ইতিহাসের পরিধি সম্পর্কে লেখ।

উত্তর ভূমিকা : মানুষ কর্তৃক সম্পাদিত সব বিষয় ইতিহাসের পরিধির আওতাভুক্ত। মানুষের চিন্তাভাবনা, পরিকল্পনা, কার্যক্রম যত শাখাপ্রশাখায় বিস্তৃত ইতিহাসের সীমাও ততদূর পর্যন্ত বিস্তৃত। তবে এ বিস্তৃতির সীমা স্থিতিশীল নয় । মানুষের চিন্তাভাবনা কর্মধারা পরিবর্তনের সাথে সাথে ইতিহাসের পরিধিও সম্প্রসারিত হচ্ছে।
ইতিহাসের পরিধি : মানুষ কর্তৃক সম্পাদিত সব বিষয় ইতিহাসের পরিধির আওতাভুক্ত। মানুষের চিন্তাভাবনা, কার্যক্রম, পরিকল্পনা যতদূর বিস্তৃত ইতিহাসের সীমাও ততদূর পর্যন্ত বিস্তৃত। তবে ইতিহাসের পরিধির এ বিস্তৃতি স্থিতিশীল নয় । মানুষের চিন্তভাবনা, কর্মধারা পরিবর্তনের সাথে সাথে ইতিহাসের পরিধিও সম্প্রসারিত হচ্ছে। নিম্নে ইতিহাসের পরিধি সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো :
১. প্রাগৈতিহাসিক যুগে ইতিহাসের পরিধি : প্রাগৈতিহাসিক যুগে মানুষের কর্ম শুধু খাদ্য সংগ্রহমূলক চিন্তার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। এসময় মানুষ খাদ্য সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন হাতিয়ার ও কৌশল ব্যবহার করে যা ইতিহাসের বিষয়বস্তু হিসেবে বিবেচিত হয়। উল্লেখ্য, প্রাগৈতিহাসিক যুগে মানুষের কর্ম শুধুমাত্র খাদ্য সংগ্রহমূলক হওয়াতে ইতিহাসের পরিধি ও ততদূর পর্যন্তই পরিব্যাপ্ত ছিল ।
২. ঐতিহাসিক যুগে ইতিহাসের পরিধি : ঐতিহাসিক যুগে ইতিহাসের পরিধি আরও দ্রুতগতিতে সম্প্রসারিত হয়। ইতিহাস চর্চায় হেরোডোটাস, থুসিডিডিস প্রমুখ ঐতিহাসিকের আগমন ঘটে। ফলে ইতিহাস চর্চা নতুন মাত্রা পায়। এসময়ে গোত্র, রাষ্ট্রসমূহের মধ্যকার যুদ্ধ ও রাজনীতি ইতিহাসের পরিধিভুক্ত হয়।
৩. প্রাচীন যুগে ইতিহাসের পরিধি : প্রাচীন যুগে রাষ্ট্র, রাষ্ট্র শাসন নীতি, অর্থনীতি, সমাজ, সভ্যতা সংস্কৃতি ও স্থাপত্যকর্ম ইতিহাসের পরিধিভুক্ত হওয়ার পাশাপাশি ধর্মও ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করতে থাকে।
৪. মধ্যযুগে ইতিহাসের পরিধি : মধ্যযুগে ইতিহাসের পরিধিতে সমকালীন ইউরোপের পাশাপাশি এশিয়া ও আফ্রিকার ধর্ম, রাজনীতি, অর্থনীতি ও ইতিহাসের পাতায় গুরুত্বের সাথে স্থান করে নেয়। ভারতের ঐতিহাসিক কলহণের ‘রাজতরঙ্গিণী', ইবনে খালদুনের 'কিতাব আল ইবার’, ‘আল মুকাদ্দিমা' প্রভৃতি গ্রন্থ ইতিহাসের পরিধিকে আরও ব্যাপক করে তোলে ।
৫. আধুনিক যুগে ইতিহাসের পরিধি : মধ্যযুগের শেষের দিকে ইউরোপে পোপতন্ত্রের দুর্নীতি মানুষকে ধর্মীয় ব্যবস্থা সংস্কারে অনুপ্রাণিত করে। ফলে ধর্মসংস্কার আন্দোলন ইতিহাসে গুরুত্ব পায়। মধ্যযুগে শুরু হওয়া মানুষের ব্যবসায়িক কার্যক্রম আধুনিক যুগে এসে নতুন মাত্রা পায় এবং এর সাথে ভৌগোলিক আবিষ্কারসমূহ ইতিহাসের পরিধিকে বিস্তৃত করে । এভাবে প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে আধুনিক যুগ পর্যন্ত ইতিহাসের নিরন্তর বয়ে চলার নতুন নতুন বিষয়াবলি যুক্ত হয়ে ইতিহাস জ্ঞানের একটি অন্যতম শাখা হিসেবে স্বীকৃত হয় ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, সময়ের বিবর্তনের সাথে সাথে মানুষের কর্মকাণ্ডের পরিধিও বেড়েছে। ফলে ইতিহাসের পরিধিতে নতুন নতুন বিষয় অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে। সম্প্রসারিত পরিধির আলোকে ইতিহাসের পঠনপাঠনেও গতিশীলতা লক্ষ করা যাচ্ছে। ফলে ইতিহাস শাস্ত্র আরও বেশি সমৃদ্ধ হয়ে উঠেছে।

ইতিহাসের উপযোগিতা লেখ।

উত্তর ভূমিকা : মানব সভ্যতার উন্নতি ও অগ্রগতিতে যেসব বিষয় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম হয়েছে তা সবই ইতিহাসের বিষয়ভুক্ত। মানুষ জীবিকার তাগিদে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয় । মানুষের এ যাবতীয় কর্মকাণ্ডই হলো ইতিহাসের বিষয়বস্তু । আর উপযোগিতা হলো অতীত মানবসমাজ ও সভ্যতা সম্পর্কে জ্ঞানার্জনের মাধ্যমে মানুষের অতীতের আলোকে ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করার সক্ষমতা ।
● ইতিহাসের উপযোগিতা : ইতিহাস মানুষকে তার অতীত জানতে সাহায্য করে। মানুষের অতীত কর্মকাণ্ড, ঐতিহ্য গাথা সাফল্য প্রভৃতি জানার একমাত্র নির্ভরযোগ্য পাঠ হলো ইতিহাস। মানুষকে তার অতীত সম্পর্কে নির্ভুল তথ্য দিয়ে সাহায্য করাই ইতিহাসের প্রধানতম উপযোগিতা। ইতিহাস মানুষকে আত্মোপলব্ধি করতে শিখায়। এজন্য ইতিহাসকে আত্মোপলব্ধির চাবিকাঠি বলা হয়। ইতিহাস নিখুঁতভাবে আমাদেরকে আমাদের অতীত সম্পর্কে অবগত করে। অতীতের ঘটনা বা তথ্যসমূহের আলোকে আরও চিন্তাশক্তিকে কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্ধারণ করতে পারি। মানুষের অতীতের অভিজ্ঞতার আলোকে ভবিষ্যৎ চিন্তা করা একমাত্র ইতিহাসের মাধ্যমেই সম্ভব। আমাদের অতীত বংশধরগণ কী কী সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন, তাদের উক্ত সমস্যার সমাধান কী ছিল ইত্যাদি তথ্য ইতিহাস আমাদের সরবরাহ করে । আর এজন্য ঐতিহাসিক, পণ্ডিত, দার্শনিকগণ মানবজাতিকে ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে জোরালো মন্তব্য করেছেন । ঐতিহাসিকগণ অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞানের মাধ্যমে দেখেছেন ইতিহাসের বিভিন্ন ঘটনার পুনরাবৃত্তি একটি অত্যন্ত সাধারণ বিষয় । এরূপ পুনরাবৃত্তিমূলক কাজের ক্ষেত্রে ইতিহাসই একমাত্র নির্ভরযোগ্য পাঠ। ইতিহাস সুষ্ঠুভাবে মানবজাতিকে সমস্যা সমাধানের উপায় শীর্ষক জ্ঞান বিতরণই ইতিহাস পাঠের উপযোগিতা। ইতিহাস আমাদের অতীত জ্ঞানের আলোকে ভবিষ্যৎকে নির্ধারণ করতে সাহায্য করে বলে ইতিহাসের উপযোগিতা অন্যান্য শাস্ত্রীয় জ্ঞানের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ইতিহাসের যেমন কিছু বিষয়বস্তু রয়েছে, তেমনি বিষয়বস্তুসমূহের উপযোগিতাও ইতিহাসকে বিশিষ্টতা দান করেছে। এদিক থেকে বিবেচনা করলে ইতিহাসের উপযোগিতার মধ্যে বিষয়বস্তুর সার্থকতা ফুটে ওঠে একথা নিঃসন্দেহেই বলা যায় । দুটোর সমন্বয়ে আমরা যথার্থ ইতিহাস পেতে পারি ।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]