বাংলাদেশ উš§ুক্ত বিশ^বিদ্যালয় এইচএসসি প্রোগ্রাম
ইউনিট ০৩ পৃষ্ঠা ৪১
চূড়ান্ত মূল্যায়ন
মানুষের নৃগোষ্ঠীগত পরিচয়
ঊঃযহরপ ওফবহঃরঃু ড়ভ ঐঁসধহ ইবরহম
ইউনিট
৪
নরগোষ্ঠী বলতে উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত কতকগুলো সাধারণ দৈহিক বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে সৃষ্ট মানবপ্রজাতির উপবিভাগকে
বুঝায়। এক্ষেত্রে বিবেচ্য দৈহিক বৈশিষ্ট্যগুলো হলো মাথার চুল, মাথার আকৃতি, নাকের ধরন, চোখের গঠন ও চোখের
মণির রঙ, মুখমন্ডলের গঠন, ঠোঁটের প্রকৃতি, গায়ের রঙ, দৈহিক উচ্চতা ইত্যাদি। এছাড়া কখনও কখনও চোখের ভ্রæ,
কানের প্রকৃতি, কপালের বৈশিষ্ট্য ইত্যাদি বিষয়গুলোও বিবেচিত হয়ে থাকে।
বাঙালি জাতির নৃতাত্তি¡ক পরিচয় নির্ণয় করা সহজ নয়। বিভিন্ন ঐতিহাসিক তথ্য পর্যালোচনার মাধ্যমে মনীষীরা এ সিদ্ধান্তে
উপনীত হয়েছেন যে, বাঙালি জাতি মূলত একটি মিশ্র বা সংকর নৃগোষ্ঠী। মিশ্রতা সত্তে¡ও বাঙালি জাতিকে অনেকে ‘অস্ট্রোএশিয়াটিক বা অস্ট্রিক’ বৈশিষ্ট্যের অধিকারী বলেও অভিহিত করেছেন। কেবল দৈহিক বৈশিষ্ট্যেই নয়, বাঙালি সংস্কৃতি
বিনির্মাণেও অস্ট্রিক তথা আদি-অস্ট্রেলীয়দের প্রভাব সর্বাধিক। স¤প্রতি ভেলাম ভ্যান সেন্ডেল
তাঁর A History of Bangladesh গ্রন্থে উল্লেখ করেন, বাংলা ভাষায় টিবেটো-বার্মা, অস্ট্রো-এশিয়াটিক এবং দ্রাবিড়ীয়
ভাষার প্রভাব আছে। যার অর্থ হচ্ছে বাঙালি নৃগোষ্ঠীর মধ্যেও এদের প্রভাব সুস্পষ্ট।
নরগোষ্ঠী (Race) এবং নৃগোষ্ঠীকে (Ethnic group/ethnic community) অনেকে সমার্থক অর্থে ব্যবহার করেন। তবে
প্রত্যয় দু’টির ব্যবহার এবং ধারণার মধ্যে একটি সূ² পার্থক্য রয়েছে। নরগোষ্ঠী হচ্ছে একটি নির্দিষ্ট বংশধারা থেকে
উত্তরাধীকারসূত্রে প্রাপ্ত অভিন্ন শারীরিক বৈশিষ্ট্যের অধিকারী জনগোষ্ঠী। আর নৃগোষ্ঠী হচ্ছে সাধারণত একটি নির্দিষ্ট
ভৌগোলিক এলাকায় অভিন্ন সংস্কৃতির উত্তরাধীকারী জনগোষ্ঠী। নরগোষ্ঠীর ক্ষেত্রে অভিন্ন দৈহিক বৈশিষ্ট্য এবং নৃগোষ্ঠীর
ক্ষেত্রে অভিন্ন সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য প্রাধান্য পায়। তবে একই নরগোষ্ঠীর সদস্যরা প্রায়ই অভিন্ন সংস্কৃতির চর্চা করেন। আবার
অভিন্ন নৃগোষ্ঠীর সদস্যদের মধ্যে একই নরগোষ্ঠীর দৈহিক বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়।
মুখ্য শব্দ নরগোষ্ঠী, দৈহিক বৈশিষ্ট্য, ভৌগোলিক এলাকা।
মানুষের বৈজ্ঞানিক নাম হল- ‘হোমো-সেপিয়েন্স’ (Homo-Sapiens)|। মানুষের মধ্যে শরীরগত নানা পার্থক্য
রয়েছে। শরীরগত বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে মানবপ্রজাতির এক একটি উপবিভাগকে বোঝাতে নরগোষ্ঠী বা নৃগোষ্ঠী
(Race) প্রত্যয়টি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। জধপব এর সমার্থক শব্দ হিসেবে Ethnic Group ev Ethnic Community
প্রত্যয়টিও ব্যবহৃত হয়ে থাকে। বিশেষ মানবগোষ্ঠীকে বোঝাতে জধপব শব্দটি ব্যবহাহৃত হলেও সমাজবিজ্ঞানে প্রত্যয়টির
বহুবিধ ব্যবহার লক্ষ করা যায়। ইংরেজ লেখকরা সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী বোঝাতে এ পদটি ব্যবহার করেন; যেমন- আইরিস
রেস, স্কটিস রেস। কখনো কখনো ধর্মীয় দল-উপদলকে বোঝাতেও প্রত্যয়টি ব্যবহৃত হয়, যেমন- ঔবরিংয জধপব।
নরগোষ্ঠীর সংজ্ঞা
নরগোষ্ঠীকে এমন একটি মানবসমষ্টি হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা যায়, যার সদস্যদের জন্মগতভাবে প্রাপ্ত অভিন্ন কিছু দৈহিক
বৈশিষ্ট থাকে যা তাদেরকে অন্যান্য মানবগোষ্ঠী থেকে পৃথক করে।
সামাজিক নৃবিজ্ঞানী ঊ. ই. ঞুষড়ৎ-এর মতে, নরগোষ্ঠী হল স্বাতন্ত্র্যসূচক এবং জন্মসূত্রে বর্তায় এমন দৈহিক বৈশিষ্ট্যসমূহের
সমন্বয়ে গঠিত মানবজাতির একটি প্রধান বিভাগ। সাধারণ সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে এমন জনগোষ্ঠীকেও তিনি নৃগোষ্ঠী
বলে অভিহিত করেছেন (Ethnic community is a group distinguished by common cultural characteristics)|
সমাজবিজ্ঞানী John M. Shepard 'Sociology গ্রন্থে বলেন, নৃগোষ্ঠী হচ্ছে জনসংখ্যার সেই এক বিশেষ অংশ যারা
উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত কতগুলো দৃষ্টিগোচর দৈহিক বৈশিষ্ট্য ধারণ করে।
নৃবিজ্ঞানী মেয়ার (গধুবৎ)-এর মতে, নরগোষ্ঠী হল একটি সুনির্দিষ্ট এলাকায় বসবাসকারী এমন একদল মানুষ যাদের মধ্যে
সাধারণ দৈহিক বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান এবং যারা অন্যদের থেকে দৈহিক বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে ভিন্ন।
সুতরাং নরগোষ্ঠী হচ্ছে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত অভিন্ন দৈহিক বৈশিষ্ট্যেে অধিকারী মানগোষ্ঠী, যারা বিশ্বের নির্দিষ্ট একটি
ভৌগোলিক অঞ্চলে অভিন্ন সংস্কৃতির অনুসারী হয়ে বসবাস করে। একটি নরগোষ্ঠীর সদস্যগণ সাধারণত অন্য নরগোষ্ঠীর
সদস্যদের থেকে সাংস্কৃতিক ও দৈহিক বৈশিষ্ট্যে ভিন্নতর হয়ে থাকে।
নরগোষ্ঠীর বৈশিষ্ট্য
উপর্যুক্ত সংজ্ঞাগুলোর আলোকে নরগোষ্ঠীর কতিপয় বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়। যেমন:
(ক) নরগোষ্ঠী হচ্ছে মানবজাতির অন্যতম প্রধান উপবিভাগ;
(খ) নরগোষ্ঠীর মূলে রয়েছে স্বতন্ত্র ও সাধারণ কিছু দৈহিক বৈশিষ্ট্য, যা সহজেই দৃষ্টিগোচর হয়;
(গ) সাধারণত মাথার গড়ন, মুখের চোয়াল, চুলের রং ও ধরন, গায়ের রং, নাক, চোখ, শারীরিক গঠন ও উচ্চতার মাধ্যমে
নরগোষ্ঠী নির্ধারিত হয়;
(ঘ) বংশগতভাবে প্রাপ্ত শারীরিক বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতেই নরগোষ্ঠীকে পৃথক করা হয়;
(ঙ) নরগোষ্ঠী মানুষের স্থায়ী বৈশিষ্ট্য যা বংশ পরম্পরায় অব্যাহত থাকে;
(চ) নির্দিষ্ট নরগোষ্ঠী প্রায়শ একটি নির্দিষ্ট ভৌগোলিক পরিমÐলে বসবাস করে;
(ছ) প্রত্যেক নরগোষ্ঠীর নিজস্ব স্বতন্ত্র সংস্কৃতি রয়েছে।
সারসংক্ষেপ
দৈহিক বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে মানবগোষ্ঠীকে বিভিন্ন উপবিভাগে বিভক্ত করে নরগোষ্ঠী। বিশ্বে প্রধানত শ্বেতকায়, কৃষ্ণকায়,
মঙ্গোলীয় এবং অস্ট্রেলীয় নরগোষ্ঠীর উপস্থিতি লক্ষ করা যায়। এছাড়া আছে সংকর নরগোষ্ঠী। বাঙালি মানবগোষ্ঠী
সংকর নরগোষ্ঠীর অন্তর্গত বলে মনে করা হয়। মানবগোষ্ঠীর পরিচয় জানতে হলে তার নরগোষ্ঠীগত পরিচয় জানা
জরুরি। নরগোষ্ঠীগত পরিচয়ের সাথে মানুষের ভাষা এবং সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সম্পৃক্ত। এটি অনেকটা
জন্মপরিচয়ের মত।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন-৪.১
সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√) চিহ্ন দিন
১। Race শব্দটি কি কি অর্থে ব্যবহৃত হয়?
ক) নরগোষ্ঠী খ) সাংস্কৃতিক মানবগোষ্ঠী
গ) ধর্মীয় গোষ্ঠী ঘ) সবগুলো
২। নরগোষ্ঠীর মূল অর্থ হচ্ছেÑ
ক) দৈহিক বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে মানবগোষ্ঠীর বিভাজন
খ) আর্থিক সক্ষমতার ভিত্তিতে মানবগোষ্ঠীর বিভাজন
গ) ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে মানবগোষ্ঠীর বিভাজন
ঘ) ধর্মীয় বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে মানবগোষ্ঠীর বিভাজন
FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত