বক্সারের যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল আলোচনা কর। এ যুদ্ধে মীর কাশিম ব্যর্থ হয়েছিল কেন?

ভূমিকা : ভারতবর্ষে মুঘল সম্রাটদের উদাসীনতা, অদূরদর্শিতা এবং সুষ্ঠু বাণিজ্যনীতি না থাকায় ইংরেজরা এ দেশে বাণিজ্য করার অনুমতিসহ রাজনৈতিক সুবিধা লাভ করে। তারা বাংলার নবাব সিরাজ উদ-দৌলার আত্মীয়স্বজন ও দরবারের লোকজনের সাথে ষড়যন্ত্র করে পলাশীর যুদ্ধে প্রহসনমূলকভাবে নবাবকে পরাজিত ও নিহত করে। এরপর নবাব মীর কাশিমের সাথে তাদের দ্বন্দ্ব বাধে এবং এর চূড়ান্ত রূপ ধারণ করে ১৭৬৪ সালের ঐতিহাসিক বক্সারের যুদ্ধে। এ সময়ই ইংরেজদের বণিকের মানদণ্ড রাজদণ্ডে রূপান্তরিত হয়।
বক্সারের যুদ্ধ সম্পর্কে স্যার জেমস স্টিফেন মন্তব্য করেন, "The Battle of Buxar deserves for more credit their of Palassey as the origin of the British power in India." অর্থাৎ, ব্রিটিশ শক্তির উৎপত্তি হিসেবে ভারতে পলাশীর যুদ্ধ অপেক্ষা বক্সারের যুদ্ধ অধিক গুরুত্বপূর্ণ।
বক্সারের যুদ্ধের পটভূমি : পলাশীর যুদ্ধের পর মীরজাফর ইংরেজদের হাতের ক্রীড়নক হিসেবে বাংলার মসনদে উপবিষ্ট হন। ইংরেজদের ক্রমবর্ধমান অর্থের চাহিদা মিটানোর মত সামর্থ্য পালন করতে মীরজাফর ব্যর্থ হয়।
রাজস্ব আদায় ঠিকমতো না হওয়াতে ইংরেজরা তাকে ওলন্দাজ ও আর্মেনীয়দের সাথে গোপনে যড়যন্ত্র করছে এ অজুহাত এনে তাকে পদচ্যুত করে এবং তার জামাতা মীরকাশিমকে ক্ষমতায় মনোনীত করে। তিনি ছিলেন একজন দূরদর্শী রাজনৈতিক, স্বাধীনচেতা ও প্রকৃত দেশপ্রেমিক। শাসনতন্ত্রকে স্বীয় অনুকূলে আনার পাশাপাশি তিনি ঔদ্ধত্য ও বিদ্রোহী জমিদারদেরকে আনুগত্য স্বীকারে বাধ্য করেন। ইংরেজদের আধিপত্য মনোভাব উপলব্ধি করে তিনি কৌশল হিসেবে কিছু নীতি গ্রহণ করেন । নীতিসমূহ নিম্নরূপ :
১. তিনি ইংরেজদের প্রাপ্য মিটানোর জন্য বর্ধমান, মেদিনীপুর ও চট্টগ্রাম এ তিনটি জেলা প্রদান করে ইংরেজদের নিকট হতে ঋণমুক্ত হন।
৩. শাসন সংক্রান্ত ব্যাপারে যথাসম্ভব ব্যয়সংকোচ করেন এবং কয়েকটি নতুন কর স্থাপন করে রাষ্ট্রীয় রাজস্ব ব্যবস্থাকে মজবুত করেন। জমিদারদের নিকট হতে বকেয়া রাজস্ব আদায় করে অর্থনৈতিক কাঠামা ঢেলে সাজান।
৪. ইংরেজ ষড়যন্ত্রের বেড়াজালে আবদ্ধ রাজধানী মুর্শিদাবাদকে তিনি মুঙ্গেরে স্থানান্তর করেন।
৫. তিনি ইংরেজদের কর্তৃপক্ষের দৃষ্টির আড়ালে নিজ দেশীয় সৈন্যদের ইউরোপীয় কায়দায় প্রশিক্ষণ দিতে চাইলেন ।
৬. বিহারের শাসনকর্তা রামনারায়নকে ইংরেজপ্রীতি এবং অসাধুতার জন্য বরখাস্ত করেন। ৭. ৮. তিনি কামান ও বন্দুক নির্মাণের ব্যবস্থা করেন। কিন্তু এসব আয়োজন শেষ হওয়ার পূর্বেই ইংরেজদের সাথে তাঁর সম্পর্কের অবনতি ঘটে এবং বক্সারের প্রান্তরে মুখোমুখি হয় ।
বক্সারের যুদ্ধের কারণ : কতিপয় কারণে বাংলার নবাব মীরকাশিম ও ইংরেজ কোম্পানির মধ্যে বক্সার প্রান্তরে ১৭৬৪ খ্রিস্টাব্দে এক ভয়াবহ যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এ যুদ্ধের কারণগুলো নিম্নে আলোচনা করা হল :
১. চুক্তির বিপরীত : মীরজাফরের অযোগ্যতা, অকর্মণ্যতা এবং ইংরেজদেরকে প্রতিশ্রুত অর্থ আদায়ের অক্ষমতায় বিরক্ত হয়ে ইংরেজ কোম্পানি তাকে অপসারিত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করে। ইতোমধ্যে ইংরেজ কোম্পানির কলকাতা প্রেসিডেন্সির গভর্নর ভ্যান্সিটাট ও মীরকাশিমের মধ্যে গোপন শলাপরামর্শের মাধ্যমে একটি সন্ধিপত্র স্বাক্ষরিত হয়।
গম্ভির শর্ত মোতাবেক মীরজাফর নামেমাত্র নবার থাকবেন এবং মীরকাশিম মায়ের সুবাদার হবেন। শাসন সংক্রান্ত ব্যাপারে তাঁর পূর্ণ কর্তৃত্ব থাকবে। কিন্তু বাস্তবক্ষেত্রে দেখা গেল তার বিপরীত। ফলে মীরকাশিমের উপর ইংরেজরা তখন থেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকে।
২. ফরমানের অবমাননা । ১৬৫৬ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির এক চুক্তি অনুযায়ী সুবে বাংলা সরকারকে বাজারিক ৩ হাজার টাকা দেওয়ার বিনিময়ে শতকরা আড়াই ভাগ চিরাচরিত বাণিজ্য শুন্ড হতে মুক্তি পায়। কিন্তু ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ও এর কর্মচারীরা কয়েকটি বিশেষ ক্ষেত্রে এ দত্তকের অপব্যবহার করে। ফলে নবাবের রাজস্বে পঁচিশ লক্ষ টাকা লোকগান হয় এবং ভারতীয় বণিকরাও প্রায় সর্বস্বান্ত হয়ে পড়ে। এর ফলে মীরকাশিম দেশীয় প্রজাদের উপর থেকেও শুল্ক চাইয়ে দিয়ে বাণিজ্য করার অধিকার দেয়। এতে ইংরেজ কোম্পানি চরমভাবে তার উপর রেগে যায়।
৩. ব্যক্তিগত অপমান : কতিপয় প্রত্যক্ষ প্রমাণ দেখা যায় যে, মীরকাশিম বাংলার স্বাধীন নবাবতো নয়ই, বরং তিনি ইংরেজ ও কতিপয় বাঙালির অপমান ও উৎসাহের পাত্র হিসেবে পরিগণিত হন। বিহারের নায়েব সুবাদার নারায়ণ ও ফৌজদার রাজবল্লত ছিলেন ইংরেজদের অনুগৃহীত ও আশ্রিত। ফলে তারা নবাবের আদেশ নির্দেশের মোটেই তোয়ারা করতেন না। ইংরেজ সিপাহসালার কর্নেল স্টু যত্রতত্র মীরকাশিমকে অপমানিত করতেন। ফলে ইংরেজদের সাথে তাঁর সম্পর্ক ঘটে।
৪. প্রজাদের উপর অত্যাচার নবাবের উপর ব্যক্তিগত অপমান ছাড়াও কোম্পানির কর্মচারীরা বাংলার জনগণের উপর নানা অত্যাচার ও উৎপীড়ন করত। দেশীয় বণিকদের নিকট হতে পণ্যদ্রব্য কিনতে তারা ন্যায্য দামের চেয়ে অনেক তম দিত। অনেক সময় এ কম মূল্যও দেশীয় লোকেরা পেত না। অপরপক্ষে, ইংরেজরা তাদের নিকট হতে চড়া দামে দেশীয় বণিকদেরকে পণ্য কিনতে বাধ্য করত।
৫. ষড়যন্ত্রকারীদের গৃহবন্দি : সিংহাসনে আরোহণের পরপর মীরকাশিম তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী মুরলীধর, রাজবল্লভ, জগৎশেঠ প্রমুখের কার্যকলাপে অতিষ্ঠ হয়ে তাদেরকে মুঙ্গে বন্দি করেন। এ দমননীতি ইংরেজদের স্বার্থের পরিপন্থি হওয়ায় নবাব মীর কাশিমের বিরুদ্ধে তারা ষড়যন্ত্র করে।
6. মীর কাশিমের বিরুদ্ধে অভিযান : মীর কাশিমের গৃহীত নীতি ইংরেজদের মনঃপুত হল না। ফলে তারা নবাব মীরকাশিমের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণই একমাত্র পন্থা বলে স্থির করেন। পাটনার ইংরেজ বাণিজ্য কুঠির এ্যালিস সবচেয়ে বিরত হয়। ঐতিহাসিক র্যামসে মুর স্পষ্টই বলেছেন, “এ্যালিস নিজের এবং বন্ধু-বান্ধবদের অবৈধ অর্থ উপার্জনের পথের বাধা দূর করার উদ্দেশ্যে মীর কাশিমের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণে বদ্ধপরিকর ছিলেন।”
৭. বক্সারের যুদ্ধ ১৭৬৩ সালে মেজর এ্যাডামসের নেতৃত্বে ১০,০০০ ইউরোপীয় ও ৪০০০ দেশীয় সৈন্য নিয়ে ইংরেজ বাহিনী মীরকাশিমের বিরুদ্ধে অগ্রসর হন। মীরকাশিমের অধীনে প্রায় ২০,০০০ সৈন্য ছিল। অধিকসংখ্যক সৈন্য থাকা সত্ত্বেও তাদের কোন সামরিক দক্ষতা ছিল না। মীরকাশিম কটোয়া গিরিলা, উদয়নালা প্রভৃতি যুদ্ধে ইংরেজদের নিকট পরাজিত হন। এরপর মেজর এ্যাডামস মুঙ্গেরের দিকে অগ্রসর হলে মীরকাশিম পাটনায় পলায়ন করে সমস্ত ইংরেজ বন্দিকে নৃশংসভাবে হত্যা করেন। মেজর এ্যাডামূস মুঙ্গের অভিমুখে অগ্রসর হলে মীরকাশিম নিরুপায় হয়ে অযোধ্যায় পলায়ন করে নবাব সুজা-উদ-দৌলার আশ্রয় গ্রহণ করেন।
এ সময় মীরকাশিম সুজা-উদ-দৌলাসহ সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলমের সাহায্য প্রার্থনা করেন। তিনি আশা করেছিলেন যে, অযোধ্যার নবাব সিংহাসন পুনরুদ্ধারে তাকে সাহায্য করবেন, কিন্তু ১৭৬৪ সালে বক্সারের যুদ্ধে ইংরেজ সেনাপতি মেজর হেক্টর মুনরোর নিকট সম্মিলিত বাহিনীর শোচনীয় পরাজয় ঘটল। শাহ আলম ইংরেজদের পক্ষে যোগ দিলেন এবং সুজা-টিন-দৌলা শর্ত সাপেক্ষে স্বীয় সাম্রাজ্য পুনঃপ্রতিষ্ঠা করলেন। মীরকাশিম আত্মগোপন করেন। সম্ভবত ১৭৭৭ সালে অতি দরিদ্র অবস্থায় দিল্লির কোন জীর্ণ কুঠিরে তাঁর মৃত্যু হয়।
নীর কাশিমের পরাজয়ের কারণ : প্রচুর ধনদৌলতের মালিক এবং অনেক আগ্নেয়াস্ত্র থাকা সত্ত্বেও মীরকাশিম পরাজিত হন। এ সম্পর্কে N. Chaterhgee বলেছেন, “ইংরেজ শক্তিকে উচ্ছেদ করার জন্য মীরকাশিমের ব্যর্থতা শুধু দৈবক্রমেই ঘটে নি এটা ছিল নানাবিধ ঘটনার পরিণতি এবং সেগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।" নিম্নে তাঁর পরাজয়ের কারণগুলো উল্লেখ করা হল :
১. তাঁর অধীনে তার্কিখান ছাড়া সমস্ত সেনাপতিই ছিল নিষ্কর্মা ও অদক্ষ। তাছাড়া তারা পারস্পরিক কলহেও লিপ্ত ছিল। অর্থনৈতিক দুর্বলতা তাকে পরাজয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে নিয়ে যায়।
৩. নিজেতো দক্ষ সৈনিক ছিলেনই না বরং, তাঁর সুনিয়ন্ত্রিত কোন সেনাবাহিনীও ছিল না।
৪. ইংরেজদের সুশিক্ষিত ও সুশৃঙ্খল সেনাবাহিনীর নিকট মীরকাশিমের বাহিনী ছিল অত্যন্ত দুর্বল।
৫. কাশিম কঠোর, নির্ভীক দৃঢ় চেতনার পরিবর্তে দুর্বল চিত্তের মানুষ ছিলেন। কাটোয়ার পরাজয়ে তিনি মানসিক * ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন।
৬. ইংরেজদের উৎকোচ প্রদানের কারণে রাজ্যের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিশ্বাসঘাতকদের আনাগোনা ছিল। এস রাজকর্মচারী ও জমিদারদের সহায়তা তাঁর পরাজয় নিশ্চিত ছিল । ফলাফল : নিম্নে বক্সারের যুদ্ধের ফলাফল সম্পর্কে আলোচনা করা হল
: ১. ব্রিটিশ শাসন প্রতিষ্ঠা : পলাশীর যুদ্ধে সিরাজ উদ-দৌলার পরাজয়ের ফলে ভারতে ব্রিটিশ শাসন প্রতিষ্ঠার পথ উন্মুক্ত হয়েছিল। কিন্তু বক্সারের যুদ্ধে জয়লাভ করে তারা এ দেশের শাসনদণ্ড হাতে নিয়ে নেয় ।
২. উপনিবেশ প্রতিষ্ঠা : বক্সারের যুদ্ধের ফলে বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার রাজক্ষমতা ইংরেজদের হাতে চলে যায় রবার্ট ক্লাইভ এখন লর্ড ক্লাইভ হিসেবে গভর্নর হয়ে আসেন। অল্প কিছু দিনের মধ্যে তারা গোটা ভারতবর্ষে ইংরেজ উপনিবেশ প্রতিষ্ঠা করে। ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত প্রায় পৌনে দু'শত বছর তারা রাজত্ব করে। ঐতিহাসিক ব্রনে বলেছেন, “বক্সারের যুদ্ধের ফলাফলের উপর ভারতবর্ষের ভাগ্য নির্ভরশীল ছিল।"
৩. মুসলিম শক্তির অধপতন : বক্সারের যুদ্ধে পরাজয়ের সাথে সাথে মুসলিম শক্তির ধ্বংস এবং ইংরেজদের ক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে থাকে। শিক্ষা, সংস্কৃতি প্রভৃতি ক্ষেত্রে মুসলমানরা এক চরম অধঃপতনের শিকার হয়।
৪. হিন্দুদের উত্থান পর্ব : এ যুদ্ধে মুসলমানদের পরাজয়ের ফলে হিন্দুগণ ইংরেজদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেন। ইংরেজদের সহযোগিতায় শিক্ষাদীক্ষায় তারা এগিয়ে যায় । পলাশী ও বক্সারের যুদ্ধের পারস্পরিক গুরুত্ব : পলাশী ও বক্সারের যুদ্ধ উভয়টিই ইংরেজদের বিরুদ্ধে পরিচালিত এবং উভয় যুদ্ধেই বাংলার নবাবগণ পরাজিত হন। ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধ আর ১৭৬৪ সালে বক্সারের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। পলাশীর যুদ্ধ অপেক্ষা বক্সারের যুদ্ধ অধিক গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
স্যার জেম্স স্টোফেন বলেছেন, "The Battle of Buxar deserves for more credit their of Palassey as the drigin of the British power in India." অর্থাৎ, ব্রিটিশ শক্তির উৎপত্তি হিসেবে ভারতে পলাশী অপেক্ষা বক্সারের যুদ্ধ অধিক গুরুত্বপূর্ণ। আবার ঐতিহাসিক মজুমদার রায় চৌধুরী বলেছেন, “পলাশীর যুদ্ধ অপেক্ষা মীরকাশিমের সাথে সংঘর্ষ বাংলার বিজেতা হিসেবে ইংরেজদের দাবিকে প্রকৃত অর্থে প্রতিষ্ঠিত করে।” .
পলাশীর যুদ্ধ ইংরেজদিগকে বাংলাদেশে প্রভুত্ব স্থাপনে সাহায্য করে, কিন্তু বক্সারের যুদ্ধ ইংরেজদিগকে শুধু বাংলাদেশে দৃঢ় স্থায়িত্ব দান করে নি, বরং সমগ্র বঙ্গ-ভারতে 'নিরাপত্তা দান করে। ভারতবর্ষ ছাড়াও উত্তরপশ্চিম সীমান্তে তাদের আধিপত্য বিস্তারে সহায়তা লাভ হয় । দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রায় সমগ্র অংশে তারা ২০০ বছরের ব্রিটিশ রাজত্বের ইতিহাস এর সূচনা করে বক্সারের যুদ্ধ জয়ের মাধ্যমে। বক্সারের যুদ্ধের সাথে সমগ্র ভারতের স্বাধীনতার প্রশ্ন জড়িত ছিল। স্বাধীনতা রক্ষার প্রশ্নে উদ্বুদ্ধ যুদ্ধে পলাশী অপেক্ষা বক্সারের যুদ্ধে অধিকসংখ্যক সৈন্য হতাহত হয় এবং মৃত্যুবরণ করে। এ যুদ্ধে ভারতীয়রা তাদের স্বদেশপ্রেমের চরম পরাকাষ্ঠা প্রদর্শনে সামর্থ্য হয়। •
উপসংহার ঃ উপরিউক্ত আলোচনার শেষে বলা যায় যে, ১৭৬৪ খ্রিস্টাব্দে সংঘটিত বক্সারের যুদ্ধ মূলত মীরকাশিম বাংলার স্বাধীনতার শেষ আশা আর ইংরেজ কোম্পানির রাজদণ্ড দখলের চূড়ান্ত যুদ্ধ। মীরকাশিম যুদ্ধ করে বাংলার স্বাধীনতা রক্ষা করতে ব্যর্থ হন, আর ইংরেজগণ ক্ষমতা দখল করে তাদের সাম্রাজ্যবাদ নীতির বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। মুসলমানদের হাত হতে ক্ষমতা দখল করার ফলে তারা মুসলমানদিগকে দমননীতি দ্বারা দমন করেন। দীর্ঘকাল ইংরেজ শাসনে এ দেশে মুসলমানদের ভাগ্যাকাশ অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়। ভারতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের গোড়াপত্তনের দিক দিয়ে বিচার করলে বক্সারের যুদ্ধ পলাশীর যুদ্ধ অপেক্ষা অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ ছিল, তা নিঃসন্দেহে বলা যেতে পারে।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]