মানবজাতির প্রধান প্রধান নরগোষ্ঠীকে চিহ্নিত করতে পারবেন; নরগোষ্ঠীগুলোর দৈহিক বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা করতে পারবেন।

> মুখ্য শব্দ নরগোষ্ঠী, ককেশীয়, মঙ্গোলীয়, নিগ্রীয়, অস্ট্রালয়েড।
পৃথিবীর সব মানুষের দৈহিক বৈশিষ্ট্য অভিন্ন নয়। কতকগুলো দৃষ্টিগোচর দৈহিক বৈশিষ্ট্যকে কেন্দ্র করে
মানবজাতিকে কয়েকটি বৃহত্তর উপবিভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। এ সকল উপবিভাগের মধ্যে উত্তরাধিকারসূত্রে
প্রাপ্ত কতকগুলো সাধারণ দৈহিক বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের দৈহিক বৈশিষ্ট্যের মধ্যে নানা ভিন্নতা
বিদ্যমান। বিভিন্ন জীববিজ্ঞানী এবং নৃবিজ্ঞানীগণ নানা দৃষ্টিকোণ থেকে নরগোষ্ঠীর বিভিন্ন শ্রেণিকরণ করেছেন। যেমন:
ক্যারোলাস লিনিয়াস , ১৭০৭-১৭৭৮) মানবগোষ্ঠীর চারটি শ্রেণির কথা উল্লেখ করেছেন। এগুলো
হচ্ছে: ১. আমেরিকান (রেড ইন্ডিয়ান), ২. ইউরোপীয়, ৩. এশীয় এবং ৪. আফ্রিকান।
বিখ্যাত জার্মান নৃবিজ্ঞানী জোহান ফ্রেডারিক বøুমেনবাখ (, ১৭১৬- ১৭৯৯) মানুষেকে পাঁচ
ভাগে বিভক্ত করেছেন। যথা: ১. ককেশীয় বা সাদা, ২. মঙ্গোলীয় বা হলুদ, ৩. মালয়ী বা বাদামি, ৪. আমেরিকান বা লাল,
এবং ৫. আফ্রিকান বা কালো।
১৯০৪ সালে সি.এইচ. স্ট্রাটজ সমগ্র মানবজাতিকে দু’ভাগে বিভক্ত করেন। যথা: ১. আদিম (চৎরসরঃরাব) এবং ২. সংকর
(গবঃধসড়ৎঢ়যরপ যুনৎরফ)। একই সালে ডাকওয়ার্থ (উঁপশড়িৎঃয) মাথা ও চোয়ালের বৈশিষ্ট্য এবং করোটিতত্ত¡ভিত্তিক
বিশ্লেষণে মানবজাতিকে সাতটি শ্রেণিতে বিভক্ত করেছেন। যথা: ১. অস্ট্রেলীয়; ২. আফ্রিকান; ৩. আন্দামান; ৪.
ইউরোপীয়; ৫. পলিনেশীয়; ৬. গ্রীনল্যান্ডীয়; এবং ৭. দক্ষিণ আফ্রিকীয়।
১৯২৯ সালে এ. সি. হ্যাডন (অ.ঈ. ঐধফফড়হ) চুলের বৈচিত্র্যের ভিত্তিতে নরগোষ্ঠীর যে শ্রেণিকরণ করেন তা হচ্ছে: ১. উলোট্রিচি
− কুঞ্চিতকেশ, ২. সিমোট্রিচি (ঈুস তরঙ্গায়িত কেশ এবং ৩. লিওট্রিচি ( মসৃণ কেশ।
১৯৬০ সালে মুখাবয়বের আকৃতি ও অভিক্ষেপের ভিত্তিতে মানব শাখার চারটি প্রধান
শ্রেণীরূপ করেন। যথা: ১. ককেশীয়, ২. মঙ্গোলীয়, ৩. ইথিওপীয় এবং ৪. হটেনটট।
১৯৭০ খ্রিস্টাব্দে টি. এইচ. হাক্সলি মানবজাতিকে পাঁচটি ভাগে বিভক্ত করেন। বিভাগগুলো হল: ১. নিগ্রো জাতি, ২. অস্ট্রেলীয়
জাতি, ৩. মঙ্গোলীয় জাতি, ৪. সানথোক্রয়েড ) জাতি এবং ৫. মেলনোক্রয়েড জাতি।
ভৌগোলিক অবস্থানের ভিত্তিতে নরগোষ্ঠীর কয়েকটি ধরন পরিলক্ষিত হয়। এগুলো হচ্ছে: ক) ইউরোপীয়, খ) আমেরিকান,
গ) আফ্রিকান, ঘ) অস্ট্রেলীয় ঙ) এশীয়, চ) ইন্ডিয়ান, ঘ) মাইক্রোনেশীয়, ঙ) মেলানেশীয় এবং চ) পলিনেশীয়।
প্রাচীনকাল থেকে বিভিন্ন কারণে রেসমিশ্রণ ঘটার কারণে নরগোষ্ঠীর শ্রেণীবিভাগের ক্ষেত্রে বিশুদ্ধ মানদন্ড খুঁজে পাওয়া
কঠিন। বস্তুত নরগোষ্ঠীর সর্বসম্মত বা সর্বজনীন কোনো শ্রেণিবিভাগ নেই। উপর্যুক্ত বিভিন্ন ধরন বিশ্লেষণ করে সাধারণভাবে
গ্রহণযোগ্য যে শ্রেণিকরণটি করা হয় তা হলো:
১. ককেশীয়
২. মঙ্গোলীয় ( এবং
৩. নিগ্রীয়
পরবর্তীতে চতুর্থ আরেকটি উপবিভাগ যুক্ত করা হয়। সেটি হলো অস্ট্রালয়েড । এখানে উল্লেখিত প্রধান
তিনটি নরগোষ্ঠীর দৈহিক বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা হলো:
১. ককেশীয় বা শ্বেতকায় : ককেশীয়দের মাথা প্রধানত লম্বাকৃতির হয়। এদের মুখ সরু বা লম্বাকৃতির, নাক প্রধানত
খাড়া, চিকন, লম্বা ও সরু, চোখের রং হালকা থেকে কালো বাদামি, ঠোঁট পাতলা ধরনের এবং কান মাঝারি গোছের।
এদের গায়ের রং প্রধানত সাদা বা লালচে সাদা। ককেশীয়দের চুলের রং বাদামি বা সোনালি এবং এরা দীর্ঘ দেহের
অধিকারী।
২. মঙ্গোলীয় বা বাদামি : মঙ্গোলীয়দের মাথার আকৃতি প্রধানত চওড়া এবং গোল। এদের মুখাকৃতি চওড়া ও খর্বাকৃতির,
নাক মোটা এবং চ্যাপটা। এদের গায়ের রং বাদামি বা হলুদ ধরনের, ঠোঁট মাঝারি ধরনের, চোখ কালো বাদামি।
একমাত্র মঙ্গোলীয়দের চোখের পাতায় একটি ভাঁজ থাকে যাকে এপিক্যানথিক ফোল্ড বা নৃতাত্তি¡ক ভাঁজ বলে।
মঙ্গোলীয়রা উচ্চতায় মাঝারি এবং তাদের শারীরিক গঠন খুব সুঠাম ও শক্তিশালী।
৩. নিগ্রীয় বা কৃষ্ণকায় : নিগ্রোদের মাথা সাধারণত লম্বাকৃতির, তবে কারো কারো মাথা চওড়া। এদের মুখাকৃতি
ককেশীয়দের মতো অতটা লম্বা বা সরু নয়। এদের নাক মোটা ও মাংসল। এদের গায়ের রং ঘোর কৃষ্ণবর্ণের হয়ে
থাকে। নিগ্রোদের ঠোঁট মোটা ও পুরু, চোখের রং কালো, কান ছোট ও প্রশস্ত। এদের চুলের রং কালো ও চুল
কোঁকড়ানো হয়ে থাকে। নিগ্রো জনগোষ্ঠীর লোকেরা লম্বাকৃতি, মাঝারি এবং খর্বাকৃতি ধরনের হয়ে থাকে।
সারসংক্ষেপ
পৃথিবীর সব মানুষ এক ও অভিন্ন নয়। দৈহিক বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে মানবগোষ্ঠীকে বিভিন্ন উপবিভাগে বিভক্ত করা যায়।
এটিই নরগোষ্ঠী। বিভিন্ন মনীষী বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে মানবগোষ্ঠীর বিভিন্ন শ্রেণিকরণ করেছেন। ভৌগোলিক
অবস্থানের ভিত্তিতেও মানবগোষ্ঠীর শ্রেণিকরণ পরিলক্ষিত হয়। সর্বসম্মত বা সর্বজনীন কোনো শ্রেণিকরণ না থাকলেও
নরগোষ্ঠীর মোটামুটি গ্রহণযোগ্য চারটি ধরন হচ্ছে: শ্বেতকায়, কৃষ্ণকায়, মঙ্গোলীয় এবং অস্ট্রেলীয়।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন-৪.২
সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√) চিহ্ন দিন
১। ক্যারোলাস লিনিয়াস নরগোষ্ঠীর কয়টি শ্রেণির উল্লেখ করেছেন?
ক) তিনটি খ) চারটি
গ) পাঁচটি ঘ) সাতটি
২। কোন নরগোষ্ঠীর গায়ের রং বাদামি বা হলুদ ধরনের?
ক) মঙ্গোলীয় খ) ককেশীয়
গ) নিগ্রীয় ঘ) অস্ট্রেলীয়
৩। চুলের বৈচিত্র্যের ভিত্তিতে নরগোষ্ঠীর শ্রেণিকরণ করেছেন কে?
ক) জোহান ফ্রেডারিক বøুমেনবাখ খ) সি.এইচ. স্ট্রাটজ

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]