প্রাইমেটদের পরিচয় দাও ।

উত্তর ভূমিকা : মানুষের বিবর্তনের সাথে সংশ্লিষ্ট ধারণাসমূহের মধ্যে প্রাইমেট অন্যতম। প্রাইমেট জগতের শ্রেণি বিভাগে স্তন্যপায়ী প্রাণীর একটি অন্যতম শাখা। অনেক নৃবিজ্ঞানীর তথ্য মতে, প্রাইমেট হলো বর্তমান মানবসমাজের পূর্বপুরুষ। তারা আরও বলেন, এ পূর্বপুরুষদের মধ্য থেকে বিবর্তনের মাধ্যমে মানবসমাজ বর্তমান পর্যায়ে পৌঁছেছে।
● প্রাইমেট : প্রাইমেট সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হলো :
১. প্রাইমেটের পরিচয় : ধারণা করা হয়, লক্ষ লক্ষ বছর বিবর্তনের ফলে প্রাইমেট থেকে বর্তমান মানবসমাজের উদ্ভব ঘটেছে। প্রাইমেটের ইতিহাস অনেক প্রাচীন হলেও তা মানুষের গবেষণার বিষয়ে পরিণত হয়। আধুনিক যুগে প্রাইমেট ধারণার উদ্ভাবন সম্পর্কে যে যুগান্তকারী ধারণা বিরাজমান তন্মধ্যে প্রকৃতি বিজ্ঞানী চার্লস ডারউইনের বিবর্তনবাদ ধারণা অন্যতম। এখানে উল্লেখ্য যে, ডারউইনের 'অনেক পূর্বে বিজ্ঞানী লিনিয়াস ১৭৩৫ খ্রিস্টাব্দে তার 'Systema Naturae' গ্রন্থে প্রাইমেটকে স্তন্যপায়ী শ্রেণির অন্যতম শাখারূপে করেন। আর এজন্য তাকেই প্রাইমেট ধারণার উদ্ভাবক বলা হয়। বিজ্ঞানী লিনিয়াস স্তন্যপায়ী প্রাণীর যে ১৪টি শাখার বা বর্গের কথা বলেন তন্মধ্যে একটি হচ্ছে প্রাইমেট। এ বর্গের বা শাখায় আরও
যা রয়েছে তা হলো লেমুর, বেবুন, বার, নরবানর ও মানুষ ।
২. প্রাইমেটের বৈশিষ্ট্য : প্রাইমেটের অন্যতম বৈশিষ্ট্যগুলো হলো—
ক. প্রাইমেট স্তন্যপায়ী ।
খ. প্রাইমেটের হাতে ও পায়ে পাঁচটি করে আঙুল আছে।
গ. প্রাইমেটের আঙুলের মাথায় নখ আছে ।
ঘ. এরা হাতের বড় আঙুলকে অন্যান্য আঙুলের ওপর আনতে পারত ।
ঙ. প্রাইমেটের হাতের থাবা অন্য কিছু সহজে আঁকড়ে ধরতে সাহায্য করতো ।
চ. প্রাইমেট অতি সহজে বৃক্ষে চড়তে পারত ।
ছ. প্রাইমেটদের হাত ও পায়ের পাতা লম্বা এবং চোখ মাথার সামনে ও অক্ষিকোটরে স্থাপিত। এভাবে দেখা যায়,
মানুষের পূর্বপুরুষ হিসেবে প্রাইমেটদের মধ্যে মানুষের মতোই বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান ছিল ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, মানুষের পূর্বপুরুষ হিসেবে নৃবিজ্ঞানীদের মধ্যে যারা প্রাইমেটকে শনাক্ত করেছেন তাদের ধারণা যথার্থ ছিল বলে মনে হয়। প্রাইমেট মানুষের মতোই অনেক গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যের অধিকারী ছিল । সময়ের বিবর্তন ধারায় এ প্রাইমেটই বর্তমান মানবসমাজে রূপান্তরিত হয়েছে।

জাভা মানব সম্পর্কে যা জান লেখ।

উত্তর ভূমিকা : আদি মানবগোষ্ঠীর অন্যতম বাসস্থান ছিল বর্তমান ইন্দোনেশিয়াতে। ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপে অনুসন্ধান চালিয়ে এক প্রকার আদি মানবগোষ্ঠীর সন্ধান পাওয়া যায় যাদের দুই পা সোজা করে হাঁটার সক্ষমতা ছিল। মানব সভ্যতার ইতিহাসে এরাই জাভা মানব হিসেবে পরিচিত। জাভা দ্বীপের প্রাচীন মনুষ্য প্রজাতির সন্ধান দানে ড. ইউজেনি দুবিস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন ।
● জাভা মানব : জাভা মানব সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হলো :
১. জাভা মানব পরিচিতি : ১৮৯১ সালে অনুসন্ধান চালিয়ে ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপে প্রাচীন মনুষ্য প্রজাতির কয়েকটি ফসিল পাওয়া গেছে। জাভা দ্বীপে আবিষ্কৃত এ প্রাচীন মানুষই জাভা মানব হিসেবে পরিচিতি পায়। তারা মাঝারি উচ্চতার মানুষ ছিল এবং দুই পায়ে সোজা হয়ে হাঁটতে পারত ।
২. জাভা মানবের আবিষ্কার : আর্নেস্ট হেকেলের আদি মানুষের বিবর্তনের ওপর রচিত 'The History of Creation or, The Development of the Earth and its Inhabitants by the Action of Natural Causes' বইটি পাঠ করে. ডাচ নাগরিক ড. ইউজেনি দুবিস প্রত্নজীববিদ্যায় অত্যন্ত উৎসাহী হয়ে ওঠেন। আর্নেস্ট হেকেলের মতো ড. ইউজেনি দুবিস মনে করতেন, ইন্দোনেশিয়াতে হয়ত মানুষের আদিপুরুষের নমুনা পাওয়া যাবে। সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে তিনি প্রথমে সুমাত্রা ও পরে জাভা অঞ্চলে গবেষণা কার্যক্রম শুরু করেন। জাভার ত্রিনিল গ্রামের সলো নদীর পাশে খনন কাজ চালান। ১৮৯১ সালে তিনি এ স্থানেই প্রাচীন মানুষের করোটির অংশ খুঁজে পান। অনেক পরীক্ষানিরীক্ষার পর ডিবোয়া এ শহরের নাম দেন 'Pithecanthropus Erectus'. অর্থাৎ সোজা হয়ে হাঁটতে পারে এমন মানব । যার অন্য নাম জাভা মানব ।
৩. জাভা মানবের প্রকৃতি : ড. ইউজেনি দুবিসের আবিষ্কৃত জাভা মানবটির করোটি দেখতে লম্বা। তবে এর নিম্নমুখী ব্রেনকেস। এ মানবের কপাল বলতে তেমন কিছুই ছিল না। এর ক্রেনিয়ামটির আয়তন প্রায় ৯৪০ সি. সি. । আধুনিক মানুষের উরুর হাড়ের সাথে প্রাপ্ত ফসিলটির উরুর হাড়ের গুরুত্বপূর্ণ মিল রয়েছে। এরা হাঁটতে পারে এমন মানুষের মতোই ছিল । ড. ইউজেনি দুবিসের আবিষ্কৃত আদি মানবের ফসিলটি পরীক্ষা করে গবেষকরা সিদ্ধান্ত নেন যে, জাভা মানব প্রাথমিক পর্যায়ের মানবের গোত্রভুক্ত ছিল । সম্ভবত তারা কথা বলতে পারত। তবে তা স্পষ্ট নয় । এসব প্রকৃতি বিশ্লেষণ করে ড. ইউজেনি দুবিসসহ অন্যান্য গবেষকরা সিদ্ধান্ত নেন যে জাভা মানব শিম্পাঞ্জি ও বর্তমান মানুষের মাঝামাঝি পর্যায়ের মানুষ ছিল ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, গড় দৈহিক উচ্চতা ও ওজন এবং মানুষের চেয়ে অনেক ছোট মগজ বিশিস্ট মানুষরাই 'Pithecanthropus Erectus' নামে পরিচিত। ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপে আবিষ্কৃত হয়েছে বলে তারা জাভা মানব হিসেবে স্বীকৃত। এশিয়াতে মনুষ্য প্রজাতির এ বড় আবিষ্কার একদিকে যেমন মানুষের বিবর্তনকে উল্লেখ করে তেমনি এশিয়াতে প্রাচীন মানুষের বিচরণেরও প্রমাণ করে ।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]