ইতিহাস বলতে কী বুঝ? ইতিহাসের বিষয়বস্তু সম্পর্কে আলোচনা কর ।

উত্তর ভূমিকা : মানবসমাজের অতীত ঘটনার নিরন্তর সত্যানুসন্ধান হলো ইতিহাস । ইতিহাসের বিষয়বস্তু হচ্ছে মানুষ ও তার পারিপার্শ্বিকতা, সমাজ, সংস্কৃতি ও সভ্যতার বিকাশ, পরিবর্তন ও পতন। সুতরাং শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি, দর্শন, স্থাপত্য, রাজনীতি, যুদ্ধ, ধর্ম, আইন প্রভৃতি বিষয়, সামগ্রিকভাবে যা কিছু সমাজ ও সভ্যতা বিকাশে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রভাবিত করেছে তাই ইতিহাসের বিষয়বস্তু। পৃথিবীতে মানুষের আবির্ভাবের পর তাদের প্রতিটি কর্মকাণ্ড চিন্তাচেতনা ইতিহাস গভীরভাবে বিবেচনায় আনে এবং প্রতিটি তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি ও চরম অধোগতি লিপিবদ্ধ করে । ইতিহাসের সংজ্ঞা : নিম্নে ইতিহাসের সংজ্ঞা দেওয়া হলো :
সাধারণ সংজ্ঞা : ইতিহাস কী তা এককথায় বলা কঠিন। কারণ অনেক ঐতিহাসিক ইতিহাসের সংজ্ঞা বিষয়ে নিজেদের মতো করে মত দিয়েছেন। তাই সহজেই নির্দিষ্ট সংজ্ঞায় পৌঁছা যায় না। তবে পণ্ডিতগণের দৃষ্টিভঙ্গি ও মতামতসমূহ বিশ্লেষণ করে ইতিহাসের একটি সাধারণ সংজ্ঞা তৈরি করা সম্ভব। অতীতে যা কিছু ঘটেছে সাধারণভাবে তাকেই ইতিহাস বলা হয়, কিন্তু অতীতের সবকিছুকেই ঢালাওভাবে ইতিহাস বলা যায় না। শুধুমাত্র অতীতের যেসব ঘটনা প্রবাহ মানুষের দ্বারা নির্মিত ও সংঘটিত বলে জানা যায় তার সত্যনিষ্ঠ লিখিত বিবরণকেই ইতিহাস বলা যায় ।
·
প্রামাণ্য সংজ্ঞা : ইতিহাসের বিষয়বস্তু বা মাত্রাগত ভিন্নতার কারণে একেক ঐতিহাসিক একেকভাবে ইতিহাসের সংজ্ঞা প্রদান করেছেন । নিম্নে অন্যতম কয়েকটি সংজ্ঞা দেওয়া হলো :
ঐতিহাসিক জনসনের (Johnson) মতে, “যা কিছু ঘটে তাই ইতিহাস; যা ঘটে না তা ইতিহাস নয়। তাই বলা যায়, মানবসমাজের অনন্ত ঘটনাপ্রবাহই ইতিহাস । ”
ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদারের (R. C. Majumdar) মতে, “মানবসমাজের অতীত কার্যাবলির পূর্ণ বিবরণীই হলো ইতিহাস ।” ঐতিহাসিক র‍্যাপসনের (Rapson) মতে, “ইতিহাস হলো ঘটনার বৈজ্ঞানিক এবং ধারাবাহিক বর্ণনা।”
ইতিহাসবেত্তা ই. এইচ. কারের (E. H. Carr) মতে, “ইতিহাস হলো বর্তমান ও অতীতের মধ্যে এক অন্তহীন সংলাপ । ” ইংরেজ ইতিহাসবেত্তা আর্নল্ড টয়েনবির (Arnold Toynbee) মতে, “মানবসমাজের সার্বিক ঘটনাপ্রবাহই ইতিহাস।” উপর্যুক্ত সংজ্ঞার আলোকে বলা যায়, অতীত ঘটনাবলির সাধারণ বর্ণনা নয়; বরং তথ্য প্রমাণ বিশ্লেষণের মাধ্যমে মানবজাতির অগ্রগতির বিবরণই ইতিহাস ।
১০. বিজ্ঞানের সাথে সম্পর্ক : ইতিহাসের আরেকটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো বিজ্ঞানের সাথে সম্পৃক্ততা। আমরা যখন ইতিহাসের কোনো একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করি তখন ঐ বিষয়ের সাথে সম্পর্কযুক্ত অনেক বিষয় আমাদের আলোচনায় চলে আসে যা পরিহার করা অসম্ভব। যেমন কোনো একটি সমাজ নিয়ে যখন ঐতিহাসিক গবেষণা শুরু হয় তখন তার সাথে দর্শন, অর্থনীতি, ভূগোল এমনকি রাষ্ট্রবিজ্ঞানের মতো বিষয়গুলো জড়িয়ে পড়ে। একইভাবে ইতিহাসের সাথে বিজ্ঞানের গভীর সম্পর্ক বিরাজমান ।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, মানবজাতির অতীত কর্মের দলিল হলো ইতিহাস। আর এজন্যই ইতিহাসের স্বরূপ বা বৈশিষ্ট্য জানা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। ইতিহাসের বিষয়বস্তু, আলোচনা পদ্ধতি, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এবং এর পরিধির জন্য একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য সূচক শাস্ত্র হিসেবে ইতিহাস পরিচিতি লাভ করেছে। তাই বলা যায়, ইতিহাসের সকল বৈশিষ্ট্য ইতিহাসকে একটি স্বতন্ত্র শাস্ত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সমর্থ হয়েছে।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]