ইতিহাস চর্চায় কালক্রমের গুরুত্ব আলোচনা কর ।

ইতিহাসের কালবিভাজনের গুরুত্ব আলোচনা কর । উত্তর ভূমিকা : ইতিহাস অতীত থেকে শুরু করে বর্তমান সময়সীমার ভিতর দিয়ে ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে চলে । এ এগিয়ে চলার পথে রাজনৈতিক পট পরিবর্তন, নতুন ভাবধারা বা ধর্মনীতির প্রচার, উৎপাদন পদ্ধতি, ধনবৃদ্ধি ও ধন বণ্টনের উপায় এবং শিল্প ও ব্যবসা বাণিজ্য বিকাশ ইত্যাদি ক্ষেত্রে বিশেষ বিশেষ সময়ে স্বাতন্ত্র্যের সৃষ্টি করে। আর এ স্বাতন্ত্র্য বা পরিবর্তনকে মাপকাঠি ধরে ইতিহাসের সময় বা কালকে বিভাজন করা হয়। ফলে ইতিহাস চর্চায় কালবিভাজনের গুরুত্ব অপরিসীম ।
ইতিহাস চর্চায় কালক্রমের গুরুত্ব : ইতিহাস মূলত বিভিন্ন কাল বা সময়ের ঘটমান মানবীয় কর্মকাণ্ডের বর্ণনা । ইতিহাসের বিভিন্ন যুগবিভাজন যেমন— প্রাগৈতিহাসিক যুগ, প্রায় ঐতিহাসিক যুগ, আধুনিক যুগ প্রভৃতি কালবিভাজনের ফলেই সৃষ্টি হয়েছে। ঐতিহাসিকগণ কালবিভাজন করে কোনো স্থানের বা দেশের ঘটনা পুনর্গঠন করলেও সময়ের ধারণা নামকরণ, কালপঞ্জি তৈরি ও নির্ধারণ করা ঐতিহাসিকদের কাজ নয়। এটি ঐতিহাসিকগণ পূর্ববর্তী বংশধরদের কাছ থেকে উত্তরাধিকার হিসেবে পেয়ে থাকেন । সামাজিক মানুষের মধ্যে যারা চিন্তাশীল, যারা অতীতের অভিজ্ঞতার আলোকে নিজেদের বর্তমানকে জানতে ও বুঝতে চান তারা ভবিষ্যৎ জীবনকে কিছুটা উপলব্ধির জন্য কালবিভাজনকে অতীব গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন। ইতিহাস পঠনপাঠনের ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা ও সময়ানুক্রম যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি কালবিভাজনও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচনা করা হয়। প্রকৃতপক্ষে, অতীতের যেকোনো ঘটনা আমাদের সামনে উপস্থাপন করতে গেলে অবশ্যই ঐ ঘটনা সংগঠনের সময়কালও উল্লেখ করতে হয়। কার্যকাল বা সন তারিখ ছাড়া ইতিহাস যুগহীন অনির্দিষ্ট ঘটনার বিবরণে পরিণত হয়ে যায়। আর এজন্যই ইতিহাসে স্থান পাওয়া ঘটনা ও বিষয়বস্তু উল্লেখ করার সাথে সাথে এর কার্যকালও গুরুত্বের সাথে উল্লেখ করতে হয়। ইতিহাসের এসব ঘটনাসমূহকে কালক্রমে ফেলতে ঐতিহাসিকগণ কালক্রমকে তিন ভাগে ভাগ করেছেন। যথা : ১. প্রাগৈতিহাসিক যুগ, ২. প্ৰায় ঐতিহাসিক যুগ ও ৩. ঐতিহাসিক যুগ। মানব সভ্যতার বিকাশে প্রত্যেকটি যুগের বিশেষ অবদান রয়েছে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ইতিহাসের হিমালয় সদৃশ জ্ঞান যথার্থভাবে আহরণের জন্য কালবিভাজন অনুসারে ইতিহাস চর্চা আবশ্যক। কালবিভাজন ইতিহাস পাঠকে সহজবোধ্য করে তোলে। যার ফলে একজন ইতিহাস পাঠকের কাছে ইতিহাস যেমন সহজসরল হয়ে ওঠে তেমনি পদ্ধতিগত গবেষণার ক্ষেত্রেও সুবিধা হয়। কালবিভাজনের মাধ্যমে মানব সভ্যতার ক্রমোন্নতির চিত্র আমাদের সামনে উপস্থাপিত হয় । আর তাই ইতিহাসে কালবিভাজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । *

প্রাগৈতিহাসিক যুগ বলতে কী জান?

উত্তর ভূমিকা : ইতিহাস হলো অতীতের সংলাপ। বিগত বৃত্তান্ত, অতিক্রান্ত ঘটনাবলি, বর্তমানের অনাগত রূপরেখা নির্ধারণের সহায় এ সংলাপের সাথে দেশকালপাত্র মিলে তৈরি হয় ইতিহাসের ভিত্তি। এ ভিত্তিকে কতিপয় বিভাজনের মাধ্যমে আরও সুস্পষ্টভাবে বুঝা যায়। সময়ের এরূপ কতিপয় বিভাজনের মধ্যে প্রাগৈতিহাসিক যুগ অন্যতম ।
● প্রাগৈতিহাসিক যুগ : প্রাগৈতিহাসিক যুগ বলতে আমরা এমন একটি সুদীর্ঘ সময়কালকে বুঝে থাকি যার সূচনা হয় মূলত পৃথিবীতে মানুষের বসতি স্থাপন হতে এবং শেষ হয় আজ থেকে প্রায় সাত হাজার বছর পূর্বে। অন্যভাবে বলা যায়, একেবারে আদিকাল থেকে শুরু করে যিশুখ্রিস্টের জন্মে পাঁচ হাজার বছর পূর্বে যখন মানুষ সর্বপ্রথম লিখনপদ্ধতি আবিষ্কার ও নগরভিত্তিক সভ্যতার গোড়াপত্তন করতে সক্ষম হয়, ঐ পর্যন্ত সময়কালকে প্রাগৈতিহাসিক যুগ বলে অভিহিত করা হয় । এখানে উল্লেখ্য যে, প্রাগৈতিহাসিক যুগ সম্পর্কে জানার জন্য এ যাবৎ কোনো লিখিত প্রামাণিক তথ্য পাওয়া যায়নি। কারণ- তখন পর্যন্ত লিখনপদ্ধতির উদ্ভাবন হয়নি। আর তাই আমাদেরকে প্রাগৈতিহাসিক যুগ সম্পর্কে জানার জন্য সমকালীন জীবাশ্ম, গুহাচিত্র, হাতিয়ার এবং ঐ যুগের মানুষের ব্যবহার্য বিভিন্ন দ্রব্যাদির ওপর নির্ভর করতে হয় । প্রাগৈতিহাসিক যুগের শ্রেণিবিভাগ : প্রাগৈতিহাসিক যুগকে বা পাথরের যুগকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে ৷ যথা : ১. পুরোপলীয় যুগ; ২. মধ্যপলীয় যুগ ও ৩. নবোপলীয় যুগ ।
একেবারে বন্যদশা অতিক্রান্তের শেষ পর্বে এসে মানুষের প্রথম অগ্রগতির কালকে পাথরের যুগ বলে অভিহিত করা হয়। এরূপ নামকরণের কারণ হলো এ যুগে মানুষের শ্রম ও জীবনযাপনের ক্ষেত্রে অন্যতম প্রধান ভূমিকা পালন করেছে পাথর ৷ বস্তুত পাথর যুগে মানুষ বেঁচে থাকার প্রধান অবলম্বন হিসেবে পাথর সংগ্রহ করা, পাথর ভাঙা, পাথর কাটা ও ঘষেমেজে পাথরকে ব্যবহারের উপযোগী করে তোলে। প্রকৃতপক্ষে, বন্য ও হিংস্র পশুর আক্রমণ হতে নিজেদেরকে রক্ষা করার জন্য মৎস্য শিকার, বন্যপশু শিকার, গাছে বসবাসরত পশুপাখি শিকার প্রভৃতি ক্ষেত্রে পাথরের ব্যবহারই ছিল এ যুগের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য । কাজেই প্রাগৈতিহাসিক যুগের অপর নাম দেওয়া হয়েছে পাথর বা প্রস্তর যুগ
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, প্রাগৈতিহাসিক যুগ বা পাথরের যুগের কোনো লিখিত বিবরণ না থাকলেও উপযুক্ত প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের মাধ্যমে প্রাগৈতিহাসিক যুগের ইতিহাস আমরা জানতে পারি। মূলত পাথরকেন্দ্রিক জীবন ব্যবস্থা ছিল বলেই এ আদিম সমাজব্যবস্থাকে পাথরের যুগ বলে অভিহিত করা হয়েছিল।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]