সামাজিক কাঠামোর অমার্কসীয় মতবাদগুলো আলোচনা করুন।
মার্কসীয় দৃষ্টিভঙ্গি আলোচনা করুন।


ভ‚মিকা
সামাজিক কাঠামো বিশ্লেষণে মার্কসীয় ধারণা সত্তরের দশকে বিশেষ প্রভাব সৃষ্টি করেছিল।
মার্কসীয় ধারণা সমাজবিজ্ঞানের অন্যান্য দৃষ্টিকোণ থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন হওয়ায় সামাজিক
কাঠামো বিশ্লেষণে অনেক সময় মার্কসীয় এবং অমার্কসীয় ধারণার মধ্যে বিভাজন টানা হয়।
অমার্কসীয় চিন্তার মধ্যে নানা এবং এমনকি বিরোধী দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। সমাজবিজ্ঞানী রবার্ট
মার্টনের জড়নবৎঃ গবৎঃড়হ এর মতে সামাজিক কাঠামো বোঝার জন্য যে বিভিন্ন মতের উদ্ভব
হয়েছে তা সমাজবিজ্ঞানের জন্য মঙ্গলজনক। কেননা প্রতিটি মতই বাস্তবতার এক একটি
অবয়বকে তুলে ধরে।
সামাজিক কাঠামোর মার্কসীয় মতবাদ
কার্ল মার্কস্ সামাজিক কাঠামো বিশ্লেষণে এক গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গী নির্মাণ করেছেন যা
ঐতিহাসিক বস্তুবাদ বা দ্বান্দি¡ক বস্তুবাদ নামে পরিচিত। মার্কস্ -এর মতে মানুষের কিছু বাস্তব
চাহিদা বা প্রয়োজন পূরণের জন্য সামাজিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ঐতিহাসিক প্রক্রিয়ায় বিবর্তিত
এই সম্পর্কগুলোর জাল সামাজিক কাঠামো। মার্কস্ -এর মতে সামাজিক কাঠামোর দু'টি অংশ
রয়েছেÑ ভিত্তি ইধংব এবং উপরিকাঠামো।ভিত্তি উপরিকাঠামোকে নিয়ন্ত্রণ করে; উপরিকাঠামো
ভিত্তিকে প্রভাবিত করতে পারে। সমাজ বিকাশের একটি নির্দিষ্ট পর্বে বস্তুগত উৎপাদন
সম্পর্কের সমগ্র রূপ নিয়ে সৃষ্টি হয় ঐ সমাজের অর্থনৈতিক কাঠামো বা ভিত্তি। এই ‘বাস্তব
ভিত্তি'র উপর সৃষ্টি হয় আইনগত, রাজনৈতিক ও সামাজিক সচেতনতার উপরিকাঠামো যা
ভিত্তির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। পশ্চিম ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকাতে ইংরেজীঝঁঢ়বৎ ঝঃৎঁপঃঁৎব
শব্দটির বিপরীতে ইধংব শব্দটি ব্যবহৃত হয়। ইংরেজী ইধংব শব্দটির বাংলা হিসাবে এই বইয়ে
ভিত্তি শব্দটি ব্যবহৃত হল। ইধংরপ ংঃৎঁপঃঁৎব (মৌল কাঠামো) বলে কোন প্রত্যয় পশ্চিমের
মার্কসবাদীদের লেখায় সচরাচর ব্যবহার করা হয় না।
মার্কস্ -এর ভাষায়,
ওহ ঃযব ংড়পরধষ ঢ়ৎড়ফঁপঃরড়হং ড়ভ ঃযবরৎ ষরভব সবহ বহঃবৎ রহঃড় ফবভরহরঃব ৎবষধঃরড়হং ঃযধঃ
ধৎব রহফরংঢ়বহংধনষব ধহফ রহফবঢ়বহফবহঃ ড়ভ ঃযবরৎ রিষষ, ৎবষধঃরড়হং ড়ভ ঢ়ৎড়ফঁপঃরড়হ
যিরপয পড়ৎৎবংঢ়ড়হফবহঃ ঃড় ধ ফবভরহরঃব ংঃধমব ড়ভ ফবাবষড়ঢ়সবহঃ ড়ভ ঃযবরৎ সধঃবৎরধষ
ঢ়ৎড়ফঁপঃরাব ভড়ৎপবং. ঞযব ংঁস ঃড়ঃধষ ড়ভ ঃযবংব ৎবষধঃরড়হং ড়ভ ঢ়ৎড়ফঁপঃরড়হ
পড়হংঃরঃঁঃবং ঃযব বপড়হড়সরপ ংঃৎঁপঃঁৎব ড়ভ ংড়পরবঃু, ঃযব ৎবধষ ভড়ঁহফধঃরড়হ ড়হ যিরপয

ৎরংবং ধ ষবমধষ ধহফ ঢ়ড়ষরঃরপধষ ংঁঢ়বৎংঃৎঁপঃঁৎব ধহফ ঃড় যিরপয পড়ৎৎবংঢ়ড়হফ ফবভরহরঃব
ভড়ৎসং ড়ভ ংড়পরধষ পড়হংপরড়ঁংহবংং.
জীবনের সামাজিক উৎপাদনের প্রক্রিয়ায় মানুষ নির্দিষ্ট সম্পর্কের মধ্যে প্রবেশ করে যা
অপরিহার্য এবং তাদের ইচ্ছার উর্ধ্বে বিরাজমান উৎপাদনের এই সম্পর্কগুলো বস্তুগত
উৎপাদন শক্তির উন্নয়নের নির্দিষ্ট স্তরের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। উৎপাদন সম্পর্কের এই
সমগ্র রূপ সমাজের অর্থনৈতিক ভিত্তি তৈরি করেÑ এটি হচ্ছে বাস্তব ভিত্তি যার উপর
গড়ে ওঠে আইনগত ও রাজনৈতিক উপরিকাঠামো এবং সামাজিক চেতনার [ভিত্তির
সাথে] সামঞ্জস্যপূর্ণ নির্দিষ্টরূপ।
মার্কস্ -এর মতে সামাজিক কাঠামো স্থির নয়, পরিবর্তনশীল। ইতিহাসের বিবর্তনশীল রূপকে
বোঝার জন্য মার্কস্ ব্যবহার করেছেন উৎপাদন পদ্ধতির ধারণা। উৎপাদন পদ্ধতি গড়ফব ড়ভ
চৎড়ফঁপঃরড়হ বলতে বোঝায় উৎপাদনসম্পর্ক এবং উৎপাদনশক্তির পারস্পরিক ক্রিয়া
প্রতিক্রিয়ার সমনি¦ত রূপ। উৎপাদন প্রক্রিয়ায় উৎপাদক এবং অনুৎপাদক শ্রেণীর মধ্যে যে
অর্থনৈতিক ও সামাজিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে তাই হচ্ছে উৎপাদনসম্পর্ক। উৎপাদনশক্তি বলতে
কি বোঝায় তা মার্কস্-এঙ্গেলের লেখায় সম্পূর্ণ স্পষ্ট না হলেও, তাঁরা এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত
করেছেন কাঁচামাল, উৎপাদনের হাতিয়ার, শ্রমশক্তি, জ্ঞান এবং শ্রমবিভাজনকে।
মার্কস্ মানব ইতিহাসের পাঁচটি উৎপাদন পদ্ধতির অস্তিত্ব এবং সম্ভাবনা উল্লেখ করেছেন।
আদিম সাম্যবাদ ও এশীয় উৎপাদন পদ্ধতি, দাস ব্যবস্থা, সামন্ততন্ত্র, ধনতন্ত্র, সমাজতন্ত্র বা
সাম্যবাদ। প্রাচ্যে কেন পাশ্চাত্যের মত শ্রেণী বিভক্ত সমাজ বা ধনতন্ত্র বিকাশ লাভ করেনি তা
ব্যাখ্যা করতে যেয়ে মার্কস্ প্রায়-নিশ্চল এশীয় উৎপাদন পদ্ধতির কথা তুলে ধরেছেন। এশীয়
উৎপাদন পদ্ধতির উপর মার্কস্ -এর অভিমত নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।
মার্কস্ -এর মতে উৎপাদন পদ্ধতির পরিবর্তনের সাথে সাথে সামাজিক কাঠামোর পরিবর্তন
ঘটে এবং প্রতিটি সমাজ গঠনের ঝড়পরধষ ঋড়ৎসধঃরড়হ রূপ ভিন্ন। আদিম সাম্যবাদী সমাজ
শ্রেণীবিহীন এবং মৌল দ্বন্দ¡ থেকে মুক্ত। দাস সমাজে দাসপ্রভু এবং ক্রীতদাস, সামন্ত সমাজে
সামন্তপ্রভু এবং ভ‚মিদাস, ধনতন্ত্রে বুর্জোয়া এবং সর্বহারা শ্রেণীর মধ্যে দ্বন্দ¡ সামাজিক কাঠামোর
বিবর্তনের রূপরেখা তুলে ধরে। সামাজিক কাঠামোর পরিবর্তন ঘটে একদিকে উৎপাদন সম্পর্ক
ও উৎপাদন শক্তির মধ্যে দ্বন্দ¡, অন্যদিকে উৎপাদনের উপায়ের মালিক এবং উৎপাদক শ্রেণীর
মধ্যে দ্বন্দ¡। ধনতান্ত্রিক সমাজে এই দ্বন্দ¡ চূড়ান্ত রূপ লাভ করে এবং সর্বহারা শ্রেণীর
একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করে সমাজতন্ত্র। মার্কস্ -এর চিন্তায় সামাজিক কাঠামো অনুধাবনের
জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ বিষয় হচ্ছে শ্রেণীকাঠামো। প্রতিটি শ্রেণী বিভক্ত সমাজে মালিক শ্রেণী
উৎপাদক শ্রেণীর উদ্বৃত্ত বা উদ্বৃত্ত মূল্য শোষণ করে এবং এই শোষণকে টিকিয়ে রাখার জন্য
উপরিকাঠামোকে ব্যবহার করে। আইনী, রাজনৈতিক এবং ভাবাদর্শগত কাঠামোকে ব্যবহার
করা হয় মালিক শ্রেণীর আধিপত্য বজায় রাখার জন্য।
সামাজিক কাঠামোর অমার্কসীয় ধারণা
ব্যাপ্তি এবং ভিন্নতার দিক থেকে সামাজিক কাঠামোর অমার্কসীয় ধারণার পরিসর অনেক বড়
এবং তার সারাংশ তুলে ধরা সম্ভব নয়। নিচের আলোচনায় বিবর্তনবাদী, কাঠামোবাদী ও
ক্রিয়াবাদী দৃষ্টিকোণ থেকে সামাজিক কাঠামোকে যেভাবে বিশ্লেষণ করা হয়েছে তার উদাহরণ
তুলেধরা হয়েছে। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন ক্রিয়াবাদের একটি সাধারণ দৃষ্টিকোণ গড়ে
উঠেছে এবং এর ফলে এখানে তাত্তি¡কের নাম অপ্রয়োজনীয়, অন্যদিকে কাঠামোবাদ এবং
বিবর্তনবাদের মধ্যে সামাজিক কাঠামো নিয়ে বিভিন্ন মতবাদ রয়েছে। এখানে তাই দু'জন
অত্যন্ত খ্যাতিমান নৃবিজ্ঞানী ও সমাজবিজ্ঞানীর তত্ত¡ আলোচনা করা হয়েছে। তিনটি তত্ত¡ খুব
বেশি ভিন্ন। মনে রাখা প্রয়োজন বহুমুখী তত্ত¡ সমাজবিজ্ঞানের সফলতার একটি দিক।

বিবর্তনবাদী তত্ত¡
এবৎযধৎফ ঊ. খবহংশর একজন মার্কিন সমাজবিজ্ঞানী যিনি তাঁর চড়বিৎ ধহফ চৎরারষবমব নামক
গ্রন্থে সামাজিক কাঠামোর বিবর্তনের খুব উল্লেখযোগ্য একটি তত্ত¡ প্রদান করেছেন। লেন্সকির
মতে বিবর্তনের রূপটি শুধু ধরা যায় বিশ্ব ইতিহাসের পর্যায়ে। সামাজিক কাঠামোর সাধারণ
বৈশিষ্ট্যগুলো নির্ধারিত হয় চারটি উপাদানের দ্বারা। প্রথমটি হচ্ছে মানুষের জৈবিক ঐতিহ্য এবং
যে জৈবিক ঐতিহ্যের দ্বারা সে পরিবেশের সাথে অভিযোজন করে। দ্বিতীয়টি হচ্ছে প্রযুক্তির
বিকাশ যার মাধ্যমে মানুষ ধীরে ধীরে প্রকৃতির উপর আধিপত্য সৃষ্টি করতে পেরেছে। তৃতীয়টি
হচ্ছে পরিবেশ, বিশেষ করে প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রতিবন্ধকতা যা তথ্য প্রবাহে প্রতিবন্ধকতা
সৃষ্টি করে। শেষ নির্ধারক হচ্ছে বিভিন্ন সমাজের মধ্যে প্রতিযোগিতা। এই নির্ধারকগুলো হাজার
হাজার বছর ধরে সামাজিক কাঠামোর পরিবর্তন সৃষ্টি করছে এবং এগুলো কম-বেশি আধুনিক
সমাজের জন্য ক্রিয়াশীল।
এই চারটি নির্ধারক, বেঁচে থাকার উপায় এবং অন্যান্য বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে লেন্সকি চার ধরনের
সমাজ ও সামাজিক কাঠামোর কথা বিবৃত করেছেন: শিকার এবং সংগ্রহ সমাজ, উদ্যান-কৃষি
সমাজ, কৃষি সমাজ এবং শিল্প সমাজ।
কাঠামোবাদী লেভি-স্ত্রস
ফরাসী নৃবিজ্ঞানী ক্লদ লেভীস্ত্রোসের কাঠামোবাদ নৃবিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান এবং সাহিত্যতত্ত¡ ও
সংস্কৃতি চর্চায় সত্তর দশকে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। কাঠামোবাদী লেভি-স্ত্রস ভাষাতত্তে¡র দ্বারা
প্রভাবিত হয়ে মনে করেছিলেন সামাজিক কাঠামোর সাথে ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য বাস্তবতার কোন সম্পর্ক
নেই। সামাজিক কাঠামো চিন্তার একটি ছকÑ একটি মডেল যার মাধ্যমে আমরা বাস্তবতার
বিশ্লেষণ করতে পারি। কেননা তত্ত¡কে বাস্তব ঘটনার মাধ্যমে প্রমাণ করা যায় নাÑ যুক্তি ভিত্তিক
বিশ্লেষণ করা যায়Ñ কিছুটা গণিতের মত। মানব চিন্তার একটি সর্বজনীন রূপ রয়েছে। এর
গভীর ভিত্তি হচ্ছে মানুষের জৈবিক এবং মনস্তাত্তি¡ক বৈশিষ্ট্য এবং যার প্রকাশ ভাষার মধ্যে।
সমাজের কাঠামো ভাষার মত বিভিন্ন উপাদানের সমষ্টি। এই উপাদানগুলোর বিন্যাস হচ্ছে
বিপ্রতীপ যুগ্ম উপাদানের রূপে ০-১, সাদা-কালো, লাল-সবুজ প্রভৃতি। সামাজিক সম্পর্কের
রূপের মধ্যে এই বিন্যাস আমরা লক্ষ্য করে থাকি। জ্ঞাতি-সম্পর্ক, খাদ্যাভ্যাস, উপকথা থেকে
ট্রাফিক সিগন্যালের মধ্যে বিষয়টি দেখতে পাওয়া যায়। কাঠামোবাদকে ট্রাফিক সিগন্যালের
উদাহরণ দিয়ে চমৎকারভাবে বোঝানো যায়। লাল সব সংস্কৃতিতেই শংকার সংকেত। লাল
বাতির অর্থ যাওয়া বিপজ্জনক এবং নিষিদ্ধ। সবুজ শুভ'র প্রতীক এবং সবুজ বাতির অর্থ যাত্রা
বাধাহীন। হলুদ বাতি একটি মধ্যবর্তী অবস্থা। হলুদ বাতির উদাহরণ কাঠামোবাদের আরেকটি
বৈশিষ্ট্য তুলে ধরেÑ কাঠামোর বিন্যাস পরিবর্তিত হয় এবং এই পরিবর্তনের একটি নির্দিষ্ট
নিয়ম রয়েছে। প্রকৃতিতে কাঁচা সব্জির রূপান্তর ঘটে নষ্ট হয়ে যাবার মধ্যে। সংস্কৃতির মধ্যে
তার রূপান্তর ঘটে খাবার হিসাবে ।

ক্লদ লেভি-স্ত্রসের (১৯০৮-) জন্ম ১৯০৮ সালে বেলজিয়ামে। তিনি সমকালীন বিশ্বের
অন্যতম শ্রেষ্ঠ নৃবিজ্ঞানী এবং বুদ্ধিজীবী। প্যারিসে তিনি পড়াশুনা করেছিলেন দর্শনশাস্ত্রে।
কিন্তু ১৯৩৪ সালে তিনি ব্রাজিলে যেয়ে আদিবাসীদের মধ্যে গবেষণা করেছিলেন এবং
আদিম সংস্কৃতি ও সমাজ জীবনের সম্পর্কে তাঁর গভীর আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছিল। ১৯৫৮ সালে
তিনি ঈড়ষষবমব ফব ঋৎধহপব এর পূর্ণ অধ্যাপক পদ অলংকৃত করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের
সমাজবিজ্ঞান বিভাগ তাঁর সুপারিশে ও টঘঊঝঈঙ এর পৃষ্ঠপোষকতায় স্থাপিত হয়েছিল।
তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ঞযব ঊষবসবহঃধৎু ঝঃৎঁপঃঁৎবং ড়ভ করহংযরঢ়, ঞযব
ঝধাধমব গরহফ, ঞড়ঃবসরংস.
সামাজিক কাঠামোর ক্রিয়াবাদী তত্ত¡
ক্রিয়াবাদী তত্তে¡ মনে করা হয় সামাজিক কাঠামো একটি সমগ্র যার অংশগুলো সমগ্রকে টিকিয়ে
রাখার জন্য অবদান রাখে। সামাজিক কাঠামোর ক্ষুদ্রতম ইউনিট হচ্ছে অবস্থান ও ভ‚মিকা।
একগুচ্ছ অবস্থান ও ভ‚মিকা নিয়েগড়ে ওঠে সামাজিক প্রতিষ্ঠান এবং সামাজিক প্রতিষ্ঠানের
সমন¦য়ে গড়ে ওঠে সামাজিক কাঠামো। সামাজিক কাঠামো এমনভাবে কাজ করে যাতে
সমাজের ভারসাম্য বজায় থাকে।
বিনিময় এবং সামাজিক কাঠামোর তত্ত¡
পিটার বøাউ
মার্কিন সমাজবিজ্ঞানী পিটার বøাউ চবঃবৎ ইষধঁ বিনিময় তত্তে¡র একজন প্রধান প্রবক্তা এবং
সামাজিক কাঠামোর উপর সাম্প্রতিককালের শীর্ষ তাত্তি¡ক। তাঁর মতে “সমাজ জীবনের যে
ছক উপলব্ধি করা যায়, যে নিয়ম লক্ষ্য করা যায় এবং যে বিন্যাস সনাক্ত করা যায়” তাই হচ্ছে
সামাজিক কাঠামো।
তাঁর মতে সামাজিক কাঠামো বুঝতে হলে আমাদের কয়েকটি দিকে নজর দেওয়া প্রয়োজনÑ
❐ সামাজিক কাঠামোর কোন পর্যায় আমরা বুঝতে চাই? ছোট গোষ্ঠীর পরিসরে সরপৎড়
ষবাবষ-এ, না বড় গোষ্ঠী বা প্রতিষ্ঠানের পর্যায়ে সবংড় ষবাবষ এ, না সমাজের পর্যায়ে
সধপৎড় ষবাবষ এ ?
❐ সময়ের অবয়ব কি ঐতিহাসিক, না সময়-নিরপেক্ষ কাঠামো?
❐ সামাজিক কাঠামোর নির্ধারকগুলো কি মন, না বাইরের পরিবেশ, না অর্থনৈতিক কাঠামো?
সামাজিক কাঠামো বুঝতে হলে প্রথমেই দৃষ্টি প্রদান করা প্রয়োজন পৃথকীকরণের উপর।
সমাজে বসবাসকারী মানুষের মধ্যে নানা ধরনের পার্থক্য রয়েছে যা সামাজিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে
ভিন্নতা সৃষ্টি করে। নারী-পুরুষ, জনসংখ্যার বয়স, উপজাতির জ্ঞাতি সম্পর্ক, প্রতিষ্ঠানের কর্তৃত্ব,
সমাজের শ্রেণী কাঠামোÑ এসবই সামাজিক সম্পর্ককে ভিন্ন ভিন্নভাবে নির্মাণ করে এবং
এসবগুলোই সামাজিক কাঠামোর উপাদান।
অবস্থানের পৃথকীকরণ সামাজিক মিথস্ক্রিয়াকে ব্যাহত করে, অন্যদিকে অবস্থানের বহুমুখীতা
সামাজিক যোগাযোগ বাড়িয়ে দেয়। এলিট বা শীর্ষজনের সাথে সাধারণ মানুষের অবস্থানের
দূরত্ব বেশি হলে শীর্ষজন এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে যোগাযোগ হ্রাস পায়। আধুনিক সমাজে
নানা ধরনের পেশাগত বৈচিত্র্য লক্ষ্য করা যায়। এই বৈচিত্র্য মানুষের মধ্যে যোগাযোগ বাড়িয়ে

দেয়। ক্লাবে, হোটেলে, সেমিনারে, পার্টিতে বিভিন্ন ধরনের মানুষের সাথে সম্পর্ক স্থাপিত হয়।
এভাবে বøাউ শ্রমবিভাজন , কর্তৃত্ব, কর্ম-সংগঠন ড়ৎমধহরুধঃরড়হ ড়ভ ড়িৎশ কিভাবে সামাজিক
কাঠামোর ভিন্ন ভিন্ন রূপ তুলে ধরে তা আলোচনা করেছেন। এর ভিত্তিতেই বøাউ সামাজিক
কাঠামোর ম্যাক্রো পর্যায় সধপৎড় ষবাবষ এর তত্ত¡ নির্মাণ করার জন্য সমাজ জীবনের
বিভাজকগুলো-বয়স, লিঙ্গ, বর্ণ, আয়, শিক্ষা, পেশা, শ্রেণী প্রভৃতিকে ব্যবহার করেছেন।
সারাংশ
সামাজিক কাঠামো বিশ্লেষণে মার্কসীয় ও অমার্কসীয় ধারণায় প্রভেদ লক্ষ্যণীয়। মার্কস্ -
এর মতে মানুষের কিছু বাস্তব চাহিদা বা প্রয়োজন পূরণে সৃষ্ট সামাজিক সম্পর্কগুলোর
ঐতিহাসিক প্রক্রিয়ায় বিবর্তিত জালই হচ্ছে সামাজিক কাঠামো যার ভিত্তি ও
উপরিকাঠামো নামে দু'টি অংশ বিদ্যমান। বস্তুগত উৎপাদন সম্পর্কের সমগ্র রূপ নিয়ে
সমাজ বিকাশের একটি নির্দিষ্ট পর্বে সৃষ্টি হয় ঐ সমাজের অর্থনৈতিক কাঠামো বা ভিত্তি।
আর এই বাস্তব ভিত্তির উপর সৃষ্টি হয় উপরিকাঠামো যা আইনগত, রাজনৈতিক ও
সামাজিক সচেতনতার সাথে সম্পর্কিত। বিবর্তনশীল সামাজিক কাঠামোকে বোঝার
সুবিধার্থে তিনি প্রয়োগ করেছেন উৎপাদন পদ্ধতির ধারণাটি যা উৎপাদন সম্পর্ক এবং
উৎপাদন শক্তির পারস্পরিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার সমনি¦ত রূপ।
ব্যাপ্তি ও ভিন্নতায় সামাজিক কাঠামোর অমার্কসীয় ধারণার পরিসর বড়। এর মধ্যে
বিবর্তনবাদী, কাঠামোবাদী এবং ক্রিয়াবাদী দৃষ্টিকোণই উল্লেখযোগ্য। বিবর্তনবাদী তত্তে¡
লেন্সকি সামাজিক কাঠামোকে দেখেছেন বিশ্ব ইতিহাসের পর্যায়ে যেখানে সামাজিক
কাঠামোর বৈশিষ্ট্যগুলো নির্ধারিত হয় জৈবিক ঐতিহ্য, প্রযুক্তির বিকাশ, পরিবেশ ও
প্রতিযোগিতা নামক চারটি উপাদানের দ্বারা। কাঠামোবাদে ফরাসী নৃবিজ্ঞানী লেভি-স্ত্রস
ভাষাতত্তে¡র দ্বারা প্রভাবিত হয়ে মনে করেন সামাজিক কাঠামোর সাথে ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য
বাস্তবতার কোন সম্পর্ক নেই এবং এটি একটি ছক বা মডেল যার মাধ্যমে বাস্তবতার
বিশ্লেষণ করা যায়। ক্রিয়াবাদী তত্তে¡র আলোচ্য বিষয় ধগ সামাজিক কাঠামো একটি সমগ্র
যার অংশগুলো সমগ্রকে টিকিয়ে রাখার জন্য অবদান রাখে। মার্কিন সমাজবিজ্ঞানী পিটার
বøাউ তাঁর বিনিময় তত্তে¡ বলেন সমাজ জীবনের যে ছক উপলব্ধি করা যায়, যে নিয়ম লক্ষ্য
করা যায় এবং যে বিন্যাস শনাক্ত করা যায় তাই হচ্ছে সামাজিক কাঠামো।


নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন
সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√) চিহ্ন দিন
১. মার্কসীয় ধারণায় সামাজিক কাঠামোর অংশ কয়টি?
ক. ২টি খ. ৩টি
গ. ৪টি ঘ. ৫টি
২. গড়ফব ড়ভ চৎড়ফঁপঃরড়হ বলতে কোনটিকে বোঝায়?
ক. উৎপাদন সম্পর্ক খ. উৎপাদন শক্তি
গ. উৎপাদন সম্পর্ক ও উৎপাদন শক্তির পারস্পরিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া
ঘ. উপরের কোনটিই নয়
৩. ধনতান্ত্রিক সমাজে উৎপাদন মালিক এবং উৎপাদক শ্রেণীর দ্বন্দে¡র চূড়ান্তরূপে সর্বহারা
শ্রেণীর একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেÑ
ক. গণতন্ত্র খ. স্বৈরতন্ত্র
গ. সমাজতন্ত্র ঘ. রাজতন্ত্র
৪. বিবর্তনবাদী তত্তে¡ লেন্সকি কত ধরনের সমাজ ও সামাজিক কাঠামো উল্লেখ করেন?
ক. ২ ধরনের খ. ৩ ধরনের
গ. ৪ ধরনের ঘ. ৫ ধরনের
৫. কোন নৃবিজ্ঞানী মনে করেছিলেন সামাজিক কাঠামোর সাথে ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য বাস্তবতার কোন
সম্পর্ক নেই?
ক. লেন্সকি খ. লেভি-স্ত্রস
গ. পিটার বøাউ ঘ. রেডক্লিফ-ব্রাউন
৬. পিটার বøাউ-এর মতে অবস্থানের পৃথকীকরণ সামাজিক মিথস্ক্রিয়াকে ÑÑÑ করে।
ক. ত্বরানি¦ত খ. ব্যাহত
গ. ব্যাহত ও ত্বরানি¦ত ঘ. শক্তিশালী
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১. পিটার বøাউয়ের মতে সামাজিক কাঠামো কি ?
২. মার্কসীয় ধারণায় উৎপাদন পদ্ধতি বলতে কি বোঝায় ?
রচনামূলক প্রশ্ন
১. সামাজিক কাঠামোর অমার্কসীয় মতবাদগুলো আলোচনা করুন।
২. সামাজিক কাঠামোর মার্কসীয় দৃষ্টিভঙ্গি আলোচনা করুন।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]