নব্য প্রস্তর যুগকে নবোপলীয় বিপ্লব বলার কারণ কী?
উত্তর ভূমিকা : প্রাগৈতিহাসিক যুগের শেষ ধাপ নব্য প্রস্তর যুগ নামে পরিচিত। যুগের পর যুগ পেরিয়ে মধ্য প্রস্তর যুগের অবসানের পর জ্ঞান পরিধি বৃদ্ধির ফলে মানুষ নতুন প্রস্তরযুগে প্রবেশ করেছে। এ যুগে মানুষ মসৃণ, ধারালো ও তীক্ষ্ণ পাথরের হাতিয়ারের মাধ্যমে যে প্রভূত উন্নতি সাধন করেছে তাকে এককথায় নবোপলীয় বিপ্লব বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে ।
● নব্য প্রস্তর যুগকে নবোপলীয় বিপ্লব বলার কারণ : প্রাগৈতিহাসিক যুগের শেষ পর্যায়ে এসে মানুষ নতুন হাতিয়ার, উদ্যানভিত্তিক কৃষি ব্যবস্থা, চাকা আবিষ্কার, সামাজিক বন্ধনের নতুন মাত্রাদানের মাধ্যমে সামগ্রিক জীবন ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন সাধন করে। পুরাতাত্ত্বিকগণ মানবজীবনের এ সামগ্রিক পরিবর্তনকেই নবোপলীয় বিপ্লব বলে আখ্যা দেন । নিম্নে নব্য প্রস্তর যুগকে নবোপলীয় বিপ্লব বলার যথার্থ কারণসমূহ দেওয়া হলো :
১. উন্নত হাতিয়ার উদ্ভাবন : নবোপলীয় যুগের প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে পাথরের হাতিয়ারের ব্যাপক উন্নয়ন সাধন । এ যুগে পুরোপলীয় যুগের অনুন্নত, স্থূল, ভোঁতা, অমসৃণ হাতিয়ারের পরিবর্তে মানুষ অপেক্ষাকৃত সূক্ষ্ম, ধারালো ও মসৃণ হাতিয়ার তৈরি করে । যা তাদের জীবনকে আরও সহজ, সুন্দর করে তোলে ।
২. কৃষি পদ্ধতির সূচনা : নবোপলীয় যুগে বৈপ্লবিক আবিষ্কারসমূহের মধ্যে কৃষি পদ্ধতির উদ্ভাবন বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। নবোপলীয় যুগে পুরুষরা যখন শিকারের উদ্দেশ্যে দূরবর্তী স্থানে চলে যেত তখন নারীরা তাদের বসবাস স্থানের পাশে বুনোঘাস, ভক্ষণযোগ্য লতাপাতার বীজবপন করে রাখত। এভাবে নারীসমাজ উদ্যানভিত্তিক কৃষি পদ্ধতির সূচনা ঘটায় ।
৩. ঘরবাড়ি নির্মাণ : নবোপলীয় যুগে বীজবপন করার পর ফসল ওঠার আগ পর্যন্ত মানুষকে শস্যখেতের পাশে অবস্থান করতে হতো। আর এজন্য ঝড়, বৃষ্টি ও রোদ হতে রক্ষার জন্য ঘরবাড়ি নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। স্থানীয় সহজলভ্য উপকরণ দিয়ে এ যুগে মানুষ ঘর তৈরির কৌশল আবিষ্কার করে। ফলে গুহা জীবন ত্যাগ করে মানুষ নির্মিত ঘরেই বসবাস শুরু করে ।
৪. চাকা আবিষ্কার : কুমারের চাকা আবিষ্কার নবোপলীয় যুগের অপর একটি বৈপ্লবিক পদক্ষেপ। এ যুগে মানুষ মাটির পাত্র তৈরির কৌশল আয়ত্ত করে কিন্তু মাটির পাত্রকে মসৃণ করার জন্য ক্রমাগত হাত ঘোরাতে হতো। ফলে হাত ঘোরানোর প্রয়োজনীয়তা থেকেই নবপোলীয় যুগের মেয়েরা কুমারের চাকা আবিষ্কার করে।
৫. পশুপালনের সূচনা : নবোপলীয় যুগের অপর একটি অগ্রগামী পদক্ষেপ হচ্ছে পশুপালন পদ্ধতির সূচনা। মানুষের ঘরের পাশে বুনোঘাস, লতাপাতা উৎপন্ন হওয়াতে পশুসমূহ এগুলো খাওয়ার লোভে লোকালয়ে আসলে মানুষ সেগুলোকে ধরে ফেলত । এভাবে আটকে পড়া পশুসমূহকে মানুষ পোষ মানিয়ে পশুপালনের সূচনা করে।
৬. সামাজিক বন্ধন : নবোপলীয় যুগে মানুষের মধ্যে সামাজিক মর্যাদা ও নিরাপত্তা বৃদ্ধির জন্য বিবাহের সূত্রপাত হয়। তারা দুই প্রকার বিবাহের সূচনা করে। যথা : একগামিতা ও বহুগামিতা। এ যুগে একজন পুরুষের একাধিক স্ত্রী ছিল। একজনের একাধিক স্ত্রী থাকাতে জনসংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকে ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, নবোপলীয় যুগে মানুষের জীবন ব্যবস্থায় অনেক কিছুর নতুন সংযোজন ঘটে। এর মাধ্যমে মানুষ তার জীবন সহজলভ্য ও উপভোগ্য করে তুলেছে। পূর্ববর্তী যেকোনো সময়ের চেয়ে নব্য প্রস্তর যুগের মানুষ প্রকৃতি ও পরিবেশকে নিয়ন্ত্রণ ও সামঞ্জস্যবিধানে কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রভুত্ব অর্জন করতে সমর্থ হয়। ফলে প্রখ্যাত প্রত্নতত্ত্ববিদ ভি. গর্ডন চাইল্ড নব্য প্রস্তর যুগকে নবোপলীয় বিপ্লব (Neolithic Revolution) হিসেবে অভিহিত
FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত