে স্বীকৃতি পায়। কিন্তু, গফ বিয়ের অর্থ যেভাবে দাঁড় করাচ্ছেন Ñ বৈধ সন্তান
নিশ্চিত করা হচ্ছে বিয়ে নামক সামাজিক প্রতিষ্ঠানের কার্য, এবং এ কার্য সম্পাদন বিয়েকে করে তোলে
বিশ্বজনীন Ñ সেটা সকল সমাজের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
সুদানের নুয়ের সমাজের দিকে তাকালে দেখা যায় সেখানে ‘ভূত বিবাহ’ (মযড়ংঃ-সধৎৎরধমব) এবং নারী-নারী
(ড়িসধহ-ড়িসধহ সধৎৎরধমব) বিবাহ প্রচলিত। ভূত বিবাহ বলা হচ্ছে সে ধরনের বিয়েকে যেখানে একজন
বিধবা হয় পুনরায় বিয়ের মাধ্যমে, অথবা প্রেমিক গ্রহণের সাহায্যে, মা হন। নবজাতক সন্তানটি স্বীকৃতি পায়
মৃত স্বামীর বৈধ সন্তান হিসেবে Ñ তার নতুন স্বামী অথবা প্রেমিকের বংশধর হিসেবে না। নুয়েরদের মাঝে
নৃবিজ্ঞানের লক্ষ্য যদি হয়ে
থাকে মনুষ্য সমাজ সম্বন্ধে
জানা, তাহলে জরুরী হয়ে পড়ে
সমাজে সমাজে ভিন্নতা, এক
কাল হতে আরেক কালের
পার্থক্য Ñ এই বিষয়গুলোকে
ধারাবাহিকভাবে কেন্দ্রে রাখা।
আরেক ধরনের বিয়ের প্রচলন আছে, যা কিনা ‘নারী-নারী বিবাহ’ হিসেবে নৃবিজ্ঞানীদের কাছে পরিচিত: এ
বিয়ের মাধ্যমে একজন বয়োজ্যেষ্ঠ অপেক্ষাকৃত অল্পবয়স্ক নারীকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করেন। বয়োকনিষ্ঠ নারী
বিয়ের পর স্বাধীনভাবে প্রেমিক গ্রহণ করতে পারেন। প্রেমিকের সাথে শারীরিক মিলন সূত্রে যে সন্তানেরা
জন্মায় তাদের ধরা হয় “স্বামী”র (বয়োজ্যেষ্ঠ নারী) পিতৃক‚লের সদস্য হিসেবে।
খুব স্পষ্টতই, নুয়ের সমাজের বিয়ের এ দুই ধরন, বিয়ের সর্বজনীন সংজ্ঞা দাঁড় করানোর বহু প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ
করে তোলে। আবার বাঙ্গালী হিসেবে আমাদের প্রচলিত বিশ্বাস, ধ্যান-ধারণাকেও ধাক্কা দেয়। একমাত্র বিয়ের
সম্পর্ক নির্ধারণ করে দেবে সমাজের চোখে সন্তান বৈধ হিসেবে স্বীকৃত হবে কিনা Ñ এই ধারণা নুয়ের সমাজের
ভূত বিবাহের ক্ষেত্রে স্পষ্টতই খাটে না। বিয়ের মানে বৈধ সন্তান Ñ বিষয়টাকে নুয়ের জনগোষ্ঠী এভাবে দেখেন
না। কারণ, সে সমাজে, একজন বিধবা নারীর পুনরায় বিয়ে করার পরও তার পরবর্তী স্বামীর ঔরসজাত সন্তান
তার পূর্বতন/মৃত স্বামীর বংশধর। আরও উল্লেখ্যযোগ্য, মৃত স্বামীর বৈধ বংশধর হিসেবে স্বীকৃতি পাবার জন্য
সন্তানের মার বিয়ে করা বাঞ্ছনীয় নয়। বিয়ে না করে তিনি যদি প্রেমিকের সাহায্যে সন্তান লাভ করেন, সেই
সন্তানও মৃত স্বামীর বৈধ সন্তান হিসেবে স্বীকৃত।
নুয়ের সমাজের নারী-নারী বিবাহের যে প্রচলন রয়েছে Ñ সেখানে তিনটি বিষয় লক্ষ্যণীয়: প্রথমত, একজন
নারী এবং একজন পুরুষ নয়, বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হচ্ছেন দুইজন নারী। এখানে উল্লেখ করা জরুরী যে,
বর্তমানে পত্র-পত্রিকায় “সমকামী” সম্পর্ক বলতে যা বোঝানো হয়ে থাকে, এটা কিন্তু তা নয়। একই লিঙ্গের
মাঝে কামনার সম্পকর্কে সমকামিতা হিসেবে অভিহিত করা হয়। সমকামিতার দরুন কিন্তু দুই নুয়ের নারী
বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হচ্ছে না। দ্বিতীয়ত, পিতৃতান্ত্রিক দৃষ্টিতে ধরে নেয়া হয় পিতৃসূত্রীয় ব্যবস্থায় শুধুমাত্র
পুরুষের মাধ্যমেই বংশ বৃদ্ধি হয়। নারীর ভূমিকা এক্ষেত্রে নিষ্ক্রিয় কিংবা গৌণ। কিন্তু নুয়েরদের বিয়ের এই
প্রথা এ ধরনের পুরুষালী ধারণাকে ধাক্কা দেয়। নুয়েরদের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে যে, নারী-নারী বিবাহ বন্ধন
স্থাপনের মাধ্যমে পিতৃক‚লের সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তৃতীয়ত, নুয়েরদের বিবাহ প্রথার সাথে গুডএনাফের
সংজ্ঞা খাপ খায় না। ভূত বিবাহ প্রথা অথবা নারী-নারী বিবাহ প্রথা, কোনটার ক্ষেত্রেই বলা সম্ভব নয় যে
বিয়ের অর্থ হচ্ছে নারীর যৌন ক্ষমতার উপর কারও অধিকার প্রতিষ্ঠা। একজন বিধবা নুয়ের নারী বিয়ে না
করেও প্রেমিক গ্রহণ করতে পারেন। সেটা সামাজিকভাবে স্বীকৃত। নুয়েরদের নারী-নারী বিবাহের ক্ষেত্রেও
দেখা যায়, নারীর যৌনতায় অধিকার প্রতিষ্ঠা এ ধরনের বিবাহ প্রথার প্রধান কার্য বা ভঁহপঃরড়হ না।
ঠিক একইভাবে, ভারতের মাতৃতান্ত্রিক নায়ার সমাজের বিবাহ প্রথা বিশ্বজনীন সংজ্ঞা দাঁড় করানোর প্রচেষ্টাকে
সংকটাপন্ন করে তোলে। একজন নায়ার মেয়েকে একজন পুরুষের সাথে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে দেয়া হয় কিন্তু
বিয়ের পর মেয়েটি তার স্বামীর সাথে বসবাস করে না, সে তার মাতৃক‚লেই থেকে যায়। মেয়েটি চাইলে
প্রেমিক গ্রহণ করতে পারেন। সন্তান জন্মালে, সেই সন্তান মায়ের আনুষ্ঠানিক স্বামীর বংশের নয়, অথবা মায়ের
প্রেমিকের বংশেরও নয় কিংবা নিজের প্রেমিকের বংশেরও নয়। সন্তানটি হয় নিজ মায়ের বংশের সদস্য।
এ সকল কারণে নৃবিজ্ঞানী এডমান্ড লীচ্ বিয়ের বিশ্বজনীন সংজ্ঞার সমালোচনা করছেন। যেমন ধরুন, এ
ধরনের সংজ্ঞা: “গধৎৎরধমব রং ধ ঁহরড়হ নবঃবিবহ ধ সধহ ধহফ ধ ড়িসধহ ংঁপয ঃযধঃ পযরষফৎবহ নড়ৎহ
ঃড় ঃযব ড়িসধহ ধৎব ঃযব ৎবপড়মহরুবফ ষবমরঃরসধঃব ড়ভভংঢ়ৎরহম ড়ভ নড়ঃয ঢ়ধৎঃহবৎং.” (বিয়ে হচ্ছে একজন
নারী এবং একজন পুরুষের মিলন। এই মিলনের ফলে যে সকল সন্তান জন্ম লাভ করে, তারা দুইজনেরই
[স্বামী এবং স্ত্রী] বৈধ সন্তান হিসেবে সামাজিক স্বীকৃতি লাভ করে)। লীচ প্রশ্ন তুলেছেন: শুধু মাত্র একটি
গুণাবলী বা বৈশিষ্ট্যের সাহায্যে কি পৃথিবীর সকল বিয়ের অর্থ, কিংবা কার্য, আদৌ বোঝা সম্ভব? উদ্ধৃত
সংজ্ঞায় স্পষ্টতই গুরুত্বারোপ করা হয়েছে (আবারও) সন্তানের বৈধতা Ñ এই একটি মাত্র বৈশিষ্ট্যের উপর।
পক্ষান্তরে লীচ প্রস্তাব করছেন যে, বিয়ের সম্পর্ক স্থাপনকে আমরা দেখতে পারি দুই পক্ষের মাঝে নির্দিষ্ট কিছু
“অধিকার গুচ্ছ” (পষধংংবং ড়ভ ৎরমযঃ) তৈরি হওয়া হিসেবে। এই অধিকার গুচ্ছের মধ্যে রয়েছে একজন পুরুষ
(পিতা) অথবা নারীর (মাতা) সন্তানের বৈধতা প্রতিষ্ঠা, রয়েছে বিবাহ সঙ্গীর (স্বামী কিংবা স্ত্রী) যৌন ক্ষমতার
উপর অধিকার প্রতিষ্ঠা। রয়েছে গৃহী (ফড়সবংঃরপ) কিংবা শ্রম সেবার (ষধনড়ঁৎ ংবৎারপবং) উপর অধিকার
সৃষ্টি। এই অধিকার গুচ্ছ হতে পারে যৌথ ভাÐার প্রতিষ্ঠা সংক্রান্ত, অথবা বিবাহ সঙ্গীর Ñ তার মানে স্বামীর
ক্ষেত্রে স্ত্রীর আর স্ত্রীর ক্ষেত্রে স্বামীর Ñ সম্পত্তির উপর অধিকার প্রতিষ্ঠা। আবার এমনও হতে পারে যে বিয়ের
সম্পর্কের অর্থ হচ্ছে শুধু স্বামী নয়, স্বামীর ভাইদের সাথেও বিবাহের সম্পর্কে আবদ্ধ হওয়া। লীচ আরও
বলছেন, এই তালিকা কোন ভাবেই পূর্ণাঙ্গ নয়। হয়তো বা গবেষণা চলাকালীন অবস্থায় নৃবিজ্ঞানী বুঝবেন যে,
নির্দিষ্ট কোন সমাজে বিয়ের অর্থ হচ্ছে অন্য কোন কার্য সম্পাদন। লীচ আরও বলেন, কোন একটি নির্দিষ্ট
বিয়ের মানে বৈধ সন্তান Ñ
বিষয়টাকে নুয়ের জনগোষ্ঠী
এভাবে দেখেন না।
ভূত বিবাহ প্রথা অথবা নারীনারী বিবাহ প্রথা, কোনটার
ক্ষেত্রেই বলা সম্ভব নয় যে
বিয়ের অর্থ হচ্ছে নারীর যৌন
ক্ষমতার উপর কারও অধিকার
প্রতিষ্ঠা।
সমাজে সকল বৈশিষ্ট্য যে একই সাথে বিদ্যমান থাকবে, তাও নয়। নির্দিষ্ট কোন সমাজে নৃবিজ্ঞানী একটি
কিংবা একাধিক অধিকার গুচ্ছ পাবেন। পরিশেষে তিনি বলছেন,“বিয়ে বলতে যে প্রতিষ্ঠানকে বোঝানো হয়ে
থাকে, সকল সমাজে এর একই ধরনের সামাজিক কিংবা আইনী আনুষঙ্গিক ব্যাপার-স্যাপার থাকবে, তা কিন্তু
নয়”। লীচের পরামর্শ হচ্ছে, কোন নির্দিষ্ট সমাজে বিয়ের সম্পর্ক সমাজের অপরাপর সম্পর্কের সাথে কিভাবে
সম্পর্কিত তা উদ্ঘাটন করা।
এ অব্দি আলোচনা হয়েছে বিয়ের সর্বজনীন সংজ্ঞা দাঁড় করানোর সমস্যা নিয়ে। মূল বক্তব্য হচ্ছে এ পর্যন্ত
নৃবিজ্ঞানীদের যাবতীয় চেষ্টা কম বেশি ব্যর্থ হয়েছে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ভিন্নতার কারণে। বিয়ের অর্থবহ
এবং সকল স্থান-কালের জন্য প্রযোজ্য সংজ্ঞা দাঁড় করাতে গিয়ে নৃবিজ্ঞানীরা উপলব্ধি করেছেন, এমন কোন
“কার্য” নেই যা জোর দিয়ে বলা যাবে সকল সমাজের, সকল সময়ের বিয়ের ক্ষেত্রেই সত্য। এ কারণেই
সা¤প্রতিককালের নৃবিজ্ঞানীরা সর্বজনীন সংজ্ঞা দাঁড় করানোর প্রচেষ্টা বাদ দিয়ে কোন একটি নির্দিষ্ট সমাজে,
বিশেষ কোন সময়কালে বিয়ের কি ব্যবস্থা বিদ্যমান, সেটা বোঝার উপরই গুরুত্ব দিচ্ছেন।
বিয়ে হচ্ছে একটি ইতিহাস-নির্দিষ্ট সম্পর্ক
৩ নম্বর ইউনিটের ৩ নম্বর পাঠে আপনি পরিচিত হয়েছেন পারিবারিক সম্পর্ক হচ্ছে ইতিহাস-নির্দিষ্ট - এই
তাত্তি¡ক প্রস্তাবনার আলোকে সংগঠিত সা¤প্রতিককালের কাজের ধারার সাথে। আপনি এও জেনেছেন যে,
ইদানিং কালে নৃবিজ্ঞানে ইতিহাস-নির্দিষ্ট কাজের উপর গুরুত্বারোপ করা হচ্ছে। পুনরাবৃত্তিমূলক হলেও
বিষয়টি আবারও উল্লেখ করছি, বর্তমানের ইতিহাস-নির্দিষ্টতার ধারণা, উনবিংশ শতকের বিবর্তনবাদীদের
ধারণা হতে ভিন্ন। তারা ধরে নিয়েছিলেন যে একটি রৈখিক বিশ্বব্যাপী ইতিহাস রচনা সম্ভব। বিবর্তনবাদী চিন্তা
যে বিশেষ সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছে সেগুলো আপনি ইতোমধ্যেই ৩ নম্বর ইউনিটের ২ নম্বর পাঠে
জেনেছেন। হাল আমলের পারিবারিক সম্পর্ক প্রসঙ্গে যে ইতিহাস-নির্দিষ্ট গবেষণা কাজ হচ্ছে, তার একটি
শক্তিশালী উদাহরণ আমরা পাই লিওনর ডেভিডফ এবং ক্যাথরিন হলের কাজে। এই দুই ইংরেজ নারীবাদীর
লেখা ফ্যামিলি ফরচুনস্: মেন এ্যান্ড উইমেন অফ দি ইংলিশ মিডেল ক্লাস, ১৭৮০-১৮৫০ নামক গ্রন্থে। বইটি
বহু মহলে একটি দিক-নির্দেশনাকারী কাজ হিসেবে নন্দিত হয়েছে। যদিও তাঁরা দুইজন ইতিহাসবিদ, তাঁদের
গবেষণা কাজ বহু নারীবাদী নৃবিজ্ঞানীদের উদ্বুদ্ধ করেছে (উদাহরণস্বরূপ, হিলারী স্ট্যান্ডিং, যার কাজ কেস
স্টাডি আকারে আলোচিত হয়েছে ৩ নম্বর ইউনিটের ৩ নম্বর পাঠে)। খোদ নৃবিজ্ঞানে ইদানিং কালে
ইতিহাসের প্রতি ঝুঁকে পড়ার প্রবণতা তৈরি হয়েছে। এই প্রেক্ষিতে তাঁদের কাজের প্রতি নৃবিজ্ঞানীদের
আগ্রহের জন্ম হয়েছে। এই পাঠের বাকী অংশে রয়েছে দুটি কেস স্টাডি। কেস স্টাডি দুটি তৈরি করা হয়েছে
ডেভিডফ এবং হলের ফ্যামিলি ফরচুনস্, এবং ক্যাথরিন হলের লিখিত হোওয়াইট, মেইল এ্যান্ড মিডেল
ক্লাস। এক্সপে- ারেশানস্ ইন ফেমিনিজম এ্যান্ড হিস্টরি, এ দুটির ভিত্তিতে। প্রথম কেস স্টাডির প্রধান বিষয়
হচ্ছে, ইংল্যান্ডের বুর্জোয়া শ্রেণীর লিঙ্গায়িত রূপ এবং কিভাবে ইভানজেলিকেল (ঊাধহমবষরপধষ) ধর্মীয়
মতবাদ এবং আন্দোলন বুর্জোয়া নারী-সত্তা গঠনে কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে। দ্বিতীয় কেস স্টাডির বিষয়
হচ্ছে পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় নারীর ‘গৃহিণী’ রূপে আবির্ভাব। ক্যাথরিন হল্ তাঁর বইয়ের একটি প্রবন্ধে গৃহিণীর
ইতিহাস উদ্ঘাটন করেছেন এবং এই কেস স্টাডি তার উপর ভিত্তি করে রচিত হয়েছে।
ডেভিডফ এবং হলের একটি কেন্দ্রীয় তাত্তি¡ক প্রস্তাবনা হচ্ছে, শ্রেণীর গঠন লিঙ্গ-নিরপেক্ষ নয়। লিঙ্গ হচ্ছে
সামাজিক সংগঠনের একটি মূলনীতি। এই মূলনীতির ভিত্তি হচ্ছে যৌন পার্থক্য (ংবীঁধষ ফরভভবৎবহপব), এবং
এটি সামাজিকভাবে সংগঠিত। অর্থনীতি, রাজনীতি, সমাজ, মতাদর্শ যৌন পার্থক্যকে নির্মাণ করে; একে
প্রতিষ্ঠিত করে। এ মূলনীতি সামাজিক এবং ঐতিহাসিক, এটি ঈশ্বর বা প্রকৃতি প্রদত্ত নয়। ডেভিডফ এবং হল্
বলেন, পুঁজিবাদী ব্যবস্থার উৎপত্তি এবং স¤প্রসারণের প্রক্রিয়া ইংল্যান্ডের পূর্বতন (সামন্ততান্ত্রিক) লিঙ্গীয়
পার্থক্যকে পুনর্গঠিত করে। শিল্প বিকাশের প্রক্রিয়ায় লিঙ্গীয় ভিন্নতার নতুন অর্থ তৈরি হয়: নারীত্বের অর্থ
নির্মিত হয় “গৃহী” এবং “নির্ভরশীল” হিসেবে; কল-কারখানার মালিক হিসেবে পুরুষ নির্মিত হন “কর্তা”,
এবং নির্ভরশীল নারীর (ও তাদের সন্তানদের) ‘রক্ষক’ ও ‘প্রতিপালক’ হিসেবে। নারী এবং পুরুষের সামাজিক
ভূমিকার পুনঃসংজ্ঞায়ন ইংরেজ সমাজে বিয়ের অর্থ ও গুরুত্বকে পাল্টে দেয়। একই সাথে বিয়ের অর্থ, নারীত্ব
ও পুরুষত্বের ধারণাকে মৌলিকভাবে বদলে দেয়। এই পরিবর্তনগুলো প্রথমে বুর্জোয়া শ্রেণীতে ঘটে; পরবর্তী
পর্যায়ে, বুর্জোয়া শ্রেণীর শক্তিমত্তা বৃদ্ধির সাথে সাথে, বুর্জোয়া পারিবারিক মতাদর্শ এবং অনুশীলন সমগ্র
সমাজে বিস্তৃত হয়ে পড়ে। বুর্জোয়া পারিবারিক জীবন সমাজের মানদন্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।
লীচের পরামর্শ হচ্ছে, কোন
নির্দিষ্ট সমাজে বিয়ের সম্পর্ক
সমাজের অপরাপর সম্পর্কের
সাথে কিভাবে সম্পর্কিত তা
উদ্ঘাটন করা।
ডেভিডফ এবং হলের একটি
কেন্দ্রীয় তাত্তি¡ক প্রস্তাবনা হচ্ছে,
শ্রেণীর গঠন লিঙ্গ-নিরপেক্ষ
নয়। লিঙ্গ হচ্ছে সামাজিক
সংগঠনের একটি মূলনীতি। এই
মূলনীতির ভিত্তি হচ্ছে যৌন
পার্থক্য (ংবীঁধষ
ফরভভবৎবহপব), এবং এটি
সামাজিকভাবে সংগঠিত।
বর্তমানের ইতিহাস-নির্দিষ্টতার
ধারণা, উনবিংশ শতকের
বিবর্তনবাদীদের ধারণা হতে
ভিন্ন।
কেস স্টাডি : ইভানজেলিকেলবাদ এবং নারীর গৃহী-সত্তা নির্মাণ১
নারী এবং পুরুষের পৃথকীকরণ ইংল্যান্ডের নব্য বিকাশমান বুর্জোয়া শ্রেণীর জীবনযাত্রার (পঁষঃঁৎব) কেন্দ্রে
ছিল। সূচনার মুহূর্ত হতেই শ্রেণী ছিল লিঙ্গায়িত। বুর্জোয়া শ্রেণীর “পুরুষ’ এবং “নারী”র পার্থক্য সুনির্দিষ্টভাবে
রচিত হয়। নারীত্বের অর্থ কি Ñ তার সামাজিক ভূমিকা কি হওয়া উচিত, নারী-পুরুষের আদর্শ সম্পর্ক কি
হওয়া উচিত, নারী কি করলে বা কি ভাবলে নারীত্বের অবমাননা ঘটে, কোন সামাজিক ভূমিকা পালন হচ্ছে
তার নিয়তি Ñ এসব প্রসঙ্গকে কেন্দ্র করে ইংল্যান্ডে ১৭৮০-১৮৩০ সময়কালে, বিস্তর তর্ক-বিতর্ক হয়। এই
তর্ক-বিতর্কে বুদ্ধিজীবী এবং সাধারণ মানুষ, নারী এবং পুরুষ, গীর্জার পুরোহিত এবং সাধারণ খ্রিস্টান
উপাসক, ডাক্তার-মোক্তার, লেখক Ñ এঁদের অংশগ্রহণ ছিল। ঔচিত্যের ধারণা প্রকাশিত হয় বই আকারে,
পুস্তিকা আকারে, পত্রিকার সম্পাদকের কাছে লেখা চিঠিতে, ব্যক্তিগত রোজ-নামচায়, গল্প-উপন্যাসে, ছড়ায়
ও কবিতায়। ঔচিত্যের ধারণা সভা-সমিতিতে, পাড়া-ভিত্তিক অনুষ্ঠানে, গীর্জার যাজকের বেদী হতে,
বিভিন্নভাবে, নানান সময়ে উচ্চারিত হয়। ডেভিডফ এবং হলের পর্যবেক্ষণ হচ্ছে যে, নারীত্ব কি Ñ সেটির
সংজ্ঞা ১৮৩০-১৮৪০এর মধ্যে ইংরেজ সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়।
নতুন (বুর্জোয়া) নারীত্বের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয় গৃহ এবং পরিবারকে কেন্দ্র করে। নারীর গৃহী সত্তার
উপর জোর দেয়া হয়; এই সংজ্ঞা অনুসারে, নারী হচ্ছে প্রধানত “স্ত্রী” এবং “মা”। ডেভিডফ এবং হল (এবং
আরও বহু ইতিহাসবিদদের) অভিমত হল, এই সংজ্ঞায়নে ইভানজেলিকেল ধর্মীয় আন্দোলন
(ইভানজেলিকেলবাদ খ্রিস্টান ধর্মের একটি উপধারা) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ১৭৮০ হতে ১৮৩০, পঞ্চাশ
বছরের এ সময়কালে, ইংল্যান্ডের সমাজে মৌলিক এবং গভীর রূপান্তর ঘটছিল। ইংল্যান্ড রূপান্তরিত হচ্ছিল
একটি দাপুটে অভিজাত শ্রেণী এবং বাণিজ্য-ভিত্তিক পুঁজিবাদী সমাজ, যেখানে ভূমি হচ্ছে ক্ষমতার ভিত্তি সেটি
হতে একটি শিল্প-ভিত্তিক পুঁজিবাদী সমাজে, যেখানে বুর্জোয়া শ্রেণী হচ্ছে একচ্ছত্রভাবে অধিপতিশীল। এই
রূপান্তরনে ইভানজেলিকেল ধর্মীয় আন্দোলন মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করে। এই ধর্মীয় আন্দোলন
মানুষজনের প্রাত্যহিক আচার-আচরণ এবং নীতি-নৈতিকতার উপর গুরুত্ব আরোপ করে।
ইভানজেলিকেলদের দৃষ্টিতে, সংস্কার হতে হবে ভেতর থেকে। ১৭৯২ সালে ইংরেজ নারীবাদী মেরী
ওলস্টোনক্রাফটের এ ভিন্ডিকেশান অফ দ্য রাইটস অফ উইমেন বইটি প্রকাশিত হয়েছিল। বইটির প্রধান
বক্তব্য ছিল, নারীর নিকৃষ্টতা (রহভবৎরড়ৎ) প্রতিবেশের কারণে; এটি প্রকৃতি প্রদত্ত নয়। নারী সুযোগ বঞ্চিত।
বুর্জোয়া পুরুষ যে সুযোগ সুবিধা ভোগ করে Ñ শিক্ষার ক্ষেত্রে, রাজনৈতিক পরিসরে এবং আইনের দৃষ্টিতে Ñ
সেগুলো নারীকেও প্রদান করতে হবে। ওলস্টোনক্রাফটের বক্তব্যের সমালোচনা করেন ইভানজেলিকেলরা;
এই ধর্মীয় আন্দোলনে নারীরাও ছিলেন। তাঁদের প্রধান বক্তব্য ছিল; নারী এবং পুরুষ সমান নয়, তাদের
মধ্যকার ভিন্নতা প্রকৃতি-প্রদত্ত। নারীর অবশ্যই শিক্ষিত হতে হবে কিন্তু নারী-শিক্ষার লক্ষ্য-উদ্দেশ্য হচ্ছে ভাল
স্ত্রী এবং ভাল মা হওয়া, চাকরি-বাকরী করা বা বহির্জগতে প্রতিষ্ঠিত হওয়া নয়।
ইভানজেলিকেলবাদ “গৃহের ধর্ম” হিসেবে পরিচিত: ধর্ম প্রচারে গৃহ এবং পরিবারের গুরুত্ব অসীম। এই ধর্মীয়
দৃষ্টিকোণ থেকে, কেবলমাত্র গৃহ এবং পরিবারকে ঘিরেই সাচ্চা ধর্মীয় জীবন গড়ে উঠতে পারে। এই মতবাদ
অনুসারে, গৃহে নারী এবং পুরুষের পরিসর ভিন্ন। নারী স্বভাবজাতভাবে কমনীয়, নাজুক, সরল, সহজ এবং
সচ্চরিত্রের অধিকারী। এসকল কারণে, নারীর সতর্ক থাকা, আড়ালে থাকা এবং গৃহের আশ্রয়ে থাকা জরুরী।
অপর পক্ষে, পুরুষ হচ্ছে স্বভাবজাতভাবেই বহির্জাগতিক; তার আছে শক্তি, মাহাত্ম্য এবং মান-মর্যাদা।
ইভানজেলিকেলরা প্রত্যাশা করতেন যে, নারীর উপস্থিতি পুরুষের নীতি-নৈতিকতা বোধকে জাগ্রত রাখবে,
সম্ভব হলে সেটির উন্নতিও ঘটাবে। আরও প্রত্যাশা করতেন যে, নারীর এই বিশেষ গুণ এবং তার প্রভাব
কেবলমাত্র তার স্বামীতে সীমাবদ্ধ না থেকে সমগ্র জাতিকে প্রভাবিত করবে। সমগ্র জাতি সংস্কারের মাধ্যমে
নৈতিকভাবে উন্নত হয়ে উঠবে। কিছু ইভানজেলিকেল চিন্তুকেরা এ মতও প্রকাশ করেন যে, অল্প শিক্ষিত
হওয়ার কারণে, শিল্প-সাহিত্য সম্বন্ধে স্বল্প জ্ঞান থাকার কারণে, পুরুষের তুলনায় নারী বেশি ধর্মকেন্দ্রিক।
এবং, তাদের দৃষ্টিতে, ধর্মের প্রতি নারীর আগ্রহকে জিইয়ে রাখার জন্য তার গৃহকেন্দ্রিক জীবন জরুরী।
ইভানজেলিকেল দৃষ্টিতে, স্বামীর প্রতি আনুগত্য এবং স্বেচ্ছাপ্রদত্ত বশ্যতা হচ্ছে একজন স্ত্রীর আবশ্যিক
গুণাবলী। বিয়ের সম্পর্কে স্বামী হচ্ছেন কর্তা এবং স্ত্রী স্বাভাবিকভাবেই তার অধস্তন। স্ত্রীর কর্তব্য হচ্ছে

১ খবড়হড়ৎব উধারফড়ভভ ধহফ ঈধঃযবৎরহব ঐধষষ, ঋধসরষু ঋড়ৎঃঁহবং. গবহ ধহফ ডড়সবহ ড়ভ ঃযব
ঊহমষরংয গরফফষব ঈষধংং ১৭৮০-১৮৫০, খড়হফড়হ: ঐঁঃপযরহংড়হ, ঢ়ঢ়. ৮১-৯৫.
মেরী ওলস্টোনক্রাফটের অ
ঠরহফরপধঃরড়হ ড়ভ ঃযব
জরমযঃং ড়ভ ডড়সবহ বইটি
প্রকাশিত হয়েছিল। বইটির
প্রধান বক্তব্য ছিল, নারীর
নিকৃষ্টতা (রহভবৎরড়ৎ)
প্রতিবেশের কারণে; এটি প্রকৃতি
প্রদত্ত নয়।
নারীত্বের অর্থ কি Ñ তার
সামাজিক ভূমিকা কি হওয়া
উচিত, নারী-পুরুষের আদর্শ
সম্পর্ক কি হওয়া উচিত, নারী
কি করলে বা কি ভাবলে
নারীত্বের অবমাননা ঘটে, কোন
সামাজিক ভূমিকা পালন হচ্ছে
তার নিয়তি Ñ এসব প্রসঙ্গকে
কেন্দ্র করে ইংল্যান্ডে ১৭৮০-
১৮৩০ সময়কালে, বিস্তর তর্ক-
বিতর্ক হয়।
জলিকেল দৃষ্টিতে, স্বামীর
ানুগত্য এবং স্বেচ্ছাপ্রদত্ত
শ্যতা হচ্ছে একজন স্ত্রীর
আবশ্যিক গুণাবলী।
সংসারের দেখাশোনা করা, চাকর-বাকরদের দিয়ে গৃহশ্রম করিয়ে নেয়া, এবং সন্তানদের নৈতিক মূল্যবোধ
লালিত-পালিত করা। একজন আদর্শ স্ত্রী হচ্ছেন তার স্বামীর যোগ্য সহচর। নারীদের যেহেতু বিবেচনা করা
হত স্বামীর সাপেক্ষে, সে কারণে সে সময়ের নারী পরিচিত হয়ে ওঠেন, একজন “সাপেক্ষিক জীব” (ৎবষধঃরাব
পৎবধঃঁৎব) হিসেবে, নিজ গুণাবলীতে পরিচিত একটি স্বতন্ত্র সত্তা হিসেবে নয়। বুর্জোয়া শ্রেণী গঠনকালে
একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিয়ে অধিকতর শক্তিশালী হয় এবং নারীর সামাজিক মান-মর্যাদা
নিরূপণের প্রধান উপায় হয়ে দাঁড়ায়।
ডেভিডফ এবং হলের পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, ইভানজেলিকেল ধর্মীয় আন্দোলনের অবসান ঘটার পর ইংল্যান্ডে
একটি ধর্ম-নিরপেক্ষ সমাজ গড়ে উঠে ঠিকই, কিন্তু নারী-পুরুষের এই লিঙ্গীয় সত্তা সুপ্রতিষ্ঠিত হয়ে যাওয়ার
ফলে এ ধারণাসকল টিকে যায়।
উপরের কেস স্টাডি হতে স্পষ্ট যে, পুঁজিবাদী সমাজের আর্বিভাব নারী সত্তার মৌলিক পরিবর্তন ঘটায়,
নারীত্বকে নির্মাণ করে “স্ত্রী” এবং “মা” হিসেবে। এই নির্মাণের ভিত্তি হচ্ছে বিয়ে এবং এ কারণেই বিয়ে নারীর
জীবনে, তার ভরণপোষণের জন্য, তার পূর্ণতাবোধের জন্য, হয়ে ওঠে অপরিহার্য। নির্ভরশীল নারীর বিপক্ষে
পুরুষ প্রতিষ্ঠিত হয় দায়িত্বশীল হিসেবে, স্ত্রী ও সন্তানদের রক্ষক এবং প্রতিপালনকারী হিসেবে। বুর্জোয়া
শ্রেণীর এই পুরুষকেন্দ্রিকতা অধিকতর শক্তি সঞ্চার করে অন্য একটি, কিন্তু যুক্ত, বদলের মধ্য দিয়ে। প্রাক্-
পুঁজিবাদী সমাজে গৃহ এবং পরিবার ছিল উৎপাদনের স্থান। পুঁজিবাদী অর্থনীতিতে আবাসিক অঞ্চল হতে বহু
দূরে কল-কারখানাগুলোকে নির্মাণ করা হয়। অর্থাৎ, পুঁজিবাদের আর্বিভাবের ফলে গৃহ ও পরিবার উৎপাদনের
একক হিসেবে তার পূর্বতন গুরুত্ব হারায়। ‘গৃহী’ সত্তা এবং অধিকতর ‘নীতি-নৈতিকতাপূর্ণ’ লিঙ্গ হিসেবে
নারীত্বের নির্মাণ ‘অনুৎপাদনশীল’ ভূমিকার সাথে যুক্ত হয়। ফলে, একই সাথে বেশ কয়েকটি জিনিস ঘটে:
নারী হয়ে উঠে গৃহিণী, গৃহশ্রম অনুৎপাদনশীল কাজ হিসেবে বিবেচিত হওয়ার দরুন নারী হয়ে উঠে
অনুৎপাদক, স্বভাবজাতভাবে গৃহী হিসেবে বিবেচিত হওয়ার দরুন নারী বিয়ের উপর অধিক নির্ভরশীল হয়ে
পড়ে। ক্যাথরিন হলের বক্তব্য হচ্ছে, বিভিন্ন আইনী সংস্কার সত্তে¡ও, বিয়ে হচ্ছে সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং
আইনিভাবে একটি বৈষম্যপূর্ণ সম্পর্ক। এ কারণে, পুঁজিŸাদী সমাজে বিয়ে এবং পরিবার হচ্ছে নারী অধস্তনতা,
এবং পুরুষ আধিপত্যের ভিত্তি। নীচের কেস স্টাডিতে ক্যাথরিন হলের এই বক্তব্যের একটি অংশ Ñ গৃহিণীর
ইতিহাস Ñ উপস্থাপন করা হয়েছে।
কেস স্টাডি : ইংল্যান্ডের গৃহিণীর ইতিহাস২
পাশ্চাত্য সমাজে “গৃহিণী” (যড়ঁংবরিভব) শব্দের বিশেষ অর্থ রয়েছে। গৃহিণী মাত্রই নারী; গৃহিণী বলতে সাধারণভাবে
বোঝা হয়ে থাকে এমন একজন নারী যার কাজ হচ্ছে একটি গৃহকে সংগঠিত করা, এবং সেটিকে গৃহস্থালী
(যড়ঁংবযড়ষফ) রূপে বজায় রাখা। সংসারের ধোয়াধুয়ির কাজ, রান্না করা, পরিষ্কার করা এবং প্রাক্-স্কুলবয়সী
সন্তানদের সার্বক্ষণিক দেখাশোনা করা হচ্ছে একজন গৃহিণীর কাজ। সংক্ষেপে বললে, একজন গৃহিণীর দায়িত্ব হচ্ছে
তার স্বামী এবং সন্তানদের গৃহী সেবা প্রদান করা। গৃহিণীর কাজ হচ্ছে মজুরিবিহীন। পুঁজিবাদী সমাজে
পুরুষের/স্বামীর কাজ হচ্ছে মজুরি যুক্ত। আশা করা হয়ে থাকে যে, সেই মজুরি একজন শ্রমিক/চাকুরিজীবী, এবং
তার স্ত্রী ও সন্তানদের ভরণপোষণের খরচ মেটাবে। ক্যাথরিন হল্ বলেন, মজুরি ভিত্তিক অর্থনীতি গড়ে উঠার সাথে
সাথে “কাজ”এর সংজ্ঞা পাল্টে যায়। নতুন সংজ্ঞায়নে, কাজ হচ্ছে সেই শ্রম যেটির বিনিময়ে টাকা (বেতন, মজুরি,
পারিশ্রমিক-আকারে) পাওয়া যায়। যে সকল কাজ কোন অর্থ আয় করে না Ñ যেমন গৃহী শ্রম Ñ সেটিকে “কাজ”
হিসেবে বিবেচনা করা হয় না; সেটি, অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ হতে, মূল্যহীন কিংবা “অন-অর্থনৈতিক” হিসেবে
বিবেচিত হয়। গৃহিণীর কাজ পারিশ্রমিকবিহীন হওয়ার কারণে, এটির কোন সামাজিক মর্যাদা বা মূল্য নেই। হল
বলেন, ইংল্যান্ডের কোন গৃহিণীকে যদি জিজ্ঞেস করা হয় তিনি কি করেন, সাধারণত তার উত্তর হয় এরূপ, “ওহ,
আমি তো শুধুমাত্র গৃহিণী”। কিংবা, “না, আমি তো কোন কাজ করি না। আমি একজন গৃহিণী”। কিন্তু ইতিহাসের
দিকে তাকালে দেখা যায় যে, নারীর কাজ সবসময় এত মূল্যহীন ছিল না।
চৌদ্দ শতকের ইংল্যান্ডে গৃহিণীর অর্থ ছিল ভিন্ন। তখন, কৃষিভিত্তিক গৃহস্থালীতে এবং শহরেও, খোদ পরিবার ছিল
উৎপাদনের একটি একক (ঢ়ৎড়ফঁপঃরাব ঁহরঃ)। পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় উৎপাদনের স্থান হয়ে ওঠে কলকারখানা, মিল-

২ ঈধঃযবৎরহব ঐধষষ, "ঞযব ঐরংঃড়ৎু ড়ভ ঃযব ঐড়ঁংবরিভব," রহ ডযরঃব, গধষব ধহফ গরফফষব ঈষধংং.
ঊীঢ়ষড়ৎধঃরড়হং রহ ঋবসরহরংস ধহফ ঐরংঃড়ৎু, খড়হফড়হ: চড়ষরঃু চৎবংং, ১৯৯২, ঢ়ঢ়. ৪৩-৭১.
ক্যাথরিন হলের বক্তব্য হচ্ছে,
পুঁজিŸাদী সমাজে বিয়ে এবং
পরিবার হচ্ছে নারী অধস্তনতা,
এবং পুরুষ আধিপত্যের ভিত্তি।
চৌদ্দ শতকে একজন গৃহী কাজ এবং সন্তান পালন করতেন, এবং তখনও ছিল মজুরিবিহীহল্ জোর দিয়ে বলেনকর্ম-পরিসর এবং কাতোলিকা বুর্জোয়া নারীরপরিসীমিত ছিল না। অবহু নারী ভিন্ন ভিন্ন ধরকরতেন। মদ বানানেমূলের চাষ-বাস, শন কাজ, এবং দেশজ ঔষজ্ঞানের সাহায্যে পরিবসদস্যদেরশরীর-স্বাস্থ্য
ফ্যাক্টরি এবং অফিস। গৃহ এবং পরিবারের চৌহদ্দি থেকে ‘কাজ’ সরে যাওয়ার ফলে, এবং গৃহী কাজ ‘অনঅর্থনৈতিক’ হিসেবে সংজ্ঞায়িত হওয়ার ফলে, পরিবার এবং গৃহ হয়ে পড়ে আবেগ-অনুভূতি এবং নিরেট ভালবাসার
জায়গা, এবং বাজার থেকে কিনে আনা দ্রব্যাদি ভোগের জায়গা (রুটি-আলু, মাছ-মাংস, পোশাক-আশাক)। চৌদ্দ
শতকের প্রাক-শিল্পভিত্তিক পরিবার ছিল স্বনির্ভর এবং গৃহী কাজ বলতে বোঝাত নানান ধরনের কাজ। কাজের
পরিসীমা ছিল আরও ব্যাপকতর। সে সময়ের পরিবারে প্রতিটি ব্যক্তির শ্রম ছিল পরিবারের সামগ্রিক শ্রমের অংশ।
চৌদ্দ শতকে একজন গৃহিণী গৃহী কাজ এবং সন্তান লালন-পালন করতেন, এবং এই কাজ তখনও ছিল
মজুরিবিহীন। কিন্তু, হল্ জোর দিয়ে বলেন, তার কর্ম-পরিসর এবং কাজের তালিকা বুর্জোয়া নারীর মতন পরিসীমিত
ছিল না। অতীতে, বহু নারী ভিন্ন ভিন্ন ধরনের কাজ করতেন। মদ বানানো, ফল-মূলের চাষ-বাস, শন কাটার
কাজ, এবং দেশজ ঔষধি জ্ঞানের সাহায্যে পরিবারের সদস্যদের শরীর-স্বাস্থ্য পরিচর্যা Ñ এসব কাজ নারীর কাজ
হিসেবে বিবেচিত হত। লিঙ্গীয় শ্রম বিভাজন বিদ্যমান ছিল, কিন্তু এই বিভাজন ছিল আরও নমনীয়; পুরুষের শ্রম
ক্ষমতা নারীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল ঠিক যেমন নারীরটিও পুরুষের জন্য ছিল গুরুত্বপূর্ণ। উৎপাদনশীল কাজে একজন
নারীর অংশগ্রহণ তার স্বামীর উপর নির্ভর করত না; উৎপাদনশীল কাজের সাথে একজন গৃহিণী নারীর যুক্ততা, এবং
এতে অংশগ্রহণ, ছিল প্রত্যক্ষ। সচ্ছল কৃষক গৃহস্থালীর নারীরা নিজ গৃহে কাজ করতেন, গরীব নারীরা অভিজাত
পরিবার অথবা ধনী কৃষক পরিবারে কাজ করতেন, গৃহ ছিল একই সাথে কাজের এবং বসবাসের স্থান।
চিত্র ১ : ইংল্যান্ডের গৃহিনীর শ্রম
যান্ত্রিক উদ্ভাবনের কারণে কাপড় বোনার কাজ ধীরে-ধীরে গৃহ থেকে অপসারিত হয়। উপরে ইংল্যান্ডের ১৮ শতকের
একটি চিত্র।
সহৃ+ : গধৎারহ চবৎৎু, গুৎহধ ঈযধংব, ঔধসবং জ. ঔধপড়ন ধহফ ঞযবড়ফড়ৎব ঐ. ঠড়হ খধঁব, (১৯৯২)
ডবংঃবৎহ ঈরারষরুধঃরড়হ. ওফবধং, চড়ষরঃরপং ্ ঝড়পরবঃু,. ঋৎড়স ঃযব ১৪০০ং, ইড়ংঃড়হ : ঐড়ঁমযঃড়হ
গরভভষরহ ঈড়সঢ়ধহু, পব্ধ(া : ৪৮৪.
পুঁজিবাদের উৎপত্তি গৃহকে করে তোলে কেবলমাত্র বসবাসের স্থান; অফিস, কল-কারখানা থেকে ঘরে
ফেরা ক্লান্তশিল্পপতি/পেশাজীবী স্বামীর বিশ্রামের জায়গা। নারী তার উৎপাদনের ক্ষমতা হারায়, তার
ভূমিকা হয়ে উঠে স্বামীর বিশ্রাম ও আরাম-আয়েশ নিশ্চিত করা, এবং তাদের সন্তানদের আগামীদিনের
যথোপযুক্ত বুর্জোয়া শ্রেণীর সদস্য হিসেবে প্রশিক্ষিত করে তোলা।
এই পাঠের আলোচনা থেকে কয়েকটি বিষয় স্পষ্ট: প্রথমত, ইদানিংকালে নৃবিজ্ঞানীরা বিয়ের বিশ্বজনীন
রূপ উদঘাটনের প্রচেষ্টা বাদ দিয়ে এর ঐতিহাসিক নির্দিষ্টতার উপর গুরুত্বারোপ করছেন। দ্বিতীয়ত,
নৃবিজ্ঞানীরা একইসাথে বিয়েকে বৃহত্তর প্রক্রিয়া Ñ অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয়,
মতাদর্শিক Ñ হতে বিচ্ছিন্ন করে না দেখে, এদের আন্তঃসম্পর্ক উদঘাটনের উপর গুরুত্বারোপ করছেন।
উপরোক্ত দুটি কেস স্টাডি এই ধারার কাজের প্রতিনিধিত্ব করে।
সারাংশ
প্রায় একশ’ বছর ধরে নৃবিজ্ঞানীরা বিয়ের একটি বিশ্বজনীন সংজ্ঞা দাঁড় করানোর চেষ্টায় রত ছিলেন।
এই কাজে সমাজ বিজ্ঞানীরাও সহায়তা করেন। তাঁদের এই যৌথ প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। বিয়ের নির্যাস
হিসেবে তাঁরা যা কিছু চিহ্নিত করেছেন Ñ যেমন ধরুন, নারীর যৌনতা নিয়ন্ত্রণ, সন্তানদের বৈধতা প্রদান
Ñ তা পৃথিবীর কোন না কোন সমাজের ধ্যানধারণা এবং অনুশীলন দ্বারা প্রশ্নসাপেক্ষ হয়। ১৯৬০-এর
দশক হতে নৃবিজ্ঞানে ‘নির্দিষ্টতার’ উপর গুরুত্বারোপ করার প্রয়োজনীয়তা জোরালোভাবে অনুভূত হয়।
বৈশ্বিক ইতিহাস রচনা করার চাইতে, নির্দিষ্ট কোন সমাজের নির্দিষ্ট ইতিহাস রচনা করা অধিকতর
গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে উপলব্ধ হয়। সমাজতান্ত্রিক/মার্ক্সবাদীরা ঐতিহাসিক নির্দিষ্টতার সাথে সাথে পুঁজিবাদী
ব্যবস্থা এবং এর বিশ্বব্যাপী স¤প্রসারণ, কিভাবে পুঁজিবাদ ‘আকর’ পুঁজিবাদী দেশ হিসেবে বিবেচিত
দেশগুলোতে আমূল সামাজিক বদল ঘটিয়েছে, কিভাবে পুঁজিবাদ অপাশ্চাত্যের সমাজকে রূপান্তরিত
করেছে Ñ এসব প্রসঙ্গে মনোনিবেশ করেন। এই তাত্তি¡ক প্রেক্ষিতে, সমাজতান্ত্রিক নারীবাদীরা বিয়ের
প্রসঙ্গে লিঙ্গীয় এবং শ্রেণী সত্তা, এদের অন্তর্প্রবিষ্টতা, পুরুষের আধিপত্য এবং নারীর অধস্তনতা, এবং
সামগ্রিক ব্যবস্থার বদল (যেমন ধরুন, পুঁজিবাদের আর্বিভাব) Ñ এসব প্রসঙ্গকে কেন্দ্রে নিয়ে আসা
জরুরী মনে করেছেন।
সঠিক উত্তরের পাশে টিক () চিহ্ন দিন -
১। নিচের কোন সমাজে ‘ভুত বিবাহ’ (এযড়ংঃ গধৎৎরধমব) প্রচলিত ছিল?
ক. নায়ার খ. নুয়ের
গ. সামোয়া ঘ. দবু
২। মাতৃতান্ত্রিক নায়ার স¤প্রদায় বিশ্বের কোন দেশে দেখা যায়?
ক. ভারত খ. সোমালিয়া
গ. নাইজেরিয়া ঘ. ঘানা
৩। “পুঁজিবাদী সমাজে বিয়ে এবং পরিবার হচ্ছে নারী অধস্তনতা এবং পুরুষ আধিপত্যের ভিত্তি” -
উক্তিটি কার?
ক. ক্লিফোর্ড গিয়ার্টজ খ. মার্গারেট মিড
গ. তালাল আসাদ ঘ. ক্যাথরিন হল
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১। ভূত বিবাহ কী? কোন জনগোষ্ঠীর মধ্যে এ ধরনের বিয়ে প্রচলিত?
২। ইভানজেলিকেলবাদ কী?

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]