সহীহ বুখারী শরীফ হজ্জ অধ্যায় ১ম ভাগ হাদিস নং ১৫১৩ – ১৫৫৯

২৫/১. অধ্যায়ঃ
হজ্জ ফর্‌য হওয়া ও এর ফযীলত।

মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ মানুষের উপর আল্লাহ্‌র জন্য বাইতুল্লাহর হজ্জ করা ফরয যারা সেথায় যাওয়ার সামর্থ্য রাখে এবং কেউ প্রত্যাখ্যান করলে সে জেনে রাখুক আল্লাহ্‌ বিশ্বজগতের মুখাপেক্ষীহীন। (আল ‘ইমরানঃ ৯৭)

১৫১৩
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ كَانَ الْفَضْلُ رَدِيفَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَجَاءَتِ امْرَأَةٌ مِنْ خَثْعَمَ، فَجَعَلَ الْفَضْلُ يَنْظُرُ إِلَيْهَا وَتَنْظُرُ إِلَيْهِ، وَجَعَلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَصْرِفُ وَجْهَ الْفَضْلِ إِلَى الشِّقِّ الآخَرِ فَقَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ فَرِيضَةَ اللَّهِ عَلَى عِبَادِهِ فِي الْحَجِّ أَدْرَكَتْ أَبِي شَيْخًا كَبِيرًا، لاَ يَثْبُتُ عَلَى الرَّاحِلَةِ، أَفَأَحُجُّ عَنْهُ قَالَ ‏ “‏ نَعَمْ ‏”‏‏.‏ وَذَلِكَ فِي حَجَّةِ الْوَدَاعِ‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ফযল ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) একই বাহনে আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পিছনে আরোহণ করেছিলেন। এরপর খাশ‘আম গোত্রের জনৈক মহিলা উপস্থিত হল। তখন ফযল (রাঃ) সেই মহিলার দিকে তাকাতে থাকে এবং মহিলাটিও তার দিকে তাকাতে থাকে। আর আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফযলের চেহারা অন্যদিকে ফিরিয়ে দিতে থাকে। মহিলাটি বলল, হে আল্লাহ্‌র রাসূল ! আল্লাহ্‌র বান্দার উপর ফর্‌যকৃত হজ্জ আমার বয়োঃবৃদ্ধ পিতার উপর ফর্‌য হয়েছে। কিন্তু তিনি বাহনের উপর স্থির থাকতে পারেন না, আমি কি তাঁর পক্ষ হতে হজ্জ আদায় করবো? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ (আদায় কর)। ঘটনাটি বিদায় হজ্জের সময়ের।

২৫/২. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ “তারা তোমার নিকট আসবে পদব্রজে ও সর্বপ্রকার ক্ষীণকায় উষ্ট্রে আরোহণ করে, তারা আসবে দূর-দুরান্তের পথ [৫০] অতিক্রম করে যাতে তারা তাদের কল্যাণময় স্থানগুলোয় উপস্থিত হতে পারে ।” (আল-হাজ্জঃ ২৭)

[৫০] পথ শব্দের মূলে শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে, কুরআনেও বলা হয়েছে যার অর্থ হল প্রশস্ত রাস্তা বা পথ।

১৫১৪
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عِيسَى، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، عَنْ يُونُسَ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، أَنَّ سَالِمَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ، أَخْبَرَهُ أَنَّ ابْنَ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَرْكَبُ رَاحِلَتَهُ بِذِي الْحُلَيْفَةِ ثُمَّ يُهِلُّ حَتَّى تَسْتَوِيَ بِهِ قَائِمَةً‏.‏

ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি দেখেছি, আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুলহুলাইফা নামক স্থানে তাঁর বাহনের উপর আরোহণ করেন, বাহনটি সোজা হয়ে দাঁড়াতেই তিনি তালবিয়া উচ্চারণ করতে থাকেন।

১৫১৫
حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ، أَخْبَرَنَا الْوَلِيدُ، حَدَّثَنَا الأَوْزَاعِيُّ، سَمِعَ عَطَاءً، يُحَدِّثُ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ ـ رضى الله عنهما ـ أَنَّ إِهْلاَلَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ ذِي الْحُلَيْفَةِ حِينَ اسْتَوَتْ بِهِ رَاحِلَتُهُ‏.‏ رَوَاهُ أَنَسٌ وَابْنُ عَبَّاسٍ رضى الله عنهم‏.‏

জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর তালবিয়া পাঠ যুল-হুলাইফা হতে আরম্ভ হত যখন তাঁর বাহন তাঁকে নিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়াতো। হাদীসটি আনাস ও ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেছেন অর্থাৎ ইব্রাহীম ইব্‌নু মূসা (রহঃ)-এর সূত্রে জাবির (রাঃ) বর্ণিত হাদীসটি।

২৫/৩. অধ্যায়ঃ
উটের হাওদায় আরোহণ করে হজ্জে গমণ।

১৫১৬
وَقَالَ أَبَانُ حَدَّثَنَا مَالِكُ بْنُ دِينَارٍ، عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ عَائِشَةَ، رضى الله عنها أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم بَعَثَ مَعَهَا أَخَاهَا عَبْدَ الرَّحْمَنِ، فَأَعْمَرَهَا مِنَ التَّنْعِيمِ، وَحَمَلَهَا عَلَى قَتَبٍ‏.‏ وَقَالَ عُمَرُ ـ رضى الله عنه ـ شُدُّوا الرِّحَالَ فِي الْحَجِّ، فَإِنَّهُ أَحَدُ الْجِهَادَيْنِ‏.‏

‘আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আয়েশা (রাঃ) এর সাথে তাঁর ভাই ‘আবদুর রাহমান (রাঃ) কে প্রেরণ করেন। তিনি আয়েশা (রাঃ) কে ‘তান’ঈম’ নামক স্থান হতে ছোট একটি হাওদায় বসিয়ে ‘উমরাহ করতে নিয়ে যান। ‘উমর (রাঃ) বলেন, তোমরা হজ্জে (গমনের উদ্দেশ্যে) উটের পিঠে হাওদা মজবুত করে বাঁধ (সফর কর)। কেননা, হজ্জও এক প্রকারের জিহাদ।

১৫১৭
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي بَكْرٍ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، حَدَّثَنَا عَزْرَةُ بْنُ ثَابِتٍ، عَنْ ثُمَامَةَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَنَسٍ، قَالَ حَجَّ أَنَسٌ عَلَى رَحْلٍ، وَلَمْ يَكُنْ شَحِيحًا، وَحَدَّثَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَجَّ عَلَى رَحْلٍ وَكَانَتْ زَامِلَتَهُ‏.‏

সুমামা ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আনাস (রাঃ) হাওদায় আরোহণ অবস্থায় হজ্জে গমন করেছেন অথচ তিনি কৃপণ ব্যক্তি ছিলেন না। তিনি আরও বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাওদায় আরোহণ করে হজ্জে গমন করেন এবং সেই উটটিই তাঁর মালের বাহন ছিল।

১৫১৮
حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عَلِيٍّ، حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ، حَدَّثَنَا أَيْمَنُ بْنُ نَابِلٍ، حَدَّثَنَا الْقَاسِمُ بْنُ مُحَمَّدٍ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ أَنَّهَا قَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ، اعْتَمَرْتُمْ وَلَمْ أَعْتَمِرْ‏.‏ فَقَالَ ‏ “‏ يَا عَبْدَ الرَّحْمَنِ اذْهَبْ بِأُخْتِكَ فَأَعْمِرْهَا مِنَ التَّنْعِيمِ ‏”‏‏.‏ فَأَحْقَبَهَا عَلَى نَاقَةٍ فَاعْتَمَرَتْ‏.‏

‘আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ! আপনারা ‘উমরাহ করলেন, আর আমি ‘উমরাহ করতে পারলাম না ! নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হে ‘আবদুর রাহমান ! তোমার বোন (‘আয়েশা) কে সাথে করে নিয়ে তান’ঈম হতে গিয়ে ‘উমরাহ করিয়ে নিয়ে এসো। তিনি ‘আয়েশা (রাঃ) কে উটের পিঠে ছোট একটি হাওদার পশ্চাদ্ভাগে বসিয়ে দেন এবং তিনি ‘উমরাহ আদায় করেন।

২৫/৪. অধ্যায়ঃ
হজ্জে মাবরূর কবুলকৃত হজ্জের ফযীলাত।

১৫১৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ سُئِلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَيُّ الأَعْمَالِ أَفْضَلُ قَالَ إِيمَانٌ بِاللهِ وَرَسُولِهِ قِيلَ ثُمَّ مَاذَا قَالَ جِهَادٌ فِي سَبِيلِ اللهِ قِيلَ ثُمَّ مَاذَا قَالَ حَجٌّ مَبْرُورٌ

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- কে জিজ্ঞেস করা হলো, সর্বোত্তম আমল কোনটি? তিনি বললেনঃ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আনা। জিজ্ঞেস করা হল , অতঃপর কোনটি? তিনি বললেনঃ আল্লাহর পথে জিহাদ করা। জিজ্ঞেস করা হল, অতঃপর কোনটি? তিনি বলেনঃ হজ্জ-ই-মাবরূর (মাকবূল হজ্জ)।

১৫২০
حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمٰنِ بْنُ الْمُبَارَكِ حَدَّثَنَا خَالِدٌ أَخْبَرَنَا حَبِيبُ بْنُ أَبِي عَمْرَةَ عَنْ عَائِشَةَ بِنْتِ طَلْحَةَ عَنْ عَائِشَةَ أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ أَنَّهَا قَالَتْ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم نَرَى الْجِهَادَ أَفْضَلَ الْعَمَلِ أَفَلاَ نُجَاهِدُ قَالَ لاَ لَكِنَّ أَفْضَلَ الْجِهَادِ حَجٌّ مَبْرُورٌ

উম্মুল মু‘মিনীন ‘আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন। হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! জিহাদকে আমরা সর্বোত্তম ‘আমল মনে করি। কাজেই আমরা কি জিহাদ করবো না? তিনি বললেনঃ না, বরং তোমাদের জন্য সর্বোত্তম জিহাদ হল, হজ্জে মাবরূর।

১৫২১
حَدَّثَنَا آدَمُ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ حَدَّثَنَا سَيَّارٌ أَبُو الْحَكَمِ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا حَازِمٍ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ مَنْ حَجَّ للهِ÷ فَلَمْ يَرْفُثْ وَلَمْ يَفْسُقْ رَجَعَ كَيَوْمِ وَلَدَتْهُ أُمُّهُ

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- কে বলতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ্জ করলো এবং অশালীন কথাবার্তা ও গুনাহ হতে বিরত রইল, সে ঐ দিনের মত নিষ্পাপ হয়ে হজ্জ হতে ফিরে আসবে যেদিন তার মা জন্ম দিয়েছিল।

২৫/৫. অধ্যায়ঃ
হজ্জ ও ‘উমরাহ’র মীকাত (ইহ্‌রাম বাঁধার স্থান) নির্ধারণ।

১৫২২
حَدَّثَنَا مَالِكُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ قَالَ حَدَّثَنِي زَيْدُ بْنُ جُبَيْرٍ أَنَّهُ أَتَى عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ فِي مَنْزِلِهِ وَلَهُ فُسْطَاطٌ وَسُرَادِقٌ فَسَأَلْتُهُ مِنْ أَيْنَ يَجُوزُ أَنْ أَعْتَمِرَ قَالَ فَرَضَهَا رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لأَ÷هْلِ نَجْدٍ قَرْنًا وَلأهْلِ الْمَدِينَةِ ذَا الْحُلَيْفَةِ وَلأَ÷هْلِ الشَّأْمِ الْجُحْفَةَ

যায়দ ইব্‌নু জুবাইর (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি ‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) এর কাছে তাঁর অবস্থান স্থলে যান, তখন তাঁর জন্য তাঁবু ও চাঁদোয়া টানানো হয়েছিল। [যায়দ (রাঃ) বলেন] আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, কোন্‌ স্থান হতে ‘উমরাহ’র ইহ্‌রাম বাঁধা জায়িয হবে? তিনি বললেন, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নাজদ্‌বাসীর জন্য কারণ, মদীনাবাসীর জন্য যুল-হুলাইফাহ ও সিরিয়াবাসীদের জন্য জুহফা (ইহরামের মীকাত) নির্ধারণ করে দিয়েছেন। (১৩৩)

(আঃপ্রঃ ১৪২৩, ইঃফাঃ ১৪২৯)

২৫/৬. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহর বাণীঃ তোমরা পাথেয়ের ব্যবস্থা কর। আর তাকওয়াই হল শ্রেষ্ঠ পাথেয়। (আল-বাকারাঃ ১৯৭)

১৫২৩
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بِشْرٍ حَدَّثَنَا شَبَابَةُ عَنْ وَرْقَاءَ عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ كَانَ أَهْلُ الْيَمَنِ يَحُجُّونَ وَلاَ يَتَزَوَّدُونَ وَيَقُولُونَ نَحْنُ الْمُتَوَكِّلُونَ فَإِذَا قَدِمُوا مَكَّةَ سَأَلُوا النَّاسَ فَأَنْزَلَ اللهُ تَعَالَى {وَتَزَوَّدُوا فَإِنَّ خَيْرَ الزَّادِ التَّقْوَى} رَوَاهُ ابْنُ عُيَيْنَةَ عَنْ عَمْرٍو عَنْ عِكْرِمَةَ مُرْسَلاً

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ইয়ামানের অধিবাসীগণ হজ্জে গমনকালে পাথেয় সঙ্গে নিয়ে যেতো না এবং তারা বলছিল, আমরা আল্লাহর প্রতি নির্ভরশীল। কিন্তু মক্কায় উপনীত হয়ে তারা মানুষের দ্বারে দ্বারে যাচনা করে বেড়াত। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ অবতীর্ন করেনঃ (আরবি) “তোমরা পাথেয়ের ব্যবস্থা কর, আত্মসংযমই শ্রেষ্ঠ পাথেয়”। (আল-বাকারাহঃ ১৯৭) হাদীসটি ইব্‌নু ‘উয়াইনাহ (রহঃ) ‘আমর (রহঃ) সূত্রে ‘ইক্‌রিমা (রহঃ) হতে মুরসালরূপে বর্ননা করেছেন।

(আঃপ্রঃ ১৪২৪, ইঃফাঃ ১৪৩০)

২৫/৭. অধ্যায়ঃ
মক্কাবাসীদের জন্য হজ্জ ও ‘ঊমরাহ’র ইহ্‌রাম বাঁধার স্থান।

১৫২৪
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ حَدَّثَنَا ابْنُ طَاوُسٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ إِنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَقَّتَ لأهْلِ الْمَدِينَةِ ذَا الْحُلَيْفَةِ وَلأَ÷هْلِ الشَّأْمِ الْجُحْفَةَ وَلأَ÷هْلِ نَجْدٍ قَرْنَ الْمَنَازِلِ وَلأهْلِ الْيَمَنِ يَلَمْلَمَ هُنَّ لَهُنَّ وَلِمَنْ أَتَى عَلَيْهِنَّ مِنْ غَيْرِهِنَّ مِمَّنْ أَرَادَ الْحَجَّ وَالْعُمْرَةَ وَمَنْ كَانَ دُونَ ذَلِكَ فَمِنْ حَيْثُ أَنْشَأَ حَتَّى أَهْلُ مَكَّةَ مِنْ مَكَّةَ

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইহ্‌রাম বাঁধার স্থান নির্ধারণ করে দিয়েছেন, মদীনাবাসীদের জন্য যুল-হুলায়ফা, সিরিয়াবাসীদের জন্য জুহফা, নজ্‌দবাসীদের জন্য কারনুল-মানাযিল, ইয়ামেনবাসীদের জন্য ইয়ালামলাম। হজ্জ ও ‘উমরাহ নিয়্যাতকারী সেই অঞ্চলের অধিবাসী এবং ঐ সীমারেখা দিয়ে অতিক্রমকারী অন্যান্য অঞ্চলের অধীবাসী সকলের জন্য উক্ত স্থানগুলো মীকাতরূপে গণ্য এবং যারা এ সব মীকাতের ভিতরে (অর্থাৎ মক্কার নিকটবর্তী) স্থানের অধিবাসী, তারা যেখান হতে হজ্জের নিয়্যাত করে বের হবে (সেখান হতে ইহ্‌রাম বাঁধবে)। এমন কি মক্কাবাসী মক্কা হতেই (হজ্জের) ইহ্‌রাম বাঁধবে।

(১৫২৬, ১৫২৯, ১৫৩০, ১৮৪৫, মুসলিম ১৫/২, হাঃ ১১৮১, আহমাদ ২২৪০) (আঃপ্রঃ ১৪২৫, ইঃফাঃ ১৪৩১)

২৫/৮. অধ্যায়ঃ
মদীনাবাসীদের মীকাত ও তারা যুল-হুলায়ফাহ পৌঁছার আগে ইহ্‌রাম বাঁধবে না।

১৫২৫
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ يُهِلُّ أَهْلُ الْمَدِينَةِ مِنْ ذِي الْحُلَيْفَةِ وَيُهِلُّ أَهْلُ الشَّأْمِ مِنْ الْجُحْفَةِ وَأَهْلُ نَجْدٍ مِنْ قَرْنٍ قَالَ عَبْدُ اللهِ وَبَلَغَنِي أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ وَيُهِلُّ أَهْلُ الْيَمَنِ مِنْ يَلَمْلَمَ

ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ মদীনাবাসীগণ যুল-হুলায়ফাহ হতে, সিরিয়াবাসীগণ জুহফা হতে ও নজদবাসীগণ ক্বারণ হতে ইহ্‌রাম বাঁধবে। ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, আমি (অন্যের মাধ্যমে) অবগত হয়েছি, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ইয়ামানবাসীগন ইয়ালামলাম হতে ইহ্‌রাম বাঁধবে।

(১৩৩, মুসলিম ১৫/২, হাঃ ১১৮২, আহমাদ ৫০৮৭) (আঃপ্রঃ ১৪২৬, ইঃফাঃ ১৪৩২)

২৫/৯. অধ্যায়ঃ
সিরিয়াবাসীদের ইহ্‌রাম বাঁধার স্থান।

১৫২৬
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا حَمَّادٌ عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ عَنْ طَاوُسٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ وَقَّتَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لأهْلِ الْمَدِينَةِ ذَا الْحُلَيْفَةِ وَلأَ÷هْلِ الشَّأْمِ الْجُحْفَةَ وَلأَ÷هْلِ نَجْدٍ قَرْنَ الْمَنَازِلِ وَلأهْلِ الْيَمَنِ يَلَمْلَمَ فَهُنَّ لَهُنَّ وَلِمَنْ أَتَى عَلَيْهِنَّ مِنْ غَيْرِ أَهْلِهِنَّ لِمَنْ كَانَ يُرِيدُ الْحَجَّ وَالْعُمْرَةَ فَمَنْ كَانَ دُونَهُنَّ فَمُهَلُّهُ مِنْ أَهْلِهِ وَكَذَاكَ حَتَّى أَهْلُ مَكَّةَ يُهِلُّونَ مِنْهَا

ইব্‌নু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইহ্‌রাম বাঁধার স্থান নির্ধারণ করে দিয়েছেন, মদীনাবাসীদের জন্য যুল-হুলায়ফা, সিরিয়াবাসীদের জন্য জুহ্‌ফা, নজদবাসীদের জন্য ক্বারনুল-মানাযিল, ইয়ামেনবাসীদের জন্য ইয়ালামলাম। উল্লিখিত স্থানসমূহ হজ্জ ও ‘উমরাহ’র নিয়্যাতকারী সেই অঞ্চলের অধিবাসী এবং ঐ সীমারেখা দিয়ে অতিক্রমকারী অন্যান্য অঞ্চলের অধিবাসিদের জন্য ইহ্‌রাম বাঁধার স্থান এবং মীকাতের ভিতরে স্থানের লোকেরা নিজ বাড়ি হতে ইহ্‌রাম বাঁধবে। এমনকি মক্কাবাসীগণ মক্কা হতেই ইহ্‌রাম বাঁধবে। (১৫২৪)

(আঃপ্রঃ ১৪২৭, ইঃফাঃ ১৪৩৩)

২৫/১০. অধ্যায়ঃ
নজ্‌দবাসীদের ইহ্‌রাম বাঁধার স্থান।

১৫২৭
حَدَّثَنَا عَلِيٌّ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَفِظْنَاهُ مِنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ سَالِمٍ عَنْ أَبِيهِ وَقَّتَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم

‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মীকাতের সীমা নির্ধারিত করেছেন। (১৩৩)

(আঃপ্রঃ ১৪২৮, ইঃফাঃ ১৪৩৪)

১৫২৮
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عِيسَى حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ قَالَ أَخْبَرَنِي يُونُسُ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللهِ عَنْ أَبِيهِ سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ مُهَلُّ أَهْلِ الْمَدِينَةِ ذُو الْحُلَيْفَةِ وَمُهَلُّ أَهْلِ الشَّأْمِ مَهْيَعَةُ وَهِيَ الْجُحْفَةُ وَأَهْلِ نَجْدٍ قَرْنٌ قَالَ ابْنُ عُمَرَ زَعَمُوا أَنَّ النَّبِيَّ قَالَ وَلَمْ أَسْمَعْهُ وَمُهَلُّ أَهْلِ الْيَمَنِ يَلَمْلَمُ

‘আবদুল্লাহ (রাঃ) তাঁর পিতা থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ মদীনাবাসীদের মীকাত হলো যুল-হুযায়ফাহ, সিরিয়াবাসীদের মীকাত (মাহইয়া’আহ) যার অপর নাম জুহফা এবং নাজদবাসীদের মীকাত হলো ক্বারন।

ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) বলেন, আমি শুনিনি, তবে লোকেরা বলে যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ইয়ামেনবাসীদের মীকাত হলো ইয়ালামলাম। (১৩৩)

(আঃপ্রঃ ১৪২৮ শেষাংশ, ইঃফাঃ ১৪৩৪ শেষাংশ)

২৫/১১. অধ্যায়ঃ
মীকাতের অভ্যন্তরের অধিবাসীদের ইহ্‌রাম বাঁধার স্থান

১৫২৯
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا حَمَّادٌ عَنْ عَمْرٍو عَنْ طَاوُسٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَقَّتَ لأَهْلِ الْمَدِينَةِ ذَا الْحُلَيْفَةِ وَلأَهْلِ الشَّأْمِ الْجُحْفَةَ وَلأَهْلِ الْيَمَنِ يَلَمْلَمَ وَلأَهْلِ نَجْدٍ قَرْنًا فَهُنَّ لَهُنَّ وَلِمَنْ أَتَى عَلَيْهِنَّ مِنْ غَيْرِ أَهْلِهِنَّ مِمَّنْ كَانَ يُرِيدُ الْحَجَّ وَالْعُمْرَةَ فَمَنْ كَانَ دُونَهُنَّ فَمِنْ أَهْلِهِ حَتَّى إِنَّ أَهْلَ مَكَّةَ يُهِلُّونَ مِنْهَا

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মদীনাবাসীদের জন্য মীকাত নির্ধারন করেন যুল-হুযায়ফাহ, সিরিয়াবাসীদের জন্য জুহফা, ইয়ামেনবাসীদের জন্য ইয়ালামলাম ও নাজদবাসীদের জন্য ক্বারণ। উল্লিখিত স্থান সমূহ হজ্জ ও ‘উমরাহ’র নিয়্যাতকারী সে স্থানের অধিবাসী ও সে সীমারেখা দিয়ে অতিক্রমকারী অন্যান্য এলাকার অধিবাসীদের জন্য ইহ্‌রাম বাঁধার স্থান। আর যে মিকাতের ভিতরের অধিবাসী সে নিজ বাড়ি হতে ইহ্‌রাম বাঁধবে। এমনকি মক্কাবাসীগণ মক্কা হতেই ইহ্‌রাম বাঁধবে। (১৫২৪)

(আঃপ্রঃ ১৪২৯, ইঃফাঃ ১৪৩৫)

২৫/১২. অধ্যায়ঃ
ইয়ামেনবাসীদের মীকাত

১৫৩০
حَدَّثَنَا مُعَلَّى بْنُ أَسَدٍ حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ طَاوُسٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَقَّتَ لأَهْلِ الْمَدِينَةِ ذَا الْحُلَيْفَةِ وَلأَهْلِ الشَّأْمِ الْجُحْفَةَ وَلأَهْلِ نَجْدٍ قَرْنَ الْمَنَازِلِ وَلأَهْلِ الْيَمَنِ يَلَمْلَمَ هُنَّ لأَهْلِهِنَّ وَلِكُلِّ آتٍ أَتَى عَلَيْهِنَّ مِنْ غَيْرِهِمْ مِمَّنْ أَرَادَ الْحَجَّ وَالْعُمْرَةَ فَمَنْ كَانَ دُونَ ذَلِكَ فَمِنْ حَيْثُ أَنْشَأَ حَتَّى أَهْلُ مَكَّةَ مِنْ مَكَّةَ

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মদীনাবাসীদের জন্য যুল-হুযায়ফাহ, সিরিয়াবাসীদের জন্য জুহ্‌ফা, নাজদবাসীদের জন্য ক্বারনুল-মানাযিল ও ইয়ামেনবাসীদের জন্য ইয়ালামলাম মীকাত নির্ধারন করেছেন। [৫১] উক্ত মীকাতসমূহ হজ্জ ও উমরাহ’র উদ্দেশ্যে আগমনকারী সে স্থানের অধীবাসীদের জন্য এবং অন্য কোন এলাকার লোক ঐ সীমা দিয়ে অতিক্রম করবে তাদের জন্যও। এছাড়াও যারা মীকাতের ভিতরের অধিবাসী তারা যেখান হতে সফর আরম্ভ করবে সেখান হতেই (ইহ্‌রাম আরম্ভ করবে) এমন কি মক্কাবাসীগন মক্কা হতেই। (১৫২৪)

(আঃপ্রঃ ১৪৩০, ইঃফাঃ ১৪৩৬)






[৫১] ১। (আরবি) ইয়ালামলাম। এটি ইয়েমানবাসী এবং ওই পথ যারা অতিক্রম করবে তাদের মীকাত। (এটিই বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান হতে আগত হজ্জযাত্রীদের মিকাত। ইয়ালামলাম একটি পর্বতের নাম- সমুদ্র হতে দেখা যায় না। জাহাজ তার বরাবর আসার প্রাক্বালে জাহাজের কাপ্তান বা হজ্জযাত্রীদের আমীরগণ তা জানিয়ে দেন)

২। “যাতু ইরক্ব” মূলত নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরাকবাসীদের জন্য নির্ধারিত করেছিলেন। যেমনটি আবূ দাউদ হাঃ ১৭৩৯, নাসায়ী হজ্জ অধ্যায় প্রভৃতি গ্রন্থে বিশুদ্ধ হাদীস এসেছে [এটা সহীহ মুসলিমের হাঃ ১১৮৩- এসেছে তবে রাবীর সন্দেহ আছে এটা হাদীস হওয়ার ব্যাপারে] কিন্তু উমর (রাঃ) এর এটা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর জানা ছিল না বিধায় তিনি ইজতিহাদ করে তা নির্ধারণ করেন যা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর হাদীস ভিত্তিক হয়ে যায়। আর এ কথা সর্বজনবিদিত যে, তাঁর অনেক ইজতিহাদী বিধান কুরআন ও হাদীসের অনুকূল হত। অতএব উভয় প্রকার হাদীসে কোন দ্বন্দ নেই।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

২৫/১৩. অধ্যায়ঃ
যাতু ’ইরক হল ইরাকবাসীদের মীকাত

১৫৩১
حَدَّثَنِي عَلِيُّ بْنُ مُسْلِمٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ نُمَيْرٍ حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللهِ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ قَالَ لَمَّا فُتِحَ هَذَانِ الْمِصْرَانِ أَتَوْا عُمَرَ فَقَالُوا يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ إِنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم حَدَّ لأَهْلِ نَجْدٍ قَرْنًا وَهُوَ جَوْرٌ عَنْ طَرِيقِنَا وَإِنَّا إِنْ أَرَدْنَا قَرْنًا شَقَّ عَلَيْنَا قَالَ فَانْظُرُوا حَذْوَهَا مِنْ طَرِيقِكُمْ فَحَدَّ لَهُمْ ذَاتَ عِرْقٍ

‘আবদুল্লাহ ‘ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যখন এ শহর দু’টি (কূফা ও বস্‌রা) বিজিত হলো, তখন সে স্থানের লোকগণ ‘উমর (রাঃ) এর নিকট এসে নিবেদন করলো, হে আমীরুল মু’মিনীন ! আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নাজদবাসীগণের জন্য (মীকাত হিসেবে) সীমা নির্ধারন করে দিয়েছেন ক্বারণ, কিন্তু তা আমাদের পথ হতে দূরে। কাজেই আমরা ক্বারণ-সীমা অতিক্রম করতে চাইলে তা হবে আমদের জন্য অত্যন্ত কষ্টদায়ক। ‘উমর (রাঃ) বললেন, তা হলে তোমরা লক্ষ্য কর তোমাদের পথে ক্বারণ-এর সম-দূরত্বরেখা কোন স্থানটি? অতঃপর “যাতু ইরক্ব” মীকাতরূপে নির্ধারন করেছেন।

(আঃপ্রঃ ১৪৩১, ইঃফাঃ ১৪৩৭)

২৫/১৪. অধ্যায়ঃ
যুল-হুলাইফায় সালাত

১৫৩২
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَنَاخَ بِالْبَطْحَاءِ بِذِي الْحُلَيْفَةِ فَصَلَّى بِهَا وَكَانَ عَبْدُ اللهِ بْنُ عُمَرَ يَفْعَلُ ذَلِكَ

‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুল-হূলায়ফাহর বাত্‌হা নামক উপত্যকায় উট বসিয়ে সালাত আদায় করেন। (রাবী নাফি’ বলেন) ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) তাই করতেন। (৪৮৪, মুসলিম ১৫/৩৭, হাঃ ১২৫৭, আহমাদ ৪৮৪৩)

(আঃপ্রঃ ১৪৩২, ইঃফাঃ ১৪৩৮)

২৫/১৫ অধ্যায়ঃ
( হজ্জের সফরে) ‘শাজারা’- এর রাস্তা দিয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর মদীনা হতে গমন

১৫৩৩
حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ الْمُنْذِرِ حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ عِيَاضٍ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَخْرُجُ مِنْ طَرِيقِ الشَّجَرَةِ وَيَدْخُلُ مِنْ طَرِيقِ الْمُعَرَّسِ وَأَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا خَرَجَ إِلَى مَكَّةَ يُصَلِّي فِي مسْجِدِ الشَّجَرَةِ وَإِذَا رَجَعَ صَلَّى بِذِي الْحُلَيْفَةِ بِبَطْنِ الْوَادِي وَبَاتَ حَتَّى يُصْبِحَ

‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (হজ্জের সফরে) শাজারা নামক পথ দিয়ে গমন করতেন এবং মু’আররাস নামক পথ দিয়ে (মদীনায়) প্রবেশ করতেন। ফিরার পথে যুল-হুলায়ফাহ’র বাত্‌নুল-ওয়াদিতে সালাত আদায় করতেন এবং সেখানে সকাল পর্যন্ত রাত যাপন করতেন। (৪৮৪)

(আঃপ্রঃ ১৪৩৩, ইঃফাঃ ১৪৩৯)

২৫/১৬. অধ্যায়ঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বানীঃ ‘আকীক বরকতপুর্ণ উপত্যকা।

১৫৩৪
حَدَّثَنَا الْحُمَيْدِيُّ حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ وَبِشْرُ بْنُ بَكْرٍ التِّنِّيسِيُّ قَالاَ حَدَّثَنَا الأَوْزَاعِيُّ قَالَ حَدَّثَنِي يَحْيَى قَالَ حَدَّثَنِي عِكْرِمَةُ أَنَّهُ سَمِعَ ابْنَ عَبَّاسٍ يَقُولُ إِنَّهُ سَمِعَ عُمَرَ يَقُولُ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم بِوَادِي الْعَقِيقِ يَقُولُ أَتَانِي اللَّيْلَةَ آتٍ مِنْ رَبِّي فَقَالَ صَلِّ فِي هَذَا الْوَادِي الْمُبَارَكِ وَقُلْ عُمْرَةً فِي حَجَّةٍ

‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘আকীক উপত্যকায় অবস্থানকালে আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছিঃ আজ রাতে আমার প্রতিপালকের পক্ষ হতে একজন আগন্তুক আমার নিকট এসে বললেন, আপনি এই বরকতময় উপত্যকায় সালাত আদায় করুন এবং বলুন, (আমার এ ইহ্‌রাম) হজ্জের সাথে ‘উমরাহ’রও। (২৩৩৭, ৭৩৪৩)

(আঃপ্রঃ ১৪৩৪, ইঃফাঃ ১৪৪০)

১৫৩৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي بَكْرٍ حَدَّثَنَا فُضَيْلُ بْنُ سُلَيْمَانَ حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ عُقْبَةَ قَالَ حَدَّثَنِي سَالِمُ بْنُ عَبْدِ اللهِ عَنْ أَبِيهِ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ رُئِيَ وَهُوَ فِي مُعَرَّسٍ بِذِي الْحُلَيْفَةِ بِبَطْنِ الْوَادِي قِيلَ لَهُ إِنَّكَ بِبَطْحَاءَ مُبَارَكَةٍ وَقَدْ أَنَاخَ بِنَا سَالِمٌ يَتَوَخَّى بِالْمُنَاخِ الَّذِي كَانَ عَبْدُ اللهِ يُنِيخُ يَتَحَرَّى مُعَرَّسَ رَسُولِ اللَّه صلى الله عليه وسلم وَهُوَ أَسْفَلُ مِنْ الْمَسْجِدِ الَّذِي بِبَطْنِ الْوَادِي بَيْنَهُمْ وَبَيْنَ الطَّرِيقِ وَسَطٌ مِنْ ذَلِكَ

‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) সূত্রে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ

যুল-হুলায়ফাহ (‘আকীক) উপত্যকায় রাত যাপনকালে তাঁকে স্বপ্নযোগে বলা হয়, আপনি বরকতময় উপত্যকায় অবস্থান করছেন। [রাবি মূসা ইব্‌নু ‘উকবা (রহঃ) বলেন] সালিম (রহ।) আমাদেরকে সাথে নিয়ে উট বসিয়ে ঐ উট বসবার স্থানটির খোঁজ করেন, যেখানে ‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) উট বসিয়ে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর রাত যাপনের স্থানটি খোঁজ করতেন। সে স্থানটি উপত্যকায় মাসজিদের নীচু জায়গায় অবতরণকারীদের ও রাস্তার একেবারে মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত।

(১৭৮৯, ১৮৪৭, ৪৩২৯, ৪৯৮৫, মুসলিম ১৫/৭৭, হাঃ ১৩৪৬) (আঃপ্রঃ ১৪৩৫, ইঃফাঃ ১৪৪১)

২৫/১৭. অধ্যায়ঃ
(ইহরামের) কাপড়ে খালুক বা সুগন্ধি লেগে থাকলে তিনবার ধৌত করা।

১৫৩৬
قَالَ أَبُو عَاصِمٍ أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ أَخْبَرَنِي عَطَاءٌ أَنَّ صَفْوَانَ بْنَ يَعْلَى أَخْبَرَهُ أَنَّ يَعْلَى قَالَ لِعُمَرَ أَرِنِي النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم حِينَ يُوحَى إِلَيْهِ قَالَ فَبَيْنَمَا النَّبِيُّ بِالْجِعْرَانَةِ وَمَعَهُ نَفَرٌ مِنْ أَصْحَابِهِ جَاءَهُ رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم كَيْفَ تَرَى فِي رَجُلٍ أَحْرَمَ بِعُمْرَةٍ وَهُوَ مُتَضَمِّخٌ بِطِيبٍ فَسَكَتَ النَّبِيُّ سَاعَةً فَجَاءَهُ الْوَحْيُ فَأَشَارَ عُمَرُ إِلَى يَعْلَى فَجَاءَ يَعْلَى وَعَلَى رَسُولِ اللهِ ثَوْبٌ قَدْ أُظِلَّ بِهِ فَأَدْخَلَ رَأْسَهُ فَإِذَا رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مُحْمَرُّ الْوَجْهِ وَهُوَ يَغِطُّ ثُمَّ سُرِّيَ عَنْهُ فَقَالَ أَيْنَ الَّذِي سَأَلَ عَنْ الْعُمْرَةِ فَأُتِيَ بِرَجُلٍ فَقَالَ اغْسِلْ الطِّيبَ الَّذِي بِكَ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ وَانْزِعْ عَنْكَ الْجُبَّةَ وَاصْنَعْ فِي عُمْرَتِكَ كَمَا تَصْنَعُ فِي حَجَّتِكَ قُلْتُ لِعَطَاءٍ أَرَادَ الإِنْقَاءَ حِينَ أَمَرَهُ أَنْ يَغْسِلَ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ قَالَ نَعَمْ

সাফ্‌ওয়ান ইব্‌নু ই’য়ালা (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

ই’য়ালা (রাঃ) ‘উমর (রাঃ) কে বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর উপর ওহী অবতরণ মুহূর্তটি আমাকে দেখাবেন। তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘জি’রানা নামক স্থানে অবস্থান করছিলেন, তাঁর সঙ্গে কিছু সংখ্যক সাহাবী ছিলেন। এমন সময় এক ব্যক্তি এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! কোন ব্যক্তি সুগন্ধিযুলত পোশাক পরে ‘উমরাহ’র ইহ্‌রাম বাঁধলে তার সম্পর্কে আপনার অভিমত কী? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কিছুক্ষণ নীরব রইলেন। এরপর তাঁর নিকট ওহী আসল। ‘উমর (রাঃ) ই’য়ালা (রাঃ) কে ইঙ্গিত করায় তিনি সেখানে উপস্থিত হলেন। তখন একখন্ড কাপড় দিয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর উপর ছায়া করা হয়েছিল, ই’য়ালা (রাঃ) মাথা প্রবেশ করিয়ে দেখতে পেলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর মুখমন্ডল লাল বর্ণ, তিনি সজোরে শ্বাস গ্রহন করছেন। এরপর সে অবস্থা দূর হলো। তিনি বললেনঃ উমরাহ সম্পর্কে প্রশ্নকারী কোথায়? প্রশ্নকারীকে উপস্থিত করা হলে তিনি বললেনঃ তোমার শরীরের সুগন্ধি তিনবার ধুয়ে ফেল ও জুব্বাটি খুলে ফেল এবং হজ্জে যা করে থাক ‘উমরাহতেও তাই কর। (রাবী ইব্‌নু জুরাইজ বলেন) আমি ‘আত্বা (রহঃ) কে জিজ্ঞেস করলাম, তিনবার ধোয়ার নির্দেশ দিয়ে তিনি কি উত্তমরূপে পরিষ্কার করা বুঝিয়েছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ, তাই।

(১৭৮৯, ১৮৪৭, ৪৩২৯, ৪৯৮৫, মুসলিম ১৫/১, হাঃ ১১৮০, আহমাদ ১৭৯৮৯) (আঃপ্রঃ ১৪৩৬, ইঃফাঃ ১৪৪২)

২৫/১৮. অধ্যায়ঃ
ইহ্‌রাম বাঁধাকালে সুগন্ধি ব্যবহার ও কোন্‌ প্রকার কাপড় পরে ইহ্‌রাম বাঁধবে এবং চুল দাড়ি আঁচড়াবে ও তেল ব্যবহার করবে।

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, মুহরিম ব্যক্তি ফুলের ঘ্রাণ নিতে পারবে। আয়নায় চেহারা দেখতে পারবে এবং তৈল ও ঘি জাতীয় খাদ্যদ্রব্য দিয়ে চিকিৎসা করতে পারবে। ‘আত্বা (রহঃ) বলেন, আংটি পরতে পারবে, (কোমরে) থলে বাঁধতে পারবে। ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) ইহ্‌রাম বাঁধা অবস্থায় পেটের উপর কাপড় কষে তাওয়াফ করেছেন। জাঙ্গিয়া পরার ব্যাপারে ‘আয়েশা (রাঃ)-এর আপত্তি ছিল না। এ ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে যারা তার উটের পিঠে হাওদা বাঁধতো (কারণ সে সময় লজ্জাস্থান প্রদর্শিত হওয়ার আশঙ্কা থাকত)।

১৫৩৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ مَنْصُورٍ عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ قَالَ كَانَ ابْنُ عُمَرَ يَدَّهِنُ بِالزَّيْتِ فَذَكَرْتُهُ لإِبْرَاهِيمَ قَالَ مَا تَصْنَعُ بِقَوْلِهِ

সা’ঈদ ইব্‌নু জুবাইর (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) (ইহ্‌রাম বাঁধা অবস্থায়) যায়তুন তেল ব্যবহার করতেন। (রাবী মানসুর বলেন) এ বিষয়ে আমি ইব্রাহীম (রহঃ)-এর নিকট পেশ করলে তিনি বললেন, তাঁর কথায় তোমার কি দরকার।

(আঃপ্রঃ ১৪৩৭, ইঃফাঃ ১৪৪৩)

১৫৩৮
حَدَّثَنِي الأَسْوَدُ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ كَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَى وَبِيصِ الطِّيبِ فِي مَفَارِقِ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ مُحْرِمٌ

‘আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেছেন, ইহ্‌রাম বাঁধা অবস্থায় আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সিঁথিতে যে সুগন্ধি তেল চকচক করছিল তা যেন আজও আমি দেখতে পাচ্ছি। (২৭১)

(আঃপ্রঃ ১৪৩৭ শেষাংশ, ইঃফাঃ ১৪৪৩ শেষাংশ)

১৫৩৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ بْنِ الْقَاسِمِ عَنْ أَبِيهِ عَنْ عَائِشَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَتْ كُنْتُ أُطَيِّبُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم لإِحْرَامِهِ حِينَ يُحْرِمُ وَلِحِلِّهِ قَبْلَ أَنْ يَطُوفَ بِالْبَيْتِ

নবী সহধর্মিণী ‘আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ইহ্‌রাম বাঁধার সময় [৫২] আমি আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর গায়ে সুগন্ধি মেখে দিতাম এবং বায়তুল্লাহ তাওয়াফের পূর্বে ইহ্‌রাম খুলে ফেলার সময়ও।

(১৭৪৫, ৫৯২২, ৫৯২৮, ৫৯৩০, মুসলিম ১/৪, হাঃ ১৩, আহমাদ) (আঃপ্রঃ ১৪৩৮, ইঃফাঃ ১৪৪৪)






[৫২] ইহরামের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণকালে গোসল করা, সুগন্ধি মাখার নিয়মগুলি পালন করতে হবে। ইহরামের কাপড় পরিধানের পর সুগন্ধি মাখা চলবে না। ইহরামের নিয়ত করার পূর্বে মাখা সুগন্ধি মুহরিমের চেহারায় দৃশ্যমান হতে পারে বা তা থেকে সুগন্ধ আসতে পারে। ইহ্‌রাম থেকে মুক্ত হওয়ার পর সুগন্ধি ব্যবহার করা চলবে।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

২৫/১৯. অধ্যায়ঃ
যে চুলে আঠালো বস্তু লাগিয়ে ইহ্‌রাম বাঁধে।

১৫৪০
حَدَّثَنَا أَصْبَغُ أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ عَنْ يُونُسَ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ سَالِمٍ عَنْ أَبِيهِ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يُهِلُّ مُلَبِّدًا

‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে চুলে আঠালো বস্তু লাগিয়ে ইহ্‌রাম বেঁধে তালবিয়া পাঠ করতে শুনেছি।

(১৫৪৯, ৫৯১৪, ৫৯১৫, মুসলিম ১৫/৩, হাঃ ১১৮৪) (আঃপ্রঃ ১৪৩৯, ইঃফাঃ ১৪৪৫)

২৫/২০. অধ্যায়ঃ
যুল-হুলাইফার মাসজিদের নিকটে ইহ্‌রাম বাঁধা।

১৫৪১
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَ مُوسَى بْنُ عُقْبَةَ سَمِعْتُ سَالِمَ بْنَ عَبْدِ اللهِ قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ عُمَرَ ح و حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ عَنْ مَالِكٍ عَنْ مُوسَى بْنِ عُقْبَةَ عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللهِ أَنَّهُ سَمِعَ أَبَاهُ يَقُولُ مَا أَهَلَّ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِلاَّ مِنْ عِنْدِ الْمَسْجِدِ يَعْنِي مَسْجِدَ ذِي الْحُلَيْفَةِ

ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুল-হুলাইফার মাসজিদের নিকট হতে ইহ্‌রাম বেঁধেছেন।

(মুসলিম ১৫/৪, হাঃ ১১৮৬) (আঃপ্রঃ, ইঃফাঃ ১৪৪৬)

২৫/২১. অধ্যায়ঃ
মুহরিম ব্যক্তি যে প্রকার কাপড় পরিধান করবে না।

১৫৪২
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّ رَجُلاً قَالَ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَا يَلْبَسُ الْمُحْرِمُ مِنْ الثِّيَابِ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لاَ يَلْبَسُ الْقُمُصَ وَلاَ الْعَمَائِمَ وَلاَ السَّرَاوِيلاَتِ وَلاَ الْبَرَانِسَ وَلاَ الْخِفَافَ إِلاَّ أَحَدٌ لاَ يَجِدُ نَعْلَيْنِ فَلْيَلْبَسْ خُفَّيْنِ وَلْيَقْطَعْهُمَا أَسْفَلَ مِنْ الْكَعْبَيْنِ وَلاَ تَلْبَسُوا مِنْ الثِّيَابِ شَيْئًا مَسَّهُ الزَّعْفَرَانُ أَوْ وَرْسٌ

‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

এক ব্যক্তি বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! মুহরিম ব্যক্তি কী প্রকারের কাপড় পরবে? আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ সে জামা, পাগড়ী, পায়জামা, টুপি ও মোজা পরিধান করবে না। তবে কারো জুতা না থাকলে সে টাখ্‌নুর নিচ পর্যন্ত মোজা কেটে (জুতার ন্যায়) পরবে।[৫৩] তোমরা জা’ফরান বা ওয়ার্‌স (এক প্রকার খুশবু) রঞ্জিত কোন কাপড় পরবে না। [আবূ ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) বলেন, মুহরিম ব্যক্তি মাথা ধুতে পারবে। চুল আঁচড়াবে না, শরীর চুলকাবে না। মাথা ও শরীর হতে উকুন যমীনে ফেলে দিবে।]

(১৩৪, মুসলিম ১৫/১, হাঃ ১১৭৭, আহমাদ ৪৮৩৫) (আঃপ্রঃ ১৪৪১, ইঃফাঃ ১৪৪৭)






[৫৩] জুতা না পেলে মোজাকে টাখনুর নীচ থেকে কেটে তা পরার বিধানটি রহিত হয়ে গেছে। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মোজা কাটার কথা পূর্বে বলেছিলেন এবং এটা তিনি বলেছিলেন মদীনায় থাকাকালীন। পক্ষান্তরে ইব্‌নু ‘আব্বাস কর্তৃক বর্ণিত হাদীস যাতে তিনি জুতা না থাকাবস্থায় সাধারণভাবে কাটার শর্ত না করেই মোজা পরার নির্দেশ দিয়েছেন। উক্ত হাদীসটি হজ্জের মাঠে তথা আরাফার মাঠে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছিলেন।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

২৫/২২. অধ্যায়ঃ
হজ্জের সফরে বাহনে একাকী আরোহণ করা ও অপরের সঙ্গে আরোহণ করা।

১৫৪৩
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا وَهْبُ بْنُ جَرِيرٍ حَدَّثَنَا أَبِي عَنْ يُونُسَ الأَيْلِيِّ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ عَبْدِ اللهِ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ أُسَامَةَ كَانَ رِدْفَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِنْ عَرَفَةَ إِلَى الْمُزْدَلِفَةِ ثُمَّ أَرْدَفَ الْفَضْلَ مِنْ الْمزْدَلِفَةِ إِلَى مِنًى قَالَ فَكِلاَهُمَا قَالَ لَمْ يَزَلْ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُلَبِّي حَتَّى رَمَى جَمْرَةَ الْعَقَبَةِ

‘ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

‘আরাফাহ হতে মুয্‌দালিফা পর্যন্ত একই বাহনে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পিছনে উসামা ইব্‌নু যায়দ (রাঃ) উপবিষ্ট ছিলেন। এরপর মুযদালিফা হতে মিনা পর্যন্ত ফযল [ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ)]-কে তাঁর পিছনে আরোহণ করান। ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, তাঁরা উভয়ই বলেছেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জামরা আকাবায় কঙ্কর নিক্ষেপ করা পর্যন্ত তালবিয়া পাঠ করছিলেন।

(১৬৮৫, ১৬৮৫, ১৬৮৭, মুসলিম ১৫/৪৫, হাঃ ১২৮১, আহমাদ ১৮৩১) (আঃপ্রঃ ১৪৪২, ইঃফাঃ ১৪৪৮)

১৫৪৪
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا وَهْبُ بْنُ جَرِيرٍ حَدَّثَنَا أَبِي عَنْ يُونُسَ الأَيْلِيِّ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ عَبْدِ اللهِ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ أُسَامَةَ كَانَ رِدْفَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِنْ عَرَفَةَ إِلَى الْمُزْدَلِفَةِ ثُمَّ أَرْدَفَ الْفَضْلَ مِنْ الْمزْدَلِفَةِ إِلَى مِنًى قَالَ فَكِلاَهُمَا قَالَ لَمْ يَزَلْ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُلَبِّي حَتَّى رَمَى جَمْرَةَ الْعَقَبَةِ

‘ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

‘আরাফাহ হতে মুয্‌দালিফা পর্যন্ত একই বাহনে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পিছনে উসামা ইব্‌নু যায়দ (রাঃ) উপবিষ্ট ছিলেন। এরপর মুযদালিফা হতে মিনা পর্যন্ত ফযল [ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ)]-কে তাঁর পিছনে আরোহণ করান। ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, তাঁরা উভয়ই বলেছেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জামরা আকাবায় কঙ্কর নিক্ষেপ করা পর্যন্ত তালবিয়া পাঠ করছিলেন।

(১৬৮৫, ১৬৮৫, ১৬৮৭, মুসলিম ১৫/৪৫, হাঃ ১২৮১, আহমাদ ১৮৩১) (আঃপ্রঃ ১৪৪২, ইঃফাঃ ১৪৪৮)

২৫/২৩. অধ্যায়ঃ
মুহরিম ব্যক্তি কোন্‌ ধরনের কাপড়, চাদর ও লুঙ্গি পরিধান করবে।

‘আয়েশা (রাঃ) ইহ্‌রাম অবস্থায় কুসুমীর রঙ্গে রঞ্জিত কাপড় পরেন এবং তিনি বলেন, নারীগণ ঠোঁট মুখমন্ডল আবৃত করবে না। ওয়ার্‌স ও জাফরান রঙে রঞ্জিত কাপড়ও পরবে না। জাবির (রাঃ) বলেন, আমি উসফুরী (কুসুমী) রঙকে সুগন্ধি মনে করি না। ‘আয়েশা (রাঃ) (ইহ্‌রাম অবস্থায়) নারীদের জন্য অলংকার পরা এবং কালো ও গোলাপী রং-এর কাপড় ও মোজা পরা দূষণীয় মনে করেননি। ইব্রাহীম (নাখ্‌’য়ী) (রহঃ) বলেন, (ইহ্‌রাম অবস্থায়) পরনের কাপড় পরিবর্তন করায় কোন দোষ নেই [৫৪]।

[৫৪] ইহ্‌রাম অবস্থায় যা নিষিদ্ধঃ

১। স্ত্রী সম্ভোগ করা, নির্লজ্জ কথাবার্তা বলা, যৌন আকর্ষণে স্পর্শ করা বা শরীরের সঙ্গে শরীর লাগানো।

২। চুল কাটা, নখ কাটা, সুগন্ধি ব্যবহার করা।

৩। পুরুষের জন্য সেলাই করে প্রস্তুত পোশাক পরা।

৪। মহিলাদের জন্য সেলাইকৃত বোরকা বা মুখাবরণ, মুখাচ্ছাদন ও হাত মোজা পরা।

৫। জাফরান ও কুসুম রঞ্জিত কাপড় পরিধান করা।

৬। বেহায়াপনা, শরীয়তবিরোধী কথা ও কাজ এবং বিবাদ-বিসংবাদমূলক কথা বলা।

৭। পুরুষের মাথা ও মুখ ঢাকা।

৮। স্থলচর জন্তু শিকার করা, শিকার তাড়ানো, শিকারে সাহায্য করা বা শিকারের প্রতি ইঙ্গিত করা।

৯। বিবাহ করা বা করানো বা বিবাহের পয়গাম পাঠানো।

ইহরামের অবস্থায় যা বৈধঃ

১। পুরুষ লুঙ্গি না পেলে পায়জামা পরতে পারবে।

২। জুতা না পেলে চামড়ার মোজা পরতে পারবে গিটের নিম্নাংশ পর্যন্ত কেটে দিয়ে।

৩। লুঙ্গিতে গিরা দিয়ে বাঁধা কিংবা সূতা, ফিতা বা রশি জাতীয় কিছু দিয়ে বাঁধা।

৪। গোসল করা, মাথা ধোয়া, প্রয়োজন বোধে মাথা চুলকানো।

৫। প্রয়োজনে মহিলাদের মুখমন্ডলের উপর ওড়না লটকানো ও হস্তদ্বয় বস্ত্র বা অন্য কিছু দিয়ে ঢাকা।

৬। ময়লা বা ঘর্মে সিক্ত কাপড় ধৌত করা বা বদলানো।

৭। শরীয়ত এবং সত্যের প্রতিষ্ঠায় কথা কাটাকাটি ও তর্কযুদ্ধ করা।

(হজ্জ, উমরাহ ও যিয়ারতঃ শায়খ আঃ আযীয বিন বায)

১৫৪৪
وَلَبِسَتْ عَائِشَةُ الثِّيَابَ الْمُعَصْفَرَةَ وَهِيَ مُحْرِمَةٌ وَقَالَتْ لاَ تَلَثَّمْ وَلاَ تَتَبَرْقَعْ وَلاَ تَلْبَسْ ثَوْبًا بِوَرْسٍ وَلاَ زَعْفَرَانٍ وَقَالَ جَابِرٌ لاَ أَرَى الْمُعَصْفَرَ طِيبًا وَلَمْ تَرَ عَائِشَةُ بَأْسًا بِالْحُلِيِّ وَالثَّوْبِ الأَسْوَدِ وَالْمُوَرَّدِ وَالْخُفِّ لِلْمَرْأَةِ وَقَالَ إِبْرَاهِيمُ لاَ بَأْسَ أَنْ يُبْدِلَ ثِيَابَهُ

‘আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

‘আয়েশা (রাঃ) ইহ্‌রাম অবস্থায় কুসুমীর রঙ্গে রঞ্জিত কাপড় পরেন এবং তিনি বলেন, নারীগণ ঠোঁট মুখমন্ডল আবৃত করবে না। ওয়ার্‌স ও জাফরান রঙে রঞ্জিত কাপড়ও পরবে না। জাবির (রাঃ) বলেন, আমি উসফুরী (কুসুমী) রঙকে সুগন্ধি মনে করি না। ‘আয়েশা (রাঃ) (ইহ্‌রাম অবস্থায়) নারীদের জন্য অলংকার পরা এবং কালো ও গোলাপী রং-এর কাপড় ও মোজা পরা দূষণীয় মনে করেননি। ইব্রাহীম (নাখ্‌’য়ী) (রহঃ) বলেন, (ইহ্‌রাম অবস্থায়) পরনের কাপড় পরিবর্তন করায় কোন দোষ নেই [৫৪]।






[৫৪] ইহ্‌রাম অবস্থায় যা নিষিদ্ধঃ

১। স্ত্রী সম্ভোগ করা, নির্লজ্জ কথাবার্তা বলা, যৌন আকর্ষণে স্পর্শ করা বা শরীরের সঙ্গে শরীর লাগানো।

২। চুল কাটা, নখ কাটা, সুগন্ধি ব্যবহার করা।

৩। পুরুষের জন্য সেলাই করে প্রস্তুত পোশাক পরা।

৪। মহিলাদের জন্য সেলাইকৃত বোরকা বা মুখাবরণ, মুখাচ্ছাদন ও হাত মোজা পরা।

৫। জাফরান ও কুসুম রঞ্জিত কাপড় পরিধান করা।

৬। বেহায়াপনা, শরীয়তবিরোধী কথা ও কাজ এবং বিবাদ-বিসংবাদমূলক কথা বলা।

৭। পুরুষের মাথা ও মুখ ঢাকা।

৮। স্থলচর জন্তু শিকার করা, শিকার তাড়ানো, শিকারে সাহায্য করা বা শিকারের প্রতি ইঙ্গিত করা।

৯। বিবাহ করা বা করানো বা বিবাহের পয়গাম পাঠানো।

ইহরামের অবস্থায় যা বৈধঃ

১। পুরুষ লুঙ্গি না পেলে পায়জামা পরতে পারবে।

২। জুতা না পেলে চামড়ার মোজা পরতে পারবে গিটের নিম্নাংশ পর্যন্ত কেটে দিয়ে।

৩। লুঙ্গিতে গিরা দিয়ে বাঁধা কিংবা সূতা, ফিতা বা রশি জাতীয় কিছু দিয়ে বাঁধা।

৪। গোসল করা, মাথা ধোয়া, প্রয়োজন বোধে মাথা চুলকানো।

৫। প্রয়োজনে মহিলাদের মুখমন্ডলের উপর ওড়না লটকানো ও হস্তদ্বয় বস্ত্র বা অন্য কিছু দিয়ে ঢাকা।

৬। ময়লা বা ঘর্মে সিক্ত কাপড় ধৌত করা বা বদলানো।

৭। শরীয়ত এবং সত্যের প্রতিষ্ঠায় কথা কাটাকাটি ও তর্কযুদ্ধ করা।

(হজ্জ, উমরাহ ও যিয়ারতঃ শায়খ আঃ আযীয বিন বায)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

১৫৪৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي بَكْرٍ الْمُقَدَّمِيُّ حَدَّثَنَا فُضَيْلُ بْنُ سُلَيْمَانَ قَالَ حَدَّثَنِي مُوسَى بْنُ عُقْبَةَ قَالَ أَخْبَرَنِي كُرَيْبٌ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ قَالَ انْطَلَقَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مِنْ الْمَدِينَةِ بَعْدَ مَا تَرَجَّلَ وَادَّهَنَ وَلَبِسَ إِزَارَهُ وَرِدَاءَهُ هُوَ وَأَصْحَابُهُ فَلَمْ يَنْهَ عَنْ شَيْءٍ مِنْ الأَرْدِيَةِ وَالأُزُرِ تُلْبَسُ إِلاَّ الْمُزَعْفَرَةَ الَّتِي تَرْدَعُ عَلَى الْجِلْدِ فَأَصْبَحَ بِذِي الْحُلَيْفَةِ رَكِبَ رَاحِلَتَهُ حَتَّى اسْتَوَى عَلَى الْبَيْدَاءِ أَهَلَّ هُوَ وَأَصْحَابُهُ وَقَلَّدَ بَدَنَتَهُ وَذَلِكَ لِخَمْسٍ بَقِينَ مِنْ ذِي الْقَعْدَةِ فَقَدِمَ مَكَّةَ لأَرْبَعِ لَيَالٍ خَلَوْنَ مِنْ ذِي الْحَجَّةِ فَطَافَ بِالْبَيْتِ وَسَعَى بَيْنَ الصَّفَا وَالْمَرْوَةِ وَلَمْ يَحِلَّ مِنْ أَجْلِ بُدْنِهِ لأَنَّهُ قَلَّدَهَا ثُمَّ نَزَلَ بِأَعْلَى مَكَّةَ عِنْدَ الْحَجُونِ وَهُوَ مُهِلٌّ بِالْحَجِّ وَلَمْ يَقْرَبْ الْكَعْبَةَ بَعْدَ طَوَافِهِ بِهَا حَتَّى رَجَعَ مِنْ عَرَفَةَ وَأَمَرَ أَصْحَابَهُ أَنْ يَطَّوَّفُوا بِالْبَيْتِ وَبَيْنَ الصَّفَا وَالْمَرْوَةِ ثُمَّ يُقَصِّرُوا مِنْ رُءُوسِهِمْ ثُمَّ يَحِلُّوا وَذَلِكَ لِمَنْ لَمْ يَكُنْ مَعَهُ بَدَنَةٌ قَلَّدَهَا وَمَنْ كَانَتْ مَعَهُ امْرَأَتُهُ فَهِيَ لَهُ حَلاَلٌ وَالطِّيبُ وَالثِّيَابُ

‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর সাহাবীগণ চুল আঁচড়িয়ে, তেল মেখে, লুঙ্গি ও চাদর পরে ( হজ্জের উদ্দেশ্যে) মদীনা হতে রওয়ানা হন। তিনি কোন প্রকার চাদর বা লুঙ্গি পরতে নিষেধ করেননি, তবে শরীরের চামড়া রঞ্জিত হয়ে যেতে পারে এরূপ জাফরানী রঙের কাপড় পরতে নিষেধ করেছেন। যুল-হুলাইফা হতে সওয়ারীতে আরোহণ করে বায়দা নামক স্থানে পৌঁছে তিনি ও তাঁর সাহাবীগণ তালবিয়া পাঠ করেন এবং কুরবানীর উটের গলায় মালা ঝুলিয়ে দেন, তখন যুলকা’দা মাসের পাঁচদিন অবশিষ্ট ছিল। যিলহজ্জ মাসের চতুর্থ দিনে মক্কায় উপনীত হয়ে সর্বপ্রথম কা’বাঘরের তাওয়াফ করে সাফা ও মারওয়ার মাঝে সা’য়ী করেন। তাঁর কুরবানীর উটের গলায় মালা পরিয়েছেন বলে তিনি ইহ্‌রাম খুলেননি। অতঃপর মক্কার উঁচু ভূমিতে হাজূন নামক স্থানের নিকটে অবস্থান করেন, তখন তিনি হজ্জের ইহরামের অবস্থায় ছিলেন। (প্রথমবার) তাওয়াফ করার পর ‘আরাফাহ হতে ফিরে আসার পূর্বে আর কা’বার নিকটবর্তী হননি। অবশ্য তিনি সাহাবাগণকে বায়তুল্লাহর তাওয়াফ ও সাফা মারওয়ার সা’য়ী সম্পাদন করে মাথার চুল ছেঁটে হালাল হতে নির্দেশ দেন। কেননা যাদের সাথে কুরবানীর জানোয়ার নেই, এ বিধানটি কেবল তাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। আর যার সাথে তার স্ত্রী রয়েছে তার জন্য স্ত্রী-সহবাস, সুগন্ধি ব্যবহার ও যে কোন ধরনের কাপড় পরা জায়িয।

(১৬২৫, ১৭৩১) (আঃপ্রঃ ১৪৪৩, ইঃফাঃ ১৪৪৯)

২৫/২৪. অধ্যায়ঃ
সকাল পর্যন্ত যুল-হুলাইফায় রাত্রি অতিবাহিত করা।

ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এ বিষয় বর্ণনা করেছেন।

১৫৪৬
حَدَّثَنِي عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ يُوسُفَ أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُنْكَدِرِ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ صَلَّى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِالْمَدِينَةِ أَرْبَعًا وَبِذِي الْحُلَيْفَةِ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ بَاتَ حَتَّى أَصْبَحَ بِذِي الْحُلَيْفَةِ فَلَمَّا رَكِبَ رَاحِلَتَهُ وَاسْتَوَتْ بِهِ أَهَلَّ

আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মদীনায় চার রাক’আত আদায় করেন ও যুল-হুলাইফায় পৌঁছে দু’রাক’আত সালাত আদায় করেন। অতঃপর ভোর পর্যন্ত সেখানে রাত যাপন করেন। এরপর যখন তিনি সওয়ারীতে আরোহণ করেন এবং তা তাঁকে নিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়ান তখন তিনি তালবিয়া পাঠ করেন। (১০৮৯)

(আঃপ্রঃ ১৪৪৪, ইঃফাঃ ১৪৫০)

১৫৪৭
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ حَدَّثَنَا أَيُّوبُ عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم صَلَّى الظُّهْرَ بِالْمَدِينَةِ أَرْبَعًا وَصَلَّى الْعَصْرَ بِذِي الْحُلَيْفَةِ رَكْعَتَيْنِ قَالَ وَأَحْسِبُهُ بَاتَ بِهَا حَتَّى أَصْبَحَ

আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মদীনায় যোহরের সালাত চার রাক’আত আদায় করেন এবং যুল-হুলাইফায় পৌঁছে আসরের সালাত দু’রাক’আত আদায় করেন। রাবী বলেন, আমার ধারণা যে, তিনি ভোর পর্যন্ত সেখানে রাত যাপন করেন। (১০৮৯)

(আঃপ্রঃ ১৪৪৫, ইঃফাঃ ১৪৫১)

২৫/২৫. অধ্যায়ঃ
উচ্চৈঃস্বরে তালবিয়া পড়া।

১৫৪৮
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ عَنْ أَيُّوبَ عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ عَنْ أَنَسٍ قَالَ صَلَّى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِالْمَدِينَةِ الظُّهْرَ أَرْبَعًا وَالْعَصْرَ بِذِي الْحُلَيْفَةِ رَكْعَتَيْنِ وَسَمِعْتُهُمْ يَصْرُخُونَ بِهِمَا جَمِيعًا

আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যোহরের সালাত মদীনায় চার রাক’আত আদায় করলেন এবং ‘আসরের সালাত যুল-হুলাইফায় দু’রাক’আত আদায় করেন। আমি শুনতে পেলাম তাঁরা সকলে উচ্চৈঃস্বরে হজ্জ ও ‘উমরাহ’র তালবিয়া পাঠ করছেন [৫৫]। (১৫৪০)

(আঃপ্রঃ ১৪৪৬, ইঃফাঃ ১৪৫২)






[৫৫] ইহ্‌রাম ব্যতীত অন্য কোন ইবাদাতে মৌখিক নিয়তে শব্দ উচ্চারণ করা শরীয়তে বৈধ নয়। কেননা কেবল ইহরামের সময়ই নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে ওভাবে মুখে নিয়ত উচ্চারণ করার কথা বর্ণিত আছে। অবশ্য তা প্রচলিত নাওয়াইতু আন…… বলে গদ বাধা নিয়মে নয়।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

২৫/২৬. অধ্যায়ঃ
তালবিয়া পাঠ করা।

১৫৪৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّ تَلْبِيَةَ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَبَّيْكَ اللَّهُمَّ لَبَّيْكَ لَبَّيْكَ لاَ شَرِيكَ لَكَ لَبَّيْكَ إِنَّ الْحَمْدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ لاَ شَرِيكَ لَكَ

‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর তালবিয়া নিম্নরূপঃ (অর্থ) আমি হাযির হে আল্লাহ, আমি হাযির, আমি হাযির; আপনার কোন অংশীদার নেই, আমি হাযির। নিশ্চয়ই সকল প্রশংসা ও সকল নি’আমত আপনার এবং কর্তৃত্ব আপনারই, আপনার কোন অংশীদার নেই। (১৫৪০)

(আঃপ্রঃ১৪৪৭, ইঃফাঃ ১৪৫৩)

১৫৫০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ الأَعْمَشِ عَنْ عُمَارَةَ عَنْ أَبِي عَطِيَّةَ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ إِنِّي لأعْلَمُ كَيْفَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُلَبِّي لَبَّيْكَ اللَّهُمَّ لَبَّيْكَ لَبَّيْكَ لاَ شَرِيكَ لَكَ لَبَّيْكَ إِنَّ الْحَمْدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ تَابَعَهُ أَبُو مُعَاوِيَةَ عَنْ الأَعْمَشِ وَقَالَ شُعْبَةُ أَخْبَرَنَا سُلَيْمَانُ سَمِعْتُ خَيْثَمَةَ عَنْ أَبِي عَطِيَّةَ سَمِعْتُ عَائِشَةَ

‘আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কিভাবে তালবিয়া পাঠ করতেন তা আমি ভালরূপে অবগত (তাঁর তালবিয়া ছিল) আমি হাযির হে আল্লাহ! আমি হাযির, আমি হাযির, আপনার কোন অংশীদার নেই, আমি হাযির, সকল প্রশংসা ও সকল নি’আমত আপনারই। আবূ মু’আবিয়া (রহঃ) ‘আমাশ (রহঃ) হতে হাদীস বর্ণনায় সফিয়া (রহঃ)-এর অনুসরণ করেছেন। আবূ ‘আতিয়্যাহ (রহঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি ‘আয়েশা (রাঃ) হতে শুনেছি।

(আঃপ্রঃ১৪৪৮, ইঃফাঃ ১৪৫৪)

২৫/২৭. অধ্যায়ঃ
তালবিয়া পড়ার আগে সওয়ারীতে আরোহণকালে তাহমীদ, তাসবীহ ও তাকবীর পড়া।

১৫৫১
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ حَدَّثَنَا أَيُّوبُ عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ عَنْ أَنَسٍ قَالَ صَلَّى رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَنَحْنُ مَعَهُ بِالْمَدِينَةِ الظُّهْرَ أَرْبَعًا وَالْعَصْرَ بِذِي الْحُلَيْفَةِ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ بَاتَ بِهَا حَتَّى أَصْبَحَ ثُمَّ رَكِبَ حَتَّى اسْتَوَتْ بِهِ عَلَى الْبَيْدَاءِ حَمِدَ اللهَ وَسَبَّحَ وَكَبَّرَ ثُمَّ أَهَلَّ بِحَجٍّ وَعُمْرَةٍ وَأَهَلَّ النَّاسُ بِهِمَا فَلَمَّا قَدِمْنَا أَمَرَ النَّاسَ فَحَلُّوا حَتَّى كَانَ يَوْمُ التَّرْوِيَةِ أَهَلُّوا بِالْحَجِّ قَالَ وَنَحَرَ النَّبِيُّ بَدَنَاتٍ بِيَدِهِ قِيَامًا وَذَبَحَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بِالْمَدِينَةِ كَبْشَيْنِ أَمْلَحَيْنِ قَالَ أَبُو عَبْد اللهِ قَالَ بَعْضُهُمْ هَذَا عَنْ أَيُّوبَ عَنْ رَجُلٍ عَنْ أَنَسٍ

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে নিয়ে মদীনায় যুহরের সালাত আদায় করেন চার রাক’আত এবং যুল-হুলাইফায় (পৌঁছে) ‘আসরের সালাত আদায় করেন দু’ রাক’আত। এরপর সেখানেই ভোর পর্যন্ত রাত কাটালেন। সকালে সওয়ারীতে আরোহণ করে বায়দা নামক স্থানে উপনীত হলেন। তখন তিনি আল্লাহ্‌র হামদ, তাসবীহ ও তাকবীর পাঠ করছিলেন। এরপর তিনি হজ্জ ও ‘উমরাহ’র তালবিয়া পাঠ করলেন। সাহাবীগণ উভয়ের তালবিয়া পাঠ করলেন। যখন আমরা (মক্কার উপকন্ঠে) পৌঁছলাম তখন তিনি সাহাবীগণকে (‘উমরা শেষ করে) হালাল হওয়ার নির্দেশ দিলেন এবং তাঁরা হালাল হয়ে গেলেন। অবশেষে যিলহজ্জ মাসের আট তারিখে তাঁরা হজ্জের ইহ্‌রাম বাঁধলেন। রাবী বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজ হাতে কিছু সংখ্যক উট দাঁড়ানো অবস্থায় নহর (যবেহ্‌) করলেন। আর আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মদীনায় সাদা কাল মিশ্রিত রঙ-এর দু’টি মেষ যবেহ্‌ করেছিলেন।

আবূ ‘আবদুল্লাহ (ইমাম বুখারী) (রহঃ) বলেন, কোন কোন রাবী হাদীসটি আইয়ূব (রহঃ) সূত্রে জনৈক রাবীর মাধ্যমে আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত বলে উল্লেখ করেছেন। (১০৮৯)

(আঃপ্রঃ১৪৪৯, ইঃফাঃ ১৪৫৫)

২৫/২৮. অধ্যায়ঃ
সওয়ারী আরোহীকে নিয়ে সোজা দাঁড়িয়ে গেলে তালবিয়া পড়া।

১৫৫২
حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ قَالَ أَخْبَرَنِي صَالِحُ بْنُ كَيْسَانَ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ قَالَ أَهَلَّ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم حِينَ اسْتَوَتْ بِهِ رَاحِلَتُهُ قَائِمَةً

ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে নিয়ে তাঁর সওয়ারী সোজা দাঁড়িয়ে গেলে তিনি তালবিয়া পাঠ করেন। (১৬৬)

(আঃপ্রঃ১৪৫০, ইঃফাঃ ১৪৫৬)

২৫/২৯. অধ্যায়ঃ
কিবলামুখী হয়ে তালবিয়া পড়া।

১৫৫৩
وَقَالَ أَبُو مَعْمَرٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ حَدَّثَنَا أَيُّوبُ عَنْ نَافِعٍ قَالَ كَانَ ابْنُ عُمَرَ إِذَا صَلَّى بِالْغَدَاةِ بِذِي الْحُلَيْفَةِ أَمَرَ بِرَاحِلَتِهِ فَرُحِلَتْ ثُمَّ رَكِبَ فَإِذَا اسْتَوَتْ بِهِ اسْتَقْبَلَ الْقِبْلَةَ قَائِمًا ثُمَّ يُلَبِّي حَتَّى يَبْلُغَ الْحَرَمَ ثُمَّ يُمْسِكُ حَتَّى إِذَا جَاءَ ذَا طُوًى بَاتَ بِهِ حَتَّى يُصْبِحَ فَإِذَا صَلَّى الْغَدَاةَ اغْتَسَلَ وَزَعَمَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَعَلَ ذَلِكَ تَابَعَهُ إِسْمَاعِيلُ عَنْ أَيُّوبَ فِي الْغَسْلِ

নাফি’ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) যুল-হুলাইফায় ফজরের সালাত শেষ করে সওয়ারী প্রস্তুত করার নির্দেশ দিতেন, প্রস্তুত হলে আরোহণ করতেন। সওয়ারী তাঁকে নিয়ে দাঁড়িয়ে গেলে তিনি সোজা কিবলামুখী হয়ে হারাম শরীফের সীমারেখায় পৌঁছা পর্যন্ত তালবিয়া পাঠ করতে থাকতেন। এরপর বিরতি দিয়ে যূ-তুওয়া নামক স্থানে পৌঁছে ভোর পর্যন্ত রাত যাপন করতেন এবং অতঃপর ফজরের সালাত আদায় করে গোসল করতেন এবং বলতেন, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরূপই করে ছিলেন। ইসমা’ঈল (রহঃ) গোসল সম্পর্কিত বর্ণনায় আইয়ূব (রহঃ)-এর অনুসরণ করেছেন।

(১৫৫৪, ১৫৭৩, ১৫৭৪)(আঃপ্রঃ কিতাবুল হজ্জ অনুচ্ছেদ ২৯, ইঃফাঃ ৯৮৯)

১৫৫৪
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ دَاوُدَ أَبُو الرَّبِيعِ حَدَّثَنَا فُلَيْحٌ عَنْ نَافِعٍ قَالَ كَانَ ابْنُ عُمَرَ إِذَا أَرَادَ الْخُرُوجَ إِلَى مَكَّةَ ادَّهَنَ بِدُهْنٍ لَيْسَ لَهُ رَائِحَةٌ طَيِّبَةٌ ثُمَّ يَأْتِي مَسْجِدَ ذِي الْحُلَيْفَةِ فَيُصَلِّي ثُمَّ يَرْكَبُ وَإِذَا اسْتَوَتْ بِهِ رَاحِلَتُهُ قَائِمَةً أَحْرَمَ ثُمَّ قَالَ هَكَذَا رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَفْعَلُ

নাফি’ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) মক্কা গমনের ইচ্ছা করলে দেহে সুগন্ধিবিহীন তেল লাগাতেন। অতঃপর যুল-হুলাইফা’র মাসজিদে পৌঁছে সালাত আদায় করে সওয়ারীতে আরোহণ করতেন। তাঁকে নিয়ে সওয়ারী সোজা দাঁড়িয়ে গেলে তিনি ইহ্‌রাম বাঁধতেন। এরপর তিনি [ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ)] বলতেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে এরূপ করতে দেখেছি। (১৫৫৩)

(আঃপ্রঃ , ইঃফাঃ ১৪৫) (আঃপ্রঃ১৪৫১, ইঃফাঃ ১৪৫৭)

২৫/৩০. অধ্যায়ঃ
নিম্নভূমিতে অবতরণকালে তালবিয়া পড়া।

১৫৫৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى قَالَ حَدَّثَنِي ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ عَنْ ابْنِ عَوْنٍ عَنْ مُجَاهِدٍ قَالَ كُنَّا عِنْدَ ابْنِ عَبَّاسٍ فَذَكَرُوا الدَّجَّالَ أَنَّهُ قَالَ مَكْتُوبٌ بَيْنَ عَيْنَيْهِ كَافِرٌ فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ لَمْ أَسْمَعْهُ وَلَكِنَّهُ قَالَ أَمَّا مُوسَى كَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَيْهِ إِذْ انْحَدَرَ فِي الْوَادِي يُلَبِّي

মুজাহিদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর নিকটে ছিলাম, লোকেরা দাজ্জালের আলোচনা করে বলল যে, রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তাঁর দু’চোখের মাঝে (কপালে) কা-ফি-র লেখা থাকবে। রাবী বলেন, ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বললেন, এ সম্পর্কে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে কিছু শুনিনি। অবশ্য তিনি বলেছেনঃ আমি যেন দেখছি মূসা (‘আঃ) নীচু ভূমিতে অবতরণকালে তালবিয়া পাঠ করছিলেন।

(৩৩৫৫, ৫৯১৩, মুসলিম ১/৭৩, হাঃ ১৬৬) (আঃপ্রঃ১৪৫২, ইঃফাঃ ১৪৫৮)

২৫/৩১. অধ্যায়ঃ
ঋতু ও প্রসবোত্তর স্রাব অবস্থায় মহিলাগণ কিভাবে ইহ্‌রাম বাঁধবে?

(আরবি) অর্থ (আরবি) কথা বলা (আরবি) ও (আরবি) কথা বলা প্রকাশ পাওয়ার অর্থে ব্যবহৃত এবং (আরবি) অর্থ মেঘ হতে বৃষ্টি হওয়া (আরবি) “যে পশু যবেহ করার সময় আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো নাম উচ্চারণ করা হয়।” (আল-মায়িদাহঃ ৩) এ অর্থ (আরবি) (সদ্যজাত শিশুর আওয়াজ) অর্থ হতে গৃহীত।

১৫৫৬
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ حَدَّثَنَا مَالِكٌ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ عَنْ عَائِشَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَتْ خَرَجْنَا مَعَ النَّبِيِّ فِي حَجَّةِ الْوَدَاعِ فَأَهْلَلْنَا بِعُمْرَةٍ ثُمَّ قَالَ النَّبِيُّ مَنْ كَانَ مَعَهُ هَدْيٌ فَلْيُهِلَّ بِالْحَجِّ مَعَ الْعُمْرَةِ ثُمَّ لاَ يَحِلَّ حَتَّى يَحِلَّ مِنْهُمَا جَمِيعًا فَقَدِمْتُ مَكَّةَ وَأَنَا حَائِضٌ وَلَمْ أَطُفْ بِالْبَيْتِ وَلاَ بَيْنَ الصَّفَا وَالْمَرْوَةِ فَشَكَوْتُ ذَلِكَ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ انْقُضِي رَأْسَكِ وَامْتَشِطِي وَأَهِلِّي بِالْحَجِّ وَدَعِي الْعُمْرَةَ فَفَعَلْتُ فَلَمَّا قَضَيْنَا الْحَجَّ أَرْسَلَنِي النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مَعَ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ بْنِ أَبِي بَكْرٍ إِلَى التَّنْعِيمِ فَاعْتَمَرْتُ فَقَالَ هَذِهِ مَكَانَ عُمْرَتِكِ قَالَتْ فَطَافَ الَّذِينَ كَانُوا أَهَلُّوا بِالْعُمْرَةِ بِالْبَيْتِ وَبَيْنَ الصَّفَا وَالْمَرْوَةِ ثُمَّ حَلُّوا ثُمَّ طَافُوا طَوَافًا آخَرَ بَعْدَ أَنْ رَجَعُوا مِنْ مِنًى وَأَمَّا الَّذِينَ جَمَعُوا الْحَجَّ وَالْعُمْرَةَ فَإِنَّمَا طَافُوا طَوَافًا وَاحِدًا

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সহধর্মিণী ‘আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা বিদায় হজ্জের সময় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে বের হয়ে ‘উমরাহ’র নিয়্যাতে ইহ্‌রাম বাঁধি। নবী বললেনঃ যার সঙ্গে কুরবানীর পশু আছে সে যেন ‘উমরাহ’র সাথে হজ্জের ইহ্‌রামও বেঁধে নেয়। অতঃপর সে ‘উমরাহ ও হজ্জ উভয়টি সম্পন্ন না করা পর্যন্ত হালাল হতে পারবে না। [‘আয়েশা (রাঃ) বলেন] এরপর আমি মক্কায় ঋতুবতী অবস্থায় পৌঁছলাম। কাজেই বায়তুল্লাহ তাওয়াফ ও সাফা মারওয়ার সা’য়ী কোনটিই আদায় করতে সমর্থ হলাম না। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আমার অসুবিধার কথা জানালে তিনি বললেনঃ মাথার চুল খুলে নাও এবং তা আঁচড়িয়ে নাও এবং হজ্জের ইহ্‌রাম বহাল রাখ এবং ‘উমরাহ ছেড়ে দাও। আমি তাই করলাম, হজ্জ সম্পন্ন করার পর আমাকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আবদুর রহমান ইব্‌নু আবূ বকর (রাঃ)-এর সঙ্গে তান’ঈম-এ প্রেরণ করেন [৫৬]। সেখান হতে আমি ‘উমরাহ’র ইহ্‌রাম বাঁধি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ এ তোমার (ছেড়ে দেয়া) ‘উমরাহ’র স্থলবর্তী। ‘আয়েশা (রাঃ) বলেন, যাঁরা ‘উমরাহ’র ইহ্‌রাম বেঁধেছিলেন, তাঁরা বায়তুল্লাহর তাওয়াফ ও সাফা-মারওয়ার সা’য়ী সমাপ্ত করে হালাল হয়ে যান এবং মিনা হতে ফিরে আসার পর দ্বিতীয়বার তাওয়াফ করেন আর যাঁরা হজ্জ ও ‘উমরাহ উভয়ের ইহ্‌রাম বেঁধেছিলেন তাঁরা একটি মাত্র তাওয়াফ করেন। (২৯৪)

(আঃপ্রঃ১৪৫৩, ইঃফাঃ ১৪৫৯)






[৫৬]আয়েশা (রাঃ) ‘উমরার জন্য ইহ্‌রাম বাঁধার পর ঋতুবতী হয়ে পড়লে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে গোসল করার নির্দেশ দেন এবং ‘উমরার ইহ্‌রাম ছেড়ে দিয়ে হজ্জের ইহ্‌রাম বাঁধার আদেশ দেন। ফলে হজ্জের পর পাক-সাফ অবস্থায় তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট ঋতুর কারণে বাতিল হয়ে যাওয়া উমরার পরিবর্তে নতুনভাবে ‘উমরাহ করার অনুমতি প্রার্থনা করেন। ফলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে সেই অনুমতি প্রদান করেন। “হারাম” সীমায় থাকা অবস্থায় যে ব্যক্তি ‘উমরার ইরাদা করবে তাকে হারামের সীমার বাইরে গিয়ে ‘উমরার ইহ্‌রাম বাঁধতে হবে। এজন্য আয়েশা (রাঃ)-কে তানঈমে পাঠানো হয়েছিল। যা হারামের সীমানার বাইরে অবস্থিত।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

২৫/৩২. অধ্যায়ঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জীবদ্দশায় তাঁর ইহরামের মত যিনি ইহ্‌রাম বেঁধেছেন।

ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এ সম্পর্কিত হাদীস বর্ণনা করেছেন।

(আরবি)

১৫৫৭
حَدَّثَنَا الْمَكِّيُّ بْنُ إِبْرَاهِيمَ عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ قَالَ عَطَاءٌ قَالَ جَابِرٌ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَمَرَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَلِيًّا أَنْ يُقِيمَ عَلَى إِحْرَامِهِ وَذَكَرَ قَوْلَ سُرَاقَةَ وَزَادَ مُحَمَّدُ بْنُ بَكْرٍ عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ قَالَ لَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِمَا أَهْلَلْتَ يَا عَلِيُّ قَالَ بِمَا أَهَلَّ بِهِ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم قَالَ فَأَهْدِ وَامْكُثْ حَرَامًا كَمَا أَنْتَ

জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আলী (রাঃ)-কে ইহ্‌রাম বহাল রাখার আদেশ দিলেন, এরপর জাবির (রাঃ) সুরাকাহ (রাঃ)-এর উক্তি বর্ণনা করেন। মুহাম্মাদ ইব্‌নু বকর (রহঃ) ইব্‌নু জুরাইজ (রহঃ) হতে অতিরিক্ত বর্ণনা করেন; নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আলী (রাঃ)-কে বললেনঃ হে ‘আলী! তুমি কোন্‌ প্রকার ইহ্‌রাম বেঁধেছ? ‘আলী (রাঃ) বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ইহরামের অনুরূপ। আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তাহলে কুরবানীর পশু প্রেরণ কর এবং ইহ্‌রাম অবস্থায় যেভাবে আছ সেভাবেই থাক।

(১৫৬৮, ১৫৭০, ১৬৫১, ১৭৮৫, ২৫০৬, ৪৩৫২, ৭২৩০, ৭৩৬৭) (আঃপ্রঃ১৪৫৪, ইঃফাঃ ১৪৬০)

১৫৫৮
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ الْخَلاَّلُ الْهُذَلِيُّ حَدَّثَنَا عَبْدُ الصَّمَدِ حَدَّثَنَا سَلِيمُ بْنُ حَيَّانَ قَالَ سَمِعْتُ مَرْوَانَ الأَصْفَرَ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ قَدِمَ عَلِيٌّ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِنْ الْيَمَنِ فَقَالَ بِمَا أَهْلَلْتَ قَالَ بِمَا أَهَلَّ بِهِ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ لَوْلاَ أَنَّ مَعِي الْهَدْيَ لأحْلَلْتُ

আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘আলী (রাঃ) ইয়ামান হতে এসে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট উপস্থিত হলে তিনি প্রশ্ন করলেনঃ তুমি কী প্রকার ইহ্‌রাম বেঁধেছ? ‘আলী (রাঃ) বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অনুরূপ। আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)বললেনঃ আমার সঙ্গে কুরবানীর পশু না থাকলে আমি হালাল হয়ে যেতাম।

(আঃপ্রঃ১৪৫৫, ইঃফাঃ ১৪৬১)

১৫৫৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ قَيْسِ بْنِ مُسْلِمٍ عَنْ طَارِقِ بْنِ شِهَابٍ عَنْ أَبِي مُوسَى قَالَ بَعَثَنِي النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِلَى قَوْمٍ بِالْيَمَنِ فَجِئْتُ وَهُوَ بِالْبَطْحَاءِ فَقَالَ بِمَا أَهْلَلْتَ قُلْتُ أَهْلَلْتُ كَإِهْلاَلِ النَّبِيِّ قَالَ هَلْ مَعَكَ مِنْ هَدْيٍ قُلْتُ لاَ فَأَمَرَنِي فَطُفْتُ بِالْبَيْتِ وَبِالصَّفَا وَالْمَرْوَةِ ثُمَّ أَمَرَنِي فَأَحْلَلْتُ فَأَتَيْتُ امْرَأَةً مِنْ قَوْمِي فَمَشَطَتْنِي أَوْ غَسَلَتْ رَأْسِي فَقَدِمَ عُمَرُ فَقَالَ إِنْ نَأْخُذْ بِكِتَابِ اللهِ فَإِنَّهُ يَأْمُرُنَا بِالتَّمَامِ قَالَ اللهُ {وَأَتِمُّوا الْحَجَّ وَالْعُمْرَةَ للهِ} وَإِنْ نَأْخُذْ بِسُنَّةِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَإِنَّهُ لَمْ يَحِلَّ حَتَّى نَحَرَ الْهَدْيَ

আবূ মূসা (আশ’আরী) (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে ইয়ামানে আমার গোত্রের নিকট পাঠিয়েছিলেন; তিনি (হজ্জ-এর সফরে) বাত্‌হা নামক স্থানে অবস্থানকালে আমি (ফিরে এসে) তাঁর নিকট উপস্থিত হলাম। তিনি আমাকে বললেনঃ তুমি কোন্‌ প্রকার ইহ্‌রাম বেঁধেছ? আমি বললাম, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ইহরামের অনুরূপ আমি ইহ্‌রাম বেঁধেছি। তিনি বললেনঃ তোমার সঙ্গে কুরবানীর পশু আছে কি? আমি বললাম, নেই। তিনি আমাকে বায়তুল্লাহ-এর তাওয়াফ করতে আদেশ করলেন। আমি বায়তুল্লাহ-এর তাওয়াফ এবং সাফা ও মারওয়ার সা’য়ী করলাম। পরে তিনি আদেশ করলে আমি হালাল হয়ে গেলাম। অতঃপর আমি আমার গোত্রীয় এক মহিলার নিকট আসলাম। সে আমার মাথা আঁচড়িয়ে দিল অথবা বলেছেন, আমার মাথা ধুয়ে দিল। এরপর ‘উমর (রাঃ) তাঁর খিলাফতকালে এক উপলক্ষে আসলেন। (আমরা তাঁকে বিষয়টি জানালে) তিনি বললেনঃ কুরআনের নির্দেশ পালন কর। কুরআন তো আমাদেরকে হজ্জ ও ‘উমরাহ পৃথক পৃথকভাবে যথাসময়ে পূর্ণরূপে আদায় করার নির্দেশ দান করে। আল্লাহ বলেনঃ “তোমরা হজ্জ ও ‘উমরাহ আল্লাহ’র উদ্দেশে পূর্ণ কর”- (আল-বাকারাঃ ১৯৬)। আর যদি আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সুন্নাতকে অনুসরণ করি, তিনি তো কুরবানীর পশু যবহ্‌ করার আগে হালাল হননি।

(১৫৬৫, ১৭২৪, ১৭৯৫, ৪৩৪৬, ৪৩৯৭) (আঃপ্রঃ১৪৫৬, ইঃফাঃ ১৪৬২)

FOR MORE CLICK HERE

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]