‘ইতিবৃত্ত' কী? ‘ইতিবৃত্ত' রচনার পটভূমি লেখ ৷

উত্তর ভূমিকা : সর্বপ্রথম মানব রচিত ইতিহাস গ্রন্থের নাম ‘ইতিবৃত্ত' বা 'The Histories.' বিখ্যাত এ গ্রন্থটির রচনাকারী হলেন গ্রিক ঐতিহাসিক হেরোডোটাস। হেরোডোটাস সম্পর্কে জানার তেমন কোনো উৎস খুঁজে পাওয়া যায় না। হেরোডোটা সম্পর্কে জানার জন্য তার রচিত ‘ইতিবৃত্ত' ও দশম শতাব্দীতে প্রকাশিত ‘সুদা' নামক গ্রন্থের আশ্রয় নিতে হয় । ইতিবৃত্ত : ইতিহাসে সর্বপ্রথম যার নাম উচ্চারিত হয় তিনি হলেন হেরোডোটাস। তিনি জীবনে বহুদেশ ভ্রমণ করে অভিজ্ঞতার আলোকে (The Histories) রচনা করেন 'ইতিবৃত্ত'। এটি পৃথিবীর প্রথম ইতিহাসগ্রন্থ। 'ইতিবৃত্তের' বিষয়বস্তু ছিল গ্রিক-পারসিক যুদ্ধের ধারাবাহিক বিবরণ। সেই কারণে এই গ্রন্থটি অনেকের কাছে গ্রিক-পারসিক যুদ্ধের ইতিহাস নামে খ্যাত। হেরোডোটাস জীবনের প্রথম দিকে রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। তার জীবনের নানা উত্থানপতনের মধ্য দিয়ে ‘ইতিবৃত্ত' গ্রন্থটি রচিত হয়েছে।
● 'ইতিবৃত্ত' রচনার পটভূমি : হেরোডোটাস রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত থাকার কারণে লিডিয়ার রাজা ক্লোসাসের রোষানলে পড়ে স্বদেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হন। তিনি প্রথমে এথেন্সে গমন করেন। তিনি আইওনিয়া ও এশিয়ান দার্শনিকদের কাছ থেকে ইতিহাস চর্চার শিক্ষালাভ করেন। এটি ছিল বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের এক নবতর পদ্ধতি। তিনি মানুষকে জানার আকাঙ্ক্ষায় পশ্চিম এশিয়া, মিসর, গ্রিক, সিসিলি, ইতালিতে ভ্রমণ করেন। ভ্রমণের সময় তিনি বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের সংস্পর্শে আসেন । তিনি বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান পরিদর্শন করেন। এ থেকে বিপুল পরিমাণ তথ্যসংগ্রহ করেন। তার দীর্ঘ ভ্রমণের ফলে তিনি যেসব তথ্য পান, তার সমন্বয়ে রচনা করেন ‘ইতিবৃত্ত' বা 'Histories. '
ইতিবৃত্তের ভাগসমূহ : ইতিহাসের জনক হেরোডোটাসের রচিত 'ইতিবৃত্তের' মূল বিষয়বস্তু ছিল গ্রিক-পারসিক 'যুদ্ধের ধারাবাহিক বিবরণ। ‘ইতিবৃত্তে' স্থান পেয়েছে গ্রিকদের বীরত্ব গাথা। গ্রিক ঐতিহাসিক J.B. Bury এর মতে, “ইতিবৃত্ত' তিন ভাগে বিভক্ত। প্রতিটি ভাগকে আবার তিনটি করে মোট নয়টি উপবিভাগে বিভক্ত করা হয়েছে ।
:
প্রথম ভাগ : ‘ইতিবৃত্তের' প্রথম ভাগে সাইরাস ও কেম্বিসেসের রাজত্বকাল এবং ডেরিয়াসের সিংহাসনের বিবরণ, মিসর ও এশিয়ার ভৌগোলিক বিবরণ রয়েছে।
দ্বিতীয় ভাগ : ‘ইতিবৃত্তের’ দ্বিতীয় ভাগে ইউরোপের বিবরণ ও রাজা ডেরিয়াসের রাজত্বকালের পূর্ণ বিবরণ পাওয়া যায় । তৃতীয় ভাগ : ‘ইতিবৃত্তের' তৃতীয় ভাগে রাজা জারেক্সের রাজত্বকাল ও গ্রিক জাতির বিবরণ পাওয়া যায় । উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, হেরোডোটাস ইতিহাস রচনায় পথিকৃৎ হয়ে আছেন। তার রচিত ‘ইতিবৃত্ত’ গ্রন্থ থেকে আমরা তৎকালীন সময়ের ধারাবাহিক রাজনৈতিক ইতিহাসসহ অন্যান্য বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও জ্ঞান অর্জন করতে পারি । যতদিন পৃথিবী থাকবে, ততদিন হেরোডোটাসের ‘ইতিবৃত্ত’ গ্রন্থটি ইতিহাসের অর্জনে এক মাইলফলক হয়ে থাকবে ।
‘ইতিবৃত্ত' কী? ‘ইতিবৃত্ত’ লেখার উদ্দেশ্য কী ছিল ?
উত্তর ভূমিকা : পৃথিবীর প্রথম লিখিত ইতিহাস গ্রন্থ হচ্ছে ‘ইতিবৃত্ত'। ‘ইতিবৃত্ত' ইতিহাসের জনক হেরোডোটাস কর্তৃক রচিত হয়। এই গ্রন্থে সর্বপ্রথম মানুষের অতীত কার্যক্রম গবেষণা ও নিয়মতান্ত্রিক লিখিত বিষয় বুঝানোর জন্য 'Historia' শব্দটি ব্যবহার করেন। এর ফলে ইতিহাস স্বতন্ত্র রূপ ধারণ করে। এ গ্রন্থে গ্রিক-পারসিক যুদ্ধের বীরত্বগাথা বর্ণিত আছে বলে ‘ইতিবৃত্তকে' গ্রিক-পারসিক যুদ্ধের ইতিহাসও বলা হয় ।
ইতিবৃত্ত : ‘ইতিবৃত্ত' মূলত একটি ইতিহাস গ্রন্থ। এটি ইতিহাসের জনক হিরোডোটাস কর্তৃক সংকলিত হয়েছে। ‘ইতিবৃত্তের’ মূল উপজীব্য হচ্ছে গ্রিক-পারসিক যুদ্ধের ধারাবাহিক এবং বিস্তারিত বিবরণ। গ্রিক-পারসিক যুদ্ধে গ্রিকদের বীরত্বগাথা এ গ্রন্থে স্থান পেয়েছে। এছাড়াও ‘ইতিবৃত্তে' লিডিয়ার রাজা ক্রোসাসের অবৈধ ক্ষমতা দখল, ম্যারাথনের যুদ্ধ, হেলেনিক ও প্রাচ্য সভ্যতার দ্বন্দ্বের বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে। হেরোডোটাসের এ অখণ্ডে বিভাজিত গ্রন্থটিকে আধুনিক গ্রিক ঐতিহাসিক J.B. Bury তিনটি খণ্ডে বিভাজন করেন এবং প্রতিটি খণ্ডকে ৩টি করে মোট ৯টি উপখণ্ডে বিভাজন করা হয় । “ইতিবৃত্ত' একটি কালজয়ী ইতিহাস গ্রন্থের মর্যাদা পেয়েছে।
● ইতিবৃত্ত লেখার উদ্দেশ্য : হেরোডোটাস সর্বপ্রথম ইতিহাস চর্চায় মনোনিবেশ করেননি, তিনি ভূগোল গ্রন্থ রচনার উদ্দেশ্যে আত্মপ্রত্যয়ী হন। সময় ও অবস্থার প্রেক্ষাপটে তিনি মানুষের অতীত কর্মকাণ্ড তুলে ধরার প্রয়াস পান। তিনি মানুষের অতীত কর্মকাণ্ড লিখিত আকারে তুলে ধরার জন্যই ‘ইতিবৃত্ত' গ্রন্থটি রচনা করেন। সে কথা তিনি ‘ইতিবৃত্তের’ মুখবন্ধে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন। তিনি আরও বলেন, যাতে আগামী প্রজন্ম গ্রিক-পারস্যের মধ্যে ম্যারাথন যুদ্ধ ভুলে না যায় সে কারণে তিনি ইতিহাস লিপিবদ্ধ করেন। তিনি ‘ইতিবৃত্তের মধ্যে তার ইতিহাস লেখার উদ্দেশ্য বর্ণনা করেন। তাছাড়া পরবর্তী প্রজন্মকে ইতিহাস থেকে শিক্ষা গ্রহণের ব্যাপারে উপদেশ দেন ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, হেরোডোটাস মানুষের অতীত কর্মকাণ্ডকে লিখিত আকারে তুলে ধরার প্রবণতা থেকে ইতিহাস চর্চায় আগ্রহী হয়ে ওঠেন। তিনি গ্রিক-পারসিক যুদ্ধ ধারাবাহিকভাবে রচনা করেন। সর্বোপরি তিনি একটি কালজয়ী ইতিহাস গ্রন্থ প্রণয়ন করতে সক্ষম হন। যেটা তাকে ইতিহাসের জনকের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করেছে।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]