ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সংজ্ঞা লিখ বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নাম বলতে পারবে

মুখ্য শব্দ বাংলাদেশ, নৃগোষ্ঠী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, চাকমা, মারমা, সাঁওতাল।
প্রাচীন কাল থেকেই বাংলাদেশে বিভিন্ন নৃগোষ্ঠীর বাস। এখানে প্রধান নৃগোষ্ঠী হচ্ছে বাঙালি- যাদের ভাষা বাংলা
এবং অধিকাংশই সমতল ভূমিতে বসবাস করে। এছাড়া বাংলাদেশে প্রায় ৫২টির মতো ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী (রয়েছে যাদের ভাষা, সংস্কৃতি, রীতিনীতি, আচার-অনুষ্ঠান বাঙালি নৃগোষ্ঠী থেকে পৃথক। কেবল বাঙালি নৃগোষ্ঠী
নয়, প্রতিটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী অন্য ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী থেকেও আলাদা। এ অঞ্চলে বসবাসকারী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী মধ্যে চাকমা, মারমা,
ত্রিপুরা, রাখাইন, সাঁওতাল, কুকি, তঞ্চঙ্গ্যা, কুমি, লুসাই, পাংখো, খুমি, খিয়াং, বনযোগী, মণিপুরী, খাসিয়া, গারো, হাজং,
কোচ, ডালুই, রাজবংশী, মুন্ডা, ওঁরাও প্রভৃতি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সংজ্ঞা
ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী একটি স্বতন্ত্র নরবংশ বা নরগোষ্ঠী। এরা সংখ্যায় এরা ক্ষুদ্রও হতে পরে আবার বড়ও হতে পারে। নৃেেগাষ্ঠী
বলতে এমন একটি জনসমষ্টিকে বুঝায় যারা একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলে সংগঠিতভাবে বসবাস করে, যাদের নিজস্ব ভাষা ও
সংস্কৃতি রয়েছে যা অন্য জাতিগোষ্ঠী থেকে পৃথক।
বৃটিশ নৃবিজ্ঞানী গ্রন্থে বলেন, নৃেেগাষ্ঠী স্বতন্ত্র সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যের
ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে। সাংস্কৃতিক ঐক্যই এদেরকে সংগঠিত করে রাখে তে বলা হয়েছে, নৃেেগাষ্ঠী হচ্ছে একটি নির্দিষ্ট এলাকায় বসবাসরত
জনসমষ্টি যারা নিজস্ব প্রথা, ভাষা, ধর্ম ইত্যাদির অনুসারী।
তে বলেছেন,অর্থাৎ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী
হচ্ছে মানুষের এমন একটি গোষ্ঠী যারা স্বতন্ত্র ইতিহাসের সম্মিলিত অনুভ‚তি থেকে উদ্ভুত পরিচয় বহন করে।
ডরষষরধস চ. ঝপড়ঃঃ এর মতে, ঊঃযহরপ মৎড়ঁঢ় রং ধ মৎড়ঁঢ় রিঃয ধ পড়সসড়হ পঁষঃঁৎধষ ঃৎধফরঃরড়হ ধহফ ংবহংব ড়ভ
রফবহঃরঃু যিরপয বীরংঃং ধং ধ ংঁন মৎড়ঁঢ় ড়ভ ধ ষধৎমবৎ ংড়পরবঃু. অর্থাৎ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী বলতে এমন এক মানবগোষ্ঠীকে
বুঝায় যাদের একটি সাধারণ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রয়েছে। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সদস্যরা নিজস্ব পরিচিতিসহ বৃহৎ কোনো সমাজের
উপ-গোষ্ঠী হিসেবে বসবাস করে।
সমাজবিজ্ঞানী গ্রন্থে বলেন,. অর্থাৎ যারা অভিন্ন সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য ধারণ করে তাদেরকে সামাজিকভাবে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা যায়।
সুতরাং নৃগোষ্ঠী বলতে এমন একটি স¤প্রদায়কে বোঝায় যারা কোনো নির্দিষ্ট এলাকায় বসবাস করে, যাদের স্বকীয় ভাষা,
জীবনধারা এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রয়েছে। একটি নৃগোষ্ঠী অন্য নৃগোষ্ঠী থেকে স্বতন্ত্র এবং তারা তাদের স্বতন্ত্র পরিচয় সম্পর্কে সচেতন।
বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী
বাংলাদেশের প্রধান নরগোষ্ঠী বাঙালি। তবে আবহমান কাল থেকে এখানে অনেকগুলো ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী বসবাস করছে।
বাংলাদেশে এখন প্রায় ৫৭ টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী রয়েছে। তবে ২০১১ সালের আদমশুমারিতে দেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সংখ্যা
উল্লেখ করা হয়েছে ২৭টি। এ শুমারি অনুযায়ী দেশের মোট জনসংখ্যার ১.১৩ শতাংশ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর অন্তর্গত। দেশে মোট
ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী জনসংখ্যা হচ্ছে ১৫,৪৮,১৪১ জন। পরিসংখ্যান অনুযায়ী চাকমা নৃগোষ্ঠীর সংখ্যা সর্বাধিক (৪,৪৪,৭৪৮জন)।
দ্বতীয় অবস্থানে রয়ে মারমা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী। এদের সংখ্যা ২,০২,৯৭৪ জন (সূত্র: আদম শুমারি ২০১১)।
বাংলাদেশের প্রধান চারটি অঞ্চলে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে। এগুলো হচ্ছে: ক) দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল (চট্টগ্রাম ও
পার্বত্য এলাকা), খ) উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল গ) মধ্য-উত্তরাঞ্চল এবং ঘ) বৃহত্তর উত্তরবঙ্গ। এসব অঞ্চলে বসবাসকারী ক্ষুদ্র
নৃগোষ্ঠীর মধ্যে চাকমা, মারমা (মগ), মুরং (¤্রাে), ত্রিপুরা, সাঁওতাল, গারো, মণিপুরি, রাখাইন, হাজং, ভ‚ঁইয়া, ভ‚মাজি,
রাজবংশী, হোদি, পালোয়া, পাংখো, পাঙন, ডালুই, খরিয়া, সেন্ধুজ, কোটস, মাহাতো, খ্যাং, ওঁরাও, সাক, মুÐা, খাসিয়া,
তোড়ি, খারওয়ার, বর্মণ, মালো, ব্যোম, খোড়া, কুকি, তঞ্চঙ্গ্যা, লুসাই, কুকি, খুমি, বনযোগী,কাছাড়ি, পাহাড়িয়া ইত্যাদি
বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
বাংলাদেশের প্রতিটি নৃেেগাষ্ঠী স্বকীয় বৈশিষ্ট্যমÐিত। এদের প্রত্যেকের ভাষা, ধর্ম, আচার-অনুষ্ঠান, সংস্কৃতি, রীতিনীতি,
ঐতিহ্য এককথায় সামগ্রিক জীবনধারা অপরাপর জনগোষ্ঠী থেকে স্বতন্ত্র। এরা সাধারণত কৃষি, পশুপালন এবং কুটির
শিল্পজাত দ্রব্য উৎপাদন করে জীবিকা নির্বাহ করে। কিছু নৃেেগাষ্ঠীর মধ্যে পিতৃতান্ত্রিক ও পিতৃসূত্রীয়, আবার কোনো
স¤প্রদায়ের মধ্যে মাতৃতান্ত্রিক ও মাতৃসূত্রীয় পরিবার ব্যবস্থা প্রচলিত রয়েছে। প্রত্যেক নৃেেগাষ্ঠী ভিন্ন ভিন্ন ধর্মের অনুশাসন মেনে চলে।
সারসংক্ষেপ
বাংলাদেশ এক জাতিগত বৈচিত্র্যের দেশ। এখানে বাঙালি জনগোষ্ঠীর সংখ্যাধিক্য থাকলেও প্রায় ৫৭টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী এ
ভ‚খন্ডকে বৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ করেছে। বাংলাদেশের প্রধান চারটি অঞ্চলে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে। এগুলো হচ্ছে: ক)
দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল (চট্টগ্রাম ও পার্বত্য এলাকা), খ) উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল গ) মধ্য-উত্তরাঞ্চল এবং ঘ) বৃহত্তর উত্তরবঙ্গ।
পার্বত্য অঞ্চলে চাকমা, মারমা, মুরং, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা, কুকি প্রভৃতি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বাসবাস। পটুয়াখালীতে রাখাইন,
ময়মনসিংহে গারো, হাজং এবং রাজশাহী, রংপুর ও দিনাজপুরে সাঁওতাল, রাজবংশী নৃেেগাষ্ঠীর মানুষ বসবাস করে।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন-৪.৪
সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√) চিহ্ন দিন
১। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী হচ্ছে “স্বতন্ত্র ইতিহাসের সম্মিলিত অনুভ‚তি থেকে উদ্ভুত” কে বলেছেন?
ক) জে. হুটন খ) জেরি এন্ড জেরি
গ) রবার্টসন ঘ) ই.বি টেইলর
২। ২০১১ সালের আদমশুমারিতে বাংলাদেশে মোট কয়টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কথা বলা হয়েছে?
ক) ১১ টি খ) ১৭ টি
গ) ২৭ টি ঘ) ৩৯ টি
৩। বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যার কত শতাংশ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত?
ক) ০.১ শতাংশ খ) ১.১ শতাংশ
গ) ১.১৩ শতাংশ ঘ) ১১ শতাংশ

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]