কৃষক আর্থব্যবস্থা বলতে স্বতন্ত্র কিছু বোঝায় কী?
বাংলাদেশের কৃষিক্ষেত্রে অর্থনৈতিক সম্পর্কের বৈশিষ্ট্য কী?


বিতর্কটার প্রধান জায়গা হচ্ছে কৃষক আর্থব্যবস্থা আসলেই স্বতন্ত্র একটা ব্যবস্থা কিনা। অনেকেই মনে
করেছেন কৃষকদের মধ্যে একেবারেই বিশিষ্ট ধরনের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা আছে, তাঁদের অর্থনৈতিক
কর্মকান্ড এবং চর্চা অন্যান্য ব্যবস্থা থেকে একেবারেই আলাদা। ফলে তাঁদের আর্থনীতিক কর্মকান্ডকে
একটা স্বতন্ত্র আর্থব্যবস্থা বলা প্রয়োজন। আবার অন্য দল শক্তিশালী যুক্তি দেখিয়েছেন কৃষক
আর্থব্যবস্থাকে একটা স্বতন্ত্র আর্থব্যবস্থা বলা যায় না। বিশেষভাবে বর্তমান কালে সারা পৃথিবীর কৃষক
বর্গএকটা সাধারণ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। এমন নয় যে তাঁদের মধ্যে অবস্থার কোন পার্থক্য নেই।
কিন্তু একটা অভিন্ন বাস্তবতা হচ্ছে পুঁজিবাদ। বর্তমান পৃথিবীর সকল অঞ্চলের কৃষকরাই কোন না কোন
ভাবে এই ব্যবস্থার অন্তর্গত। ফলে আর্থব্যবস্থাকে পুঁজিবাদী বা বাজার আর্থব্যবস্থা বলা প্রয়োজন।
এই বিতর্কটির একটি প্রেক্ষাপট আছে। আপনারা আগেই দেখেছেন: নৃবিজ্ঞানীদের অনেকেই প্রযুক্তি
এবং পরিবেশের ভিত্তিতে উৎপাদন ব্যবস্থার মধ্যে পার্থক্য করেছেন। কখনো কখনো এর নাম খাদ্য
সংগ্রহ কৌশল। এখানে নৃবিজ্ঞানীদের একটা ধারণা কাজ করেছে, তা হচ্ছে কোন একটা ব্যবস্থা অন্য
ব্যবস্থার চেয়ে প্রাচীন এবং প্রযুক্তির দিক থেকে নিকৃষ্ট। মোটামুটি ব্যাপারটা এরকম:
শিকারী-সংগ্রহকারী --> পশুপালন --> উদ্যানকৃষি --> নিবিড় কৃষি --> শিল্প
দেখা গেছে কৃষিভিত্তিক উৎপাদন ব্যবস্থা পৃথিবীতে একটা লম্বা সময় ধরে প্রচলিত আছে। বর্তমান শিল্প
ভিত্তিক উৎপাদনের যুগেও কৃষির গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ প্রথমত, শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামালের
একটা অন্যতম উৎস কৃষি। দ্বিতীয়ত, মানুষের খাদ্যের প্রধান উৎস এখনও কৃষি। ফলে তৃতীয় গুরুত্ব
নতুন করে নৃবিজ্ঞানীদের ভাবিয়ে তুলেছে।
আরেকটি প্রেক্ষাপট রয়েছে এই বিতর্কের। এই শতকে, বিশেষভাবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী কালে
কৃষক বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে বাজার ব্যবস্থার স¤প্রসারণ ঘটেছে। এই সময়কালে তৃতীয় বিশ্বের
সমাজগুলোতে কৃষিক্ষেত্রের বৈশিষ্ট্য প্রাথমিকভাবে নৃবিজ্ঞানী এবং অর্থনীতিবিদদের বিস্মিত করেছে। এই
বিষয়টাকে একটু ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। একদিকে আধুনিক প্রযুক্তির প্রভাবে এবং বাজারের মুনাফার
আশায় শিল্পোন্নত দেশগুলোতে কৃষির বিশাল বিশাল খামার গড়ে উঠেছে। অবশ্য এই প্রবণতাটি আরও
আগে থেকেই লক্ষ্য করা যাচ্ছে শিল্পভিত্তিক সমাজে। অন্যদিকে তৃতীয় বিশ্বের বহু সমাজে কৃষিক্ষেত্র
তখনও ক্ষুদ্রাকার আছে। অনেক চাষীই কোন রকমে নিজেদের জমিতে বছরের খোরাকী উৎপাদনের
চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এই বৈশিষ্ট্যকে বুঝবার জন্য অনেক নৃবিজ্ঞানী একে ঐ বিশেষ সমাজের প্রথা
কিংবা রীতি-নীতি হিসেবে উল্লেখ করেছেন। বাস্তবে বিষয়টা এত সহজ-সরল নয়। যাই হোক, তৃতীয়
বিশ্বের সমাজগুলোতে চলমান অর্থনৈতিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে কৃষকদের এই বৈশিষ্ট্যকে অনেকেরই বেমানান
মনে হয়েছে। ফলে কৃষকদের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডকে একটা স্বতন্ত্র আর্থব্যবস্থা ভাববার এটাও একটা
কারণ হিসেবে কাজ করেছে । যাঁরা মনে করেন কৃষক আর্থব্যবস্থা স্বতন্ত্র তাঁরা অনেকেই আর্থব্যবস্থাকে
মোটামুটি তিন ভাগে ভাগ করে থাকেন। সেগুলি হচ্ছে: আদিম বা “উপজাতীয়” আর্থব্যবস্থা
(ঢ়ৎরসরঃরাব/ঃৎরনধষ বপড়হড়সু), কৃষক আর্থব্যবস্থা (ঢ়বধংধহঃ বপড়হড়সু) এবং আধুনিক বা শিল্প
আর্থব্যবস্থা (সড়ফবৎহ/রহফঁংঃৎরধষ বপড়হড়সু)। কৃষক আর্থব্যবস্থাকে স্বতন্ত্র গুরুত্ব দিয়ে অধ্যয়নের
সুস্পষ্ট নজির থাকলেও নৃবিজ্ঞানের শুরুর দিকে কৃষকদের একটা মধ্যকালীন দশা হিসেবে দেখা হ’ত।
নৃবিজ্ঞানে দীর্ঘকাল ধরে কৃষক
আর্থব্যবস্থা নিয়ে ... বিতর্ক
চলেছে। বিতর্কটার প্রধান
জায়গা হচ্ছে কৃষক আর্থব্যবস্থা
আসলেই স্বতন্ত্র একটা ব্যবস্থা
কিনা। অনেকেই মনে করেছেন
কৃষকদের মধ্যে একেবারেই
বিশিষ্ট ধরনের অর্থনৈতিক
ব্যবস্থা আছে, তাঁদের
আর্থনীতিক কর্মকান্ড এবং চর্চা
অন্যান্য ব্যবস্থা থেকে
একেবারেই আলাদা। আবার
অন্য দল শক্তিশালী যুক্তি
দেখিয়েছেন কৃষক
আর্থব্যবস্থাকে একটা স্বতন্ত্র
আর্থব্যবস্থা বলা যায় না।
পরবর্তী কালে এই চিন্তা আর সমর্থন লাভ করেনি। অনেক তাত্তি¡ক কৃষক বলতে কেবলই ভূমি নির্ভর
কৃষিকাজের উপর গুরুত্ব দিয়েছেন। অন্যেরা আবার মনে করেছেন মৎস্যজীবী কিংবা গ্রামীণ
কারিগরদেরও এই স¤প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত করে দেখা প্রয়োজন। একটা ব্যাপারে অনেকেই একমত যে,
কৃষক সমাজ আর শহুরে সমাজের মধ্যে একটা ধারাবাহিক দ্ব›দ্ব রয়েছে। কৃষক সমাজ অধ্যয়নের ক্ষেত্রে
এই ধারণাকে কেন্দ্র করে অনেকেই এগিয়েছেন।
ফার্মার (ভধৎসবৎ) এবং পেজেন্ট (ঢ়বধংধহঃ)
বর্তমান পৃথিবীর কৃষকদের মধ্যকার ভিন্নতাকে বোঝানোর জন্য দুটো ধারণা বা প্রত্যয় ব্যবহার করা হয়
Ñ ফার্মার এবং পেজেন্ট। চলতি বাংলায় আমরা দুটোকেই কৃষক বলে থাকি। তবে ফার্মারদের বৈশিষ্ট্য
চিন্তা করলে বলা যায় বাংলাদেশে কোন ফার্মার নেই। ফার্মারের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, আগেই বলা হয়েছে,
এদের বিশাল পরিমাণ জমি আছে। এক জোতে জমির পরিমান কয়েক ’শ একর থেকে শুরু করে
হাজারের উপর একর হতে পারে। তাছাড়া জমি চাষের জন্য আধুনিক প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে
থাকেন। কৃষিক্ষেত্রে যা উৎপাদন করেন তাঁর পুরোটাই বাজারের জন্য। এর মানে কৃষিক্ষেত্র হতে
নিজেদের খোরাকীর জন্য কিছু উৎপাদন করতে হয় না। এতবড় কৃষিক্ষেত্র তার জন্য প্রয়োজনীয়ও নয়।
বরং তাঁরা উৎপাদন করেন বাজার থেকে মুনাফা অর্জনের জন্য। সেই দিক থেকে ফার্মারকে আমরা
কৃষি-খামার মালিক বলতে পারি। পক্ষান্তরে, পেজেন্ট বলতে বোঝানো হয়েছে মূলত যাঁরা ছোট জোতের
মালিক। নৃবিজ্ঞানীদের পর্যবেক্ষণ হচ্ছে পেজেন্ট বা কৃষকরা অনেক ক্ষেত্রেই বাজারে মুনাফা অর্জনের
জন্য উৎপাদন করে থাকেন না। তাঁরা উৎপাদন করে থাকেন জীবন ধারণের জন্য। অর্থাৎ বেঁচে থাকার
জন্য যে সকল খাদ্যশস্য ও অন্যান্য কৃষিজ উৎপাদন প্রয়োজন Ñ এই কৃষকেরা সেগুলোই উৎপাদন
করেন। এই সব যুক্তি থেকেই একটা ধারণা চালু রয়েছে। তা হচ্ছে স্বপোষী আর্থব্যবস্থা (ংঁনংরংঃবহপব
বপড়হড়সু)। কৃষক আর্থব্যবস্থা বলতে আলাদা করে যে ব্যবস্থা বলা হয়ে থাকে তা আসলে এটা। যে
সমস্তনৃবিজ্ঞানী এই বিষয়ে কাজ করেছেন তাঁদের অনেকেই মনে করেন কৃষক আর্থব্যবস্থা সহজে
পরিবর্তনীয় নয়।
এখানে একটা ব্যাপার আলাদা করে খেয়াল রাখা দরকার আছে। নৃবিজ্ঞানীরা যে সকল সমাজে কৃষক
আর্থব্যবস্থা বলতে স্বপোষী ব্যবস্থা আবিষ্কার করেছেন সেই সমাজগুলি ইউরোপের বাইরে ছিল। পক্ষান্তরে
কৃষি খামারের অস্তিত্ব দেখা গেছে ইউরোপে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ উত্তর আমেরিকায়। নৃবিজ্ঞানীদের
এই পর্যবেক্ষণের সময়কালকে তাই বিবেচনায় রাখা দরকার। পৃথিবী ব্যাপী বাজার ব্যবস্থার বিস্তার কি
ধরনের পরিবর্তন এনেছে তা নিয়ে ভাবতে হবে। বাজার ব্যবস্থায় মুনাফা অর্জন খুবই গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য।
মুনাফা অর্জনের ব্যাপারটা কেবল একটা স্থানীয় পর্যায়ে সীমিত থাকে না। এটা সারা দুনিয়া জুড়ে একটা
ব্যবস্থা। ফলে সেভাবে দেখতে হবে এই বিষয়টাকে। এই বিষয় নিয়ে আলোচনার আগে কৃষক আর্থধরন
(ঢ়বধংধহঃ বপড়ঃুঢ়বং) নিয়ে সামান্য আলোকপাত করা যাক।
কৃষক আর্থধরন
নৃবিজ্ঞানী এরিক উল্ফ কৃষক আর্থব্যবস্থার ধরন নিয়ে আলোচনা করেছেন। এরিক উলফের একটা
গুরুত্ব হচ্ছে তিনি অনেকের মত কৃষকদের অপরিবর্তনীয় মনে করেননি। তাছাড়া, তাঁর মতে কৃষকদের
দেখতে হবে বৃহত্তর সামাজিক সম্পর্কের মধ্যে। কৃষকদের বিচ্ছিন্ন করে নৃবিজ্ঞানের পাঠ কার্যকরী নয়
বলে তিনি ব্যাখ্যা করেছেন।
কৃষক আর্থধরন বা পেজেন্ট ইকোটাইপ ভাগ করতে গিয়ে এরিক উলফ প্রথমত দুইটি ভাগ করেছেন:
প্যালিওটেকনিক ইকোটাইপ (ঢ়ধষবড়ঃবপযহরপ বপড়ঃুঢ়ব) এবং নিওটেকনিক ইকোটাইপ
(হবড়ঃবপযহরপ বপড়ঃুঢ়ব)। এই দুটো ভাগের ভিত্তি হচ্ছে শ্রম ও প্রযুক্তি। প্রথমটিতে মানুষ ও
গবাদিপশুর শ্রম গুরুত্বপূর্ণ। দ্বিতীয়টিতে বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে নানান ধরনের জ্বালানী শক্তি এবং কৌশল
ব্যবহৃত হয়। প্যালিওটেকনিক ইকোটাইপের মধ্যে প্রধান পাঁচটি ধরন নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
সেগুলি হচ্ছে: দীর্ঘকাল ধরে জমি অনাবাদী রাখার পদ্ধতি বা সুইডেন (ংরিফফবহ) পদ্ধতি, জমি ভেদে
অনাবাদী রাখার পদ্ধতি, স্বল্পকালীন জমি অনাবাদী রাখার পদ্ধতি, পাকাপোক্ত চাষবাদ বা সেচ পদ্ধতি
(যুফৎধঁষরপ ংুংঃবস) এবং বাছাইকৃত জমিতে পাকাপোক্ত চাষাবাদ। এর মধ্যে সুইডেন, স্বল্পকালীন
এবং সেচ পদ্ধতিকে সাংস্কৃতিক বিবর্তনে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলা হয়েছে। নিওটেকনিক ইকোটাইপে
চারটি গুরুত্বপূর্ণ ধরন উল্লেখ করা হয়েছে: বিশিষ্ট উদ্যানকৃষি, পশু খামার, মিশ্র চাষবাস যেখানে একই
সঙ্গে পশু এবং শস্য বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করা হয়, গ্রীষ্ম অঞ্চলের বিশেষ কিছু শস্য উৎপাদন যেমন
কফি বা আখ ইত্যাদি। এরিক উলফ নানান সমাজের তথ্য-উপাত্ত দিয়ে তাঁর এই আলোচনা করেছেন।
এই আলোচনা লক্ষ্য করলে দেখা যায় এখানে ইকোটাইপ বা আর্থধরন দুটোর মধ্যকার পার্থক্যের ভিত্তি
কৃষক আর্থব্যবস্থাকে স্বতন্ত্র
গুরুত্ব দিয়ে অধ্যয়নের সুস্পষ্ট
নজির থাকলেও নৃবিজ্ঞানের
শুরুর দিকে কৃষকদের একটা
মধ্যকালীন দশা হিসেবে দেখা
হ’ত। পরবর্তী কালে এই চিন্তা
আর সমর্থন লাভ করেনি।
এরিক উলফের একটা গুরুত্ব
হচ্ছে তিনি অনেকের মত
কৃষকদের অপরিবর্তনীয় মনে
করেননি। তাছাড়া, তাঁর মতে
কৃষকদের দেখতে হবে বৃহত্তর
সামাজিক সম্পর্কের মধ্যে।
কৃষকদের একটা অংশ বেঁচে
থাকার প্রয়োজনীয় খাদ্যশস্য ও
অন্যান্য কৃষিজ উৎপাদন করেন
Ñ এই যুক্তি থেকেই একটা
ধারণা চালু রয়েছে। তা হচ্ছে
স্বপোষী আর্থব্যবস্থা। কৃষক
আর্থব্যবস্থা বলতে আলাদা করে
যে ব্যবস্থা বলা হয়ে থাকে তা
আসলে এটা।
শ্রম এবং প্রযুক্তি হলেও এখানে বাজারের একটা ভূমিকা আছে। দ্বিতীয় ইকোটাইপের একটা বৈশিষ্ট্য
হচ্ছে বাজারের জন্য উৎপাদন। এখানে অন্যান্য বৈশিষ্ট্যকেও আলোচনা করা হয়েছে। আঠারো শতকের
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির মধ্যে দ্বিতীয় ইকোটাইপের বিস্তার দেখা দেয়, এবং মূলত ইউরোপে। শিল্প বিল্লবের
সঙ্গে একই সময়কালে এই ধরনের ইকোটাইপ বি¯তৃত হয়। তাই এ সংক্রান্তআলোচনায় পৃথিবীর সমগ্র
কৃষিব্যবস্থার পরিস্থিতিকে একত্রে বিবেচনা করা সুবিধাজনক। কৃষিব্যবস্থা নিয়ে কাজে এরিক উলফ
দেখান যে, কৃষকরা যে উদ্বৃত্ত উৎপাদন করেন তা শাসকগোষ্ঠীর কাছে চলে যায়। শাসকগোষ্ঠী নিজের
প্রয়োজনে সেটা ব্যবহার করে এবং একই সঙ্গে অপরাপর কৃষি বহির্ভূত সামাজিক গোষ্ঠীর মধ্যে বিলি
বণ্টনও করে।
শিল্প এবং কৃষি : কাঁচামালের সম্পর্ক
আগেই বলেছি বাজার একটা জায়গায় সীমিত নয়। বিভিন্ন অঞ্চলে কৃষিকাজের ভিন্নতা বুঝতে গেলে
সারা পৃথিবীর বাজার ব্যবস্থাকে চিন্তা করতে হবে। কিছু নৃবিজ্ঞানী এবং সমাজবিজ্ঞানীর মতে শিল্প
বিল্লবের পর শিল্পের বৈশিষ্ট্য না আলোচনা করে কৃষক বা কৃষি নিয়ে আলোচনা করা সম্ভব নয়।
আপনারা জানেন যে শিল্প বিল্লব হয়েছে ইউরোপে। আপনারা এও জানেন যে, পৃথিবীর অধিকাংশ শিল্পকল-কারখানা স্থাপিত হয়েছে ইউরোপে এবং আমেরিকা মহাদেশে। কিন্তু শিল্পের জন্য কাঁচামাল
প্রয়োজন পড়ে। সাধারণভাবে শিল্প-কল-কারখানাতে খনিজ সম্পদ এবং কৃষিজ উৎপাদন কাঁচামাল
হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এখানে খনিজ দ্রব্যের আলোচনা প্রাসঙ্গিক নয়। কিন্তু প্রাথমিকভাবে, খনিজ দ্রব্য
বা কৃষিজ কাঁচামাল উভয়ই সরবরাহ হয়েছে গরিব দেশগুলো থেকে যেখানে শিল্পভিত্তিক উৎপাদন ব্যবস্থা
ছিল না। আজ আমরা নিউজিল্যান্ড কিংবা ডেনমার্কে গরুর খামারের কথা শুনে, অথবা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে
গমের বিপুল উৎপাদনের কথা জেনে মনে করতে পারি সেইসব দেশ বোধহয় কাঁচামালের জন্য কারো
উপর নির্ভর করে না। কিন্তু আসলে একেবারেই উল্টো। শিল্পের শুরুর সময়ে আফ্রিকা, এশিয়া এবং
দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের সমাজগুলো থেই কাঁচামাল গেছে শিল্পভিত্তিক দেশে।
ইউরোপের দেশগুলো বিভিন্ন প্রান্তের সমাজ দখল করে নিয়েছিল বলে কাঁচামাল সংগ্রহ করা সহজ
হয়েছে তাদের পক্ষে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়: ইউরোপে যখন বস্ত্র শিল্পের প্রসার ঘটায় তখন তার
জন্য প্রয়োজনীয় তুলা সরবরাহ হ’ত ইউরোপের বাইরে থেকে। একই কথা তামাক কিংবা চিনি এবং
আরও শিল্প নিয়ে বলা চলে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় কৃষিজ দ্রব্য উৎপাদন করানো
হ’ত জোর-জবরদস্তিকরে। আবার জোর-জবরদস্তিকরেই কোন একটা কিছুর চাষ বা উৎপাদন বন্ধ
করেও দেয়া হ’ত। বাংলা অঞ্চলে নীল চাষের কথা আপনারা জানেন। নীল চাষ করবার জন্য এখানকার
চাষীদের উপর বল প্রয়োগ করা হ’ত। চাষীরা তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলেন Ñ সে কথাও আপনাদের
জানা। তেমনি এখানকার বস্ত্র শিল্পকে ধ্বংস করবার জন্য মসলিন কারিগরদের উপর নির্যাতনের কথাও
জানা যায়। এই সকল ইতিহাস লক্ষ্য করলে বোঝা যায় যে, কৃষকরা নিজের ইচ্ছেতে নগদ বিক্রির
ফসল (পধংয পৎড়ঢ়) উৎপাদন করেন Ñ এই ধারণাটি সঠিক নয়। চাপের মধ্য দিয়ে কৃষকরা এই ধরনের
ফসল উৎপাদন করেছেন।
তাছাড়া পুঁজিবাদী সমাজে নানা কারণে নগদ মুদ্রার প্রয়োজন দেখা দেয়। সেক্ষেত্রেও কৃষক নগদ বিক্রির
ফসল উৎপাদন করতে পারেন। এর মানে এই নয় যে, কৃষক-কিষাণীরা তাঁদের গের¯তালির জন্য
প্রয়োজনীয় খোরাকী উৎপাদন করবার পর এই ধরনের ফসল উৎপাদন করেন। বরং, বেশির ভাগ
ক্ষেত্রেই তাঁরা নিজেদের জমি থেকে সংসারের খোরাকী যোগাড় করতে পারেন না। অর্থাৎ, কৃষিক্ষেত্রে
একটা সুনির্দিষ্ট ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে কৃষকদের উৎপাদনে বদল এসেছে। এখনও ইউরোপআমেরিকার বিশাল সব শিল্প দাঁড়িয়ে আছে গরিব বিশ্ব থেকে সরবরাহ করা কৃষিজ কাঁচামালের উপর।
এই সব শিল্পের মধ্যে রয়েছে ওষুধ, চা, কফি, কোকো, তামাক, বস্ত্র, রাবার, কাগজ, চামড়া, সামুদ্রিক
খাবার ইত্যাদি। কাঁচামালের জন্য ঐ সকল দেশ খুব সামান্য আয় করে। পক্ষান্তরে, শিল্পজাত দ্রব্যের
দাম চড়া হওয়ায় শিল্পভিত্তিক দেশগুলো দুইবার লাভ করে। অনেক গবেষকের মতে, এটা দরিদ্র
দেশগুলো দরিদ্র থেকে যাবার একটা কারণ। উপনিবেশের সময়কাল থেকেই এই বৈষম্য চলে আসছে।
কৃষক আর্থব্যবস্থা বুঝবার জন্য এই বিষয়গুলো খেয়াল রাখা দরকার। শিল্পের জন্য কাঁচামাল ছাড়াও
স্বচ্ছল শ্রেণীর ভোগের প্রয়োজনে কৃষকেরা ফসল উৎপাদন করে থাকেন। যেমন, বর্তমান বাংলাদেশে
শীতকালীন সব্জী, গ্রীষ্মকালের আম ইত্যাদি মূলত শহুরে স্বচ্ছল মানুষের জন্য উৎপাদিত হয়ে থাকে।
বর্তমান বাংলাদেশে কৃষকদের অর্থনৈতিক দশা
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শিল্পের জন্য
প্রয়োজনীয় কৃষিজ দ্রব্য
উৎপাদন করানো হ’ত জোরজবরদস্তি করে। আবার জোরজবরদস্তিকরেই কোন একটা
কিছুর চাষ বা উৎপাদন বন্ধ
করেও দেয়া হ’ত। বাংলা
অঞ্চলে নীল চাষের কথা
আপনারা জানেন।
শিল্প-কল-কারখানাতে খনিজ
সম্পদ এবং কৃষিজ উৎপাদন
কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
এখানে খনিজ দ্রব্যের আলোচনা
প্রাসঙ্গিক নয়। কিন্তু
প্রাথমিকভাবে, খনিজ দ্রব্য বা
কৃষিজ কাঁচামাল উভয়ই
সরবরাহ হয়েছে গরিব
দেশগুলো থেকে যেখানে
শিল্পভিত্তিক উৎপাদন ব্যবস্থা
ছিল না।
একদিকে, কৃষক নগদ বিক্রির জন্য ফসল উৎপাদন করছেন। সারা পৃথিবীতে এই পরিবর্তন কৃষকদের
কোন স্বনির্ভর ব্যবস্থা চালু রাখেনি। অন্যদিকে, বিশেষভাবে বাংলাদেশের কৃষকেরা উৎপাদনের বিনিময়ে
খুব সামান্য জিনিস যোগাড় করতে পারেন। তা দিয়ে কোনমতেই জীবন নির্বাহ করা সম্ভব হয় না।
বাংলাদেশের কৃষকদের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে গেলে প্রথমেই আসে নিঃস্বকরণ প্রক্রিয়ার প্রশ্ন। যে
প্রক্রিয়ায় কোন সামাজিক গোষ্ঠী ক্রমান্বয়ে সহায়-সম্পদহীন হয়ে পড়ে তাকে নিঃস্বকরণ প্রক্রিয়া বলে।
বাংলাদেশের কৃষকেরা খুব দ্রæত নিঃস্ব শ্রেণীতে রূপান্তরিত হয়ে পড়ছেন।
কৃষকদের নিয়ে যে সকল গবেষক কাজ করেছেন তাঁরা আর্থিক অবস্থা ও সম্পদ বিবেচনা করে কৃষকদের
মোটামুটি ৪ ভাগে ভাগ করেছেন। সেগুলি হচ্ছে: ধনী কৃষক, মধ্য কৃষক, গরিব বা ক্ষুদ্র কৃষক এবং
নিঃস্ব কৃষক। বুঝবার সুবিধার জন্য খোরাকী ধরে এগোনো যেতে পারে। ধনী কৃষকদের জমি থেকে যে
পরিমাণ ফসল বা আয় আসে তা সারা বছরের প্রয়োজন থেকে উদ্বৃত্ত। মধ্য কৃষকদেরও সারা বছরের
খোরাকী জমি থেকেই আসে। কেবল তাই নয় ধনী কৃষকদের আয়ের উৎস কেবলমাত্র জমি নয়। এদের
অনেকেরই নানারকম ব্যবসা বাণিজ্যে টাকা লগ্নী করা থাকে। অনেক ক্ষেত্রে সেসব ব্যবসা কৃষি
সংক্রান্ত। যেমন, সার, কিটনাশক কিংবা সেচের ব্যবসা। আবার অনেক ক্ষেত্রে অন্য নানান ধরনের
ব্যবসা। এর মধ্যে সুদে টাকা খাটানোর কাজও আছে। ফলে এই বর্গের কৃষকদের কৃষিক্ষেত্রে প্রাকৃতিক
বা অন্য কোন বিপর্যয়ের শিকার হতে হয় না। ধনী কৃষক কিংবা মধ্য কৃষকেরা জমিতে সরাসরি শ্রম
দেন না। বরং তাঁরা জমি বর্গা কিংবা বন্ধক দেন অন্যান্য কৃষকদের। সাধারণভাবে গরিব কৃষকেরা,
কখনো কখনো মধ্য কৃষকেরা এইসব জমি বর্গা বা বন্ধক নিয়ে থাকেন। গরিব কৃষকেরা জমিতে
নিজেদের শ্রম সরাসরি প্রয়োগ করে থাকেন। আর নিঃস্ব কৃষকদের এমন কোন পুঁজি হাতে থাকে না যা
দিয়ে তাঁরা জমি বর্গা নিতে পারেন। তাঁরা আসলে কৃষিক্ষেত্রে কামলা খাটেন। বাংলাদেশের সরকারী
নথিতে এবং অন্যান্য সাহিত্যে এঁদেরকে ভূমিহীন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। বাংলাদেশের
কৃষকদের মধ্যে সিংহভাগ এই বর্গের অন্তর্ভুক্ত। এঁদের সংখ্যা নিয়ে সরকারী নথি এবং গবেষকদের
হিসেবের মধ্যে বিরাট গরমিল আছে। কিন্তু এটা প্রায় পানির মত পরিষ্কার যে দিন দিন এই ধরনের
কৃষকের সংখ্যা বাড়ছে।
জমির কাজে শ্রম দেবার বিষয়টা ভাবলে কৃষকের সংজ্ঞা নিয়ে নতুন করে ভাবার সুযোগ তৈরি হয়।
জমির মালিক হলেই কি তাঁকে কৃষক বা চাষী বলা যাবে? বাংলাদেশের গ্রামে একটা কথা চালু আছে:
‘চাষা যে চাষ করে।’ সেই হিসেবে গরিব এবং নিঃস্ব বা ভূমিহীন কৃষকেরাই হচ্ছেন চাষী। দিন দিন এই
বর্গের কৃষকের সংখ্যাবৃদ্ধি থেকে এট বোঝা যায় যে কৃষিক্ষেত্রে যে সকল নীতিমালা চালু আছে তা
কৃষকের স্বার্থের বিপক্ষে। বাংলাদেশের গ্রামে কামলা খাটার কাজও এখন অনেক সীমিত। ফলে গ্রামের
ভূমিহীন কৃষকদের বিশাল দল প্রতিবছর শহরে পাড়ি জমায়। এইসব নিঃস্ব কৃষকেরা শহরে নানারকম
পেশায় নিয়োজিত থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করে চলেছেন। যেমন, রিক্শা চালানো, ছোট পান বিড়ির
দোকান চালানো, কাগজ কুড়ানো, নানাবিধ খুচরা কামলা খাটার কাজ, ইদানিং কালে নির্মাণ শ্রমিক
ইত্যাদি। শহরে এইসব পেশা খুবই অনিশ্চিত। কিন্তু নিরুপায় ভূমিহীনদের আর কোন অবলম্বন নেই।
বাংলাদেশের সরকারসমূহ সব সময় আশ্বাস দিয়ে এসেছে যে সরকারী খাস জমি ভূমিহীনদের মধ্যে বিলি
বণ্টন করে দেয়া হবে। কিন্তু বাস্তবে তেমন কোন কার্যকরী পদক্ষেপ কখনোই নেয়া হয়নি। উপরন্তু
এজমালি যে জলাশয়গুলি মৎস্যজীবীদের একটা ভরসার জায়গা ছিল, বাংলাদেশে গত কয় বছরে
সেগুলোও লীজ দেয়া হচ্ছে। ভূমিহীন কৃষকেরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় রুখে দাঁড়িয়েছেন।
পরবর্তী ইউনিটে (দেখুন ৭ নম্বর ইউনিটের ৪ নম্বর পাঠ) এ নিয়ে আলোকপাত করা হবে। যে সকল
ভূমিহীন গ্রামে আছেন তাঁদের মধ্যে এনজিও নানা ধরনের তৎপরতা চালাচ্ছে। এসব তৎপরতার মূল
উদ্দেশ্য হচ্ছে নিঃস্ব কৃষকদের শ্রমকে কাজে লাগিয়ে একটা অর্থনৈতিক কর্মকান্ড গড়ে তোলা। প্রধানত
কুটির শিল্প ভিত্তিক কাজ এতে হয়ে থাকে। উদাহরণ হিসেবে ব্র্যাক, আশা, প্রশিকা ইত্যাদি এনজিও’র
কথা বলা যায়। দেশী এ সকল এনজিও’র পাশাপাশি বিদেশী অনেক এনজিও এই একই কাজ চালাচ্ছে।
এঁদের সংখ্যা নিয়ে সরকারী নথি
এবং গবেষকদের হিসেবের
মধ্যে বিরাট গরমিল আছে।
কিন্তু এটা প্রায় পানির মত
পরিষ্কার যে দিন দিন এই
ধরনের কৃষকের সংখ্যা বাড়ছে।
বাংলাদেশের কৃষকদের
পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে
গেলে প্রথমেই আসে নিঃস্বকরণ
প্রক্রিয়ার প্রশ্ন।
সারাংশ
নৃবিজ্ঞানে এবং অন্যান্য সামাজিক বিজ্ঞানে কৃষক আর্থব্যবস্থা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। অর্থনৈতিক
নৃবিজ্ঞানের চর্চাকারীদের অনেকেই মনে করেন কৃষকদের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড স্বতন্ত্র। কিন্তু অন্যান্য
নৃবিজ্ঞানীরা মনে করেন, অপরাপর প্রক্রিয়া থেকে কেবলমাত্র কৃষকদের বিচ্ছিন্ন করে পাঠ করা সম্ভব
নয়। বিশেষভাবে, বর্তমান পুঁজিবাদী বিশ্বে কৃষকদের অস্তিত্ব অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পর্কিত Ñ
যেমন, রাষ্ট্র। সামাজিক ইতিহাসে যাঁদের উৎসাহ আছে তাঁরা যুক্তি দিয়েছেন যে, ইউরোপ এবং
আমেরিকায় শিল্প শক্তিশালী হবার পেছনে গরিব বিশ্বের কৃষির বিরাট ভূমিকা। সেটাকে গুরুত্ব না দিয়ে
কৃষি বিষয়ক অর্থনৈতিক কর্মকান্ড বোঝা সম্ভব নয়। বাংলাদেশের কৃষিক্ষেত্রে নিয়োজিত মানুষজন মূলত
ভুমিহীন এবং মজুর শ্রেণীর। নিঃস্ব হবার কারণে এর বড় অংশই খুচরা শ্রমিকের কাজ পাবার আশায়
শহরে পাড়ি দিচ্ছেন।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন
নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন
সঠিক উত্তরের পাশে টিক () চিহ্ন দিন -
১। কৃষক আর্থধরন বা পেজেন্ট ইকোটাইপ -কে নৃবিজ্ঞানী এরিক উলফ প্রথমতঃ কয়টি ভাগে ভাগ
করেছেন?
ক. ২টি খ. ৩টি
গ. ৪টি ঘ. ৫টি
২। সুইডেন (ংরিফফবহ) পদ্ধতি কী?
ক. জমি অনাবাদী রাখার পদ্ধতি খ. জমি ভেদে অনাবাদী রাখার পদ্ধতি
গ. স্বল্পকালীন জমি অনাবাদী রাখার পদ্ধতি ঘ. পাকাপোক্ত চাষাবাদ
৩। আঠারো শতকের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির মধ্যে দ্বিতীয় ইকোটাইপের বিস্তার দেখা দেয় মূলত: --
--------?
ক. এশিয়ায় খ. আমেরিকায়
গ. ইউরোপে ঘ. আফ্রিকায়
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১। কৃষক আর্থব্যবস্থা বলতে স্বতন্ত্র কিছু বোঝায় কী?
২। বাংলাদেশের কৃষিক্ষেত্রে অর্থনৈতিক সম্পর্কের বৈশিষ্ট্য কী?
রচনামূলক প্রশ্ন
১। ‘বর্তমান কালে কৃষকরা কৃষি মজুরে পরিণত হয়েছে’। আপনি কি তাই মনে করেন?
২। কৃষকদের উৎপাদন প্রক্রিয়ার সঙ্গে শিল্পোন্নত সমাজের সম্পর্ক ব্যাখ্যা করুন।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]