উত্তর ভূমিকা : প্রাগৈতিহাসিক যুগের প্রথমদিকের সময়কাল পুরোপলীয় যুগ বা প্রাচীন প্রস্তর যুগ নামে পরিচিত। এ যুগে যেসব পাথর, অস্ত্রশস্ত্র ও দ্রব্যাদি ব্যবহার করা হতো সেগুলো ছিল স্থূল, অমসৃণ ও অমার্জিত। প্রাগৈতিহাসিক যুগের তিনটি পর্যায়ের মধ্যে পুরোপলীয় যুগের সময়কালই সর্বাপেক্ষা বেশি দীর্ঘস্থায়ী। এ যুগের সময়কাল দশ হাজার খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত স্থায়ী ছিল বলে গণ্য করা হয়।
• প্রাচীন প্রস্তর যুগের বৈশিষ্ট্যসমূহ : প্রাচীন প্রস্তরযুগে মানবসমাজের অগ্রগতির বিকাশধারা লক্ষ করে নিম্নোক্ত বৈশিষ্ট্যে আলাদা করা যায় :
১. মানবদেহের গঠনপ্রকৃতি ও ক্রমপরিবর্তন : পুরাতাত্ত্বিকদের বিশ্লেষণ অনুযায়ী প্রায় পাঁচ কোটি বছর পূর্বে এক ধরনের স্তন্যপায়ী প্রাণী গাছে বসবাস করতো। যারা ইতিহাসে প্রাইমেট নামে পরিচিত। একইভাবে দক্ষিণ আফ্রিকাতে রোডেশীয় মানব, চীনে পিকিং মানব, জার্মানিতে হাইডেলবার্গ মানব, নিয়ানডারথাল মানব, ক্রোম্যাগনন মানব, অস্ট্রালোপিথেকাস, প্রভৃতি নামে মানবজাতির বিবর্তন ও ক্রমপরিবর্তন লক্ষ করা যায় ।
২. প্রাচীন প্রস্তর যুগের খাদ্য : বন্য দশাগ্রস্ত প্রাচীন প্রস্তর যুগের মানবগোষ্ঠী খাদ্য উৎপাদন করতে পারত না। কাজেই তাদেরকে খাদ্যসংগ্রহ করে জীবনধারণ করতে হতো। তারা উন্মুক্ত প্রকৃতি হতে ফলমূল, পাখির ডিম, গাছ ও ঘাসের কচি পাতা, নদী ও ঝরনার পানি খেয়েই বেঁচে থাকত। এসময়ে তাদের অনেকেই একত্রিত হয়ে বড় বড় পশু শিকার করতো এবং সবাই ভাগ করে খেত ।
৩. মাতৃতান্ত্রিক সমাজ : প্রাচীন প্রস্তর যুগের প্রথমদিকে মাতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা বিদ্যমান ছিল। নারীদের সন্তান জন্মদান, লালনপালন করা প্রভৃতি দায়িত্ব ছিল। প্রাচীন প্রস্তরযুগে নারী-পুরুষের বিশেষ কোনো পার্থক্য না থাকলেও মায়ের দিক থেকে সন্তানেরা পরিচিত হতো ।
৪. আবাসস্থল : বন্য দশাগ্রস্ত প্রাচীন প্রস্তর যুগের মানুষ কোনো স্থায়ী আবাসস্থল তৈরি করতে পারেনি। মূলত শিকারের জন্য তাদেরকে যাযাবর জীবনযাপন করতে হতো। এছাড়া তাদের ঘরবাড়ি তৈরির মতো জ্ঞানও ছিল না। শিকারের পিছনে ছুটার কারণে তাদের স্থায়ী আবাসস্থল গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি ।
৫. পোশাক-পরিচ্ছদ : পুরোপলীয় যুগে পোশাক-পরিচ্ছদ বলতে তেমন কিছুই ছিল না । লজ্জা নিবারণ ও শালীনতার চেয়ে শীতের কবল থেকে বাঁচার জন্যই মূলত পোশাকের প্রয়োজন হতো । ধারণা করা হয়, প্রাচীন প্রস্তর যুগের প্রথমদিকে মানুষ গাছের বাকল ও পাতা দিয়ে পোশাকের কাজ সম্পন্ন করতো। তাছাড়াও প্রাচীন প্রস্তরযুগে মানুষ আগুনের ব্যবহার, কথা বলার মতো বিশেষ গুণ অর্জন, চিত্র অঙ্কন (বিশেষত গুহাচিত্র) প্রভৃতি বিশেষ বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ছিল ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, প্রাচীন প্রস্তর বা পুরোপলীয় যুগে মানুষের জীবনধারণ, খাদ্যাভ্যাস প্রভৃতি একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ের ছিল। তবে সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে মানুষ প্রকৃতি নির্ভরশীলতা ত্যাগ করে সমাজ বাস্তবতার তাগিদে নবযুগের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে ।
FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত