ইতিহাসের সাথে অর্থনীতি ও ভূগোলের সম্পর্ক আলোচনা কর ।

উত্তর ভূমিকা : মানুষের অতীত কর্মের সত্যনিষ্ঠ বিবরণই ইতিহাস। ইতিহাস কোনো দেশ, জাতি, সভ্যতার ধারাবাহিক বিবরণ বা সভ্যতার জনগোষ্ঠীর অতীত কার্যাবলি নিয়ে আলোচনা করে। মানুষের অতীত কর্মের মধ্যে যেগুলো ভৌগোলিক পরিবেশ দ্বারা প্রভাবিত সেগুলো ভৌগোলিক ইতিহাসের আলোচ্য বিষয়। আর যেগুলো অর্থসংক্রান্ত নিয়ামক দ্বারা প্রভাবিত সেগুলো অর্থনৈতিক ইতিহাসের আওতাভুক্ত। সুতরাং ইতিহাসের অন্যতম আলোচ্য বিষয় হলো ভৌগোলিক ও অর্থনৈতিক ইতিহাস । তাই ইতিহাসের সাথে সম্পর্কের দিক থেকেও অত্যন্ত গুরুত্ব পাচ্ছে ভূগোল ও অর্থনীতি ।
> ইতিহাসের সাথে অর্থনীতি ও ভূগোলের সম্পর্ক : নিম্নে ইতিহাসের সাথে অর্থনীতি ও ভূগোলের সম্পর্ক ব্যাখ্যা করা হলো : ক. ইতিহাসের সাথে অর্থনীতির সম্পর্ক : ইতিহাসের সাথে অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। নিম্নে ইতিহাসের সাথে অর্থনীতির সম্পর্ক তুলে ধরা হলো :
১. অতীত অর্থনীতি বিশ্লেষণ : ইতিহাস গবেষণা করতে গিয়ে অতীত অর্থনীতির সংশ্লিষ্ট অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়। একজন ইতিহাসবিদ তার ইতিহাস সংশ্লিষ্ট আলোচনায় অর্থনীতি নামক বিষয়টি আলোচনায় আনতে পারেন ঠিকই কিন্তু বিষয়টির গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তাসহ নানা আঙ্গিকের বিশ্লেষণ করার জন্য ইতিহাসবিদকে অবশ্যই একজন অর্থনীতিবিদের দ্বারস্থ হতে হবে। কোনো সাহিত্যিক সূত্র, পর্যটনের বিবরণ বা প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ থেকে অর্থনৈতিক কাঠামো ও জীবনব্যবস্থা সংক্রান্ত কোনো অনুমান করা হলে তার বিচারবিবেচনা ও বিশ্লেষণের জন্য একজন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অবশ্যই গ্রহণ করতে হবে।
২. তথ্য যাচাই : ইতিহাসে প্রাপ্ত অর্থনীতি সংক্রান্ত তথ্য ও এর সত্যাসত্য যাচাইবাছাই ও বিচারবিবেচনার ক্ষেত্রে একজন ইতিহাসবিদকে অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ করতে হয়। ঐতিহাসিকের গবেষণা থেকে অতীতের অর্থনৈতিক কাঠামো সংশ্লিষ্ট এমন কিছু তথ্য বের হয়ে আসতে পারে যে তথ্যগুলোকে বাস্তবতার প্রেক্ষিতে অবাস্তব ও ভিত্তিহীন মনে হতে পারে। তবে বিষয়টি বস্তুত যৌক্তিক না ভিত্তিহীন এই দায়ভার একজন ইতিহাসবিদের নেওয়ার প্রয়োজন নেই। তিনি তথ্যসূত্র হাজির করে একজন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে এ ব্যাপারে যৌক্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেন।
৩. কৌশল : ইতিহাসে প্রাপ্ত তথ্যসূত্রের আলোকে অতীত অর্থনীতির কৌশলগত নানা দিক বিশ্লেষণ করতে গেলে একজন ইতিহাসবিদের অর্থনীতি সম্পর্কে ধারণা থাকা অতি জরুরি। একটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থার ঢালাও বিবরণ ইতিহাসে থাকতে পারে। তবে তা থেকে ইতিহাসের কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার কৌশলগত দিকে একজন ইতিহাসবিদকে সহায়তা করতে পারে একজন অর্থনীতিবিদ বা অর্থনৈতিক ইতিহাস ।
৪. অর্থনৈতিক কাঠামো : ইতিহাস থেকে প্রাপ্ত তথ্যসূত্রের ভিত্তিতে যখন অতীতের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা পুনর্গঠন করার চেষ্টা করা হয় তখন একজন ইতিহাসবিদ তথ্যপ্রমাণ প্রাপ্তির পর তা বিশ্লেষণের জন্য অর্থনীতিবিদের পরামর্শ নিতে পারেন । একজন ইতিহাসবিদ অতীত পুনর্গঠনে যতটা পারদর্শী অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে তিনি ততটা পারদর্শী নাও হতে পারেন । এ কাজে অর্থনীতিবিদের সম্পৃক্ততা অর্থনৈতিক ইতিহাসকে আরও বাস্তবসম্মত ও গ্রহণযোগ্য করে তুলতে সাহায্য করে ।
অর্থনৈতিক বিবর্তনগত : প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে শুরু হয়ে আজ পর্যন্ত মানুষের অর্থনৈতিক কাঠামোর ধরন একরকম ছিল না। যুগের চাহিদার সাথে মিল রেখে এবং যুগের বিবর্তনের সাথে সংগতি রেখে ধারাবাহিক অর্থনৈতিক কাঠামোতে নানা ক্ষেত্রে নানা আঙ্গিকে পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। বৃহৎ পরিসরে সংঘটিত অর্থনৈতিক কাঠামোর এই পরিবর্তন সম্পর্কে ভালোভাবে বুঝতে গেলে একজন ইতিহাসবিদকে অর্থনীতিবিদের সাহায্য নিতে হবে ।
খ. ইতিহাসের সাথে ভূগোলের সম্পর্ক : নিম্নে ইতিহাসের সাথে ভূগোলের সম্পর্ক ব্যাখ্যা করা হলো :
১. সংস্কৃতির সূচনা : কোনো নির্দিষ্ট ভূখণ্ডের মানুষের সংস্কৃতির সূচনার সাথে এর ভৌগোলিক পরিমণ্ডলের প্রভাব প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। অনেক পূর্ব থেকেই কোনো ভূখণ্ড মানুষের বসবাসের জন্য কতটুকু উপযোগী তা নির্ধারিত হয় ঐ অঞ্চলের প্রাকৃতিক পরিবেশের ওপর ভিত্তি করে। ফলে প্রাকৃতিক অনুকূল পরিবেশে সহজলভ্য জীবনধারণ উপাদান থাকলে সহজেই একটি ভূখণ্ড মানুষের আবাসস্থল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। এসব বিষয় বিশ্লেষণ করতে গেলে একজন ইতিহাসবিদকে ভূগোল সম্পর্কিত জ্ঞান অর্জন করতে হয় ।
২. সংস্কৃতির বিকাশ : প্রাচীনকালে বসবাসের জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধা প্রাপ্তি সাপেক্ষে একটি নির্দিষ্ট স্থানে মানুষ বসতি গড়ে তুলতো। এক্ষেত্রে নদী তীরবর্তী উর্বর ভূমিতে মানুষ সহজেই বসতি নির্মাণ করে তার সংস্কৃতি বিকশিত করার পথকে প্রশস্ত করেছে। এক্ষেত্রে মানব সভ্যতার ইতিহাস কিংবা সংস্কৃতি বিশ্লেষণে একজন ইতিহাসবিদকে সংস্কৃতি সংক্রান্ত ধারণা নিতে হয় ।
৩. অর্থনৈতিক : মানুষের অর্থনৈতিক জীবনব্যবস্থা অনেকাংশেই তার পরিবেশের সাথে সম্পর্কযুক্ত। সভ্যতা বিকাশের ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে, দেখা যায়, অনুকূল পরিবেশ তথা ভৌগোলিক অবস্থান পাওয়াতে মানুষ কৃষিতে বিপ্লব ঘটিয়েছিল। এই উন্নতি তাদের অর্থনীতিকে বিকশিত করেছে। অর্থনীতি বিকশিত হয়ে তাদের সভ্যতার অগ্রগতিকে আরেকটি সোপান পার করে ওপরে ওঠে দাঁড়ানোর পথ করে দিয়েছে। বিষয়গুলো বুঝার জন্য একজন ইতিহাসবিদকে ভৌগোলিক জ্ঞান আয়ত্ত করতে হয়।
৪. প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন আবিষ্কার : কালের গহব্বরে হারিয়ে যাওয়া মানব বসতির চিহ্ন আবিষ্কার ও শনাক্ত করার ক্ষেত্রে ইতিহাস গবেষককে ঐ স্থানের ভৌগোলিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে হবে। কেননা মানব বসতির চিহ্ন বা ধ্বংসাবশেষ টিকে থাকা বা চিরতরে বিনষ্ট হওয়ার ক্ষেত্রে ঐ অঞ্চলের ভৌগোলিক পরিবেশ অবদান রাখতে পারে।
৫. ইতিহাসের ধারাবাহিকতা : একটি নির্দিষ্ট ভূখণ্ডে ইতিহাসের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে পরিবেশের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। পরিবেশের বিপর্যয় ক্ষেত্রবিশেষ রাজবংশীয় শাসনের পতন ঘটাতে পারে। এর প্রভাবে একটি জনপদ কালের গহ্বরে হারিয়ে যেতে পারে। ফলে কোনো নির্দিষ্ট ভৌগোলিক পরিমণ্ডলের সংস্কৃতি কিংবা রাজনৈতিক ইতিহাসের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে ভৌগোলিক পরিবেশের অবদান অনস্বীকার্য। এজন্য ভূগোলের জ্ঞান না থাকলে একজন ইতিহাসবিদের পক্ষে বিষয়টি আলোচনা করা কঠিন হয়ে পড়ে।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, অতীত অর্থনীতির বিশ্লেষণ, অতীত অর্থনৈতিক কাঠামো বিশ্লেষণ, অর্থব্যবস্থার সংস্কার ইত্যাদি জানতে ইতিহাসবিদের অর্থনীতির সাহায্য প্রয়োজন হয়। অপরদিকে, সংস্কৃতির সূচনা পর্ব, সংস্কৃতির বিকাশে প্রাকৃতিক পরিবেশ মানুষের ওপর যে প্রভাব বিস্তার করেছে সে সম্পর্কে জানতে ইতিহাসবিদের ভূগোলেরও সাহায্য প্রয়োজন। এভাবে উভয় শাস্ত্র মানুষের অতীত ইতিহাস সম্পর্কে আমাদেরকে জানতে সাহায্য করে । যে কারণে বলা যায়, ইতিহাসের সাথে অর্থনীতি ও ভূগোলের সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ।

ইতিহাসের সাথে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও ভূগোলের সম্পর্ক নিরূপণ কর।

উত্তর ভূমিকা : “ইতিহাসের সাথে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও ভূগোলের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। ইতিহাসশাস্ত্র যখন মানুষের রাষ্ট্রগঠনের সম্মিলিত প্রচেষ্টা এবং রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রের পারিপার্শ্বিক ভৌগোলিক অবস্থান নিয়ে আলোচনা করে তখন ইতিহাস, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও ভূগোলশাস্ত্র একই সূত্রে আবদ্ধ কোনো জ্ঞানশাস্ত্র হয়ে পড়ে। সম্পর্কের এই গভীরতার ফলে ইতিহাসের পরিধি যেমন বিস্তৃত হয়েছে তেমনি ভূগোলশাস্ত্র ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানশাস্ত্র তাদের অতীত ব্যবস্থা বা নিয়ামক জনগণের ওপর কেমন প্রভাব বিস্তার করতো তা সম্পর্কে জানার প্রয়াস পেয়েছে। তাই নিঃসন্দেহেই বলা চলে ইতিহাসের সাথে ভূগোল ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ।
" ইতিহাসের সাথে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও ভূগোলের সম্পর্ক : নিম্নে ইতিহাসের সাথে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও ভূগোলের সম্পর্ক নিরূপণ করা হলো :
ইতিহাসের সাথে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সম্পর্ক : নিম্নে ইতিহাসের সাথে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সম্পর্ক নিরূপণ করা হলো :
১. ঐতিহাসিক সূত্র : ইতিহাস গবেষণার জন্য বিভিন্ন উপায়ে সংগৃহীত ঐতিহাসিক সূত্রের যথাযথ রাজনৈতিক বিশ্লেষণ প্রতিষ্ঠার জন্য একজন ইতিহাসবিদ রাষ্ট্রবিজ্ঞান থেকে অবারিত সহায়তা গ্রহণ করেন। অতীতে ঘটে যাওয়া কোনো গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ঘটনাকে মাত্র কয়েকটা সূত্র থেকে বা বস্তুগত প্রমাণ থেকে বিশ্লেষণ করে প্রতিষ্ঠা করা বেশ কঠিন কাজ । এই কাজ করতে গিয়ে একজন ইতিহাসবিদ রাজনৈতিক কোনো বিশেষজ্ঞ বা রাষ্ট্রবিজ্ঞানীর পরামর্শ নিলে কাজটা অনেক সহজেই সম্পন্ন করতে পারেন ।
২. রাজনৈতিক কাঠামো বিশ্লেষণ : ইতিহাসের তথ্যপ্রমাণের আলোকে আমরা জানতে পারি, অতীত জনপদের রাজনৈতিক কাঠামো কেমন ছিল, তখনকার মানুষ কী ধরনের আইনকানুন, বিচারব্যবস্থা ও সরকার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হতো, এ ধরনের কাঠামো প্রতিষ্ঠার কারণ কী, এর ফলে তৎকালীন মানুষ কী ধরনের সুবিধা ও অসুবিধার সম্মুখীন হতো এসব যথার্থভাবে বিশ্লেষণ করতে গিয়ে একজন ইতিহাসবিদকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীর শরণাপন্ন হতে হয় ।
৩. শাসনতান্ত্রিক সংস্কার : সরকার ব্যবস্থায় অনেক সময় শাসনতান্ত্রিক সংস্কার কোনো কোনো ক্ষেত্রে অনেক জটিলতার সৃষ্টি করতে পারে । সেক্ষেত্রে এরূপ জটিলতার কোনো অতীত উদাহরণ থাকলে ইতিহাস থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বা রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেন। এর পাশাপাশি কী সমস্যার উদ্ভব ঘটাতে পারে এবং কোন ধরনের শাসনকাঠামো কীরূপ, সে সম্পর্কেও তারা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেন। আর কোনো কোনো রাজনৈতিক পরিপ্রেক্ষিতে কী কী সিদ্ধান্ত নিলে তা রাষ্ট্রতন্ত্রের জন্য উপকারী হয়ে ওঠে সে ব্যাপারেও তাদের জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ সহজতর হয় ।
৪. রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত : একটি অজানা বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় নীতিনির্ধারক মহল ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানীগণ ইতিহাস থেকে সাহায্য নিতে পারেন । বর্তমানে কোনো একটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে দেখা যায় বাস্তব বিষয়টি বিদ্যমান অবস্থার চেয়েও জটিল আকার ধারণ করেছে । কিন্তু ইতিহাসে দেখা যায় এই জাতীয় ঘটনা অতীতেও ঘটেছিল । তখন বিষয়টি বিশ্লেষণ করতে গিয়ে একজন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বা রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারক খুব সহজেই ইতিহাস থেকে ধারণা নিয়ে বেশ উপকৃত হতে পারেন ।
৫. তথ্যের যাচাইকরণ : একজন ইতিহাসবিদ অতীত সমাজ ও সভ্যতা নিয়ে প্রতিনিয়ত গবেষণায় নিয়োজিত থাকেন। অতীতের কোনো সমাজ, সম্প্রদায় এবং রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিবরণ যথাযথভাবে সবসময় ইতিহাসবিদের নিকট পৌছায় না। ইতিহাসবিদ বিভিন্নভাবে বিকৃত তথ্য পেয়ে থাকেন। ইতিহাসবিদকে এই ধরনের বিকৃত তথ্য থেকে ইতিহাস রচনাকে শুদ্ধভাবে প্রতিষ্ঠিত রাখতে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীর সাহায্য নিতে হয়। তিনি তার প্রাপ্ত তথ্যের সাথে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীর তথ্যের উৎস মিলিয়ে নিরপেক্ষ ও সত্য ইতিহাস রচনার প্রয়াস পান ।
খ. ইতিহাসের সাথে ভূগোলের সম্পর্ক : নিম্নে ইতিহাসের সাথে ভূগোলের সম্পর্ক নিরূপণ করা হলো :
১. সংস্কৃতির সূচনা : কোনো নির্দিষ্ট ভূখণ্ডের মানুষের সংস্কৃতির সূচনার সাথে এর ভৌগোলিক পরিমণ্ডলের প্রভাব প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। অনেক পূর্ব থেকেই কোনো ভূখণ্ড মানুষের বসবাসের জন্য কতটুকু উপযোগী তা নির্ধারিত হয় অঞ্চলের প্রাকৃতিক পরিবেশের ওপর ভিত্তি করে। ফলে প্রাকৃতিক অনুকূল পরিবেশে সহজলভ্য জীবনধারণ উপাদান থাকলে সহজেই একটি ভূখণ্ড মানুষের আবাসস্থল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। এসব বিষয় বিশ্লেষণ করতে গেলে একজন ইতিহাসবিদকে ভূগোল সম্পর্কিত জ্ঞান অর্জন করতে হয় ।
২. সংস্কৃতির বিকাশ : প্রাচীনকালে বসবাসের জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধা প্রাপ্তি সাপেক্ষে একটি নির্দিষ্ট স্থানে মানুষ বসতি গড়ে তুলতো । এক্ষেত্রে নদী তীরবর্তী উর্বর ভূমিতে মানুষ সহজেই বসতি নির্মাণ করে তার সংস্কৃতি বিকশিত করার পথকে প্রশস্ত করেছে। এক্ষেত্রে মানব সভ্যতার ইতিহাস কিংবা সংস্কৃতি বিশ্লেষণে একজন ইতিহাসবিদকে সংস্কৃতি সংক্রান্ত ধারণা নিতে হয় । ৩. অর্থনৈতিক : মানুষের অর্থনৈতিক জীবনব্যবস্থা অনেকাংশেই তার পরিবেশের সাথে সম্পর্কযুক্ত। সভ্যতা বিকাশের ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, অনুকূল পরিবেশ তথা ভৌগোলিক অবস্থান পাওয়াতে মানুষ কৃষিতে বিপ্লব ঘটিয়েছিল। এই উন্নতি তাদের অর্থনীতিকে বিকশিত করেছে। অর্থনীতি বিকশিত হয়ে তাদের সভ্যতার অগ্রগতিকে আরেকটি সোপান পার করে ওপরে ওঠে দাঁড়ানোর পথ করে দিয়েছে। বিষয়গুলো বুঝার জন্য একজন ইতিহাসবিদকে ভৌগোলিক জ্ঞান আয়ত্ত করতে হয়।
৪. প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন আবিষ্কার : কালের গহব্বরে হারিয়ে যাওয়া মানব বসতির চিহ্ন আবিষ্কার ও শনাক্ত করার ক্ষেত্রে ইতিহাস গবেষককে ঐ স্থানের ভৌগোলিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে হবে। কেননা মানব বসতির চিহ্ন বা ধ্বংসাবশেষ টিকে থাকা বা চিরতরে বিনষ্ট হওয়ার ক্ষেত্রে ঐ অঞ্চলের ভৌগোলিক পরিবেশ অবদান রাখতে পারে ।
৫. ইতিহাসের ধারাবাহিকতা : একটি নির্দিষ্ট ভূখণ্ডে ইতিহাসের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে পরিবেশের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। পরিবেশের বিপর্যয় ক্ষেত্রবিশেষ রাজবংশীয় শাসনের পতন ঘটাতে পারে। এর প্রভাবে একটি জনপদ কালের গহ্বরে হারিয়ে যেতে পারে। ফলে কোনো নির্দিষ্ট ভৌগোলিক পরিমণ্ডলের সংস্কৃতি কিংবা রাজনৈতিক ইতিহাসের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে ভৌগোলিক পরিবেশের অবদান অনস্বীকার্য। এজন্য ভূগোলের জ্ঞান না থাকলে একজন্ ইতিহাসবিদের পক্ষে বিষয়টি আলোচনা করা কঠিন হয়ে পড়ে।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, ইতিহাসের সাথে ভূগোল ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে আবদ্ধ। এ তিনটি বিষয়ই সামাজিক বিজ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ শাখা হিসেবে বিবেচিত। জ্ঞানের শাখা হিসেবে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও ভূগোল যেমন বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইতিহাস থেকে তথ্য ধার্ করে তেমনি ইতিহাসও এদের বদৌলতে সমৃদ্ধ হয়ে ওঠে ! সময়ের বিবর্তন যত বেশি হচ্ছে এদের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্কোন্নয়নও তত গাঢ় হচ্ছে ।

ইতিহাসের সাথে বিজ্ঞানের সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য আলোচনা কর ।

উত্তর ভূমিকা : ইতিহাস হলো সমাজবিজ্ঞান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ভাষাবিজ্ঞান, ভূ-তাত্ত্বিক বিজ্ঞান ও জনসংখ্যা বিজ্ঞানের ন্যায় বিজ্ঞান । বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক ও বিভিন্ন বিজ্ঞান যেমন বিভিন্ন দিকের উন্নয়ন করে মানুষের কল্যাণসাধন করে থাকে তেমনি ইতিহাস মানুষের মানবিক গুণাবলিকে বিকশিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ইতিহাস সমাজ ও মানুষকে নিয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোনো বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব বা সূত্রের আলোকে কাজ করে না। মানববিদ্যার বিভিন্ন দিক উন্মোচন করতে গিয়ে ইতিহাসের কার্যকরণ ব্যাখ্যা সর্বদা একইরূপ হয় না। এটি মানব মনের সুপ্ত বাসনার ওপর নির্ভর করে। এ কারণে আবার অনেকে ইতিহাসকে মানববিদ্যা অর্থাৎ কলা অনুষদের পর্যায়ভুক্ত করে।
• ইতিহাসের সাথে বিজ্ঞানের সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য : ইতিহাসের সাথে বিজ্ঞানের অনেক ক্ষেত্রেই যেমন যথেষ্ট মিল পরিলক্ষিত হয় তেমনি আবার অনেক জায়গাতে বেশ অমিলও দেখা যায়। ফলে ইতিহাসের সাথে বিজ্ঞানের সম্পর্ক নিয়ে দুটি ভিন্ন মতের পণ্ডিত শ্রেণির আবির্ভাব ঘটেছে। নিম্নে ইতিহাসের সাথে বিজ্ঞানের সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :
ক. ইতিহাসের সাথে বিজ্ঞানের সাদৃশ্য : বিজ্ঞানের ইংরেজি প্রতিশব্দ Science ল্যাটিন শব্দ Scientea থেকে এসেছে। যার অর্থ হলো জানা। ইতিহাসের ইংরেজি শব্দ History ল্যাটিন শব্দ থেকে এসেছে। যার অর্থ হচ্ছে সত্যকে উদ্ঘাটনের জন্য পরিকল্পিত অনুসন্ধান। বিজ্ঞান হলো অজানাকে আবিষ্কারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা, তেমনিভাবে ইতিহাসও অজানাকে জানার জন্য ঐকান্তিকভাবে চেষ্টা করে থাকে। তাই ইতিহাস ও বিজ্ঞানের মধ্যে গভীর সম্পর্ক রয়েছে। নিম্নে ইতিহাসের সাথে বিজ্ঞানের সাদৃশ্য সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো :
১. গবেষণা পদ্ধতি : নিজস্ব পদ্ধতি ও সত্যানুসন্ধানের মাধ্যমে ইতিহাসচর্চা পরিচালিত হয়। এ কারণে ইতিহাসকে বিজ্ঞানসম্মত জ্ঞান বলা খুবই যুক্তিসংগত। ঐতিহাসিকগণ বিজ্ঞানের আদলে মানুষের অতীত কর্মকাণ্ডকে তাদের গবেষণার বিষয়বস্তু হিসেবে ঐ নির্ধারণ করে বিভিন্ন প্রক্রিয়া, পরীক্ষানিরীক্ষা ও ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের মাধ্যমে সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার চেষ্টা করে থাকেন।
২. সত্য উদঘাটনে : ইতিহাস নিয়মানুগভাবে আহরিত পরস্পর সম্পর্কিত জ্ঞান । এজন্য ইতিহাসকে বিজ্ঞান বলা যায় । এটা বিমূর্ত না হয়ে মূর্ত বিজ্ঞান এবং এটা কোনো সাধারণ বিষয়ে সত্যে উপনীত না হয়ে এককভাবে ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ে সত্য উদঘাটন করে থাকে ।
৩. গবেষণাগার ক্ষেত্রে : গবেষণার জন্য পদার্থবিজ্ঞান, রসায়নবিজ্ঞান, চিকিৎসাবিজ্ঞান প্রভৃতির যেমন পরীক্ষাগার আছে ইতিহাসের ঠিক তেমন কোনো পরীক্ষাগার নেই। তবে হাজার হাজার বছরের পুরনো জীবাশ্ম, অনুরূপ মুদ্রা, বিভিন্ন প্রত্নবস্তু প্রভৃতি নিয়ে গবেষণা করে সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার জন্য ঐতিহাসিকের রয়েছে যথোপযুক্ত গবেষণাগার। সেজন্য ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ, অনুসন্ধিৎসুকর্ম ও গবেষণামূলক পদ্ধতিগত দিক বিবেচনায় ইতিহাসকে বিজ্ঞানের পর্যায়ভুক্ত বলা চলে ।
৪. তথ্য যাচাইয়ে : তাছাড়া সমালোচনামূলক বিজ্ঞান হিসেবে ঐতিহাসিকগণ ইতিহাসকে নিম্নোক্ত তিনটি কার্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত করেছেন। যেমন— i. সব প্রকার প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদঘাটনের লক্ষ্যে সংঘবদ্ধ অনুসন্ধান; ii. উদঘাটিত ও প্রাপ্ত তথ্যসমূহের যথার্থতা নিরূপণের জন্য প্রকৃত বিচারবিশ্লেষণ ও iii. তথ্যসমূহের সঠিক, নিখুঁত ও বিশদ ব্যাখ্যা প্রদান । যথাযথ ও বস্তুনিষ্ঠ ইতিহাস রচনার জন্য ঐতিহাসিকগণ একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এগিয়ে যান। তাই ইতিহাসকে এসব কারণে বিজ্ঞান বলা শ্ৰেয় ।
খ. ইতিহাসের সাথে বিজ্ঞানের বৈসাদৃশ্য : প্রক্রিয়াগত দিক থেকে ইতিহাস ও বিজ্ঞানের মধ্যে বিস্তর পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। নিম্নে ইতিহাসের সাথে বিজ্ঞানের বৈসাদৃশ্য সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো :
১. সত্য প্রতিষ্ঠা : যেসব পণ্ডিত ইতিহাসকে বিজ্ঞান হিসেবে স্বীকার করতে চান না তাদের মধ্যে স্পেন্সার, ওয়ালপোল্ড প্রমুখের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তাদের মতে, বিজ্ঞানের বৈশিষ্ট্যগুলো বিজ্ঞানের মতো করে ইতিহাসে প্রতিফলিত হয় না। যেমন— দুই অণু হাইড্রোজেন ও এক অণু অক্সিজেন একত্রিত হয়ে পানি উৎপন্ন হয় । এটি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত ও প্রতিষ্ঠিত সত্য। কিন্তু ইতিহাসে এরূপ সত্য প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব নয় ।
২. তথ্যগত দিক : ইতিহাসকে যারা বিজ্ঞানের পর্যায়ভুক্ত মনে করেন না তাদের যুক্তি হলো ইতিহাসের কোনো প্রামাণ্য সূত্র নেই। তাছাড়া ইতিহাসের বিষয়বস্তু ও ব‍্যবহৃত তথ্যের অনেক সময় পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। অর্থাৎ তারা ইতিহাসের অকাট্যতা ও প্রামাণ্যতার বৈশিষ্ট্যকে স্বীকার করতে প্রস্তুত নন। প্রকৃত অর্থে প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে প্রাচীন, মধ্যযুগ, এমনকি আধুনিক যুগের অষ্টাদশ শতক পর্যন্ত যে ইতিহাস রচিত হয়েছে সেগুলোর বস্তুনিষ্ঠতা নিয়ে কোনো কোনো ক্ষেত্রে কিছুটা মতানৈক্য থাকতে পারে। কারণ উনিশ শতকের পূর্ব পর্যন্ত সব ক্ষেত্রে প্রামাণ্য তথ্যের ভিত্তিতে ইতিহাস রচনা করা সম্ভব হয়নি ।
৩. উপাদানগত দিক : ইতিহাস মানুষের জীবনধারণের উপাদান ধর্ম, সংস্কৃতি, অতীত ব্যবসা বাণিজ্য ও বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদান নিয়ে সত্যানুসন্ধানের লক্ষ্যে গবেষণা করে। কিন্তু বিজ্ঞানের গবেষণার বিষয়বস্তুসমূহ বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। বিজ্ঞান মানুষের সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দিক যেমন— স্বাস্থ্যবিদ্যা, আলো, তরঙ্গ, মহাকর্ষ, অভিকর্ষ, খাদ্যবস্তুর বিভিন্ন উপাদান, আমাদের পারিপার্শ্বিক ভৌত ও রাসায়নিক জগৎ সম্পর্কে আলোচনা করে। বিষয়বস্তুগত দিক থেকেও এই দুই বিষয় একে অপরের সাথে সংশ্লিষ্ট এমন শাস্ত্র ভাবার কোনো যৌক্তিকতা নেই ।
৪. সংস্কৃতির বিকাশ : সংস্কৃতির উত্তরোত্তর বিকাশ কীভাবে মানুষের সংস্কৃতিকে সভ্যতার দিকে ধাবিত করেছে আর এই সভ্যতার ক্রমাগত উন্নয়ন কীভাবে বর্তমান আধুনিক যুগে প্রবেশ করেছে এর সবই ইতিহাস ও মানবিকবিদ্যার আলোচিত বিষয়। অন্যদিকে, মানুষ তার জীবনমান উন্নয়নে কোন ধরনের বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার সম্ভবপর হয়েছে এবং এগুলো দ্বারা আরও কীভাবে কার্যকরভাবে বিজ্ঞানের উন্নয়ন ঘটানো যায় ইত্যাদি বিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, ইতিহাসের কিছু কিছু বৈশিষ্ট্য যেমন অনুসন্ধান ও সত্যনিষ্ঠতা এবং গবেষণা ইতিহাসকে কিছুটা বিজ্ঞানের প্রকৃতি দান করেছে। তবে ইতিহাসের আলোচনার মূল ক্ষেত্ৰ হলো মানুষ ও মানুষের পারিপার্শ্বিকতা। তাই বলা যায়, বিজ্ঞানের বৈশিষ্ট্যের চেয়ে ইতিহাসে মানববিদ্যার বৈশিষ্ট্যই বেশি গ্রহণযোগ্য মনে হয়। ইতিহাসের এরূপ বৈশিষ্ট্য ও প্রকৃতিকে অধিকাংশ পণ্ডিতই সমাজবিজ্ঞানের অন্তর্ভুক্ত করেন। পণ্ডিতগণের মতের সমর্থনে আমরাও বলতে পারি ইতিহাসের বিজ্ঞাননির্ভর যে প্রকৃতি রয়েছে তা মূলত সমাজবিজ্ঞানের পর্যায়ভুক্ত।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]