রাষ্ট্রব্যবস্থার আগে এবং বর্তমান সমাজের নানান পরিসরে ক্ষমতা সম্পর্ক
আমরা যখনই রাজনৈতিক ব্যবস্থার কথা বলি আমাদের মাথায় ভেসে আসে সংসদ, নির্বাচন, গণতন্ত্র,
রাজনৈতিক দল Ñ এমনি আরো অনেক কিছু। এর কারণ হ’ল আমরা ছোটবেলা থেকে এগুলোকেই
রাজনৈতিক ব্যবস্থা বলে জেনে এসেছি। আপনারা আগেই জেনেছেন যে নৃবিজ্ঞানীরা ইউরোপের বাইরে
গিয়ে নানান সমাজ দেখতে পান যেসব সমাজে ইউরোপের থেকে ভিন্ন ব্যবস্থা ছিল। তাঁরা লক্ষ্য করলেন
যে সামাজিক শৃঙ্খলা বজায় রাখবার জন্য সেখানকার ব্যবস্থা একেবারেই ভিন্ন। নিজ সমাজের বাইরে
অন্যান্য সমাজের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবার আলাদা স্বতন্ত্র ব্যবস্থাও সেসব সমাজে আছে। সেইসব
সমাজের অনেকগুলিই তখন রাষ্ট্রব্যবস্থার অধীন নয়। স্বাধীন এবং স্বতন্ত্র সে সব সমাজ। সাধারণভাবে
মনে হতে পারে যে এসব সমাজে রাজনৈতিক ব্যবস্থা বলে কিছু নেই। কারণ প্রচলিত রাষ্ট্রবিজ্ঞানের
জ্ঞানে রাজনীতি বলতে কেবল রাষ্ট্র সংক্রান্তকর্মকান্ড বোঝানো হয়ে থাকে। প্রচলিত রাষ্ট্রবিজ্ঞানের এই
জ্ঞান এতটাই শক্তিশালী যে বর্তমান কালের একজন সাধারণ মানুষ, যিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞান পড়েননি, তিনিও
এইভাবে চিন্তা করে থাকেন। নৃবিজ্ঞানীরা প্রথম ভাবতে চেষ্টা করলেন যে এ সকল সমাজেও রাজনৈতিক
ব্যবস্থা আছে। এই ভাবনা-চিন্তা করবার জন্য তাঁদের প্রথমেই রাজনীতির চিরাচরিত সংজ্ঞা বদলাবার
প্রয়োজন দেখা দিল। তাহলে গোড়াতেই প্রশ্ন চলে আসে কি বৈশিষ্ট্যকে রাজনৈতিক ব্যবস্থা বলা হবে।
নৃবিজ্ঞানীরা লক্ষ্য করলেন যে প্রচলিত রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু হচ্ছে আধুনিক রাষ্ট্রের উপাদানগুলি।
যেমন: সরকার Ñ এর দায়িত্ব ও গঠন, সংসদ, নির্বাচন, রাষ্ট্রের উদ্ভব, আইন বিভাগ ও বিচার বিভাগের
স্বাতন্ত্র্য, লোক প্রশাসন, আধুনিক রাষ্ট্রে জনগণের ভূমিকা ইত্যাদি। এটাও আমাদের মনে রাখতে হবে
যে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের লেখাপড়া অনেক প্রাচীন। ফলে সেই শাস্ত্রের ধারণা, সংজ্ঞা ও পদ্ধতি সব কিছুই যথেষ্ট
পরিচিত। প্রচলিত রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সেই সীমাতে অনেক সমাজের পদ্ধতি এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে।
রাজনৈতিক ব্যবস্থা বলতে নৃবিজ্ঞানীরা সম্পূর্ণ ভিন্ন কিছু বুঝিয়েছেন। কোন একটা সমাজ তাদের সমাজে
শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য, দ্ব›দ্ব-সংঘাত নিরসনের জন্য এবং অন্যান্য সমাজের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য
যে কর্মকান্ড এবং নীতিমালা থাকে তাকে সংক্ষেপে রাজনৈতিক ব্যবস্থা বলা যেতে পারে। এই চিন্তাধারা
থেকে রাজনৈতিক নৃবিজ্ঞানীরা তাঁদের চর্চা শুরু করেন। কিন্তু অতি তাড়াতাড়ি তাঁদের এই চর্চা খুব বড়
মাপের সমালোচনার মধ্যে পড়ে যায়। এই সমালোচনার মূল জায়গাটা হ’ল: কোন বিশেষ একটা শাখা
হিসেবে রাজনৈতিক প্রসঙ্গকে দেখা সংকুচিত দৃষ্টিভঙ্গি। বরং রাজনীতিকে সর্বব্যাপী বিষয় হিসেবে দেখা
দরকার। নিচে সেই প্রসঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে।
নৃবিজ্ঞানের অন্যান্য শাখার চাইতে রাজনৈতিক নৃবিজ্ঞান তুলনামূলকভাবে নতুন এবং ক্ষণস্থায়ী। নতুন
এই কারণে যে, নৃবিজ্ঞান প্রতিষ্ঠিত হবার বেশ পরে এই শাখার নাম শোনা গেছে। নির্দিষ্টভাবে বললে
’৪০-এর দশকে। আর ক্ষণস্থায়ী এই কারণে যে, সমালোচনার পর রাজনৈতিক নৃবিজ্ঞান ঠিক আর একটা
উপশাখা হিসেবে কাজ করছে না। বরং আরও ব্যাপক পরিসরে রাজনীতিকে বোঝার তাগিদ তৈরি
হয়েছে পরবর্তীকালে। সেই তাগিদ থেকে রাজনৈতিক নৃবিজ্ঞানকে একভাবে ভেঙ্গে নতুন ভাবে গড়ে
আপনারা আগেই জেনেছেন যে
নৃবিজ্ঞানীরা ইউরোপের বাইরে
গিয়ে নানান সমাজ দেখতে পান
যেসব সমাজে ইউরোপের থেকে
ভিন্ন ব্যবস্থা ছিল। তাঁরা লক্ষ্য
করলেন যে সামাজিক শৃঙ্খলা
বজায় রাখবার জন্য সেখানকার
ব্যবস্থা একেবারেই ভিন্ন। নিজ
সমাজের বাইরে অন্যান্য
সমাজের সঙ্গে যোগাযোগ
রাখবার আলাদা স্বতন্ত্র ব্যবস্থাও
সেসব সমাজে আছে।
তোলা হয়েছে। কারণ রাজনীতি কি সেটা বোঝার জন্য ’৬০-এর দশকের পরে দুনিয়া জুড়ে নতুন তর্ক
তৈরি হয়েছে। তবে এই সময়কালে (’৬০-এর দশকের পরবর্তী কালে) নৃবিজ্ঞানের পাশাপাশি অন্যান্য
শাস্ত্রও নৃবিজ্ঞানের উপলব্ধি নিয়ে কাজ করতে শুরু করে। সেটা আমাদের অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।
বিশেষভাবে রাজনীতি নিয়ে নৃবিজ্ঞানের ভাবনা-চিন্তার গুরুত্ব বোঝার জন্য এই বিষয়টা খেয়াল রাখা
খুবই জরুরী। অন্যান্য শাস্ত্রের মধ্যে আছে: ভূগোল, সামাজিক ইতিহাস, সাহিত্য তত্ত¡ ও সাহিত্য
সমালোচনা, শিল্পকলা ও এর ইতিহাস, পুরাশাস্ত্র, দর্শন, এবং অবশ্যই নারীবাদ। তাহলে বলা যায় যে,
বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক নৃবিজ্ঞানের বিষয়বস্তুর বদল ঘটেছে। সেই বদলকে লক্ষ্য করলেই মোটামুটি
রাজনৈতিক নৃবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু এবং এর মধ্যকার বিতর্ককে চেনা যাবে। এখানে রাজনৈতিক
নৃবিজ্ঞানের নতুন কালের বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনার আগেই প্রথম যুগের রাজনৈতিক নৃবিজ্ঞানের বৈশিষ্ট্য
ও পরিচয় নিয়ে সামান্য আলোকপাত করা প্রয়োজন।
প্রথম কালের রাজনৈতিক নৃবিজ্ঞান
আগের আলোচনা থেকেই আপনারা দুটো স্পষ্ট ব্যাপার জানেন। তা হ’ল: এক, প্রচলিত রাষ্ট্রবিজ্ঞানের
চিন্তা-ভাবনা থেকে ভিন্ন ভাবে নৃবিজ্ঞানীরা ভেবেছেন; দুই, ’৪০ Ñ’৬০ এর দশকে রাজনৈতিক
নৃবিজ্ঞানের মূল সময়কাল ছিল। কিন্তু পুরো বিষয়টা এত সহজ নয়। নৃবিজ্ঞানে রাজনৈতিক প্রসঙ্গ
এসেছে সেই শুরুর কাল থেকেই। সেই হিসেবে রাজনৈতিক নৃবিজ্ঞানের পর্বকালকে তিন ভাগে ভাগ
করা সুবিধাজনক। প্রথম কালে লুইস হেনরি মর্গান, হেনরি মেইন, এমনকি হার্বার্ট স্পেন্সার-এর নাম
চলে আসে। প্রথম কালের চর্চাকে অনেকেই রাজনৈতিক নৃবিজ্ঞান না বলে ‘রাজনীতির নৃবিজ্ঞান’ বলতে
চেয়েছেন। এর একটা কারণ হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকার তখন সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র কারণে এইসব
নৃবিজ্ঞানীদের অনেককেই একটা দায়িত্ব দিয়েছিলেন। সেটা হ’ল: আমেরিকান ইন্ডিয়ান বা রেড ইন্ডিয়ান
সমাজের উপর গবেষণা। এটা তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের একটা বিরাট মাথাব্যথা ছিল। কারণ এই
সব আদিবাসীদের জমি দখল করবার পর এবং তাঁদেরকে আধুনিক অস্ত্র-সস্ত্রের সাহায্যে বাগে আনার পর
মার্কিন সরকার তখন সংরক্ষণ ব্যবস্থা নিয়েছে। এই ব্যবস্থার মানে হচ্ছে কোন নির্দিষ্ট এলাকায় এবং
সরকারী পরিকল্পনার অধীনেই কেবল এই আদিবাসীদের জীবন যাপন করতে হবে। এরকম পরিকল্পনা
নেবার কারণে সরকারের জন্য খুব জরুরী হয়ে দেখা দিল শান্তি-শৃঙ্খলার প্রশ্ন এবং আদিবাসীদের
‘উন্নয়নের’র প্রশ্ন। ফলে মূলত আইন বিশেষজ্ঞদের দায়িত্ব দেয়া হ’ল যাতে তাঁরা আদিবাসী রেড
ইন্ডিয়ানদের নিজস্ব সংগঠন ও আইন-কানুন পর্যবেক্ষণ করেন এবং সরকারের সাথে আদিবাসীদের
বিভিন্ন ‘চুক্তি’ খতিয়ে দেখেন। এভাবে প্রথম পর্যায়ে যে সকল কাজ পাওয়া যায় তার সবগুলিই
আমেরিকান ইন্ডিয়ানদের উপর করা গবেষণা কাজ। এখানে আলাদা করে উলে- খ করা দরকার
মেইন-এর ‘এনশিয়েন্ট ল’ এবং মর্গান-এর ‘এনশিয়েন্ট সোসাইটি’ গ্রন্থের নাম। বিশেষভাবে মর্গানের নাম
গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই গবেষণা কাজ থেকে পরবর্তীতে নৃবিজ্ঞানে বিবর্তনবাদী চিন্তার ভিত্তি তৈরি হয়।
মর্গান দেখেছেন কিভাবে গোত্র সংগঠন থেকে ধীরে ধীরে সমাজে আধুনিক সরকারের কাঠামো তৈরি
হয়ে থাকে। অর্থাৎ মর্গানের যুক্তি ছিল প্রথমে গোত্র সংগঠনই ছিল সরকারের আদিরূপ। হেনরি মেইনের
কাজ অবশ্য আইনের বিবর্তন নিয়ে ছিল।
পরবর্তী সময়কালে রেড ইন্ডিয়ানদের বাইরে বেশ কিছু গবেষণা চলতে থাকে। এখানে মনে রাখা
দরকার যে ইউরোপের তখন প্রায় সারা দুনিয়া ব্যাপী উপনিবেশ ছিল। তারা তখন আফ্রিকার প্রায় সকল
অঞ্চল, মধ্যপ্রাচ্য এবং ওশেনিয়াতে গবেষণা চালিয়েছে। আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে গবেষণা
চলেছে ক্যারিবীয় অঞ্চলে, হাওয়াই এলাকায় কিংবা ফিলিপাইনে। এই সব গবেষণাতে কখনোই কিন্তু
এই বিষয়টা গুরুতরভাবে আসেনি যে ইউরোপের এবং মার্কিনের রাজনৈতিক শক্তি কিভাবে পৃথিবীর
অন্যান্য অঞ্চলের উপর চেপে বসে আছে। এ ধরনের সমালোচনা এসেছে আরো পরে। সত্যিকার অর্থে
যখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষে নানান দেশ ঔপনিবেশিক শাসন হতে মুক্তি পেয়েছে, এবং আরো পরে যখন
রাজনীতি কি সেটা বোঝার জন্য
’৬০-এর দশকের পরে দুনিয়া
জুড়ে নতুন তর্ক তৈরি হয়েছে।
বিশেষভাবে নৃবিজ্ঞান সেই তর্কে
প্রধান ভূমিকা নিয়েছিল।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ... সরকারের
জন্য খুব জরুরী হয়ে দেখা দিল
শান্তি-শৃঙ্খলার প্রশ্ন এবং
আদিবাসীদের ‘উন্নয়নের’র
প্রশ্ন। ফলে মূলত আইন
বিশেষজ্ঞদের দায়িত্ব দেয়া হ’ল
যাতে তাঁরা আদিবাসী রেড
ইন্ডিয়ানদের নিজস্ব সংগঠন ও
আইন-কানুন পর্যবেক্ষণ করেন
এবং সরকারের সাথে
আদিবাসীদের বিভিন্ন ‘চুক্তি’
খতিয়ে দেখেন। এভাবে প্রথম
পর্যায়ে যে সকল কাজ পাওয়া
যায় তার সবগুলিই আমেরিকান
ইন্ডিয়ানদের উপর করা গবেষণা
কাজ।
ভিয়েতনাম যুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হারলো। ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় সারা পৃথিবী ব্যাপী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের
বেশ প্রতিরোধের মধ্যে পড়তে হয়েছিল। তার সঙ্গেও এটার নিবিড় সম্পর্ক আছে। যাই হোক, যে
সময়ের কথা হচ্ছে সেই সময়ে ফ্রাঞ্জ বোয়াস এবং ব্রনিস্ল ম্যালিনোস্কি-এর শিক্ষার্থীদের নাম চলে
আসবে। কারণ তাঁরা তখন এই সব ফরমায়েশী গবেষণার কাজ করছেন। এই সকল গবেষণা হয়েছে
ঔপনিবেশিক শাসকদের এবং বাণিজ্য করতে চাওয়া বড় বড় মার্কিন-ইউরোপীয় কোম্পানির চাহিদা
অনুযায়ী; অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাদের দেয়া অর্থে। সেটা হ’ল ২০ ও ৩০-এর দশকের কথা। বোয়াসের
শিক্ষার্থীরা মূলত আমেরিকান আদিবাসী ইন্ডিয়ানদের অথবা ইউরোপের অধিকৃত কোন ভূখন্ডে ছড়িয়ে
ছিটিয়ে থাকা আদিবাসী ইন্ডিয়ানদের ওপর কাজ করেছেন। প্রায় সকল ক্ষেত্রেই এই গবেষণা
কাজগুলোর বৈশিষ্ট্য ছিল: এগুলো আদিবাসীদের স্বতন্ত্র রাজনৈতিক ব্যবস্থা বর্ণনা করেছে। কোনভাবেই
সেগুলো রাজনৈতিক সম্পর্ক ও পরিবর্তনকে কেন্দ্র করে বেড়ে ওঠেনি। এই সমস্তকাজের কেন্দ্রে
সংস্কৃতির ধারণাই কাজ করেছে, ক্ষমতার ধারণা নয়। দু’ একটা গবেষণা আগ্রহী ছিল ইন্ডিয়ানদের সাথে
শ্বেতাঙ্গ অভিবাসীদের সংঘর্ষ বা শ্বেতাঙ্গদের আক্রমণকে চিহ্নিত করতে। সেই কাজগুলো কোনভাবেই
সম্মুখভাগে আসতে পারেনি। এমন একজন গবেষক ছিলেন উইলিয়াম ক্রিস্টি ম্যাকলিওডএবং
আরেকজন হচ্ছেন মনিকা হান্টার। বরং দেখা গেছে রবার্ট রেডফিল্ডের মত গবেষকগণ মেক্সিকোতে
যখন রাজপথে বহিঃশত্রæদের বিরুদ্ধে লড়াই চলছে তখন স্থান-কালহীন ‘লোক’সমাজের গল্প নিয়ে
এসেছেন। এখানে সংক্ষেপে এটুকু বলা যায় যে, ‘নেটিভ’ মানুষজনকে নিয়ন্ত্রণ, শাসন এবং পর্যুদস্ত
করবার বাস্তব সমস্যা থেকে এবং তাদের মধ্যকার ইতিহাসের যে ভিন্নতা তার আগ্রহ থেকে ঔপনিবেশিক
সময়কালে নৃবিজ্ঞানে রাজনীতি বিষয়ক কিছু গবেষণা কাজ দানা বেঁধেছিল।
’৪০ Ñ ’৬০ দশকের রাজনৈতিক নৃবিজ্ঞান
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ধাক্কায় অনেক কিছু বদলে গেছে। রাজনৈতিক নৃবিজ্ঞানও তখন বদলেছে। সত্যিকার
অর্থে একটা উপশাখা হিসেবে এই নামটা Ñ ‘রাজনৈতিক নৃবিজ্ঞান’ Ñ পাওয়া গেল তখনই। কিন্তু
বিস্ময়কর হ’ল তাতে আরো কট্টর ধরনের একটা শাস্ত্র দেখা দিল। আগে তবু দু’ একটা নমুনা ছিল যাতে
কিছু সমালোচনা পাওয়া যায় ঔপনিবেশিক শাসনের। পরবর্তী কালে সেটাও আর তেমন দেখা দিল না।
বরং এই সময়কার কাজে মূলত ক্রিয়াবাদী ধারাতে সমাজ-সংস্কৃতির প্রথাগত ধারণা ঘুরপাক খেয়েছে।
এই সময়কালের রাজনৈতিক নৃবিজ্ঞানেও ক্ষমতা সম্পর্ক কিংবা রাজনৈতিক পরিবর্তনের আলোচনা
অনুপস্থিত। এখানে মুখ্যত বিভিন্ন সমাজের রাজনৈতিক ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা এসেছে। বিভিন্ন সমাজ
কথাটাকে এখানে একটু খতিয়ে দেখার দরকার আছে। আপনারা ইতোমধ্যেই জানেন যে দ্বিতীয়
বিশ্বযুদ্ধের পর নৃবিজ্ঞানীদের অনেকেই একটা পদ (ঃবৎস) ব্যবহার করতে থাকেন। তা হ’ল - সরল
সমাজ। যে সকল সমাজ আগে ঔপনিবেশিক শাসনের অধীনে ছিল এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে স্বাধীন
হয়েছে তাদের সকলকে ‘সরল সমাজ’ বলা হয়েছে। এই শব্দটি পূর্বতন ‘আদিম সমাজ’-এর বিকল্প হয়ে
দাঁড়িয়েছে তখন। কিন্তু আধুনিক সমাজ হচ্ছে অগ্রসর এবং সরল সমাজ হচ্ছে পশ্চাৎপদ Ñ এই ধারণাটি
তখনও কাজ করছে। সেই সরল সমাজগুলোর রাজনৈতিক ব্যবস্থা দেখা আলোচ্য কালের রাজনৈতিক
নৃবিজ্ঞানের বৈশিষ্ট্য হয়ে দেখা দিল। আগেই বলেছি যে এই সমাজগুলোর রাজনৈতিক বদল নিয়ে ভাবা
হয়নি। বদল নিয়ে ভাবলে দেখা সম্ভব হ’ত কিভাবে ইউরোপীয় শক্তি পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তেরাজনৈতিক
ব্যবস্থায় বলপূর্বক বদল ঘটিয়েছে। সেই আলোচনায় পরে আসবো। এটা জেনে রাখা দরকার এখন পর্যন্ত
রাজনৈতিক নৃবিজ্ঞান বলতে মূলত এই সময়কালের (’৪০ Ñ ’৬০ দশক) গবেষণা কাজ এবং ভাবনাচিন্তাকেই দেখা হয়ে থাকে। পাঠ্যপুস্তকগুলোতেও সাধারণভাবে এই সময়কালে গড়ে ওঠা চিন্তা-ভাবনা ও
গবেষণাকে কেন্দ্র করেই আলোচনা করা হয়ে থাকে।
কয়েকজন নৃবিজ্ঞানীর নাম আলাদা করে এক্ষেত্রে মনে রাখা দরকার। যেমন: ই. আর. লীচ, মেয়ার
ফোর্টস, ই. ই. ইভান্স প্রিচার্ড প্রমুখ। একটু পরের সময়ে ভিক্টর টার্নার, ম্যাক্স গ- াকম্যান কিংবা এফ.
বেইলি’র নাম ও এই কাতারে চলে আসতে পারে। এই সময়ের কাজে মুখ্য তিনটি বৈশিষ্ট্য খুঁজে পাওয়া
যায়। প্রথমটি আপনারা এর মধ্যেই জানেন। যদিও তাঁরা যে সমস্তসমাজে গবেষণা করেছেন তার
‘নেটিভ’ মানুষজনকে নিয়ন্ত্রণ,
শাসন এবং পর্যুদস্তকরবার
বাস্তব সমস্যা থেকে এবং তাদের
মধ্যকার ইতিহাসের যে ভিন্নতা
তার আগ্রহ থেকে ঔপনিবেশিক
সময়কালে নৃবিজ্ঞানে রাজনীতি
বিষয়ক কিছু গবেষণা কাজ দানা
বেঁধেছিল।
সবগুলোই ছিল ঔপনিবেশিক শাসনাধীন, তবুতাঁদের কাজে সেই ঔপনিবেশিক রাজনীতি আলোচিত
হয়নি। দ্বিতীয়টা হচ্ছে: তাঁরা রাজনৈতিক ব্যবস্থা আলোচনা করতে গিয়ে জ্ঞাতিসম্পর্ক এবং বংশধারার
উপর অত্যধিক জোর দিয়েছেন। অর্থাৎ, সেই সকল সমাজে রাজনৈতিক ব্যবস্থাতে জ্ঞাতিসম্পর্ক খুব
গুরুত্ব বহন করে Ñ সেটাই ছিল তাঁদের যুক্তি। তৃতীয় বিষয়টা এটার সঙ্গেই সম্পর্কযুক্ত। বিভিন্ন
রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে তাঁরা সমাজ ও সংস্কৃতি হিসেবেই দেখেছেন। এটা করতে গিয়ে তাঁরা ‘রাষ্ট্র সমাজ
বনাম রাষ্ট্রবিহীন সমাজ’ Ñ এই পদ্ধতিতে অগ্রসর হয়েছেন। অর্থাৎ রাষ্ট্রবিহীন সমাজে কিভাবে দ্ব›দ্বসংঘাত নিরসন করা হয়, শান্তিশৃঙ্খলা বজায় থাকে এবং অন্যান্য সমাজের সঙ্গে কিভাবে তারা সম্পর্ক
রক্ষা করে Ñ এই ব্যাপারে বর্ণনা করাই নৃবিজ্ঞানীদের দায়িত্ব ছিল। আগেই এ বিষয়ে আলোচনা করা
হয়েছে। শেষ দুটো বৈশিষ্ট্যের কারণেই বহু সংখ্যক মার্কিন এবং ইউরোপীয় নৃবিজ্ঞানীদের কাছে এই
ধারার রাজনৈতিক নৃবিজ্ঞান খুব জনপ্রিয়তা পেয়েছে। আবার এই বৈশিষ্ট্যের কারণেই এই ধারার
রাজনৈতিক নৃবিজ্ঞান সমালোচিত হয়েছে। যে সকল নৃবিজ্ঞানী রাজনৈতিক ব্যবস্থার বর্ণনা করেছেন
তাদেঁর তত্ত¡কে ব্যবস্থা তত্ত¡ (ংুংঃবস ঃযবড়ৎু) বলা হয়ে থাকে। এর একটা সমালোচনা তো পরবর্তী
কালে হয়েছে, ঐ সময়েই সক্রিয় তত্ত¡ (ধপঃরড়হ ঃযবড়ৎু) বলে একটা আর একটা ধারা জন্মলাভ করে।
সেই ধারার নৃবিজ্ঞানীরাও তথাকথিত সরল সমাজেই গবেষণা করেছেন। তবে তাঁরা একটা ধারণা তাঁদের
গবেষণাতে এনেছিলেন। সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তা হচ্ছে রাজনৈতিক লক্ষ্য। টার্নার, গ- াকম্যান এই
ধারার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাঁরা রাজনীতি বলতে দেখিয়েছেন মানুষজনের রাজনৈতিক লক্ষ্য চিহ্নিত করা
এবং সেই লক্ষ্য অর্জনে ক্ষমতা ব্যবহার করা। অর্থাৎ তাঁরা দেখেছেন কিভাবে বিভিন্ন সমাজের মানুষজন
তাঁদের রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জনে কাজ করেন।
সা¤প্রতিক নৃবিজ্ঞান এবং ক্ষমতার ধারণা
’৬০-এর দশকের মাঝখান থেকে, বিশেষভাবে ভিয়েতনাম যুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ এবং পশ্চিমা
দেশের স্টুডেন্টস মুভমেন্ট পরবর্তী কালে সারা পৃথিবীর বিভিন্ন জ্ঞানকান্ডে নানা রকম বদল ঘটে। এই
বদলের মধ্যে প্রধান বিষয় হয়ে দাঁড়ায় ক্ষমতা সম্পর্কিত চিন্তা-ভাবনা। লেখাপড়ার জগতে তখন
আলোচনা হতে থাকে ক্ষমতা প্রশ্নটিকে নিয়ে। তৃতীয় বিশ্বের রাজনৈতিক সংগ্রাম, সাম্রাজ্যবাদের নতুন
ধরন ইত্যাদি তখন আলোচনার কেন্দ্রে চলে আসে। একই সঙ্গে বিভিন্ন শাস্ত্রের মধ্যকার সীমারেখাও
তখন অনেক শিথিল হয়ে যায়। এই নতুন সময়ে নৃবিজ্ঞানীদের দিক থেকে একাধিক জোরদার পদক্ষেপ
নেয়া হয়। যেমন: ক্যাথলিন গফ ডাক দেন যাতে নৃবিজ্ঞান গবেষণা করতে শুরু করে সাম্রাজ্যবাদ নিয়ে,
বিপ্লব এবং প্রতি-বিপ্লব নিয়ে; তালাল আসাদের সম্পাদিত যুগান্তকারী গ্রন্থ ‘এ্যান্থ্রোপলজি এন্ড দ্য
কলোনিয়াল এন্কাউন্টার’ প্রকাশিত হয় ১৯৭৩ সালে। এই সকল আলাপ আলোচনার মধ্য দিয়ে
রাজনৈতিক বিষয়বস্তুর একেবারে নতুন দিগন্তদেখা দেয়। নৃবিজ্ঞানীদের একটা বড় অবদান তখন দেখা
যায় রাজনীতির সংজ্ঞা ও ধারণা নির্মাণে। সত্যিকার অর্থে এই মুহূর্তে নৃবিজ্ঞানের একটা বড় শক্তি
হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে ক্ষমতা ও রাজনীতি নিয়ে আজকের নৃবিজ্ঞান যা ভাবে Ñ তাকে।
নতুন এই দৃষ্টিভঙ্গিতে রাজনীতিকে এমনভাবে চিন্তা করা হ’ল যে প্রায় সকল স্থানে রাজনীতি থাকা সম্ভব।
এক্ষেত্রে পাশ্চাত্যের বাইরের নৃবিজ্ঞানীরা অনেক বেশি তৎপর ভূমিকা রেখেছেন। একই সাথে ক্ষমতা ও
রাজনীতি নিয়ে নতুন ভাবনা-চিন্তা অন্যান্য অনেক শাস্ত্রে দেখা দিল। সেটা আগেই আপনাদের বলা
হয়েছে।
নৃবিজ্ঞানে রাজনীতি বিষয়ক নতুন ভাবনার কয়েকটা তাগিদ নিয়ে সহজে আলোচনা করা যেতে পারে।
সেই তাগিদ দিয়ে আজকের নৃবিজ্ঞানের রাজনীতি ভাবনার বৈশিষ্ট্য বোঝা যাবে। তা হ’ল:
প্রথমত, রাজনীতি নিয়ে নৃবিজ্ঞানের কাজ করতে চাইলে প্রথমেই ঔপনিবেশিক রাজনীতিতে মনোযোগ
দিতে হবে। যে প্রক্রিয়ায় ঔপনিবেশিক শাসকরা অধীনস্তমানুষজনের জীবনকে বদলে দিয়েছে, দুমড়ে
মুচ্রে দিয়েছে তার বিশ্লেষণ করতে হবে।
নৃবিজ্ঞনীরা যে সমস্তসমাজে
গবেষণা করেছেন তার
সবগুলোই ছিল ঔপনিবেশিক
শাসনাধীন, তবু তাঁদের কাজে
সেই ঔপনিবেশিক রাজনীতি
আলোচিত হয়নি। দ্বিতীয়টা
হচ্ছে: তাঁরা রাজনৈতিক ব্যবস্থা
আলোচনা করতে গিয়ে
জ্ঞাতিসম্পর্ক এবং বংশধারার
উপর অত্যধিক জোর
দিয়েছেন।
দ্বিতীয়ত, ইউরোপের এবং মার্কিনের নৃবিজ্ঞানীদের কাজের পরিবেশ নিয়ে, রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিচার
বিশ্লেষণ করতে হবে। কারণ প্রথম জমানায় তাঁরা সকলেই কাজ করেছেন ঔপনিবেশিক পরিবেশে এবং
ঔপনিবেশিক সুবিধা নিয়ে।
তৃতীয়ত, ক্ষমতাকে সকল সামাজিক সম্পর্কের মধ্যে দেখতে হবে। কারণ সকল সম্পর্কের মধ্যেই
ক্ষমতার প্রবাহ আছে। এর মানে হ’ল: রাজনীতি হচ্ছে ক্ষমতা আর ক্ষমতাহীনতার সম্পর্ক দেখা।
ক্ষমতাবান আর ক্ষমতাহীনের সম্পর্ক দেখা। তাদের সম্পর্কই রাজনীতি।
চতুর্থত, প্রথম পর্যায়ের সকল পাঠ্যবই, গবেষণাকে চুলচেরা বিশ্লেষণ করতে হবে। কারণ লেখার মধ্য
দিয়েও ক্ষমতা সংগঠিত হয়। যেমন, এথনোগ্রাফির লেখকরা এথনোগ্রাফির মাধ্যমেই কোন একটা
জনগোষ্ঠীকে পাঠক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন। এখানে জ্ঞান বানাবার মধ্য দিয়ে ঐ
জনগোষ্ঠীর চেহারা বানানো হচ্ছে। সেই চেহারা বানাবার কারিগর হিসেবে তিনি (এথনোগ্রাফি লেখক)
এবং শাস্ত্র (নৃবিজ্ঞান) ক্ষমতাবান। এই ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়ে কিছু তাত্তি¡ক কাজ করেছেন যাঁরা
নৃবিজ্ঞানের বাইরের। যেমন, মিশেল ফুকো, এডওয়ার্ড সাঈদ প্রমুখ।
পঞ্চমত, আপাত চোখে পড়ে না Ñ এমন সব সম্পর্কের বেলায়ও রাজনীতিকে চিনতে হবে। যেমন ধরা
যাক, নারী-পুরুষের সম্পর্ক। নারী-পুরুষের সম্পর্কও যে রাজনৈতিক সম্পর্ক সেই উপলব্ধি নৃবিজ্ঞানে
নতুন। যেহেতু নারী ও পুরুষের মধ্যে বৈষম্য বিদ্যমান। বৈষম্য বা অসমতাকে রাজনৈতিক হিসেবে
চিনতে হবে। ক্ষমতার এই নতুন উপলব্ধি নিয়ে আজকের নৃবিজ্ঞান কাজ করছে Ñ সেটা যেমন সত্যি,
আবার এই উপলব্ধিটা এখন আর নিছক একটা কোন জ্ঞানকান্ডের মধ্যে আটকে নেই।
ষষ্ঠত, আধুনিক রাষ্ট্র ও নানাবিধ প্রতিষ্ঠানের ক্ষমতাকে বিচার বিশ্লেষণ করতে হবে।
সারাংশ
প্রথম দিকের নৃবিজ্ঞানীরা রাষ্ট্রবিহীন সমাজ নিয়ে গবেষণা করেছেন। রাজনৈতিক নৃবিজ্ঞান বলতে সেটাই
বোঝা হ’ত। তাঁদের মুখ্য যুক্তি ছিল সকল সমাজেই রাজনীতির প্রসঙ্গ জড়িত। কিভাবে কোনও বিশেষ
একটি সমাজে নিয়ম-কানুন, রীতি-নীতি, আইন-শৃঙ্খলা দেখভাল করা হচ্ছে সেটাই রাজনৈতিক
নৃবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু ছিল। ইদানিং কালের নৃবিজ্ঞানীরা রাজনীতি বলতে ক্ষমতা প্রসঙ্গকে গুরুত্ব দিয়ে
থাকেন। ফলে রাষ্ট্র থাকা না থাকা আর মুখ্য ব্যাপার নয়। ক্ষমতা প্রসঙ্গকে কেন্দ্রীয় গুরুত্ব দিয়ে ভাববার
ফলে রাজনৈতিক নৃবিজ্ঞানের পরিধি এখন অনেক প্রশস্ত। তবে অনেকেই স্বতন্ত্রভাবে রাজনৈতিক
নৃবিজ্ঞান নামে একটি শাখা থাকার বিপক্ষে।
ক্ষমতাকে সকল সম্পর্কের মধ্যে
দেখতে হবে। কারণ সকল
সম্পর্কের মধ্যেই ক্ষমতার প্রবাহ
আছে। এর মানে হ’ল:
রাজনীতি হচ্ছে ক্ষমতা আর
ক্ষমতাহীনতার সম্পর্কদেখা।
ক্ষমতাবান আর ক্ষমতাহীনের
সম্পর্ক দেখা। তাদের সম্পর্কই
রাজনীতি।
সঠিক উত্তরের পাশে টিক () চিহ্ন দিন -
১। যে সকল নৃবিজ্ঞানী রাজনৈতিক ব্যবস্থা বর্ণনা করেছেন তাঁদের তত্ত¡কে ------------ বলা হয়ে
থাকে।
ক. সক্রিয় তত্ত¡ খ. ব্যবস্থা তত্ত¡
গ. বিবর্তনবাদী তত্ত¡ ঘ. ক্রিয়াবাদী তত্ত¡
২। নিচের কোন বইটি নৃবিজ্ঞানী তালাল আসাদ কর্তৃক সম্পাদিত?
ক. এ্যান্ত্রোপলজি এন্ড দ্য কলোনিয়াল এন্কাউন্টার
খ. হিস্ট্রি এ্যান্ড এথনলজি
গ. দ্য সোশ্যাল সিস্টেম
ঘ. স্টাডিজ ইন এনশিয়েন্ট হিস্টরি
৩। নিচের কোন দশককে রাজনৈতিক নৃবিজ্ঞানের মূল সময়কাল ধরা হয়?
ক. ৩০ - ৫০ খ. ৪০ - ৬০
গ. ৬০ - ৮০ ঘ. ৫০ - ৭০
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১। রাজনৈতিক কর্মকান্ড বলতে আপনি কী বোঝেন?
২। রাজনৈতিক নৃবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু কী?
রচনামূলক প্রশ্ন
১। আধুনিক কালের রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে অন্যগুলির থেকে শ্রেয়তর বলা কী সম্ভব?
রাষ্ট্রব্যবস্থার আগে এবং বর্তমান সমাজের নানান পরিসরে ক্ষমতা সম্পর্ক
আমরা যখনই রাজনৈতিক ব্যবস্থার কথা বলি আমাদের মাথায় ভেসে আসে সংসদ, নির্বাচন, গণতন্ত্র,
FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত