মানুষের উৎপত্তি কীভাবে হয়েছিল?

উত্তর ভূমিকা : ভূত্বকের প্রাকৃতিক অবস্থা এক সময় বর্তমান পৃথিবীর পরিচিত পরিবেশের কাছাকাছি চলে আসে । এসময় সৃষ্টিজগতেও ঘটতে থাকে পরিবর্তন। ষাট মিলিয়ন বছর স্থায়ী এ যুগ সেনোজোয়িক যুগপর্ব নামে পরিচিত। এ যুগপর্বকে দুটি উপযুগে বিভক্ত করা যায়। প্রথমটি টারশিয়ারি এবং দ্বিতীয়টি কোয়াটারনারি যুগ নামে পরিচিত। সেনোজোয়িক যুগের শেষ দুই মিলিয়ন বছরব্যাপী ছিল এ উপযুগ। এ যুগেই হোমো স্যাপিয়েন্স বা আধুনিক মানুষের উদ্ভব হয় ।
মানুষের উৎপত্তি : প্রাণিজগতের শ্রেষ্ঠ জীব মানুষের উৎপত্তি কখন ও কীভাবে হয় এ নিয়ে বর্তমানে পরস্পরবিরোধী দুটি মতবাদ বিদ্যমান। প্রথমত, কিছু ধর্মমত অনুযায়ী সৃষ্টিকর্তা মানুষ সৃষ্টি করেছেন। অর্থাৎ সৃষ্টিকর্তা কর্তৃক মানুষ একবারে সৃষ্ট। ইহুদি, খ্রিস্টান এবং ইসলাম ধর্মের ধর্মগ্রন্থে এ সৃষ্টিতত্ত্বের উল্লেখ আছে। ইহুদি, খ্রিস্টান ও ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা এ মত বিশ্বাস স্থাপন করে। দ্বিতীয়ত, ইংরেজ বিজ্ঞানী চার্লস রবার্ট ডারউইন (১৮০৯-১৮৮২) তার 'Origin of Species' (1859 ) ও 'The Decent of Man' ( 1871 ) গ্রন্থে ভিন্ন তত্ত্বের অবতারণা করে বলেন যে, মানুষের উৎপত্তি হয়েছে প্রাকৃতিক নির্বাচনভিত্তিক বিবর্তন (Evolution through natural selection) এর মাধ্যমে এবং মানুষ ও এপ এর পূর্বপুরুষ এক ও অভিন্ন। ডারইউনের বিবর্তন তত্ত্ব বেশি যৌক্তিক ও বিজ্ঞানসম্মত হওয়ায় এটিকে মোটামুটি সবাই সমর্থন করে ।
আদিকাল থেকে চিন্তাভাবনা করার ফলে মানুষের উৎপত্তি নিয়ে বেশকিছু মতবাদ সৃষ্টি হয়েছে। যেমন— ১. সর্বজনীন ধর্মীয় মতবাদ, ২. পৌরাণিক বিশ্বাস ও কাল্পনিক মতবাদ, ৩. আদর্শবাদী দর্শন ও অধিবিদ্যার মতবাদ এবং ৪. বিজ্ঞানীদের মতবাদ ৷ উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, মানুষের উৎপত্তিসংক্রান্ত বিভিন্ন মতবাদ প্রচলিত আছে। এদের মধ্যে ধর্মীয় মতবাদ এবং চার্লস ডারউইনের মতবাদ মানুষের উৎপত্তিসংক্রান্ত সবচেয়ে শক্তিশালী মতবাদ। তবে এ বিষয়ে সঠিক কোনো মতবাদে পৌছানো যায়নি। এছাড়া মানুষের উৎপত্তির সময়কাল নিয়ে মতভেদ রয়েছে। তবে ধারণা করা হয় যে, আধুনিক মানুষ বা হোমো স্যাপিয়েন্সের উদ্ভব ঘটে ২০ হাজার বছর পূর্বে ।

চার্লস ডারউইনের পরিচয় দাও ।

উত্তর ভূমিকা : উনিশ শতকের গোড়ার দিকে এসে জীবজগতের সৃষ্টি সম্পর্কে মানুষের চিন্তাধারার পরিবর্তন ঘটে । বনমানুষ সম্পর্কে বেশ কয়েকটি বই প্রকাশিত হয় এবং এতে মানুষের সাথে বনমানুষের মিলের বিষয়টি গুরুত্ব পেতে থাকে। চার্লস লিয়েল, ডি ল্যামার্ক ও চার্লস ডারউইন মানুষের উৎপত্তি সম্পর্কে নতুন নতুন মতবাদ দিতে থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় ইংরেজ বিজ্ঞানী চার্লস রবার্ট ডারউইন বিবর্তনবাদ তত্ত্ব প্রদান করেন। যা তাকে চিরস্মরণীয় করে রেখেছে।
● চার্লস ডারউইনের পরিচয় : চার্লস ডারইউন ছিলেন একজন সচ্ছল ইংরেজ ডাক্তারের ছেলে। তিনি ১৮০৯ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মন্ত্রি হওয়ার লক্ষ্যে কেমব্রিজে লেখাপড়া করছিলেন। ধর্মতত্ত্বের একজন মেধাবী ছাত্র হিসেবে প্রাকৃতিক ইতিহাসের প্রতি তার ব্যাপক আগ্রহ ছিল। কেমব্রিজে থাকাকালীন সময়ে তার ‘গুবরে পোকা সংগ্রহের মতো এক অদ্ভুত শখ পেয়ে বসেছিল। এ শখ থেকেই তার মধ্যে জন্মাতে থাকে বিজ্ঞানমনস্কতা। অচিরেই তিনি ‘প্রাকৃতিক বিজ্ঞান' চর্চার একটি সার্কেলের সদস্যপদ গ্রহণ করেন। ১৮৩১ সালে চার্লস ডারউইন স্নাতক ডিগ্রি লাভ করার পর অবসরে উদ্ভিদবিদ্যা, প্রাণিবিদ্যা ও কীটপতঙ্গ চর্চায় অতিবাহিত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। তিনি নৌ জরিপ জাহাজ H. M. S. Beagle এ প্রকৃতি বিজ্ঞানীর পদে একটি চাকরি পেয়ে যান। বিশ্ব পরিভ্রমণের উদ্দেশ্যে জাহাজটি সমুদ্রে পাড়ি জমায় এবং দক্ষিণ আমেরিকা ও ইস্ট ইন্ডিজের বিভিন্ন অংশে পরিভ্রমণ করে। এ জাহাজে পাঁচ বছর সমুদ্রযাত্রায় ডারউইনের জীবনে বিরাট পরিবর্তন আসে। ২৭ বছর বয়সে তিনি ফিরে এসে পুনরায় বিজ্ঞান গবেষণায় আত্মনিয়োগ করেন । সমুদ্রযাত্রার সময় সংগৃহীত বিভিন্ন পশু ও গাছের নমুনা এবং জীবাশ্ম তার গবেষণার উপকরণ হিসেবে কাজে লাগে ৷
তিনি প্রাণী ও উদ্ভিদের বিচিত্র পরিবর্তন প্রক্রিয়ার ওপর গবেষণার পর রূপান্তর প্রক্রিয়া সম্পর্কে একটি ব্যাখ্যা দাঁড় করাতে সক্ষম হন। তিনি এ প্রক্রিয়ার নাম দিয়েছেন ‘প্রাকৃতিক নির্বাচন’। ১৮৫৯ সালে তার গবেষণার ফল চূড়ান্তভাবে প্রকাশিত হয়। তার গবেষণা গ্রন্থটির নাম দেওয়া হয় The Origin of Species by Means of Natural Selection. ১৮৮২ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, মানব সভ্যতার ইতিহাসে চার্লস ডারউইন একটি বিখ্যাত নাম । মানুষের উৎপত্তিসংক্রান্ত ইংরেজ বিজ্ঞানী চার্লস রবার্ট ডারউইন, বিবর্তনবাদ তত্ত্ব প্রদান করেন। মানুষের উৎপত্তি সম্পর্কে তার মতবাদটি ছিল অত্যন্ত যুক্তিযুক্ত এবং বিজ্ঞানসম্মত। মানুষের উৎপত্তিসংক্রান্ত বিবর্তনবাদ মতবাদের জন্য ডারউইন বিশেষভাবে স্মরণীয় ।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]